নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কি দোষ,আমি তো মানুষ !!

যুলকারনাইন

পাঠ্যবই ভাল লাগেনা,তবে প্রচুর বই পড়ি নিজের পছন্দমত

যুলকারনাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

"পিকে"-কি ধর্মবান্ধব নাকি ধর্মবিদ্বেষী ?

২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ৮:৩৪


কবিতা হল নিখুঁত শব্দের বুনন,অল্প কথায় ব্যাপক ভাব প্রকাশের নিমিত্তে যথোপযুক্ত শব্দের সমাহার। সেই সব কবিতার ভীড়ে আমাদের ভাল লাগার জায়গাটি দখল করে নেয় শুধুমাত্র সেই সমস্ত কবিতাই,যেগুলো সহজবোধ্য,রসাত্মক,চিরন্তন সত্য এবং সহজে মুখস্থ হয়। বর্তমান যুগে মানুষের কল্প-ভাবনার জগতের সীমানা পেরিয়ে গতিশীল চিত্রের মধ্য দিয়ে নিজের মত-ভাব প্রকাশের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে সিনেমা। ছড়া,কবিতা,ছোট গল্প,গল্প আর উপন্যাসের পাতায় বিচরনের চেয়ে স্বল্পদৈর্ঘ্য আর পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে পাচ্ছে যেন বর্তমান তরুণ প্রজন্ম। প্রজন্মের সেই ক্ষুধা মেটাতেই এখনকার চলচ্চিত্র নিজেকে কবিতা বা বলা চলে সাহিত্য গুণ সম্পন্ন করার প্রয়াস পাচ্ছে। আর সেই প্রয়াসের ফলশ্রুতিতে নিজস্ব মত আর আদর্শের বয়ানও আসছে বর্তমান চলচ্চিত্রে।

বলিউডের খ্যাতিমান এবং ঐতিহ্যবাহী প্রোডাকশন হাউজ আর পরিচালকদের মসলাদার চলচ্চিত্রের ভীড়ে নিজস্বতা বজায় রেখে দর্শকনন্দিত হয়েছেন যে নির্মাতা তার নাম রাজকুমার হিরানী। মহারাষ্ট্র এ জন্মগ্রহণ করা এই পরিচালক প্রথম জীবনে চলচ্চিত্রে কাজ করার নিমিত্তে ভর্তি হয়েছিলেন এডিটিং-এ। কিন্তু মনের ক্ষুধা না মেটায় তিনি সে পড়াশোনা আর সামনে বাড়তে দেননি। চলচ্চিত্র নির্মাণের আগে রাজকুমার হিরানি কমার্শিয়াল কাজের জন্য পরিচিত ছিলেন। “ফেবিকল” এর একটি অতিপরিচিত বিজ্ঞাপনে তিনি নিজে অভিনয়ও করেছিলেন। বলিউডের রঙ্গিন পর্দায় তার অভিষেক হয় বিপুল দর্শকনন্দিত সিনেমা “মুন্না ভাই এমবিবিএস” দিয়ে। এরপরের সিনেমার নাম “লাগে রাহো মুন্না ভাই”। সেটিও ব্যাপক দর্শক সমাদৃত হয়। প্রথম দুটি চলচ্চিত্রে সঞ্জয় দত্ত থাকলেও তৃতীয় চলচ্চিত্রের জন্য রাজকুমার হিরানী বেছে নিলেন “মিস্টার পারফেশনিস্ট” আমির খানকে। তৈরি করলেন বলিউডের প্রথম শতকোটি আয়ের সিনেমা “থ্রি ইডিওয়টস”। সেই পরিচালকই যখন তার চতুর্থ চলচ্চিত্রের কাজে হাত দিলেন এবং অভিনয়ের জন্য বাছাই করলেন আগের পরিক্ষীত সৈনিক সঞ্জয় দত্ত এবং আমির খান কে,তখন স্বাভাবিকভাবে চলচ্চিত্রমোদীদের মনে আগ্রহের সৃষ্টি হয়।

সেই আগ্রহকে রাজকুমার হিরানি আরো উস্কে দিলেন আমিরের উদোম শরীরের পোস্টার করে। মুক্তির পরে তার চতুর্থ সিনেমা “পিকে” ছাড়িয়ে গেল অতীত রেকর্ডগুলো। ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্রের ইতিহাসে একজন পরিচালক চারটি সিনেমা বানালেন যার সবগুলোই একাধারে দর্শকনন্দিত এবং ব্যবসাসফল।

অনেকদিন আগে এক বিদেশী লেখক এর বই পড়েছিলাম যেখানে তিনি তাত্ত্বিকভাবে প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন যে এই সুন্দর পৃথিবী মানুষের নেটিভ গ্রহ নয়। তাঁর যুক্তিগুলোও ছিল দারুণ। মানুষ পৃথিবীতে নিজের চামড়াকে সূর্যরশ্মি থেকে বাঁচাতে কাপড়চোপড় পড়ে,খাবার দাবার কে মশলা দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে খায়,সদ্য জন্ম নেয়া সন্তানকে তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখে; পৃথিবীর অন্যান্য প্রাণীরা যেখানে দিব্যি বিচরণ করে বেড়াচ্ছে সেখানে মানুষের নিজস্ব জীবনধারণ প্রক্রিয়াই যেন জানান দেয় মানুষ এই গ্রহের না। লেখার শুরুতে কবিতা নিয়ে আলাপ জুড়ে ছিলাম। মানুষের মনের ভাব প্রকাশের অন্যতম উপায় কবিতা। তাই বলে মানবশিশু কিন্তু জন্মের পর পরই কবিতাকে ভাব প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় না। বরং বেছে নেয় মাতৃমুখে শেখা বুলিকে। বাঙালী মায়ের সন্তান কথা বলে বাংলায়,ইংরেজ মায়ের সন্তান ইংরেজীতে,চাইনিজ মায়ের সন্তান মান্দারিন ভাষায়। বয়স বাড়ার পর মানব সন্তান শুধু মনের ভাব মুখে বলতেই শিখে না,সাথে সাথে সেই মনের ভাবে মিথ্যাকে,কপটতাকে অথবা অলীক কল্পনাকে মিশ্রিত করতে শিখে। এই সত্য-মিথ্যা মিশ্রিত ভাবপ্রকাশের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মানবসন্তান জীবনধারণ করে।

“পিকে” সিনেমার শুরু হয় এক মানবসদৃশ ভিনগ্রহের প্রাণীর পৃথিবীতে অবতরণের মধ্য দিয়ে। সে পৃথিবীতে আসে পৃথিবী নিয়ে গবেষণা করতে। আর শুরুতেই তার স্পেসশিপের সাথে যোগাযোগের যন্ত্র ছিনতাই হয়ে যায়। আর সেই যন্ত্র খুঁজে পেতে গিয়ে পৃথিবীতে তার যে অভিজ্ঞতা তা-ই নিয়ে এই “পিকে” সিনেমা। কি কি অভিজ্ঞতা হয়েছিল ভিনগ্রহের প্রাণীর সে উত্তর পাওয়া যায় সিনেমার সবশেষে যখন একবছর পর সে তার সতীর্থদের নিয়ে ফিরে আসে পৃথিবীতে।
১.নিজেদের মধ্যে মারামারি,সংঘাত করতে মানুষের কোন লজ্জাবোধ নেই।
২.মানুষের মুখের কথা কোন সময়েই তার মনের ভাব পুরোপুরি প্রকাশ করে না।
৩.পৃথিবীর মানুষ মাত্রই চোর-ডাকাত,অপরের ধন কেড়ে নিতে সিদ্ধহস্ত।
৪.সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটা হলো,মানুষের মধ্যে যারা সৃষ্টিকর্তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে একশ হাত দূরে থাকতে হবে।


সিনেমার পর্দায় ফুটে উঠা দৃশ্যাবলি দিয়ে পরিচালক আমাদের নিয়ে যান তার মতের কাছে। আমাদের মাঝে প্রশ্নের জন্ম দেন,হয় সেই প্রশ্নের মাঝেই আমাদের ছেড়ে দেন নাহয় উত্তরও বাতলে দেন। “পিকে” সিনেমাতে দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগে,কেন সৃষ্টিকর্তার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার কথা বলা মানুষের কাছ থেকে দূরে সরে থাকতে হবে? পরিচালক এর কারণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ধর্মের নাম করে মানুষের সাথে প্রতারণাকে। মন্দির বা মাজার অথবা গির্জা,প্রায় সব জায়গায় মানুষ প্রতারিত হচ্ছে সৃষ্টিকর্তার সন্ধানে গিয়ে। এবং এটি নিরেট সত্য কথা। এই পর্যায়ে এসে আমার কয়েক বছর আগে দেখা বলিউডের “ওহ মাই গড” সিনেমার কথা মনে পড়ে গেল। মিডিয়ায় প্রচলিত আছে,হিরানী-আমির গং সেসময় “ওহ মাই গড” এর পরিচালককে টাকা সেঁধেছিলেন প্রায় একই ভাবধারার সিনেমার মুক্তি বন্ধ করতে। “ওহ মাই গড” সিনেমার আইডিয়া হলিউডের “দ্য ম্যান হু সুইড গড” সিনেমা থেকে নেওয়া। যদিও সেটি দেখার অভিজ্ঞতা নেই আমার তবে “ওহ মাই গড” দেখেছি। সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে “গোপালা গোপালা” নামে তামিল ভাষায় নির্মিত একই ভাবধারার একটি সিনেমা মুক্তির পেয়েছে।

পরিচালক রাজকুমার হিরানী সৃষ্টিকর্তার নাম করে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচার রাস্তা বাতলে দিয়েছেন। তাঁর মতে,সৃষ্টিকর্তা দুই ধরনের- একজন যিনি মানুষকে বানিয়েছেন আর দ্বিতীয়জন যাঁকে মানুষ বানিয়েছে। মানুষের বানানো স্রষ্টাকে সরিয়ে দিয়ে মানুষের স্রষ্টার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। যিনি মানুষকে বানিয়েছেন তাঁর ব্যাপারে পরিচালকের কোন ধারণা নেই। বরঞ্চ তিনি অবাক হোন মানুষ কেমনে জেনে গেল কে তার স্রষ্টা। পরিচালক হিরানীর মতে,যতদিন পর্যন্ত মানুষ তাঁর প্রকৃত স্রষ্টার খোঁজ পাচ্ছে না ততদিন পর্যন্ত মানুষ একে অপরের সুখ-দুঃখের সাথী হবে। কেননা মানুষ যখন কষ্টেশিষ্টে,বিপদে-আপদে আরকোন আশা খুঁজে পায় না তখনই মানুষ স্রষ্টার উপর ভরসা করে বাঁচে। তাই মানুষের বিপদে-আপদে মানুষকেই একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে।
একই সমস্যার সমাধানে “ওহ মাই গড” সিনেমার পরিচালক উমেশ সুকলা স্বয়ং স্রষ্টাকে হাজির করেছেন মানুষের পাশে এবং মানুষের গড়া স্রষ্টার মূর্তি ভেঙ্গে দিতে উৎসাহিত করেছেন। সুকলা সাহেব দেখিয়েছিলেন সবসময়ই স্রষ্টা মানুষের বিপদে পাশে এসে দাঁড়ান কিন্তু মানুষ তাঁকে চিনতে পারে না। আর আদৌ যদি চিনতে পারে তাহলে মানুষ স্রষ্টাকে নয় স্রষ্টার রুপকে উপাস্য হিসেবে বেছে নেয়।

আপাতদৃষ্টিতে দুটো সিনেমার বক্তব্য একই মনে হলেও, এই দুয়ের মাঝে আছে এক শুভংকরের ফাঁকি। “পিকে” সিনেমা অনুযায়ী মানুষের বিপদে আপদে একটি আশার নাম স্রষ্টা। যিনি আছেন কি নেই সে ব্যাপারে মানুষ কিছুই জানে না অথচ বিশ্বাস করে বাঁচে তিনি কিছু করবেন। অপরদিকে “ওহ মাই গড” সিনেমায় স্রষ্টা হলেন সেই সত্ত্বা যিনি তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপনকারীদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন সবসময়। কিন্তু তিনি তাঁর সৃষ্টিকুলের কাছে এই আশা করেন যে তারা তাঁর বার্তাবাহক বা সৃষ্টির সাথে যোগাযোগের মাধ্যমকে নিজেদের স্রষ্টা বানাবে নাহ। “ওহ মাই গড” এ পরিচালক সুকলা বলেছেন স্রষ্টা একজনই,মানুষ চায় যে নামেই তাঁকে ডাকুক যে ধর্মেই তাঁর উপাসনা করুক। অন্যদিকে “পিকে” সিনেমাতে রাজকুমার হিরানী প্রশ্ন তুলেছেন,কোথা থেকে পেল মানুষ ধর্মের ফারাক? তার মতে এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভুল হল ধর্মের পার্থক্য যা মানুষের তৈরী। এটাই মানুষের মাঝে বিদ্বেষের জন্ম দেয়,এটাই মানুষকে আলাদা করে। “জাত গেল জাত গেল বলে একি আজব কারখানা”। হিরানী সাহেব এর সমাধান দিয়েছেন এক হিন্দু মেয়ের সাথে এক মুসলিম যুবকের মিল ঘটিয়ে। “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই”। সুকলা সাহেব একজন নাস্তিকের স্রষ্টার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে স্রষ্টার উপর বিশ্বাস স্থাপন আর স্রষ্টার নামে চালু থাকা ব্যবসা বন্ধের উদ্যোগ নেয়া দেখিয়েছেন। অন্যদিকে হিরানী সাহেব ভিনগ্রহের প্রাণীকে দিয়ে স্রষ্টার নামে প্রতারণা রুখে দাঁড়ানোর আহবান তুলে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস গুঁড়িয়ে দিয়ে প্রকৃত স্রষ্টার স্বরুপ নির্ণয় না করিয়েই তাকে আপন গ্রহে নিয়ে গেলেন। এখানেই প্রকাশ পায় একই দেশে একই প্লটের সিনেমা একটু ভিন্নভাবে উপস্থাপনের রহস্য। হিরানী সাহেব মানুষকে যতটুকু না সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাসের দিকে উৎসাহিত করেছেন তার চেয়ে বেশী উৎসাহিত করেছেন মানবতার খাতিরে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস ভেঙ্গে দিতে। ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের চরিত্রের সাথে এই বোধের অনেক মিল। আমাকে কেউ সৃষ্টি করেছেন এটুকু মানি কিন্তু আমি যে মুসলিম বা হিন্দু বা খ্রিস্টান এই সিদ্ধান্ত কেমনে এলো? স্রষ্টা লিখে দিয়েছেন আমাদের অথবা সদ্যজাত শিশুদের শরীরে?
আমরা যারা স্রষ্টায় বিশ্বাসী এবং পৌত্তলিকতাকে মানতে নারাজ তারা কিন্তু কখনোই হিরানীর এই বোধকে সমর্থন করতে পারি না। তাই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে হিরানী কি একজন আস্তিক সেক্যুলার ? আসলেই কি সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাসস্থাপনকারী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বাদ দিতে পারে? অথবা ভিন্ন ভিন্ন ধর্মাচারের মানুষ স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংসার পেতে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে পারে??

এই পর্যায়ে এসে পাঠকদের মনে করিয়ে দেই একটি হাদিসের কথা। আবূ বকর ইবনু শায়বা ও আবূ কুরায়ব (রহঃ) আ’মাশ (রহঃ) থেকে এই সনদে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু নুমায়র বর্ণিত হাদীসে- “প্রত্যেকটি শিশু মিল্লাতে ইসলামীর উপর জন্মগ্রহণ করে—আর আবূ মুআবিয়া (রহঃ) -এর সুত্রে আবূ বকর (রহঃ) -এর বর্ণনায় “এই মিল্লাতের উপর জন্ম গ্রহণ করে, এমনকি মুখে স্পষ্ট করে কথা না বলা পর্যন্ত (তার উপর বাহন থাকে)” এবং আবূ মুআবিয়া (রহঃ) -এর সূত্রে আবূ কুরায়ব (রহঃ) -এর বর্ণনায় “এমন কোন শিশু নেই যা এই ফিতরাতের উপর জন্মগ্রহণ করে না, এমনকি তার ভাষা ব্যক্ত করা পর্যন্ত রয়েছে”। [ইসলামিক ফাউন্ডেশন, গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ ৪৭/ তাকদীর. হাদিস নাম্বার: ৬৫১৮] যারা কোরআনকে ঐশী গ্রন্থ এবং মুহাম্মদ (সাঃ) কে স্রষ্টার পয়গম্বর মেনে চলেন তারা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় এখানেই খুঁজে পান। আর তাদের জন্যই ঐশী আদেশ “তোমরা মুসলমান পুরুষগণ বিধর্মী মেয়েদেরকে বিবাহ করো না,যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করবে। তোমরা মুসলমান মেয়েগণ বিধর্মী পুরুষদের সাথে বিবাহবন্ধনে ­ আবদ্ধ হয়ো না; যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান গ্রহণ না করবে। একজন মুসলমান বান্দা বা পুরুষ একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভালো, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজের হুকুমে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। আর তিনি মানুষের জন্য নিজের নিদর্শন অর্থাৎ আদেশ নিষেধ বলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে”। (সূরা বাক্বারা: আয়াত ২২১)

“পিকে” সিনেমায় রাজকুমার হিরানী’র এই বক্তব্যের প্রতি সতর্ক দৃষ্টি রেখেই স্বীকার করে নিচ্ছি যে শুধুমাত্র সিনেমা হিসেবে এটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ। এর প্রশংসার মাত্রা বুঝাতে আমি এই সিনেমাকে “কবিতা”-র সাথে তুলনা করবো,একদম উপমা-মাত্রাজ্ঞান-শব্দের যথার্থ প্রয়োগ সম্বলিত। বলিউডের শক্তিমান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল অভিনীত “ওহ মাই গড” এর তুলনায় ব্যবসা এবং জনপ্রিয়তায় “পিকে” এর এগিয়ে থাকার একমাত্র কারণ আমির-হিরানী’র জুটি। অনেক বিনোদনের মসলায় ভরপুর “পিকে” ভবিষ্যতেও হিরানী’র আগের সিনেমাগুলোর মত দর্শককে বিনোদনে বিমোহিত রাখবে বলেই অনুমান। কিন্তু সিনেমায় বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক,পতিতাবৃত্তি ইত্যাদির গা সওয়া উপস্থিতি যেন আমাদের সমাজেও দৃশ্যমান এবং সহনীয় পর্যায়ে না পৌঁছে সে দিকে দৃষ্টি দেয়া সচেতনতার দাবী।

মন্তব্য ২৭ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:১৯

আলী আকবার লিটন বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ ! লেখককে অনেক ধন্যবাদ

২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ৯:৫৩

যুলকারনাইন বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ পাঠের জন্য।

২| ২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: এই মুভিটি নিয়ে এখন পর্যন্ত পড়া আমার সেরা রিভিউ!! আর ধর্মীয় প্রেক্ষাপট থেকেও যদি বিশ্লেষনের কথা বলেন, তাহলেও তা ভালো হয়েছে!

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ২:৫৬

যুলকারনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ। রিপ্লাই দিতে দেরি করলেও আশা করবো সবসময় পাশে থাকবেন।

৩| ২৮ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:২৮

সাহসী সন্তান বলেছেন: খুব সুন্দর পোস্ট! দারুন বিশ্লেষন, এক কথায় পড়ে খুবই ভাল লাগলো!!

৪| ২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪

বিজন শররমা বলেছেন: "মহারাষ্ট্র এ জন্মগ্রহণ করা এই পরিচালক প্রথম জীবনে চলচ্চিত্রে কাজ করার নিমিত্তে ভর্তি হয়েছিলেন এডিটিং-এ। কিন্তু মনের ক্ষুধা না মেটায় তিনি সে পড়াশোনা আর সামনে বাড়তে দেননি।" ...মনের ক্ষুধা না মেটায় তিনি সে পড়াশোনা আর সামনে বাড়তে দেননি' কেঊ ফেল মেড়েছে সে কথা কি চমতকার ভাবে বলা হল ।

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:০৮

যুলকারনাইন বলেছেন: Sobar e to man-somman bole kichu ache.

৫| ২৮ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:৩৬

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: অসাধারণ একটি বিশ্লেষণধর্মী পোস্ট ---আমার পড়া রিভিউগুলোর মধ্যে সেরা এটি -- যতই পড়ছিলাম ততই অবাক হয়ে যাচ্ছিলাম, শেয়ার করার জন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ

০১ লা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৩

যুলকারনাইন বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ,কষ্ট করে আমার পোস্ট পড়ার জন্য।

৬| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: অনবদ্য রিভিউ। কেবল একটা মুভি হিসেবে নিয়ে সেখানে বলা অসঙ্গগতিগুলো নিয়ে ভাবলে সেটা ধর্মের জন্যও মঙ্গলজনক হবে। আর কেউ যদি আঘাত মনে করে তবে তাদের আঘাত পেতে দেন। তারা জীবনের এমন কোন ক্ষেত্র পাবেনা যেখানে তারা ধর্মের প্রতি আঘাত দেখতে পাবেনা, ওরা নিজেদের মনের তৈরী করে দেয়া অলীক আঘাতে বেহুদাই জর্জরিত হতে থাকবে।

++

০১ লা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

যুলকারনাইন বলেছেন: হাসলাম। অনেক ধন্যবাদ।

৭| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:২৯

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
অসাধারণ ও অনবদ্য রিভিউ।+++

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন সবসময়।

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:০৯

যুলকারনাইন বলেছেন: Thanks,Apni o valo thakun.

৮| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

জেন রসি বলেছেন: কোন মানুষ যখন প্রাতিস্থানিক ধর্মে বিশ্বাসী হয় তখন সে তার বিশ্বাসের জায়গা থেকে অনেক যৌক্তিক বিশ্লেষণকেই মেনে নিতে পারে না যা তার বিশ্বাসকে প্রস্নবিদ্ধ করে।এখন প্রস্ন হচ্ছে কেউ যদি এমন কোন বিশ্বাসে আক্রান্ত হয়ে সমাজের বিকাশ রুদ্ধ করে দিতে চায় তবে সে ক্ষেত্রে করনীয় কি? মানুষের বিশ্বাসে আঘাত লাগতে পারে ভেবে ভ্রান্ত বিশ্বাস দূর করার প্রয়াস নেওয়া বন্ধ করা যাবে না।

রিভিউ ভালো লেগেছে।

০১ লা জুলাই, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৮

যুলকারনাইন বলেছেন: অবশ্যই কোন অবস্থাতেই ভ্রান্ত বিশ্বাস দূর করার প্রয়াস নেয়া বন্ধ করা যাবে না।

৯| ২৮ শে মে, ২০১৫ বিকাল ৫:৫৩

প্রভাষ প্রদৌত বলেছেন: সূরা বাকারা'র তর্জমা যেটা আপনি দিয়েছেন , তা সামঞ্জস্যপুরন নাহ ।

যারা কোরআনকে ঐশী গ্রন্থ এবং মুহাম্মদ (সাঃ) কে স্রষ্টার পয়গম্বর মেনে চলেন তারা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় এখানেই খুঁজে পান। আর তাদের জন্যই ঐশী আদেশ “তোমরা মুসলমান পুরুষগণ বিধর্মী মেয়েদেরকে বিবাহ করো না,যতক্ষণ না তারা ঈমান গ্রহণ করবে। তোমরা মুসলমান মেয়েগণ বিধর্মী পুরুষদের সাথে বিবাহবন্ধনে ­ আবদ্ধ হয়ো না; যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান গ্রহণ না করবে। একজন মুসলমান বান্দা বা পুরুষ একজন মুশরিকের তুলনায় অনেক ভালো, যদিও তোমরা তাদের দেখে মোহিত হও। তারা দোযখের দিকে আহ্বান করে, আর মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজের হুকুমে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন। আর তিনি মানুষের জন্য নিজের নিদর্শন অর্থাৎ আদেশ নিষেধ বলে দেন যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে”। (সূরা বাক্বারা: আয়াত ২২১)


According to Quran muslim man can marry christian girl:

This day [all] good foods have been made lawful, and the food of those who were given the Scripture is lawful for you and your food is lawful for them. And [lawful in marriage are] chaste women from among the believers and chaste women from among those who were given the Scripture before you, when you have given them their due compensation, desiring chastity, not unlawful sexual intercourse or taking [secret] lovers. And whoever denies the faith - his work has become worthless, and he, in the Hereafter, will be among the losers. (Surat Al-Mā'idah, 5:5)
But also take into account that nowadays a lot of christians are considered polytheists because of the trinity. So we can apply next ayat:

And do not marry polytheistic women until they believe. And a believing slave woman is better than a polytheist, even though she might please you. And do not marry polytheistic men [to your women] until they believe. And a believing slave is better than a polytheist, even though he might please you. Those invite [you] to the Fire, but Allah invites to Paradise and to forgiveness, by His permission. And He makes clear His verses to the people that perhaps they may remember. (Surat Al-Baqarah, 2:221

লিংক

ইসলামে বহু ঈশ্বরবাদী মেয়েদের-ছেলেদের বিয়ে করতে নিষেধ আছে , শুধু বিধর্মী না ।

১০| ২৮ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:২৪

তপ্ত সীসা বলেছেন: ব্লগে এক ছুপা ছাগু কাম হাম্বার উদয় হইছে। যার নাম ছাম্বা পুঙ্গায়ভাস (প্রভাষ নহে)। ও আসছে ধর্ম নিয়া বুলি দিতে। ওর মুখ কেউ ওর পাকি জারজ সত ভাই ওয়ামীর পশ্চাদদেশে ঢুকাইয়া দ্যাও। =p~

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:১০

যুলকারনাইন বলেছেন: u r sooo naughty..

১১| ২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:২০

আমি দামাল ছেলে বলেছেন: পিকে ছবির সফলতা এখানেই যে, এই ছবি ধর্ম নিয়ে ব্যবসার ধারণাটাকে তুলে ধরতে পেরেছে এবং তার বিপক্ষে যুক্তিগুলো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছে। ধর্ম এবং রাজনীতি এই দুই বিষয়ে কেউ কারো কাছ থেকে মতবাদ নেয় না, নিজের বিশ্বাসের উপরই অটুট থাকে তা যত অযৌক্তিকই হোক। তাই এই ছবি ধর্মবান্ধবই হোক আর ধর্মবিরোধীই হোক, এই ছবি কারো মনের বদ্ধমূল ধারণাকে পরিবর্তন করবে এটা ভাবা অযৌক্তিক বলেই মনে হয় আমার কাছে।

১২| ২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৩২

আহসানের ব্লগ বলেছেন: হুম ভাবনার বিষয় ।

১৩| ২৮ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:৫৮

নাম প্রকাশে ইচ্ছুক নহে বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণধর্মী পোস্ট।
পরেশ রাওয়াল অভিনীত “ধর্মসংকট” নিয়ে আপনার বক্তব্য কি? :)

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:১০

যুলকারনাইন বলেছেন: Oi Movie ta ekhono dekhi nai..dekhe Review debani ...

১৪| ২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১:১৭

তাপস কুমার দে বলেছেন: খুব ভালো লাগলো,বিশেলসনট ও ভালো

১৫| ২৯ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:২৬

আজকের বাকের ভাই বলেছেন: সকল কিছুকে এক যুক্তিতে দেখা ভালো নয়। ছবিটিতে আসলেই ধর্ম/স্রষ্টার অনুপস্তিতি দেখানো হয়েছে, কিন্তু মূলত ফোকাস করা হয়েছে আমাদের ধর্ম ব্যবসায়ীদের, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা।
আসলেই সময় এসেছে মানবতাকে আগে ধারণ করার, তারপর নিজের ধর্মে ফোকাস করা। আর মনে রাখতে হবে কোন ধর্মই মানবতার বিরুদ্ধে নয় বা অন্য ধর্মাবলীদের আঘাত করার কথা বললে না।

২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৩:০৭

যুলকারনাইন বলেছেন: prithibir Shuru ta jehetu manush k diye tai manobotai age, tobe keu jodi mone kore "PK" dhormo k highlight kore-amr mone hoy se vul.

comment ter jonno Thanks. Bangla likhte na parar jonno sorry.

১৬| ০৮ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫২

মুরাদ খান বলেছেন: ভালো হয়েছে। আরো ভালো করতে হবে।

৩০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ৩:৫৮

যুলকারনাইন বলেছেন: ব্লগ জীবনে স্বাগতম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.