নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্ব-৫ : মিলিটারি গ্রেডের বিস্ফোরক তৈরিতে আগ্রহী ছিল জেএমবি (ভিডিওসহ) (জঙ্গিবাদের পেছনে ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-৬)

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪৪

এমআই-৬ এ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্রিটিশ নাগরিক ড. মোস্তফা ফয়সালের কাছে বিস্ফোরক বানানোর উপাদান প্রপেন আর সেলুলোস নিয়েও কথাবার্তা বলেছিলেন জেএমবির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমির শায়খ আব্দুর রহমান ও এর সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানী।

দীর্ঘ বৈঠকে ফয়সালের সাথে তারা কথা বলেছিলেন প্রপেন ও সেলুলোস সম্পর্কে। প্রপেন হল— দাহ্যজাতীয় হাইড্রোকার্বন গ্যাস। এটি একটি তিন কার্বনবিশিষ্ট এ্যালকেন। তাদের সঙ্গে ফয়সাল কথা বলেছিলেন সেলুলোস নিয়ে। এটির সামান্য পরিবর্তিত রূপের অনেকগুলো নাম আছে। বিপজ্জনকটির নাম ‘গান-কটন’। ফিলামেন্ট টাইপের হলদেটে সাদা দেখতে। তবে এটিকে যখন নাইট্রোগ্লিসারিনে পরিণত করা হয় তখন এটি ভয়াবহ রূপ নেয়। ঠিক যেন মিলিটারি গ্রেডের এক্সপ্লোসিভ। এসব বিস্ফোরক ডিনামাইটের উপাদান হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। নাইট্রোগ্লিসারিন নিয়েও কথা হয়। এটির উন্নত সংস্করণ হল— ট্রাই নাইট্রো টলুইন (টিএনটি)।

ফয়সাল জানান, জেএমবির তখনকার প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান ও এর সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানীর সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা হলেও তিনি তাদের এ সংক্রান্ত কোনো পরামর্শ দেননি।

ফয়সাল আরও জানান, তিনি তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। একসাথে খেয়েছেন রাতের খাবার।

নিষিদ্ধ এই সংগঠনকে ‘মস্তিষ্কশূন্য’ হিসেবেও মন্তব্য করেন মোস্তফা ফয়সাল। তবে নিষিদ্ধ আরেক দল হুজি-বি সম্পর্কে প্রকাশ করেছেন ভিন্ন মত তার।

বাংলাদেশে ইসলামপন্থী নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো সম্পর্কে গোয়েন্দাদের সঙ্গে ফয়সালের কথাবর্তা হুবহু তুলে ধরা হল :

হুজি কি জিহাদের জন্য দেশের বাইরে সদস্য পাঠাচ্ছে?

হুজি যুদ্ধের জন্য আফগানিস্তান, কাশ্মীর ও ইরাকে সদস্য পাঠাচ্ছে। হুজি’র দুইটি শাখা আছে। একটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আব্দুল হান্নান (এখন গ্রেফতার), বাংলাদেশ থেকে সরাসরি তিনি কাজ করছেন। তিনি তাদের মধ্য একজন, যার ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট দল আছে। এরাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতার ওপর হামলা করেছে। হুজি’র অন্য দলটি মূলত বাইরে যাচ্ছে। বাইরে তারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে এবং সেসব দেশে জিহাদ করছে।

অন্য আর কাদের সাথে আপনার সাক্ষাৎ হয়েছে?

আমি এখানে জেএমবির সাথে সাক্ষাৎ করেছি ২০০৫ সালে। ঢাকার কাঁঠালবাগানে গ্রিন ক্রিসেন্টের অফিসে বসতাম আমি। সেখানে অনেকেই অর্থ সাহায্যের জন্য আসত। একদিন রাজন নামে একজন এসেছিল।

আবার বলুন, বুঝতে পারিনি।

রাজন নামে একজন এসেছিল আমার কাছে। তখন তার বয়স ১৮-র মতো হবে। সম্ভবত ২০০৫-এর জানুয়ারির দিকে।

তিনি আপনাকে কী বলেছিলেন?

তিনি আমাকে বলেছিলেন, তিনি একটা বড় দলের সাথে যুক্ত। তাদের সাহায্য দরকার।

কী ধরনের সাহায্য?

তাদের দলনেতা দেশের বাইরে যাবেন। তার কিছু আইডিয়া দরকার পলিসি গ্রহণের ক্ষেত্রে।

কী পলিসি?

কীভাবে তিনি দলটি সামনে আগাবেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল একটি ইসলামী দেশ গঠন করা। তাদের পর্যাপ্ত সাংগঠনিক কাঠামো ও নিয়মনীতি ছিল না। সেক্ষেত্রে তাদের আইডিয়া দরকার ছিল। আমি ঢাকায় তাদের অফিসে যাই। সেটি সম্ভবত ছিল কমলাপুর রেলস্টেশনের আশপাশে কোথাও।

কতজন লোক সেখানে আপনাকে স্বাগত জানাতে এসেছিলেন?

একজন, মাত্র রাজন এসেছিলেন আমাকে অভ্যর্থনা জানাতে।

কে, রাজু?

রাজু,… হ্যাঁ রাজু।

রাজু না রাজন?

রাজন। হ্যাঁ। এবং আমি তার সাথে গিয়ে একজনের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম। এখন আমি তাকে চিনি, তিনি হলেন আব্দুর রহমান। অন্যজন ছিল সানী। এ দু’জন সেখানে ছিলেন। সানী, চওড়া কাঁধ। তারা প্রধানত পলিসি তৈরির ক্ষেত্রে আগ্রহী ছিল। দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা। কীভাবে সেটি অর্জন করা যায়। আমি তাদের সাথে ঘণ্টা তিনেক ছিলাম এবং একসাথে দুপুরের খাবার খেয়েছিলাম।

দুপুরের, না রাতের খাবার?

রাতের খাবার।

আপনি সেখানে কখন গিয়েছিলেন?

সকালে, সম্ভবত ছটায় রওনা করেছিলাম। আটটায় পৌঁছেছি।

আলোচনার বিষয়বস্তু কী ছিল?

তারা বাংলাদেশে কী কী করেছে। তাদের সংগঠন। তাদের কিছু সুনির্দিষ্ট দক্ষতা। তাদের সামরিক দল ও তাদের ইতিহাস।

আপনি তাদের কী পরামর্শ বা আইডিয়া দিয়েছিলেন?

অস্ত্র দিয়ে কোনো কিছু করার কোনো পরামর্শ আমি তাদের দেইনি। কারণ আমি জানতাম না তারা কে। আমি তাদের একটি পলিসি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম— বাংলাদেশ আফগানিস্তানের চাইতে ভিন্ন। সুতরাং বাংলাদেশের প্রেক্ষিত বিবেচনা করে তাদের কাজ করতে হবে।

আপনি তাদের কোনো ধরনের বিস্ফোরক বানানোর প্রশিক্ষণ দিয়েছেন?

না, দেইনি।

কিন্তু আপনি এখনো তাদের সাথে যোগাযোগ রেখেছেন?

হ্যাঁ, আমি মৌখিকভাবে তাদের সাথে নাইট্রো-সেলসিয়াল নিয়ে আলোচনা করেছি। কারণ তারা প্রপেন তৈরিতে আগ্রহী ছিল। তবে তাদের কোনো ধরনের ম্যানুয়েল আমি করে দেইনি। সুতরাং সংক্ষিপ্তভাবে আমি তাদের সাথে লিখিত নোট দিয়েছি। ভবিষ্যৎ নিয়েও তাদের সাথে আলোচনা করেছি। আমি বলেছি, এখনি কিছু করো না। কারণ তোমরা প্রস্তুত না। এখন কিছু করলে সব ভণ্ডুল হবে। অপেক্ষা করতে বলেছি সঠিক পলিসির জন্য।

আপনি তাদের একটা লম্বা ইমেইল পাঠিয়েছিলেন, তাই না?

আমি মনে করতে পারছি না।

হ্যাঁ, আপনার সাথে তাদের কিছু যোগাযোগ দেখা যাচ্ছে।

ই-মেইলের ঠিকানা কী? শুনলে হয়ত কিছু মনে পড়বে।

১১১২৩ জাতীয় কিছু?

না, সে ধরনের কিছু নয়।

আপনি করেননি?

না, আমি না।

এটা, ১১২৩?

আমার না, এটা তাদের।

আপনার না, তাদের ব্যাপারেই বলছি।

না, আমার মনে নেই। আমার ইমেইল হল, ফা.মো.

না, আমি তাদের মেইল এ্যাড্রেস নিয়ে জিজ্ঞেস করছি।

তারা আমাকে একটি মেইল পাঠিয়েছে।

না, আপনি তাদের একটি মেইল পাঠিয়েছেন।

না, মেইল পাঠানো জাতীয় কিছু মনে নেই।

যুক্তরাজ্য থেকে?

আমি না।

মেইলের ভাষাটা এই জাতীয়— আমার বন্ধুরা, বাংলাদেশ জেহাদের জন্য উপযুক্ত নয়। এখনো সময় আসেনি। তবে তোমরা এগিয়ে যাও। এ ধরনের কথা বার্তা, বেশ বড় ইমেইল।

না, সেটি আমি পাঠাইনি।

তাই? আপনি নিশ্চিত?

হ্যাঁ, আমি নিশ্চিত আমি এ ইমেইল পাঠাইনি।

(মেইল পড়া হচ্ছে)—তবে, তোমরা চাইলে উচ্চপদস্থ কিছু কর্মকর্তাকে অপহরণ করতে পারো।

আমি নিশ্চিত এটি আমি পাঠাইনি। কারণ আমি জানতাম আমাকে পুলিশ নজরে রেখেছে। আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত।

এরপরও আপনি জেএমবির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন? রাজুর সাথে ফোনে কয়েকবার কথা বলা ও বাংলাদেশে সিরিজ বোমা হামলার পর আর যোগাযোগ নেই?

হ্যাঁ, এবং হঠাৎ করেই খবরগুলো বড় বড় করে ছাপা হতে থাকল। পরপরই আমি সরে পড়ি। আমি মনে করেছিলাম এরপর এই লোকগুলোর সাথে আর জড়ানো ঠিক হবে না।

জেএমবি বর্তমান নেতৃ্ত্ব কার হাতে?

আমার সাথে তাদের আর সংশ্লিষ্টতা নেই।

কিন্তু তাদের কয়েকজনকে আপনি চেনেন।

আমি কয়েকজনকে চিনি, কিন্তু সরাসরি না।

সে কে?

মঞ্জুর, আমার বন্ধুদের মধ্যে একজন।

হবিগঞ্জের?

হ্যাঁ, কারণ দলনেতা নিজেও হবিগঞ্জের।

তিনি কীভাবে জানেন?

কারণ তিনি হবিগঞ্জের। হবিগঞ্জে এটা মোটামুটি সবাই জানে এমন একটা ঘটনা।

কিন্তু তার বিশেষত্ব কী?

মঞ্জুর প্রথমত জামায়াতে ইসলামীর একজন সদস্য ছিল। এখন তিনি জেএমবির লিডার। এভাবেই জানাশোনা।

আপনি কি আমাদের সাইদুর রহমানের কাছে নিয়ে যেতে পারেন? (তখন সাইদুর রহমান পলাতক ছিল। পরে গ্রেফতার হয়)

আমি নিশ্চিত, চেষ্টা করা যেতে পারে। এটা সম্ভব যদি অপেক্ষা করা যায়।

জেএমবি ছাড়াও আর কাদের সাথে আপনি যোগাযোগ করেছেন ?

হরকাতুল জিহাদ, এ ছাড়াও আরএসও’র সাথে আমি অনেক সময় কাটিয়েছি।

সেখানে আপনার কাজ কী ছিল?

মানবিক সাহায্য দেওয়া। ইউনূস এবং যুক্তরাজ্য থেকে আমরা অর্থসাহায্য পেতাম, ২০০ পাউন্ড নগদ। সেটা ডা. মুহাম্মদ ইউনূসকে দিতাম। সে আমাদের ক্যাম্পগুলোতে নিয়ে যেত। সেখানে তাদের প্রয়োজন আমাদের বলে দিত তারা। আমি সেখানে বিস্ফোরকের ওপর ভাষণ দিতাম। নোট নিতাম, সেই নোটগুলো আপনারা গেস্ট হাউজে পেয়েছেন নিশ্চয়।

কতদিন ধরে আরএসও’র সাথে যোগাযোগ?

দুই বছর। সেপ্টেম্বর ১১-এর পর আর যোগাযোগ নেই।

৯/১১-এর পর আর যোগাযোগ নেই?

আমি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছি কিছু বিশেষ কারণে। কারণ তারা আল-কায়েদার সাথে যুক্ত।

জেএমবির সাথে আর কোনো এজেন্ডা আছে?

আমি তাদের সাথে আর নেই। তারা যা করেছে তা আমি মানি না।

সংযুক্তি না থাকলেও তবে তাদের কয়েকজনের সাথে এখনো আপনার যোগাযোগ আছে।

না, তাদের সাথে আমার আর কোনো যোগাযোগ নেই।

জেএমবিকে অর্থ সাহায্য কে দিয়েছে বলে আপনি মনে করেন? কে এসব দাঁড় করিয়েছে?

আমি মনে করি বিদেশী একটি শক্তি এটা করেছে।

এবং কে...?

আমার দুইটা সম্ভাবনা বলার আছে। একটা হল, ইউরোপীয় কোনো শক্তি এর পেছনে আছে। তাদের সাইনবোর্ড হতে পারে ‘আরওএআর’। এসব জঘন্য কাজ তারা করাতে পারে বলে মনে করি। কারণ জেএমবির নিজস্ব পলিসিই নেই। তারা মস্তিষ্কশূন্য প্রাণী। তারা একলা এটা করবে, সম্ভব না। যেমন হরকাতুল জিহাদের নিজস্ব কাঠামো আছে। লাইন-অব-কমান্ড আছে। সুসংগঠিত। তারা অন্য ধরনের। এ জন্য তারা মার্কিন ও পশ্চিমা দেশগুলোর বিশেষ নজরদারিতে আছে। সেখানে জেএমবি কারো দৃষ্টি-ই আকর্ষণ করেনি।

অথবা নিজের নিয়ে খুব ব্যস্ত?

হ্যাঁ, আমি সেটাই বলতে চেয়েছি। তারা নিজেরাই এতটা পচে গেছে যে এটা নিয়ে আর তাদের মাথা না ঘামালেও চলে।

তাহলে কে কন্ট্রোল করছে? কে তাদের এখানে চালাচ্ছে? কিছু জানেন?

না, তবে জানি তারা ১০০০০ পাউন্ড পেয়েছে পাকিস্তানীদের কাছ থেকে। একজন বাংলাদেশীর কাছ থেকেও অনুদান পেয়েছে তারা।

আপনি দু’জন পাকিস্তানীর কথা বলছিলেন।

হ্যাঁ, এ ছাড়াও বাংলাদেশী অনুদান আছে।

আব্দুর রহমান?

হ্যাঁ।

আমরা শুনেছি সে সম্পর্কে।

শুনেছেন।

তাদের চেনেন আপনি?

হ্যাঁ, চিনি।

দু’জনকেই?

সাজ্জাত। সাজ্জাত খান।

তিনি সম্ভবত আল মাহাজারুন? তিনি আল মাহাজারুনদের একজন।

হ্যাঁ। তাদের দু’জনেই আল মাহাজারুন।

এ সম্পর্কে আর কোনো তথ্য?

বর্তমানে নেই। আমাকে খোঁজ নিতে হবে। জানা নেই এখন।

ও তারা সম্ভাব্য কোনো এজেন্সি বা শক্তির সাথে জড়িত?

হ্যাঁ, খবর আছে এ সংক্রান্ত। তারা বেশ পরিচিত। গুজব আছে, তারা এমআই-৫ এর জন্য কাজ করছে।

বাইরে?

হ্যাঁ।

আপনি তাদের শনাক্ত করতে পারবেন?

হ্যাঁ। সম্ভবত পারব।
সংগ্রহ- thereport24 এর বিশেষ সংবাদ পেজ থেকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.