নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফিরে দেখা ২০১৫, সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে যাঁদের হারালাম !

০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৪৯

সংস্কৃতি অঙ্গনের নানাদিকে নানামাত্রিক কাজের মাধ্যমে যাঁরা আলোচিত ও আলোকিত হয়েছেন এমন প্রতিশ্রুতিশীল কয়েকজন গুণীকে ২০১৫ সালে আমরা হারালাম। তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা, নাট্যকার, গীতিকার কণ্ঠশিল্পী; তেমনই রয়েছেন গীতিকবি, চিত্রশিল্পী, ভাস্কর ও পটচিত্রশিল্পী। এঁদের মধ্যে আলোচিত কয়েকজন হলেন—

চলচ্চিত্রনির্মাতা চাষী নজারুল ইসলাম

২০১৫ সালের ১০ জানুয়ারি চলে যান করেন একুশে পদক পাওয়া প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম। রাজধানীর ল্যাবএ্যাইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। ওই বছরের মে মাস থেকে চিকিৎসক সৈয়দ আকরামের তত্ত্বাবাবধানে ছিলেন চাষী নজরুল। তিনি ১৯৪১ সালের ২৩ অক্টোবর শ্রীনগর থানার সমঝপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোসলেহ উদ্দীন খান। মা শায়েস্তা খানম। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ১৯৫৫ সালে টাটানগরে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রথম অভিনয় করেন প্রখ্যাত এই নির্মাতা। ১৯৬০ সালে ফতেহ লোহানীর সঙ্গে ‘আসিয়া’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর কাজ করেন ওবায়েদ-উল হকসহ আরও অনেকের সঙ্গে। অভিনয়ও করেন কিছু ছবিতে। ১৯৭২ সালে পরিচালনা করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি ‘ওরা ১১ জন’। চাষী নজরুল ইসলাম ৩৫টির মতো ছবি নির্মাণ করেন। এর মধ্যে ছয়টি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘ধ্রুবতারা,’ ‘শহীদ ক্যাপ্টেন সালাউদ্দীন’, ‘দেবদাস’, ‘শুভা’ ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা, , ‘হাছন রাজা’, ‘শাস্তি’।

গীতিকার গোবিন্দ হালদার

১৭ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন প্রখ্যাত গীতিকার গোবিন্দ হালদার। ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি’ কিংবা ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় লেখা এমন অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা তিনি। দীর্ঘ রোগভোগের পর কলকাতার একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। গোবিন্দ হালদারের দেশাত্মবোধক গান ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে লাখ লাখ বাঙালীকে অনুপ্রাণিত করেছিল।

অভিনেতা সিরাজুল ইসলাম

২৪ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন নাটক, চলচ্চিত্র ও মঞ্চের দাপুটে অভিনেতা সিরাজুল ইসলাম। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী এই অভিনেতা ১৯৮৪ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান ‘চন্দ্রনাথ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য। তাঁর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র জননী। নাটক, চলচ্চিত্র ছাড়াও তিনি নির্মাণ করেছেন বেশ কিছু প্রামাণ্যচিত্র। দীর্ঘদিন পর গত বছর অভিনয় করেন অসমাপ্ত কবিতার গল্প ও দ্য প্রেস নামের দু’টি টেলিছবিতে। সিরাজুল ইসলামের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১০ অক্টোবর পশ্চিমবঙ্গের হুগলী জেলায়। তাঁর ক্যারিয়ারের শুরু হয় বেতারে। পরে ১৯৫৬ সালে যোগ দেন তখনকার গণসংযোগ বিভাগে। মঞ্চে কাজ শুরু করেন সেই কৈশোরে। মহীউদ্দিন পরিচালিত ‘রাজা এলো শহরে’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে শুরু হয় তাঁর চলচ্চিত্রজীবন। এরপর নাচঘর, অনেক দিনের চেনা, শীত বিকেল, বন্ধন, ভাইয়া, রূপবান, উজালা, ১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন, নয়নতারা, আলীবাবা, চাওয়া পাওয়া, গাজী কালু চম্পাবতী, নিশি হলো ভোর, সপ্তডিঙ্গা, মোমের আলো, ময়নামতি, যে আগুনে পড়ি, দর্পচূর্ণ, বিনিময়, ডুমুরের ফুলসহ তিন শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

ভাস্কর নভেরা আহমেদ

৬ মে মৃত্যুবরণ করেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ভাস্কর নভেরা আহমেদ। প্যারিসের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। ভাস্কর হামিদুর রহমানের সঙ্গে জাতীয় শহীদ মিনারের প্রাথমিক নকশা প্রণয়নে অংশগ্রহণ করেন তিনি। নভেরা আহমেদের জন্ম ১৯৩০ সালে। ১৯৭৩ সালের পর তিনি দেশ ত্যাগ করে প্যারিসে বসবাস শুরু করেন। ১৯৯৭ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। দীর্ঘ অন্তরাল জীবনের পর ২০১৪ সালে প্যারিসে তার রেট্রোসপেকটিভ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।

কৌতুক অভিনেতা রাশেদ রানা পাপ্পু

৩০ জুন মৃত্যুবরণ করেন কৌতুক অভিনেতা রাশেদ রানা পাপ্পু। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৪৭ বছর। অনেক দিন থেকেই শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি নিয়মিত শো করতে পারতেন না। বিটিভির ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘শুভেচ্ছা’ আর মোল্লা লবণের ওই বিজ্ঞাপন আজও সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেয় তার কথা।

কণ্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমীন

৯ আাগস্ট মৃত্যুবরণ করেন এক সময়ের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমীন। তিনি দেশের বিশিষ্ট দুই কণ্ঠশিল্পী নীলুফার ইয়াসমীন ও সাবিনা ইয়াসমীনের বোন। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত সিনেমা আর রেডিওর গানে ফরিদা ইয়াসমীন ছিলেন অসম্ভব জনপ্রিয়। সে সময় তিনি আধুনিক বাংলা, উর্দু গান ও গজলে বিশেষ পারদর্শিনী ছিলেন। ১৯৫৯ সালে ওস্তাদ মতি মিয়ার কাছে গান শিখতেন তিনি। সে বছরই ওস্তাদ ফরিদা ইয়াসমীনকে ‘এ দেশ তোমার আমার’ ছবিতে গান গাওয়ার সুযোগ করে দেন। তার গাওয়া ‘রাজা এলো শহরে’ ছবির ‘জানি না ফুরায় যদি এই মধু রাতি’ গানটি তাকে অসম্ভব খ্যাতি এনে দেয়। সঙ্গীত ভুবনে ফরিদা ইয়াসমীন যখন খ্যাতির তুঙ্গে তখন ‘মাসুদ রানা’ খ্যাত লেখক কাজী আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর ঘরসংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় গান-বাজনার প্রতি তেমন একটা গুরুত্ব দেননি। তবে রেডিওতে মাঝে মধ্যে প্রোগ্রাম করতেন।

গীতিকবি নয়ীম গহর

৮ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন প্রখ্যাত গীতিকার নয়ীম গহর। তার অসংখ্য কালজয়ী গান রয়েছে। তিনি চলে গেলেও আমাদের শিল্পী মহলে বিখ্যাত হয়ে থাকবেন। দেশ স্বাধীনে তাঁর যে অবদান তা জাতি আজীবন মনে রাখবে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সহযোদ্ধা ছিলেন তিনি। তাঁর গান আমাদের বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করেছে। মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছে।

চিত্রশিল্পী আসমা কিবরিয়া

১০ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়ার স্ত্রী চিত্রশিল্পী আসমা কিবরিয়া। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। সেখানেই স্বামীর কবরে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

পটচিত্রশিল্পী রঘুনাথ চক্রবর্তী

২৩ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন পটচিত্রশিল্পী রঘুনাথ চক্রবর্তী। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৬ বছর। ১৯৬৯ সালের ১ নভেম্বর রঘুনাথ চক্রবর্তী জন্মগ্রহণ করেন। গাইবান্ধার এ শিল্পীর ছবি আঁকার ব্যাপারে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। কিন্তু পটচিত্রশিল্পে তিনি দেশের প্রথমসারির শিল্পী। মায়ের আল্পনা আঁকা থেকে শিল্পী অনুপ্রাণিত হন। তাঁর ভাল লাগত গ্রামের পালা, পার্বণ ও যাত্রা। এসবই পরে হয়ে ওঠে তার পটচিত্রের বিষয়। জাপানে শিল্পীর পটচিত্রের প্রদর্শনী হয়েছিল।

নাট্যকার মাসুদ চৌধুরী

নাট্যকার, নির্দেশক ও নব্বইয়ের গণআন্দোলনের অন্যতম কর্মী মাসুদ চৌধুরী ২৪ নভেম্বর ইহলোক ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। মাসুদ চৌধুরী নাট্য সংগঠন ‘গণছায়া’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও দনিয়া সাংস্কৃতিক জোটের অন্যতম উদ্যোক্তা। তিনি ছিলেন একাধারে নাট্যকার, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন ।
সংগ্রহ- দ্য রিপোর্ট২৪ ডটকম থেকে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫

আসিফামি বলেছেন: ভালো আর্টিকেল / সাথে কিছু ছবি দেয়া গেলে ভালো হয়/ পারলে আপডেট করে দিয়েন /তাছাড়া আমাদের এই সব বিশেষ মানুষদের নিয়ে উইকিপিডিয়াতে বাংলাতে ডিটেইল থাকলে ভালো হয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.