নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশায়

মোঃ আরিফিন ইসলাম।

আরিফিন ইসলাম

মোঃ আরিফিন ইসলাম একটি সুন্দর পৃথিবীর প্রত্যাশা করি। কর্মস্থলঃ thereport24.com (IT support)

আরিফিন ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দেশের পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে !

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:১৫

দেশের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও বিচারিক ব্যবস্থা সবকিছুই বর্তমানে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিশেষত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে সরকার তার সর্বশক্তি প্রয়োগ ও কৌশল অবলম্বন করেছে।

মাঝখানে গত বছর বিএনপির টানা অবরোধ কর্মসূচি সরকারকে কিছুটা বিপাকে ফেলে। কিন্তু কঠোর নীতি অনুসরণের মাধ্যমে সরকার সেই পরিস্থিতিও সামাল দিয়ে উঠেছে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষমতার মেয়াদ পূর্ণ করতে সরকারকে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপিকে কোণঠাসা করে রাখা এ সরকারের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক সফলতা। এর বাইরে সরকারের আর তেমন কোনো শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নেই। পাশাপাশি জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে আস্থায় রাখা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতির মাঠ থেকে বিতাড়িত করে নিজের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করেছে সরকার। যদিও বিএনপিসহ ক্ষমতার বাইরে থাকা বিভিন্ন দল বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের কঠোর সমালোচনা করছে, কিন্তু সেগুলো নিয়ে সরকার অতটা উদ্বিগ্ন নয়।

সর্বশেষ জাতীয় পার্টির নেতৃত্ব বদলের পেছনে সরকারের কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের ও প্রধান বিচারপতির বক্তব্যকে কেন্দ্র করে যে ইস্যু তৈরি হয়েছে তা সরকারের ইমেজ ক্ষুণ্ন করেছে। কিন্তু এসব কোনো কিছুই আমলে নিচ্ছে না সরকার।

সার্বিক ক্ষেত্রে এ নিয়ন্ত্রণ সরকারকে ক্রমশ ‘কর্তৃত্বপরায়ণ’ করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘হিউম্যান রাইটস ওয়াচ’-এর এক প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্রমেই ‘কর্তৃত্বপরায়ণ’ হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও অভিযোগ তোলা হয়েছে, ‘২০১৫ সালে বাংলাদেশে ভিন্নমত প্রকাশের বিষয়টি মারাত্মকভাবে আক্রমণের মুখে পড়েছে। আদালত অবমাননার মামলা এবং বিভিন্ন ধরনের অস্পষ্ট মামলা দায়ের করার মাধ্যমে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এমন কী নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধী মতের রাজনীতিবিদদের গ্রেফতার করে বিভিন্ন মামলা দায়ের করেছে।’

বিগত ৭ বছরের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহ থেকে দেখা যায়, যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারের তৎকালীন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপিকে এই ইস্যুতেই ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে মিছিল-সমাবেশের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে।

টানা প্রায় দুই বছর পর গত ১৬ ডিসেম্বর নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিজয় মিছিল বের করার সুযোগ পায় বিএনপি। এরপর ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে শর্তসাপেক্ষে সমাবেশ করে বিএনপি।

অন্যদিকে বর্তমান সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি (জাপা) আত্মপরিচয় সংকটে রয়েছে। দলটির চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের পদ বহন করছেন। পাশাপাশি দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা সরকারের মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করে সরকারের পক্ষেই রয়েছেন। এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদও বলেছেন, ‘মানুষ জাপাকে বিরোধী দল মনে করে না।’

পর্যবেক্ষকদের মতে, বর্তমান সরকার রাজনীতির সকল কলাকৌশল প্রয়োগ করে বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করে পরিস্থিতি নিজেদের অনুকূলে নিতে সক্ষম হয়েছে। তবে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে পক্ষে টানার চেষ্টা করলেও পুরোপুরি সফল হতে পারেনি। বিভিন্ন যুক্তি-তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশ ভারতকে নিজের পক্ষে রাখতে পারলেও নানাভাবেই বিরোধে জড়িয়ে পড়ছে একক পরাশক্তি আমেরিকার সঙ্গে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মিজানুর রহমান শেলী দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘অনেক সাধারণ মানুষ ও বিশেষজ্ঞরা দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে করে না। ক্ষমতাসীন দল যে প্রাধান্য বিস্তার করেছে সেটা হয়ত আপাত দৃষ্টিতে শান্তির রূপ নিয়েছে, কিন্তু সেটা কতদিন টিকবে এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সামগ্রিক দৃষ্টিতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে বলে মনে হচ্ছে।’

সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যেটাকে স্বাভাবিকভাবে রাজনীতি বলি, সেটা হলো দুই দলের মধ্যে দলাদলি। এগুলো রাজনীতির বিষয় নয়। একটি সমাজে একটি দল, একটি ব্যক্তি প্রধান হয়ে উঠতে পারে। একটি সমাজে বিভিন্ন গোষ্ঠীর, বিভিন্ন শক্তির স্বার্থের প্রকাশ ও তাদের সমন্বয়ক ঘটানোকে সঠিক রাজনীতি বলে। একজন ব্যক্তি, একটি চক্র বা একটি গোষ্ঠী অথবা একটি মাত্র দল যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকে তখন সুষমভাবে সকলের দিকে দৃষ্টি দেওয়া সম্ভব হয় না। একটি গোষ্ঠীর স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। সেখানে রাজনীতি অদৃশ্য হয়ে যায়। গণতন্ত্রের মধ্যে একাধিক দল থাকবে। সকল দলের মধ্য থেকে একটা সামাজিক-রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত উঠে আসবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দীন আহমেদ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক রাজনীতি থাকলে কতগুলো লক্ষণ প্রতিফলিত হয়। নির্বাচনটা নিয়মিত অনুষ্ঠিত হচ্ছে, নির্বাচনটা নিরপেক্ষভাবে হচ্ছে, নির্বাচনের প্রার্থীরা প্রত্যেক ভোটারের কাছে যাবেন মিটিং-মিছিল-সমাবেশ করতে হবে। এই প্রক্রিয়াগুলো যখন চালু থাকবে তখন সমাজটাকে গণতান্ত্রিক সমাজ বলা যাবে। অধিকার সংরক্ষণ, আইনের শাসন আছে কি না। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নিহত হয়েছে। রাজনৈতিক তৎপরতার সুযোগ নেই। রাজনীতি থাকলে দেশে অনুমতি নিতে হয় না। দেশে গণতন্ত্র অনুপস্থিত।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক গোবিন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রকৃত অর্থে এটা গণতান্ত্রিক সরকার না। সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার রক্ষার সরকার। তাই এই সরকারের বৈধতা নিয়ে সংকট আছে। উন্নয়নের কথা বলে সরকার বিরোধী দলকে চাপিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। যা দেশের গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গল নয়। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসাথে থাকতে হবে। গণতন্ত্র ছাড়া উন্নয়ন কখনই ফলপ্রসূ হয় না।’

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমি বলব, রাজনীতি এমন কিছু নয়, যেটা কেউ নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে কিংবা দখল করতে পারে। রাজনীতি একটা প্রক্রিয়া। রাজনীতি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে। কিন্তু আমাদের রাজনীতি মানুষকে বিভক্ত করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের মাঝে হানাহানি-দলাদলি-কাটাকাটির সৃষ্টি করে। এটা অপরাজনীতি, এর পরিণতি ইতিবাচক নয়।’

গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাসানী মিলনায়তনে এক আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পরিবেশকে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আমাদের সভা-সমাবেশ মিছিল মিটিং করতে গেলে অনুমতি নিয়ে করতে হয়। এখন অনুমতি নিয়ে গণতন্ত্র চালাতে হয়।’

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মানুষের চোখ-মুখ দেখলে বুঝা যায়, তারা কিছু বলতে চায়, কিন্তু তারা কিছু বলতে পারছে না। এটা স্বাভাবিক অবস্থা নয়, এভাবে দেশে চলতে পারে না। মানুষের মধ্যে একটা গুমোটভাব আছে, তারা যেকোনো সময় জেগে উঠবে।’

রাজধানীর মিরপুর থানার বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট আলী আশরাফ লিটনের মতে, ‘নিয়ন্ত্রিত রাজনীতি দিয়ে সরকার সাময়িক লাভবান হলেও দেশের মানুষ দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মধ্যে পড়বে। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো ফিরিয়ে দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, বর্তমানে দেশে আইন শাসন নেই, বাকস্বাধীনতা নেই, সভা-সমাবেশ করা অনুমতি দেওয়া হয় না। এভাবে স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠিত করা যায়, গণতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনা করা যায় না।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আসম আব্দুর রব দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘রাজনীতি নামক শব্দটি বাংলাদেশে নির্বাসিত। গণতন্ত্রের নামে চলছে দলতন্ত্র। রাজনীতির নামে চলছে দলবাজী। উন্নয়নের নামে দেশের মানুষের ভোটাধিকার হরণ, বাকস্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, নাগরিক মৌলিক অধিকার, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় সমগ্র দেশ ও জাতিকে গ্রাস করেছে। সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশনে নিয়ন্ত্রণ করে জনগণের মুখে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। আইয়ুবের উন্নয়নের দশকের মতো শুধু উদরপূর্তির জন্য ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সমগ্র জাতি আজ একদলীয় স্বৈরশাসনে কারারুদ্ধ।’

তবে সরকারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মানতে নারাজ ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তারা বলছেন, দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতি আরও শক্তিশালী হয়েছে।

গণপূর্তমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘রাজনীতি ও গণতন্ত্র যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করত তাহলে বিএনপি রাজনীতি করে কীভাবে? তারা (বিএনপি) তো রাজনীতি করছে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। কেউ তাদের বাধা দিয়েছে? না। তারা জনসভা করেছে। তাদের কেউ বাধা দিয়েছে?’

বিএনপির এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন ও স্ববিরোধী বলেও মন্তব্য করেন মোশাররফ।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা’ আমরা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছি। বিএনপি নাচতে জানে না। সরকারের নাইনটি নাইন পয়েন্ট নাইন পার্সেন্ট নরমাল। সরকার যখন ভেঙে পড়ে তখন সব কিছু নরমাল থাকে না। রাস্তায় মানুষ নামতে পারে না, বিদ্যুৎ থাকে না, ট্রেন চলাচল করে না, রেল-লঞ্চ চলাচল করে না। এখন সব কিছু নরমাল আছে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সংসদ এবং সংসদের বাইরে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের চর্চা চালিয়ে গেছে। সংসদের বিরোধী দল গঠনমূলক ভূমিকা রেখেছে।’

আওয়ামী লীগের উপ কমিটির সহ-সম্পাদক তৌফিদুল ইসলাম বুলবুল দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘বিএনপি তো গত সাত বছর ধরেই বলছে যে, দেশের পরিস্থিতি খারাপ। দেশ যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে, খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে তখন তারা এসব নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে বলেই দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।’
সংগ্রহ- দ্য রিপোর্ট২৪ থেকে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৩

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আসলে বাংলাদেশে জামাত ক্ষমতায় আসা উচিৎ। তাইলেই শুধু গণতন্ত্র থাকবে। হিউম্যান রাইটসও কিছু বলবে না। এমাজ উদ্দিনও চুপ থাকবে।
বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ঠিক থাকবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.