নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কোলাহল ত্যাগী

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুসলিম চোখ কান খোলা রাখো

০৫ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৪০

পবিত্র যুমার দিন । বাজারের বড় মসজিদে
গেলাম যুমার সালাতে । খতিব সাহেব যথা-
রীতি খুতবা দিয়ে যাচ্ছেন । খতিব সাহেব সব
সময়ই মানুষ কে শান্তির কথা বলেন, বলেন
আল্লাহর ইবাদাত করার কথা । সব সময় দুনি-
য়ার প্রতি নিরাসক্তি আর আল্লাহ , রাসুল ও
আখেরাতের প্রতি সার্বক্ষণিক মগ্ন থাকতেই
তিনি উৎসাহিত করেন । এ উদ্দ্যেশ্যে তিনি
অনেক বুজুর্গদের গল্পও বলেন । মানুষ তন্ময়
হয়ে শোনে তার কাহিনী । আর মাঝে মাঝে
উচ্চস্বরে সুবহানাল্লাহ, নাওজুবিল্লাহ,আলহামদু-
লিল্লাহ ইত্যাদি শব্দ উচ্চারণ করে। আজকেও
তিনি তেমনই একটি কাহিনী বলছিলেন ।

``সম্মানিত মুসুল্লিয়ে কেরাম ! এই দুনিয়া একটা
চাকচিক্য । এর থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই
কল্যাণ । দুনিয়াদারীর মোহ মানুষকে পরকাল
থেকে গাফেল করে দেয় । আল্লাহর অলিরা সব
সময় দুনিয়াদারির চিন্তা থেকে দূরে থাকতেন ।
জনৈক বুজুর্গ আল্লাহর ইবাদাত করতে করতে
এক সময় পরিবার পরিজন সংসারের প্রতি
নিরাসক্ত হয়ে পরেন , ফলে তার পরিবারের
ভরণ পোষণের দিকে খেয়াল থাকতো না । তার
স্ত্রী সন্তান ক্ষিদের জালায় ছটফট করতো । এক
দিন তার স্ত্রী এসে তার কাছে সন্তানদের অবস্থা
জানায় । সব শুনে বুজুর্গ তার স্ত্রীকে বলল আমি
আমার মালিকের ইবাদতে মশগুল আছি । তুমি
দেখো কিছু করতে পারো কি না । তার কথা শুনে
বুজুর্গের স্ত্রী বের হলো জীবিকার খোঁজে।শত চেষ্টা
করেও কোন লাভ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে সে এক
মালদার (ধনী)লোকের কাছে গিয়ে সাহায্য ভিক্ষা
চাইলো । মালদার লোকটি তাকে সতীত্বের বিনি-
ময়ে সাহায্য দেয়ার শর্ত দিলো । এতে রাজী না
হয়ে বুজুর্গের স্ত্রী ফিরে যায় । কিন্তু সন্তানদের কষ্ট
সইতে না পেরে বুজুর্গের স্ত্রী অপকর্মে রাজী হয় ।
তারপর যখন তারা মিলিত হতে যাবে এমন সময়
বুজুর্গের স্ত্রী ভয়ে কাঁপতে থাকে , তখন মালদার
লোকটি তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে জবাবে
মহিলা বলল আমি আমার পরিবারের ভরণ
পোষণে ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়ে এ পথে পা বাড়িয়েছি,
কিন্ত এখন আল্লাহর ভয় আমাকে প্রকম্পিত
করেছে । তোমাকে আল্লাহর দোহাই আল্লাহকে ভয়
কর ।এ কথা শুনে লোকটির সম্ভিত ফিরে আসলো
এবং মহিলাকে বিপুল সম্পদ দিয়ে স্বসম্মানে পৌঁছে
দিল ``

আমি অনুমান করলাম মসজিদে কম করে হলেও
সাত থেকে আট শ র মতো মুসুল্লি এসেছে । এদের
প্রায় সবাই হুযুরের গল্পে প্রভাবিত হলো এবং এক-
যোগে সুবহানাল্লাহ বলে উঠলো। কিন্তু আমার একটু
খটকা লাগলো। আমার একটা দোষ হল কোন কথা
বা গল্পকেই বিনা বিচারে গ্রহন করা আমার স্বভাব-
বিরোধী । আমার বিচারের প্রথম মানদণ্ড হলো
বিবেক । বিবেক বিরোধী যে কোন কথাই প্রথম
বাছাইয়ে বাতিল। তারপর থাকে দলিল প্রমানের প্রশ্ন।
এই গল্পটাকে অনুকরণীয় হিসেবে মেনে নিতে
আমার বিবেক চরম বিরোধিতা করলো । আর এর
অসারতা উপলব্ধির জন্য বিবেককে বেশী খাটাতে
হলো না । প্রিয় পাঠক কিছু না বুঝে আপনি যদি
কথায় কথায় সুবাহানাল্লাহ মার্কা মুসলিম না হয়ে
থাকেন তবে আশা করি একটু চিন্তা করলে সহজেই
বুঝতে পারবেন ।
একজন লোক এতো নফল ইবাদাত
করছে যে তার পরিবার পরিজনের ভরণ পোষণের
মত গুরুদায়িত্ব ভুলে গিয়ে তাদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে
দিচ্ছে ।
পরিবারের আয় রোজগারের দায়িত্ব যা
স্বামীর আঞ্জাম দেয়ার কথা, তা স্ত্রীর কাঁধে চাপিয়ে
তাকে বাড়ির বাহিরে বের করা হচ্ছে ।
স্ত্রীকে অসৎ ও চরিত্র ধংসের পথে পা
বাড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে ।
সবশেষে ভিক্ষাবৃত্তি ও পরনির্ভরতার
দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে ।
এবার আপনাদের প্রতি আমার প্রশ্ন - এমন ইবাদাত
কি ইসলাম আপনার কাছে দাবি করে ?
নিশ্চয়ই আপনি বলবেন যে ইবাদাত আল্লাহর না-
ফরমানির দিকে ঠেলে দেয় তা কখনো ইসলাম
দাবী করতে পারে না । আসলেও তাই, এটা
ইবাদাত নয়। এমনটা মুলত প্রকারান্তরে আল্লাহর
নাফরমানী বৈ অন্য কিছু নয় । সাধারণত এসব
গল্পগুলো শুরু করা হয় এক নাম না জানা বুজুর্গের
কথা বলে । গল্পের শুরুতেই বুজুর্গ শব্দটি শুনে
এক অন্ধ ভক্তি নিয়ে তার গল্প মানুষ শুনতে থাকে
আর আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়ে ।
আমাদের দেশে ওয়াজ নসিহতের নামে এমন
অসংখ্য গল্প প্রচলিত আছে যা সরলমনা মুসলিম
দের পথহারা করছে । তারা ইবাদাত মনে করে
আল্লাহর নাফরমানি করছে । যাদের কাছ থেকে
প্রকৃত ইসলাম জানবে তারাই তাদের বিপথগামী
করে ফেলছে । এসব আলেমরা বুঝে না বুঝে মুলত
ইসলামের শত্রুদেরই অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে
যাচ্ছে । মূল জ্ঞানে ভুল মুসলিম জাতিকে এভাবেই
আত্নমর্যাদাহীন ভারসাম্যহীন চরিত্রহীন ও গোলামে
পরিনত করেছে।আজ মুসলিম উম্মাহ তার স্বকীয়তা
হারিয়ে জোকারে পরিণত হয়েছে ।
আফসোস ! মুসলিমরা আখেরাত এবং দুনিয়া উভয়
জগতের মধ্যকার যোগসুত্রতা হারিয়ে আজ দিশেহারা ।
এটাই চাইছিলো ইসলামের শত্রুরা । তারা চায়
মুসলিমদের ঘুম পাড়াতে, গৃহবন্দী করে রাখতে চরিত্র-
হীন করতে। তারা সফল । অধিকাংশ মুসলিমই আজ
ঘুমন্ত আর নিজেদের মধ্যেই নিজেরা গৃহবন্দী ।
মুসলিমদের এই বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেতে হলে
সর্বপ্রথম তাদের সঠিক ইসলাম চর্চার জেহাদ করতে
হবে । আর সঠিক ইসলাম জানতে হলে অবশ্যই তা
সঠিক উৎস থেকেই হতে হবে। তা হল কিতাবুল্লাহ ও
সুন্নাতে রাসুলুল্লাহ। বন্ধুগন আসুন সঠিক ইসলাম জানি
মানুষকে সতর্ক করি । আল্লাহ না করুন এমন যেন
না হয় মুসলিম জাতি মার খাবে অথচ মার খাওয়ার
কারণও জানবেনা ।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৩:৫২

আলোকিত চিন্তা বলেছেন: ঠিক, মুসলিমদের জেগে উঠা উচিত... অন্ধবিশ্বাস মুসলিমদের অন্ধ করে রাখে...

১১ ই মে, ২০১৭ রাত ১:০২

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: হ্যাঁ । নিজেদের আগে জেগে ওঠা উচিৎ

২| ০৫ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭

Al Rajbari বলেছেন: চালিয়ে যান.!

১১ ই মে, ২০১৭ রাত ১:০০

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: দোয়া রাখবেন। পাশে থাকবেন । শুকরিয়া

৩| ০৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫২

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: Click This Link

৪| ০৮ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৫২

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: Click This Link

৫| ১১ ই মে, ২০১৭ রাত ১২:৪৭

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ সবাইকে

৬| ১১ ই মে, ২০১৭ ভোর ৪:৫৮

সৌমিক আহমেদ খান বলেছেন: জুমা বানান ভুল করসেন
আপনার পাপ হইসে

৭| ১১ ই মে, ২০১৭ দুপুর ২:৪৩

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: সউমিক ভাই আপনিও কি খতিব শাবের কাতারে সামিল হইলেন নাকি হে

৮| ১১ ই মে, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭

সমাজের থেকে আলাদা বলেছেন: Click This Link

৯| ২৯ শে মে, ২০১৭ রাত ২:২৪

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: আপনার লেখা পড়েছি

১০| ২৯ শে মে, ২০১৭ রাত ৩:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


এসব ম্যাঁও প্যাঁও গল্পের শেষ নেই; ব্লগে শতবার শুনেছি।

১১| ২৯ শে মে, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: ম্যাও প্যাঁও গল্পগুলো যেহেতু এখনো মসজিদে চলে তো কথা তো বলতেই হয় । আপনার ভালো না লাগলে না শুনলেও চলবে

১২| ২৯ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৮

মুহাম্মাদ খাইরুল ইসলাম বলেছেন: থেমিসের মূর্তি সংক্রান্ত লেখাটি হঠাৎ সরিয়ে ফেলার কারণ বুঝলাম না ভাই চাঁদগাজী , ভালইত আলোচনা সমালোচনা চলছিল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.