নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেহ নই।

শরীফ আজাদ

আমি সব, আমি সবাই, আমিই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। আমি নীরবতা, আমিই কোলাহল। আমি অনুভূতিহীন, আমিই সকল অনুভূতি! আমিই তুমি।

শরীফ আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুভি ক্লাউড এটলাসঃ গভীর জীবন তত্ত্বের এক আউলা জাউলা মহাকাব্য

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৮:৪৬



আপনি কি জানেন আপনি অমর? আপনার কোন মরণ নাই? আপনি জন্মও নেন নাই কখনও? জন্ম না থাকলে মরণ থাকবো না এইডাই স্বাভাবিক। তবে আপনার জন্ম হয় নাই এইডা আপনি মানবেন ক্যামনে? আর এই কথা আপনের বাপ মা হুনলে পাগলা গারদে পাঠানোর আগে হাতের কাছে যা পাইব তা দিয়া পিডানোর সম্ভাবনাই বেশী। কিন্তু এই খবরটা যে অনেক পুরান এবং “সইত্য”! কথাডা বিশ্বাস না হইলেও অমরত্বের কথায় কারো কারো মনে খুশির ভাব উঁকি দেওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারন মানুষ সধারনত মরতে চায়না। কিন্তু অমরত্ব জিনিসটা তেমন মিষ্টি না যেমনটা মনে হইতে পারে। ইংরেজ লেখক জনাথন সুইফটের লেখা “গালিভারস ট্র্যাভেলস” এ কপালে পারমানানট সিল মারা কয়েকটা চরিত্র আছে যারা অমর। অমরত্বের কারনে তাঁদের জীবনটা কি পরিমাণ দুর্বিষহ হইয়া পরে তা অত্যন্ত যৌক্তিক ও বিবিডলি বর্ণনা করা হইছে বইটাতে। পড়লে অমরত্বের স্বাদ মিটা যায়। কিন্তু সত্যটা হইল আপনিও যে অমর! তবে আপনার অমরত্ব সুইফটের বইয়ের অগো মত না। আপনেরটা অন্য রকম। সেইটা কেমন জানার আগে আসেন আগে জাইনা লই আপনে আসলে কে? প্রশ্নটা হাস্যকর হইলেও উত্তরটা খুব সহজ না। আসেন আপনারে ল্যাংটা কইরা আপনের আসল পরিচয়ডা জানি। তয় এইখানে কাপড় চোপড় খোলার কোন ব্যাপার নাই। শুধু আপনার আর্টিফিশিয়াল আইডেন্টিটি গুলা একটা একটা কইরা খুলবো। আপনি কে? প্রশ্নটা শুনার পর প্রথমেই আপানার নিজের নামটা মনে আসতে পারে যেইটা আসলে আপনি না। নামটা ফিকশন। ছোট বেলায় কেউ একজন রেখে দিছে। আপানার নাম সলিমুল্লাহ হইলে তা না হইয়া কলিমুল্লাও হইতে পারতো। তারপর আসে আপনার বাপ-মা, বংশ পরিচয়। তারাও আপনারে আপনার প্রয়োজনে "জন্ম" দেয় নাই, তাঁদের নিজেদের প্রয়োজনে দিছে। একটু গভীরভাবে ভাবলেই বিষয়ডা বুঝতে পারবেন। তারপর আসে আপনার পড়ালেখা, চাকরি ও অন্যান্য পরিচয় সমূহ যার কোনডাই আসলে আপনার সত্যিকারের পরিচয় বহন করেনা। শেষে আসে আপনার শরীর। মজার বিষয় হইল আপনার শরীরের বেশীরভাগ অঙ্গই রিপ্লেইসেবল যা প্রমাণ করে শরীরটাও আপনি না। তারপর আসে আত্মা অথবা কন্সাশনেস যার কোন আকৃতি নাই। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় আপনি আসলে জীবনের একটা এক্সপ্রেশন মাত্র যার কোন নাম নাই, পরিচয় নাই। যেই আপনারে আপনি চিনেন সে হইল পরিচয়ের বস্তা কান্দে নিয়া রাস্তায় রাস্তায় ঘোরা এক টোকাই। যেহেতু আপনি শুধুই একটা এক্সপ্রেশন তাই আপনার মরণ নাই এইডা স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষ যে প্রতিদিন মরে? সেইটা আসলে মানুষ মরে না, শরীর মরে। শরীর হইল সেই এক্সপ্রেশনের বাহক। এক্সপ্রেশন এক বাহক থাইকা আরেক বাহকে যায়। মাঝখানে বাহকের মেমরি গুলা চইলা যায়। হিন্দু মিথলজিতে এইডারে বলে পূর্বজন্ম ও পরজন্ম। কিন্তু এইডা মিথ হইলেও সারা দুনিয়ার বিভিন্ন মানুষের কাছে ও পপুলার কালচারে এমনকি বিজ্ঞানের কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্ব বহন করে।

আসেন এইবার মুভিতে ঢুইকা পরি। মুভির মেইন থিম হইল রিইনকারনেশন অর্থাৎ পুনরায় অথবা বার বার “জন্ম” নেওয়া। অন্যকথায় অনন্তকাল শরীরে শরীরে ঘুইরা বেড়ানো। মুভির স্টোরিটা হইল আলট্রা কমপ্লেক্স। দেখতে গিয়া আপানার মাথার তার গুলাতে গিটটু লাইগা যাইব এইডা শিউর। সেই জন্য অত্যন্ত মনযোগের সহিত ধৈর্য নিয়া আপানারে মুভিটা দেখতে হইব। ভালো বুঝার জন্য একাধিকবার দেখারও প্রয়োজন হইতে পারে। মুভিটার ভিত্রে ছয়টা কাহিনী। তাও সিরিয়ালি দেখায়না। আউলা জাউলা কইরা দেখায় যা আপনের মেজাজ খারাপ করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু এ ছাড়া পরিচালকের আর কোন উপায় ছিল বইলা মনে হয়না। এই মুভিটা দেখলে আপনার ছয়টা মুভি এক লগে দেখা হইয়া যাইব। ছয়টা আবার ছয় জানরার। এই ছয়টা গল্পের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম কানেকশন আছে যা আপনারে একটু কষ্ট কইরা মাথা খাটাইয়া বুঝতে হইব। চরিত্রগুলার ট্র্যাক ধইরা রাখতে আপনার চোখের পানি আর নাকের পানি এক হইয়া যাইব। তয় একবার ধইরা ফালাইলে কি মজাডা যে পাইবেন তা না বুঝার আগে বুঝবেন না! মুভিতে আপনি ড্রামা, রোমান্স, ক্লাসিক, থ্রিলার, সাইন্স ফিকশন ও এপকেলিপ্স সব ধরনের স্বাদ পাইবেন। পাইবেন অসাধারন অভিনয় আর মারাত্নক পারফেক্ট মেকআপের স্বাদ।

মুভিতে অতীত ও ভবিষ্যৎ সহ কয়েক’শ বছরের ঘটনা দেখানো হইছে। বোঝানো হইছে যুগে যুগে মানুষের আসলে মৌলিক কোন পরিবর্তন ঘটে নাই। দেখানো হয় একজনের এক্সপ্রেশন বা আত্মা কিভাবে শরীর থেকে শরীরে ঘুরে বেড়ায়। প্রতিটা "জন্মে" কিভাবে একজন মানুষের এথিক্স বিবর্তিত হয়। দেখানো হয় মানুষের সুখ দুঃখ, বিশ্বাস-অবিশ্বাসের মাত্রা সব শতাব্দীতেই সমান ভাবে কাজ করে। আরও অনেক কিছু দেখানো হয় যা আপনি নিজে নিজে বুঝতে পারবেন। লেইখা বুঝানো সম্ভব না।

মুভিতে টম হ্যাঙ্কসের অভিনয়ের কারিশমা দেইখা চোখ জুরাইয়া যায়। মুভিটার আউলা জাউলা কাহিনী আর গভীর জীবন তত্ত্বে ভারী হওয়ার কারনে দুনিয়ার বেশীর ভাগ মানুষই পছন্দ করে নাই। আইএমডিবিতে দেখবেন অনেকে পরিচালকরে ধুইয়া ফালাইছে। কিন্তু আপনার একটু মাথার মগজ আর ধৈর্য ইনভেসট করলে মুভিটা হইব আপনার জন্য একটা লাইফটাইম রাইড। এখনো না দেখলে অথবা একবার দেইখা কিছুই না বুঝলে মুভিটা নিয়া বইসা পরতে পারেন।

আমার রেটিং ১০

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৭

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: দেখমু

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৩

শরীফ আজাদ বলেছেন: দেইখা ফালান।

২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৪

এম্বিগ্রামিষ্ট জুলিয়ান বলেছেন: আমার অসাধারণ লেগেছে মুভিটা। অস্থির মেক আপ এর ব্যবহার সারা মুভি জুড়ে :)

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৩৬

শরীফ আজাদ বলেছেন: আসলেই তাই। তবে মুভির শিক্ষাটা হইল আসল। ধন্যবাদ।

৩| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪০

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
আমার দেখা ১ অফ দ্যা বেস্টস!
অসাম মুভি ||

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৪২

শরীফ আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ। শুনে ভালো লাগল :)

৪| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৪৩

সুমন কর বলেছেন: ২দিন আগে ডাউনলোড করেছি। সময় করে দেখবো। আপনার রিভিউ পড়ে আগ্রহ আরো বেড়ে গেল।

তয় ভাইজান লিখার ভাসা এমন ক্যান !! উচ্চারণ যেভাবে করেন মনে হয়, সেভাবেই লিখে দিয়েছেন।

১ম লাইক।

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:০৮

শরীফ আজাদ বলেছেন: এই ভাষায় ইচ্ছা কইরাই লিখছি। লেখার ভাষার কনভেনশন ভাঙ্গা আর কি। তয় সবসময় এই ভাষায় লিখিনা, কথা তো বলিই না। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৫| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৬

হাসান মাহবুব বলেছেন: তিন ঘন্টার মুভি তাও আবার অতি জটিল! আগে যখন অফুরন্ত সময় ছিলো তখন এসব কোনো ব্যাপার ছিলো না। ভালো করে বোঝার জন্যে দুই ঘন্টার মুভি দরকার হৈলে চাইর ঘন্টা লাগায়া দেখতাম। আর এখন! :(

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪

শরীফ আজাদ বলেছেন: হাসান ভাই, একদিন সময় বের করে দেখে নিয়েন। পস্তাইবেন না। আমিও আগের মত মুভি দেখতে পারিনা। সময় পাইনা। কিন্তু এ ধরনের মুভি শত ব্যস্ততার মাঝেও সময় নিয়ে দেখে নিতে হয়।

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:৫১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: আমার অন্যতম প্রিয় একটা ছবি। সব গল্পে একই মানুষেরা ঘুরেফিরে আসছে, অসাধারণ থিম। একটা গল্পও লেখার চিন্তা করেছিলাম ছবি দেখে, আপসোস, লেখা হয় নাই।

ভালো হয়েছে রিভিউ।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৪

শরীফ আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ। শুনে ভালো লাগল :)

৭| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:০৭

নতুন বলেছেন: Our lives are not our own. From womb to tomb, we are bound to others. Past and present. And by each crime and every kindness, we birth our future.

--- অদ্ভুদ চমতকার একটা মুভি...

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৫

শরীফ আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.