নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদিহা মৌ

মাদিহা মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৩

০১.

মাঝরাত পেরিয়ে গেছে। হল ঘরের দেয়ালে টাঙানো ঘড়িটা তিনবার ঢংঢং করে বেজে জানান দিল, রাত এখন তিনটা। দোতলা বাড়ির উপরতলা থেকে আবছা একটা ছায়ামূর্তিকে সিঁড়ি বেয়ে নামতে দেখা গেল। ছায়াটা নিঃশব্দে বাড়ির সদর দরজার কাছে এগিয়ে যাচ্ছে। অতি সন্তপর্ণে দারোয়ানকে পাশ কাটিয়ে বাগানের দিকে এগিয়ে গেল। রাতের ঘুটঘুটে অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়ার আগে একবার ফিরে তাকাল দারোয়ানের দিকে। দারোয়ানও ছায়ামূর্তির দিকেই তাকিয়ে আছে। কিন্তু কিছুই বলছে না। বলবেও না। প্রতিদিন দেখতে দেখতে গা সওয়া হয়ে গেছে।

২.

হামিদ চৌধুরীর বয়স পঁচাত্তর পেরিয়ে গেছে। বয়সের তুলনায় এখনও বেশ শক্ত সমর্থ আছেন তিনি। নিজে নিজেই চলাফেরা করতে পারেন, কারো সাহায্যের দরকার হয় না। বাড়ির সামনের ফুলবাগানটার পরিচর্যা করেই সময় কাটে তাঁর।

বাড়িটা সেই ব্রিটিশ আমলের। কালের বিবর্তনে জৌলুস হারিয়েছে। বেশ কিছু জানালার কপাট ভেঙে গেছে। ওগুলোকে তাই পেরেক গেঁথে স্থায়ীভাবে বন্ধ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দেয়ালগুলো শ্যাওলায় ছেয়ে আছে।
বেহাল অবস্থা!

কিন্তু বাড়ির সামনের ফুলবাগানটা খুবই সুন্দর। রকমারি দেশি ফুলের সমাহার। প্রতিদিন কত ফুল যে ফুটে থাকে! অদ্ভুত সুন্দর সেই দৃশ্য।

৩.

হামিদ চৌধুরীর এক ছেলে, এক মেয়ে। তনিমা আর রাকিব। দুজনেরই পড়াশোনা শেষ। বিয়ে-থা হয়ে করে ঢাকায় থাকে দুজনেই। হামিদ সাহেব মাঝে মাঝে দেখতে যান ওদেরকে। ছোট ছোট বেশ কয়েকটা নাতি-নাতনী আছে তাঁর।
এই কয়েকদিন আগেই তনিমার বাসা থেকে ঘুরে এসেছেন। তাকে দেখলে তনিমার একমাত্র ছেলেটা খুশিতে অস্থির হয়ে যায়। ‘নানা আ গায়া, নানা আ গায়া’ বলে পুরো বাসায় হুলুস্থুল কাণ্ড শুরু করে দেয়। মা-বাবা দুজনেই চাকরিজীবি হওয়ায় পিচ্চি ছেলেটা স্কুল থেকে ফিরে এসে বাসায় একা থাকে। নানাকে পেলে তাই আর পিছু ছাড়ে না । কত গল্প তার! কার্টুনের গল্পই বেশি। হাত পা নাচিয়ে রিমোট হাতে নিয়ে বলছিল,
'জানো নানা, আমার প্রিয় কার্টুন হলো ডোরেমন! তুমি দেখবে?' বলতে না বলতেই সে টিভি অন করে বসে। নানার উপস্থিতি ভুলে গিয়ে তন্ময় হয়ে তার প্রিয় অনুষ্ঠান দেখতে থাকে। কিন্তু হুট করে ইলেক্ট্রিসিটি চলে যাওয়ায় সে চিৎকার করে বলে, 'ইয়ে নেহি হো সাক্তা!'
হামিদ সাহেব ঘোলা দৃষ্টিতে তখন তাঁর নাতির দিকে তাকিয়ে ছিলেন।

তনিমার বাসা থেকে গিয়েছিলেন রাকিবের বাসায়। বাচ্চাগুলোকে সব ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছে ছেলেটা। চ্যাটাং চ্যাটাং করে ইংরেজিতে ওরা কী বলে, হামিদ সাহেব তার কিছুই বোঝেন না। বোঝার চেষ্টাও করেন না। আর তার বৌমা সন্ধ্যা হতে না হতেই গিয়ে বসে সিরিয়াল দেখতে। হিন্দি সিরিয়াল। ওইদিন সম্ভবত সিরিয়ালে মজার কিছু দেখাচ্ছিল। পাশের বাসার ভাবীও চলে এসেছিল একসাথে দেখবে বলে।
পাশের রুমে শুয়ে শুয়ে হামিদ সাহেব দুজনের হাসাহাসি আর হিন্দি ডায়ালগ কপচানি শুনছিলেন। তাঁর মন প্রচন্ড খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এতদিন পর ছেলে আর মেয়ের বাসায় বেড়াতে এসে তাঁর একটুও ভালো লাগেনি। এসব কী শিখছে তাঁর প্রজন্ম? বড় দুঃখ পেয়েছিলেন তিনি। তবুও কাওকে কিছু বলেননি। বিদেশী সংস্কৃতিতে ডুবে থাকা শহরের এই দমবন্ধ পরিবেশে এসে শ্বাস নিতেও যেন কষ্ট হচ্ছিল। চিরচেনা পিত্রালয়ে ফিরে যাওয়ার যাওয়ার জন্য ছটফট করছিলেন তিনি।

ফিরে এসে আগে বাবার জরাজীর্ণ স্টাডি রুমে ঢুকলেন হামিদ সাহেব। তার বাবা খুব পড়ুয়া ছিলেন। তাক থেকে খুব যত্নে রাখা একটা বই বের করলেন তিনি। বইয়ের পাতা উল্টে একটি রঙিন কাগজের টুকরো খুঁজে বের করলেন। যেখানে বিভিন্ন ধরনের জীবজন্তু আর প্রজাপতির ছবি আঁকা। আজ থেকে বহুবছরের পুরোনো কিছু কথা খুব মনে পড়ছে।

৪.

সাল ১৯৫২।
দুপুর ১২টা।
ধড়াম করে খুলে গেল চৌধুরী মঞ্জিলের দরজা। তিন চার জন ছেলে হুড়মুড় করে ঢুকে পড়ল ঘরে। ১৪৪ ধারা জারি হওয়ায় আবির চৌধুরী আজ বাসা বাসা থেকে বের হননি। স্ত্রী সামিনা চৌধুরী তার ছেলে হামিদকে পড়াচ্ছিলেন। আবির বসে বসে পেপার পড়ছিলেন। দরজা খোলার শব্দে চমকে উঠে হলরুমে এগিয়ে যান তিনি। ভার্সিটির কিছু পুরোনো বন্ধু আর ছোট ভাইয়েরা এসেছে। সামিনাও আবিরের পিছু পিছু এগিয়ে যান। দরজার কাছে দাঁড়িয়ে সামিনা তাদের কথাবার্তা শুনতে পান। তাদের কথাবার্তা থেকে বুঝতে পারেন ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভাঙ্গতে যাচ্ছে। আবিরের বন্ধুরা তাকে নিতে এসেছে মিছিলে যোগ দিতে। আবির সামিনাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ওদের সাথে বের হয়ে যাচ্ছেন। সামিনা আবিরকে ডাকতে ডাকতে সদর দরজা পর্যন্ত দৌড়ে গেলেন। কিন্তু আবির ততক্ষণে নেমে পড়েছেন রাস্তায়।

ছোট্ট হামিদ তখনো ঠিক বুঝে উঠতে পারেনি, তার বাবা কোথায় গেছে। মাকে বারবার জিজ্ঞেস করার পরও মা জবাব দেয়নি। দুপুরের দিকে যখন প্রচণ্ড হৈ হট্টগোলের শব্দ শোনা যাচ্ছিল, তখন কেবল হামিদকে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলেন। সন্ধ্যা হওয়ার পরও আবির ফিরলেন না। সারাটা রাত নির্ঘুম পার করে দিলেন সামিনা চৌধুরী।

আবিরের খোঁজ জানতে পরদিন সকালে হামিদকে নিয়ে বের হলেন সামিনা। নবাবপুর থেকে মেডিক্যাল কলেজ বেশ দূর। কিন্তু কোন যানবাহন চোখে পড়ল না সামিনার। হেঁটে যাওয়া সম্ভব না। পুরো শহরটা থমথমে। খুবই অল্প লোকজন রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করছেন। আগের দিন ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ড ও বাঙালিদের প্রবল প্রতিবাদ দেখে ভয় পেয়ে সেনাবাহিনীকে ঢাকা শহরে মোতায়েন করা হয়েছে। আর নবাবপুর রোডে সংবাদ অফিসের কাছেই মিলিটারির সবচেয়ে বড় ছাউনি। সুতরাং এই এলাকায় এখন যানবাহন চলাচল করার প্রশ্নই আসে না।

খোশমহল রেস্তোরাঁর অপরপাশের চিপা গলির মাথায় ছেলেকে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন সামিনা। ভাবছেন কী করে আবিরের খবর পাওয়া যায়। হামিদ তখন মায়ের মুঠো থেকে নিজের হাতকে মুক্ত করতে চাচ্ছে। বিরক্ত হয়ে ছেলের দিকে তাকালেন তিনি। রাগত স্বরে জিজ্ঞেস করলেন,
'কী ব্যাপার?'
হাত তুলে রাস্তার ওপারে দাঁড়ানো অহিউল্লাহকে দেখালো হামিদ।
অহিউল্লাহ হামিদদের প্রতিবেশী। দুজনের মধ্যে খুব ভাব। অহিউল্লাহ সুন্দর করে ছবি আঁকতে পারে। সে হামিদকে অনেক ছবি এঁকে দিয়েছে।

অহিউল্লাহ রেস্তোরাঁর সামনে দাঁড়িয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে কী যেন দেখছে। অহিউল্লাহের কাছে যাবার জন্য হামিদ নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল। পা বাড়িয়ে সামনে এগুতেই গুলির শব্দে থমকে দাঁড়ালো হামিদ। কোত্থেকে একটা রাইফেলের গুলি এসে অহিউল্লাহর মাথা গুড়িয়ে দিল। মাটিতে পড়ে গেল সে। রক্তে ভেসে গেল চারপাশ। সাথে সাথে তাকে গাড়িতে তুলে নেওয়া হলো। সামিনা হামিদকে বুকে জড়িয়ে দৌড়ে নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন।

রাতে খবর পেলেন, মিলিটারিদের গুলিতে আবির মরে গেছেন। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স এসে তার লাশটা নিয়ে গেছে।
অহিউল্লাহর মত।

৫.

অহিউল্লাহের আঁকা ছবিটা হাতে নিয়ে পুরোনো সব কথা মনে পড়ে গেল হামিদ সাহেবের। ভাবতে ভাবতে তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগল। বাংলা ভাষাকে রক্ষা করার জন্য, উর্দুকে বর্জন করার জন্য তাঁর বাবা প্রাণ দিয়েছিলেন। অথচ এখন তাঁর নিজের নাতি-নাতনীরাই হিন্দি কার্টুন দেখতে পছন্দ করে । হিন্দিতে কথা বলে।

যে বিষ পাকিস্তানীরা রাইফেল-বুলেট দিয়েও বাঙালিদের রক্তে ঢোকাতে পারেনি, ইন্ডিয়ানরা সেই বিষ সিরিঞ্জ দিয়ে ইঞ্জেক্ট করে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে! (বোল্ড)
এই দুঃখ তিনি কোথায় রাখবেন? কাকে বলবেন?

৬.

ইয়া বড় এক ছুরি নিয়ে বিদঘুটে চেহারার এক ডাকাত হামিদ সাহেবকে তাড়া করছে। প্রাণপণ দৌড়েও ডাকাতটার কাছ থেকে দূরে সরতে পারছেন না তিনি। দৌড়াতে দৌড়াতে একবার পিছন ফিরে চাইলেন। ডাকাতের চেহারাটা কেন যেন তার নাতির প্রিয় হিন্দি কার্টুন ডোরেমনের মত লাগছে! হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন হামিদ সাহেব। ডোরেমনের মত ডাকাতটা ছুরি উঁচিয়ে বলল,
'তোকে হিন্দিতেই কথা বলতে হবে। বাংলা বলতে পারবি না!'
কথাটা হিন্দিতে বলেছে ডাকাতটা। হিন্দি ভাষা তো তিনি জানেন না। তাহলে এই কথাটা কীভাবে বুঝতে পারলেন? ভাবতে ভাবতেই তিনি ডাকাতের দিকে তাকালেন। ডাকাতটা ছুরি বাগিয়ে আসছে তার দিকে। ভয়ে তার শ্বাস প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে চাইলো। কোথায় যেন একটা ঘড়ি টিক টিক করে সময় জানাচ্ছে।

ধরমর করে বিছানা থেকে উঠে বসলেন হামিদ সাহেব। পুরো শরীর ঘেমে নেয়ে গেছে তার। ওহ! এতক্ষণ তাহলে উনি স্বপ্ন দেখছিলেন!

টেবিল থেকে এক গ্লাস পানি পান করলেন তিনি। ঘড়ির দিকে তাকিয়েই আঁৎকে উঠলেন। ভোর চারটা বাজে। এত দেরি হয়ে গেছে!
আজ তো একুশে ফেব্রুয়ারি! আজকে না ভোর বেলায় প্রভাত ফেরি হবে? তাঁর আরো আগেই বের হওয়া উচিৎ ছিল। তাড়াহুড়ো করে ঘর থেকে বের হলেন তিনি।

৭.

দারোয়ান আজও গেটের সামনে বসে ঝিমুচ্ছিল। হামিদ সাহেবের পরিচিত পায়ের আওয়াজ পেয়ে জেগে গিয়েছে। প্রতিদিনই সে টের পেয়ে যায়। কিছু বলেনি কোনদিন। জানতে চায়নি প্রতিদিন মধ্য রাতে হামিদ সাহেব কোথায় যান! কী করেন!

হামিদ সাহেব ততক্ষণে বাগানে নেমে গিয়েছেন। সদ্য ফোটা ফুলগুলো তুলতে শুরু করেছেন।
দারোয়ান রায়হান আলী ঘুমঘুম চোখে হামিদ সাহেবের কাজ দেখছে। প্রতিদিনই দেখে। হামিদ সাহেব ভেবেছেন রায়হান কিছুই খেয়াল করে না। আসলে রায়হান একদিন তার পিছু পিছু গিয়ে দেখে এসেছে, কী করেন হামিদ সাহেব। তিনি বাগানের ফুলগুলো নিয়ে প্রতিদিন শহরের সবগুলো শহীদ মিনারে ঘুরে বেড়ান। শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে থাকেন। তবে রায়হান যে তাকে অনুসরণ করেছে, এটা তিনি বুঝতেও পারেননি। ওইদিনের পর থেকেই লোকটার প্রতি অদ্ভুত শ্রদ্ধা এসে গেছে রায়হানের।

ফুল নিয়ে শহীদ মিনারে এসে দাঁড়ালেন হামিদ সাহেব। জুতা খুলে সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। চোখ বন্ধ করে তাঁর বাবা, অহিউল্লাহসহ সকল ভাষা শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করলেন।

কিন্তু নামতে গিয়েই বাঁধল বিপত্তি। হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন তিনি। গড়াতে গড়াতে সিঁড়ির শেষ ধাপে এসে ঠেকল তার দেহটা। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। হাঁটুর মালাই চাক্কিও সম্ভবত ভেঙে গেছে। অসহায়ভাবে অচেতন হয়ে পড়ে রইলেন শহীদ মিনারের সামনে।

৮.

কতক্ষণ পর বলতে পারবেন না, কারোর কথোপকথনে তার জ্ঞান ফিরল। দুইটা মেয়ে কথা বলতে বলতে শহীদ মিনারের দিকে আসছে। তখনো আলো ভালভাবে ফোটেনি। ওদের কথোপকথনের কিছু অংশ কানে ভেসে এল হামিদ সাহেবের।
একজন খুব খেদ নিয়ে বলছে,
'দোস্ত কাল রাতে বাবার জন্য কুছ তো লোক কাহেঙ্গে দেখতে পারিনি।'
'কেন, তোর বাবা কি করেছে ?'
'আরে বলে কি, খবরের চ্যানেল দে! কি সব টক শো হচ্ছিল, একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে। সেইটা দেখতে অস্থির হয়ে গিয়েছিল।'
'আরে বলিস না, বাবাগুলো কেন জানি এমনই হয়............... আরে দোস্ত দেখ, কে যেন পড়ে আছে শহীদ মিনারের সামনে .........'

হামিদ সাহেব আর কিছুই শুনতে পেলেন না। তিনি আর কিছু শুনতে চানও না। একটা অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার বুক চিড়ে। এমন আরও বহু ভাষা শহীদের অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাসে শহীদ মিনারের বাতাস ভারী হয়ে থাকে।

এইভাবে কতদিন চলবে? হামিদ সাহেব জানেন না। জানেন না ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়া শহীদেরাও। জানবেও না............

বিঃদ্রঃ ভাষা আন্দোলনের পাঁচ শহীদের নাম আমরা সবাই জানি। সালাম, বরকত, শফিক, জব্বার এবং শফিউর রহমান। এছাড়া আরো অনেক ছাত্র শহীদ হয়েছিলেন, যাদের নাম জানা যায়নি। কিন্তু একজন আছেন, যাঁর পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু তবুও আমরা তাঁর সম্পর্কে জানি না। কিশোর অহিউল্লাহ। ভাষা আন্দোলনের পরদিন বাইশে ফেব্রুআরিতে আবারো মিলিটারির গুলিতেই অহিউল্লাহ মারা যান। তাঁকে উৎস্বর্গ করছি গল্পটা

ডোরেমন বাংলায় ডাবিং করার আগেকার লেখা গল্প এটা। ২০১৪র ফেব্রুআরির। সে সময়ে ডোরেমন দেখে দেখে বাচ্চাদের হিন্দি বলার প্রবণতা এত বেশি বেড়ে গিয়েছিল শুনলেই রাগে গা জ্বলে যেত। আমি আমার ছোট ভাইকে প্রচুর বকেছি এই নিয়ে।
ডোরেমন বাংলায় ডাবিং করার এই উদ্যোগের জন্য সরকারকে সাধুবাদ জানাই। সাথে সাথে সিরিয়ালের চ্যানেলগুলি বন্ধ করে দিলে আরো খুশি হতাম।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৬

প্রথম বাংলা বলেছেন: ভাল একটা লিখা, ভাল লাগলো।
তবে হুমায়ূন স্যারের ছায়া আছে........।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৯

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ!

হুমায়ূন স্যারের লেখার ছায়া আছে - শুনে খারাপই লাগল। চেষ্টা করেছি না রাখার।

তবুও ধন্যবাদ আপনাকে। :)

২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫০

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যে বিষ পাকিস্তানীরা রাইফেল-বুলেট দিয়েও বাঙালিদের রক্তে ঢোকাতে পারেনি, ইন্ডিয়ানরা সেই বিষ সিরিঞ্জ দিয়ে ইঞ্জেক্ট করে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে!

এই দুঃখ তিনি কোথায় রাখবেন? কাকে বলবেন?

একটা অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো তার বুক চিড়ে। এমন আরও বহু ভাষা শহীদের অতৃপ্ত দীর্ঘশ্বাসে শহীদ মিনারের বাতাস ভারী হয়ে থাকে।
এইভাবে কতদিন চলবে? কতদিন ??? কতদিন??????????????

দারুন ভাবনায়, লেখায় গভীর শ্রদ্ধা!

+++++++++++++++++++++++++++++++

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:২০

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া! :)

৩| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৯

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: ভালো লেগেছে লেখাটা।

বিভিন্ন ভাষা জানা বা বলতে পারা নিশ্চয় খারাপ কিছুনা।

আর আমরা বাচ্চাদের জন্য ভালো অনুষ্ঠান এখনো তৈরি করতে পারিনি, এটা আমাদের ব্যর্থতা

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:২২

মাদিহা মৌ বলেছেন: এক্সেক্টলি! বিভিন্ন ভাষা জানা বা বলতে পারাটা অবশ্যই খারাপ কিছু নয়। কিন্তু জানতে হবে, সেটা কোথায় কখন প্রয়োগ করতে হবে। সাকিবকে যখন ইন্ডিয়ায় হিন্দি কথা বলতে আমন্ত্রণ জানানো হয়, কিংবা তামিমকে উর্দুতে, তখন তারা যেভাবে ব্যাপারটা এড়িয়ে গেছেন, সেটা ছিল বুদ্ধিমত্তার বহিঃপ্রকাশ। সাকিব-তামিম কি হিন্দি-উর্দু জানেন না? হয়ত জানেন। তারা এটাও জানেন, কখন কোথায় বলতে হবে কিংবা হবে না।

এখনকার ছেলেমেয়েরা, বিশেষ করে মেয়েদের দেখেছি, যারা হিন্দিতে কথা বলে নিজেদের খুব স্মার্ট মনে করে। তাদের জন্য আমার এই গল্প …

আর বাচ্চাদের জন্য আমাদের এখনো ভাল কোন অনুষ্ঠান নেই কথা ঠিক - কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই হিন্দী ডোরেমনের চেয়ে ভাল কিছু তো রয়েছেই।

ধন্যবাদ।

৪| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১:৩৩

ফেরদৌস প্রামানিক বলেছেন: আমিও যেহেতু শিক্ষানবীশ গল্পকার তাই ভয়ে ভয়ে মন্তব্য করছি । লেখাটার প্লট এককথায় চমৎকার । কিন্তু গভীরতা কম , ঝাঁকুনি কম । আমি অবশ্য এটাও বলতে পারবো না যে কীভাবে তা লেখায় আনা যাবে । তবে তারপরেও পাঠকের মন ছুয়ে যায় ।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৪

মাদিহা মৌ বলেছেন: গল্পটা ঠিকঠাক দুই বছর আগের। তখন সবেই লেখালেখি শুরু করেছিলাম।

এজন্য লেখাটা তেমন একটা ভাল করতে পারিনি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ! :)

৫| ১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৪

বিজন রয় বলেছেন: অনেক অনে ক সুন্দর লেখা।
এমন লেখাই চাই।

+++

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: চেষ্টা করব। ধন্যবাদ ভাইয়া :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.