নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাদিহা মৌ

মাদিহা মৌ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বই কথাঃ ০৪ - শ্বাপদ সনে

১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:১২

আগেই বলে রাখছি, এটা কোন রিভিউ নয়। শুধুমাত্র আমার নিজের অনুভূতির বর্ণনা। কেউ বই রিভিউ ভেবে পড়ে বিরক্ত হলে আমার কোন দোষ নাই।



কাহিনি সংক্ষেপ

খুনের দায় এড়াতে প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর বন্ধুর সাথে এক অজপাড়াগাঁয়ে গা ঢাকা দিতে এসে আরো বড় বিপদে পড়ে গেল শিল্পপতির ছেলে জামশেদ। একের পর এক গ্রামবাসি খুন হচ্ছে অজানা কোনোকিছুর হাতে। প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর বন্ধুর মতে, এটা সেই কিংবদন্তির শ্বাপদ যা গ্রামের পাশের রহস্যময় জঙ্গলে বাস করছে শত বছর ধরে। সত্যিই কি তাই? নাকি সবছিুর ব্যাখ্যা আরো জটিল? জঙ্গলের ভেতরের পুরনো মন্দিরে অবশেষে কার মুখোমুখি হতে হল? অপার্থিব শ্বাপদের, নাকি সেই অসীম ক্ষমতাধরের, যে অন্ধকার জগতের রাজপুত্র, অমরত্বের চাবি যার হাতের মুঠোয়, লৌকিক পৃথিবীর অলৌকিক অধিশ্বর হয়ে উঠতে যার দরকার আর মাত্র একটা...
এই রহস্য উদঘাটন করতে হলে ডুব দিতে হবে কোনোমতে প্রাণ হাতে নিয়ে ফেরা একজনের অবিশ্বাস্য জবানবন্দীর গভীরে।


পাঠ প্রতিক্রিয়া

আধিভৌতিক আর হরর, আমার সবচেয়ে প্রিয় জনরা। হররের সাথে যদি থ্রিল যুক্ত হয়, তাহলে যে সেটা অন্য একটা মাত্রা পায়, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কাহিনি, প্লট, লেখনি - তিনটাই চমৎকার। হরর গল্প পড়ে শেষ কবে ভয় পেয়েছি, মনে পড়ে না। কিন্তু শ্বাপদ সনে'র শিপলুর কেস স্টাডিগুলি পড়ার সময় সত্যিই আমার ভয়ের অনুভূতি হয়েছে। বর্ণনাটা এত নিখুঁত আর প্রাণবন্ত যে আমার মনে হচ্ছিল আমি ঘটনাস্থলেই পৌঁছে গেছি। সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছি রিগর মর্টিস আর চার নম্বর বনবিহারীলাল সেন পড়ে। এমনকি শেষের টুইস্টটাও খুব ভালো লাগছে। সত্যি বলতে কী, ভাবনাতেও আসেনি শেষটা এমন হবে।

তবে কিছু কিছু ব্যাপারে খটকাও আছে। প্রত্যেকটা কেস স্টাডির শুরুতে ব্র্যাকেটে বলা আছে, 'মূল ঘটনার পরে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেয়া ছিল'। মূল ঘটনা এক্সেক্টলি যেটা ঘটেছে, সেটার ব্যাখ্যা দেওয়া থাকলে তো মাসিক হালচালের পাঠকেরা কাহিনিতে মুগ্ধ হবে না। কিসের ব্যাখ্যার কথা বলা হয়েছে ওখানে? আর আমার মনে হয়েছে কেস স্টাডিগুলি আলাদা পেজে শুরু হলে পড়তে ভালো লাগতো। তাছাড়া আরো অনেক জায়গাতেই দেখেছি, পেজের মাঝখানে কোন স্পেস বা প্যারা ছাড়াই সম্পূর্ণ অন্য টপিক শুরু হয়ে গেছে। ওসব জায়গায় স্পেস জরুরী ছিল।
যে ব্যাপারটায় আমার একান্ত নিজস্ব আপত্তি, সেটা হল প্রচুর বাংরেজি শব্দের ব্যবহার। বাংলা সাহিত্যে ইংরেজি শব্দের আধিক্য আমার খুব অপছন্দ। তবে এই ব্যাপারটা মাফ করা যায় এই ভেবে যে, বইটা তো একজনের জবানবন্দির ভিত্তিতে লেখা। সে যেভাবে ভাববে, লেখাটা তো সেভাবেই এগোবে। তবে, "ট্রিভিয়া ম্যান শিপলু" - লাইনটা খুব তাৎপর্যপূর্ণ।
চন্দ্রবিন্দুজনিত কিছু ভুল ছাড়া আর কোন বানান ভুল চোখে পড়েনি।

এতক্ষণ যেসব ত্রুটির কথা বলেছি, এগুলি আসলে পাঠকের চোখেই পড়বে না। কারণ বইটা এত টেনে পড়তে হবে যে এসব খুঁটিনাটি দেখার সুযোগই হবে না। আমি একটু খুঁতখুঁতে পাঠক বলে এসব দেখার সুযোগ পেয়েছি।

এসব ছাড়িয়ে খুব চমৎকার ব্যাপারটা হল থ্রিলারের মত হররের জন্যও এখন আর বাইরের লেখকের উপর নির্ভর করতে হবে না। প্রথম উপন্যাসেই নাবিল মুহতাসিম ভাইয়া সেটা খুব ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

বই পরিচিতি

বইঃ শ্বাপদ সনে
লেখকঃ নাবিল মুহতাসিম
প্রচ্ছদ: ডিলান
পৃষ্ঠা: ২০৮
মূল্য: ২০০
প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী
প্রকাশকালঃ বইমেলা-১৬
রেটিংঃ ৪.৭৫/৫

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৭

মানুষ বলেছেন: বই পড়া প্রায় ভুলেই গেছি। :(

১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:০১

মাদিহা মৌ বলেছেন: আবার বই পড়তে শুরু করেন। :)

২| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এসব জঁনরাতে দেশের লেখকেরা মৌলিক ভূমিকা রাখছেন এখন- জিনিসটা আনন্দের।

১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:০৪

মাদিহা মৌ বলেছেন: হ্যাঁ। বাতিঘরের কল্যাণে তরুণ লেখকেরা দারুণ সব মাস্টারপিস গিফট করতে পারছে। এখন পাঠক সমাজ এগিয়ে এলেই তা পূর্ণতা পায়।

৩| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৭

*পড়ুয়া* বলেছেন: বইটা পড়েছি। অসাধারণ একটা বই। আমাদের দেশীয় লেখকদের এমন লেখা খুবই বিরল। গল্পের শেষটা খুবই চমকে দিয়েছিল। পুরো বইটা জুড়েই একটা রহস্য ঘাপটি মেরেছিল। এভাবে গল্প টেনে রাখা খুব কঠিন ব্যাপার।


আপনার রিভিউ চমৎকার। আপনি মনেহয় অন্যান্যদেরকে নিজস্ব লাইব্রেরী গড়ায় অনুপ্রাণিত করছেন। :)

১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:০৬

মাদিহা মৌ বলেছেন: হ্যাঁ, আসলেই তাই। পুরো বইয়েই রহস্য ধরে রাখতে পেরেছেন লেখক।

যেহেতু আমি নিজে বইপোকা, আমায় দেখে কেউ যদি অনুপ্রাণিত হয়, খারাপ কী?

৪| ১৭ ই জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৭

কল্লোল পথিক বলেছেন:



আপনার কোন দোষ নেই!
দারুণ রিভিউ হয়েছে।

১৭ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১১

মাদিহা মৌ বলেছেন: ধন্যবাদ। হরর পছন্দ হলে পড়ে দেখতে পারেন

৫| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:২৬

রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: সবচেয়ে মজার ব্যাপার কি জানেন? যার বই নিয়ে রিভিউ দিলেন সে আমার রুম মেট,রোল মেট,ব্যাচ মেট,কাছের বন্ধু। বইটা লেখার সময় কি-বোর্ডের ঠাস ঠাস সাউন্ডে যতটা কষ্ট হয়েছে বইটা পড়ে ঠিক ততটাই ভাল লেগেছে। ভাবতে অবাক লাগে একজন রাইটির আমার পাশে বসে পড়ছে আমার মতই,খাচ্ছে,আড্ডা দিচ্ছে, গভীর রাতে ল্যাপটপ খুলে বসে লিখে যাচ্ছে একের পর এক। নাবিল হয়ত সামুতে নেই। সামনা সামানি বলি নি কিন্তু আমি ওর লেখার অনেক বড় একজন ফ্যান। :)

১৮ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:১৯

মাদিহা মৌ বলেছেন: আপনি নাবিল ভাইয়াকে যে কথাটা জানান নাই, সেই মহৎ কাজটা আমি করে দিয়েছি। :p

লেখা পছন্দ হলে, অবশ্যই জানাবেন। হোক সে বন্ধু। কারণ আপনার ভালো লাগাটুকু তাকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।

ভালো থাকুন সবসময়।

৬| ১৭ ই জুন, ২০১৬ রাত ৮:২৭

রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: "রাইটার"

৭| ১৮ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:২২

ঈশান আহম্মেদ বলেছেন: পড়া হয় নি। :( পড়তে হবে দেখি।

১৮ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৪:২৮

মাদিহা মৌ বলেছেন: হরর পছন্দ হলে, পড়ে দেখতে পারেন
ভাল লাগবে

৮| ১৮ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১৩

রঙ্গীন ঘুড়ি বলেছেন: অনেক সময় ভাল লাগাটা মুখে না বলেও বলা হয়ে যায়। :)

১৮ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩৯

মাদিহা মৌ বলেছেন: হ্যাঁ, তা হয়! :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.