নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সে এক আশ্চর্য জলপ্রপাত...

সাপের শরীর হয়ে আঁধারের গাছ/ কুয়াশার বন্যায় ডুবো দেবী মাছ!

মাহী ফ্লোরা

আমি আমিই....... আকাশজুড়ে চাঁদের আলো রূপার জলে আঁকা অন্ধকারের ঠোঁটের কোনায় নীলচে হাসি বাঁকা! তারা-আলোর রথ ছুটানো একটি ডজন ঘোড়া সমস্বরে বল্লো, এ নাও গোলাপ, মাহী ফ্লোরা। ......... মহাবিশ্বের শুভেচ্ছা পেয়েছি এভাবে!

মাহী ফ্লোরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুমায়ুন আহমেদ

১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯

হুমায়ূন আহমেদ! এই মানুষটাকে নিয়ে আমার আসলে কিছুই বলার নেই। তবু কি কিছুই নেই? কিছু কিছু মানুষ কি সুন্দর করেই না বলে। গুছিয়ে গুছিয়ে শব্দ বাক্য বিন্যাসে আবেগে কি চমৎকার করেই না বলে। আমি বলতে গিয়ে হড়বড় করে বলি সব এলোমেলো করে ফেলি। আমার এই আবেগ প্রকাশের ক্ষমতা আসলে নেই। তাঁর জন্য যে আবেগ আমি ধারন করে আছি তা বলার মত শব্দ নেই আমার।

একজন মায়াবতী তে তিনি লিখলেন আধুনিক মানুষ দের জন্য কথা বলার উপর বই থাকা দরকার। অপ্রয়োজনীয় সব বই এ বাজার ভর্তি, প্রয়োজনীয় বই খুঁজলে পাওয়া যায়না। কথা বলার আর্টের উপর ও একটা বই থাকা দরকার।কেউ কেউ এত সুন্দর করে কথা বলে, কেউ কথাই বলতে পারেনা। যখন মজার কোন কথা বলে তখন ইচ্ছা করে একটা চড় বসিয়ে দিতে।

আমি বলতে গেলেই অসহায় লাগে সত্যিই যদি এমন একটা বই থাকতো!



কোন বইটার কথা বলবো আমি! আমি একজন অন্ধ পাঠক। বই পড়াটা শুরুই হয়েছিল তাঁকে দিয়ে। নতুন এক ভূবনে প্রবেশ করলাম ক্লাস থ্রিতে পড়ার সময়। এক মামার লাইব্রেরীতে গিয়েছিলাম স্কুল থেকে ফেরার পথে। মজার ভুত নামে একটা বই মামা হাতে ধরিয়ে দিলেন। বললেন সামনে সপ্তাহে আবার একটা বই নিয়ে যেও। সামনে সপ্তাহে আর যাইনি। অনেক দিন পর যখন আবার গেলাম আরেকটা বই নিয়ে এসেছিলাম। সেটাও হুমায়ূন নামের এক যাদুকরের।

এই সুযোগে বলে রাখি বইটা কখনো ফেরত দিইনি। সুযোগ পেলে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। অবশ্য বই চুরির মত পবিত্র কাজ আর একটিও নেই।

মামা আমাকে সতেরো বছর আগেকার একটা বই এর জন্য দৌড়ানী দিতে পারে! কিন্তু তা দিক সেই যে তিনি বই পড়ার একটা বীজ বুনে দিলেন। বই এর লোভ আমার কখনো কমেনি। এরপর গোগ্রাসে গিলে গেছি তাঁর বই। কত প্রিয় মানুষের সাথে যে ভীষন ঝগড়া হয়ে গেছে তাঁকে নিয়ে। যারা হয়ত তার লেখা পছন্দ করেনি কোন দিন। সে সময় তাদেরকে আমার আদর্শের শত্রু মনে হত এখনো হয়। তবে এখন নিজেকে বোঝাতে পারি এমন হতেই পারে। তখন পারতাম না। কেমন মূর্খ লাগতো ওদের মনে হত কয়েকটা বই পড়ে জ্ঞান ফলাচ্ছে হয়ত!



আরেকটু বড় হতেই সমগ্র নিয়ে আসতাম লাইব্রেরী থেকে। কত হলুদ বিকেল যে বাইরের ঘরের দরজাটার পাশে বসে কেটে গেছে। সবাই সামনের মাঠ টায় খেলতো। আমি দু একবার তাকিয়ে আবার পড়তে শুরু করতাম। যেন আমার অন্য জগৎটার চেয়ে সুন্দর আর কিছু ছিলনা।

আব্বা প্রতি তিনদিন পরপর একটা করে বই নিয়ে আসতেন তাঁর কলেজ লাইব্রেরি থেকে। আমার হুমায়ূন! আমার প্রিয় হুমায়ূন তাঁর বই সামনে না থাকলে আমি খেতে বসতাম না। আমার রাগ দেখে আব্বা হাসতো।



আমি বড় হবার পর আমার ভেতরে তাঁর জন্য ভালবাসা শুধু বাড়লোই। এইতো কদিন আগেও মাঝে মাঝেই উনার ফোন নং বের করে হাতে নিয়ে বসে থাকতাম।কখনো সাহস করতে পারতাম না ফোন দেবার। কি হত যদি সাহস করে একবার ফোন টা দিয়েই বসতাম। একবার যদি বলতাম আমি আপনার অন্ধ ভক্ত কি এমন হত! উনার মৃত্যুর খবর শোনার পর এই কষ্টটা খুব তীব্র ছিলো। আমি আর নতুন কোন বই পড়বোনা তার কেমন যেন এখনো ভাবতে পারিনা! একবছর পুরো একটা বছর চলে গেছে! এভাবে হয়ত আরো অনেক দিন যাবে। আমার মত অসংখ্য মানুষকে কাঁদিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা যার ছিল তাঁর প্রতি ভালবাসা কখনো কমবেনা।

তাঁর কাছেই তো পেয়েছি কবিতার প্রতি ভালবাসা।বলতে শিখেছি ,

আমার জলেই টলমল করে আঁখি /তোমার চোখের অশ্রু কোথায় রাখি!

অথবা জীবনানন্দের ঘাই হরিনীর খবর কিংবা শক্তির কবিতা। প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ অমর এক মানুষের নাম। বুকের ভেতর কষ্ট নিয়ে বলতে ইচ্ছে করছে,

''এভাবে নয় এভাবে ঠিক হয়না

নদীর বুকে বৃষ্টি পড়ে পাহাড় তাকে সয়না

এভাবে নয়, এভাবে ঠিক হয়না।

কিভাবে হয়, কেমন করে হয়?

কেমন করে ফুলের কাছে রয়!

গন্ধ আর বাতাস দুই জনে?

এইভাবে হয়, এমন ভাবে হয়!''



মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮

ময়নামতি বলেছেন: আসলে উনার মত সাহিত্যিক আর একজন জম্ম নিবে কিনা জানিনা। তবে উনা লেখা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

মনে হয় প্রথম ভাল লাগা।+++++++++++

২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪

সায়েম মুন বলেছেন: উনি এই বাংলার মানুষকে যেভাবে হাসাতে পেরেছেন। যেভাবে কাঁদিয়েছেন। যেভাবে এই বাংলার বুকে পাঠক সৃষ্টি করেছেন। সেরকম করে কেউ কস্মিনকালে পারেনি। তার গল্প পড়তে অভিধানে গিয়ে শব্দ খুঁজতে হয় না। তার বই হাতে নিলে পাঠক বইয়ের শেষ পৃষ্ঠায় পৌঁছানোর জন্য চঞ্চল হয়ে ওঠে। কিংবদন্তি এই লেখকের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী রইলো।

৩| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১১

আরমিন বলেছেন: উনার নতুন কোনো বই আসবে না, নতুন কোনো নাটক আসবে না এটা এখনও কেমন মানতে পারি না, এবার বই মেলায় গিয়েও আমি খুঁজছিলাম হুমায়ুন আহমেদের নতুন কোনো বই আছে কিনা ! দোকানী যখন বললেন যে হুমায়ুন আহমেদের আর কোনো নতুন বই আসবে না, আমার বুকে এমন একটা ধাক্কা দিলো! :(

৪| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২৪

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
''আমি ঘর খুলিয়া বাহির হইয়া জ্যোৎস্না ধরতে যাই
হাত ভরতি চাঁদের আলো ধরতে গেলে নাই
হাত ইশারায় ডাকে কিন্তু মুখে বলে না
আমার কাছে আইলে বন্ধু আমায় পাইবা না''

মেঘ-বৃষ্টি-বর্ষা-জ্যোৎস্না; কত কত কারনে হুমায়ুন আহমেদ আমাদের প্রজন্মে থেকে যাবেন। প্রজন্মান্তরে বাঙালিরা জানবে, একজন সহজ কথার অনন্য গল্প বলিয়ে ছিলো। যিনি বাঙালিকে প্রকৃতি উপভোগের শত কারন খুঁজে দিয়ে গেছেন।

৫| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩০

অনাহূত বলেছেন: প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ...

৬| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৪

হাবিব০৪২০০২ বলেছেন: অবশ্য বই চুরির মত পবিত্র কাজ আর একটিও নেই :) :)

আমার কাছ থেকে কিছু লোক হুমায়ুন, শরৎ বাবুর বই সহ বেশকিছু বই নিয়েছিলেন পড়তে.. সেগুলো আর ফেরত পাই নি. আসলে গল্পের বই জিনিসটা এমনই

৭| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: একজন শক্তিশালি লেখক ছিলেন হুমায়ূন। ছুঁয়ে গেছেন অনেক বার।

৮| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৪

হাসান মাহবুব বলেছেন: শব্দের জাদুকরের জন্যে ভালোবাসা। খুব সাধারণ শব্দগুলোই তার লেখাতে অসামান্য হয়ে উঠতো কোন জাদুতে? জাদু তো জাদুই...

৯| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫১

ফারিয়া বলেছেন: ওনার কাছ হতেই হয়ত সবকিছুর সাথে আত্মাকে আপন করতে শিখেছে কয়েকযুগের পাঠকেরা। শ্রদ্ধাভরে স্মরন তাকে!

১০| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:২৭

আমি ময়ূরাক্ষী বলেছেন: হুমায়ুন আহমেদের তুলনা শুধু তিনি নিজেই। আর কখনও কোনও দিন আর একটা হুমায়ুন আহমেদ জন্মাবেনা আমাদের দেশে।

১১| ২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫০

সোমহেপি বলেছেন: আমাদের কারো কারো কাছে হুমায়ন ছিলেন'দরোজা'র মত।আগামী প্রজন্মের যারা তারাও উনাকে সেই ভূমিকাতেই পাবেন আশা করি।

১২| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

রোমেন রুমি বলেছেন: পছন্দের চরিত্র ছিল শুভ্র ।

শুভ্র ফিজিক্সের ছাত্র ছিল । মোটা ফ্রেমের ভারি চশমা পড়ত । মাথার চুলগুলো ছিল কোঁকড়ান। শান্ত এবং গম্ভীর প্রকৃতির ছিল । কথা বলত খুব কম ।
মাঝে মাঝে নিজেকে শুভ্র ভেবে আনন্দ পেতাম ......... :)

শুভ্র সম্পর্কে লেখকের অন্তর্দৃষ্টি আর কত গভীর ছিল কে জানে ।
কিন্তু উপরে শুভ্র সম্পর্কে লেখা সবগুলো বৈশিষ্ট্যই যে আমার মধ্যে আছে এইটুকু জানি !


হিমু পড়ে সব সময় মজা পেতাম ।
হুমায়ূন আহামেদ সত্যিই একজন গল্পের যাদুকর ছিলেন ।

হুমায়ূন আহামেদ - এর জন্য ভালবাসা ।

পোস্টের জন্য ধন্যবাদ ।

শুভ রাত্রি

১৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:১৫

নস্টালজিক বলেছেন: সার্থক শব্দচাষী!


এত ভালো ফলন কেউ ফলাতে পারে নি আর!

১৪| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১৩

সমুদ্র কন্যা বলেছেন: তাঁকে নিয়ে আমি একবারও ভাবি নি। মানুষ তিনি আছেন কিংবা নেই, খুব একটা আমাকে ভাবায় নি হয়তো। কিন্তু তাঁর নতুন কোন সৃষ্টি আর আসবে না, এটা মেনে নেয়া কষ্টকর।

ভাল থাকুন হুমায়ুন আহমেদ, যেখানেই আছেন ভাল থাকুন।

২২ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: হ্যা আপু হুমায়ূন তো সেই একজন ই। বাদশার মত!

১৫| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১৩

রেজোওয়ানা বলেছেন: খুব ভাল লাগলো ফ্লোরা!

তোমার এই লেখাটা একটা সাইটে শেয়ার করলাম....

২৩ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪

মাহী ফ্লোরা বলেছেন: আপু আমি তো লজ্জা পেয়ে গেলাম। 8-|

১৬| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:২৮

এস আর সজল বলেছেন: চলে যাক বসন্তের দিন মেঘের ছায়া হয়ে, আমি থাকব অপক্ষায় যদি সে আসে ধীরে আমাদের এই নগরে কোন অন্যদিনে......

১৭| ২৩ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৮

অদৃশ্য বলেছেন:







'' আমার জলেই টলমল করে আঁখি
তোমার চোখের অশ্রু কোথায় রাখি! ''


________________________



'' এভাবে নয় এভাবে ঠিক হয়না
নদীর বুকে বৃষ্টি পড়ে পাহাড় তাকে সয়না

এভাবে নয়
এভাবে ঠিক হয়না।''


________________________





শুভকামনা কবি...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.