নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন রণবীর

মামুন রণবীর

আমি খুব সাদাসিধে মানুষ ।কবিতা,গল্প,লিরিক লিখার চেষ্টা করি মাত্র ।মাঝে মাঝে জীবনকে রহস্যেঘেরা বৃত্ত মনে হয় । যে বৃত্তে আমরা একদিক থেকে অন্যদিকে পরিভ্রমন করি ।কখনো কখনো জীবনের কথাগুলো অলীক ভাবনাদের স্পর্শ করতে ব্যাকুল হয় ।কিন্তু ভাবনাগুলো কখনোই স্পর্শ করা হয়না ।হয়তো কিছু কথা রাখতে গিয়েও রাখা হয়না ব্যাপারটির সাথে একমত পোষণ করে ।রাখা না রাখার ক্যানভাসে জীবন নি:শেষের পথে হাঁটে ।একসময় সেটাও ফুরোয় ।এরমাঝে অনেক কথার মিছিলে একটি প্রশ্ন মনে বারবার আঁচর কাটে...........আমরা কি কখনো পরিপূর্ণ হতে পারি.................আমরা মুগ্ধ হই...........কিন্তু মুগ্ধতাকে ছুঁতে পারিনা,খুব কাছ থেকে............

মামুন রণবীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফটোগ্রাফার

২৫ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৮

ভালোই হলো!!রাতবিরাতে আর জেগে থাকতে হবেনা ...

দিনে কয়েকবার ফোন দেবার মহড়া চলবেনা।মোবাইল বিলও কমে যাবে...!!

অপেক্ষার কথা নাইবা মনে করলাম।

আর কি প্রয়োজন আছে এসবের।

বুঝছিস আনভীর জীবনে কাউকে ভালোবাসার আগে তার পরীক্ষা নিস........



কথাগুলো রিশাদ বলছিলো।আমি ওর চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।ঝর ঝর করে পানি পড়ছিলো।কয়েকদিন আগে রাফার সাথে ওর ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছে।অনেকবার জানতে চেয়েছি কেন এমন হলো।ও বলেনি।অনেক কষ্ট নিয়ে ও নিজের কাজটা করে গেছে।ক্যামেরায় রিশাদের হাত ছিলো খুব পাকা ,কি ফটোগ্রাফি কি ভিডিওগ্রাফি।ফটোগ্রাফিতে বেশ কয়েকটা পুরষ্কারও পেয়েছে।এখন ছবিগুলো দেখলে আনমনেই অস্থির হয়ে যাই রিশাদের অনুপস্থিতিতে।



মার্চ মাস।

আমাদের ভাবনাজুড়ে তখন শর্টফিল্ম।চার পাচটার কাজও শেষ করেছি।ক্যামেরাতে রিশাদই ছিলো।ছয় নম্বর ফিল্মটা বানাচ্ছিলাম।তখনই রিশাদের ব্রেকআপের সূচনা।রিশাদকে আনমনা দেখতাম শুটিংয়ের আগে পরে।কিন্তু শুটিং চলার সময় ও খুব সিরিয়াস থাকতো।



ফিল্মটার সব কাজ শেষ করে ১৫তারিখ ফিল্ম ফেস্টে জমা দিলাম।এরপর সবাই আড্ডায় আসলেও রিশাদ আসতোনা।ওর বাসায় গিয়ে ওকে হালকা করার চেষ্টা করা হলো।কিন্তু কিছুতেই ও ফিরে আসতে পারছিলোনা।সারাদিন নেশায় বুদ হয়ে থাকতো।ওর বাবা ব্যাপারটি জেনে ওকে খুব গালাগাল করেছিলো।পরদিন থেকে রিশাদের কোন খোজ নেই।ফোনও বন্ধ।



আজ শর্ট ফিল্ম পুরষ্কার ঘোষণা হয়েছে।সেরা ফিল্ম জিতেছে "পতাকা",পরিচালক রিশাদ খান এবং আনভীর রায়হান।আমি গিয়ে পুরষ্কার গ্রহণ করলাম।মঞ্চে প্রচন্ড মিস করছিলাম রিশাদকে।



সন্ধ্যার আড্ডায় সবাই যখন অভিনন্দন জানাচ্ছিলো তখন

কিছুক্ষণের জন্য কষ্ট আর চোখের জল আড়াল করে হাসলাম এই ভেবে রিশাদ আজ জয়ী।



রিশাদের কথা উঠতেই আমাদের উপর দিয়ে হাহাকার বয়ে গেল।কাদলাম না ,রিশাদ কাদতে মানা করেছিলো।তবু কেন যেন চোখ ভিজে গেল।



কয়েক বছর পর একটা ডকুমেন্টারীর কাজে চিটাগাং স্টেশনে ট্রেনের অপেক্ষায় আছি।ক্যামেরা অন করে শটটা কেমন আসে একটু আচ করার চেষ্টা করছি।পাগল বেশের এক লোক ক্যামেরার সামনে দাড়িয়ে পড়লো। এসিস্ট্যান্টদের চেচামেচির পরও সরছে না।আমি তাকে আড়ালে নিয়ে গিয়ে যেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা আবিষ্কার করলাম।তার ভয়েসটা অবিকল রিশাদের মতো।মুখে লম্বা দাড়ির কারণে ঠিক চেনা যাচ্ছেনা।কথাবারতার মধ্যে অসামঞ্জস্যতা।তাকে নিয়ে আমি ঢাকা ফিরতে চাইলাম। এ প্রসঙ্গ আসতেই কথা নেই বার্তা নেই ছুট দিল।বেশ কয়েকদিন খোজেও আর তাকে পাওয়া যায়নি।



এখন ট্রেনে করে ফিরছি আর ভাবছি রিশাদকে ধরে রাখতে পারলামনা।এতো কাছে থেকেও সে চলে গেছে বহুদূর।আর তার ক্যামেরায় ক্লিক দেয়া হবেনা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.