নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মামুন রণবীর

মামুন রণবীর

আমি খুব সাদাসিধে মানুষ ।কবিতা,গল্প,লিরিক লিখার চেষ্টা করি মাত্র ।মাঝে মাঝে জীবনকে রহস্যেঘেরা বৃত্ত মনে হয় । যে বৃত্তে আমরা একদিক থেকে অন্যদিকে পরিভ্রমন করি ।কখনো কখনো জীবনের কথাগুলো অলীক ভাবনাদের স্পর্শ করতে ব্যাকুল হয় ।কিন্তু ভাবনাগুলো কখনোই স্পর্শ করা হয়না ।হয়তো কিছু কথা রাখতে গিয়েও রাখা হয়না ব্যাপারটির সাথে একমত পোষণ করে ।রাখা না রাখার ক্যানভাসে জীবন নি:শেষের পথে হাঁটে ।একসময় সেটাও ফুরোয় ।এরমাঝে অনেক কথার মিছিলে একটি প্রশ্ন মনে বারবার আঁচর কাটে...........আমরা কি কখনো পরিপূর্ণ হতে পারি.................আমরা মুগ্ধ হই...........কিন্তু মুগ্ধতাকে ছুঁতে পারিনা,খুব কাছ থেকে............

মামুন রণবীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজটিকা

২৫ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৩

প্রভাত ফেরীতে ফুল দেওয়া মানুষের মিছিল ফিরতে শুরু করেছে।শহীদ মিনার থেকে আলাপনে আলাপনে টিএসসি পর্যন্ত এসে অনিকেত রায়হান একটু থামলেন।তাকে ঘিরে অফিসের কর্মচারীরা।সবাই এখন ব্যস্ত চা চক্রে।এর মধ্যে বাকপটু অনিকেত সাহেব গপ্পো জুড়ে দিলেন।



-বুঝছো জিলান একুশে এলেই মনটা হাহাকারে ভরে যায় আমার সালাম ,বরকত -ভাইদের জন্য।ভাষার জন্য তাদের ত্যাগ কত বড়।

-জি স্যার।

-যদি পারতাম ভাষার জন্য প্রাণ দিতাম। আমার বাংলা ভাষা।কত ...মধুর।

-জি ,ভাষা না পেলে শব্দের পরিচয় পেতাম না। নিজস্বতা থাকতো অস্তপ্রায়।আমার বাংলা থাকতো অসম্পুর্ণ।



চা শেষ।গল্পে গল্পে অনেকটা সময় গড়ালো। একটু পরে একুশে বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনিকেত সাহেব সেখানে সম্মানিত আলোচক। যাবার ব্যাপারে তাই তিনি একটু তাড়া দেখালেন।মিনিট দশেকের মধ্যেই ব্যক্তিগত গাড়ী চলে এলো। তিনি ছুটলেন।



সারাদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তিনি এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ছুটলেন। বিকেল এবং রাতে তিনটি টিভির লাইভ টকশোতেও তাকে দেখা গেল।



বেশ ক্লান্তি নিয়ে অবশেষে বাসায় ফিরছেন।এর মধ্যে তার বন্ধু জাভেদ খান কল দিতেই অনিকেত সাহেবের ফোনে বেজে উঠলো গনা বি এ ছাম্মোক ছাল্লো গান। সারাদিন তার ফোন সাইলেন্ট ছিলো। যতবার কেউ কল করেছে টোন বাজেনি।গাড়ীর ড্রাইভার মুচকি মুচকি হাসছে। অবশ্য যতবার তার বসের ফোনে এই টোন বাজে প্রতিবারই কেন জানি তার হাসি পায়।



এদিকে অনিকেত সাহেবকে মিসেস অনিকেত ফোন দিতে দিতে অস্থির হয়েশেষে ড্রাইভারকে ফোন দিলেন।ড্রাইভারের ফোনের শব্দে অনিকেত সাহেব একটু বিরক্ত হয়ে বললেন

-কি মিয়া কি টোন সেট করেছ?কান তো ঝালাপালা হয়ে গেল।

-স্যার আজ একুশে তো তাই একটা দেশের গান সেট করছি।

-ধুত মিয়া আজাইরা।



অনিকেত সাহেব এখন ফেসবুকের স্ট্যাটাসবক্সে কিছু একটা টাইপ করে পোষ্ট অপশনে ক্লিক করলেন।লেখা পোষ্ট হয়ে গেল।এরপর সিগারেট ধরিয়ে ব্যালকনিতে গেলেন।



পরদিন সকাল১০ টা। অনিকেত সাহেবের বড় ছেলে রিশান তার ফেসবুকে ব্রাউজিং করছে।একটু আগ্রহ নিয়ে তার বাবার টাইমলাইনে যেতেই যেন কিছু একটা তাকে ধাক্কা দিল।অনিকেত সাহেবের শেষ স্ট্যাসটা যে একটি হিন্দি গানের অংশবিশেষ।



দু দিন যাবত রিশান তার বাবার সাথে কথা বলছেনা।অনিকেত সাহেব ব্যাপারটি খেয়াল করে ছেলের জন্য কিছু উপহার নিয়ে এলেন।তাতেও রিশানের মন ভালো হলোনা।রিশানের বুকে যে দেশকে ভালোবাসার আকুলতা।



তার মনে এখন একটাই প্রশ্ন কবে এই আকুলতা বাবা আর ছেলের মাথায় একসাথে লাল সবুজের রাজটিকা পড়িয়ে দেবে ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.