নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনোনেশ দাস

সাধারণ মানুষ

মনোনেশ দাস › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইংরেজিতে কি সব বলেন দিদার

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৫৯


ময়মনসিংহে মুক্তাগাছা উপজেলা শহরের বড় মসজিদ রোড মার্কেটের সামনে পুরনো কাগজ নিয়ে উবু হয়ে বসে ইংরেজিতে বিড়বিড় করে কি সব বলেন তিনি। নাম জিজ্ঞাসা করলে বলে, ‘ দিদার’ ।’ মাঝারি – ফর্সা-রোগা। বছর ৪৫- ৪৮ হবে। ময়লা, শুকনো শরীর, রুখুশুখু চুলে জটা, এক চিলতে নোংরা-ছেঁড়া কাপড় পরা। বৃষ্টি এলে কুকুরদের সঙ্গেই কোনও একটা দোকানের চালার নীচে গুটিসুটি পাকিয়ে পড়ে থাকেন।

বড় মসজিদের সামনে পিলখানার গলিতে রাধার চা স্টল । দিব্যি চলে। চায়ের দোকানে চা পানেও মগ্ন হয়ে হাঁসে আর বিড়বিড় করে ইংরেজিতে কি সব বলে চলে ।তবে, তিনি কি বলেন, বলতে চান তা কেউ বোঝেন না । হাঠাৎই আবার শূন্য দৃষ্টি নিয়ে চার দোকানের ভেতর এসে চুপ করে বসে থাকেন। বিক্রিবাটা, খদ্দেরের ভিড় সামলানোর ফাঁকে তাঁর দিকে চোখ পড়লে মনটা খারাপ হয়ে যায় দোকান মালিক রাধাঁর। কখনও একটু পাউরুটি, বিস্কুট-চা হাতে দিলে নেন না দিদার । নিলেও বিনিময়ে পকেটে থাকা টাকা দিয়ে দেয় ও ।

বড়মসজিদ মার্কেট রোডে জননী বুক হাউজের মালিক গোলাম মোস্তফা এই দিদারকে প্রতিবেশি হওয়ার সুবাদে মোটামোটি জানেন । তিনি জানান, দিদার পড়াশোনায় খুব ভালো ছিলো । ইংরেজিতে অনার্স পাস । বেসামরিক একটি বাহিনীতে চাকুরীও হয়েছিলো তার । এরপর কি ছিলো আর কি হয়ে গেলো । তিনি বলেন, যদিও পাগলামিটা ওদের বংশগত । ওর মাও অনেকটা ওর মতই মানসিক রোগী ।
দিদারের প্রতিবেশি ফারুক জানান, আমাদের এলাকায় একজন ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট ছিলেন তিনি । একই এলাকার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, সত্যি খারাপ লাগে দিদারের জন্য । পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে এলে এখনও তাকে ভালো করা সম্ভব । দিদার মুক্তাগাছার সনামধন্য ব্যক্তিত্ব অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন জামিলের ভাগ্নে ।

মুক্তাগাছার কবি আশিক আকবর বলেন, ওর জন্য কেউ কিছু করুন অন্তত : ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের মানসিক বিভাগে ভর্তি করে দিন ।

একাধিক মনোবিদের ব্যাখ্যায়, রাস্তাঘাটে যে মানসিক রোগাক্রান্তদের দেখা যায় তাদের বেশির ভাগ স্কিৎজোফ্রেনিয়া রোগের শিকার। এতে আক্রান্ত হলে সাধারণত বাড়ির লোক বা কাছের লোকেদের প্রতি সন্দেহ জাগে, তাদের শত্রু মনে হয়। এরা তাদের কাছে যেতে চান না, তাদের হাত থেকে খাবার বা ওষুধ খেতে চান না। বরঞ্চ অনাত্মীয়, অপরিচিতদের কাছে এরা স্বছন্দ। ফলে অনাত্মীয় কেয়ারগিভার’দের থেকে ওষুধ খেয়ে দ্রুত সুস্থও হন। তা ছাড়া, অসুস্থতা ধরা পড়ার পরেই এদের অধিকাংশই নিজের বাড়িতে অবহেলিত হন। তাতে রোগ সারার সম্ভাবনা আরও কমে। অন্য দিকে পথের একেবারে অপরিচিত কিছু মানুষের থেকে পরিচর্যার পাশাপাশি তাঁরা পেয়ে যান খাঁটি সাহচর্য আর নিখাদ ভালবাসা, যা সুস্থ হওয়ার ক্ষেত্রে বিশল্যকরণীর কাজ করে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.