নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইজরায়েলকে কেন ঘৃনা করি।

৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:১৩

ইহুদি এবং জায়নবাদ দুটি আলাদা বিষয়।
ইহুদি একটি ধর্ম, জায়নবাদীরা ধার্মিক নয়, ওদের বেশিরভাগেরই ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই, কিন্তু একই সাথে ওদের বিশ্বাস ঈশ্বর ওদেরকে ফিলিস্তিন অঞ্চলটি দিয়েছেন, তাই ওদের ওখানেই থাকতে হবে।
মাথা প্যাচ খেয়ে গেছে? যে ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই, সেই ঈশ্বরেরই উপহার নিতে মানুষ খুন করে ফেলছে? জঙ্গিবাদীদের মাথার তার এমনই ছেড়া থাকে।
তা জায়নবাদীরা ইহুদি হতে পারে, খ্রিষ্টানও হতে পারে। ইভেনজেলিক খ্রিষ্টানরা যেমন জায়ানিস্ট। ওরা বিশ্বাস করে সব ইহুদিদের জেরুজালেমে ফেরত পাঠাতে পারলেই যীশু (আঃ) পৃথিবীতে আসবেন, তারপরে উনাকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে সব ইহুদিদের মেরে ফেলবেন। তাই যীশুর (আঃ) আগমনকে ত্বরান্বিত করতেই ওরা ইজরায়েলের সাপোর্ট করে।
আমাদের দেশে যেমন এক মাওলানা ওয়াজে মাহফিলে প্রচার করে বেড়ায় ইমাম মাহ্দী চলে এসেছেন, আমেরিকাতেও অনেকে বিশ্বাস করে যীশুর (আঃ) আগমন ঘটে গেছে। কেবল আত্মপ্রকাশ বাকি।
তা আমি কারোর জাত তুলে ঘৃণা না করলেও জায়ানিস্টদের দুই চোখে দেখতে পারিনা। ইহুদি বিদ্বেষ এবং জায়নবিদ্বেষ এক না। আমাদের দেশের মানুষ দুইটা গুলিয়ে ফেলে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, অনেক ইহুদীও জায়োনিস্টদের দেখতে পারেনা। যেমন লেখক ও ইন্টারন্যাশনাল স্পিকার Miko Peled একজন ইজরায়েলি, যার জন্ম কট্টরপন্থী এক জায়নিস্ট পরিবারে। ওর বাবা ইজরায়েলি জেনারেল ছিল যে ষাটের দশকে ফিলিস্তিনি ভূখন্ড দখলে নেতৃত্ব দিয়েছিল।
ওর দাদা ইজরায়েল সৃষ্টির অন্যতম কারিগর ছিল (ওদের "ডিক্লারেশন অফ ইন্ডিপেন্ডেন্স" সাইন করা ব্যক্তি)।
বুঝতেই পারছেন, "Miko Peled সহীহ ইজরায়েলি নহে" বলার কোন সুযোগই নেই। তা ওনার আপন ভাগ্নি আঠারো বছর বয়সে এক ফিলিস্তিনি মেয়ের আত্মঘাতী হামলার শিকারে মারা যায়। যেহেতু শিক্ষিত মানুষ ছিলেন, তাই তাঁর মস্তিষ্ক তাঁকে ভাবতে বাধ্য করে, কেন একটি আঠারো বছরের কিশোরী আরেকটি আঠারো বছর বয়সী কিশোরীর প্রাণের শত্রু হয়ে যাবে? কি ঘটেছে তাঁর সাথে?
এই সাধারণ একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তিনি সামান্য পড়াশোনা করেন। এবং এর ফল হচ্ছে, আজকে ইজরায়েল তাঁর প্রাণের শত্রু হয়ে গেছে। নিজের দেশে তিনি দেশদ্রোহী। কারন, তিনি এখন বিশ্বব্যাপী বলে বেড়ান ইজরায়েল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র! উনার লেখা একটি বই পড়তে পারেন, The General’s Son: The Journey of an Israeli in Palestine.
আরেকজন ইজরায়েলির নাম নিতে পারি, Ilan Pappe. তিনি একজন ইতিহাসবিদ, যিনি অক্সফোর্ডে গিয়েছিলেন ইজরায়েলি ইতিহাস নিয়ে পিএইচডি করতে এবং গবেষণা করতে গিয়ে ইজরায়েলের ইতিহাস জেনে ফেলেন। সত্য জেনে ফেললে একজন আদর্শ বিবেকবান মানুষ যা করে তিনিও সেটাই করলেন। আজকে পর্যন্ত তিনি নিজেও ইজরায়েলি হয়েও ইজরায়েলকে ঘৃণা করেন।
যে দুইজনের নাম বললাম, উনারা দুইজনই কট্টর জায়নবাদী ইহুদি পরিবারে জন্মে ইজরায়েলেই বেড়ে উঠেছেন, এবং আজও ইহুদি আছেন। তারপরেও উনারা ইজরায়েলকে দেখতে পারেনা।
এমন সংখ্যা প্রচুর আছে।
আর এদিকে আমি সেদিন শুনি বাঙালি নাকি জানেই না ইজরায়েলকে কেন বিরোধিতা করতে হবে! তাই ভাবলাম কিছু ফ্যাক্ট তুলে ধরা যাক, দুনিয়ার যেকোন জায়গা থেকে ভ্যারিফাই করে নিবেন, যদি ভুল হয়ে থাকি কানে ধরে উঠবস করবো। তওবা করে ইহুদি হয়ে যাব।
আমি আমার লেখালেখিতে এমন ওপেন চ্যালেঞ্জ দিয়ে থাকি, কারন আমি জানি আমি আউল ফাউল আবেগতাড়িত লেখা লিখি না।

ইজরায়েল নিয়ে কিছু কথা বলতে গেলেই একদল লোকে বলতে শুরু করবে "আপনি তাহলে হামাসের কর্মকান্ডকে সমর্থন করেন?"
আপনাদের বলে রাখি, এইটা বহু পুরানো টেকনিক, এবং এখানেই বেশিরভাগ মানুষ ধরা খায়। শুরু হয়ে যায় হামাস ভাল না মন্দ এই বিতর্ক, এবং এর ফলে মূল যে বিষয়টা, ইজরায়েলের দখলদারিত্ব, সেটা পাশে পড়ে থাকে।
তাই শুরুতেই বলে দিবেন, "না, আমি হামাসের সমর্থক না। ইনফ্যাক্ট, ইসলামে ইনোসেন্ট সিভিলিয়ান হত্যাকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়, কাজেই হামাসের হাতে নিহত হওয়া মানুষ যদি ইজরায়েলিও হয়, এতে সমর্থন করার কিছু নেই। কিন্তু তার অর্থ এই না যে ইজরায়েল ভাল হয়ে গেল এবং ওদের সমর্থন করতে হবে। তা আমিতো হামাসকে তিরস্কার করলাম, তা বাবাজি, তুমি কি ইজরায়েলের কর্মকান্ডকে তিরস্কার করছো?"

এখানে ওদের মাথা গুলায়ে যাবে।
কারন ওরা আশা করেনা হামাসকে আমি তিরস্কার করবো। মুখস্ত স্ক্রিপ্ট নিয়ে আসছিল তর্ক করতে, প্রথমেই ধরা খেয়ে গেল। এখন আসবে নিজের দ্বিতীয় ও শেষ অবলম্বন নিয়ে আক্রমন করতে।
"ইজরায়েল নিজেকে রক্ষা করতে যা করার তাই করেছে। (They have the right to defend themselves.)"
এইবার ওদেরকে আরেকটা মার দেই চলেন। স্বীকার করে নেই "অবশ্যই! প্রতিটা মানুষেরই নিজেকে ডিফেন্ড করার অধিকার আছে। সেটা ইজরায়েল হলেও ঠিক আছে।"

এখন দেখবেন ডুবন্ত মানুষের মতন হাতড়ে বেড়াচ্ছে। কারন দুইটা অস্ত্র নিয়ে আসছিল আক্রমন করতে, দুইটাতেই আনএক্সপেক্টেড জবাব পেয়ে গেছে। লড়ার আর কোন ভ্যালিড অস্ত্র নেই।
এখন ওদের মুখের উপর নিজের অস্ত্র ছুড়ে মারবেন। এবং সেটা হচ্ছে facts. একদম প্রমাণিত সত্য ঘটনা। দেখেন কি জবাব দেয়।

"আপনি বলেছেন নির্দোষ মানুষ মারা অন্যায়। আমি নিজে মানি অন্যায়। এখন আপনি কি স্বীকার করবেন যে ইজরায়েলও নির্দোষ নাগরিক হত্যা করছে? হামাস বারোশো ইজরায়েলি খুন করেছে (সেটাও রমজান মাসে মসজিদে আকসার ভিতরে হত্যা করা বারোশো ফিলিস্তিনি হত্যার বদলা নিতে) এর জবাবে ইজরায়েল ছাব্বিশ হাজার সিভিলিয়ান হত্যা করে ফেলল, যার বেশিরভাগই শিশু। এক্ষেত্রে আপনার মন্তব্য কি? আপনি দাবি করছেন ইজরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, তাহলে গাজাবাসীর আত্মরক্ষার অধিকার নেই?"

এই যে ইজরায়েলের সমর্থকরা, যারা ইতিহাসের "ই"ও পড়েনাই, এদের ধারণা ফিলিস্তিনিরা এমনিতেই, শখে, মন চায় তাই ইজরায়েলি হত্যা করে। ইজরায়েল কিছুই করে না, ওদের কোন দোষই নাই।
আসেন এদের কিছু ইতিহাস শেখাই।
এবং সেই সাথে আপনাদের বলি একবার শুধু নিজেকে ঐ অঞ্চলে ঐ মানুষদের মাঝে বসিয়ে কল্পনা করুন।

ইজরায়েল যখন রাষ্ট্র হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করে, সেই সময়েও ওদেরকে গাজা উপত্যকা দেয়া হয়নি। আজও ইউনাইটেড নেশন্স ওয়েস্ট ব্যাংক (পশ্চিম তীর) এবং গাজাকে ইজরায়েলের "অকুপাইড টেরিটরি" বা দখলকৃত অঞ্চল হিসেবে উল্লেখ করে। কিন্তু ঐ উল্লেখ করা পর্যন্তই। এর বেশি কিছু করার ক্ষমতা ওদের নেই।
ইতিহাস বলে একটা সময়ে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইহুদি জনসংখ্যা ছিল শতকরা তিন ভাগের মতন। ইজরাইলিরা আল্লাহর নির্দেশেই (ওদের ধর্মমতে) বিশ্বের নানা অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকতো। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ওরা দলে দলে ফিলিস্তিন অঞ্চলে আসতে শুরু করে। তখন ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৮ সালে ইজরায়েলকে ৫৫% অঞ্চল দেয়, এবং ফিলিস্তিনিদের দেয়া হয় মাত্র ৪৫% অঞ্চল। যদিও জনসংখ্যায় ইজরায়েলীদের চাইতে ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি, এবং তারচেয়ে বড় কথা, এলাকাটি ফিলিস্তিনি জনসাধারণের চৌদ্দ পুরুষের ভিটে ছিল। রোহিঙ্গারা যদি মায়ানমার থেকে আপনার বাড়িতে এসে দখল নিতে চায়, আপনি কেনই বা হাসিমুখে নিজের বাড়ি ঘর ছেড়ে চলে যাবেন? ফিলিস্তিনিদের সাথে সেটাই ঘটলো।
ইজরায়েল শুরু থেকেই জমি দখলে মন দেয়। এবং এরজন্য নৃশংস থেকে নৃশংসতম কাজ করতেও ওদের হাত কাঁপেনি। শুনতে অবাক লাগলেও সত্য, কিছুদিন আগেই হিটলারের অত্যাচারে নির্যাতিত, নিপীড়িত জনগোষ্ঠী নিজেরাই তখন নাৎজি জার্মানদের আচরণ শুরু করে। ওদের নৃশংসতার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল যাতে বাকিরা ভয়েই এলাকা ত্যাগ করে।
এর ফলে লাখের উপর ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়ে গাজায় গিয়ে আশ্রয় নেয়।
১৯৬৭ সালে ইজরায়েল আবার জমি দখল শুরু করে, সিক্স ডে ওয়ারে ওরা পশ্চিম তীর বা ওয়েস্ট ব্যাংককে দখলে নেয়। এবং এই সময়েই ওরা জেরুসালেম দখল করে ফেলে। ইউএন ঘোষণা করেছিল জেরুসালেম নিরপেক্ষ অঞ্চল থাকবে, না মুসলিম, না ইহুদি না খ্রিষ্টানের একক আধিপত্ব থাকবে এই অঞ্চলে। কিন্তু ইজরায়েল সেটারও তোয়াক্কা না করে এই পবিত্র শহরটিকে নিজের মুঠোবন্দি করে নেয়।
ব্যস, শুরু হয়ে গেল ইজরায়েলের বর্বরতা।
৬৭তে গাজার সেই ছোট্ট অঞ্চলে জনসংখ্যা ছিল সাড়ে সাত লক্ষ, আজকে দুই মিলিয়নের বেশি। এইটুকু অঞ্চলে এত বিপুল পরিমান মানুষের বসতি মানে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে একে পরিণত করা।
শুধু তাই নাই, ইজরায়েলের হাতেই ওদের ইলেক্ট্রিসিটি, পানি, খাদ্য, জীবিকা, এমনকি বাড়িঘর নির্মাণের অধিকারও ন্যস্ত। ইজরায়েল চাইলে কেউ সমুদ্রে মাছ শিকারের লাইসেন্স পাবে, নাহলে বেকার বসে থাকতে হবে। ইজরায়েল চাইলে কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে পারবে, নাহলে মাথার উপর ছাদহীন থাকতে হবে। ওরা চাইলে আপনার বাড়িতে ত্রাণ পৌঁছাবে, নাহলে না খেয়ে মরেন, কিছুই আসে যায় না। আপনার মায়ের চিকিৎসা প্রয়োজন, আপনার শিশু না খেয়ে আছে, আপনার কিছুই করার নেই। কারন সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে ইজরায়েল।
অর্ধেক জনসংখ্যাই বেকার। আপনি স্থানীয় নাগরিক, আপনি আপনার এলাকার সমুদ্রে মাছ শিকারের লাইসেন্স পাচ্ছেন না, অথচ ইউরোপ আমেরিকা থেকে আগত নব্য ইজরায়েলীরা পারমিট পাচ্ছে। আপনার চোখের সামনে ট্রলারভর্তি মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আপনি ছিপ ফেলেন, আপনাকে ধরে নিয়ে অকথ্য নির্যাতন করবে।
আপনার বাপ দাদার ভিটে দখল করে সেখানে চাষবাস করছে।
আপনাকে আপনারই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে। কারন বাড়ি দখল করাটা ওদের দৃষ্টিতে ধর্মীয় লড়াই। ঈশ্বর এই এলাকা ওদের দিয়েছেন, ওরা সেটা পুনরুদ্ধার করছে।
আপনি দিনের পর দিন হোমলেস। মাথার উপর ছাদ নেই। বা কারোর বাড়িতে আশ্রিত। যদি "অবৈধভাবে" (এপ্লাই করার বছর খানেক পরেও যদি দেখেন এপ্রুভ হয়নি) বাড়ি নির্মাণ করে ফেলেন, ওরা এসে সেই বাড়ি গুঁড়িয়ে দিবে।
আপনি বিচার নিয়ে কার কাছে যাবেন? আমেরিকা? সে নাক সিঁটকে বলবে, "অবৈধ বাড়ি নির্মাণ করলে ইজরায়েলতো ভাঙবেই। এখানে আমাদের কি করার আছে?"
"কিন্তু আমাদের এপ্লিকেশন ওরা ছুঁয়েও দেখে না।"
"দাপ্তরিক কাজ একটু দেরিতে হবেই। আপনাদের ধৈর্য্য ধরা শিখতে হবে।"
রসিকতা ভাই, অতি নির্মম রসিকতা চলছে ওদের সাথে।
আপনি জানেন গত তিরিশ চল্লিশ বছর ধরে পয়ঃনিষ্কাশনের লাইনের কোন মেরামত করা হয়নাই? কারন? ইজরায়েল ওটা নিয়ন্ত্রণ করে। ওদের ইচ্ছাই নাই ওটা মেরামতের।
ইউরোপ আমেরিকায় একটা কুকুরের জীবনও ওদের চেয়ে আরামদায়ক হয়ে থাকে।
গাজার চার দিকে আকাশ ছোঁয়া উঁচু দেয়াল। দেয়ালের উপরে কাঁটাতারের বেড়া। ফটক দিয়ে বাইরে কাউকে বেরোতে হলে ইজরায়েলের অনুমতি নেয়া লাগে। অনুমতি পেলে বেরোতে পারবেন, নাহলে বন্দি। ওদের কারোরই কোন পাসপোর্ট নেই। ওদের নিজেদের কোন রাষ্ট্র নেই। ওদের কোন চাকরি নেই।
দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, এবং বছরের পর বছর ফিলিস্তিনিরা (গাজা ও পশ্চিম তীর) সহ্য করতে না পেরে আন্দোলনে নামে। ওদের অস্ত্র একটাই, পাথর। ইজরায়েলও জবাব দেয় বুলেট দিয়ে। এদিক থেকে পাথর যায়, তো ওদিক থেকে মেশিনগান ছোটে। আশির দশকে ইজরায়েল "আইন পাশ করে" যে কোন ফিলিস্তিনি শিশুকে পাথর ছুড়তে দেখলে ওদের হাত ভেঙ্গে দিতে হবে। এইটা ইজরায়েলি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল। আর বড় কেউ হলেতো সরাসরি গুলি।
আপনি যদি বলেন "ওদের পাথর ছোড়ার দরকার কি?" তাহলে বলবো, "আপনি নিশ্চই মজাক করছেন। বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে আলাদা হলো কেন? আমার তোমার রক্ত রক্ত, আর ওদের রক্ত পানি? ওদের অধিকার নাই স্বাধীনভাবে বাঁচার? প্রায় সাত দশক হলো, আর কত?"

আমাকে জবাব দিতে হবেনা, এখন আপনি একটু নিজেকেই প্রশ্ন করেন, ইজরায়েলের যেমন আত্মরক্ষার অধিকার আছে, দুনিয়ার সব দেশের সব জাতিরই আত্মরক্ষার অধিকার আছে, ফিলিস্তিনিদের আত্মরক্ষার অধিকারের বেলায় আপনি কেন হাত কচলান? আর কত নির্যাতন সহ্য করবে? আর কত রক্ত দিবে? দিনের পর দিন পরিবারের পর পরিবার নিশ্চিহ্ন হচ্ছে, ওরা কতদিন মুখে আঙ্গুল চেপে রাখবে? আপনাকে নিজের সন্তানকে কবর দিতে হয়েছে? ওদের ঘরে ঘরে এই ঘটনা ঘটে। এই যে সাম্প্রতিক হামলা চলছে, কত হাজার শিশু মারা গেছে জানেন?
ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় সাপোর্টার আমেরিকা। মধ্যপ্রাচ্যে শক্তি ধরে রাখতে হলে ওর একটা বিশ্বস্ত মিত্র দরকার, ইজরায়েল সেটা। সেই আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার একবার গাজাকে বলেছিলেন "এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ছাদহীন কারাগার।"
নেলসন ম্যান্ডেলা, যিনি নিজেই এপারথাইড রেজিমের শিকার ছিলেন, তিনি ফিলিস্তিনের পরিস্থিতি দেখে বলেছিলেন "এদের অবস্থা আমাদের চেয়েও খারাপ। এটিই আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়!"
আর্চবিশপ ডেসমন্ড টুটু বলেছিলেন "আমি সাউথ আফ্রিকার বর্ণবাদের সাথে মেলালে বলবো ফিলিস্তিনের অবস্থা অনেক খারাপ।"
সাউথ আফ্রিকার বর্ণবাদ পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণিত বর্ণবাদের একটি ছিল। কালোদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা, আলাদা রাস্তা, আলাদা যানবাহন, চাকরি, স্কুল ইত্যাদি ছিল - কিন্তু সাদারা ওদের পশু পাখির মতন খুন করতো না। ওদের বাড়িঘর গুড়িয়ে দিত না। মূল পার্থক্য ছিল এই যে, কালোদের নিজেদের এলাকায় স্বাধীনতা ছিল। গাজাবাসীদের নিজেদের শহরের ভিতরেই স্বাধীনতা নাই।
সেই সাউথ আফ্রিকা ইজরায়েলকে আন্তর্জাতিক আদালতে টেনে নিয়ে গেছে। গণহত্যার অভিযোগ এনেছে। ওরা নিজেরা একসময়ে এপারথাইড স্টেট ছিল, ওরা তাই ইজরায়েলের এই আচরণ মেনে নিতে পারছে না। পুরানো পাপের প্রায়শ্চিত্যও বলা যায়।
তবে সাউথ আফ্রিকানরা স্থানীয় কালোদেরকে ঘৃণা করলেও নিশ্চিহ্ন করতে চায়নি। ইজরায়েলের টার্গেটইতো ফিলিস্তিনিদের নিশ্চিহ্ন করে দেয়া।
আপনি বলতেই পারেন সমস্যার সমাধান হচ্ছে না কেন?
উত্তরটাও সহজ, কারন ইজরায়েলই চাচ্ছে না সমস্যার সমাধান। কারন সমস্যার সমাধান ইজরায়েলের কাছেও নেই।
ওয়ান স্টেট্ সল্যুশন ওরা মানবে না, কারন স্থানীয় ফিলিস্তিনি সংখ্যা ওদের চেয়ে বেশি। "ডেমোক্রেসি" হলে ভোটে ওরা জিতবে না। তাই এই রিস্ক ওরা নিবেনা।
টু স্টেট সল্যুশন ইজরায়েলই মানছে না। কারন ওদের আরও ল্যান্ড চাই, পুরো এলাকাটা চাই। সেটাই ওরা করছে। মাত্র ৫৫% ল্যান্ড দিয়ে ওদের চলবে কিভাবে?
তাহলে সমাধান কি?
জ্বি, ফিলিস্তিনিদের একেবারে শেষ করে ফেলা। কিন্তু ২২ লাখ মানুষকে এক ঝটকায় নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার কথাটা ভদ্রসমাজে বলা সম্ভবও না। ঠিক এই কারণেই আমেরিকা, ইংল্যান্ড বা বিশ্বমাতবরদের কারোর কাছেই কোন সমাধান নেই।
এই যে কথাগুলি বললাম, এইগুলি সবই ঐতিহাসিক ফ্যাক্ট। চেক করেন, তারপরে আমার ভুল খোঁজার চেষ্টা করেন। পাবেন না। তবে লাভ একটা হবে, কিছুটা পড়াশোনা হবে। সঠিক তথ্য জানার পরে ইজরায়েলকে কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষ সাপোর্ট করতে পারেনা। সম্ভব না।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

বাকপ্রবাস বলেছেন: অনেক ইহুদি আছে এবং তার মানব বন্ধন করে প্রতিবাদও করেছে, তারা ফিলিস্তিনেদের এভাবে হত্যা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে এবং তারা জায়নবাদ বিরোধী, ফিলিস্তিনিদের মেরে জোর করে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা তারা চায়না

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

রিদওয়ান খান বলেছেন: চরম বাস্তব সত্য কথন তুলে ধরেছেন।

“If Hamas has to be dismantled because of what it did on October 7th…then the Israeli government has to be dismantled 10 times over”

-Norman Finkelstein

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৩

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: কঠিন ও নির্মম বাস্তবতা। :(

৩| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ দুপুর ১:৩০

মহাজাগতিক চিন্তা বলেছেন: লেখার কিছু অংশ পড়লাম।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৪

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ,

৪| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:১২

আলামিন১০৪ বলেছেন: ইসরাইলীদের অধিকাংশের ঈশ্বরে বিশ্বাস নেই, এ তথ্য কোথায় পেলেন?

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৭

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: জায়নিজম সেক্যুলারদের মতবাদ। জাতীয়তাবাদ থেকে এসেছে এই ধারণা।
অর্থোডক্স ইহুদি ধর্মে মাসিহা আসার আগে পর্যন্ত ওদের কোন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নেই।
কিন্তু জায়নিস্টরা সেটার পরোয়া না করেই ইজরায়েল প্রতিষ্ঠা করেছে। এ কারনে অর্থোডক্স জিউদের সাথে ওদের দ্বন্দ্ব এবং ওদের মতে জায়নিস্টরা "কাফের/নাস্তিক।"

৫| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:২১

রাজীব নুর বলেছেন: আমি আপনার সাথে একমত নই।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনাকে সহমত হতে হবে না। পড়েন, পড়াশোনা করলে ওদের আসল রূপ জানবেন, তারপরেও খুনিদের সাপোর্ট করলে সেটা আপনার ব্যাপার।

৬| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৪

আরইউ বলেছেন:




“ঘৃণা” অত্যন্ত কঠিন একটা শব্দ। কোন জাতি-ধর্ম-বর্ণ-দেশকে ঘৃণা করা যায়না; সাপোর্ট না করা আর ঘৃণা করা এক নয়।
দেখুন, আমাদের ব্লগের রাজীব বিভিন্ন জায়গা থেকে এর ওর লেখা মেরে কেটে দেন সোজা বাংলায় চোরাই লেখা ব্লগে প্রকাশ করেন। ওনার এই স্বাভাবকে আমি অপছন্দ করতে পারি, কিন্তু আমি ওনাকে ঘৃণা করি এমন নয়!

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: যারা নিরীহ মানুষকে ওদের বাড়িঘর থেকে বের করে দিয়ে জুলুম করতে করতে হত্যা করে, ওদেরকে "অপছন্দ" করিনা, আমি কঠিন ঘৃণা করি।

৭| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ বিকাল ৪:০৫

সোনালি কাবিন বলেছেন: আরইউ বলেছেন:
“ঘৃণা” অত্যন্ত কঠিন একটা শব্দ। কোন জাতি-ধর্ম-বর্ণ-দেশকে ঘৃণা করা যায়না; সাপোর্ট না করা আর ঘৃণা করা এক নয়।
দেখুন, আমাদের ব্লগের রাজীব বিভিন্ন জায়গা থেকে এর ওর লেখা মেরে কেটে দেন সোজা বাংলায় চোরাই লেখা ব্লগে প্রকাশ করেন। ওনার এই স্বাভাবকে আমি অপছন্দ করতে পারি, কিন্তু আমি ওনাকে ঘৃণা করি এমন নয়!

% খুব সুন্দার বলেছেন।

৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

মেঠোপথ২৩ বলেছেন: ইজরাইলকে ঘৃনা করার জন্য আসলে মুসলিম হবার দরকার নাই, শুধু প্রয়োজন মানুষ হবার।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:১৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ঠিক বলেছেন।

৯| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪০

বিজন রয় বলেছেন: যে অন্যায় করে তাকে সবাই ঘৃণা করবে!
কিন্তু আপনি অন্য কারণে করেন।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:২১

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: জ্বি না, আপনি বেশি বুঝেন। আমি "ইহুদিদের" ঘৃণা করিনা, সেটা উপরেই লিখেছি। এও লিখেছি ইহুদিদেরই অনেকে জায়নিস্টদের ঘৃণা করে।
জায়ানিস্টদের মতন কেউ আধুনিক বিশ্বে আছে? থাকলে ওদেরকেও ঘৃণাই করতাম।
আমি মানুষকে কর্ম দিয়ে বিচার করি, ধর্ম দিয়ে নয়।

১০| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:০৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: থিওডোর হের্জল হচ্ছে জায়নবাদের প্রতিষ্ঠাতা। তার নামে ইজরাইলে একটি শহর আছে।বিগত কয়েক শতক ধরে ইহুদিরা ছিল এক রাস্ট্রবীহিন জাতি। সারা ইউরোপ জুরে একটা সময় ছিল Antisemitism (ইহুদি বিদ্বেশ) চরমে । কোন দেশেই ইহুদিরা শান্তিতে ছিল না। থিওডোর হের্জল যে মুলত ছিলেন একজন নাস্তিক তিনি একটা ইহুদি রাস্ট্রের পরিকল্পনা প্রকাশ করে জায়নবাদ মতবাদ ছড়িয়ে দেয় ইউরোপে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রাস্ট্রবীহিন ইহদিদের মাঝে। যেহেতু বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের অস্তিত্বের কথা আছে , তাই তারা সেই জায়গাতেই একটা স্টেট বানানোর পরিকল্পুনা করে। স্টেটবীহিন এক জাতির নিজস্ব স্টেট পাবার বাসনাকে ধর্মীয় কালার দেয়া হচ্ছে বছরের পর বছর। আসলে এর মাঝে কোন ধর্মের কোণ নাম গন্ধও নাই।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:২৮

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ পড়াশোনা করে মন্তব্য করার জন্য। কিছু বেকুব কিছু না জেনেই যা খুশি তাই কমেন্ট করছে।
আসলে ইহুদি ধর্মে, এমনকি কুরআন ও বাইবেলেও বনি ইসরায়েলকে আল্লাহ "প্রমিসড ল্যান্ড" উপহার দেয়ার উল্লেখ আছে। কাজেই, একেবারেই ধর্মহীন ধারণা এটি নয়। সেটা হলে সহজ হয়ে যেত ঘটনা। ধর্মীয় আবেগ কাজ করায় ইভাঞ্জেলিক খ্রিষ্টানরাও যুক্ত হয়েছে।
আরেকটা ব্যাপার, এই অঞ্চল থেকে শুধু মুসলিমই না, স্থানীয় খ্রিষ্টানদেরও বিতাড়িত করা হয়েছে।

১১| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:২৪

কামাল১৮ বলেছেন: মুসলমান বলে ইয়াহুদিদের ঘৃনা করেন।আল্লাহ এবং তার নবীও ঘৃনা করতো।কিন্তু গড ও ইয়াহুয়ে করেনা।এই তিন ধর্মের প্রভু তিন রকমের।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:২৫

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনি ছাগলের মতন এমন একটা কমেন্ট করলেন!
আল্লাহ এবং নবী (সঃ) যদি ইহুদিদের ঘৃণাই করতেন, তাহলে ইতিহাসে মুসলিমরা ওদেরকে কখনই নিজেদের দেশে থাকার সুযোগ দিত না। অথচ ওদের ধর্মের প্রধানতম স্কলার, মোসেস মাইমনিদিস, যাকে ওরা রামবাম বলে ডাকে, উনি জন্মেছিলেন মুসলিম দেশে, পড়াশোনা করেছেন মাদ্রাসায়, আরবিতে, লেখালেখিও করেছেন আরবিতে, এবং উনিই সালাদিন আল আইউয়ুবীর প্রধান চিকিৎসক ছিলেন, যখন তিনি জেরুজালেমকে পুনরুদ্ধার করছিলেন ক্রুসেডরদের হাত থেকে।
এবং তাঁরও আগে হজরত ওমর (রাঃ) জেরুজালেম দখল করে প্রথমবারের মতন ইহুদিদের ফিরিয়ে আনেন (খ্রিষ্টানরা তাড়িয়ে দিয়েছিল) এবং উনার সময়েই সেখানে ওদের সিনাগগ নির্মিত হয়। আপনি কিসের আলাপ পারছেন? কার সাথে পারছেন? আমি অশিক্ষিত মূর্খ না যে যা বলবেন হেসে হেসে কবুল করে নিব। আমার সাথে আউল ফাউল কথা বলার আগে ভাল করে পড়াশোনা করে আসবেন। আপনার জন্যই সুবিধা হবে।

১২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ১২:৪৮

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার পোস্টের মূল বক্তব্যের সাথে একমত। ইসরাইল একটি ভয়ংকর দানব রাষ্ট্র হয়ে ওঠেছে। একে নিবৃত্ত করার মতো কোন শক্তি আপাতত দেখা যাচ্ছে না, যেটা হতাশাব্যাঞ্জক।

আপনার অধিকাংশ লেখাটার মত এই লেখা সম্পর্কে আমার মন্তব্য হলো আপনি ধর্মগ্রন্থের সাথে যুক্তিশীলতাকে মেলাতে গিয়ে যুক্তির উপর অবিচার করেন। সেকারনে আপনার পোস্টগুলো দুর্বল এবং নিরস হয়ে ওঠে।

যেমন ধরুন, আপনি লিখেছেন ইসলামে ইন্নোসেন্ট সিভিলিয়ান হত্যাকে জঘন্যতম অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নিশ্চয়ই ঠিকই লিখেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলে ধর্মগ্রন্থে যদি লেখা থাকতো ইন্নোসেন্ট সিভিলিয়ান হত্যা করা বৈধ, তাহলে কী নৈতিক ভাবে আপনার কাছে সেটা গ্রহনযোগ্য হতো?

যে জিনিস কাণ্ডজ্ঞান দিয়ে, মানবিক বোধবুদ্ধি দিয়ে বোঝা যায়, তাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়ে বোঝার প্রয়োজন কী?


৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৩:৩০

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আপনি আমাকে এমন একটা উদাহরণ দিন যেটাকে "কান্ডজ্ঞান" দিয়ে আপনার মনে হচ্ছে সঠিক, কিন্তু কুরআনে বা ইসলামে সেটাকে বেঠিক বলা হয়েছে।
বা উল্টোটা। ইসলাম বলছে সঠিক, কিন্তু কান্ডজ্ঞান বলছে সেটা বেঠিক।
একটা উদাহরণ দিন, শুনি।
তবে উদাহরণটা নিজে ভাল করে গবেষণা করে দিবেন। ধন্যবাদ।

১৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ ভোর ৪:৫৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: আমার মন্তব্যে আমি বলিনি যে কাণ্ডজ্ঞান দিয়ে যা সঠিক কুরআনে বা ইসলামে সেটাকে বেঠিক বলা হয়েছে। আমি প্রশ্ন করেছি যে, যেটা কাণ্ডজ্ঞান দিয়ে, মানবিক বোধবুদ্ধি দিয়ে বোঝা যায়, তাকে ধর্মগ্রন্থ দিয়ে নতুন করে বোঝার প্রয়োজন আছে কী।

তার উত্তরে আপনি আমাকে "ভাল করে গবেষণা করে" কাণ্ডজ্ঞানের সাথে ধর্মের সাংঘর্ষিক বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিষয়ের উদাহরণ দিতে বললেন। আপনাকে ধন্যবাদ। আমার মন্তব্যের মূল কথাটা ছিলো এই যে, কাণ্ডজ্ঞান এবং মানবিক বোধবুদ্ধি apriori বা অবরোহী। ধর্মগ্রন্থ পড়ার এবং বোঝার আগেই আমাদের কাণ্ডজ্ঞান এবং মানবিক বোধবুদ্ধি অর্জন করতে হবে। এর উল্টো হলে মহা মুশকিল।

এখন এর উল্টা হলে (যেটার উদাহরণ আপনি চেয়েছেন) কেন মুশকিল তার উদাহরন দেই। তবে সেটা বাইবেল থেকে!

"Now go and smite Amalek, and utterly destroy all that they have, and spare them not; but slay both man and woman, infant and suckling, ox and sheep, camel and ass" - 1 Samuel 15:3 (এখন যাও, অমালেকীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করো। ওদের তোমরা একেবারে শেষ করে দাও, ওদের সব কিছু ভেঙ্গে চুরে তছনছ করে দাও। কাউকে বাঁচতে দিও না। ছেলে মেয়ে কাউকে বাদ দেবে না। তাদের সমস্ত গরু, মেষ উটও তোমরা শেষ করে দেবে।)

আপনার হয়তো জানা নেই যে গাজার শিশুদের উপর বোমা মেরে শিশু হত্যাকে নৈতিক ভাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতনিয়াহু উপরের ঠিক এই লাইনগুলো তার বক্তৃতায় একাধিকবার নির্দেশ করেছে।

১৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮

ধুলো মেঘ বলেছেন: আমি ইসরাইলকে ঘৃণা করিনা। কেন জানতে চান?

আপনার ছেলে স্কুলে আরেক গুন্ডা প্রকৃতির ছেলের কাছে মার খেয়ে এল। আপনি নালিশ নিয়ে গেলেন ওর বাবার কাছে। বাবা বলল, "পোলাপাইন মানুষ, ভুলভাল একটু করবারই পারে, আপনের সমস্যা হইলে পোলারে স্কুলে পাঠাইয়েন না, কোলে নিয়া বইসা থাকেন।"

কি? কাকে দোষ দেবেন? ছেলেকে, নাকি তার বাবাকে? নাকি নিজের ছেলেকেই বলবেন ঐ পোলার ধারে কাছে যাবি না?

আমি ইসরাইল নামের রাষ্ট্রটিকে দেখি এক মেনে না নেয়া কঠিন বাস্তবতা হিসেবে। আর ঘৃণা করি আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানী নামের পুঁজিবাদী ও মুসলিম বিদ্বেষী দেশগুলোকে। যারা দিনের পর দিন অন্যায় হতে দেখেও তাদের নষ্ট ছেলেকে প্রশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে আসছে।

১৫| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২৪ রাত ৯:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.