নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

I am a simple man with simple thoughts. I have some believes, so I respect others too.Try to learn sth in deep and try to teach too. I believe \" Dream big, aim high, do whatever you suppose to do, one day you will be successful\" - ex us air c

ম্যাভরিক০৫

ম্যাভরিক০৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বালিশিরা রিসোর্টঃ শ্রীমঙ্গল এর ভ্রমণ কাহিনী

১২ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৬

বেশ কিছুদিন যাবত ইচ্ছা হচ্ছিল সিলেট ঘুরতে যাওয়ার । কিন্তু দুঃখের ব্যপার হল, যখন আমি ছুটি পেলাম তখন শুরু হলো মহা বন্যা।বন্যার্ত সিলেট এরকম সময়  আমার পর্যটক হিসেবে যাওয়াটা মোটেও শোভনীয় দেখাবে না। তারপর বন্যা শেষ হবার পর শুরু হল আমার জ্বর। ট্রেনের টিকেট কাটা ছিল। কিন্তু যেতে পারি নাই।

অবশেষে পরের সপ্তাহে ট্রেনের টিকেট কাটলাম তবে সিলেট না, শ্রীমঙ্গল ঘুরার জন্য। কারণ ইতিমধ্যে আমার ছুটি প্রায় শেষের পথে। প্ল্যান টাকে কেটে ছোট করতে হবে আর  বন্যার ব্যপারটা তো আছেই। এবারে আমার সাথে যাত্রা সঙ্গী হিসেবে আছে আমার নব বিবাহিতা (এক বছর হয় নাই এখন বলে নববিবাহিতা বলছি আর কি!!) স্ত্রী। এটা ছিল আমাদের জন্য একসাথে দ্বিতীয় করা দ্বিতীয় ভ্রমণ।


যাত্রা শুরুঃ

শ্রীমঙ্গলে  বাস বা ট্রেন দুইভাবেই যাওয়া যায়। তবে সিলেটের ট্রেন জার্নি টা বেশ আরাম দায়ক। সকাল বা বিকেল দুবেলাতেই আন্তঃনগর ট্রেন সিলেট বা শ্রীমঙ্গল যায়। নিচে সময় সহ একটি ছবি দেয়া হল। ট্রেনের টিকেট অনলাইন বা অফলাইন মানে স্টেশনে গিয়ে কেটে আসতে পারবেন। অনলাইনে ট্রেনের টিকেট ৫ দিন আগে থেকে পাওয়া যায়  আর লিঙ্ক কি হল https://eticket.railway.gov.bd/


আমরা সকাল ৬ টা ২০ এ পারাবত এক্সপ্রেস এ রউনা হই। সব মিলিয়ে ভ্রমণ টা খুব সুন্দর ই ছিল । যদিও আমাদের দুইজন এর পাশা পাশি সিট ছিল না। আমার পাঁশের ভদ্র লোক কে অনেক অনুনয় বিনয় করেও সিট টা একটু পরিবর্তন করাতে পারি নাই। সত্যিই ব্যপারটা আমাদের  জন্য অনেক দুঃখজনক ছিল । অবশেষে উনি নেমে যাওয়ার পর একসাথে চা বাগান দেখতে দেখতে বেলা ১ টায় শ্রীমঙ্গল পৌঁছে যাই।

এর পর আমাদের গন্তব্য বালিশিরা রিসোর্ট । এটি শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে গ্র্যান্ড সুলতান হোটেলর পাশে অবস্থিত। ট্রেন থেকে নেমেই আমরা আমরা রিসোর্ট এর উদ্দেশ্যে সি এন জি অটো রিক্সা নিয়ে রউনা হয়ে যাই। ভাড়া  ছিল ২৫০ টাকা আর প্রায় ২০ মিনিট সময় লেগেছিল পৌঁছুতে। আসার পথে দেখলাম প্রায় বেশ কিছু রিসোর্ট  যেমন নিশরগ-নিরব, লিচিবাড়ি রিসোর্টও এই রাস্তায়ই অবস্থিত।



বালিশিরা রিসোর্টঃ

আমরা রিসোর্ট এর বুকিং জন্য আগেই অনলাইন থেকে নাম্বার নিয়ে কল দিয়ে বুকিং করেছিলাম। অফ সিজন বলে ৪০% ডিসকাউন্ট এর একটা  অফার ছিল। আমারা বুকিং নিশ্চিত করতে ৫০% টাকা বিকাশে পেমেন্ট করেছিলাম আর বাকিটা চেক আউটের সময় দিতে হয়েছিল। সব মিলিয়ে দিন প্রতি পড়েছিল প্রায় ৬১০০ টাকা।

আমাদের রিসোর্টে check in সময় ছিল দুপুর দুটো। চেক ইন করার সময় আমাদেরকে কমপ্লিমেন্টারি ওয়েলকাম ড্রিঙ্কস দিয়ে স্বাগতম জানানো হয়। এরপর চলে যাই আমাদের রুমে, যার নাম ছিল কালবেলা। কালবেলা হচ্ছে সমরেশ মজুমদারের একটি বিখ্যাত উপন্যাস। রুম টি বেশ পরিপাটি এবং সাজানো একটা ৪ তারকা মানের হোটেল এর রুম গুলোর মতোই সুন্দর ছিল। এর সাথে একটি প্রাইভেট পুলও ছিল। যেটিই ছিল মূল আকর্ষণ।


বালিশিরা রিসোর্টে আমরা
আমরা বিকেলটি রিসোর্ট এর সবুজ শ্যামলীমায় ঘেরা বাগানে বসে চা খেতে খেতে কাটিয়ে দেই। বালিশিরা রিসোর্টের ফুল বাগান সত্যিই অনেক সুন্দর ছিল। অনেক প্রজাতির জবা আর পাতা বাহার গাছের সমারোহে মনে হচ্ছিল আমরা অসম্ভব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটাচ্ছি। বালে রাখি, এখানে বারবিকিউ করার ব্যবস্থাও আছে। চাইলে বারবিকিউ বা আউটডুর পার্টি করার জন্য জায়গা টা মন্দ না।

এরপর আমরা হেঁটে হেঁটে চলে যাই গ্র্যান্ড সুলতান হোটেল-এর সামনে ছোট্ট একটি বাজারে। যেখানে বেশ কয়েকটি দোকানে সিলেটের বিশেষ করে মনিপুরী উপজাতিদের তৈরি বিভিন্ন রকমের কাপড় বা শোপিস ছিল। এখান থেকে চাইলে আপনি ভালো মানের বিছানা চাদর কিংবা ঘরে পড়ার মনিপুরী জামা বা পাঞ্জাবি কিনে নিতে পারেন। আমরা রিসোর্টে ফিরে এসে ডিনার করে নেই। ডিনার এর জন্য আগে থেকেই বলে রাখতে হয়। খাবারের পরিমাণ এবং রান্নার মান ভালোই ছিল।

ঘুরাঘুরিঃ

পর দিন সকালবেলা আমাদের প্ল্যান ছিল বেশ কয়েকটি জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার। একটি মোটরসাইকেলও ম্যানেজ করে ফেলেছিলাম। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত বৃষ্টি থাকায় আমাদের চা বাগান আর শ্রীমঙ্গলের চা জাদুঘর ভ্রমণ করা প্ল্যান বানচাল হয়ে যায়। যাই হোক, বিকেলের দিকে আমরা সবুজ বনানীতে ঘেরা রাস্তা দিয়ে চলে যাই লাউয়াছড়া সাফারি পার্কে। এর আগে ২০১৭ সালে আমার অফিসিয়াল একটি কাজে লাওয়াছড়া আসা হয়েছিল। প্রায় পাঁচ বছর আগের স্মৃতি হঠাৎ করে মনে পড়ল। আর আমাদের মনে হচ্ছিল আমরা যেন সবুজে ঘেরা প্রকৃতির একদম কাছে চলে গিয়েছি। গাছ গাছালি আর বনের প্রাণীদের দেখে মনে হচ্ছিল আমরা তাদের অতিথি। এখানে আমরা কিছুদূর হাঁটাহাঁটি করলাম আর কিছু ছবি তুলে নিলাম।


লাউয়া ছড়া বনঃ আমার আছে জল  সিনেমা এর শ্যুটিং এখানে হয়েছিল
লাউয়াছড়া বনটি বেশ বড় বড়ই বলা যায়। এটি পুরোটি ঘুরতে প্রায় একদিনের মতো সময় লাগে। কিছুদূর ঘুরে আমরা আমাদের পরবর্তী গন্তব্যে চলে যাই। আমার স্ত্রীর নানা বাড়ি মৌলভীবাজার হউয়ায় আমাদের কিছু আত্বিয় স্বজনদের বাসায় যাওয়াটা অবশ্যম্ভাবি হয়ে পরেছিল। বেশ ভাল জামাই আদরটাও এই ভ্রমণ কাহিনীর অন্তর্গত অংশ বলা যায়।

ফিরতি যাত্রাঃ

দেখতে দেখতে আমাদের দুই দিনের ট্যুর শেষ হয়ে গেল। এবার আমাদের যাওয়ার পালা। দুপুর বারোটা আমরা হোটেল থেকে চেক আউট করে আমরা শ্রীমঙ্গল শহরে চলে আসি। সিলেটে আসলাম আর কিছু চা পাতা কিনব না তা কি করে হয়। তাই ভাল মানের কিছু চা পাতা কিনে নিলাম। যদি সব গুলো দোকানেই বলে তার চা ই এক নাম্বার। প্যাকেট দেখে বুঝা বড় দায়। তবে একটু বেশি দাম দিয়ে টি মিউজিয়ামের চা কিনা তা ভাল সিদ্ধান্ত। এরপর পানসী রেস্টুরেন্ট থেকে দুপুর এর খাবার খেয়ে নেই। খাবার খুব আহামরি ভাল ছিল না আর এর দাম ও ছিল অনেক বেশি। যাই হোক, এর পরের বার আমাদের সাতকড়া রেস্টুরেন্টএ ঢুঁ মারতে হবে বলে মনে হচ্ছে। চলে এলাম স্টেশনে।

আমাদের ঢাকা ফিরে যাওয়ার ট্রেন ও ছিল পারাবত এক্সপ্রেস। বিকেলে .. টায় ট্রেন ে উঠার পর একটু কষ্টকর অনুভূতি হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আরো কিছু ঘুরে ঘুড়ি বাকি রয়ে গেল। এদিকে আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে। এক্ষনি বৃষ্টি নেমে যাবে। ট্রেন ে উঠলাম আমরা। ট্রেন যাচ্ছে লাউয়াছড়ায় বোনের বিতর দিয়ে ঝক ঝক ঝক ঝক করে শব্দ করে। হুট করে কোলে এল বৃষ্টি। আমি আর আমার স্ত্রী দুজনেই ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করলাম। চা বাগানের মাঝ দিয়ে ট্রেন জার্নি আর এর সাথে বৃষ্টির ছোঁয়া। বেশ ভাল লাগা একটি অনভূতি দিয়ে আমাদের ভ্রমণ এর সমাপ্তি হলো।



আমাদের ভ্রমণের পুরো ভিডিও দেখতে আমার ইউটিউবে যেতে পারেন। লিংক এখানে: ট্রাভেল ফিকশন
কেমন লাগলো জানাবেন অবশ্যই।
ধন্যবাদ

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৩৫

মিরোরডডল বলেছেন:




অবাক হলাম, এই পোষ্ট কি প্রথম পাতায় যায়নি সেই সময়, এতো কম রিড আর নো কমেন্টস দেখে ।
চমৎকার একটা ভ্রমণ পোষ্ট । স্পেশালি ট্র্যাভেল ফিকশনের লিংকটা দেখে খুব ভালো লেগেছে ।
ইনফরমেটিভ আর অরগানাইজড । আই উইশ ওখানে যাই ।
অনেক আগে সিলেটের ভ্রমণ মনে পড়ে ।
হয়তো আবার যাবো কখনও ।



২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৪

ম্যাভরিক০৫ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ফেইসবুক আর রিলস এর কারনে মনে হয় এখন পাঠকেরা তেমন ব্লগ পড়ে না। এত কম রিডার দেখে ব্লগ লিখতেও লাগে আলসেমি। তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি...

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২২ দুপুর ১:৪১

মিরোরডডল বলেছেন:




ট্র্যাভেল ফিকশনে আরও কিছু ভিডিও দেখলাম ।
একটা ছোট ভিডিও খুব ভালো লাগলো, স্পেশালি মিউজিকটা ।
ওটা কোথায় ? Sunset & Hills নামে আছে ।
সময় করে বাকি ভিডিও দেখবো ।
এরকম ভিডিও অনেক লাইক করি ।
থ্যাংকস ফর শেয়ারিং ।


২৩ শে নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৭

ম্যাভরিক০৫ বলেছেন: ভিডিও দেখে কমেন্টে জানাবেন। আমি নিচে লিখে দিব।
আবারো ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.