নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মানুষ-মানুষের কল্যাণে কাজ করি,মানুষের কথা বলি।।

শিবলী আখঞ্জী

শিবলী আখঞ্জী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘুঘরাছড়ি রাবার বাগানের ভেতর দিয়ে অবৈধভাবে পাচার হয় বিপুল পরিমাণ বেলে পাথর।

১০ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:৩০

ঘটনাটি সাম্প্রতিক না হলেও চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষের দিকে ঘটেছিল।কাজের চাপ সহ বিভিন্ন কারনে ব্লগে আসা হয় না,নয়তো অত্র ব্লগে কাহিনীটা লিখে রাখতাম অনেক আগেই।সেদিন মোবাইল ডিউটিতে নিয়োজিত ছিলাম চার সদস্যের টিম দুপুর বেলায় আমাদের টিম ইনচার্জের ফোনে কল বেজে উঠলো, চলন্ত গাড়ি একটু থামিয়ে ফ্রন্ট সিট থেকে নেমে এসে আমাদের ইনচার্জ জিজ্ঞেস করলেন বিজিতলা সেনা ক্যাম্পটি কোন দিকে সেনা ক্যাম্পের পাশে কোনও রাবার বাগান আছে নাকি? উত্তর দিলাম এখানে ঘুঘরাছড়ি রাবার বাগান আছে,বিলম্ব না করে রওয়ান দিলাম ঘুঘরাছড়ির উদ্দেশ্য............

দুর্গম পথ মারায়ে পৌছালাম রাবার বাগানে,গিয়ে দেখি বাগানের সরু রাস্তায় পার্কিং করা নিম্নমানের বেলে পাথরের স্তূপ পাথর বোঝাই তিনটি ষোল ফুট সাইজের ট্রাক দাড়ি টুপি পরিহিত এক সাংবাদিক বেশ কজন শ্রমজীবী মানুষ আর এক প্লাটুন সেনা সদস্য।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সেনা সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারলাম;সেনাবাহিনীর কাজে ব্যবহৃত স্টিকার লাগিয়ে ওরা অবৈধ ভাবে উত্তোলনকৃত পাথর পাচার করে।শ্রমজীবী মানুষ গুলোর মধ্যে কেউ লোড আনলোড দাতা কেউ ট্রাক ড্রাইভার কেউ ট্রাকের হেল্পার।ওদের কাছে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলাম বহুদিন আগে থেকেই ওরা এই রাস্তা দিয়ে টনের টন পাথর বোঝাই করে সেনাবাহিনী যেখানে বিল্ড কনস্ট্রাকশনের কাজ করতেছে সেখানে গিয়ে মাল পৌঁছায়।

সেনা বাহিনীর ইনচার্জ এর কাছে আমরা পৌছানোর আগেই দাড়িটুপি পরিহিত একটি লোক সমঝোতার মাধ্যমে পাথর ভর্তি ট্রাক গুলো ছাড়িয়ে নিতে এসেছিল মূল ঘটনা এড়িয়ে গিয়ে বিভিন্ন ধরণের চেষ্টা তদবির করেও কোনও ফল পায়নি লোকটা,ছবিতে পায়জামা পাঞ্জাবি টুপি পরিহিত দাড়িওয়ালা লোকটা দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি।

সেনা অফিসারের আদেশে পুলিশ সাংবাদিক সেনাসদস্যদের মধ্যে অনেক ফটোসেশন হলো আমি আমার স্মার্ট ফোন দিয়ে গাড়ির নেমপ্লেট সহ ছবি তুললাম স্তুপীকৃত পাথরের ছবি তুললাম শ্রমজীবী মানুষগুলোর ছবি তুললাম সেনাটিমের ছবি তুললাম সব শেষে গেলাম সাংবাদিক সাহেবের কাছে উনি আমার ক্যামেরায় ছবি তুলতে নারাজ।


অনেকটা নাছুরবন্দামি শেষে জিজ্ঞেস করলাম এসব অপরাধ কর্ম আমরা তো সবাই জানি;আপনি একজন হূজর মানুষ সত্য করে বলুন ত এধরনের কৃতকর্মে গুনাহ হয় নাকি?

গুনাহ সওয়াব এর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলে উঠলেন‘খাগড়াছড়ির জোন কমান্ডার মহোদয়ের অনুমতিক্রমে এই রাস্তা দিয়ে পাথর নিয়ে যাওয়া হয়,এটি একটি সিন্ডিকেট বাণিজ্য সেনা বাহিনীর রোড কনস্ট্রাকশনে ব্যবহৃত প্রয়োজনিয় পাথর গুলো সিন্ডিকেটের সদস্যগণ গাড়ি লোড করে চালক হেল্পার শ্রমিক দিয়ে পাঠিয়ে দেয় যায়গা মত বাদবাকি পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেনাবেচা করার জন্য নির্ধারিত যায়গায়’।

সাংবাদিক আব্দুররব সাহেবের সুললিত বয়ানে ঘুঘরাছড়ি বাগানে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে...........

কিছুক্ষণ পরে সাদাশার্ট পরিহিত এক ভদ্রলোক এসে হাজির হলেন কারো বুঝতে দেরি হলো না সরিষা ক্ষেতেই মস্ত বড় ভুত।অবৈধ মাল জব্দকারী সেনা ইনচার্জ ডিপ্রেশনে ভুগছেন বাঘের গ্রাস নিয়ে টানাটানি করলে কে না একটু হাঁপায়!!

আব্দুল করিম তো মরার আগে গেয়েই গেছেন ‘ভাবিলে কি হবে গো যা হইবার তা হইয়াই গেছে’।ওহী নাযিল হওয়ার পরে অনেক চিন্তা ভাবনা টেনশন ডিপ্রেশন শেষে উপস্থিত সকলের ইজমা ও কিয়াসের ভিত্তিতে একটি সুসুন্দর সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।


সিদ্ধান্ত :বন কর্মকর্তাকে বাদি বানিয়ে শ্রমজীবীমানুষ ও পাথর বোঝাই ট্রাক গুলো ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করা।যেহেতু পাচার চক্রের মধ্যে রাঘব বোয়াল জড়িত,শ্রমজীবী মানুষগুলিও নির্দোষ তাই ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানা সিন্ডিকেটের লোকজন বহন করবে এই ধরনের একটি ফয়সালা নির্ধারণ হওয়ার পর পুলিশি পাহারায় জব্দকৃত ট্রাক রওয়ানা দিল ভ্রাম্যমান আদালতের উদ্দেশ্যে।

ঘুঘরাছড়ি রাবার বাগানে পরে রইলো স্তুপীকৃত বহু পাথর,প্রায়শ্চিত্ত পর্ব শেষে আবারো যায়গা মত যাওয়ার অপেক্ষায়....................


মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: রক্ষকই ভোক্ষক।

২| ১০ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৫৭

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: :D ভাল :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.