নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\n

মা.হাসান

মা.হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে রাতে মোর দুয়ারগুলি ভাঙলো ঝড়ে

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩১

প্রথম পর্বঃ যাও পাখি বলো তারে...

দ্বিতীয় পর্বঃ কাটে না সময় যখন আর কিছু তে, টুয়েন্টিনাইন খেলাতেও মন বসে না



ধান কাটা, মাড়াই হয়ে গিয়েছে। কিন্তুডিসেম্বর মাস হিসেবে আবহাওয়া বেশ খারাপ। গত কয়েক দিন হালকা বৃষ্টি হয়েছে। ধান ভালো মতো শুকানো যায় নি, ভেজা ভেজা রয়েছে। এই ধান ভালো দামে বিক্রি করা সম্ভব না। ধানের পরিমাণ অবশ্য খুব সামান্য, ৪০ মনের মতো।

মুহিব কে বললাম - ভাই এই ধান কি করে বিক্রি করব? কে এই ভেজা ধান কিনবে? মুহিব বলল - দুশ্চিন্তা করিও না, রাতের বেলা বেচে দিব। আমি বললাম না - এভাবে বেচা ঠিক হবে না । তোর বেশি কথা বলার দরকার নাই তুই আমার সাথে চল- বলে মুহিত আলচনা শেষ করলো । ( আমাদের মাঝে তুই-তুমি দুটাই চলে।) মোবাইলের যুগ শুরু হয়নি, বাবার সঙ্গে পরামর্শ করব সেই সুযোগ নেই।

গরুর গাড়িতে ধান চলে গেছে, বাই সাইকেলে করে দুই বন্ধুহাটের দিকে রওনা দেই। সপ্তাহে দুদিন হাট বসে- রবি আর বৃহস্পতি বার। সেটা ছিল বৃহস্পতিবার । মুহিবের দোকানে প্রচন্ড ভিড়। ধান বেঁচার অভিজ্ঞতা আমার নেই, আর এই মুহূর্তে মুহিবের পক্ষে দোকান ছেড়ে আসা সম্ভব না। এর মাঝে কয়েকটা খারাপ মুখ এসে মুহিবের সাথে ফিসফিস করে গেল। বুঝলাম আজ মুহিব আবারো নেশার আড্ডায় বসবে।


গঞ্জের হাট, সব জায়গায় ইলেকট্রিসিটি নেই। বেশিরভাগ ছোটখাটো দোকানদাররা লন্ঠন বা কুপি জ্বালিয়ে কেনাবেচা করছে। বড় বড় কিছু দোকানদার আছে যারা হ্যাজাক লাইট ব্যবহার করেন। দু'চারজন অ্যাডভেঞ্চারাস লোক আছেন যারা বিদ্যুৎ এর খুঁটি থেকে তার দিয়ে কানেকশন বের করে বাল্ব জ্বালান।

একদিকে ঘোলা বাল্বের আলো, আর একদিকে বিরাট কুপি। মাঝখানে ধান কেনা বেচা চলছে। মুহিব আমাকে নিয়ে যায়। আমার ছটফটানি দেখে বুঝতে পারে যে ভেজা ধান বিক্রি করতে আমার সমস্যা। হাতে-মুখে আমাকে ইশারা করতে থাকে চুপ থাকার জন্য।

ধান মাপার পরে টাকা বুঝে নিয়েছি। কিন্তু আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। বললাম- ভাইজান ধানটা একটু দেখে নেন, ভেজা আছে। লোকটা আমাকে বলল - দাওতো বাবা টাকাটা একটু, বলে আমার হাত থেকে টাকার বান্ডিলটা নিয়ে নিল। মুহিবের চেহারা দেখে মনে হয় আমাকে ধরে এই মারে কি সেই মারে। লোকটা টাকার বান্ডিল থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট সরিয়ে পকেট থেকে আর একটা ৫০০ টাকার নোট দিয়ে বলল- যাও। এইখানটাতে সন্ধ্যার পরে যারা ধান বিক্রি করতে আসে, তারা কি ধান বেচে আমরা ভালো করেই জানি। তুমি সত্য কথা বললে, তোমাকে আর জাল টাকা দিলাম না।

আড় চোখে মুহিবের দিকে তাকাই। বেটার মুখে কথা নাই। হাঁটের মসজিদে এশার নামাজ শেষ। হাট প্রায় ভেঙে গেছে। হাট থেকে তিনশ গজ মত দুরে সিনেমা হল, নটায় সেকেন্ড শো শুরু হবে। ততক্ষণ কিছু মুদি দোকান আর খাবার দোকান খোলা থাকবে। মুহিব বললো তুমি দোকানে বস, আমি একটু পরে আসতেছি, কাজ আছে।

এই এলাকায় হেরোইন দশ পনেরো টাকায় এক পুরিয়া পাওয়া যেতো। পরে যখন ফেন্সিডিল আসে ১৫ টাকা বোতলও বিক্রি হতে দেখেছি। একজন ভ্যান ড্রাইভার সারাদিনে চল্লিশ-পঞ্চাশ টাকা উপার্জন করতো। পনেরো টাকায় দু কেজি চাল হয়ে যেতো। নেশা খুব এক্সপেন্সিভ ছিলো না, কিন্তু গায়ে লাগে না এমনও না।

ধান বিক্রির টাকা প্যান্টের ভিতর প্যাকেটে গুজে নিয়ে সব গুছিয়ে নিলাম। মুহিব আসতেই বেরিয়ে পড়লাম। ও আমাকে একশ গজ মতো এগিয়ে দিলো। রাস্তার অবস্থা কহতব্য নয়। যুক্তফ্রন্টের সময়ে একজন এবং স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে আর একজন এমপি আমাদের গ্রাম থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বলে স্থানীয় পলিটিক্সের ফাঁদে পড়ে গ্রামের সামনে দিয়ে যাওয়া এই রাস্তাটি হিংসার কারণে আর কেউ উন্নয়নের কাজ করেন নি ।

কথিত আছে জটিল ডেলিভারি কেসের মহিলাকে এই রাস্তায় ভ্যানে করে নিয়ে গেলে তার ডেলিভারি সহজে হয়ে যায়। বিষয়টা আসলে পুরোপুরি মিথ্যে না। কয়েক বছর আগে আয়নাল ভাইয়ের স্ত্রীকে থানা সদর হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি এই রাস্তায়ই ভ্যান এর মধ্যেই বাচ্চা প্রসব করেন। তবে থানা হাসপাতালে কর্মরত আমার জেঠাতো ভাই অন্য কথা বলেন । তিনি বলেন আসলে আয়নালের স্ত্রীকে নিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। রাস্তা ভালো থাকলেও উনিরাস্তাতেই বাচ্চা প্রসব করতেন।

ঐ সময়ে সৌখিন লোকেরা ফনিক্স সাইকেল ব্যবহার করতেন (গ্রামাঞ্চলে এই উচ্চারনই প্রচলিত ছিলো, ফিনিক্স কারো মুখে কখনো শুনি নি)। ডাবল রড এর একটা চায়না ফনিক্স এর নতুন অবস্থায় দাম ছিল ৫২০০ টাকা, প্রায় ২৫ মণ ধানের সমান। আমাদের কাছে ছিল একটা অ্যাভন সাইকেল, তেরোশো টাকার। কলেজে থাকতে বন্ধুর ধার করা সাইকেল চালিয়ে কিছু প্র্যাকটিস করেছি, অভিজ্ঞতা সুখকর না। এই রাস্তায় চালানো সম্ভব না।

তো আমি গ্রামের দিকে হাটা দিলাম। সম্বল সাথে একটা পাঁচ ব্যাটারির টর্চ , ব্যাটারি একটু দুর্বল, তবে চলে যাবে। পকেটের ধান বেচা প্রায় আট হাজার টাকা, একটা চাকু আরেকটু লবণ। গ্রামদেশে কুসংস্কার আছে রাতের বেলা পথ চলার সময় সাথে আগুন-লোহা-লবন রাখার জন্য। তবে আমার সাথে লবন আর চাকু কুসংস্কারের কারণে না। বাজারে কচি কচি ক্ষিরা উঠেছে, আমার খুব পছন্দের। ক্ষিরা খাওয়ার জন্য বাসা থেকে লবণ আর একটা চাকু এনেছিলাম।

আমার আরেক হাতে একটা অ্যালুমিনিয়ামের জগ, জগ এর মধ্যে কিছু মিষ্টি। আমাদের এলাকায় মিষ্টি নেওয়ার কাজে লোকে অ্যালুমিনিয়ামের জগই ব্যবহার করতো দেখেছি। দই এর জন্য মাটির হাড়ি ব্যবহার করলেও মিষ্টির জন্য মাটির হাঁড়ি এতটা প্রচলিত ছিল না। কাগজ বা প্লাস্টিকের বাক্স আরো পরে এসেছে। পরদিন খাবার জন্য কিছু মিষ্টি নিয়েছিলাম।

বাজার থেকে আমাদের গ্রাম প্রায় দুই আড়াই কিলোমিটার পথ। বাজারের পরে খানিকটা ফাঁকা জায়গা। এরপরে গুচ্ছগ্রাম। এরপরে আবারো ফাঁকা জায়গা, আর একটা গ্রাম, ফাঁকা জায়গা, এরপরে সাওতাল (খ্রিস্টান)দের একটা কবরস্থান, গ্রাম, ফাঁকা জায়গা, মুসলমানদের কবরস্থান, বাঁশ ঝাড়, এর পরেই আমাদের গ্রাম।

সাওতালদের কবরস্থান খুব পরিস্কার। একটা ভাত পড়লে তুলে খাওয়া সম্ভব। ভয় লাগার মতো কিছু নেই। পক্ষান্তরে মুসলমানদের খবর গুলো ঝোঁপ- জঙ্গলে পরিপূর্ণ। শীতকাল ছাড়া অন্য সময়ের ভিতরে ঢুকতে সাপ-জোকের ভয় লাগে। এখন ডিসেম্বর, সাপের ভয় নেই। মুসলমানদের কবরস্থানে নিয়মিত দোয়া দরুদ পড়া হয় বলে এখানে খারাপ কিছু থাকার সম্ভাবনা আছে বলে আমার কখনোই মনে হয় নি।

গ্রামে কুসঙস্কার আছে যে শনি-মঙ্গলবারে কেউ মারা গেলে কালো যাদুর জন্য তার লাশ খুব কাজে লাগে। এই লাশ ফকির/তান্ত্রিকরা চুরির জন্য সুযোগ খোঁজে। আত্মীয়দের মাঝে একাধিক জন শনি-মঙ্গলবারে মারা গেছে, আমিও কবর পাহারা দিয়েছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি কাফন চোরদের কারনে এই রকম গুজব ছড়ায়। যাকগে, আসলে বলতে চাচ্ছি ঐ বয়সে অশরীরির ভয় আমার তেমন ছিলো না। শ্মশান সম্পর্কে অনেক খারাপ কথা শুনেছি, আমাদের এলাকায় কোন শ্মশান নেই। কুকুর আর সাপ ছাড়া আমার অন্য কিছুতে ভয় কম। কুকুর এই এলাকায় খুব কম। শীতে সাপ নেই।

তবে ভুতের চেয়ে মানুষ অনেক বেশি ভয়ঙ্কর । রাস্তায় একটা পুরনো কালভার্ট আছে , কালভার্টের এখানে ঝোপের মাঝখানে মাঝে মাঝে কিছু হিরোইন খোর বসে থাকে, চাকু হাতে। নিরীহ কাউকে পেলে তার টাকা পয়সা কেড়ে নেয়। আমাদের পরিবার মোটামুটি এলাকায় প্রভাবশালি হওয়ায় আমার এরকম কোনো শঙ্কা নেই।

সে যাকগে, গুচ্ছগ্রাম এলাকা পার হওয়ার পর রাস্তায় লোকজন আর চোখে পড়ল না। এরশাদ সাহেব অনেক অপকর্ম করেছেন, তবে গুচ্ছগ্রামের প্রকল্পটা ভালো ছিল। এখন সরকারের ত্রাণ এর টাকা সব বড়লোকেরা পায়। আমাদের এলাকায় শুধু প্রকৃত গরিব লোকেরাই গুচ্ছগ্রামে জমি পেয়েছিলেন।

ভূতের গল্প আমাবস্যার রাতে জমে। তবে ঐদিন আমাবস্যা ছিলনা। কৃষ্ণপক্ষও না। শুক্লপক্ষের চাঁদ। গল্পের খাতিরে আপনারা কৃষ্ণপক্ষ ধরে নিলে আমার কোনো বাধা নেই।

ডিসেম্বর মাসে বেশ ভালো কুয়াশা পড়েছে। সাওতালদের কবর স্থান পার হওয়ার সময় দেখলাম একজন ঢ্যাঙা মত লোক , ধুতি পরা, হাতে একটা কঞ্চি, শুয়োরের পাল তাড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সাঁওতালরা শুয়োর খায়। কাজেই এই দৃশ্য খুব অস্বাভাবিক না। কিন্তু ঐ বেটা পার হয়ে যেতেই আমার মনে হলো- রাত আটটায় শুয়োর কোথা থেকে নিচ্ছে? মনে পড়ে গেল তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের তারানাথ তান্ত্রিকের গল্পের কথা। দিনের বেলা এইসব কথা মাথায় আসে না কিন্তু রাতের বেলা একা থাকলে নির্জনে এইসব অপ্রাকৃত গল্প গুলো একে মনে পড়ে যেতে থাকে।

পিছনদিকে মনে হল বিড়ালের মত কিছু একটা হাঁটছে। আমার মায়োপিয়া। সাড়ে তিন ডায়াপ্টারের চশমা পরি। নিশ্চিত করে বলতে পারবোনা। স্কুলের রমজান স্যারের গল্প মনে পড়ে গেল। আমাদের হায়ার ম্যাথ পড়াতেন । উনি বলেছিলেন রাস্তাঘাটে এরকম ছোটখাটো জিনিস গুলো মোটেও পাত্তা দেবে না । যদি ষাড়ের মতো বড় কিছু দেখো, তবে এগুলো ভয়ঙ্কর। এগুলো থেকে দূরে থাকবে। যদিও গ্রামের রাস্তায় বিড়াল মোটেও অস্বাভাবিক কিছু নয়, কিন্তু মনকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য এই জিনিসগুলো যথেষ্ট।

নীচের বাকি অংশটুকু গুরুত্বপূর্ণ।


গ্রাম থেকে কয়েক শ গজ দূরে বাঁশঝাড়ের এখানটাতে এসেছি। একটা গোঙানোর মতো আওয়াজ পেলাম। বাড়ির খুব কাছে চলে এসেছি। লোকে বলে বাড়ির কাছে কুত্তার জোর। আমি একটু সাহস সঞ্চয় করে বললাম- কে ওখানে? কোন জবাব নেই। কিন্তু গোঙানির আওয়াজ বাড়ছে। আবার বললাম কে? এরপর হাতের টর্চ জ্বালিয়ে ফোকাস করতেই দেখি- কুঁজো ভিক্ষুকের মতো কেউ একজন বসে আছে । গায়ে কাপড় মুড়ি দেওয়া।

আবছা আলোয় মানুষের চোখের কোন কোষ গুলো ভালো কাজ করে না । ফটোপিক ভিশন নেই, স্কোটোপিক ভিশন। রং বোঝা মুশকিল। আমার কাছে মনে হয়েছিল সাদা রং। ভগবানে বিশ্বাস থাকলেও ভুতে আমার বিশ্বাস নেই। সাহস সঞ্চয় করে একটু গলা উঁচু করে বললাম - কে ? কি চাই?

কুঁজো হয়ে থাকা মূর্তি মুখ তুলে তাকায়। কুয়াশার ভিতরে টর্চের দূর্বল আলোয় দেখি দগদগে ঘা এ ভরা বীভৎস মুখ। আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমার গলার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়। আমার হাত থেকে টর্চ পড়ে যায়। জগ পড়ে যায়। আমি পকেট থেকে চাকু বের করে চিৎকার দেই- সাবধান, চাকু মারে দিবো। মূর্তি আমার গলায় হাত দেয় ।

আমি ঘোরের মধ্যে চাকু দিয়ে আঘাত করি (অন্তত আমি তাই বিশ্বাস করি)। মূর্তীর ধাক্কায় আমি চিৎ হয়ে পড়ে যাই। মূর্তী আমার গলায় চাপ বাড়ায়। আমি পাল্টা মূর্তির গলায় হাত দিয়ে চাপ দেই। ধাক্কা দিয়ে মূর্তীকে ফেলে দেই। তার বুকের উপরে বসে গলায় চাপ দিতে থাকি। মূর্তি আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। মূর্তি আমার বুকের উপরে উঠে আসতে চায়। আমি চিৎকার করে উঠি। হাত দিয়ে মূর্তির মুখের মধ্যে ধাক্কা মারি। মূর্তির মুখে হাত দেওয়ার পর আমার মনে হলো আমার হাত যেন আগুনে পুড়ে গেল। আমি চিৎকার করে উঠি এবং এর পরে অজ্ঞান হয়ে যাই।

রাত এগারোটার দিকে জুয়া খেলা এক পার্টি গ্রামে ফেরার সময় আমাকে ওই জায়গায় পড়ে থাকতে দেখে। জামায় রক্তের দাগ। হাতে দগদগে ঘা। আমাকে ওরা হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমার কপাল ভালো, আমার জেঠাতো ভাইয়ের স্ত্রী হাসপাতালে ওই দিন নাইট ডিউটিতে ছিলেন। ওনারা পরীক্ষা করে হাতের তালুতে এসিডে পোড়ার কিছু দাগ পান। গায়ের জামায় রক্তের মতো কিছু একটার দাগ ছিলো, কিন্তু ওটা আমার নিজের রক্ত না। আসলে রক্ত কি না তা টেস্ট করার মতো সুবিধা ঐ এলাকায় ছিলো না।

টর্চ ঘটনাস্থলে পাওয়া গিয়েছিল, ব্যাটারি শেষ। মিষ্টির জগওই জায়গায় ছিল, তবে মিষ্টিগুলোধুলার উপরে পড়া। আমার টাকা খোয়া যায়নি। ঐ জায়গায় ধ্বস্তাধস্তির চিহ্ণ ছিলো। কিন্তু আমি ছাড়া কোনো মানুষের পায়ের ছাপ ছিলো না।

ঐদিন ভোরবেলা (শুক্রবার) আমার প্রবল জ্বর আসে । জ্বরের ঘোরে অনেক ভুল বকি। হাসপাতালে কর্মরত ভাবি আমাদের পরিবারের তখন কেবল নতুন যুক্ত হয়েছেন, আমার সম্পর্কে ধারণা ছিল না। আমি শহরে ছেলে, নেশা ওভারডোজ বা নেশা করে মারামারি করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি এরকম সম্ভাবনা ওনার মনে ছিলো। উনি আমার হাতে সুইয়ের চিহ্ন খুজেছিলেন। কোন চিহ্ন ছিল না। মুখে কোনো গন্ধ ছিলো না। তবে কাপড়ে পচা গন্ধ ছিলো।

সুই বা মুখ ছাড়াও মাদক নেয়া যায়, ব্লাড টেস্ট না করে এটা বোঝা সম্ভব না। গ্রামের হাসপাতালে ব্লাড টেস্ট করার সুযোগ ছিল না। গ্রামে প্র্যাংকের ঘটনা রেয়ার। অপরিচিত ছিনতাইকারি ? নাকি আর কিছু? যাহোক শনিবার আমি অনেকটা সুস্থ হই (হাসপাতাল ছাড়ার মতো না, তবে কথা বলার এবং মুখে খাওয়ার মতো) , কি ঘটেছিলো বলি। মামলা করা দরকার কি না আমার জ্যাঠাতো ভাই বুঝে উঠতে পারছিলেন না।

তবে রোববারের পর ঘটনা বদলে যায়। রোববার ভোর বেলা আমাদের গ্রাম থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে কালভার্টের নিচে পাওয়া যায় মিতালীর লাশ। মিতালী পাশের থানার ১৭ বছরের একটা মেয়ে। লাশের মুখটা এসিডে ঝলসানো । পেটে চাকু মারা হয়েছে। গলায় হাতের দাগ।

পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুসারে মিতালীকে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পরে মুখে এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, সম্ভবত লাশের পরিচয় গোপন করতে চেয়েছিল। লাশের পেটে চাকু মারা হয়েছিল, হত্যা নিশ্চিত করার জন্য। মৃত্যুর সময় শনিবার রাত এগারোটা থেকে শুরু করে রবিবার ভোর পাঁচটা। শীতকালে নাকি এর চেয়ে বেশি একুরেটলি টাইম অফ ডেথ বের করা সম্ভব না।

মিতালীর বিধবা মা রেবা রায় শনিবার দুপুর থেকে মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিলো না। সন্ধ্যায় থানায় গিয়েছিলো, থানা ওয়ালারা অপমান করে তাড়িয়ে দেয় মেয়ে কারো সাথে ভেগে গেছে এই বলে।

আমি ওই সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। তাছাড়া পরিবার মোটামুটি প্রভাবশালী। থানা হাসপাতালে কর্মরত জ্যাঠাতো ভাই খুব চৌকস লোক। ওসি-টিএনওর সাথে নিয়মিত ব্যাডমিন্টন খেলেন। আমি পুলিশি ঝামেলা থেকে বেঁচে যাই। এক সপ্তাহ পরে আমি শহরে চলে আসি , এবং সেখান থেকে বাবা আমাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন। কয়েকদিন পরে ইউনিভার্সিটি খুলে যায়।

এই ঘটনা আমাকে অনেক ধাক্কা দিয়া যায়। পরবর্তীকালে গ্রামে যেয়ে অনেক অনুসন্ধান করে যাওয়া জানতে পারি, মিতালীর বিধবা মা একটা সেলাই মেশিন চালিয়ে জীবন চালাতো। মিতালী একটা কলেজে গার্লস কলেজে এইচএসসির ছাত্রি ছিলো। তবে প্রতিবেশী নিত্যানন্দের অত্যাচারের ওর কলেজে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নিত্যানন্দ বহুবার বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু জাত মেলে না বলে মিতালীর মা রাজি হয় নি। মিতালীর মা মিতালীর বিয়ের জন্য বহু চেষ্টা করেছে। কিন্তু হিন্দু সমাজে পন ছাড়া মেয়ের বিয়ে দেওয়াটা, বিশেষ করে বাবা না থাকলে, খুব মুশকিল।

নিত্যানন্দের মাইক-ব্যাটারির ব্যবসা। এসিড জোগাড় করা কোনো সমস্যা না। পুলিশ নিত্যানন্দ কে এরেস্ট করে। নিত্যানন্দ কবুল করে সে মিতালীর দিকে খারাপ নজর দিয়েছিল, সুবিধা করতে না পেরে তান্ত্রিকের কাছে যেয়ে তন্ত্র-মন্ত্রের আশ্রয় নিয়েছিল। কিন্তু কিডন্যাপ বা খুনের ব্যাপারে সে কিছুই জানেনা । তান্ত্রিককে পুলিশ খুঁজে পায়নি, তান্ত্রিক ওই ঘটনার পর থেকে লাপাত্তা। তবে নিত্যানন্দের ঘরে একটা কাপড়ের পুতুল পাওয়া যায়, পেটে সুই, মুখ পোড়া।

নিত্যানন্দ হাজতে মারা যায়। গলায় লোকে বলে গলা টেপা অবস্থায় লাশ পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ দাবি করে আত্মহত্যা।হাজতে অনেক ধরনের অপরাধি থাকে । এরা নতুন কয়েদিদের কে নিয়ে হাত পা টিপিয়ে নেয়। নারী নির্যাতনকারী দের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ হয়। এদেরকে দিয়ে অনেক রকমের আবদার মেটানো হয়। নিত্যানন্দ এরকম কোন কিছু শিকার হয়ে থাকবে বলেই আমার মনে হয়।

দীর্ঘকাল আমার বিশ্বাস ছিল আমি এই মৃত্যুর সাথে জড়িত। সন্দেহে করেছিলাম আমি সম্ভবত সেই রাতে নেশা করেছিলাম, যেটা আমার ব্রেন আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে। অসৎ সঙ্গে পড়ে মানুষ অনেক কিছুই করে। মুহিব স্বীকার করেছে যে নেশার আড্ডায় সে নিত্যানন্দ কে দেখেছে, কিন্তু নিত্যানন্দের সঙ্গে তার এর বেশি কোন আলাপ ছিল না।

আমার ধারণা ছিল নেশার ঘোরে নিত্যানন্দ, মুহিব আর আমি ওই খুনের প্ল্যান করেছিলাম। আমি পরবর্তীতে হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় ওরা দুজন মিলে এই কাজটা করে । কিন্তু মুহিবকে আমি বহুবার জিজ্ঞাসা করেছি, মুহিব কখনো স্বীকার করেনি। এর আনুমানিক ১৫ বছর পর মুহিব নেশা ছেড়ে দেয়। আমার জানা মতে ও গত দশ-পনেরো বছরে কোন নেশা করেনি। এলাকায় বিদ্যুৎ-কম্পিউটার আসার পর কিছুদিন সিডি-ভিসিডির ব্যবসা করেছিল। মোবাইল ফোন আসার পর কিছুদিন পল্লী ফোনের ব্যবসা করেছিল । এখন ফ্লেক্সি লোড বিকাশের ব্যবসা করে।

চাকরি পাওয়ার পর বেতনের টাকা জমিয়ে আমার মাথার দুটো এমআরআই করাই। ডাক্তারদের মতে নিউরো মার্কার গুলো সব ঠিকঠাক আছে । আমার মধ্যে স্প্লিট পার্সোনালিটি বা বাই পোলারিটির কোনো লক্ষণ নেই।

২০০৪/০৫ সলে আমার ব্যাচমেট মোখলেস জেলা সদরের ডিএসপি হয়ে আসলে তাকে ব্যাপারটা জানিয়ে অনুরোধ করি লাশের গলায় হাতের ছাপের কোনো রেকর্ড থাকলে আমার হাতের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে । বন্ধুটি আমার সঙ্গে একটু রাগারাগি করে আমাকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

২০০৯ সালে আরেক ব্যাচমেট ওই জেলাতে এসপি হয়ে আসার পর তাকে পুনরায় এই অনুরোধ জানাই। সে আমাকে অত্যন্ত উৎকৃষ্ট কোয়ালিটির সন্দেশ পরোটা এবং চা খাইয়ে খুব ভদ্রভাবে বলে এত পুরাতন মামলা ওপেন করার সুযোগ তার নেই। এছাড়া মামলাটি ক্লোজড । মোখলেস তাকে আমার কথা আগেই বলেছে। আমার পুনঃপুনঃ অনুরোধে সে কয়েকদিন পর আমাকে জানায় আমাদের দেশের যে আবহাওয়া, যে পরিবেশে আলামত রাখা হয়, তাতে ঐ হাতের ছাপের রেকর্ড নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

যে নেশার আড্ডা চালায় তাকে চাপ দিয়ে বহুবার জিজ্ঞাসা করেছি, তার এক কথা আমাকে নেশার দ্রব্য বিক্রি করার সাহস তার নেই। এ রকম কোন ঘটনা ঘটে আমার ভাইয়েরা তাকে জবাই করবে।

চার বিয়ের কথা ভাবলে মনে একটু-আধটু পুলক যে হয় না এমন না , তবে এরকম পুলক মনে জাগলে তা দূর করার জন্য এই ঘটনাটা আমি স্মরণ করি, সব পুলক দূর হয়ে যায় ।

মন্তব্য ৭০ টি রেটিং +১৯/-০

মন্তব্য (৭০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৭

জুন বলেছেন: এই পর্বেও ভুত নাই /:)
তাও প্লাস দিলাম
+

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৭

মা.হাসান বলেছেন: দুর্বল নেটওয়ার্কের কারনে পোস্ট লোড হতে কিছু সমস্যা ছিলো। কিছু অংশ বাদ গেছিলো। অনেক দুঃখিত। আবার পড়ার অনুরোধ রইলো।
প্লাসের জন্য কৃতজ্ঞতা।

২| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৩

মা.হাসান বলেছেন: গত কাল সকাল থেকে ইন্টারনেট বিহীন ভুতুড়ে জীবন অতিবাহিত করছি। সিটি করপোরেশন এবং ডেসকো একাধিক জায়গায় কেবল কেটে দিয়েছে। মোবাইল/ভিপিএন দিয়ে ব্লগে ঢুকেছি। আপাতত মন্তব্যের জবাব দেয়া কষ্টকর। আশা করি কাল পরিস্থিতির উন্নতি হবে। কালো সকলের মন্তব্যের জবাব দেয়ার চেষ্টা করবো।

বর্তমান অপারগতার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।

৩| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৩৩

ওমেরা বলেছেন: খুব বাঁচা বেঁচে গিয়েছেন ।
একবার দোকানে গিয়েছি পুতির একটা মালা দেখে খুব পছন্দ হয়েছে কাউন্টারে যখন দাম দিতে গিয়েছি মহিলা দেখাল,এটার একটু সমস্য আছে তুমি নিতে চাইলে আমরা কিছু কমদাম রাখবো ।সেদিন খুব অভাব হয়েছিলাম মহিলার ব্যাবহারে ।
আজকে আপনার লিখা পড়েও কম অবাক হলাম না । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে মানে সৎ মানুষকে ।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৪

মা.হাসান বলেছেন: খুন-খারাবী লইয়া আচি, সৎ আর হইতে পারিলাম কিভাবে :(

কিন্তু আপনি খুঁত ওয়ালা কমদামের পুতির মালা কেনো কিনিবেন? মনে রাখিবেন, ব্লগে এক জনের বেশি কিরপিন দেখা গেলে কপি রাইট আইনে মামলা হইবে :``>>

অনেক শুভ কামনা।

৪| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কোথাকার জল কোন দিকে গড়ালো, এক্কেবারে অকল্পনীয়। রাতের বেলা ভেজা ধান বিক্রি, নকল টাকার পরিবর্তে আসল টাকা পাওয়া, ফিরে আসার পথে ঝোপের মধ্যে গোঙানি, তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি, হসপিটালাইজড হওয়া এসব চলছে তো ঠিকমত। কিন্তু একদম শেষে এসে হোঁচট খেলাম।
তবুও বলবো ভুতুর দেখা নাই।
শুভেচ্ছা প্রিয় মা.হাসান ভাইকে।

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪৯

মা.হাসান বলেছেন: ফারাক্কা বাধের পরেও যে জল গড়াইতেছে ইহাই কি যথেষ্ট নহে?! #:-S
ভুতু যাহারা ছিলো তাহার লোকালয়ে আর কদর পায় না, টেলিভিশন প্রোগ্রাম করিতে চলিয়া গিয়াছে , কি করা যাইবে। এর পরেও যদি ভুত দর্শন করিবার ইচ্ছা দূরিভুত না হয় তবে কোভিডের আক্রমন চলিয়া গেলে এই অধমের চাঁদমুখ আপনাকে একবার দেখাইয়া আসিবো, জীবন বিমা করা না থাকিলে এই ফাকে করাইয়া নিন। B-))

৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৭

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: ভূতের চেয়েও ভয়াবহ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:২৪

মা.হাসান বলেছেন: তা হয়তো ঠিক, তবে শাশুড়ির কান্নাকাটির চেয়ে কম ভয়াবহ :)

৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১২

করুণাধারা বলেছেন: একের ভিতর পাঁচ ভূতের গল্প!!!

১) টাকা বদলানো ক্রেতা।

২) শুকর ওয়ালা সাঁওতাল

৩) বিভৎস মুখের কুঁজো

৪) নিত্যানন্দের ভুডু পুতুল

৫) মিতালীর ভূত।

তাহলে সব মিলে কী দাঁড়াল? ঘাটশীলার বিশাল পাথর উল্টানো!!!

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪৬

মা.হাসান বলেছেন: আরেক খানা ভুত বাদ গেলো- পোস্ট দেয়ার পর পোস্ট দাতা উধাও।

বিরতির জন্য দুঃখিত।
ভুত না দেখাইতে পারার জন্য দুঃখিত। যাহা নাই তাহা দেখাই কি করিয়া :(

''ঘাটশীলার বিশাল পাথর উল্টানো'' শব্দের অর্থ বুঝিলাম না। বিভূতিভুষণ বন্দোপাধ্যায় ঘাটশিলায় এক বার অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হয়েছিলেন। একটা উচু ঢিপি মতো জায়গায় ওঠার সময়ে সাদা আকারের কিছু দেখার পর কাছে যেয়ে দেখেন সাদা চাদরে মোড়া কিছু। চাদর ওল্টানোর পর দেখেন একটা শবদেহ- ওনার নিজের। এই ঘটনার পর উনি আর এক থেকে দু সপ্তাহ মতো বেঁচে ছিলেন। ওনার লেখায় এর বর্ননা পাওয়া যায় না, ওনার ছেলের লেখায় এই বর্ননা আছে।

এর বাইরে ঘাটশিলায় একদিন একটা টিলায় যাবার পর শঙ্খচূড় সাপের দেখা পাবার পর স্থানীয়রা ওনাকে ঐ টিলায় যেতে বারন করেছিলো। তবে এর মধ্যে ভৌতিক কিছু ছিলো না। এই বর্ননা ওনার বনে-পাহাড়ে বইয়ে আছে।
পাথর ওল্টানোর ঘটনা মনে করতে পারছি না :(

কয় বছর আগে ঘাটশিলায় বিভূতিভুষনের বাড়ি দর্শনের অভিজ্ঞতা হয়েছিলো। ওখানকার দুটো ছবি--



বিভূতিভুষনের বসতবাটি, ঘাটশিলা, ঝাড়খন্ড।


৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কাল পড়ো ভেবে শোয়ার আগে একটু চোখ বোলাতে এসে আর উঠতে পারলাম না। বিমোহিত। এটা তো থ্রিলার বা ডিটেকটিভ গল্প। আমার মতে, হরর গল্পও ডিটেকটিভ :)

অনেক সুন্দর লিখেছেন। এ ঘটনার নানা বিশ্ল্বষণ আছে। বাট, কোনোমতেই এখানে ভূতের ঢোকার কোনো সুযোগ দেখি না আমি :) দিন-তারিখগুলো হাসপাতাল থেকে ঠিক বলতে পারে নি, বলেছে আন্দাজে। কুঁজো ভিক্ষুকটাই মিতালী। তাকে আগেই এসিড মারা হয়। সে ওখানে আশ্রয় নিয়েছিল। আপনার উপস্থিতিতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আপনাকে নিত্যানন্দ মনে করে, কিংবা প্রথমে আশ্রয়ের জন্য উঠে আসে, কিন্তু আপনাকে আক্রমণাত্মক দেখে সেও হিংস্র হয়ে ওঠে। ধ্বস্তাস্তি। সে ওখান থেকে চলে যায়। পায়ের ছাপ ঠিকমতো দেখা হয় নাই। দুজনেরই ছিল।

আমি আপনার লেখার তারিফ করছি আবারো। অসাধারণ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১২

মা.হাসান বলেছেন: খলিল ভাই, খুব ভালো পর্যবেক্ষন। তবে সম্ভবত ঠিক না।

ঐ হাঁট আমার জন্মের আগে থেকে (এবং সম্ভবত আমার বাবার, দাদার এবং আরো দু-এক পুরুষ আগে থেকে) বৃহস্পতি আর রবি বার বসে। আমি হাঁটের দিন ধান বিক্রি করেছিলাম। অন্যান্য দিন দু-একটা দোকান খোলা থাকে, ধান বেচা-কেনা হয় না। শনিবার শেষ রাতে বা রবিবার ভোরে মিতালীর লাশ পাওয়া যায়। কাজেই রবিবার হাট শেষ করে রাতে মিতালীর লাশ আমার দেখার কথা না, এর বারো ঘন্টা আগেই লাশ পাওয়া গেছে।

লাশ পাওয়ার তারিখেও ভুল করতে পারি। সুস্থ ছিলাম না, চিন্তা স্বচ্ছ ছিলো না। তবে সুস্থ হবার পর আমি হাসপাতালের রেজিস্টার পরীক্ষা করেছি। ওখানে বৃহস্পতিবার রাতে আমার ভর্তির কথা লেখা আছে। সম্ভবত পুলিশি ঝামেলা এড়ানোর জন্য এসিডের কথাটা হাসপাতালের বইয়ে নেই। তবে আমার এক হাতে এখনো পোড়া দাগের কিছুটা চিহ্ন আছে।

পরবর্তিতে আমার হাসপাতালে কর্মরত ভাইকে না জানিয়ে, মুহিবের সাহায্যে, থানায় ঘুষ দিয়ে পোস্ট মর্টেম রিপোর্টের কপি বের করেছিলাম। বেশির ভাগ কথাই বুঝিনি। তবে মৃত্যুর সময় পোস্টে যেমন বলেছি সেরকম, আমার হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালিন সময়েই খুনটা হয়েছিলো।

হাসপাতালে ভর্তির রেকর্ড জাল হবার সম্ভাবনা কম। আগের এবং পরের এন্ট্রিতে কাটাকাটি ছিলো না। তবে বাংলাদেশে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে কারচুপি করা যায়।

আমার বাবা নীতিবান লোক বলে সুনাম ছিলো। কিন্তু বাৎসল্যের কাছে নীতিমালা হেরে যেতে পারে। প্রভাব খাটিয়ে বা টাকার জোরে রিপোর্ট পরিবর্তন সম্ভব। এটা মাথায় রেখে আমি মিতালীর মায়ের সাথে কথা বলি। উনি কনফার্ম করেন উনি আমাকে বা মুহিবকে আগে দেখেন নি। উনি কনফার্ম করেন মিতালী শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলো।

মিতালীর মা কয়েক বছর পর ভারতে ভাইদের কাছে চলে যান। মিতালীর জ্যাঠারা খুব গরীব ছিলো, তারা এই খুনের সাথে জড়িত বলে মনে হয় নি। মিতালীর মায়ের সম্পত্তি (বসত ভিটা ছাড়া তেমন কিছু ছিলো না) জ্যাঠারা কিনতে পারেন নি, অর্থনৈতিক সক্ষমতা ছিলো না। আরেকজন নিরীহ লোক কিনেছে। মনে হয় না খুনের সাথে সম্পত্তির বিষয় জড়িত ছিলো।

আমি মনে করি না এখানে ভৌতিক কিছু ছিলো। আমি হাট থেকে বের হবার পর রাত প্রায় আটটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত সময়ে কি ঘটেছিলো এর কোনো সাক্ষী জোগাড় করতে পারবো না। আমি নিজে যা বলেছি তা সত্য বলেছি বলে আমি নিজেও পুরোপুরি বিশ্বাস করি না। আমি দু-একটা ব্যাখ্যা দাড়া করানোর চেষ্টা করেছি যা নীচে কোথাও যোগ করবো।

লেখা ভালো লেগেছে যেনে আমি অনেক উৎসাহ পেলাম। অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

৮| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৪

রাজীব নুর বলেছেন: তারানাথ তান্ত্রিক পড়েছি।
তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর ছেলে।

সুন্দর ঝরঝরে লেখা।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৩

মা.হাসান বলেছেন: দিনের বেলা পড়তে খারাপ লাগে না, তবে রাতের বেলায় দু-একটা ঘটনা পড়তে একটু ভয় মতো লাগে এই যা :)
অনেক শুভ কামনা।

৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: লেখার শিরোনাম খুব আকর্ষণীয় । প্রাণবন্ত লেখা পড়ে ভালো লাগলো।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:১৪

মা.হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ নেওযাজ ভাই, অনেক শুব কামনা।

১০| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৮

জোবাইর বলেছেন: ঘটনাটি স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক এবং বাস্তব ও ভৌতিকের মাঝামাঝি পর্যায়ে পড়লেও খুবই ভয়াবহ ঘটনা! সম্ভবত তান্ত্রিক মিতালীকে হত্যা করার আগে এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছিল। তাছাড়া তান্ত্রিক ভেবেছিল আপনার ঘটনাটি ভূত-পেত্নী করেছে এ ধরনের একটা গল্প রটে গেলে পরবর্তীতে মিতালী হত্যাকেও মানুষ সেভাবেই নেবে এবং নিত্যানন্দও বিশ্বাস করবে যে তান্ত্রিকের দেওয়া পুতুলের মতই মিতালীর মৃত্যু হয়েছে।

পরবর্তীতে ডিএসপি ও এসপিকে বলে সেই তান্ত্রিকের খোঁজ নিলেই মনে হয় খুনী ও খুনের রহস্য উদঘাটন হতো। যা-ই হোক, আপনার জীবন থেকে নেয়া সত্য কাহিনী অবলম্বনে লোমহর্ষক গল্প ভূত-পেত্নীর কাহিনীকেও হার মানায়। ব্লগের ভৌতিক সপ্তাহে কাহিনীটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৬

মা.হাসান বলেছেন: জোবাইর ভাই, মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ঘটনাটা আসলেই ভয়াবহ ছিলো। এই পর্বে এক জায়গায় আমি বলেছি ভুতের চেয়ে মানুষ অনেক বেশি ভয়ানক।

গ্রামাঞ্চলে অনেক কুসংস্কার। মানুষ ফকিরি/ওঝাগিরি/তন্ত্র বিশ্বাস করে। আমার এক ফার্স্ট কাজিনের ছেলে আগে দর্জিগিরি করতো এখন এসব কবিরাজি বা ফকিরিগিরি করে। ভালো পয়সা।

আমি আপনার অ্যাঙ্গেল থেকে জিনিসটা দেখি নি। আমার অন্য রকম বিশ্লেষন ছিলো যা নীচে কোথাও শেয়ার করছি। তবে আপনার বিশ্লেষনও ঠিক হতে পারে।

ঐ বেটা তান্ত্রিক পালিয়েছে, পরে আর দেখি নি। এরা খারাপ লোকদের সাথে ওঠা বসা করে। খুন হয়ে যাওয়াও অসম্ভব না।

পার্সোনাল ঘটনা ব্লগে শেয়ার না করাই ভালো। আর এরকম ঘটনা শেয়ার করলে আরো বেশি সমস্যা- লোকে গাজাখোর বলে ভাবতে পারে B-)) কিন্তু ব্লগে ভুতেদের আনাগোনা দেখে ভাবলাম- শেয়ার করি, দেখি অন্য কোনো রকম অপিনিয়ন পাওয়া যায় নাকি। আপনার অপিনিয়ন নতুন করে ভাবালো।

অসংখ্য ধন্যবাদ পড়ার এবং মন্তব্যের জন্য।

১১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৫৪

জুন বলেছেন: আবার পড়লাম মা হাসান আর সত্যি ভীত বোধ করছি ।
বাস্তবের সাথে কল্পনার মিশেলে একটি মারাত্মক গল্পের সৃষ্টি । সত্যি কি আপনি মিতালীকে সেই রাতে খুন করেছিলেন ? :-&
আপনার সততার পরিচয় পেয়ে ভালো লাগলো । আজকাল সৎ মানুষের দেখা পাওয়া দুরূহ ।
অনেক অনেক ভালোলাগা রইলো ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৬

মা.হাসান বলেছেন: যাহারা কবিতা ভালোবাসে তাহার মানুষ খুন করিতে পারে না। আর আমিতো কবিতা খুবই ভালো বাসি, নিয়মিত কবিতা পড়ি, লাইক দেই, এমন কি কবিতা লেখার চেষ্টাও করিতেছি B-)) কাজেই আমার পক্ষে খুন করা সম্ভব নহে। তবে আমি সৎ লোক ইহা নতুন তত্ত্ব । আপনার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক।

আপনি ভীত বোধ করায় আমি দুঃখিত বোধ করিতেছি। :-<

নিরন্তর শুভ কামনা।

১২| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: মা.হাসান,



প্রথম যখন পোস্টটি দিয়েছিলেন তখনই পড়ে ভেবেছি - মাথাটি আপনার খারাপ হয়েই গিয়েছে। এতো সুন্দর শিরোনামের লেখায় কি সব আগামাথাহীন ছাইপাশ লিখেছেন! মনে হয়েছিলো চরম একটা মন্তব্য করি। সময় ছিলোনা বলে পরে এসে মন্তব্য করতেই দেখি পোস্টে আমূল পরিবর্তন।
১নম্বর প্রতি মন্তব্য ও ২ নম্বর মন্তব্যে রহস‍্যটি পরিষ্কার হলো। ভুতের গপ্প লিখতে গিয়ে নেটওয়ার্কের ভুতে তো আপনাকে সত্যিই ধরে ফেলেছে তাহলে :P !

এবারে সবটা মিলিয়ে দারুন একটা রহস্য তৈরী করে ফেলেছেন। যদিও সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই সে রহস্যের অনেকটা সমাধান দিয়েছেন। আমার মতও সেদিকেই।

আপনার নেটওয়ার্কের সমস্যা কি কেটে যায়নি এখনও ?

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৩২

মা.হাসান বলেছেন: সন্ধ্যের কিছু আগে ইন্টারনেট কানেকশন ফিরে পেয়েছি। প্রথম, দ্বিতীয় পর্বের মন্তব্যের জবাব দিয়ে ফিরে আসছি। সম্ভব হলে আজই সবার মন্তব্যের জবাব দেবার চেষ্টা করবো। যদি না পারি সেক্ষেত্রে আগাম মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪৬

মা.হাসান বলেছেন: পুনরায় দুঃখ প্রকাশ করছি বিলম্বে আসার এবং ঐ দিনের পোস্টে ত্রুটির জন্য। দূর্বল মোবাইল নেটওয়ারকের জন্য ঐ দিন 'পোস্টকরুন'- ট্যাবে ক্লিক করার দীর্ঘ সময় পরে পোস্ট লোড হয়। এর পর দেখি ব্লগের পুরানো ভুত- পোস্ট একাধিক বার এসেছে। এর পরে এডিট করে লোড দেয়ার পরে দেখি অনেক খানি বেশি কাটা পড়েছে। আবার ঠিক করে লোড দেয়ার প্রায় ৩-৪ মিনিট পর পোস্ট লোড হয়। ততক্ষনে প্রায় ১৫ জনের মতো ব্লগার ঐ ত্রুটিপূর্ন পোস্ট দেখে ফেলেন। ইন্টারনেট ঠিক থাকলে হয়তো আরো দ্রুত ঠিক করতে পারতাম, কিন্তু এর পরেও বলতেই হবে ঠিক করার আগেই ঐ পোস্ট কেউ না কেউ তো দেখে ফেলতো। ব্লগের এই এক লেখা পর পর দুইবার আসার ভুত মনে হয় দূর হবে না।


সাত নম্বর মন্তব্যের প্রতি মন্তব্যে আমার যুক্তিগুলো বলেছি। মিতালীর মা যদি পয়সার লোভে বা চাপে পড়ে মিথ্যা না বলে তবে সময় সংক্রান্ত ভুল মনে হয় করি নি।

এখানে কয়েকটা ব্যাখ্যা আমি দাড়া করিয়েছি।

১) যা দেখেছি বলেছি সব সত্য। আসলেই ভুত বলে কিছু আছে। ওখানে ভৌতিক কিছু ঘটেছিলো।
এটা সবচেটে সহজ ব্যাখ্যা। অনেকেই হয়তো বিশ্বাস করবেন। তবে আমার বিশ্বাস হয় না।

২) আমি সতিই কিছু দেখেছিলাম। তবে এটা হ্যালুসিনেশন। একটু ব্যাখ্যা দেয়া দরকার।
প্রেমপত্র লেখার ঘটনা নভেম্বরের শেষে। ভুত দেখা ডিসেম্বরে। ডিসেম্বরে গ্রাম দেশে সাতটা-সোয়াসাতটার মধ্যে এশার নামাজ শেষ হয়। আমি খুব দেরি হলে পোনে আটটায় হাট ত্যাগ করি। রাত আটটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত আমার কার্যকলাপের কোনো সাক্ষী নেই। এর আগে আমি কোনো ভাবে কিছু একটা শুনেছিলাম। হয়তো নেশার আড্ডায় মুহিবকে খুঁজতে যেয়ে নিত্যানন্দের কাছে কিছু শুনেছিলাম। যার থেকে অনুমান করেছিলাম খুন হতে যাচ্ছে এই কথা।

শুকর পাল সহ ঢ্যাঙা লোককে দেখা খুব অস্বাভাবিক। শুকরতো কেউ চুরি করবে না। ঐ খানে ৫০-৬০ থেকে বড় জোর দেড়শত ঘর সাতাল বাস করে, এরা চোর না। মুসলমানরা শুকর চুরি করবে না। কাজেই ঐ ঘটনা আমি কল্পনা করেছি। আমার অবচেতন মন আমাকে ভয় পাওয়াতে চাচ্ছিলো।

যেখান থেকে মুহিব আমাকে বিদায় দিয়েছিলো, সেখান থেকে একটু ঘুরে আবার হাঁটের অন্য কোনায় পশু জবাইয়ের স্থানে যাওয়া যায়। আমি সেখানে যেয়ে জবাই হওয়া কিছু গরু বা ছাগলের রক্ত গায়ে মেখে নেই। আমি তখন ঘোরের মাঝে। এর পর গ্রামের পথে হাঁটতে থাকি। কল্পনা করি ঐ ঢ্যাঙা লোকটাকে দেখেছি। কল্পনা করি বাঁশঝাড়ে ভুত দেখেছি। এসিডের ব্যাপারটা নিশ্চিত না। তবে ব্যাটারিতে এসিড থাকে, এটা জোগাড় করা দুরূহ না।

আমি ঐ বাঁশঝাড়ে যাবার পর আমার অবচেতন মন আমাকে মিতালীর সম্ভাব্য মৃত্যুর সাথে জড়িত ভয়ের কিছু একটা কল্পনা করায়। বাস্তবে এসব কিছু ঘটেনি।

৩) ঐ বয়সটা খারাপ কিছু করার জন্য খুব উপযুক্ত। বাবার শাসনে থাকা অবস্থায় খারাপ কিছু করার সুযোগ ছিলো না, গ্রামে সুযোগ পেয়েছিলাম। মুহিবের সাথে কথা বলার পর আমি খারাপ কোনো জায়গায় যাই। সম্ভবত জুয়ার আড্ডা। ওখানে নিত্যনন্দ ছিলো। ওর সাথে কথায় কথায় জানতে পারি খুনের পরিকল্পনার কথা (খারাপ লোকেরা তাদের অপকর্মের কথা বড়াই করে, গোপন রাখে না)। এটা নিয়ে গন্ডগোল লাগে। ওরা আমাকে মারধোর করে ঐ খানে নিয়ে আসে এবং দাবি করে আমার বডি ওখানে খুঁজে পেয়েছে। নিজের মান সম্মান বাঁচানোর জন্য আমার অবচেতন মন একটা ঘটনা বানিয়ে বলে।

৪) নেশা বা অন্য কোনো সূত্রে নিত্যানন্দের সাথে আমার সখ্য ছিলো। খুনের পরিকল্পনার সাথে আমিও জড়িত। পরবর্তিতে আমি ভয় পেয়ে যাই, ঘটনা থেকে পিছিয়ে আসতে চাই। আমার অবচেতন মন বাকি গল্পটা কল্পনা করে নেয়। ২ এর সাথে ৪ এর সামান্য পার্থক্য- আমি খুনের পরিকল্পনার সাথে জড়িত এবং জড়িত না।

গ্রামে ফার্স্ট শো (৬টা-৯টা) এবং সেকেন্ড শো (নটা-বারোটা)- দুটাই ভালো চলতো সেসময়। আমি রাত আটটা থেকে এগারোটা রাস্তার ধারে পড়া থাকলে ফার্স্ট শো দেখে যারা ঐ পথে ফিরছিলো তাদের চোখে পড়ার কথা। তবে আমাদের গ্রামের কেউ ঐ রাতে ফার্স্ট শো দেখেনি। পরের গ্রামের কেউ দেখেছে কিনা এ বিষয়ে খোঁজ নেয়া সম্ভব হয় নি।

যেহেতু আমার সাব কনশাস মাইন্ড চায় না আমি ঐ দিনের ঘটনা পুরোপুরি মনে করি, আমি এখন মনে করি যে ঐ দিনের ঘটনা আমার জন্য ভুলে যাওয়াই ভালো। আমি গত দশ বছরে এটা নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করিনি।

১৩| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৩

ঢুকিচেপা বলেছেন: আপনি যেহেতু নিজেই স্বীকার করছেন, খুনের সাথে জড়িত, ভাবলাম এই সুযোগে দেখি জেল জরিমানা করা যায় কি না!!!!!!!!!!!!!
কিন্তু সোনাবীজ ভাই যে শার্লক হোমসের মত এত পুরাতন কেস সলভ করেছেন সে জন্য আর কিছুই হলো না।
আপনি খালাস..................
গল্পটা খুব ভালো লেগেছে।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৪০

মা.হাসান বলেছেন: আপনি আমার রিমান্ডের জন্য অনেক চেষ্টা করিতেছেন জানিয়া আনন্দ পাইয়াছি। গরীবের জন্য কেহই কিছু করিলোনা, অন্তত একজন আছে জগতে যে গরীবের কথা ভাবে। ঢুকিচেপা ভাই, কান্না সামলাইতে পারিতেছি না |-) , পারিলে এক খানা রুমাল দিয়েন, হাড়ি পাতিল না দিলেও চলিবে B-))

এত সকালে খালাস দিয়েন না। ওনার থিওরিতে ফাঁক আছে। কাজেই আপনার এখনো আশা আছে :)

১৪| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:৪৯

কল্পদ্রুম বলেছেন: গল্প হিসেবে চমৎকার। যদি গল্পের পিছনে বাস্তবের ভিত্তি থাকে তাহলে বলবো আপনার জন্য খুবই ট্রমাটিক অভিজ্ঞতা ছিলো বুঝতে পারছি। অনেকদিন ধরে একটা অপরাধবোধ বয়ে বেড়িয়েছেন। আশা করি, বর্তমানে এই ভাবনাগুলো আপনাকে আর ভাবাচ্ছে না। সুস্থ স্বাভাবিক আছেন।
শুধু গল্প হলে বলবো, এখানে ভূত না থাকলেও ভয় ছিলো।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৮:৫১

মা.হাসান বলেছেন: শুরুর দিকে একটু সমস্যা ছিলো। কিছু সন্দেহ ছিলো। সময়ের সাথে দূর হয়েছে। গত দশ বছরের বেশি হলো একেবারেই এটা নিয়ে ভাবিনি।

নিজের কোনো বড় ভৌতিক অভিজ্ঞতা নেই, তবে শোনা কিছু ঘটনা আছে। সময় পেলে কিছু শেয়ার করবো।

অশেষ শুভ কামনা।

১৫| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪০

আনমোনা বলেছেন:
আপনি তো চার নয়, এক্কেবারে ছয়ের সন্ধানে বেরিয়েছিলেন। দেখলেনতো, তার পরিনতি কি।
তাও ভেবেছিলাম গ্রামে কোনো সুন্দরীর দেখা পাবেন, তারপর ভৌতিক-রোমান্টিক কিছু হবে। তারপরে ভাবলাম হাতি ভুত। শেষে ভুত পেতনী ছেড়ে একেবারে খুনের গল্প!

ছাই ভাই গোয়েন্দাগিরি করল বটে, তাও টাইমলাইন ঠিকমত মিলছেনা। আপনি পেতনী দেখলেন বৃহস্পতি/শুক্রবার রাতে। মিতালী নিখোঁজ শনিবার দুপুর থেকে। হাতের ছাপের বদলে এগুলো মিলালে হতনা?

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:০৪

মা.হাসান বলেছেন: আপনি জীবিত আছেন? নাকি ইহা আপনার ভুত? ছেলে বড় হইয়া গিয়াছে, সম্ভবত শিক্ষা জীবন শেষ করিয়া কর্ম জীবনে প্রবেশ করিয়াছে। সংসারে চাপ কম। আপনার তো এখন ব্লগে ২৪ ঘন্টা থাকার কথা! আমি ধরিয়া লইয়াছিলাম আপনি আর নাই :((

The more, the merrier. যাহা ভালো এক-দুই-তিন-চার-ছয়ে শেষ হইবে কেনো? অধিকন্তু ন দোষায় :P

গোয়েন্দা হিসেবে আপনি ছাই ভাইয়ের চেয়ে অনেক দক্ষ। ওনার টাইমলাইন ঠিক না হবার সম্ভাবনা বেশি। আপনি যা হলেছেন সেই লাইনে চিন্তা করেছিলাম। তবে জোবাইর ভাই ১০ নম্বর মন্তব্যে নতুন অ্যাঙ্গেল থেকে বিশ্লেষন করেছেন।

যা গেছে তা গেছে। ঐ ঘটনার পরে আমি আর কোনো খুন করেছি বলে কেউ দাবি করেনি। ব্যাখ্যা পেলে ভালো লাগতো এই ই যা।

মডু যদি আপনাকে জেনারেল করিয়া রাখে আর সেই কারনে যদি পোস্ট না দেন, তবে লজ্জা না করিয়া আওয়াজ দিবেন। আমরা জ্বালাময়ি পোস্ট দিয়া আপনাকে সেফ করিয়া আনিবো।

১৬| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৬

পদ্মপুকুর বলেছেন: পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: কোথাকার জল কোন দিকে গড়ালো, এক্কেবারে অকল্পনীয়। রাতের বেলা ভেজা ধান বিক্রি, নকল টাকার পরিবর্তে আসল টাকা পাওয়া, ফিরে আসার পথে ঝোপের মধ্যে গোঙানি, তার সঙ্গে ধস্তাধস্তি, হসপিটালাইজড হওয়া এসব চলছে তো ঠিকমত। কিন্তু একদম শেষে এসে হোঁচট খেলাম।

আমিও একই ধন্ধে আছি। ভেবেছিলাম ছয়টি চিঠির ধাক্কা খাওয়ায় প্যারা-রোমান্টিসিজমের কোনো লেখা হবে, ওমা! এতো পুরো ভুতুরে কাণ্ড, তারউপর বাসায় একা আছি আজ....

আচ্ছা, ওইটা তো ফনিক্সই ছিলো, পি এইচ ও এন আই এক্স, তাইলে গ্রামবাসী ফনিক্স উচ্চারণ করতো মানে কি?
আরেকটা কথা, আমরা লোহা ও আগুনের কথা শুনতাম, লবনটা বোধহয় নতুন।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৬

মা.হাসান বলেছেন: রোমান্টিক লোকেরা রোমান্টিক বস্তু খুঁজিবে, আর গ্যাঞ্জাম প্রিয় লোকেরা হাতাহাতি-মারামারি-গ্যাঞ্জামের কথা লিখিবে। ইহাই স্বাভাবিক। আপনাকে হতাশ করায় যার পর নাই দুঃখিত। :-&

করোনাকালে বাসায় একা থাকা ভালো কথা নহে। ভাবি রাগ করিয়া বাপের বাড়ি গেলে ওনার রাগ ভাঙাইয়া বাড়ি ফিরাইয়া লইয়া আসুন।

আচ্ছা, ওইটা তো ফনিক্সই ছিলো, পি এইচ ও এন আই এক্স, তাইলে গ্রামবাসী ফনিক্স উচ্চারণ করতো মানে কি?

এখন কি পাওয়া যায় জানি না, আমাদের সময়ে যেটা পাওয়া যেতো ওটার বানান ছিলো - Phoenix, উচ্চারন ফিনিক্স হবার কথা। এখন সব জায়গায় দুই নম্বর। এখন হয়তো 'e' বাদ গেছে।

ঐ সময়ে ওটা খুব ভালো মানের সাইকেল ছিলো। একটা ডায়নামো থাকতো, পিছনের চাকার সাথে সেট করা। চাকা ঘুরলে ইলেকট্রিসিটি তৈরি হতো, সামনে একটা ল্যাম্প/বাল্ব ছিলো, বাল্ব জ্বলতো। এখন সাইকেলে এলইডি বা আরো পাওয়ারফুল আলো খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু ৮৫-৯৫ সালে এটা বড় জিনিস ছিলো।

উইকিপিডিয়ার এই পেজে ফনিক্স সাইকেল সম্পর্কে আরো অনেক তথ্য পাবেন।

অন্য বিষয়ঃ সময় বাঁচাইবার জন্য আমি এফ-৫ এর বদলে এফ-১০ চাপ দিয়াছিলাম। ভাবিয়াছিলাম দুইবার রিলোড হইবে। কাজ হইতেছে না। কোনো সাহায্য করিতে পারিবেন? 8-|

১৭| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৪

আমি সাজিদ বলেছেন: শেষপর্ব বিশাল একটা ধাক্কা দিলো, আমারও কেন যেন মনে হয় ওটা মিতালী ছিলো। জানি না। আসলে কি ঘটেছে। অভিজ্ঞতাটা ভৌতিক অভিজ্ঞতা থেকে কোন অংশে কম নয়।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৪

মা.হাসান বলেছেন: ব্লগে আগে ধাক্কা/ঠ্যালা দেওয়ার একটা কালচার ছিলো। ব হুদিন পরে এই কালচার আংশিক হলেও চালু করতে পেরেছি বলে আনন্দিত B-))

রহস্যময় জগতে কত কিছুই ঘটে, কতটুকুই বা বুঝি। হয়তো মিতালী ছিলো। হয়তো ভুডু ডল কাজ করে। হয়তো তান্ত্রিক ব্যাটা ভয় দেখানোর জন্য বসে ছিলো, দুজনেরই কপাল খারাপ, এক জন আরেক জনের সামনে পড়ে গেছিলাম। এখন আর ভাবি না।

অনেক শুভ কামনা।

১৮| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৫৯

আমি সাজিদ বলেছেন: শেষপর্ব বিশাল একটা ধাক্কা দিলো, আমারও কেন যেন মনে হয় ওটা মিতালী ছিলো। জানি না, আসলে কি ঘটেছে। অভিজ্ঞতাটা বেশ ভয়াবহ ও খারাপ যেটার রেশ বহুদিন ছিল।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৫

মা.হাসান বলেছেন: অভিজ্ঞতাটা বেশ ভয়াবহ ও খারাপ যেটার রেশ বহুদিন ছিল

অনেক বছর। সময়ের সাথে সাথে চলে গিয়েছে।

১৯| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১৪

নীল আকাশ বলেছেন: ধান মাপার পরে টাকা বুঝে নিয়েছি। কিন্তু আমি আর সহ্য করতে পারলাম না। বললাম- ভাইজান ধানটা একটু দেখে নেন, ভেজা আছে। লোকটা আমাকে বলল - দাওতো বাবা টাকাটা একটু, বলে আমার হাত থেকে টাকার বান্ডিলটা নিয়ে নিল। মুহিবের চেহারা দেখে মনে হয় আমাকে ধরে এই মারে কি সেই মারে। লোকটা টাকার বান্ডিল থেকে একটা ৫০০ টাকার নোট সরিয়ে পকেট থেকে আর একটা ৫০০ টাকার নোট দিয়ে বলল- যাও। এইখানটাতে সন্ধ্যার পরে যারা ধান বিক্রি করতে আসে, তারা কি ধান বেচে আমরা ভালো করেই জানি। তুমি সত্য কথা বললে, তোমাকে আর জাল টাকা দিলাম না।
ভুতের গল্প বাদ দিন। এই অংশটা অসাধারণ লেগেছে।
একটা মজার অভিজ্ঞতা শেয়ার করি। ছোট বেলায় নানাবাড়ি গিয়েছি। গ্রামের হাটবাজার। নানা আমাকে আরেক ভাইয়ের সাথে বাজারে পাঠালেন দুধ কেনার জন্য। বাজারের ভিতরে যেখানে দুধ বিক্রি করে সেখানে যেয়ে দেখি দুই সাড়ি লোক মাঝখানে প্রায় ৮ ফিট গ্যাপ দিয়ে বসে আছে দুধের কলসি, জগ হাতে নিয়ে। আমি তো অবাক কার কাছ থেকে কিনবো? সাথের ভাই বললেন, বামদিকের লোক ভেজাল সহ আর ডানদিকে লোক ভেজাল ছাড়া দুধ বিক্রি করে। ভেজাল মানে টিউবওয়েলের পানি মেশায় আর কি! দাম কয়েক টাকা কম। সের পাঁচ টাকা। আমি আমার জীবনে এত অবাক হয়নি মানুষের সততা দেখে। ইচ্ছে করলেই সবাই ডানদিকে বসতে পারতো কিন্তু তা করেনি। ছোটবেলায় অনেক বছর এই কান্ড দেখেছি। আমি গ্রামে গেলেই এদের দেখার জন্য দুধ কিনতে যেতাম।

কিন্তু এখন সব কিছু আমূল বদলে গিয়েছে। যে টিএনও'কে মেরেছে সেটা আমাদের গ্রামের ঘটনা। মহিলা নাকি বেশ ভাল। পলিটিক্যাল গন্ডগোল। নব্বইয়ের শুরুতে ঘোড়াঘাটে নোয়াখালি কুমিল্লা থেকে ব্যাপক পরিমানে লোকজন আমাদের গ্রামে আসে ক্ষেতে মজুর হিসেবে কাজ করার জন্য। গ্রামের লোকজনে জায়গা জমি অনেক, অবস্থা বেশ ভালো। এদের মজুর হিসেবে থাকতে দ্যায়। দশ বছর পর এরাই এখন দিনাজপুরের লোক বলে পরিচয় দ্যায়।
যত আকাম কুকাম এইসব লোকজন করে। ভাবতেও অবাক লাগে নিজের গ্রামের লোকজনের অধ:পতন দেখে।

ভালো থাকুন ভাই।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৪৮

মা.হাসান বলেছেন: দুধের যে ঘটনা বললেন তা আগে কখনো শুনি নি। অবাক করা বিষয়!।

ঐ দুই এলাকার নাম মুখে নেয়ার সাহস আমার নাই X(
আমার আগের চাকরিতে একজন ছিলেন রঙপুরের। ওনার আচরন ঐ দিকের লোকদের মতো না। চাকরি পাবার দুই বছর পরে জানতে পারি ওনার বাড়ি আপনার বলা জায়গা গুলোর কোথাও। নিজের জেলায় কোটা নাই, রঙপুরের কোটায় ঢুকেছে। ওনার চাচা রঙপুরে ব্যবসা করতে এসে জমি কিনেছে, সেই হিসেবে ঠিকানা দেয়া।

আমার বাবাকে কর্ম সূত্রে ডিসি অফিসে মাঝে মাঝে যেতে হতো। আশির দশকে একটা ঘটনা ঘটলো। উত্তর বঙ্গের এক জেলায় এক ৩য় শ্রেনির চাকরিতে ডিসি সাহেব তার ভাগনাকে ঢুকিয়ে দিলেন। ডিসি সাহেবের (এবং ভাগনার ) বাড়ি আপনার বলা কোনো জায়গায়। এরশাদ কাকু জেলা কোটা না করে গেলে দুরবিন দিয়ে খুঁজেও দিনাজপুর-রঙপুরের লোক সরকারি চাকরিতে পাওয়া যেতো না। পার্বত্য চট্টগ্রামে আগে থেকেও অনেক বাঙালি, বড় সমস্যা ছিলো না। পরে ঐ সব এলাকার লোক জন যেয়ে বড় সমস্যা তৈরি করেছে।

যে টিএনও'কে মেরেছে সেটা আমাদের গ্রামের ঘটনা।
এই বিষয়ে আমার কিছুটা দুশ্চিন্তা হচ্ছে। পর পর দু জন ওসি দু জ কে রিমান্ডে নিয়ে দোষ স্বীকার করিয়ে ফেললো। ভালো দেখে কোনো ওসি নিয়োগ দেয়া হোক। তদন্ত ঠিক মতো করলে দেখা যাবে আসামী ছাত্র দলের লোক, হাতুড়ি লন্ডন থেকে এসেছে। সরকারের উচিৎ তদন্ত কর্মকর্তা বদলে যোগ্য কাউকে দেয়া।

(এই বিষয়ে , যতদূর মনে পড়ে, আপনার একটা পোস্ট আছে - আসামী খুনের কথা স্বীকার করার পাঁচ বছর পরে মৃত দেহ ফিরে আসলো- এরকম )

২০| ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:১৯

ঢুকিচেপা বলেছেন: মন্তব্যগুলি এই গোডাউনে দীর্ঘদিন পড়িয়া থাকিয়া অবশেষে পচন ধরিবে। সেসময় মেয়াদ উত্তীর্ণ সমস্যা জনিত কারণে ভ্রাম্যমান আদালত অথবা গুনগত মানের কারণে যদি বিএসটিআই কিছু করিয়া বসে তখন ........
তারচেয়ে শ্রেয় হইবে মন্তব্যগুলি ভালোভাবে শুকাইয়া, আচার বানাইয়া, মাঝে মাঝে রোদে দেয়া।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৬

মা.হাসান বলেছেন: রিমান্ডই ভালো ছিলো, কিন্তু আপনি রিমান্ডে সন্তুষ্ট না, কুচি কুচি করিয়া কাটিয়া শুকাইতে চান :( এক্ষণে নিজেই বিচার করিয়া দেখুন কে সাইকোপ্যাথিক, স্যাডিস্টিক খুনী /:)

আন্তরিক ভাবে দুঃখিত বিলম্বের জন্য। যেমন আগে বলেছি, দুই দিন ইন্টারনেট প্রায় ছিলো না। অফিসের কাজ জমে গেছিলো। রুটি-রুজি আগে, ব্লগ পরে। কাজের দিকটা কিছুটা না গুছিয়ে আসতে পারি না। স্বাভাবিক সময়ে একটা পোস্টের মন্তব্য ক্লিয়ার না করে অন্য পোস্টে যেতাম না, এখানে মডুর ডেড লাইনের কারনে আট তারিখের আগেই তিনটা পোস্ট দিতে হয়েছিলো। ফলে এই মন্তব্য জট। আবার দুঃখ প্রকাশ করছি।

২১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৩৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
আমি মনে করি না এখানে ভৌতিক কিছু ছিলো। আমিও তাই মনে করি, এখানে ভৌতিক কিছু ঘটে নি। তবে, আবার মন্তব্যে ফিরে এলাম একটা কথা বলার জন্য - আপনার সততা এবং অনুসন্ধিৎসাপ্রবণতা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমার কমেন্টের রিপ্লাইয়ে এটা খুবই সাবলীলভাবে ফুটে উঠেছে, যদিও মূল পোস্ট পড়েও তা বোঝা যায়।

আমার কাছে যেটা সত্য বলে মনে হয়েছে তা হলো ঘটনার সাথে তিনটা প্রধান ক্যারেক্টার ইনভল্‌ভড - মিতালী, ওর পাণিপ্রত্যাশী নিত্যানন্দ এবং আপনি। এর সাথে আর একজন-দুজন সহযোগী যোগ করা যায়, যারা নিত্যানন্দকে হেল্প করার কাজে জড়িত থাকতে পারে। মিতালীকে নিত্যানন্দ এসিড মেরেছে; আপনার সাথে মিতালীর ধস্তাধস্তি হয়েছে, মিতালীকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে ব্রিজের নীচে - ঘটনার সিকোয়েন্স হলো এটা। এবার টাইমলাইন ঠিক করতে হবে এটাক মাথায় রেখে। রেজিস্টারের টাইম লাইন এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্টের সাথে যদি মেলাতে না পারেন, তাহলে কেবল ঐগুলোকে ভুতুড়ে ধরতে পারেন, বাকিগুলো বাস্তবিক :)

সেদিন ঘুমের সময় যা লিখেছিলাম, আজ আবার ওটাই বলে যাই, লেখার গুণে কেবল ঐদিন যথাসময়ে না শুয়ে এটা পড়তে আসক্ত হয়ে পড়ি। অভিনন্দন আবারো।

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৫৬

মা.হাসান বলেছেন: জী, খুন সত্য, কোনো কোনো ঘটনা মানুষ নামের ভুতের কারসাজি হতেও পারে।

মুহিবের কাছ থেকে বিদায় নেবার পর থেকে হাসপাতালে জেগে ওঠা পর্যন্ত কি ঘটেছে নির্ভরযোগ্য সাক্ষী নেই। আমার দেহ আদৌ বাঁশ ঝাড়ে ছিলো না অন্য কোথাও থেকে এনে ডাম্প করা হয়েছিলো জানি না। আমি পরে যা বলেছি সেটা আমার কল্পনাও হতে পারে।

ঐ সময় বয়স কম ছিলো, লেগে থাকার আগ্রহ ছিলো। একটা ফাইল তৈরি করেছিলাম। যা ভাবতাম তা লিখে রাখতাম, যা তথ্য জোগাড় করেছি ফাইল বন্দি করতাম। ২০০০সালের পর থেকে ঐ বিষয়ে আমার আগ্রহ কমতে থাকে। ২০১০এ পুড়িয়ে ফেলি।

এই কেস সমাধান করে কি লাভ! নিত্যানন্দ মরে গেছে। তান্ত্রিক পলাতক। মুহিব নেশা ছেড়েছে। আমি এর পর আর বড় কোনো অপকর্ম করিনি।

ফিরে এসে সুন্দর মন্তব্য করায় অনেক ধন্যবাদ খলিল ভাই, অনেক শুভ কামনা।

২২| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪১

করুণাধারা বলেছেন: বড়ই আশ্চর্যান্বিত হলাম- ঘাটশিলার পাথরের গল্প আপনি জানেন না দেখে!! আমার ধারণা হয়েছিল, আমি যত কিছু পড়েছি আপনি সেসবসহ আরো অনেক কিছু পড়েছেন...

ঘাটশিলার গল্পটা এরকম, বিভূতিভূষণ একদিন জরুরি কাজে এক পাহাড়ি পথ ধরে কোথাও যাচ্ছিলেন। একসময় দেখলেন পথের পাশে এক প্রকান্ড পাথরের গায়ে সাদা রং দিয়ে লেখা, "উল্টিয়ে দ্যাখসে"! তার তাড়া ছিল, কিন্তু কৌতুহল এত বেশি হলো যে তিনি গলদঘর্ম হয়ে অবশেষে পাত্রটা ওল্টাতে পারলেন। দেখলেন লেখা আছে, "বেশি কৌতুহল ভালো নয়। তোমার আগে আরো ৫২ জন ঠকেছে, তুমি এর সাথে এক যোগ করে সংখ্যাটা লিখে পাথরটা আগের মত উল্টে রাখ"..... বিভূতিভূষণ বহু কষ্টে ৫২ মুছে ৫৩ লিখলেন, তারপর আবারো অনেক মেহনত করে পাথরটা আগের মত করে রাখলেন।

এটাই গল্প। লেখার পর মনে হচ্ছে আপনি গল্পটা জানতেন। :|

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২২

মা.হাসান বলেছেন: বিনয়ের সাথে বলি, দু-একটি লেখা কাকতালীয় ভাবে মিলে গেছে, আপনার তুলনায় আমার পড়ার দৌড় কম, যা পড়েছি ক্লাসিক কম, অখাদ্য বেশি।

বিভূতিভূষণের এই গল্প আমি নিশ্চিত আগে শুনি নি। এবে এর কাছাকাছি একটা ঘটনা শুনেছি, এই লিংক দেখতে পারেন-https://www.youtube.com/watch?v=7xAlGd9YlkY

ঘটনাটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

২৩| ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৭

মুক্তা নীল বলেছেন:
হাসান ভাই ,
শিরোনাম পড়ে ভাবলাম এটা কোন রোমান্টিক গল্প কি-না
কিন্তু পরে তো আমি পুরাই থ । না রোমান্টিক না ভৌতিক
কিন্তু একটু ভয় পাচ্ছি ।
৫ ব্যাটারি টর্চ লাইট আমি দেখেছি গ্রামে , কুপি বাতি
ফনিক্স সাইকেল একে একে বর্ণনা যা আসছিল গ্রামের
পরিবেশসহ তাতে করে মনে হচ্ছে কিছু ঘটনা সত্য।
কিন্তু মিতালীর হত্যাকাণ্ড / নিত্যানন্দ এবং মুহিব চরিত্র
সব মিলিয়ে আমিও একটু কনফিউজ।
আপনি চমৎকার লিখেন এবং তা ফুটিয়েও তুলেছেন।
ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৬

মা.হাসান বলেছেন: অরোমান্টিক, অভৌতিক লেখার জন্য এবং পুরোপুরি ভয় না পাইয়ে একটু একটু ভয় দেখানোর জন্য এবং কনফিউজ করার খুব দুঃখিত।
আপনি চমৎকার লিখেন এবং তা ফুটিয়েও তুলেছেন।

পোস্টে লাইক করার জন্য এবং এত সুন্দর কথা বলার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আপনিও অনেক ভালো থাকুন, অনেক শুভ কামনা।

২৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:৪৯

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: হা হা ঠিক বলেছেন। শ্বাশুড়িরা যে হাসলেও কত ভয়াবহ তা নিয়েও লিখলে আমার ভৌতিক গল্প সেরা লেখা হত।

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৪

মা.হাসান বলেছেন: দুশ্চিন্তার কারন নাই। আপনিও একদিন শাশুড়ি হইবেন। আপনাকে লইয়াও হরর গল্প লিখা বইবে। পাঠ করিতে পারিলে তৃপ্তি পাইবো B-))

২৫| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২৮

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: সে যুগে কি আর ছেলেমেয়েরা গল্প লিখবে?

তখন তো হলোগ্রামে কথা বার্তা হবে।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৩

মা.হাসান বলেছেন: সে যুগ?

আমার তো ধারণা ছিলো এই গল্পে আপনি শাশুড়ি না হলেও শাশুড়ির মা বা নানী হবেন B:-)

যা হোক, হলোগ্রামের দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবো কি না জানি না, বেঁচে থাকলে দেখা হবে :)

২৬| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৩০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: এত পরে পোষ্ট পড়ে কোন মন্তব্য দেয়ার মানে ই নাই।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৪

মা.হাসান বলেছেন: কবি আপু পড়ে জানান দিয়ে গেলো এটাই আমার আনন্দ। :D

২৭| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৫৩

জাহিদ হাসান বলেছেন: আমি সাইকেল চালিয়ে ক্লাস সিক্স থেকে দাখিল পাস পর্যন্ত ৫ বছর লেখাপড়া করেছি। গ্রামের একটি আলিয়া মাদরাসায়। সেই স্মৃতি মনে পড়ল।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:১৭

মা.হাসান বলেছেন: যাতায়াতের জন্য গ্রাম দেশে সাইকেল খুব উপকারি। কিন্তু বর্ষায় কষ্ট অনেক। তবে বাংলাদেশের অনেক গ্রাম এলাকাতেও পাকা রাস্তা আছে, সে সব জায়গায় মনে হয় অত কষ্ট হয় না। সাইকেলের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখার অনুরোধ থাকলো।

২৮| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:০৩

শেরজা তপন বলেছেন: এই পর্ব থেকে শুরু করলাম। আগের পর্বগুলো পড়ে আসি সময় করে তারপরে মন্তব্য করব

তবে এ পর্ব সন্দেহাতীত ভাবে সুখপাঠ্য!

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৩৫

মা.হাসান বলেছেন: অনেক আগের গল্প। বেশ কয় জায়গায় তাল কেটে গেছে। কিছু অংশ ঝাপসা হয়ে গেছে। দু-একটা জায়গায় দ্বিরুক্তি হয়েছে। এর পরেও ভালো লাগলে তা নিঃসন্দেহে পাঠকের গুনেই হয়েছে।

অশেষ শুভ কামনা।

২৯| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৪১

মনিরা সুলতানা বলেছেন: আমি তো ব্লগে আপনা কবিতা অনুরাগী হবার পর কবিতা লেখা’ই ভুলে গেছি /:)
ভাগ্যিস কিরপিন মনে করায়ে দিছে ;
আইজ ই একটা নতুন কবিতা লিখতে হবে :`>

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১:৫৩

মা.হাসান বলেছেন: ব্যান না খাইলে অবশ্যই পড়িয়া আসিবো।

ব্লগে এখন এক লাইনের কবিতা লেখা হইতেছে। আশীর্বাদ করিবেন আমি যেনো আরেকটু আগাইয়া শূন্য লাইনের কবিতা লিখা শুরু করিতে পারি 8-|

৩০| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:৪৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আমি আজ সারা দিন খুব ব্যস্ত ছিলাম, ব্যস্ততার মাঝে আমার পোস্টের উত্তরগুলো দিয়েছি। আপনার পুরো পোস্ট আমার আরেকবার পড়তে হবে এছাড়া পোস্টের মন্তব্যগুলোও। আপনার ফিনিক্স সাইকেলের দাম বলেছেন ৫২০০ টাকা অর্থাৎ সময়টি ১৯৮৯ - ১৯৯০ সন হবার কথা। কারণ ১৯৮৭ - ১৯৮৮ তে ফিনিক্সের দাম ছিলো ৪৭০০ টাকা।

ডিএসপি এসপি সহ পুলিশের যে কোনো পদ নিজ জেলাতে পোস্টিং হয় না, আমি আজ বেশ ক্লান্ত লেখাগুলো ভালোভাবে বোঝার জন্য আবার পড়বো। আমার কাছে কোনো সমাধান নেই তারপরও আগ্রহ থেকে পড়া বলতে পারেন।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:২৪

মা.হাসান বলেছেন: জি ঠাকুরমাহমুদ ভাই, ঘটনা ৮৯-৯২ এর মাঝের। পোস্টে বলেছি ত্রিশ বছর মতো আগের। এক্সাক্ট সময়টা বলতে চাচ্ছি না। ১৯৮৭-৮৮তে ফিনিক্স সাইকেলের দাম আপনি যেমন বলেছেন এরকমই সম্ভবত ছিলো, আমার মনে নেই। তবে ডায়নামো ছাড়া দাম কয়েকশত টাকা কম হতো মনে হয়।

ধানের দামের বিষয়েও ভুল হয়ে থাকতে পারে। যতদূর মনে পড়ে ১৭০-২০০ টাকার কাছাকাছি মন দরে বিক্রি হতো। ভুল হয়ে থাকলে তা নিতান্তই স্মৃতি দূর্বল হবার কারনে।

পুলিশ এবং প্রশাসন ক্যাডারে নিজ জেলায় পোস্টিং হবার কথা না।

মোখলেস (এটা আসল নাম না) এবং আরেকজন ব্যাচমেট আমার নিজের বা আশেপাশের জেলার না।

আমার ধারণা আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এমন একাধিক ঘটনা আছে যার ব্যাখ্যা আমরা দিতে পারি নি। সব ঘটনা ব্যাখ্যার দরকারই বা কি? এটা না হয় একটা গল্প হয়েই থাক।

অশেষ শুভ কামনা।

৩১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:

মা. হাসান ভাই, আমার পোস্টে আপনার মন্তব্য উত্তর দিয়েছি পাশাপাশি ব্লগার ডঃ এম এ আলী ভাই আপনার মন্তব্য উত্তর দিয়েছেন। - আশা করি আপনি আশ্বস্ত হবেন। তাছাড়া ব্লগার আহমেদ জী এস ভাইও আপনাকে স্মরণ করেছেন।

আশির দশকে বাইসাইকেল একটি ব্যাপার স্যাপার ছিলো। এ বিষয়ে আমি একটি পোস্ট দিবো ভাবছি। বিডিআর জওয়ানদের থেকে কেনা সেকেন্ড হ্যান্ড আমার একটি পিত রঙা হারকিউলিস সাইকেল ছিলো। ফিনিক্স ডাবল পাইপের মজবুত কে ডব্লিও ফ্রক। আর হিরো ও হারকিউলিস ছিলো সিঙ্গেল পাইপের।

জীবনের কিছু ঘটনার সমাধান বা ব্যাখ্যার প্রয়োজনও নেই। থাকুক স্মৃতির অন্তরালে কোনো গোপন কুঠুরিতে - এটিই জীবনের আনন্দ। আপনার বেষ্ট একটি লেখা পড়া হলো।

শুভ কামনা জানবেন।

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১০:২২

মা.হাসান বলেছেন: আমার বাবার একটি র‌্যালে সাইকেল ছিলো। তবে এটি আমার জন্মের আগের ঘটনা, আমি দেখিনি। তখন সম্ভবত বাহিরে থেকে আসতো। আমি যখন বড় হয়েছি তখন ইন্ডিয়ান সাইকেল বেশি দেখেছি। অ্যাভন আর হিরো বেশি চলতো। দাম ৮০০-১৫০০ টাকা। আমার জানা মতে হারকিউলিস বেশ মজবুত সাইকেল ছিলো। সম্ভবত আমার মামার কাছে দেখেছি। এখন এই জিনিস পাওয়া যায় বলে মনে হয় না।

সে সময় গ্রাম দেশে বিয়ের সময় সাধারণ ছেলেরা যৌতুক দাবি করতো সাইকেল , রেডিও আর ঘড়ি। মানুষের যা আর্থিক সঙ্গতি ছিলো তাতে অবস্থা সম্পন্ন গৃহস্থের জন্য এগুলো যোগাড় করা অসম্ভব ছিলো না, তবে বর্গা চাষিদের জন্য কষ্টকর ছিলো।

আপনার সাইকেল বিষয়ক লেখার জন্য অপেক্ষায় থাকবো।

লেখা ভালো লেগেছে জানায় আনন্দিত।

৩২| ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ২:২১

সোহানী বলেছেন: মানে কি?????? কই থেইকা কই গেলেন। আয়েশ করে সৎ মানুষের জন্য একখান জম্পেজ ধন্যবাদ দেয়ার প্লান করতে করতেই এভাবে খুব ধর্ষণ দিয়ে শেষ করলেন???

মনটাই খারাপ করে দিলেন। এরকম মিতালীরা এ দেশে জন্ম নেয়াই পাপ...............

২৭ শে জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৫

মা.হাসান বলেছেন: দুঃখিত, ব্যক্তিগত সমস্যার কারনে ব্লগে আসা হয় নি অনেক দিন।

শুধু এদেশে না, গরীবের জন্ম যে কোনো দেশেই পাপের। মন খারাপ করিয়ে দেবার জন্য দুঃখিত। :(

৩৩| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: সুচতুর ভেজা ধান ক্রয়কারী সত্যবাদী বিক্রেতাকে তার সত্যবাদিতার জন্য যে মর্যাদা দিলেন, তাতে মুগ্ধ হ'লাম এবং সততার এ বিরল মূল্যায়ন মনে একটা প্রফুল্লতা এনে দিল।
এক জায়গায় মুহিব মুহিত এর জোড়াতালি পেকেছে। "আনুমানিক ১৫ বছর পর মুহিব নেশা ছেড়ে দেয়" - এর আগের বাক্যে ব্যাপারটা ঘটেছে।
মনের পুলক দূর করার স্ব-আবিষ্কৃত পন্থাটা বেশ চমকপ্রদ। :)
পোস্টে ১৯তম ভাল লাগা + +।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৮

মা.হাসান বলেছেন: উত্তরবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় জাল নোটের কারবার অন্য এলাকার চেয়ে সম্ভবত কিছু বেশিই ছিলো। গ্রামের লোকদের সরলতা এবং প্রতিবেশ দেশ থেকে সাপ্লাই- এই দুটিই মনে হয় বড় কারণ ছিলো। আমার মনে আছে, যখন প্রথম কুড়ি টাকার নোট চালু হয়, আমাদের এলাকায় একশত টাকার নোট বলে কুড়ি টাকার নোট চালিয়ে দেবার একাধিক ঘটনা ঘটেছিলো।

গত ত্রিশ-চল্লিশ বছরে দেশের অনেক সেক্টরের মতো প্রিন্টিং সেক্টরেরও অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এখন আর আমরা জাল টাকার জন্য প্রতিবেশি দেশের দিকে তাকিয়ে থাকি না, এই খাতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ।

সততার এ বিরল মূল্যায়ন মনে একটা প্রফুল্লতা এনে দিল।
ক্রেতা অভিজ্ঞ লোক ছিলেন। আমার হাবভাব দেখে বুঝে নিয়েছিলেন যে আমি নতুন। এই জন্য মনে হয় উনি ওরকম আচরন করেছিলেন। আপনি প্রফুল্ল হয়েছেন যেনে ভালো লাগলো।

মনের পুলক দূর করার স্ব-আবিষ্কৃত পন্থাটা বেশ চমকপ্রদ।
এটা মনে হয় শুধু ব্যাচেলরদের জন্য কাজ করবে। বিবাহিতদের জন্য আতঙ্ক বা হার্ট অ্যাটাকের কারণ হওয়া অসম্ভব না।

মুহিব-মুহিতঃ ত্রুটি ধরা পড়ার পর কয়েকবার রিভিশন দিয়ে ঠিক করার চেষ্টা করেছিলাম। এর পরেও এটা আমার চোখ এড়িয়ে গিয়েছিলো। এখন বদল করে দিলাম। এত খুঁটিয়ে পড়ার জন্য এবং ১৯ তম লাইকের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

৩৪| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:৪৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রতিমন্তব্যগুলো চমৎকার হয়েছে। কয়েকটা মন্তব্যও।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৮

মা.হাসান বলেছেন: দুঃখিত , ভুল বশতঃ এই মন্তব্যটি স্কিপ করে গিয়েছিলাম।

সহব্লগাররা ভালোবেসে পড়েন এবং কমেন্ট করেন, এই জন্যই আবার লেখার উৎসাহ পাই। পাঠক আর কমেন্ট না থাকলে পোস্টের আর কি ই বা বাকি থাকে। আমার পছন্দের লেখক ও পাঠকদের মধ্যে আপনিও একজন।

অশেষ শুভকামনা।

৩৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:৫৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমার পছন্দের লেখক ও পাঠকদের মধ্যে আপনিও একজন" - অশেষ ধন্যবাদ, জেনে প্রীত হ'লাম।
আপনার ইমেইল ঠিকানায় একটা মেইল দিয়েছিলাম। পেলেন কিনা বুঝলাম না।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৩২

মা.হাসান বলেছেন: মার্কেটিং মেইল ছাড়া কোনো মেইল তেমন একটা পাই না বলে মেইল চেক না করাটাই একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে । এই মাসে একবারও মেইল চেক করা হয় নি। আপনার মন্তব্য না পেলে হয়তো এই মাসে মেইল চেক করে দেখাই হতো না। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য অত্যন্ত দুঃখিত, আমাকে স্মরণ করায় অশেষ কৃতজ্ঞতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.