নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\n

মা.হাসান

মা.হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিএমসিএইচ-এ কয়েকদিন -১ম পর্ব

০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:২৪



সাত মার্চ, সকাল১:৩০। শোয়ার আয়োজন করছি, এই সময়ে কাজিনের ফোন। তার সাত মাসের গর্ভবতী স্ত্রীর হঠাৎ ব্লিডিং হচ্ছে। ভদ্র মহিলা শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। রাত ১২টার দিকে ব্লিডিং শুরু হওয়ার পর পরই ডাক্তারকে ফোন দেয়া হয়েছিলো। ডাক্তার সময় নিয়ে সব শুনে জানিয়েছেন- সকাল ন'টায় উনি দেখবেন। এই মুহূর্তে কাছাকাছির কোনো ক্লিনিকে যেয়ে তেমন লাভ হবে না, সাপোর্টিং যন্ত্র বা স্টাফ কোথাও নেই।

আমরা দুজনেই কাছাকাছি এলাকায় ভাড়া থাকি, ৩০০ মিটারের মতো দূরত্ব। বাসা থেকে বের হয়ে দু ভাই মিলে আলাপ করে আরো দুজন কাজিনকে ফোন দিলাম, ওনারাও স্বাস্থ্য সেবার সাথে জড়িত। ওনারাও বললেন ডাক্তারের পরামর্শ শুনতে। এক ভাবি মিডওয়াইফ। উনি ইতস্ততঃ করে বললেন দুটা ইঞ্জেকশন দিতে পারলো ভালো হতো। বড় ডাক্তার যেহেতু বলেছে, সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা যেতে পারে।

আমি কিরপিন মানুষ। ট্যাপ থেকে ফোটায় ফোটায় সারা রাত পানি পড়ে মগ ভরে যাবার দুশ্চিন্তায় ভালো ঘুম হয় না। ফোটায় ফোটায় রক্ত পড়লেও সকাল পর্যন্ত যা ব্লিডিং হবে তাতে মা আর পেটের বাচ্চা কতটা নিরাপদ থাকবে তা নিয়ে আমার কিছুটা দুশ্চিন্তা হচ্ছে। বললাম চলো, ঢাকা মেডিক্যালে যাই।

কাজিনের প্রতিবেশি ভদ্রলোক (উনি কাজিনের ডাক শুনে সাথে সাথে বের হয়ে এসেছিলেন) বললেন ঢাকা মেডিক্যাল নিয়ে ওনার অনেক অভিজ্ঞতা, কোনোটাই সুখের না। কাজিন বললো- অন্য কোনো প্রাইভেট ক্লিনিকে যাওয়া যায় না? আমি বললাম- কয়েক লাখ টাকা খরচ করতে পারলে স্কয়ার বা ইউনাইটেডে যাওয়া যায়। এর বাইরের কোথাও আদৌ কোনো সার্ভিস পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ আছে। রাতে কোনো কোনো ক্লিনিকে একজন জুনিয়র ডাক্তার ঘুমায়, কোথাও আবার তাও নাই।

বাসা থেকে দুশ মিটার দূরে একটা মাঝারি মানের ক্লিনিক, কাজিনের সাথে ওখানে গেলাম। সৌভাগ্যক্রমে ওখানে একজন মহিলা ডাক্তার আছেন। উনি শুনে বললেন এই হাসপাতালের ঐ রকম জরুরি সেবা দেওয়ার মতো অবস্থা নেই। ঢাকা মেডিকেলে নেওয়াই শ্রেয়। সব বিবেচনা করে ঢাকা মেডিকেলের জন্য কাজিন রাজি হয়ে গেল।

ক্লিনিকের রিসিপশনিস্ট বললো অ্যাম্বুলেন্স পাওয়া যাবে তবে ২০০০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। দূরত্ব মাত্র সাত কিলো মিটার, ১২০০ টাকা নেয়া যায় কি না জিজ্ঞাসা করতে রিসিপশনিস্ট বললো না অত কম হবে না। ২০০০ টাকায় রাজি থাকলে ড্রাইভারকে ফোন করে বাসা থেকে আনাবে। অর্থাৎ আরো এক ঘন্টার ধাক্কা। ভরসা উবের।

উবের চালক খুব ভালো মানুষ। যত্নের সাথে নিয়ে আসলেন, চেষ্টা করেছেন যতটা কম ঝাঁকি লাগে তার জন্য। ২:৪৫ এ হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে চলে আসলাম। পত্রিকায় পড়েছি হাসপাতালের গেটে দালাল দাড়িয়ে থাকে, রুগিকে ক্লিনিকে ভাগিয়ে নেবার জন্য। সৌভাগ্য, সেরকম কিছু চোখে পড়লো না। ভিতরে ঢুকে ট্রলি খোঁজার জন্য কর্তব্যরত আনসারদেরকে জিজ্ঞাসা করলে ওনারা জানালেন গেটের ঠিক বাহিরেই ট্রলি আছে।

গেটের মুখে ট্রলি পয়েন্টে সেবা দেয়ার জন্য ট্রলি বহনকারীরা ট্রলি সহ দাড়িয়ে আছেন। বললেন- অবশ্যই নিয়ে যাব, আপনারা চাইলে খুব ভালোভাবে রোগীকে নিয়ে যাব, যেভাবে বলবেন সেভাবে নিয়ে যাবো, সব কিছু হেল্প করবো। আমাদের দিকটাও একটু দেখতে হবে । আর যদি বলেন না, তাহলে অন্য রকম ভাবে নিয়ে যাব। নিজেদের অসহায় অবস্থা ব্যক্ত করে বললাম আমরা এখানে নতুন, কিছুই জানি না বা বুঝি না, আপনারা আমাদের একটু সাহায্য করেন। আমরা আমাদের পক্ষে যা সম্ভব করব।

প্রথম কাজ ট্রলিতে কাজিনের ওয়াইফকে শোয়ানো। ট্রলি ভদ্র মহিলার তুলনায় অনেক উচু। গর্ভাবস্থায় তার পক্ষে ট্রলিতে বসা অসম্ভব । টুল বা উচু পিড়া জাতীয় কিছু লাগবে, কিন্তু তা নেই। অবশেষে ট্রলিম্যানের পরামর্শে মইতে চড়ার মত করে ট্রলির নাট বল্টুতে পা রেখে কাজিনের ওয়াইফ হাচড়ে পাচড়ে ট্রলিতে চড়ে শুয়ে পড়লো।

ট্রলিম্যান বললো টিকিট কাটতে হবে। কোথায়? গেটের পাশেই। কাজিনকে ট্রলির পাশে রেখে ট্রলিম্যান সহ কাউন্টারে টিকিট কাটতে আসলাম। আমার আগের জনের সাথে ১৫ টাকা আর ৫ টাকার ভাংতি নিয়ে বসচা চলছে। নাম এবং বয়স বলার পর ভাংতির আশা না করে , কুড়ি টাকার নোট বাড়িয়ে দিলাম। কাউন্টারের ভদ্রলোক কোন ফেরত না দিয়ে একটা স্লিপ ধরিয়ে দিলেন।

ট্রলি ম্যান বল্লো ১ নম্বর রুমে যেতে হবে। এক নম্বর রুমে অবস্থা ব্যাংকের স্ট্রং রুমের মত। লোহার শিকের ওপাশে একজন লোক বসে আছেন। লেখা আছে পদবী ডাক্তার, কিন্তু দেখে সেরকম মনে হচ্ছে না। ওনাকে ট্রলিম্যান বললো নয় নম্বর লিখে দেন। উনি নয় নম্বর লিখে দিলেন।

নয় নম্বর রুমে একজন গাইনি বিষয়ে অভিজ্ঞ মহিলা ডাক্তার বসে আছেন। উনি রুগি দেখলেন না, তবে সময় নষ্ট না করে অল্প কথায় খুব জরুরী কয়েকটা প্রশ্ন করে লিখে দিলেন - ২১২ তে ভর্তি করতে হবে। ট্রলিম্যান বললো, চলেন আবার টিকেট কাউন্টারে যেতে হবে। বুঝলাম আগেরটা ছিল ডাক্তারের পরামর্শের টিকেট, ভর্তি করানোর জন্য আলাদা টিকেট লাগবে।

আবার টিকেট কাউন্টারে। আগেরবার ভালোকরে দেখা হয় নি। এবার একটু তাকিয়ে দেখলাম। তিনটা চেয়ার। তিনটা মনিটর। দুজন লোক বসে আছেন। একজন মনিটরে বাংলা নাটক দেখতেছেন আর ফিচ ফিচ করে হাসতেছেন। ট্রলিম্যান কাউন্টারের লোককে বললো- ভর্তি করতে হবে। উনি বললেন টাকা দেন।
-কতো?
-কার্ড সহ ২৩০ টাকা। কার্ড নাই, কি দিবেন দ্যান।

আমিতো ক্যাশে পেমেন্ট করবো। সরকারি হাসপাতালে কার্ডে পেমেন্ট নেয়ার কথা না। কার্ড সহ ২৩০ এর অর্থ বুঝলাম না। ভাংতি পাবো না। কাজেই পকেট থেকে গুনে গুনে ২৩০ টাকা বের করে দিলাম। আমাকে অবাক করে দিয়ে উনি মাত্র ১০০ টাকা নিয়ে বাকি টাকা ফেরৎ দিলেন। বিশাল এক বালাম খাতা বের করে রোগির নাম সিরিয়াল নম্বর এন্ট্রি করে একটা লম্বা ফুলস্কেপ সাইজের কাগজ আমাদের হাতে ধরিয়ে দিলেন। কম্পিউটার গুলোর কোনো কাজ দেখলাম না। মনে হয় নিজেদের পয়সায় কিনে এনে লাগিয়েছেন, যখন চাপ কম থাকে তখন নাটক-সিনেমা দেখার জন্য।

(পরে দিনের আলো ফুটলে এই জায়গা আবার ঘুরে দেখে গিয়েছি। প্রথম টিকেটের দাম ১০ টাকা। ২য় টিকেটের দাম ১৫ টাকা। ২০০ টাকা জমা দিতে হয় অ্যাটেনডেন্ট পাসের জন্য। পাস ফেরত দিলে টাকা ফেরত দেয়া হয়। কিন্তু অনেক দিন ধরেই অ্যাটেনডেন্ট পাস সরবরাহ নেই। কিসে কত টাকা লাগবে এটা দেয়ালে লেখা আছে। তবে রাতের বেলা এমন জায়গায় বাল্ব জ্বালানো হয় যে ঐ লেখা দেখা সম্ভব হয় না।)

ট্রলিম্যান বললো আবার ১ নম্বর রুম। আবার সেই ডাক্তার। উনি এবার হায়ারোগ্লিফিক ফন্টে কিছু লিখে দিলেন। ট্রলিম্যান বললো ভর্তি হয়ে গেছে। পরের গন্তব্য ২১২ নম্বর ওয়ার্ড।

গেট থেকে ওয়ার্ড পর্যন্ত প্রায় পাঁচ মিনিটের পথ। গোটা সময়টা ট্রলিম্যান এই কথা বলতে বলতে আসলেন- তিনি দয়া করে আমাদেরকে হেল্প করছেন, এতক্ষণ সময় আমাদের সঙ্গে না থেকে আরো দুই তিনটা রোগী দেখলে সেখান থেকে কমপক্ষে ৫-৬ হাজার টাকা আয় হতো। যারা ভদ্র লোক তারা এমনকি কেউ কেউ দশ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়ে থাকেন। এত সময় কোনো রোগির সাথে তারা থাকেন না। আমাদের দেখে তাদের ভদ্র লোক মনে হয়েছে বলেই এত সময় দিচ্ছেন। ইত্যাদি ইত্যাদি।

দুই জন ট্রলিম্যান ট্রলি ঠেলে হাসপাতালের উত্তর-দক্ষিণ করিডোরের মাঝ বরাবর এসে লিফটে করে দোতালায় এনে ২১২ নম্বরে চলে আসলেন। গেটের ঠিক মুখেই বড় বড় করে লেখা- গাইনি ওয়ার্ড। পুরুষ প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষেধ। পাশে লেখা- নন কোভিড ওয়ার্ড । অর্থাৎ যাদের কোভিড আছে তাদের জন্য আলাদা কোনো ওয়ার্ড আছে ।এখন পর্যন্ত কেউ তো জানতে চাইল না রোগির করোনা আছে কি না। সে যাক গে, আগের কাজ আগে।

তাড়া দিয়ে ট্রলিম্যান আমাদেরকে ভিতর নিয়ে গেলেন। শুধু আমরা দুজনই ওয়ার্ডে পুরুষ না , ভেতরে আরো অনেক পুরুষ আছে। করিডোরে অনেকে মাদুর বিছিয়ে শুয়ে আছেন, কেউ ঘুমাচ্ছেন, কেউ বসে আছে আছেন, কেউ দাড়িয়ে আছেন। করিডোর পার হতেই ওয়ার্ড। অনেক রোগী কাতরাচ্ছেন, নার্সরা পুরুষ ভিজিটরদের মাঝেই রোগীদের কাউকে কাউকে প্রায় উলঙ্গ করে পরীক্ষা করছেন । এই ওয়ার্ডের পরে আরেকটা করিডোর। তার ডান পাশে অবজারভেশন পয়েন্ট । ট্রলিম্যান আমাদেরকে অবজারভেশন পয়েন্টে নিয়ে আসলেন।
২১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইরের করিডোর।

ট্রলি থেকে বেডে ট্রান্সফার করতে হবে। কি উপায়? চালের বস্তার মতো করে রুগিকে তুলে ট্রলি থেকে অবজারভেশন পয়েন্টের বেডে ফেলা হলো। এখন বাজে তিনটা। সম্পূর্ণ অপিরিচিত পরিবেশে ট্রলিম্যানদের সহযোগিতা ছাড়া এত দ্রুত এখান পর্যন্ত কোনোভাবেই আসতে পারতাম না। কাজিন ওনাদের ২০০০ টাকা দিলেন। ওনারা জানালেন আমদেরকে ওনাদের খুব ভালো লেগেছে, কাজেই ৪০০ টাকা ফেরৎ দিয়ে ১৬০০ টাকা নিয়ে চলে গেলেন।

নার্স হাতে একটা স্লিপ ধরিয়ে দিলেন। ক্যাথাটার, ইউরো ব্যাগ আর সিরিঞ্জ কিনতে হবে। গেটের কাছেই ওষুধের দোকান। রওনা হলাম। ইমার্জেন্সির লিফটের কাছে দেখি এক অল্প বয়সি মহিলা, একা , সামনে সাদা চাদরে ঢাকা ট্রলি। মহিলার কান্নার শক্তিও শেষ হয়ে পড়েছে মনে হলো। ওষুধ নিয়ে ফেরার পথে দেখি উনি ফোনে আত্মীয়-স্বজনদের আসতে অনুরোধ করছেন। এখানে যারা থাকে তাদের এসব গা সওয়া। কার কাছে যেনো শুনেছিলাম দিনে ২০-২৫টা মৃত্যুর ঘটনা এখানে ঘটে। স্বজন হারাদের সান্তনা দেয়ার জন্য হাসপাতালে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ মনে হয় নেই।

ওষুধ নিয়ে এসে দেখি চিকিৎসা চালু হয়ে গেছে। ইঞ্জেকশন পড়েছে, স্যালাইন চালু হয়েছে। একজন রুগির দেখলাম হিস্টিরিয়ার মতো আছে। ঘড়ি ধরে দেখলাম, ঠিক চার মিনিট দশ সেকেন্ড পর পর চেচিয়ে উঠছে- আমাকে তোরা মরতে দিস না, আমারে তোরা বাঁচা। এখানকার পরিবেশ আমার কাজিনের ভালো লাগছে না। বললো- ভাই , এখন অন্য কোথাও নেয়া যায় না? আমি বল্লাম- হাতে লাখ পাঁচেক থাকলে চলো, স্কয়ারে যাই, পরিবেশ এর চেয়ে ভালো, চিকিৎসা এর চেয়ে বেশি হবে না। কাজিন বললো- ঠিক আছে, সকাল হোক, তার পর ট্রান্সফার করার চেষ্টা করবো।

কিছু বিশাল মোটাসোটা মহিলা এপ্রোন পরে ঘোরাঘুরি করছেন। নার্সরা গরিব ঘরের লোক, এত মোটা হওয়ার কথা না। জানা গেল এনারা এফসিপিএস ছাত্র। পেসেন্টের সঙ্গে যত রকমের উপহাস করা যায়, বিদ্রূপ করা যায় করছেন এবং এত অশ্লীল কথা বলছেন যে বিশ্বাস করা মুশকিল। নাসরা চুপচাপ সহ্য করছেন।

এরমধ্যে নার্সরা একটা স্লিপ ধরিয়ে দিয়ে গেলেন। তিন ব্যাগ রক্ত লাগবে। পাশের টেবিলে বসা আনসার সদস্য খুব আগ্রহ নিয়ে এসে বললেন- রক্ত যোগাড় করে দেয়া যাবে কোনো সমস্যা না। আমি বললাম - ধন্যবাদ, আমাদের রক্ত রেডি করা আছে, লাগবে না। উনি মনমরা হয়ে ওনার জায়গায় চলে গেলেন।


কাজিনকে বললাম, পেশাদার ডোনারদের রক্ত নেয়ায় কিছু সমস্যা আছে। তুমি ভাগনাকে ফোন দাও। এক ভাগনা বাঁধন (রক্ত দানকারি সংস্থ)-এর সাথে জড়িত । আরেক ভাগনার গ্রুপ রোগির সাথে মিলে যায়। কেউই ফোন ধরছে না। কাজিনের শশুর সাথে আছেন। ওনার গ্রুপ ম্যাচ করে। ওনাকে নিয়ে রওনা দেই । ট্রান্স ফিউশন সেন্টার, ব্লাড ব্যাংক এবং রক্ত পরীক্ষা পাশের বিল্ডিঙে (নাম নতুন বিল্ডিং)।

ট্রান্সফিউশন সেন্টার ২৪ ঘন্টা খোলা। রাতে ভিড় কম বলে কর্তব্যরত লোক চেয়ারে নেই। মনে হলো ঘুমাতে গেছে (পরে বুঝেছি, রাতে লোক কম থাকে, বিভিন্ন টেস্ট ওনাদেরই করতে হয়, চেয়ার এবং ল্যাব দুটাই ম্যানেজ করেন ওনারা)। দরজায় নক করতে এসে স্লিপ কাটার সময়ে ডোনারের নাম, বয়স জিজ্ঞাসা করলেন। বয়স ষাটের উপরে শুনে বললেন- হবে না। পঞ্চাশের নিচের ডোনার নিয়ে আসেন।

ফোনের পিডমিটার দেখাচ্ছে ৯০০০ স্টেপের ওপর , সাড়ে ছয় কিলোমিটারের মতো হাঁটা হয়ে গেছে। ভাগনারা কেউ ফোন ধরছে না। আনসারের সাথে কাজিন এবং তার শশুর দুজনেই কথা বলে ফেলেছেন। মাত্র ২০০০ টাকা করে ব্যাগ রক্ত । এখনই পাওয় যাবে। আমি বোঝানোর চেষ্টা করলাম, বেশিরভাগ ডোনার নেশাখোর। অসুখের ঝুঁকি আছে। তাছাড়া নিয়মিত রক্ত দেয় বলে এদের রক্তে হিমোগ্লোবিন কম। জীবন-মৃত্যুর অবস্থা ছাড়া এদের কাছ থেকে রক্ত নেয়া যাবে না।

আত্মীয়স্বজনদের অনেককেই ফোন করা হচ্ছে কেউ ফোন ধরছে না। আজকাল নিয়মিত ভাবেই দিন রাত ৩ বা ৫ ডিজিটের অচেনা নাম্বার থেকে ফোন করে রেকর্ডেড ভয়েসে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের কথা শোনানো হয়। নিরুপদ্রব নিদ্রার জন্য পরিচিত অনেককেই দেখেছি রাতে ফোন সাইলেন্ট করে রাখতে । সম্ভবত এরকম কিছু হয়েছে

যে ভাগনার রক্তের গ্রুপ ম্যাচ করে সে একটা হোস্টেলে থাকে। হোস্টেল সুপার কে ফোন দেওয়া হল। উনি ভাগনাকে জাগিয়ে দিলেন। ভোর সোয়া পাঁচটা । ভাগনা জানাল সে আসছে। এর মধ্যে আরো কয়েক দফা ওষুধের দোকান, রক্ত পরীক্ষাগার দৌড়া দৌড়ি। পোনে ছয়টা বাজে। ফজরের সময় হয়ে গেছে। প্রায় এক বছর পর মসজিদে আসলাম। আগে এই এলাকায় পানির কঠিন সমস্য দেখেছি। এখন মসজিদে পানির সরবরাহ স্বাভাবিক দেখলাম। খুব ভালো লাগলো।



ওয়ার্ডের দরজায় নূরানী চেহারার এক ভদ্রলোকের পোস্টার ; নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। চেহারা দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। ওয়ার্ল্ডের করিডোরে হাঁটাহাঁটি করি । অনেকগুলা জায়গায় ছোট ছোট বাবুদের ছবি বাঁধাই করে রাখা আছে। নিচে খুব বড় করে বিভিন্ন সতর্কবাণী- বাচ্চাদেরকে নিয়ে সতর্ক থাকবেন, বাচ্চা চুরি হওয়ার আশঙ্কা আছে ইত্যাদি। গাইনি ওয়ার্ড এর আশেপাশে অন্তত ৩০-০ জায়গায় এরকম লেখা দেখেছি। এর পরেও মানুষ অপরিচিত লোকের কোলে বাচ্চা দিয়ে এদিক সেদিক যায়, বাচ্চা চুরি হয়।



এদিক ওদিক হাঁটাহাঁটি করি। নতুন এক জাতের তেলাপোকা দেখলাম। লম্বায় এক ইঞ্চির মতো হবে, কিন্তু খুব সরু। মনে হয় হাসপাতাল ভ্যারাইটি। কিডনি হাসপাটালেও এরকম একটা তেলাপোকা দেখেছিলাম, তবে ওগুলো আরো ছোটো, রঙও এর চেয়ে উজ্বল। করিডোরের সামনে হসপিটাল ওয়েস্টের নির্ধারিত জায়গা আছে, তবে বাস্কেট গুলো হারিয়ে গেছে।




সকাল ৬-৩০। ভাগনা চলে এসেছে। ট্রান্সফিউশন সেন্টার ভাগনাকে নিয়ে চলে গেলাম। নির্ধারিত ফি দিয়ে রক্ত দিয়ে আসলাম। খুব বেশি খরচ না, ব্যাগের জন্য একশ টাকা, স্ক্রিনিং-ক্রস ম্যাচিংয়ের জন্য সাড়ে তিনশ। মোট সাড়ে চারশ টাকা। দেড় ঘন্টা পর ক্রস ম্যাচিং এবং স্ক্রিনিং শেষে রক্ত ফেরত নিয়ে আসতে হবে। ভাগনাকে নাস্তা করাতে নিয়ে গেলাম মেডিকেলের গেটে । খাবার-দাবার যা ভেবেছিলাম তারচেয়ে অনেক সস্তা। একটা সিদ্ধ ডিম মাত্র ১০ টাকা নাস্তা।


অবজারভেশন পয়েন্টের পাশের করিডরে দাড়িয়ে আছি। এর মধ্যে কয়েকবার এসে নার্স রক্তের জন্য তাড়া দিয়ে গেছে। খুব কম বয়স্ক ভদ্রলোক এসে সুন্দরভাবে বললেন এখানে দাঁড়ানো যাবে না, বাইরে চলে যান । পরিচয় জিজ্ঞাসা করতে বললেন উনি হাসপাতালের লোক। আমি বললাম- আরেকটু স্পেসিফিকভাবে বলেন। ডাক্তার, নার্স, ওয়ার্ড বয় - আপনার পরিচয় কি? উনি বললেন- আমি দাদু। দাদু? হাসপাতালে এই নামের পোস্ট আছে নাকি? আমার কথায় দাদু ভীষন মাইন্ড করলেন, তবে আবারো ভদ্র ভাবেই বাইরে যেতে বললেন। যাহোক, কাজিনকে ভিতরে রেখে আমি ওয়ার্ডের বাইরে এসে দাড়াই।

অবজারভেশন পয়েন্টের নার্সরা জানিয়ে দিলেন রোগীকে আর অবজারভেশন পয়েন্টে রাখার প্রয়োজন নেই, এখান থেকে ওয়ার্ডে ট্রান্সফার করতে হবে। কিন্তু ওয়ার্ডে কোনো খালি বেড নেই এ কথা নার্সদের জানাতে ওনারা বললেন কিছু করার নেই, প্রয়োজনে ওয়ার্ডে এক বেডে দুইজন থাকতে হবে, কিন্তু অবজারবেশন পয়েন্টে আর রাখা যাবে না।

ঢাকা মেডিকেলে এটা আমার তৃতীয় দফা আগমন। দ্বিতীয়বার এসেছিলাম ২০০৫, চাকরির বাধ্যতামূলক শারীরিক পরীক্ষার জন্য। প্রথমবার এসেছিলাম ১৯৯৩/৯৪ এর দিকে, বড় ভাই অসুস্থ হয়ে ভর্তি ছিলেন। দুইবারই দেখেছি বেডে জায়গা না পেয়ে রোগীদের মেঝেতে শুতে হচ্ছে। এখন অনেক উন্নয়ন হয়েছে; মেঝেতে আর রোগীকে থাকতে হয় না । ৩ ফিট বাই ৬ ফিট সাইজের বেডে প্রয়োজনে রোগীদের ডাব্লিং করতে হয়। ঢাকা মেডিক্যালে অফিশিয়ালি বেড়ের সংখ্যা আড়াই হাজারের মতো। নিয়মিত ভাবেই চার হাজারের কাছাকাছি রোগি ভর্তি থাকে। তিন হাজারের মতো রোগিকে ডাব্লিং করতে হয়।

কাজিনের মাথা একেবারে খারাপ হয়ে গেল। পারলে এখনি রোগীকে এখান থেকে নিয়ে অন্য কোন হাসপাতালে ট্রান্সফার করে। আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি, এভাবেই হাজার হাজার মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছে, আমাদেরও নিতে হবে। রুগি ট্রান্সফার না করাই ভালো।

কাজিনের ওয়াইফ যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্তাবধায়নে ছিলো, কাজিন ওনাকে ফোন দিয়ে পরিস্থিতি জানালে উনি ধৈর্য ধরে সব শুনে ধমক দিয়ে বললেন- একদম ঠিক চিকিৎসা চলছে। পেশেন্টকে এই মুহূর্তে নড়ানো যাবে না।

নার্সরা এর মধ্যে অন্য রোগী নিয়ে ব্যস্ত, ওয়ার্ডে ট্রান্সফার করার কথা ভুলে গেছেন মনে হয়। এর মধ্যে একাধিক বার ব্লাড ট্রান্সফিউশন সেন্টার ঘুরে এসেছি। অবশেষে আটটার আগে আগে রক্তের স্ক্রিনিং-ক্রসম্যাচিং শেষে রক্ত পাওয়া গেলো। আটটার আগেই প্রথম ব্যাগ রক্ত দেয়া শুরু হয়ে গেলো। পিডোমিটারে দেখাচ্ছে ১৫০০০ স্টেপের কিছু বেশি, প্রায় ১১ কিলোমিটার হাঁটা হয়ে গেছে।

আটটা বাজে। করিডোরে দাড়িয়ে আছি। নার্সদের শিফট চেঞ্জ হচ্ছে। এফসিপিএস স্টুডেন্টদের মতো গাব্দাগোব্দা না, বেশিরভাগ নার্সই হালকা পাতলা গড়নের। পোশাক দেখেই বোঝা যায়, বড়লোক পরিবার থেকে কেউ নার্সিং পেশায় আসে না। নার্সদের মাথায় দেখলাম দুই রকমের ক্যাপ- গোলাপি মতন আর সবুজ মতন। বয়স দেখে অনুমান হয় প্রথম গ্রুপ শিক্ষানবিস বা জুনিয়র, দ্বিতীয় গ্রুপরা অনেক সিনিয়র।

ভর্তির প্রায় সাড়ে পোনে ছ ঘন্টা ঘন্টা পর, নতুন শিফট শুরুর ৪৫ মিনিট পর, ৮:৪৫ মিনিটে আমাদের জানানো হলো- আল্ট্রা সনোগ্রাম করা হয়েছে, রেজাল্টে দেখা যাচ্ছে রুগির প্লাসেন্টা ছিড়ে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে সি-সেকশন অপারেশন করা লাগবে।

ডিএমসিএইচ-এ কয়েকদিন- ২য় পর্ব



প্রথম ছবি বিডিনিউজ২৪ থেকে নেয়া, বাকি গুলো আমার তোলা।
একজন রোগির স্বজন কি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায় বোঝানোর জন্য প্রথম দিনের বিবরণ বিস্তারিত দেয়া হচ্ছে। ২য় দিনের বর্ননা থেকে বাহুল্য বর্জন করে লেখা শুরু হবে

মন্তব্য ৪৮ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৪৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৮

ওমেরা বলেছেন: আপনার লিখাটা পড়ে আমার কি যে কষ্ট লাগলে , বুঝতে পারবো না । দেশের সরকারী বা বেসরকারী হাসপাতাল গুলোর অবস্থা সত্যি খুব খারাপ ।একজন ইমার্জেন্সি রোগীর যদি এই অবস্থা হয় তাহলে সাধারন রুগীদের কি অবস্থা!!
এই রকম পরিস্থিতিতে স্বজনদের অবস্থা কেমন হয় , সেটা খুব ভালো করে জানি । আমার আম্মুর অসুস্থতার সময় খুব দেখেছি ।

সেই সাথে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে এমন দেশে থাকি , এ্যাম্বুলেন্স কল করলে ৫ মিনিটে এসে হাজির , প্রাথমিক চিকিত্সা করবে এ্যান্বুলেন্স নার্স তার পক্ষে যতটুকু সম্ভব , বাকীটুকু হাসপাতালে সেই জানাবে , দশ মিনিটে হাসপাতালে পৌছে দেখবেন আপনাকে ওয়েলকাম জানানোর জন্য ডাক্তার , নার্স সব অপেক্ষা করছে , নিজেকে তখন রোগী না ভি আই পি মনে হবে ।
আশা করি শেষ পর্যন্ত খারাপ কিছু হয়নি ।

০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১২

মা.হাসান বলেছেন: মন খারাপ করবেন না। মানুষ খুব সহজে পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। আমাদের সীমিত সম্পদ দিয়ে ডাক্তাররা যেভাবে সেবা দেন তাতে ওনাদের অনেকেরই পায়ে হাত দিয়ে সালাম করা যায়। খারাপও অনেকে আছেন। সব মিলিয়েই আমাদের জীবন।
আর সুইডেনের চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে যা বললেন তার কতটা সত্য আর কতটা গুল সেই সন্দেহ রয়েই গেল। আমরা জানি আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা বিশ্বমানের । ডোনাল্ড ট্রাম্প যে চিকিৎসা পায় আমরাও একই চিকিৎসা পাই। আপনি হয়তো হিংসা থেকে বানিয়ে বানিয়ে কিছু বললেন। আমি মাইন্ড করি নি।

আল্লাহর রহমতে বাচ্চা বাচ্চার মা সকলেই এখন সুস্থ, ২০ তারিখে সকলে বাসায় চলে এসেছি ।

২| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:১৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



দাদুঃ মেডিকেল কলেজে দাদু একটি বেতন বিহীন পদবি। ডাক্তার নার্স ও মেডিকেল কলেজের ইউনিট কমিটি থেকে তাদের বেতন দেওয়া হয়। তবে এদের আয় ভালো।

মেডিকেল কলেজে সকল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কমান্ডার - কোনো না কোনো কিছুর কমান্ডিং করছেন। আর মেডিকেল কলেজের এমন হাল অবস্থা যে উক্ত কমান্ডো ছাড়া রোগী নিয়ে মুভমেন্ট করা কঠিন।

আমার দেখা ও জানামতে সরকারি মেডিকেল কলেজে রোগী নিয়ে প্রচুর কষ্ট তবে চিকিৎসা নিতে পারলে বেস্ট চিকিৎসা মেডিকেল কলেজ থেকেই নেওয়া সম্ভব। বেসরকারি হসপিটালে রোগী নিয়ে গেলে ত্রিশ মিনিট পর পর পাঁচ ডিজিটের পে পেপার হাতে ধরিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তব্যরত অফিসার।

ভালো অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

মা.হাসান বলেছেন: ধন্যবাদ ঠাকুরমাহমুদ ভাই। দাদুর বিষয়টা ঐদিনে আগে জানা ছিলো না, পরে জেনেছি।

যদিও কিছু পয়সা খরচ হয়েছে, তবে বলবো ট্রলিম্যান সহায়তা না করলে সিস্টেম এবং লোকেশন না জানা থাকার কারণে ঐ দিন অনেক ভুগতে হতো। পরের কয় দিনও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারিদের কাছ থেকে অনেক সাহায্য নিতে হয়েছে।
সম্ভবত পিজির সাবেক ভিসি ডাঃ কনক বড়ুয় কিছুদিন আগে বলেছিলেন- ঢাকা মেডিক্যাল হলো মায়ের মতো, কাউকে ফিরিয়ে দেয় না।

আমার এক পরিচিত ভদ্রলোক তার বাচ্চা মেয়ের হাতের আঙুলের ফ্র‌াকচার নিয়ে তেজগাওয়ের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে যাবার পর কয়েক ঘন্টার চিকিৎসা ও অবজারভেশন শেষে ৮৮ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেয়া হয়েছিলো।

ইমার্জেন্সি রোগির জন্য এখনো ঢাকা মেডিক্যালই ভালো। অন্য সাধারণ চিকিৎসার জন্য সাধ্য মতো যায়গায় যাওয়া ভালো হবে বলে মনে করি।

৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ।অছে
স্বাস্থ্য মন্ত্রী আছে
প্রতি, উপ কত কিছু আছে...

গালভরা প্রতিশ্রুতি আর অন্তহীন স্বপ্ন আছে ---------------------

শুধু বাস্তবে নেই নূন্যতম স্বাভাবিকতাটুকু!!! :((

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৯

মা.হাসান বলেছেন: স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নিজ স্বাস্থ্য খারাপ। ডাঃ জাহেদ মালিক ওনার ছেলেকে উপস্বাস্থ্য মন্ত্রি করলে ভালো হয়। এই পোস্টে এর চেয়ে বেশি বলতে চাচ্ছি না।সৈয়দ মুজতবা আলীর সিনিয়র মোস্ট অ্যাপ্রেন্টিস গল্পের সাথে নিজেদের মিল পাই সব সময়।

সতত শুভেচ্ছা।

৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:২৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: একটি রাজধানী শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়ে পুরাতন হাসপাতালটির কি ভয়ঙ্কর প্রশাসনিক চিত্র! চিকিৎসা হয়তো সেখানে ভাল হয়, কিন্তু চিকিৎসার অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ হাসপাতাল প্রশাসন দেখবে কে? ত হ'লাম,
আপনার রোগীর জন্য পোস্ট পাঠ শুরু করা থেকে অত্যন্ত মায়া লাগছিল এবং মনে মনে তার জন্য দোয়া করেছি। আপনার বর্ণনা অনুযায়ী একজন নারী এ সময়টাতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকে, যে কোন সময়ে যে কোন কিছু ঘটে যেতে পারে।
মধ্যরাতে একজন বিপদগ্রস্তের আহবানে যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, তা পাঠ করে খুবই অনুপ্রাণিত বোধ করলাম।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৮

মা.হাসান বলেছেন: আমার জানা মতে একজন ব্রিগেডিয়ার ওখানকার প্রশাসনের হেড। উনি সৎ মানুষ, তবে সিস্টেমের কাছে অসহায়।

এমনকি উন্নত দেশেও ডেলিভারির সময়ে মৃত্যুর ঘটনা বিরল না। পশ্চিমা দেশগুলোতে নরমাল ডেলিভারিও ইমারজেন্সি হিসেবে দেখা হয়। এটি অত্যন্ত সংকটকালিন সময়। আমাদের দেশ অনেক সময়ে ইচ্ছা থাকলেও রিসোর্সের অভাবে ডাক্তাররা সেবা দিতে পারেন না। আর সেবা দিতে আগ্রহি নন এমন ডাক্তারও যথেষ্ট আছে।

যে খরচ গুলো হয়েছে তা আমার কাজিনের সামর্থের মধ্যেই ছিলো। কিন্তু ঐ হাসপাতালে একজন রিকশাওয়ালার স্ত্রীও সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। সামান্য কয়েকশত টাকাও তার কাছে বিরাট চাপ। দেখার কেউ যে নেই।

বিদেশ বিভুইয়ে একজন আরেকজনের পাশে না থাকলে ঢাকা শহরে টিকে থাকা যে মুশকিল।

মানবিক মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা। অশেষ শুভেচ্ছা।

৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪১

কল্পদ্রুম বলেছেন: অভিজ্ঞতা যথেষ্ট কষ্টদায়ক।তবে ২ নম্বর মন্তব্যের বক্তব্য আমারও।রোগী সুস্থ হয়েছিলেন?

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৯

মা.হাসান বলেছেন: জি, বাচ্চা এবং মা এখন বাসায়।

লোকবল কিছুটা দরকার, আর কষ্ট সহ্য করে মাটি কামড়ে থাকার মানসিকতা । রুগির জীবন বাঁচাতে এটুকু কষ্টতো করতেই হবে। পাঠ এবং সমবেদনামূলক মন্তব্যে অনেক কৃতজ্ঞতা।

৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫০

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: দেশের যে কোন জেলার হাসপাতালের জরুরী বিভাগে রোগী নিয়ে যাবেন। বেশির ভাগ সময় চিকিৎসা পাবেন না। তারা ঢাকা মেডিক্যালে ট্রান্সফার করে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করেন। তাদেরও কিছু করার নাই। কেবল ডাক্তার বা নার্স দিয়ে চিকিৎসা হয় না। ল্যাব লাগে। প্রয়োজনীয় বেড লাগে। প্রয়োজনীয় আরও অনেক সুবিধা লাগে। এই সব হাসপাতালে তার বেশির ভাগই নাই। এই অবস্থা বদলানোর জন্য কারো কোন মাথা ব্যথা নাই। সম্ভবত আমাদের জীবনে এই অবস্থা বদলানোর কোন সুসংবাদ পাব না।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৬

মা.হাসান বলেছেন: জি, ঠিক বলেছেন। স্কুলের বন্ধু এবং আত্মীয়-স্বজনের মাঝে যারা ডাক্তার তাদের কাছ থেকে বরাবর এই কথা শুনে এসেছি। থানা সদরের অধিকাংশ হাসপাতালের অবস্থা তেমন ভালো না। তবে বিশেষ করে পুরাতন কুড়িটা জেলা সদরের হাসপাতালের অবস্থা অপেক্ষাকৃত ভালো।
অবস্থা পরিবর্তন সম্পর্কে যা বলেছেন তাতে একমত। যারা অবস্থা পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন তারা চিকিৎসা নেন সিংগাপুর-থাইল্যান্ড-বিলাত-আমেরিকাতে। কাজেই অবস্থা পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম।
সতত শুভকামনা।

৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:২৬

ওমেরা বলেছেন: আলহামদুল্লিলাহ! খুশীর খবর শুনে, অনেক খুশী লাগলো ।
আগামী পোষ্টে তাহলে মিষ্টি নিয়ে আসবেন।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৯

মা.হাসান বলেছেন: বাসায় পিপড়া দেখিলে কিরপিন উহাকে পানির বোতলে ভরিয়া ঝাঁকাইয়া চা ছাকনি দিয়া ছাকিয়া খায়। কিরপিনের কাছে মিষ্টি আশা বৃথা। আপনি নিজে তো ভাল মিষ্টি বানান। বানাইয়া, খাইয়া, সেই ছবি শেয়ার করিতে পারেন; নজর দিবো না এমন কথা অবশ্য বলিতে পারিতেছি না। B-)

৮| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫০

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: আমার চাচা হার্ট অ্যাটাক করার পরে তাকে প্রথমে নারায়নগঞ্জের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাই। এরপর সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করে দেন। কর্তব্যরত ডাক্তার। অন্যের কাছে আগের শোনা নানারকম অভিজ্ঞতা মাথায় নিয়ে হয়রানির জন্য প্রস্তুত হয়েই সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো যা আশা করেছিলাম হলো তার উল্টো। ট্রলিবয়রা সাথে সাথে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে গেল, সেখান থেকে সিসিইউতে নিয়ে গেল এবং যাওয়া মাত্রই তিনজন ডাক্তার আমার চাচাকে রিসিভ করলেন। আর ট্রলিবয়রা মাত্র ১০০ টাকার বিনিময়ে সব কাজ করলো। আর কোথাও কোনো এক্সট্রা টাকা লাগে নি। দশদিনের টাকা দিয়ে ভর্তি করা হয়েছিলো, তিনদিনের টাকা ফেরতও দিয়েছে! আমার এখনো মাঝে মাঝে মনে হয় ওটা কোনো স্বপ্ন ছিলো না তো???

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৯

মা.হাসান বলেছেন: আপনি ভাগ্যবান। ডিএমসিতে আইসিইউ/সিসিইউতে সিট খালি পাওয়া কঠিন।
হু (WHO) এর গাইডলাইন অনুসারে একজন পেশেন্টের শোভন ব্যবহার পাওয়ার অধিকার আছে, কি সমস্যা হয়েছে জানার অধিকার আছে, কি চিকিৎসা অ্যাভেইলেবল, বিকল্প কি চিকিৎসা আছে, ওষুধের সাইড এফেক্ট কি এসব জানার অধিকার আছে। কি ট্রিটমেন্ট নেবে তা বাছার অধিকার (যেমন ফুল অ্যানসথেসিয়া না এপিডুরাল ইত্যাদি) আছে। পেশেন্টের প্রাইভেসি এবং কনফিডেনশিয়ািটি নষ্ট করা যাবে না। এরকম আরো অনেক সুন্দর সুন্দর কথা ঐ গাইডলাইনে আছে।
আমাদের ডাক্তার-পেশেন্ট রেশিও এত খারাপ যে এগুলোর অনেক কিছুই রক্ষা করা যায় না। আমার পরিচিত ডাক্তার আছেন যারা আউটডোরে নিয়মিত ভাবে দিনে ২০০র বেশি রোগিও এক সময়ে দেখেছেন। চাইলেও এখানে ভালো সেবা দেয়া কঠিন।
আবার অনেকের মানসিকতাও অন্য রকমের। ব্লগেই কিছুদিন আগে এই খাতের সাথে জড়িত একজন তার পোস্টে এক রুগির নাম ঠিকানা সহ এক্সরে ফিল্মের ছবি পোস্ট করেছেন। উন্নত দেশে এই কাজের জন্য ওনার লাইসেন্স বাতিল হয়ে যেতো।
ট্রলিবয় বা আয়ারা কেউই ধনি লোক না। কিছু টাকা দেয়া আমার বা আমার কাজিনের জন্য সমস্যা ছিলো না। তবে অনেক নিম্ন আয়ের লোকও এখানে আসেন। বর্ননার অতীত কষ্ট করেন। আশার কথা এই যে যত কষ্টই হোক না কেনো, অধিকাংশ রুগিই সুস্থ হয়ে ফেরেন। আপনার মতো ভালো অভিজ্ঞতা সকলের হোক এই প্রত্যশা করি।
সুন্দর অভিজ্ঞতার কথা শুনে খুব ভালো লাগলো।
অনেক শুভ কামনা।

৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে অথচ হাসপাতালের কি দশা!!!
রাত ১১ টার পর হাসপাতালে হাজার হাজার তেলাপোকা, ইঁদুর আর মশার এর খেলা চলে।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪৮

মা.হাসান বলেছেন: দেশ ঠিক পথেই আছে। বিরোধি দল ষড়যন্ত্রের কারণে মাঝে মাঝে কিছু সমস্যা হয়।
মশার জন্য হাসপাতাল কতৃপক্ষকে তেমন একটা দোষ দেয়া মনে হয় ঠিক হবে না। ডিএমসিতে স্বাস্থ্যবান বড় বড় বেড়াল দেখেছি, করিডোরে বা ওয়ার্ডের ভিতরে ইদুর চোখে পড়ে নি। বেসরকারি হাসপাতালের মধ্যে মিরপুর কিডনি হাসপাতালে হাজারে না, লাখে লাখে তেলাপোকা দেখেছি। কিডনি হাসপাতালের তুলনায় অন্তত এই ক্ষেত্রে ডিএমসি অনেক পিছিয়ে আছে। আশা করি ডিএমসি কতৃপক্ষ তেলাপোকার সংখ্যা বাড়ানোর উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে।
অনেক শুভকামনা।

১০| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১:১৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: হাজার সমস্যার ভিতর একটা গুরুতর সমস্যা হলো চিকিৎসা খাত। অথচ সবাই আছে কিভাবে নিরহের পকেট কেটে নিজের পকেট ভারী করা যায়

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৪

মা.হাসান বলেছেন: নেওয়াজ ভাই, চিকিৎসা সেবা যেরকম গুরুত্বপূর্ণ, গরীবি হঠানো তার চাইতে কম গুরুত্বপূর্ণ না। কেউ কেউ তো বড় লোক হচ্ছে, কারো কারো তো পকেট ভারি হচ্ছে, গরীব নেতারা নিজেদের গরীবি দূর করছেন; খারাপ কি? ম্যাঙ্গো পিপল কোন কালেই বা ভালো ছিলো?
নিজেকে সান্তনা দেয়ার জন্য আর কিছুতো বলার দেখছি না।
অনেক শুভ কামনা ।

১১| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনি দেশের উন্নয়নের জোয়ারের দিকে দৃষ্টি দেন তাহলেই এগুলি আপনার কাছে কোন সমস্যা মনে হবে না। :)

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:১২

মা.হাসান বলেছেন: জোয়ারের পরিমান বড্ড বেশি, আমি আবার সাতার জানি না; এই জন্য একটু সমস্যা।
সুলতানি আমল, ক্লাইভের সময়, পাকিস্তান বা তার পরের সময়- সাধারণ জনগন কবেই বা ভালো ছিলো? এখন বরং ঘরের টাকা ঘরেই থাকে (সুজারল্যান্ডে গেলেও ঘরের লোকের কাছেইতো থাকে), খারাপ কি ।
অনেক শুভকামনা।

১২| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দ্বিতিয় দিনের অভিজ্ঞতা জানার জন্য
অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আশা করি
প্রথম দিনের থেকে ভালা হবে। রোগীর
সুস্থ্যতা কামনা করছি।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:১৮

মা.হাসান বলেছেন: নূরু ভাই, প্রথম দিন ৩টা থেকে ৮:৪৫ পর্যন্ত সময়ের অভিজ্ঞতা কেবল লিখেছি। প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা শেষ করতে আরো দুই পর্ব লাগবে। পরের অভিজ্ঞতা এক বা দু পর্বেই হয়ে যাবে।

আজ ২য় পর্ব দেয়ার ইচ্ছে ছিলো। কিন্তু যে অফিস কামাই করেছি তা মেকাপের জন্য কাজ করতে হচ্ছে বলে পারছি না। আশা করি কাল সন্ধ্যায় ২য় পর্ব দেবো। সকাল ৮:৪৫ থেকে দুপুর প্রায় দুটার ঘটনা থাকবে।

সুস্থ্যতা কামনার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
সতত শুভকামনা।

১৩| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:০৮

করুণাধারা বলেছেন: এই হাসপাতালে দেশের সবচাইতে অভিজ্ঞ ডাক্তারেরা আছেন, সুতরাং চিকিৎসা ভালো পাবেন ডিএমসিতে এতে কোন সন্দেহ নেই। তবে এসব জায়গায় সিস্টেমে কিছু অসুবিধা আছে, সেগুলো চমৎকারভাবে পোস্টে উল্লেখ করেছেন। এই অসুবিধাগুলো দূর করতে পারলেই আমরা চিকিৎসা সেবায় আমেরিকার এগিয়ে যাবো। হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতার দিকে কেন একেবারে নজর দেয়া হয়না জানিনা। এরফলে ইনফেকশন হয়ে অনেকের প্রাণ সংশয় হতে শুনেছি।

আমি নিউরো সাইন্স ইনস্টিটিউটে ইমারজেন্সিতে দশটাকার টিকেট কেটে খুব ভালো চিকিৎসা পেয়েছি। প্রাইভেট হাসপাতালে যাইনি, কারণ শুনেছিলাম আমার মতো কেসের একজনকে ভর্তি করে আইসিইউতে পাঠিয়েছে...

আপনার অভিজ্ঞতার শেয়ারিং ভালো লেগেছে, পরের পর্বের অপেক্ষায়।

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪২

মা.হাসান বলেছেন: ড্যাবের মাধ্যমে চিকিৎসকদের মাঝে রাজনীতি ঢুকানোর যে নোংরা কার্যকলাপ শুরু হয়েছিল, স্বাচিপের সময় এসে তা বহুগুণে বেড়েছে। ডিএমসির আগের অবস্থা এখন মনে হয় নেই। তদবিরের মাধ্যমে অনেক অযোগ্য লোক এখানে ঢুকে পড়েছেন । এ ছাড়া গত ১০ বছরে প্রশ্নফাঁসের মাধ্যমে যে ছেলে মেয়েরা ডাক্তার হয়েছে, এদের এক অংশ ডিএমসিতেও আছে। এদের কোয়ালিটি প্রশ্নের উর্ধে না। পিজির একজন প্রাক্তন ভিসি তার সহকর্মিদের (যাদের কেউ কেউ তার প্রাক্তন ছাত্র) বলেছিলেন- আমি অসুস্থ হলে খবরদার ওর (পিজির হৃদরোগের এক ডাক্তার) কাছে নিবি না। আমারস্কুলের এক ক্লাসমেট ডাক্তারের কাছে শোনা ।
এর পরেও বলব আমাদের প্রেক্ষাপট ডিএমসি সম্ভবত ইমারজেন্সি চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে ভালো।দু-চার জন ডাক্তার আছেন যারা পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করছেন । অধিকাংশই হাল ছেড়ে দিয়েছেন। মাফিয়া চক্র খুব শক্তিশালী। খুব উপরের লোকদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ছাড়া সেবার মান বাড়ানো সম্ভব না।

আগারগাঁও নিউরো হাসপাতাল এবং ডিএমসির বার্ন ইউনিট খুব উন্নত মানের হাসপাতাল, তবে দুই জায়গায়ই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব আছে। অবস্থা যত ভালো হোক না কেনো, কামনা করি কাউকেই যেনো এসব জায়গায় না আসতে হয়।


অভিজ্ঞতা শেয়ার ভালো লাগায় আনন্দিত। পরের পর্ব আজ দেয়ার ইচ্ছে ছিলো, পারলাম না। কাল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ দেয়ার আশা রাখি। অনেক শুভ কামনা।

১৪| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৩৩

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন:
মেডিকেল ভর্তিযুদ্ধে থাকা এক সন্তানের পিতার মোনাজাতের দৃশ্য। ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট-এর সামন থেকে প্রকাশিত দৃশ্যটি সোস্যালমিডিয়ায় ব্যাপক সারা ফেলেছে।

আমাদের দায়িত্বশীলদের কাজকাম তো এতোই অল্প যে এইদিকে তারা মনোযোগী হবে! দেখুন, তারাও মানুষ। তাদেরও পরিবার আছে৷ আছে তাদের নিজেদের জীবনযুদ্ধ। তাছাড়া দায়িত্বশীলদের কে আপনি কেমনে জবাবদিহি করবেন? তারা কী কম করছে, এই যে গেটে নিয়ন্ত্রণের জন্য বেসরকারি চাকর রেখে আপনাদের থেকে অবৈধভাবে টাকা উত্তোলনের পরেও যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। আমাদের ডাক্তারেরা এতো এতো অবহেলার পরেও আপনারা কেন বারংবার সরকারি হসপিটেলেই আসেন বুঝি না! দেখুন, বাস্তবে যতই উন্নত যন্ত্রপাতি সরকারি হসপিটালগুলোতে থাকুক না কেন, এখানে এগুলোর যথাযথ ব্যবহার কিন্তু আমাদের ডাক্তারেরা করার সময় সুযোগ পান না। দেখেন না, এখানে কত মাত্রাতিরিক্ত রোগী। আর সে জন্যই দেখবেন, বেসরকারি হাই ক্লাসের ক্লিনিকগুলোতে সময় সুযোগের অভাব হয় না।


____এসব আমাদের বিজ্ঞজনেরা কয়ে থাকেন।





একজন পিতার চাওয়া তার সন্তান কেবলই ডাক্তার হোক। পারিপার্শ্বিক দিকগুলোর উন্ন্যনে সে এগিয়ে আসুক এমন পিতার সংখ্যা এই দেশে খুবই কম। সবাই নিজেদের অবস্থানকে আরেকটু উঁচুতে নিয়ে যাওয়ার জন্যই এদেশে যুদ্ধরত। যদি প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে উঠতেন আমাদের শিক্ষিতজন, তবে আপনি আমি আজ তাদের সমালোচনার পরিবর্তে তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে থাকতাম। এসব বিষয়ে আমাদের সকলেরই উচিত নিজ অবস্থান থেকে এসকল অসচেতনতা, অপব্যবহার ও নৈতিকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ জানানো।


ভালো একটি বিষয়ে আলোচনার জন্য ধন্যবাদ।
আমার নিজেরও এ ব্যাপারে কিছু খারাপ অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইন শা আল্লাহ সময় সুযোগে তা প্রকাশ করবো৷

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪৮

মা.হাসান বলেছেন: যারা ডাক্তারি পড়তে চান তাদের মেধা যাচাইয়ের সাথে সাথে অ্যাপটিটিউড টেস্ট করারব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো।
আমাদের দেশে এই সমস্যা নতুন না । সব বাবা-মাই চান সন্তান ডাক্তার /ইঞ্জিনিয়ার হোক বা এমবিএ পড়ুক । ভালো মানুষ হোক এমনটা চান এমন বাবা-মায়ের সংখ্যা আগের তুলনায় মনে হয় কমে আসছে। মানুষ উপর তলার লোকদের যে ভাবে দেখে তাই অনুসরণ করে। রোল মডেল কোথায়?
আপনার অভিজ্ঞতা শোনার অপেক্ষায় থাকলাম।

১৫| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ঢাকা মেডিকেল বা সরকারী মেডিকেলে না গেলে কেই জীবনে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেনা যে-তুমি যেই হওনা বাপু, এখানের সিস্টেমে আটকে যাবে।

২০০৯ সালের দিকে আমার অভিজ্ঞতা হয়েছে ছোট ভাই এর এপেন্ডিসাইড অপারেশন এর সময়।

কেন এত লক্ষ লক্ষ টাকা বাজেট পাশের পরও ভিতরের পরিবেশের উন্নতি হয়না। তবে চিকিৎসা ভালোই পাওয়া যায়।

ভালয় ভালয় সবকিছু সমাপ্ত হয়েছিলতো ?

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৫৭

মা.হাসান বলেছেন: সিস্টেমকে পাশ কাটানোর কিছু অভিজ্ঞতা পরের পর্ব থেকে থাকবে আশা করি।

চিকিৎসা সেরা, পরিবেশ খারাপ- এটা পুরো সত্য। আমার তো মনে হয় ইচ্ছে করেই এই অবস্থা করে রাখা হয়েছে। মানুষ একবার আসলে আর আসতে চাইবে না। আসতে না চাইলে উপায় কি? না, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
অর্থাৎ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে মানুষ যাতে সুস্থ থাকে, হাসপাতালে আসার মতো কোনো কাজ না করে সেই জন্য এই পরিবেশ তৈরি করে রাখা হয়েছে। সরকার আমাদের আসলেই অনেক ভালোবাসে।

১৬| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:০৪

ওমেরা বলেছেন: আপনার প্রতিমন্তব্য পড়ে হাসতে হাসতে আমার চোখে পানি চলে এসেছে।
এরপর পানি খেতে যেয়ে হাসির কারনে মুখের সব পানি ছিটে আমার বই ভিজে গিয়েছে ।
পিঁপড়া ধুয়ে পানি খায় এমন কিরপিনের কথা আগে শুনিনি কখনো। :D
আচ্ছা সেই পানি কি মিষ্টি লাগে ? যদি লাগে তাহলে,
এই ছবি দেখে ঢোক নিলেও আপনার কাছে মিষ্টি লাগবে । B-)

০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০৬

মা.হাসান বলেছেন: আপনার বই ভেজার কারণ হওয়ায় দুঃখিত। :(
সুইডেনে পিঁপড়া আছে কি? না থাকলে এই পরীক্ষা করার উপায় আপনার নেই।
যাহোক, রাই কুড়িয়ে বেল হয় । দানা দান করে চিনি জমা হয়ে এক চামচ চিনি হলে এক মগ চা খাওয়া হয়।

দেশে আসলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। তবে ছোট পিপড়া এইভাবে পানির সাথে ঝাকানো যায়, বড় পিঁপড়া হলে পানির সাথে না ঝাঁকিয়ে চুষে চিনিটুকু খেয়ে পিঁপড়া ফেলে দিতে পারেন, পানির খরচ বেঁচে যাবে।

মিষ্টি বলতে আমি এখনো ছানার মিষ্টিই বুঝি , চকলেট জাতীয় মিষ্টিতে লোভ কম। এজন্য বেশি নজর না দিয়ে অল্প নজর দিলাম B-)

১৭| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:২৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




মা হাসান ভাই, আমরা আসলে সমাজের কাছে জিম্মি। দেশের কাছে জিম্মি। হাসপাতাল পিয়ন পাইক পেয়াদা থেকে শুরু করে বাজারের পেঁয়াজ, আলু (পুরাতন আলু ৫০ টাকা কিলো) লবন, ভেজাল, ফরমালিন, থানা, কোর্ট, দেশের সড়ক মহা সড়ক থেকে শুরু করে সবার কাছেই আমরা জিম্মি। আমি এ জিম্মি জীবন মেনে নিয়েছি অনেক অনেক আগে। তাই এখন আর গায়ে লাগে না।

একটি মজাদার তথ্য দিচ্ছি: - পৃথিবী কতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে যারা রোগী নিয়ে হাসপাতালে (সরকারি ও বেসরকারি) যাননি তারা কখনো জানবেন না। আমি জানি দেশের সবাই পুলিশ থানা কোর্টকে অনেক অনেক দোষ দেন। কিন্তু থানা কোর্ট একটি হাসপাতালের কাছে যে কিছুই না - এটি একমাত্র ভুক্তভোগী মাত্র জানেন। আশা করি আপনি আমার কথার অর্থ বুঝতে পেরেছেন।

হাসপাতাল অভিজ্ঞতা আমার ভয়ঙ্কর।


১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০০

মা.হাসান বলেছেন:


ঠাকুরমাহমুদ ভাই, আমি নিজে অফিসিয়াল কারণে থানায় গিয়েছে জীবনে মাত্র দুবার, কিছু গুরুত্হীন হারানো কাগজপত্রের জন্য জিডি করতে। নিজের এবং আত্মীয় স্বজনের জন্য হাসপাতালে তুলনামূলক ভাবে হয়তো এর চেয়ে চার-পাঁচবার বেশি যেতে হয়েছে। কাজেই আমার এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা অত্যন্ত কম । এই বিষয়ে আমার বক্তব্য দিলে অভিজ্ঞতার চেয়ে বরং পত্রিকাতে যা দেখি সেই আলোকে বলতে হবে।

ডাক্তাররা পয়সার জন্য রোগী মেরে ফেলে এরকম ঘটনা অহরহ ঘটে । পুলিশ আসামি অথবা নিরীহ জনকে ধরে টাকা না পেয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে এরকম ঘটনাও আমরা অহরহ শুনি। তবে আসামিকে না পেয়ে পুলিশ তার বাবা-মাকে বা পরিবারের অন্য জনকে থানায় এনে নির্যাতন করার ঘটনা কিন্তু বিরল না। এখন পর্যন্ত এরকম ঘটনা শুনি নি হাসপাতালে রোগীকে না পেয়ে রোগীর আত্মীয় স্বজনকে চিকিৎসা করে মেরে ডাক্তাররা মেরে ফেলেছে ।

ডাক্তাররা খুন করছেন। তবে পুলিশ যেরকম কন্ট্রাক্ট কিলিঙে জড়িয়ে পড়েছে, ডাক্তারদের নামে এখনও সেরকম অভিযোগ আসেনি।

পত্রিকাতে মাঝে মাঝেই দেখি রোগীর লোকজনদের হাতে হাসপাতালের ডাক্তার -স্টাফ পিটন খেয়েছে। লোকে হয়তো বলবে ডাক্তাররা মারধর করার খাওয়ার মত কাজ করেছে, তাই মার খেয়েছে। সে বিবেচনা করলে তো পুলিশেরও প্রতিদিনই লোকের হাতে পিটন খাবার কথা। খায় কি? কতবার এরকম হয়েছে? (যে দুএকটা ঘটেছে তার কিছু কিছু যে সাজানো এটা মোটিমুটি পরিস্কার)।

দুই পেশার লোকদেরই অনেক পেশাগত সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। পুলিশের উপর প্রচন্ড রাজনৈতিক প্রেসার থাকে। ডাক্তারদের উপর তুলনামূলক কম। পুলিশের চাকরিতে নিম্ন পদে যে কোনো সময়ে সাসপেনশনের ভয়। তুচ্ছ ঘটনায় সাসপেনশনে যেতে হয়।একজন ডাক্তার ভুয়া পোস্ট মর্টেম রিপোর্টের মাধ্যমে একটা মার্ডার কেসের খুনিকে নিশ্চিত ফাসি থেকে বাচিয়ে দেয়ার মতো কাজ করলেও ডাক্তারদের শাস্তির কথা শোনা যায় না।

এরশাদ সাহেব পুলিশদের এক বেইজ্জতি থেকে বাচিয়েছেন। ডিসিরা আর এসপিদের উপর সেই খবরদারি করতে পারেন না। সিভিল সার্জনদের কথা বাদ দেই, এমনকি টিএইচএরাও অধিকাংশ ডিসির চেয়ে চাকুরিতে সিনিয়র; কিন্তু ছড়ি ঘোরায় টিএনও ডিসিরা।

করোনা চিকিৎসায় সরকার ৬৪ জেলার দায়িত্ব ৬৪ সিভিল সার্জনকে দেয় নি, দিয়েছে ৬৪ সচিবকে। গত বছরেও একই ঘটনা ঘটেছিলো। এক বছরে ওনারা কি করেছেন?
ডাক্তাররা চাদা তুলে রুগির চিকিৎসা করেছেন, নিজেরা রক্ত দিয়েছেন এরকম ঘটনা অনেক ঘটে। পুলিশের মাঝে মানবিকতার ঘটনা তুলনামূলক কম বলে মনে হয়। তবে গত বছর এরকম সময়ে রাজনীতিবিদরা যখন গর্তে লুকিয়েছিলেন, পুলিশকে উল্টাপাল্টা কমান্ড দেয়ার লোক ছিলো না, সেই সময়ে অবশ্য পুলিশের অনেক ভাল কাজের কথা পত্রিকায় দেখেছি।

ডাঃ ইব্রাহীম, ডাঃ এম আর খান, ডাঃ নুরুল ইসলামের মতো দু একজন পুলিশ অফিসারের নাম কি বলতে পারবেন যাদের কথা দেশ শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করে?

আবার বলি, এই কমেন্টে যা লিখেছি তা আমার বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা না, পত্রিকায় যা পড়ি তার উপর ভিত্তি করে লেখা। বাস্তবটা আপনি আমার চেয়ে নিঃসন্দেহে অনেক ভালো জানেন।
অনেক শুভ কামনা।

১৮| ০২ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪৯

ডঃ রুহুল আমিন চৌধুরী। বলেছেন: সরকারের নিয়ন্ত্রনে নেই স্বাস্থ্য খাত - সরকারও চায়না স্বাস্থ্য খাত নিয়ন্ত্রনে রাখতে - স্বাস্থ্য খাতকে সাগর চুরির সব ক্ষমতা দিয়েছে সরকার - মাশরাফি বিন মর্তুজা ব্যতিত কোনো সাংসদ স্বাস্থ্য খাতের দেকভাল করতে নারাজ - জননেতাগণ স্বাস্থ্য খাতকে জন সেবার অংশ মনে করেন না (সম্ভবত:) - অথচ স্বাস্থ্য খাত অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের পরেই জরুরি - যেখানে ডাক্তারগণও অসহায় নিজ সন্তান বা পিতা মাতা ভাই বোন স্ত্রীর অসুস্থতার সময়ে - সে খাতকে কেনো সকল সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়রগণ অপ্রয়োজনিয় মনে করেন বুঝি না -

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০৪

মা.হাসান বলেছেন: মন্তব্যের উত্তরে আসতে বিলম্বের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

সে খাতকে কেনো সকল সাংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, মেয়রগণ অপ্রয়োজনিয় মনে করেন...

আজ করোনা আচে বলে নেতারা দেশে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছে। নাহলে নেতা কেনো, পাতি নেতা -উপ নেতা কেউই তো দেশের সরকারি-বেসরকারি কোনো রকম হাসপাতালে চিকিৎসা নেন না। কাজেই স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নকে অপ্রয়োজনীয় ভাববেন এটা স্বাভাবিক।

অনেক শুভ কামনা ।

১৯| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:০০

জুল ভার্ন বলেছেন: রাজধানীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সবচেয়েড়ো হাসপাতালটির কি ভয়ঙ্কর প্রশাসনিক চিত্র! তবে এই চিত্র দেশের সকল হাসপাতালেই।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০৫

মা.হাসান বলেছেন: একমত, কম আর বেশি, সব হাসপাতালেই এর কাছাকাছি চিত্র । কিছু বেসরকারি হাসপাতালে আরো ভয়াবহ অবস্থা।

অনেক শুভ কামনা।

২০| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১৪

সামিয়া বলেছেন: বাচ্চা আর বাচ্চার মা ভালো আছে তো ???

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:০৮

মা.হাসান বলেছেন: বাচ্চা-বাচ্চার মা দুজনেই এখন বাসায়, সুস্থ।

মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে এত বেশি সময় নেয়ার জন্য দুঃখিত। কিছু ব্যস্ততা ছিলো। এছাড়া তাল হারিয়ে ফেলায় পরের পোস্টের মন্তব্যের জবাব আগে দিয়ে ফেলেছি।
অনেক শুভ কামনা।

২১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪৭

মনিরা সুলতানা বলেছেন: ১৯৯৩-১৯৯৯ সময় কালিন আমার বেশ অভিজ্ঞতা আছে, আমার মেঝ বোন সেখানকার ছাত্রী হবার সুবাদে। তবে এসব কিছুর পর ও আমার প্রথম সন্তান জন্মদানের সময় ঢামেক ই ভরসা রেখেছিলাম, ২০০১ এ।

আশা করছি মা ও সন্তান ভালো আছেন।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১১

মা.হাসান বলেছেন: মা-সন্তান দুজনেই ভালো আছে।

মেয়ের বয়স ২০, মায়ের বয়স ১৮। একেই মনে হয় বলে রিলেটিভিটি! B:-)

বিলম্বে উত্তর দেয়ার জন্য অনেক দুঃখিত।

২২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১০

আহমেদ জী এস বলেছেন: মা.হাসান,




সরকারী হাসপাতালগুলোর সত্যিকারের চিত্রের কিয়দংশ তুলে ধরেছেন। স্বাস্থ্য খাতের টোটাল আবহাওয়া যদি "আইসবার্গ " হয় তবে আপনার এমন চিত্রাঙ্কন হবে " টীপ অব দ্য বার্গ"।

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৮

মা.হাসান বলেছেন: স্বাস্থ্য খাতের টোটাল আবহাওয়া যদি "আইসবার্গ " হয় তবে আপনার এমন চিত্রাঙ্কন হবে " টীপ অব দ্য বার্গ"।

আগের সরকার দেশকে আইস এজে নিয়ে গিয়েছিলো। বর্তমান সরকার বরফ গলাইয়া ফালাইয়াছে। এখন চারিদেকে খালি জোয়ার।
উন্নয়নের জোয়ার না চুরির জোয়ার তা আর বললাম না।

বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে মন্তব্যের প্রত্যুত্তরে বিলম্ব হওয়ায় দুঃখিত।
অনেক শুভ কামনা।

২৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৬:০৮

সোহানী বলেছেন: কি বলবো বুঝতে পারছি না। কারন আমি দুই পাশের চেহারাই দেখেছি। আপনার অবস্থানে থেকে আবার তার বিপরীতে একজন ডাক্তারের অবস্থানে থেকে। তাই পুরো লিখার প্রতিটি শব্দের সাথে আমি পরিচিত। কিন্তু আমরা সাধারনরা অসহায়। আবার যদি বলি সরকারও অসহায়। একটি গরীব রাস্ট্রের ১৮/২০ কোটি লোকের উন্নত মানের চিকিৎসা দেয়ার ক্ষমতা নেই। বা থাকলেও তার দিকে মনোযোগও হয়তো নেই। তবে যেটা নিয়ে আমার দু:খ তা হলো মমতাজ সাহেবদের মতো মানুষদের জন্য। ওরাইতো চিকিৎসাকে পুরোপুরি ব্যবসা বানিয়ে ছেড়েছে।ওদেরকে নিয়ন্ত্রন করা গেলে অনেক কিছুই ঠিক হয়ে যেত।

ভালো থাকুক মা ও বেবিটা। ওদের বাকি খবরের আশায় আছি।

১২ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:৩৯

মা.হাসান বলেছেন: মা-বেবি এখন পর্যন্ত বাসায় ভালই আছে।

দুঃখিত, আপনার মন্তব্যের সাথে পুরোপুরি একমত হতে পারছি না।
সরকার অসহায় না।
টাকা সমস্যা না।
পদ্মা সেতুর ইনিশিয়াল বাজেট ছিলো দশ হাজার কোটি টাকা। বাড়তে বাড়তে এটা এখন তিরিশ হাজার কোটি টাকা। বিশ্ব ব্যাংক চলে যাবার পরে খরচের লাগাম ধরার কেউ নেই। শুধু রাস্তার স্লোপ ঠিক না করার কারনে পদ্মা সেতুতে আতিরিক্ত এক হাজার কোটি টাকার মতো গচ্চা গেছে।

বাংলাদেশের লোক কানাডা, আমেরিকা বা ইউকের লোকদের চেয়ে বেশি ট্যাক্স দেয়।
মোবাইল ফোন সেট আমদানিতে ২৫% ট্যাক্স, এর উপর ১৫% ভ্যাট, তার সাথে ৩% অগ্রিম ইনকাম ট্যাক্স মিলে আমরা দেই ৪৬.৫% ট্যাক্স। ফোনে কথা বলায় ২৭% ট্যাক্স দিতে হয়। ইনসুলিন, হার্টের ওষুধ, অ্যাসপিরিন, এমনকি সাধারণ জ্বরের প্যারাসিটামল - দেশে উৎপাদিত সকল ওষুধের উপর আমরা ১৭.৫% ট্যাক্স দেই। কুকুর কামড়ানোর ভ্যাক্সিনেও ট্যাক্স দিতে হতো। সালমান রহমান টিকা আমদানির ঠিকাদারি পাবার পর টিকা আমদানির উপর ভ্যাট-ট্যাক্স বাদ গেছে। আমার আরেকটা পোস্টে সাধারণ পাটিগণিত দিয়ে দেখিয়েছি, শুধু টিকা আমাদানি থেকেই সালমান গং এক হাজার কোটি টাকার উপরে লাভ করবে। আমদানি করা খেলনায় ৬০% ট্যাক্স দেই। সুপার মার্কেট থেকে তরল দুধ কিনলে তার উপর ৫% ভ্যাট নেয়া হয়। বিদ্যুত বিলের উপরে শুধু ভ্যাট না, প্রতি মাসে মিটার ভাড়া দিতে হয়, লোড রেন্ট দিতে হয়। সিটি করপোরেশনে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হয়, কিন্তু ময়লা ফেলার জন্য আলাদা করে মাসে ২০০ টাকা দিতে হয়। যারা ময়লা কালেক্ট করে এদের কি জীবন এটা নিয়ে জুলভার্ন ১১ এপ্রিলে একটা পোস্ট দিয়েছেন, পড়তে পারেন। স্বাস্থ্য খাতে গত এক বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। করোনার পর গত বছর সরকার প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা প্রনোদনা দিয়েছে। টাকা পেয়েছে গার্মেন্টস মালিকরা। এরা কারা জানেন? সরকারের প্রায় সব এমপিরই গার্মেন্টস ব্যবসা আছে। সরকার বলেছে করোনায় অফিস বন্ধ, কিন্তু গার্মেন্টস খোলা রাখতে হবে। দেশে আপনার যে আত্মীয় স্বজন আছে তাদের জিজ্ঞাসা করে দেখার অনুরোধ থাকলো- তাদের পরিচিত কোনো গরিব লোক কি করোনা কালে সরকারি সাহায্য পেয়েছে?
অভিযোগ আমরা ইনকাম ট্যাক্স কম দেই। কিন্তু কোন শ্রেনি কম দেয়? আমি সাধারণ চাকরিজীবি। আমার বেতন থেকে সোর্সে ইনকাম ট্যাক্স কেটে নেয়। এর পর বছর শেষে রিটার্ন জমা দিয়ে তার কপি আবার অ্যাকাউন্টসে জমা দিতে হয় । না গেলে বেতন বন্ধ থাকে। লাখ লাখ চাকরিজীবির জন্য এই নিয়ম। ব্যবসায়ীদের নিয়ম আলাদা।
সরকারের আদৌ কোনো সদিচ্ছা থাকলে দেশের অবস্থা পরিবর্তন করতে সময় লাগে না।

২৪| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৪৫

ঢুকিচেপা বলেছেন: ভেবেছিলাম খুশির খবরে মিষ্টি পাওয়া যাবে, কিন্তু যেভাবে পিঁপড়া ঝাঁকাঝাঁকি হচ্ছে...................

আজ প্রথম শুনলাম যে, এক বেডে ডাবল রোগী থাকে। খেয়াল রাখতে হবে যেন বেডের এক ইঞ্চিও অব্যবহৃত হয়ে না পড়ে থাকে।
অভিজ্ঞতার বিষদ বর্ণনায় চিকিৎসা ভালো হয়েছে।
নতুন অতিথির জন্য শুভকামনা রইল।

১২ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:৫১

মা.হাসান বলেছেন: কিছু দিন আগে দুধ জ্বাল দেবার সময়ে ছানা কেটে গেলে মিষ্টি বানিয়েছিলাম। শিরা পাবো কোথায়? খাবার হোটেল থেকে দুটো পরোটা কিনে তার সাথে ফাউ হিসেবে কিছু মিষ্টির রস এনেছিলাম। তো মিষ্টি খাওয়া হয়ে গেছে, কিন্তু কিছু রস রয়ে গেছে, ডিপ ফ্রিজে। ভেবেছিলাম রোজায় জিলিপি ভেজে ঐ শিরায় ডুবাবো। তো মানুষের যে রকম বদ নজর পড়ছে, পরে দেখা যাবে পেট ব্যথা করছে। কাজেই দাওয়াত থাকলো, মিষ্টিমুখ করে যাবেন। আশা করি খালি হাতে আসবেন না, আসার সময়ে অন্তত এক হালি কলা বা আড়াইশো গ্রাম মাল্টা নিয়ে আসবেন।

উল্টা পাল্টা বেশি খেয়ে কিছু মানুষের স্বাস্থ্য রেসলার রক এর মতো হয়ে গেছে। এরকম স্বাস্থ্যের লোকেদের একটা বিছানায় কুলাবে না, দুটা লাগবে।

নতুন অতিথি না, এর বাবা-মায়ের জন্য শুভ কামনা দরকার।
যাক আপনারও সুস্বাস্থ্য কামনা করি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.