নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\n

মা.হাসান

মা.হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ডিএমসিএইচ-এ কয়েকদিন- ২য় পর্ব

০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৩২





১ম পর্ব

তো সকাল ৮:৪৫ এর দিকে আমাদের জানানো হলো আলট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট অনুসারে রুগির প্লাসেন্টা ছিড়ে গেছে, জরুরি ভাবে অপারেশন করতে হবে। আমার অনুমান আমরা আসার পরপরই আলট্রাসনোগ্রাম করা হয়েছিল, কিন্তু সেই সময়টা নরমাল অপারেশন আওয়ারের বাইরে বলে তখন আমাদেরকে বিষয়টা জানানো হয়নি ।

সে যাক, নার্স হাতে দুটো স্লিপ ধরিয়ে দিলেন। একটা দুই ব্যাগ রক্তের রিকুইজিশন স্লিপ, আর একটা স্লিপে অপারেশনের জন্য কি কিনতে হবে তার লিস্ট । সার্জিক্যাল টেপ , ব্লেড, গ্লাভস, কিছু ইঞ্জেকশন ইত্যাদি। হাসপাতালে এগুলোর সাপ্লাই নেই। কাজিনকে ওয়ার্ডে রেখে আমি ওষুধের দোকানে দৌড়াই। প্রায় হাজার টাকার মতো লেগে গেল ফর্দ মিলিয়ে জিনিস কিনতে।

(আমি যে সময়টাতে বাইরে থাকছি, কাজিন কিন্তু বসে থাকছে না, মাঝে মাঝেই নার্সরা একটু পরপরেই নতুন লিস্ট ধরিয়ে দিচ্ছেন, দু'জনকেই দৌড়াতে হচ্ছে। সে সময় কাজিনের শশুর মেয়ের পাশে থাকছেন।)

লিস্ট অনুযায়ী জিনিস ওয়ার্ডে পৌঁছে দিয়ে রক্তর খবর নিলাম। পরিচিত অনেককেই রক্তের জন্য ফোন করা হয়েছে, গ্রুপ ম্যাচ করে, কিন্তু ঢাকায় আছেন - এমন কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। ভাগনা তার বন্ধুদের দুজনকে বলেছে। ওরা মিরপুর থেকে রওনা দিয়েছে। মিরপুর থেকে ঢাকা মেডিকেলে আসতে যে সময় লাগে তাতে লন্ডন-প্যারিস রিটার্ন যাতায়াত হয়ে যায়। রক্ত কি তাহলে কিনতেই হবে?

এর মাঝে লাইন ম্যানেজারকে ইমেইল করে দিলাম- ডোন্ট কল মি আই উইল কল ইউ। আজ এবেলা অফিস কামাই হচ্ছে।

রক্তের জন্য নার্স কয়েকবার তাগাদা দিয়ে গেছেন। ভরসা সন্ধানী। সন্ধানী এর অফিস আওয়ার জানা নেই, তবে এটুকু জানি কলেজ বিল্ডিং এর নিচতলায় এর অফিস আছে, এখন নটা পার হয়ে গেছে কাজেই খোলা না থাকার কথা না। ভাগনা সহ স্লিপ নিয়ে চলে গেলাম কলেজ বিল্ডিঙে।

ওনারা জানালেন যে গ্রুপের রক্ত দরকার তা স্টকে আছে। তবে ওনারা এমনি এমনি রক্ত দেয়া প্রেফার করেন না, ভালো হয় যদি আমরা এর বদলে দুই ব্যাগ রক্ত ডোনেট করি। জানালাম ভাগনা একটু আগে রক্ত দিয়েছে এখন আর দিতে পারবেনা , তবে আমি দিতে পারবো । নার্সদের স্লিপে লেখা আছে রোগীকে ওটিতে নিতে হবে। আমাদের তাড়া আছে বুঝে ওনারা কথা না বাড়িয়ে আমাদের দুই ব্যাগ রক্ত দিয়ে দিলেন। খরচ হিসাবে ১০০০ টাকা দিতে হলো।

এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো যে ১০০০ টাকা রক্তের দাম না, গ্রুপিং, স্ক্রিনিং, রক্তের ব্যাগের দাম- এসব খরচ কাভারের জন্য এই টাকাটা না নিয়ে উপায় থাকে না। আর সব লেনদেনের রশিদ ওনারা দিয়ে থাকেন।

রক্ত নিয়ে আবার দৌড়ালাম ডিএমসির নতুন বিল্ডিঙে, ট্রান্সফিউশন সেন্টারে। আইন অনুসারে এখানে আবার নতুন করে স্ক্রিনিং করতে হবে, ক্রস ম্যাচ করতে হবে। সাড়ে নটা বাজে। ওনারা জানিয়ে দিলেন দেড় ঘন্টা সময় লাগবে । ওয়ার্ডে ফিরে এসে শুনলাম নার্স এর মধ্যে আরো দুবার রক্তের জন্য তাড়া দিয়ে গেছেন।

আটটার শিফটে একজন সিনিয়র চিকিৎসক এসেছেন, কিন্তু আমাদের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি। কাজিনের বিষয়টা ভালো লাগছে না। আমাকে জানালে আমি বললাম প্রত্যেক রোগের এটেনডেন্ট এর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে গেলে ডাক্তারের জন্য রোগি দেখা বাদ দিতে হবে। যা প্রয়োজন ওনারা করলেই হলো, তুমি এটা নিয়ে টেনশন করো না।

যে কাজিনদের ঘুম ভাঙিয়ে দুটার সময়ে কথা বলেছিলাম তাদের মধ্যে একজন স্বাস্থ্যে ছোট, কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা পদে কর্মরত আছেন। উনি সকালে ঢাকা মেডিকেলে ওনার কাউন্টার পার্টকে (নাম ধরি মমতাজ সাহেব) ফোন করে জানিয়ে দিয়েছেন- আমার ভাইয়ের স্ত্রী ভর্তি, একটু দেখবেন। কাজিনকে মমতাজ সাহেবের ফোন নম্বর দিয়ে ওনার সাথে যোগাযোগ করতে বলে দিলেন ।

মমতাজ সাহেব আমাদের খুঁজছভিলেন, ভদ্রলোক ফোন পেয়ে সাথে সাথে চলে এসেছেন ওয়ার্ডে। উনি ডাক্তারকে কি বলেছেন জানিনা, কিন্তু ডাক্তার এর মধ্যে এক মিনিটের জন্য এসে কাজিনকে বর্তমান পরিস্থিতির কথা জানিয়ে গেলেন। যে কোনো সমস্যায় ওনার সাথে যোগাযোগের কথা বলে মমতাজ সাহেব আপাতত বিদায় নিলেন।

এক ট্রান্সফিউশন সেন্টারেই দেখলাম কিছু বসার জায়গা, অন্য কোথাও নেই। পনেরো মিনিটের ব্যবধানে পরপর দুবার যেয়ে রক্তের পরীক্ষা শেষ হয়েছে কি না জিজ্ঞাসা করায় টেকনিশিয়ান অল্প একটু রেগে গিয়ে বললেন মেশিনের কাজ, সময় লাগবে। রুগি ওটিতে আছে বলে অনুরোধ করার পর ভদ্রলোক ভিতরে যেয়ে দেখে এসে বললেন এখনো হয় নি।

সাড়ে দশটার দিকে উনি আমাকে ডাক দিয়ে বললেন এক ব্যাগ রক্ত হয়ে গিয়েছে , এটা নিয়ে যান। আর এক ব্যাগে সমস্যা আছে। ব্যাগের গায়ে ভুল গ্রুপ লেখা আছে। ডাক্তার যদি বলে আরো লাগবে তাহলে আমাদের জানায়েন, ওটার বদলে আপনার চাহিদা মতো রক্ত দেয়া যাবে।

সন্ধানীতে রক্তে গ্রুপিঙের কাজটা কোন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান না, বরঙ ছাত্রদেরই করতে দেখেছি। এবং এই ভুল আগেও হতে দেখেছি, আমি নিজেও এর শিকার হয়েছি। এটা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট না করে যা আছে তা নিয়ে দৌড়ালাম ওয়ার্ডে।

রোগীকে এর মধ্যে অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে । পাশাপাশি দুইটা থিয়েটার। কোনটার মধ্যে ঢোকানো হয়েছে নার্সরাও বলতে পারছে না। দুটাতেই নক করে রোগীকে খুঁজে বার করে নার্সের হাতে এক ব্যাগ রক্ত দিয়ে বলা হলো আর এক ব্যাগ রক্তের জন্য চেষ্টা করছি ।

এই সময়ে ডাক্তার নিজেই ওটি থেকে বের হয়ে আসলেন। বাচ্চাদের গলায় যেভাবে বিব ঝোলানো থাকে, ডাক্তারের গলায় এরকম একটা কালো রঙের টেবিল ক্লথ জাতীয় পলিথিন শিট জড়ানো আছে। অপারেশন থিয়েটারের ডাক্তাররা মনে হয় এরকম অ্যাপ্রন ব্যবহার করেন।

ডাক্তার উচু গলায় বললেন- দাদু, রক্তের রিকুইজিশন স্লিপ নিয়ে আসেন।এরপর দাদু স্লিপ আনলে নিজে কিছু একটা লিখে আমাদের হাতে দিয়ে বললেন- এক ব্যাগ সাদা রক্ত (প্লাজমা) লাগবে , নিয়ে আসেন। এক্ষণে বুঝলাম, দাদু আসলেই হাসপাতালের একটা পোস্ট , কাল্পনিক কিছু না।

এই অবস্থায় কোথায় সাদা রক্ত পাই? মমতাজ সাহেবকে ফোন দেওয়া হলো। উনি ট্রান্সফিউশনে যেতে বললেন, বললেন উনি ওখানে আসছেন। সাদা রক্তের জন্য লালফিতার ঝামেলা কিছুটা বেশি। বিভাগের হেড পর্যন্ত যায়। মমতাজ সাহেব আমাদের বসিয়ে রেখে নিজেই দুই রুম ঘুরে দরকারি কাগজে সই নিয়ে রক্তের ব্যবস্থা করে দিলেন। সরকারি খরচ সম্ভবত ১১০০ টাকার মতো লাগলো। প্লাজমা একেবারে ফ্রোজেন, ললি আইসক্রিমের মতো। এটা কিভাবে পুশ করবে ভাবতে ভাবতে মমতাজ সাহেবকে ধন্যবাদ জানিয়ে আবার ছুটে গেলাম ওয়ার্ডে।


রক্ত বুঝিয়ে দিয়ে উদ্বিগ্নমুখে অপেক্ষা করছি । মেয়ের ফুপু-ফুপা খবর পেয়ে চলে এসেছেন। ওনারা মোটামুটি অবস্থা সম্পন্ন লোক। দুজনেই ওয়ার্ডের অবস্থা দেখে হতবাক। ফুপা আমার কাজিন কে বললেন তোমার হাসপাতাল চয়েজ ভালো হয় নি। এর চেয়ে ভালো কোথাও নেয়া গেলো না? ওনার সাথে কোন তর্কে না জড়িয়ে উনাকে বললাম আপাতত এখানেই থাকুক পরবর্তীতে অন্য কথা ভাবা যাবে।

ওটির সামনে হাটাহাটি করি। দরজার দিকে চোখ পড়ে গেলো। যেই রুগির মাথায় বেনি করার মত চুল নেই তার কি হবে ভেবে চিন্তা হচ্ছে।

যেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এর আন্ডারে তার ওয়াইফ চিকিৎসাধীন ছিল, কাজিন এর মধ্যে তার সঙ্গে কয়েকবার কথা বলেছে। উনি বলেছেন চিকিৎসা ঠিকমত চলছে। উনি নিজেও এর চেয়ে ভালো কিছু করতে পারতেন না।

দুপুর ১২ টার কাছাকাছি বাজে । রক্ত দিতে ভাগনার দুই বন্ধু চলে এসেছে। ওদেরকে অনুরোধ করলাম যে কিছুক্ষণ থাকো, দেখি আরো রক্ত লাগে কিনা। খুব ছটফটে যৌবনদীপ্ত দুটি ছেলে। বন্ধুর কথায় রক্ত দেওয়ার জন্য এভাবে চলে এসেছে দেখে খুব ভালো লাগলো।

১২:১৫ মত বাজে। ওটির দরজা দিয়ে একজন নার্স উঁকি দিয়ে রোগীর নাম বলে জিজ্ঞাসা করলেন- রোগির স্বামী কি আছেন? আমার কাজিন সামনে এগিয়ে গেল । সবাই শুনতে পায় এমন গলায় স্পষ্ট ভাবে নার্স জিজ্ঞাসা করলেন- জন্মনিয়ন্ত্রণের কথা কি কিছু ভাবছেন? আমরা কোনো পদ্ধতি দিয়ে দেবো? কাজিনের সিক্স ও ক্লক পজিশনে ফুপা শশুর, দু হাত পিছনে। নাইন ও ক্লক পজিশনে আমি, এক হাত দূরে। কাজিন ফিস ফিস করে কি যেন বললো। নার্স বললোঃ আমরা টিউব দিয়ে দিতে পারি , তিন বছরের জন্য কোনো দুশ্চিন্তা নেই । কাজিন এবার আরো ফিস ফিস করে কি যেন বললো। নার্স মাথা ঝাকিয়ে ভেতরে চলে গেলেন ।

ওয়ার্ডের এই অবস্থা দেখার পরেও যদি কেউ ব্রহ্মচারি না হয় তাহলে বুঝতে হবে মানুষের চিন্তা শক্তি লোপ পেয়েছে।

কয়েক মিনিট পর একজন নার্স বের হয়ে আসলেন। হাতে দুই ব্যাগ রক্ত । বললেন রক্ত লাগে নাই। ব্লাড ব্যাংকে ফেরত দিয়ে দেন অথবা আর কারো কাজে লাগলে তাকে দিয়ে দেন। কাজিন হতভম্ব । সকাল থেকে রক্তের জন্য দৌড়াদৌড়ি অথচ এখন রক্ত লাগবে না বলছে । অতীত অভিজ্ঞতা থেকে জানি, কোন ডাক্তারই রক্ত মজুদ না রেখে রোগীকে ওটিতে নিতে চান না, হঠাৎ করে সমস্যা হয়ে গেলে তখন কি হবে ভেবে। কাজেই আমাদের রক্তের চাহিদা দেওয়া ঠিক ছিল । কাজিনকে সেই কথা বললাম।

রক্ত নিয়ে ব্লাড ব্যাংকে চলে আসলাম ফেরত দিতে। টেকনিশিয়ান প্রচন্ড জোরে একটা ধমক দিলেন- এভাবে কেন ফেরত দিচ্ছেন? আমি খুব নিচু গলায় ওনাকে বললাম- ডাক্তার জোগাড় করতে বলেছিলেন, তাই নিয়েছিলাম, এখন বলছেন লাগবে না তাই ফেরত দিতে এসেছি। উনি আবার ধমক দিয়ে বললেন এভাবে কেন দিচ্ছেন? লাল-সাদা দুটো ব্যাগ একসঙ্গে কেন রেখেছেন ? এভাবে রাখলে তো রক্ত নষ্ট হয়ে যাবে। এতক্ষনে ওনার রাগের কারণ বুঝলাম। আমি আমি আবার গলা নামিয়ে উনাকে বললাম দুঃখিত আমার জানা ছিলনা দুটা রক্ত আলাদা ভাবে রাখতে হবে । নার্স আমাকে এইভাবে একসঙ্গে দিয়েছে, আমি এভাবে নিয়ে এসেছি।


ওয়ার্ডে ফিরে ভাগনার বন্ধু দুজনকে অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে ফিরে যেতে বললাম। নিতে চাচ্ছিলো না, জোর করেই যাওয়া আসার পথ খরচ দিয়ে দিলাম । দুজনেই ছাত্র, মিরপুর থেকে যাওয়া আসার খরচ কম না।

ওটি থেকে একজন আয়া বের হয়ে এসে বললেন রোগীর নাম ধরে বললেন - ওনার লোক কোথায়? সামনে এগিয়ে যেতে বললেন বকশিশ দেন । রোগীকে ওটি থেকে ওয়ার্ডে নিতে হবে। কত দিতে হবে জিজ্ঞাসা করলে বললেন- দুইজন আছে, ৬০০ টাকা দেন। একটা ৫০০ টাকার নোট বাড়িয়ে দিয়ে আরো খুঁজছিলাম, আর লাগবে না বলে উনি চলে গেলেন।



পোস্ট অপারেটিভ রুম ওটির উল্টাদিকে, পাঁচ গজ দূরে । ওয়ার্ডের অন্য অংশের তুলনায় এটা বেহেশত। এখানে অনেকগুলো বেড, সামান্য কয়টা তে রোগী আছে। শুধুমাত্র সিজারের পেশেন্টদের এখানে রাখা হয়। ঢাকা মেডিকেলে ৮০% এর উপরে রোগীর নরমাল ডেলিভারি হয়। যার কারণে ওয়ার্ডের এই অংশে চাপ কম, ডাবলিঙ করতে হয় না। একটা এসি আছে, কিন্তু কাজ করে না মনে হলো। তবে ফ্যান গুলো কাজ করে।

কাজিনের ওয়াইফ অত্যন্ত নির্জীব অবস্থায় ট্রলিতে শুয়ে আছে। এবার ট্রলি থেকে বেডে ট্রান্সফার করা। ওয়ার্ড বয় আমাকে বললো- আপনি বিছানার উপরে দাঁড়ান। এরপরে পায়ের দিকে আয়া, মাথার দিকে ওয়ার্ড বয় আর কোমরের দিকে আমি ধরে আবার লবনের বস্তার মতো রোগীকে ট্রলি থেকে বেডে ট্রানস্ফার করলাম। রোগির শরীরে এখনো অ্যানাসথেসিয়ার প্রভাব রয়েছে, তার পরেও চেহারা দেখে মনে হল ট্রান্সফার ব্যথাহীন হয় নি।

ওয়ার্ডে রোগী দেখলাম দশ-বারো জন। কিন্তু নার্স পাঁচজন। এর মধ্যে দুজন নার্স বিছানায় মুখোমুখি পদ্মাসনে বসে আছেন, একজন টেবিলে বসে আছেন (চেয়ারে না) আর একজন বিছানার কোনায় পা ফেলে বসে আছেন । পার্ফেক্ট তাস খেলার আসরের পজিশন। এক পাটি তাসেরই খালি অভাব।

সাধারণত ডাক্তার ফাইলেই সব লিখে দেন, নার্সরা পড়ে বুঝে নেন। কিন্তু এক্ষেত্রে মমতাজ সাহেবের উপস্থিতি অন্য রকম প্রভাব ফেলেছে । ডাক্তার নিজে একবার এসে নার্সদেরকে ওষুধের কথা বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন, কোনটা কোনটা চালু হয়ে গেছে বললেন, আর বললেন আগামী কয়েকঘণ্টা পানিও খেতে দেওয়া যাবে না । নার্সদের দায়িত্ব ভাগ করা আছে। একজন ফাইলটা বুঝে নিলেন।

পঞ্চাশোর্ধ ডাক্তারের ফর্সা মুখটা লাল হয়ে আছে, ঘামে ভিজে আছে। সম্ভবত সকাল থেকে উনি দাড়িয়েই আছেন, বসার কোন সুযোগ পাননি। রুমে যে কয়জন রুগি দেখছি সব আজকেরই অপারেশন। ওনাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই।

একজন পান খাওয়া, খুব ভালো মানুষ চেহারার মোটাসোটা আয়া দেখলাম এই ওয়ার্ডে কাজ করছেন । ওনাকে দেখে অনুরোধ করলাম- খালা, পেশেন্টকে আপনি একটু দেখবেন। আমরা আপনার অবস্থাটা দেখব। উনি মাথা নেড়ে হেসে দূরে সরে গেলেন। চেহারা দেখেই বোঝা যায়, উনি সেই গ্রুপে পড়েন যারা নিজে থেকে কিছু চেয়ে নিতে পারেন না

বাচ্চা , বাচ্চার বাবার কি অবস্থা বা বাচ্চা কোথায় কিছুই জানিনা। ভাগনাকে ওয়ার্ডে স্ট্যান্ডবাই রেখে কাজিনকে খুঁজতে বের হয়ে গেলাম । যেই প্যাসেজ দিয়ে ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে তে ঢুকতে হয় ঠিক তার মুখেই ২১১ নম্বর ওয়ার্ড- এন আই সি ইউ। প্রিম্যাচিওর বাচ্চাদের অধিকাংশকেই ইনকিউবেটর রাখতে হয় । তাদের জন্য এই ওয়ার্ড । ডাক্তার কাজিনের কাছে একটা স্লিপ দিয়ে বলেছেন- জরুরী ভিত্তিতে ২১১ তে ভর্তি করেন।

কাজিনকে দেখলাম ২১১ নম্বর ওয়ার্ডের ডাক্তারের সামনে হাতজোড় করে দাড়িয়ে আছে, চোখ দিয়ে অঝোরে পানি ঝরছে। অনেক কাকুতি-মিনতিতেও কাজ হয়নি । ডাক্তার খুব কর্কশ ভাবে বলে দিলেন কোন সিট খালি নাই, ভর্তি করা যাবে না, অন্য কোথাও নিয়ে যান। (এই ডাক্তারটির অনেক দুর্নাম, পারলে উনি যেন লোকদের ধরে পেটান, এমন অবস্থা। )

গেটে কর্তব্যরত আনসারদের মধ্যে একজন এগিয়ে এসে বললেন - কাছেই ভালো ক্লিনিক আছে, খরচ খুব কম । ৩-৪ হাজার টাকার মতো লাগবে । ওখানে ভর্তি করেন । নিরুপায় কাজিন তাতেই রাজি । আমি আটকালাম। মা একজায়গায় বাচ্চা আরেক জায়গায় এটা বাস্তব সম্মত হবে না, আমরা দুজায়গায় দৌড়াদৌড়ি করতে পারবোনা । (আর শুধু অক্সিজেনের বিলই দিনে তিন-চার হাজার টাকা নেবে, কোথাও কোথাও মোট খরচ দিনে ত্রিশ হাজার ছাড়িয়ে যায় শুনেছি।)

পিজি হাসপাতালের ভিআইপিদের জন্য আইসিইউর কেবিন দু-একটা রেখে দেওয়া হয়, বড় তদবির ছাড়া কাউকে বরাদ্দ দেওয়া হয় না। সেই অভিজ্ঞতা থেকে মনে হল এখানেও এরকম হতে পারে। বললাম আগে মমতাজ সাহেবকে ফোন দাও, দেখি উনি কি বলেন।
তাছাড়া এখান থেকে অন্য কোনো হাসপাতাল পর্যন্ত নিয়ে যাবো- এতক্ষণ সময় অক্সিজেন ছাড়া বাচ্চা বাঁচবে কি করে ?

মমতাজ সাহেব ফোন পেয়ে ছুটে আসেন। ডাক্তারের সঙ্গে কি কথা হলো জানিনা , পাঁচ মিনিট পরে বাচ্চা ভর্তির ব্যবস্থা হয়ে গেলো। ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন - বাচ্চার ওজন কত ? আমাদের জবাব - জানিনা।
- জানেন না কেন?

এই প্রশ্নের কী উত্তর দেবো? এই হাসপাতালে কারো কাছে তো কিছু জিজ্ঞাসা করার উপায়। ভাবলাম একবার- বলি ওজন মাপার যন্ত্র ভুলে বাসায় রেখে এসেছি । কিন্তু গ্যাঞ্জাম না করে নরম স্বরে বললাম- ভুল হয়ে গেছে । আসলে ডাক্তার সাহেব ফাইলে কি লিখেছেন আমরা তো এত বুঝি না, ফাইল টা দেখেন, হয়তো ফাইলে লেখা আছে।

ডাক্তার ফাইল মিলিয়ে ফর্ম পূরণ করে বাচ্চাকে ভর্তি করে নিলেন, কাচের ঘরে বাচ্চা ঢুকে গেলো।

(কয়দিন থেকে যা বুঝেছি, মমতাজ সাহেব হাসপাতালে খুব উচু কোনো পদে চাকরি করেন না, ২য় না ৩য় শ্রেনীর একটা পদে আছেন। তবে কোটিপতি মানুষ। এই হাসপাতালসহ আরো কয়েকটা সরকারি হাসপাতালে উনি সাপ্লায়ার/কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেন। একজন বড় মন্ত্রীর ভাতিজি জামাইয়ের সাথে একসাথে ব্যবসা করেন। খুব প্রভাবশালি মানুষ। )

মমতাজ সাহেবকে বারবার করে ধন্যবাদ জানাই। জিজ্ঞাসা করলাম সিট কি দু-একটা খালি ছিল? উনি বললেন- না, একটা বাচ্চাকে ছুটি করিয়ে দিয়ে আপনাদের বাচ্চাকে ভর্তি করালাম । আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। ডাক্তারদেরকে জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি মাঝে মাঝে কসাইয়ের কাজও করতে হয় । কিছু বলার ভাষা খুজে পাইনা


৩০ ঘণ্টার উপরে ঘুমানোর কোনো সুযোগ হয়নি। গত ১৫-১৬ ঘন্টা পানি স্পর্শ করার সুযোগ হয়নি । অধিকাংশ সময়েই দাঁড়িয়ে বা দৌড়ের উপর ছিলাম। পিঠে প্রচন্ড ব্যথা করছে। রাতে এখানেই থাকতে হবে। আর সবাই যেভাবে আছে সেভাবেই থাকতে হবে। হাসপাতালে গেটে বিছানা বিক্রি হয় । কাজিনকে পাঠিয়ে দিলাম বিছানা কেনার জন্য । এক ভদ্রমহিলার অনুমতি নিয়ে তার বিছানার পাশে মাটিতে আমি বসে পড়লাম। ভদ্রমহিলা বড় সাইজের একটা পানের বাটার মতো পুটলি বের করলেন। ভাবলাম পান খাবেন । পুটলি খুলতেই দেখি একটা মানুষের বাচ্চা। দেখেই বোঝা যায়, আন্ডার ওয়েট। মনে হয় যেন একটা বড়সড় ব্রয়লার মুরগি ড্রেসিং করে রাখা হয়েছে। কাল রাতে জন্মেছে। মহিলার নাতনি। মেয়ে ওয়ার্ডে ভর্তি আছে , ভিতর বাচ্চা রাখার পরিবেশ নেই । বাচ্চা নানীর সাথে ফ্লোরে।


কাজিন বিছানা নিয়ে চলে এসেছ. ছোট বিছানার দাম দেড়শ টাকা, মাঝারিটা ১৮০ টাকা , সবচেয়ে বড়টা আড়াইশো টাকা কিন্তু সবচেয়ে বড় টা বিছানোর জায়গা করিডোরে নেই। এজন্য ১৮০ টাকা দামের টা নিয়েছে। আনুমানিক তিন ফিট বাই সাড়ে পাঁচ ফিট সাইজের বিছানা ।

ইমার্জেন্সি গেটে বিছানার দোকান

কাল রাতে মেঝেতে কোনো ফাঁকা জায়গা দেখিনি। আজকে একটু ফাকা জায়গা দেখা যাচ্ছে। কারণ সকাল দশটা থেকে দুপুর দুটা অনেক রুগি রিলিজ নিয়ে চলে যায়, এই জায়গা গুলো খালি হয়। এর পরে আবার পরদিন সকাল দশটা পর্যন্ত বাড়তেই থাকে, কমে না।

আলোচনা করে ঠিক হলো আমি আর কাজিনের শশুর আপাতত বাসায় চলে যাই , কাজিন আর তার ও ফুপু শাশুড়ি এখন ডিউটিতে থাকবেন। সন্ধ্যার আগে/পরে আমি চলে আসবো।

একটা ফাঁকা জায়গা বের করে বিছানা বিছিয়ে ফেললাম। সমস্যা হলো রোগী ২১২ ওয়ার্ডে , বাচ্চা ২১১ তে । যদিও কাছাকাছি, তারপরেও খানিকটা ব্যবধান আছে । দুই ওয়ার্ডের যে কোনটা থেকেই যে কোনো সময়ে ডাক আসতে পারে। দু জায়গায় থাকার মতো লোকবল আমাদের হবে না। উপায় কি?

ব্যবস্থা হয়ে গেল । গেটের সামনে কর্তব্যরত আনসার দের ১০০ টাকা চা নাস্তার জন্য দেওয়া হলো। ওনারা জানালেন- বাচ্চার কোন প্রয়োজন হলে বা ডাক্তার খোঁজ করলে আমাদেরকে ২১২ তে এসে খবর দিয়ে যাবেন।


২:১৫ বাজে । কাজিনের শশুর কে নিয়ে আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম।

ডিএমসিএইচ-এ কয়েকদিন- ৩য় পর্ব

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৯:৪৯

ঢাবিয়ান বলেছেন: সরকারী হাস্পাতালগুলর অবস্থা আসলেই ভয়াবহ। আমার খুব কাছের প্রিয়জন সরকারী হাস্পাতালের ডাক্তার।তারা বলেন যে স্বাস্থখাতে যদি লুটপাঠ না চলত তাহলে খুব ভাল চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হত। কারন স্বল্পকিছু লোভী ডাক্তার ছাড়া বেশিরভাগ ডাক্তারই সেবা দিতে আগ্রহী। কিন্ত তাদের হাতে কোন ক্ষমতা নাই। তারপরেও তারা যেটুকু হাতের কাছে পায় সেটা দিয়েই সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৪

মা.হাসান বলেছেন: আগে হাসপাতালগুলোতে ঠিকাদাররাই ঠিকাদারি করতো। কিছু এদিক ওদিক হতো, কিন্তু সীমার মধ্যে। এখন রাজনীতিবিদরা ঠিকাদার হয়েছেন। আমার দেখা সবগুলো হাসপাতালেই এই অবস্থা। ডাক্তাররা কি সেবা দিবে, না কি এর সাথে লড়াই করবে? কত করবে?
ড্যাব এবং এর পরে স্বাচিপ হয়ে অবস্থা আরো ভয়াবহ। অযোগ্য ডাক্তাররা রাজনৈতিক বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ পদে চলে যাচ্ছে। আরেক আছে অ্যাডমিন ক্যাডার। দেশ এদের নানার। অসহায়ের মতো চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করার নেই।

২| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৮

রাজীব নুর বলেছেন: দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর হয়ে গেছে। অথচ সরকারী হাসপাতালের কোনো পরিবর্তন হয় নাই। তাহলে এতদিন স্বাস্থ্য মন্ত্রী কি করলেন?

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০৭

মা.হাসান বলেছেন: পরিবর্তন কিছু তো হয়েছে। বেশির ভাগ হাসপাতালে আগের চেয়ে আসন বেড়েছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা অনুসারে সেবা পাই না। মন্ত্রীরা তো লুকিং ফর শত্রুজ এন্ড নাশকতাকারি। বিরোধি দল ষড়যন্ত্র না করলে অবস্থা অনেক আগেই আরো ভালো হতো।

৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার না ভয়ংকর অভিজ্ঞতা !!
আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর বর্ণণার জন্য।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:১২

মা.হাসান বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ নূরু ভাই , ব্যস্ততার মাঝেও সময় করে পড়ার জন্য।
আপনি ঠিক ধরেছেন। অভিজ্ঞতার খানিকটা ভালো লাগার, খানিকটা কষ্টের, কোনো কোনো সময়ে হাসিতে গড়িয়ে পড়েছি, তবে বেশির ভাগ অংশই ভয়ংকর।
অনেক শুভকামনা।

৪| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:৫৭

আমি সাজিদ বলেছেন: আপনি ছিলেন দেখে আপনার কাজিন একটা শক্তি পেয়েছে। দুটো পর্বই পড়লাম। হসপিটাল ম্যানেজমেন্টে আরেকটু ভালো করলে রোগীরা কম কষ্ট পাবেন। রোগীর স্বজনরাও স্বস্তি পাবেন। কাজিনের ফুফার মতো লেট লতিফ মানুষজন আছে প্রত্যেকের দুইএক জন। বিপদের মুহুর্তে সিদ্ধান্ত দিতে বা উপদেশ দিতে খবর নাই, বিপদের পরে এসে চটাং চটাং কথা বলবে।

আমার গাইনী অবস রোটেশনের কথা মনে পড়ে গেল। ইন্টার্নে সবচেয়ে বেশী দৌড়াদৌড়ি গাইনীতে করেছি। রোগী নিয়ে ওটিতে দৌড়াও, রক্তের জন্য রোগীর লোকদের বারবার বলো। ওটি নোট লেখ। পারলে এসিস্টে দাঁড়াও। ফলো আপ দাও। ডিউটি শেষে যেতে চাইলে এমনভাবে রেজিস্ট্রাররা তাকাতো যেন বলে অপরাধ করে ফেলেছি।

মানুষের কতো কষ্ট৷ হাসপাতালে দেখতে দেখতে অমানুষ হয়ে গেছি প্রায়। মানে থ্রেসহোল্ড লেভেল বেড়ে গেছে।
সবচেয়ে বেশী মানুষ কষ্ট পায় সিসিইউতে। আমিও কষ্ট পেয়েছি সিসিইউতে। এই ভালো রোগী দেখতে দেখতে নেই।

স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরেকটু সিস্টেমেটিক ওয়েতে আনা গেলে, সরকারি হাসপাতালে দালালের দৌড় কমাতে পারলে মানুষ আরেকটু খুশী হতো।



০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩১

মা.হাসান বলেছেন: নিজের স্ত্রী বা সন্তানের বিষয়ে এরকম সংকট কালীন সময়ে সিদ্ধান্ত নেয়াটা কঠিন। ডাক্তাররাও মনে হয় কাছের লোকদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে জটিলতা থাকলে সেকেন্ড অপিনিয়ন নেন। এরকম সময়ে পাশে যে কেউ থাকলে একটু ভরসা লাগে এই যা। আমার যে কোনো সমস্যাতেও দ্বিধা না করে এই কাজিনটিকে ডাক দেই, সেও অনেক সময়েই আমার ভরসা হিসেবে কাজ করে।

ফুপাকে দোষ দেই না। যার সরকারি হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ড দেখার অভিজ্ঞতা নেই, সেই ঐ অবস্থা দেখলে বিচলিত হয়ে পড়বে।
আমি নিজে ইন্টারনি ডাক্তারদের দেখেছি- রোগির রক্তের দরকার, ম্যানেজ করতে পারছেন না, এই অবস্থায় ডাক্তাররাই রক্ত দিয়েছেন। আমার এক ডাক্তার বড় ভাই (আপন না) একবার বলেছিলেন- ছয় বছরে যা রক্ত দিয়েছি তাতে মনে হয় একজনকে গোসল করানো যায়।
মানুষ খারাপ অভিজ্ঞতাটা মনে রাখে, ভালোটা, এটাই হিউম্যান নেচার।
আমি নিজে মাঝে মাঝে হাসপাতাল আর কবরস্থানে চক্কর দেয়ার পক্ষপাতি । মৃত্যুর কথা স্মরণ হওয়া দরকার। তবে হাসপাতালে দীর্ঘ সময় থাকলে ( বা যারা গোরস্থানে গোরখোদকের মতো পার্মানেন্ট চাকরি করেন তাদের) আসলেই থ্রেশহল্ড লেভেল বেড়া যাবার কথা।
ইউরোপে গভর্নমেন্ট সেক্টর স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে। আমেরিকায় এটা অনেকটাই প্রাইভেটাইজড। সদিচ্ছা থাকলে যে কোনো সিস্টেমেই মানুষকে সেবা দেয়া যায়। অ্যাডমিন ক্যাডার আর পলিটিশিয়ান এই দুই জাতের বিলোপ না হওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য খাটের পরিবর্তন হবার সম্ভাবনা দেখি না।

চিন্তা করে লেখা মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৩:০৫

আমি সাজিদ বলেছেন: ঢাবিয়ান ভাইয়ার কথার সূত্রে বলি, স্বাস্থ্য খাতে সবচেয়ে প্রভাবশালী হচ্ছে ঠিকাদারেরা। সেটা রোগীর খাবারের ঠিকাদার হোক, রোগীর বেডের চাদর ধোয়ার ঠিকাদার হোক কিংবা যন্ত্রপাতি ইমপোর্ট ও সেটাপের ফ্রিল্যান্সার ঠিকাদার হোক। এদের সাথে খাতির প্রভাবশালী ব্যক্তির। এদের কথায় হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট নড়ে উঠে। এমন সিন্ডিকেটগুলোর কথা তো সবার জানা। হাসপাতালে সবচেয়ে অসহায় শ্রেনী ডাক্তার (কিছু কমিশনখোর আছে এই পেশায় এদের বাদ দিলে)

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪১

মা.হাসান বলেছেন: হাতে গোনা কয়েকজন লোক এই সিন্ডিকেট চালাচ্ছে। এবারের অভিজ্ঞতা থেকে বলি- ডিএমসির খাবার সরবরাহ এবং ঝাড়ুদার (এটা এখন হাসপাতালের কর্মচারিদের দিয়ে করানো হয় না , শুনলাম থার্ড পার্টির কাছে চলে গেছে। ) দুটা একই সিন্ডিকেটের দখলে। একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর স্বজনরা সরাসরি দেখছেন। ৯০এর দশক থেকেই হাসপাতালের ঠিকাদারি প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে নেই, রাজনীতিকিকরণ হয়েছে।

সবাই খায়। ডাক্তাররা খেলে দোষ কি? যারা সমালোচনা করে, এদের দায়িত্ব দিলেও দেখা যাবে এদের মাঝের বড় একটা অংশও একই কাজ করছে। পুরা দেশ না পাল্টায়ে শুধু হাসপতাল পাল্টানো সম্ভব?

৬| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৬:১৪

সোহানী বলেছেন: আপনি কি জানেন মেডিকেলের একজন ২য়/৩য়/৪র্থ কর্মচারীর কত টাকা? যদি এরকম কেউ পরিচিত থাকে তাহলে হার্টফেল করার সম্ভাবনা আছে। এরকম একজনের বাসায় যেয়ে আমি রীতিমত স্ট্রোক করেছি। একজনকে তো দেখলাম গত সামারে কানাডা বেড়াতে আসছিল বউ বাচ্চা সহ :P

বেবি কেমন আছে ও মা?

তবে একটা কথা বলি, ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা অসম্ভব ভালো কিন্তু। আর কানাডার সাথে তুলনা করলে বলবো আমাদের পাড়ার ১০০ টাকা ভিজিটের ডাক্তারও এর চেয়ে ভালো.....। সে গল্প আরেকদিন।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:১৯

মা.হাসান বলেছেন: বাচ্চা ও বাচ্চার মা ভালো আছে।

দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশের মানুষের উন্নতি হচ্ছে, টাকা পয়সা হচ্ছে এটা খুব ভালো তো। আমারো খুব ইচ্ছা ছিলো কানাডিয়ান রকি দেখার, কিন্তু আমার তো হাসপাতালে চাকরি না :( । তবে টাকা জমাইতে পারলে একটা ক্লিনিক দিতে পারি। তখহন না হয় দেখা যাবে।

আগের পর্বে ওমেরা ইউরোপের চিকিৎসা ব্যবস্থার যে কথা বলেছিলো, তাতে ঐ কমেন্টের জবাবে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলাম যে ওমেরা গুল মারছে :P । আপনার কথা শুনে নিশ্চিত হওয়া গেলো। ডোনাল্ড ট্রাম্প যে চিকিৎসা পেতো , ডিএমসির চিকিৎসা তার চেয়ে ভালো ছাড়া খারাপ না। শুনছি ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি বাংলাদেশের পাসপোর্ট চেয়ে আবেদন করেছে :#) । আমার মনে হয় ট্রুডোও মেয়াদ শেষে বাংলাদেশে চলে আসবে।

আরেকদিন কেনো? শিগগিরই দেন। উন্নতিতে আমরা কানাডকে যে ছাড়িয়ে গেছি এটাতো সবাই জানি। খালি কেউ কেউ হিংসা কোরে স্বীকার করে না X(( । আমরা জানি আপনি হিংসা একদম করেন না। :D

৭| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৭:৫১

আমি সাজিদ বলেছেন: সোহানী আপুর বলা ' পাড়ার একশো টাকা ভিজিটের ডাক্তার' এইটুকু আমার মন খারাপ করে দিলো৷

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:২৮

মা.হাসান বলেছেন: লেখা পড়ে অনেক সময় টোন ধরা যায় না, একজন কি বুঝাতে ঐ কথাটা বললেন তা নিয়ে দ্বিধা থাকে। একেক জন একেক অর্থ করতে পারেন। আসলে সামনা সামনি কথা হলে কথার টোন থেকে জিনিসটা পরিস্কার হয়। আমার কেনো যেনো মনে হয়েছে উনি নেগেটিভ ভাবে একথা বলেন নি। বড় সড় সাইনবোর্ড ওয়ালা ডাক্তার না, বিপদে মহল্লার যে ডাক্তারের কাছে রাত বিরেতে যাই তার কথা বলেছেন।

আপনি এই লেখা দুটো পড়ে দেখতে পারেন-
1

2

৮| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৯:৪৯

জুল ভার্ন বলেছেন: নৈরাজ্যের আর এক নাম- বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ!

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৩৭

মা.হাসান বলেছেন: সর্বত্র নৈরাজ্য। কোন খাতটাই বা ভালো আছে? ট্রেনে টিকিট কাটতে গেলে বুকিং ক্লার্ক বলে টিকেট নাই। পয়সা দিলে হয়ে যায়। পোস্ট অফিসে গিয়েছিলাম, একটা পার্সেল পাঠাতে হবে। বুকিং কাউন্টারে বললো, প্যাকিং ঠিক হয় নি, নেয়া যাবে না। কিভাবে প্যাক করবো? বাইরে পান দোকানদারের কাছে যান, উনি দেখিয়ে দেবে। জন্মের সময়ে হাসপাতালে এই কাহিনি। মরার পর কবরস্থানেও অনেক হয়রানি হতে হয়। রেহাই নাই কোথাও। এক ব্লগ আছিলো যেখানে মনের দুঃখের কথা লেখা যাইতো- এই বিষয়ে আর কমু না, আপনার অভিজ্ঞতা আমার চেয়ে বেশি।
দুঃখ না বাড়াই।
অশেষ শুভকামনা।

৯| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৩০

রাজীব নুর বলেছেন: আমার মা স্কয়ার হাসপাতাল পছন্দ করেন না। তার ভালো লাগে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসা। সেখানকার ডাক্তাররা নাকি অনেক ভালো। অভিজ্ঞ।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: আন্তরিক ভাবে প্রার্থনা করি, আপনার মাকে যেনো কোনো হাসপাতালে যেতে না হয়।

ডিএমসির অনেক ডাক্তারই স্কয়ারেও প্রাকটিস করেন। সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার চাইলেও অনেক সময়ে ভালো চিকিৎসা দিতে পারেন না। মাফিয়াদের দৌরাত্ব থাকে। ডাক্তার নিজেই যদি পরিবেশ নিয়ে অশান্তিতে থাকে কি ভাবে চিকিৎসা দেবে? আমার জানা মতে স্কায়ার হাসপাতাল থেকে ডাক্তারদের উপর কোনো চাপ থাকে না অযথা টেস্ট করানোর। ডাক্তাররাও এখান থেকে কমিশন পান না। বাকি যে যেখানে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেখানেই যাওয়া দরকার।

১০| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কি ভয়াবহ বাস্তবতা!!
কত মানুষের চোখের জলে নাকের জলে একাকার হয়ে কে রাখে তার খবর?

ভাগ্যিস মমতাজ সাহেবকে পেয়েছিলেন। নইলে কি যে ছিল কপালে!!!!

পরিত্রাণের পথ কি কেউ খোঁজে?
নাকি এভাবেই চলবে অনন্তকাল????

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫১

মা.হাসান বলেছেন: কত মানুষের চোখের জলে নাকের জলে একাকার হয় তার খবর এ জগতে না রাখলেও এক যায়গায় হিসেব দিতে হবে। কতৃপক্ষ এটা মনে হয় ভুলে গেছে।

মমতাজ সাহেব ভালো না মন্দ লোক এ বিচার কবতে চাই না। আমাদের জন্য উনি অসম্ভব উপকার করেছেন। যে কয়দিন ছিলাম, ওয়ার্কিং ডেতে প্রতিদিনই খবর নিয়েছেন। সকলের এই সৌভাগ্য নেই। পরের পর্ব গুলোতে এর কিছুটা তুলে ধরার আশা রাখি ।

এভাবেই চলবে অনন্তকাল?
মোটেই না, ২০৪১এর মধ্যে গ্যালাক্সির সবাইকে ছাড়িয়ে যাবো B-))

১১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:২৬

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: এক হাসপাতালেই এতো ভালো মানুষের সমাহার। এই দেশের উন্নয়ন ঠেকায় কে। রোগী মারা গেলে, লাশ বের করতেও অনেক টাকা আর ঝামেলা পোহাতে হয়। আমার মনে হয় ডাক্তাররা ওখানে অনেক ক্ষেত্রে খারাপ সিস্টেমের শিকার। তবে শুনে ভালো লাগলো যে ৮০% রোগীর সিজারিয়ান লাগে না। এটা ভালো না খারাপ সেটা অবশ্য ডাক্তার বা প্রসুতিরা বলতে পারবে।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:০৯

মা.হাসান বলেছেন: উন্নতি তো ঠেকানো যাচ্ছে নারে ভাই।

অ্যাক্সিডেন্ট বা অপঘাতে মারা গেলে লাশ নিয়ে কি হয়রানি হয় যারা না দেখেছেন তাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব না। হাসপাতালের ডোমদের এক মাইলের মধ্যে না যাওয়া ভালো।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ১০-১৫% মতো ডেলিভারি সিজারিয়ান হয়। আমাদের দেশে অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে টার্গেট দেয়া থাকে- কমপক্ষে এত ভাগ ডেলিভারি সিজারিয়ান করাতেই হবে। বড় বড় হাসপাতালগুলোতেও এটা আকছার হয়। বসুন্ধরার বিখ্যাত হাসপাতালেও এই ঘটনা ঘটতে দেখেছি। অপারেশন হলে ডাক্তার, হাসপাতাল সবাই লাভবান হয়। আজকালকার অনেক মায়েরাই ব্যথা সহ্য করতে চান না, স্বাভাবিক ডেলিভারির চেষ্টা না করেই সিজার করায়ে ফেলেন। নরমাল ডেলিভারির সময়ে নিসৃত ফ্লুইড বাচ্চাকে অনেক প্রোটেকশন দেয়। সম্ভব হলে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টাই করা উচিৎ।

১২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:০২

আমি সাজিদ বলেছেন: হা। মাঝে মাঝে কিছু মন্তব্য চিন্তাভাবনা করে লিখতে ভালো লাগে। সচিব ডিসি এদের পদোন্নতি নিয়েও আজকাল নিউজ হচ্ছে, কিন্তু আমাদের কোন প্রফেসর বাইরে সম্মাননা পেলেন বা কাজের জন্য এওয়ার্ড পেলেন এটা নিয়ে নিউজ খুব কম হয়। প্রথিতযশা নিউরোসার্জন কনক স্যার কয়েকদিন আগে নিভৃতে চাকরি জীবনের শেষ দিন পার করলেন, মিডিয়ায় তেমন সাড়াশব্দ হলো না। ওটা একদিক দিয়ে ভালো কনসেনট্রেশান নষ্ট হয় না, আবার একদিক দিয়ে খারাপ, কতোটা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও কাজ করে যাওয়া যায় সেটার একটা উদাহরণ মানুষ জানলো না। আমি ক্যাডার সার্ভিস বিলুপ্তির পক্ষে। চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগের পক্ষে। যারা জমিদারি করেন তাদের জমিদারীটা তখন আর থাকবে না। আর রাজনৈতিক ব্যাপার নিয়ে কি বলার আছে! এটা হতাশার জন্ম দিয়েছে অনেকের মনে।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: প্রফেসর নূরুল ইসলাম, ডাঃ ইব্রাহীম, ডাঃ এম আর খান, হারুন আই ফাউন্ডেশনের ডাঃ হারুন- এনারা সবাই লিজেন্ড। জীবনে অনেক কিছু গড়েছেন। বর্তমানে এনাদের সিকিভাগ যোগ্যতার আমলার কথা শোনা যায় না।
ডাঃ এ বি এম আব্দুল্লাহের মতো চিকিৎসক বাংলাদেশ না, এই মহাদেশে কম আছে। আজ করোনা , ভিআইপিরা বাইরে যেতে পারছেন না বলে ওনাকে যাও একটু পোছে। না হলে তো এটুকুও দাম ছিলো না।

ক্যাডার সার্ভিস নিয়ে অনেক গঠন মূলক প্রস্তাব গত ৩০ বছরে এসেছে। একটা ক্যাডারের জন্য কিছু বাস্তবায়ন করা যায় নি। যাবেও না।

এই বিষয়ে বেশি আর বলবো না। কোনো দিন যদি সামনা সামনি আলাপের সুযোগ হয় আলাপ করা যাবে।
অনেক শুভ কামনা।

১৩| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমাঢ় মন্তব্যের খুব সুন্দর উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪৪

মা.হাসান বলেছেন: ফিরে এসে মন্তব্য পড়ায় আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ।

১৪| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৩০

ওমেরা বলেছেন: আপনার দুইটা পর্বই খুব মনোযোগের সাথে পড়লাম। দেশের কোন কিছু নিয়েই আমার খুববেশী জানা বা অভিজ্ঞতা নেই। আম্মু যতদিন বেঁচেছিল ততদিন তবু আম্মুর কাছে থেকে কিছু জানতাম আর এখন এই ব্লগ থেকেই আপনাদের বিভিন্নজনের লিখা থেকে যতটুকু জানতে পারি এটুকুই আমার সম্বল।
আমার আম্মুর শেষ একটা অপারেশন হয়েছিল গ্রাষ্ট্রোলিভার হাসপাতালে আমি তখন ছিলাম সাথে কি অবস্থা দেখেছি সেগুলো মনে হলেও আমি অস্থির হয়ে যাই।

বিপদের সময় একটু সহানুভূতিও অনেক সাহস দেয় মনে । আর আপনি পাশে থেকে যে ভাবে আপনার আত্বীয়কে সাহায্য করেছেন আমি শিওর আপনি কিরপিন হলেও লোক ভালো।

অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । আর ভালো থাকুন সব সময়।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৫২

মা.হাসান বলেছেন: দেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে নিয়মিত বিটিভি দেখুন। ব্লগে সত্য পাবেন না।
বিটিভি এখন স্যাটেলাইটেও সম্প্রচার করা হয়। নাম সম্ভবত বিটিভি ওয়ার্লড। আপনার কেবল অপারেটরকে বলুন। না পেলে নিকটস্থ বাংলাদেশ এম্ব্যাসিতে কমপ্লেন করুন।

হাসপাতালে থাকার সাথে ভালোমানুষির কোনো সম্পর্ক নাই। করোনায় মানুষ ঘরে বন্দি থেকে হাঁপিয়ে উঠেছে। বাইরে যাবার অযুহাত খুঁজছে। আমার মতো অজুহাত দেখিয়ে কয়েকদিন বাইরে থাকার সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেকেই একমাসের বেতন দিয়ে দিতে রাজি । :P

আল্লাহর কাছে অন্তর থেকে আপনার আম্মার জন্য প্রার্থনা করি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস উনি যে জগতে আছেন খুব ভালো আছেন, পরম করুণাময়ের অনুগ্রহের মাঝে আছেন।

১৫| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:২৬

আমি সাজিদ বলেছেন: চারে আপনার প্রতিউত্তরের একটা অংশে আবার ফোকাস করতে চাই, তাই আবার আসলাম একটু খানি কমেন্ট করতে। ভিন্ন প্রসঙ্গে একটা উদাহরন দেই, দেখুন, জেলায় জেলায় করোনা সমন্বয়ের দ্বায়িত্ব জোর করে নিয়েছেন প্রশাসনের লোকজন। একটা বিষয়ে বিশেষ করে স্বাস্থ্যখাতে উনাদের অভিজ্ঞতা থাকার কথা না। প্রধানমন্ত্রীর ভ্যাক্সিন পাওয়ার জন্য তৎপরতা চালানোটা একটা চমৎকার কাজ ছিল, এটা ছাড়া কোন কিছুতেই সমন্বয় সাধন হয়নি। কি টেস্ট কি রিপোর্ট! কোন কিছুতেই না। স্কুল কলেজ খোলা না খোলা, এইচএসসি পরীক্ষা, বইমেলা, প্রতিযোগিতামূলক চাকরির পরীক্ষা ও এন্ট্রাস পরীক্ষা, সিদ্ধান্তগুলো মধ্যে এত বিরোধ যে আমি এগুলো নিয়ে ভাবা বাদ দিয়ে দিয়েছি। কেন এই সমন্বয়হীনতার কথা বললাম? আপনি প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে একটা কথা বলেছেন। কখন সমন্বয় সাধন হবে? প্রশাসন যখন যার কাজ যা তাকে তার কাজ করতে দিবে, সহযোগী হিসেবে কাজ করবে। রাজনৈতিক নেতারা যখন বুঝবেন দেশের জন্য ভেদাভেদ ভুলে লোভ ভুলে কাজ করতে হবে, সোনার ডিম পারা হাঁসকে একেবারে মেরে ফেললে ক্ষতিই হবে।

রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা শুধু স্বাস্থ্য কেন দেশটাকেই লাল ফিতে দিয়ে ধরে বেঁধে রেখেছে আর গিলে খাচ্ছে। আমাদের স্বভাব চরিত্র সব যদি বিবেচনা করি তাহলে আমি এত জলদি কোন সেবামূলক খাতের ভালো পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখিনা।

০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:০২

মা.হাসান বলেছেন: নির্বাহী আদেশ দিয়ে হাসপাতাল চলেনা। হাসপাতাল চালাতে নিবিড় পরিকল্পনা দরকার। নির্বাহী আদেশ দিয়ে ডিএমসিতে কোভিড রুগিদের জন্য আইসিইউ করা হলো। ফলাফল- অগ্নিকান্ড, রোগির মৃত্যু, সম্পদ নষ্ট।
গত বছরের শুরু থেকে চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা যে পরামর্শ দিয়েছেন তা মানলে এখন দেশে প্রতিদিন ষাট-সত্তর করে লোক মারা যেতো না। অক্সিজেন এমন একটা জিনিস সব দেশে আছে। প্ল্যান্ট ব্যয়বহুল না। এখন সময় নাই। বাইর থেকে আনতে হবে। সব দেশে সংকট, কে বেঁচবে?
ডাক্তারদের দেখেছি সরকারি হাসপাতালেই সেবা নেন। কোন আমলা দেশে সেবা নেন?
জলদি কেনো, যে ভাবে চলছে তাতে কোনো দিনই পরিবর্তন হবার কথা না।

১৬| ০৫ ই এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৩৯

করুণাধারা বলেছেন: আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থার এত চমৎকার বর্ণনা লেখাটিতে ফুটে উঠেছে- অনেকদিন এমন লেখা পড়িনি। বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয় ছবিগুলোর কথা, সারারাত দৌড়ের উপ্রে থেকে আপনি কী করে চিন্তার খোরাক জোগানো এমন ছবি তুললেন!!! দুই বেনী করে ওটিতে ঢুকতে হয়, এটা জানা ছিল না! এখন মনে পড়ছে, ঢাকার এক হাসপাতালে ওটিতে নেবার আগে নার্স বসে আমার চুলে বেনী করেছিল, বিদেশে একটা টুপি পরিয়ে শেষ।

আপনার মতো এমন করিৎকর্মা কাজিন থাকায় আপনার কাজিনের উচিত আল্লাহকে লাখো শুকরিয়া জানানো। ধরেন আপনি ঢাকায় নেই, শ্বশুর অসুস্থ, ফুফু ফুফা বাদ, ভাগিনা বাদ, মমতাজ সাহেব বাদ- অবস্থা কী দাঁড়াতো সেই অশুভ ভাবনা আর ভাবলাম না। কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই এত আপনজন থাকে না, তাদের জন্য আছে দালাল গং। সন্তানসম্ভবা একজন নারী খুব কষ্টে থাকে, অথচ নূন্যতম চিকিৎসা পাবেনা যদি লোকবল, অর্থবল অথবা শিক্ষার বল না থাকে।

কৌতুহল- কাজিনের শাশুড়ি নেই?

দেশকে খুব ভালবাসতো আমার এক বান্ধবী, বিদেশে উচ্চশিক্ষার পর ভালো চাকরি ছেড়ে এসেছিল দেশে থাকবে বলে, তারপর এক সরকারি হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসা বিভ্রাট হবার পর আবার বিদেশে চলে গেছে। আমরা অসহায়।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:২০

মা.হাসান বলেছেন: প্রথমে ক্ষমা চেয়ে নেই মন্তব্যের জবাবে বিলম্ব ঘটার জন্য । আমার পোস্টে এটা নিয়মিত হতে বসেছে। খুবই দুঃখিত এজন্য। বাস্তবিকই স্পিচ টু টেক্সট সফটওয়্যার আমার ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে না। অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটো লম্বা পোস্ট দেয়ার পরে হাতের কব্জিতে বেশ ব্যথা ছিলো বলে দু দিন গ্যাপ দিয়েছিলাম। সাত তারিখে ফিরেছিলাম, কিন্তু কুমির ভাইয়ের পারিবারিক গ্যাঞ্জামে হাত গলানোর সুযোগ পেয়ে আর এদিকে আসা হয় নি।

আপনাকে ধন্যবাদ খুঁটিয়ে পড়ার জন্য ।
রোগিকে ওটিতে ঢোকানোর পর একটা লম্বা সময় আমাদের করার মতো কিছু ছিলো না। বসার যায়গা ছিলো না বলে পায়চারি করতে হয়েছে, তখন কিছু ছবি তোলা হয়েছে।

ডাক্তারদের নিজেদের মাথায়ই টুপি নেই, পেশেন্টরা কোথায় পাবে? আমি ডাক্তার-নার্স কারো মুখে সার্জিকাল মাস্ক দেখি নি। বাজার থেকে কেনা মোটা কাপড়ের যে মাস্ক আমরা ব্যবহার করি, প্রায় সবার মুখেই সেরকম সাধারণ মানের মাস্ক ছিলো। এপিডুরালের সময়ে যাতে খোলা চুল ঝামেলা না করে সেজন্য মনে হয় বেণির বিধান।
হাজার হাজার লোক ডিএমসিতে চিকিৎসা নিতে আসে। কয়জনের সৌভাগ্য হয় পরিচিত লোক বের করে সহায়তা নেয়ার? যাদের টাকা আছে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। যাদের নেই তদের কপালে কি হয়রানি থাকে না দেখলে বিশ্বাস হয় না। এর কিছু বিবরণ পরের পর্ব গুলোতে দেয়ার চেষ্টা করবো।

আমার কাজিনটি বেশ করিৎকর্মা, মিশুক, আমাকে অনেক সময়ে অনেক ভাবে হেল্প করেছে এবং করছে। অন্য যে কোনো পরিস্থিতিতে সার্ভাইভ করা তার জন্য কঠিন ব্যাপার ছিলো না । তবে হাসপাতালের ব্যপারে তার একটু অভিজ্ঞতা কম ছিলো, আর সার্বিক অবস্থা এরকম ভয় পাইয়ে দেয়ার মতো যে আসলে নৈর্বক্তিক না থাকলে ওখানে কারো পক্ষে সুস্থ চিন্তা করা খুব কঠিন। আমি শুরু থেকেই বাচ্চাকে জীবিত নিয়ে যাবার আশা বিশেষ করি নি, আমার লক্ষ্য ছিলো বাচ্চার মাকে যেনো সুস্থ অবস্থায় নিতে পারি। এজন্য কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা ছিলো না।

কাজিনের শাশুড়ি খুব সাধারণ মহিলা, গ্রামে থাকেন, খুব অল্প শিক্ষিত, মোবাইলে ফোন করা এমন কি ফোন রিসিভ করাও জানেন না।
ঘটনার দু দিন আগে ওনারা গ্রাম থেকে এসেছেন। বাবা-মাকে কাছে পেয়ে কাজিনের ওয়াইফ উচ্ছসিত। দুদিন যেনো উড়ে বেড়িয়েছে (ঘরের মধ্যেই)। এর পর এই অবস্থা। বাসায় কাজিনের ছোটো ছেলে , নানি তাকে দেখে রেখেছেন, হাসপাতালে আসতে পারেন নি। পরে অন্য দিন এসেছিলেন।

দেশকে ভালোবাসেন রাজনীতিবিদের , ভূমিপুত্র এবং কন্যারা । আমরা কি আর দেশকে ভালোবাসতে জানি। :(

অনেক শুভকামনা।

১৭| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পইড়া নেই আগে, তারপরে মন্তব্য করমু। এখন বেজায় ঝামেলার মধ্যে আছি!! :D

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:২২

মা.হাসান বলেছেন: আপনার বড় ভাই থাকতে আপনি এত টেনশন লন ক্যালা? ওনারে কন, তুড়ি মাইরা সব ঝামেলা শেষ কইরালবো। ;)

১৮| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ! তিনি বড়ই করুণাময়, বড়ই মেহেরবান!

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৪৮

মা.হাসান বলেছেন: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর।

রেফারেন্স দিতে পারবোনা , বড়দের কাছে শুনেছি। একটু এদিক ওদিক হয়ে যেতে পারে সে জন্য মাফ চেয়ে নিচ্ছি ।
হযরত ওমর একজন লোককে ইঙ্গিত করে উপস্থিত লোকদের কে জিজ্ঞাসা করলেন - এর মাঝে আল্লাহর কোন নেয়ামতকে দেখতে পাও কি?
লোকটি ছিলো অন্ধ, বোবা, কালা, এবং কুষ্ঠ রোগী।
উপস্থিত লোকজন বললো - এর তো অভিশপ্ত জীবন । এর মাঝে কী নেয়ামত খুঁজছেন?
হযরত ওমর জবাব দিলেন - কেন লোকটি কি স্বাভাবিক ভাবে প্রস্রাব করতে পারে না ?
হাসপাতালে যারা ক্যাথেটার দিয়ে প্রস্রাব করেন তারা এর মর্ম বুঝবেন।
হাসপাতালে এক ঘন্টা কাটালে আল্লাহর নেয়ামত যতখানি বোঝা যায়, বাইরে সারা জীবনে তা বোঝা মুশকিল । তবে বেশিক্ষণ থাকলে অন্তর শক্ত হয়ে যেতে পারে।

হাসপাতালে অনেকের সহায়তা পেয়েছি। মেহেরবান খোদা দয়া না করলে রুগিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতো না।

১৯| ০৭ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৭

খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার এ সিরিজটি যদি কোন ব্লগার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের গোচরে আনতে পারেন, তবে তিনি একটা প্রাথমিক দায়িত্ব পূরণ করবেন। বাকিটা কর্তৃপক্ষের বিবেচ্য।

এ দুটো পর্ব পড়ে আপনার যে সহযোগিতা-সহমর্মিতার পরিচয় পেলাম, তাতে আমি রীতিমত মুগ্ধ!
আপনার এ পোস্ট বহুপঠিত হোক, কোন সহৃদয় কর্তাব্যক্তি কিংবা নেতা পাতিনেতার নজরে পড়ুক এবং তা থেকে সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হোক, এটাই কাম্য। অবশ্য সমস্যাগুলো দৈনন্দিন ভিত্তিক, প্রতিদিন কি করে এসব পর্বতপ্রমাণ সমস্যার দিকে নজর রাখা সম্ভব, সেটাও একটা বিরাট চিন্তার বিষয়।

একটা কৌতুহলঃ দুই বেণীর নীচে আরও কিছু কথা ছিল, যা মুছে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো কী ছিল?

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১২

মা.হাসান বলেছেন: ৯০ এর দশকে আমার বাবাকে একবার বলেছিলাম- 'গণতন্ত্র' আসলে সব সমস্যা সমাধান হবে শুনেছিলাম, এরশাদ চলে গেল । গনতন্ত্র আসলো। এখন কেন এই অবস্থা চলছে?
আমার বাবা বলেছিলেন- কতটা দেখেছো? ব্রিটিশ দেখেছি, পাকিস্তান দেখেছি, আইয়ুব দেখেছি, শেখ সাহেব দেখেছি, জিয়াউর রহমান দেখেছি , এরশাদ দেখেছি , এখন এনাদের দেখছি। সামগ্রিক ভাবে দিন কখনো আগের চেয়ে ভালো হয় নি, খারাপ হয়েছে।

যারা ঐ সময় গুলো দেখেছেন তারা যাচাই করতে পারবেন আমার বাবা কতটা সত্য বলেছিলেন, কতটা মিথ্যা । বিশেষজ্ঞরা হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স দিয়ে প্রমান করে দেবেন আমার বাবা মিথ্যা বলেছিলেন।

গতকালকে শাহ আজিজ ভাইয়ের একটা পোস্ট দেখেছিলাম। ফুপাথে কুকুরের পাশে একজন মানুষ। ঐ সমস্ত ইন্ডেক্সএর উপর আমার ঠিক ভরসা হয় না। বড় বড় আমলা-নেতারা আরো বড় উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত। আম পাবলিকের কথা ভাবার সময় কারো নেই।

আপনি ঠিক ধরেছেন, ঐ কাগজে আরো কিছু লেখা ছিল। অপারেশন থিয়েটারে ঢোকার আগে করণীয় কিছু কমন বিষয়। ব্লগে লিখলে ভুল বোঝাবুঝির অবকাশ থাকে বলে লিখে ওটা মুছে দিয়েছি।

বিলম্বে উত্তর প্রদানের জন্য দুঃখিত। মন্তব্যের উত্তর প্রদানের ক্ষেত্রে সিরিয়াল মেইনটেইন করছি না এজন্য ক্ষমা প্রার্থি।
অশেষ শুভ কামনা।

২০| ০৮ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৪৪

ঢুকিচেপা বলেছেন: দুই পর্বের পোস্ট পড়িয়া ইহাই প্রতিয়মান হইলো যে, আপনি আসলে সাহায্য করার বাহানায় ব্লগে পোস্ট দেয়ার রসদ যোগাড় করিতে গিয়াছিলেন।

০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১৪

মা.হাসান বলেছেন: ট্রেড সিক্রেট ফাস না করার জন্য অনুরোধ রইলো।
সোনারগায়ের রিসোর্ট নিয়ে একটা ভ্রমন কাহিনি লেখার ইচ্ছা আছে। আশা করি আপনাদের সহায়তা পাবো । :``>>

২১| ০৯ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:১০

খায়রুল আহসান বলেছেন: ১৮ নং প্রতিমন্তব্য প্রসঙ্গেঃ
আপনার এ পোস্ট পড়তে পড়তে আমার এবং আমাদের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন এর নেয়ামতের কথা ভাবতে ভাবতেই তো কোন মন্তব্য লেখার আগে ঐ প্রশংসাবাক্যটি বেরিয়ে গেল!
আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন আমাদের প্রতি প্রসারিত তাঁর দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য সকল নেয়ামতসমূহে বরকত দান করুন!

১১ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ২:৪৩

মা.হাসান বলেছেন: আল্লাহ রাব্বুল 'আ-লামীন আমাদের প্রতি প্রসারিত তাঁর দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য সকল নেয়ামতসমূহে বরকত দান করুন!
আমিন।
আল্লাহ তার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায়ের চেষ্টা করার তৌফিক দিন । আমিন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.