নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি সবুজ প্রজাপতি এবং অসময়ের শ্রাবণধারা

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫১

১।



ম্লান কোনো এক বিকেলে




উদভ্রান্তের মতো ছুটতে ছুটতে মেয়েটা সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলো। ওর ভীত- সন্ত্রস্ত পায়ের কাঁপন দেখে মনে হচ্ছিলো আমি ওকে এই মুহূর্তে পিছু ডেকেও থামাতে পারবো না। আমার ফ্ল্যাটটা সতেরো তলায়। ও এভাবে সিঁড়ি ভেঙ্গেই শেষ পর্যন্ত নিচে নামবে কি না কে জানে! নাকি প্রাথমিক দ্বিধা, ক্রোধ কিংবা অভিমান কমে গেলে বাটন চেপে লিফট থামাবে বুঝতে পারি না। মানুষ যখন তার পরিনতি জেনে যায় তখন তার নতুন করে আর কিছু করার থাকে না কিংবা করেও লাভ হবে না ভেবে হাল ছেড়ে দেয় শেষ পর্যন্ত। তাই ছোট করেই মেয়েটিকে বললাম ‘ কণা, দাঁড়াও। শুনে যাও।’। যদিও জানতাম এই ডাক শুনে কণা দাঁড়াবে না। তাই ছুটে গিয়ে ওকে আটকাইনি আর ।





আমার ফ্ল্যাটের দরজা আটকাবার আগ পর্যন্ত শুনতে পাচ্ছিলাম চটিতে ফটফট আওয়াজ তুলে কণার অনেকটা দৌড়ানোর ভঙ্গীতেই সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাবার শব্দ। শুন্য ঘরে করা কোনো শব্দ বা ধাতব জিনিসের শব্দে যেমন একটা অনুরণন তরঙ্গায়িত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে তেমনি ওর চটির শব্দ সিঁড়ি জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে । মূলত বিল্ডিং এর সবাই চলাচলের জন্য লিফট ব্যবহার করে বলেই পায়ে হাঁটার এই বিকল্প সিঁড়িটা একাকীত্বেই ভোগে বেশীরভাগ সময়েই। আর কণার এই ক্রোধ- দ্বিধার- অভিমানের মিলিত চটির কোরাস আজ ছড়িয়ে পড়ে যেন সিঁড়ির একাকীত্ব কিছুটা ঘুচিয়ে দিলো।





“ ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনীয়ার বুয়েট, পিএইচডি আমারিকা। সুদর্শন, ৫ ফুট ১১, বয়স ৩৬। সঙ্গত কারণে ডিভোর্স। ছুটিতে বাংলাদেশে অবস্থান করছে।উদারমনা , ধর্ম নিরপেক্ষ আগ্রহী পাত্রীগণ যোগাযোগ করুন সরাসরি। গোপনীয়তা রক্ষা করা হবে। মোবাইল এবং ঠিকানা- ….. …. …. ”





গত চার মাস আগে এরকম একটা বিজ্ঞাপন বাংলাদেশে আসার পর কয়েকটা জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় দিয়েছিলাম পাত্রী চাই জানিয়ে। কণার সাথে পরিচয় অবশ্য এই পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরে নয় । ডিভোর্সড, অবিবাহিত, বিধবা সব ধরনের পাত্রীর খোঁজই পেয়েছিলাম। তবে বিজ্ঞাপনটা ছাপা হবার পর আগ্রহী পাত্রীরা ছাড়াও পাত্রীদের অভিভাবকদের আগ্রহ চোখে পড়েছিলো তার চেয়েও বেশী এবং নগ্ন ভাবে। কেননা আমি ডিভোর্সড হলেও অবিবাহিত পাত্রীদের অভিভাবকদের কাছে মূল্যবান ব্যাপার ছিলো আমার একটা আমেরিকান পাসপোর্ট আছে। এখনো বাংলাদেশের মানুষের কাছে আমেরিকা স্বপ্নের দেশ হয়ে আছে।



আহা , আমেরিকা তুমি যে আমায় তলাবিহীন ঝুড়ি বানিয়েছ এ খবর তো কাউকে বলতেও পারছি না। সন্তর্পণে কেবল গোপন অসুখের দীর্ঘশ্বাসই বাড়িয়ে যাচ্ছি কেবল!



২।



ধূলিকণা এবং সবুজ স্বপ্নের সূচনা





লোকটি আমাকে ডাকতো ' ধূলিকণা' বলে। শুনে প্রথমদিকে একটু মজা পেলেও খুব দ্রুতই এই নামটি আমার খুব প্রিয় হয়ে উঠেছিলো। কখনো ' ধূলি ' কখনো ' কণা ' কিংবা কখনো শুধু ' ধূল ' । এই ধূলিকণা নামটা শুনলেই কেমন একটা হালকা পালকের নরম অনুভূতির কথা মনে হয় । সে যাই হোক , বলা যায় আমি ছিলাম তার নৈঃশব্দ্যের সকল গান যা আমি ধীরে ধীরে অনুভব করেছিলাম।





সবুজ রঙের লুকোচুরি দেখতে বেশ লাগে আমার - এরকম একটা বাক্যের মধ্য দিয়েই হয়েছিলো বসুন্ধরার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমাদের গল্পের শুরু। বারিধারা বসুন্ধরার যে জমির প্রকল্পটা ছিল হাঁটতে হাঁটতে ওখানে চলে গিয়েছিলাম আমরা। সবে কিছু কিছু প্লটে শৌখিন ডিজাইন করা বিল্ডিং মাথা তুলে দেখে নিচ্ছিলো তাদের জন্য গড়া নতুন পৃথিবী।





শীত আসতে তখনো দেরী ছিলো । কারণ এখনো এখানটার খালি প্লট গুলোতে কাশফুলের ছিটেফোঁটা দেখা যাচ্ছিলো যখন বাতাস এসে ঢেউ তুলে দিচ্ছিলো তাদের শরীরে আর আশেপাশের গাছের ডালে। যানবাহনের বিষাক্ত ধোঁয়া বসুন্ধরার আকাশটাকে ভারী করে না রাখলেও গাছের পাতারা যথেষ্ট সবুজ নয়। তাই সবুজ রঙের লুকোচুরি নির্ঝরের কাছে বেশ লাগে - এটা যে শুধুই কথার কথা তা ভেবে হাসি পাচ্ছিলো ।



সেই সবুজের লুকোচুরি কিন্তু আপনার মাঝেও আছে এটা কি জানেন - বলে আবার নীরবতা ভাঙে নির্ঝর। উচ্ছ্বসিত হয়ে বলি - তাই নাকি ? হুম , আপনি সবুজরঙা মেয়ে ; অনেক সতেজ! oh , what a silly dialogue - মনে মনে ভাবি আমি।



সেদিন তার সাথে খুব বেশী বাক্য বিনিময় আমার হয়নি। তবে রাতে ঘরে ফিরে আলমিরা খুলে খুঁজে দেখছিলাম সবুজ বা সবুজে আচ্ছাদিত আমার কোনো জামা বা শাড়ি অন্য জামা-কাপড়ের ভিড়ে কোথাও লুকিয়ে আছে কি না। আসলে ঘর বলতে আমার নিজের বাড়ির ঘর নয়। আমি থাকতাম উত্তরার একটা লেডিস হোস্টেলে। অনেকক্ষণ ধরেই আলমিরা খুলে দাঁড়িয়েছিলাম বলেই রুমমেট কাকলী জানতে চায় অনেকদিনের জন্য কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি কি না । ওকে সে উত্তর না দিয়ে বরং ওর চোখ দিয়ে দেখে নিতে চাই আসলেই আমি সবুজরঙা হয়ে গেছি কি না।





তবে এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে মূলত সেদিন থেকেই আমার দ্বিতীয়বারের মতো পরিণত বয়সে এসে সবুজ হয়ে ওঠার শুরু কিংবা আমিই যেন আবার নিজের অলক্ষ্যেই অপেক্ষা করছিলাম কেউ আমার সতেজতাকে আবিষ্কার করুক। সেদিন থেকে খুব ভালো মতো খেয়াল করতে লাগলাম নিজের ত্বক, হাত- পায়ের আঙুল , চোখ এবং চুলও। ধীরে ধীরে আমার এই রঙের রূপান্তর আমার মাঝে এক ভালো লাগার বীজ মনে হয় বুনে দিয়েছিলো । হঠাৎ করে আসা এই সবুজ বাতাস আমার মাঝে তৈরি করেছিলো সেই সাথে এক স্বপ্নও।





৩।

বোহেমিয়ান সত্ত্বা




বলা যায় আমি ছিলাম ফেলো- ডি- সি। নিজেকে পোড়াতে ভালো লাগতো । অবশ্য আমার ঝকঝকে ব্যক্তিত্বের আড়ালে ব্যক্তিগত বিষণ্ণতা অথবা সুখানুভূতি ঢাকা থাকতো অন্যদের সামনে এবং আমি সে ব্যাপারে সফল ছিলাম।



একমুঠো নির্জনতা বা একা থাকতেই বুঝি ডিভি লটারি পেয়ে আমার আমেরিকার মাটিতে পা রাখা। ভুল বললাম, আমেরিকায় মাটি আবার কোথায়! পাথর খুঁড়ে খুঁড়ে খুঁজে ফিরবো নির্জনতা কিংবা ঘরে ফিরবো না বলেই হয়তো পথে বেরিয়েছিলাম না জানার পথে। বুয়েট ক্যাম্পাস, চারুকলা, ছাদের চিলেকোঠার রুমটা, বন্ধু- বান্ধব, মা-বাবা কিংবা বিত্ত- বৈভবের মাঝেও কেন নিজেকে ডানা ভাঙা শালিক মনে হতো জানি না। রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেন গেঁথে ছিলো আমার নৈঃশব্দ্যের সুর! মুক্তি নেই কোথাও। বলা যায় সবার কাছ থেকে জবাবদিহিতার ভয়েই একরকম আমার আমেরিকায় পালিয়ে আসা।





আমেরিকায় গিয়ে যখন পড়াশুনা , জীবিকা, প্রতিষ্ঠিত হবার স্বপ্নে দম ফেলার ফুরসত পেতাম না, থিসিস তৈরি করতে করতে রাত ভোর হতো, তখন খুব ক্লান্তি এসে ভর করলেও আমার ছোট রুমটায় সঞ্জীব চৌধুরী গেয়ে উঠতো -



‘চোখটা এত পোড়ায় কেন ও পোড়া চোখ সমুদ্রে যাও…সমুদ্র কি তোমার ছেলে, আদর দিয়ে চোখ নামাও!’





তবে আমেরিকাবাসের মাস ছয়েকের মাঝেই আমার জীবনে লাগে নতুন এক ওয়েভ। নিউজার্সির আকাশটায় হারিয়ে গিয়েছিল সঞ্জীব, অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড, জাতিকে বাঁচাবার উন্নয়নের যে ছক আর উপায় নিয়ে ভাবতাম , ছেলেবেলায় রেল কলোনির দেয়াল ভরিয়ে তুলতাম যে সংলাপে ‘ দীর্ঘজীবী হও স্বদেশ ’ – তা সত্যিই আমি হারিয়ে ফেলেছিলাম আমার ভেতর থেকে। বদলে সেখানে জায়গা করে নিয়েছিল নারী বা যৌনতা বিষয়ক ভাবনা। উইকেন্ডের দুটো দিন নারী দেহে খুঁজে ফিরতাম সোনালী রঙা পানীয়ের প্রস্তুতপ্রণালী এবং ডুবে যেতাম মাদকতায়।



কার্লার সাথে পরিচয় হয়েছিল এক বারের উন্মাতাল ড্যান্স ফ্লোরে। সেই থেকে শুরু হয়েছিলো আমাদের এক উদ্দাম জীবনের যেখানে বিয়ে নামক বন্ধন ছিলো না। তবে সংস্কার বলে একটা ব্যাপার পরিবার থেকে গেঁথে দেয়া হয়েছিলো বলে কিছুদিনের মাঝে ঘোরের মাঝে পড়ে আমি আর আর কার্লা বিয়ে করি শেষ পর্যন্ত ।প্রথম দিকে আমাদের দাম্পত্য জীবনে স্বস্তি ছিলো ভীষণ। সেই সাথে ছিল রাতের নীল আলোয় বিছানায় কার্লা আর আমার দুর্দান্ত পারফরমেন্স। তবে নিজেকে পোড়াবার অভ্যাস থেকেই বোধ হয় আমি কার্লার প্রতি আগ্রহ হারাতে থাকলাম ধীরে ধীরে , যদিও আমার আচরণে স্থূলভাবে তার প্রকাশ ছিলো না। যখন আমি উদভ্রান্তের মতো নক্ষত্র খুঁজে ফিরতাম জানালা খুলে তখন বাইরে থেকে আসা ফিনফিনে ধারালো বাতাসে ত্বক সচেতন কার্লা গায়ে গাউন জড়াতে জড়াতে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠতো সম্ভবত এই ভেবে তার জীবনসঙ্গী নির্বাচনে কোনো ভুল হয়ে গেলো না তো ! তবুও মাঝে মাঝে নিউজার্সির চাঁদের আলো দেখার জন্য আমার শিরা- উপশিরায় আন্দোলন দানা বেঁধে উঠলে কার্লা বিরক্ত হয়ে উঠতো - Oh Honey , Shut the window বলে ওর বিরক্তির উপর কাতরধ্বনি লেপটে দিয়ে আমার বিপরীতে পাশ ফিরে শুয়ে থাকতো। একসাথে থাকতে গিয়ে ও আবিষ্কার করতে পেরেছিলো আমার কর্পোরেট সত্ত্বার মাঝে খুব সন্তর্পণে ছড়িয়ে ছিলো এক অরণ্য। শুধু কার্লা সেই অরণ্যের রঙটাই দেখতে পায় নি।



তবে কি স্বাধীন সত্ত্বাও শৃঙ্খলিত হতে পারে ! – এই বিপন্ন বোধ যখন আমাকে কার্লার পাশে জর্জরিত করতে লাগলো , জীবনটা রঙহীন হয়ে যেতে পারে ভেবে আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবুজ দেখতে চাই আমার ব্যালকনীতে দাঁড়িয়ে। যদিও আমাদের ফ্ল্যাটে রঙের প্রাচুর্য ছিলো দেয়ালে দেয়ালে আর কার্লার পছন্দের রঙ ছিল – লাল। ওহ কী বীভৎস ! সেই লালের মাঝে আমি খুঁজে পেতাম কার্লার কামনাত্তেজক কণ্ঠ । ওর হাতের আঙুলের পলিশ করা লাল রঙা নখ , ঠোঁট আর অন্তর্বাসের লাল রঙে আমি অস্থির হয়ে ভাবতাম আগে কেন আমি অন্ধের মতো অস্থিরতায় কার্লার লাল লাভায় সাঁতার কেটেছিলাম সাতপাঁচ না ভেবে ! যদিও আমার অস্থিরতা বাহ্যিক আচরনের উপর ছাপ ফেলতো না ।



অরণ্য কখনো কর্পোরেট মানুষের বসবাসের জায়গা হতে পারে না আর এটা কার্লা বুঝতে পেরেছিলো বলেই ওর প্রাক্তন প্রেমিকের সাথে চলে গিয়েছিলো একটা ছোট চিরকুট আমার জন্য বিছানায় ফেলে -



" I have lost my smile with you. Hope we together ( Alex & me ) create a new wave again. Stay fine. Your - Carla "



কার্লা যাবার আগে ঘরে রাখা আমার দুইটা ক্রেডিট কার্ড এবং কিছুদিন আগের সই করা একটা চেক নিয়ে গিয়েছিলো যা আমি রেখেছিলাম আমাদের ফ্ল্যাটের ইন্সটলমেন্ট দেয়ার জন্য ।



প্রতারণাও তাহলে কখনো কখনো শিল্প হতে পারে বা তৈরি করতে পারে একজন শিল্পীকে - ভেবে আমি অনুভুতিশুন্য হয়ে যাই কিছু সময়ের জন্য। কেন যেন মনে হয় জীবনে অপ্রাপ্তি বা পূর্ণতায় আমার অভ্যন্তরে খুব বেশী পরিবর্তন আসেনি। কার্লা চলে যাওয়াতে আমি খুব একটা ব্যথিত হয় নি বরং নির্ভার হয়েছিলাম। অনেকদিন পর আমার বোহেমিয়ান সত্ত্বা তাই সঞ্জীব চৌধুরীকে আবার মনে করলো -



ওই কান্না ভেজা আকাশ আমার ভালো লাগে না

থমকে থাকা বাতাস আমার ভালো লাগে না

তুড়ির তালে নাচতে থাকা ভালো লাগে না

এই মরে মরে বেঁচে থাকা আমার ভালো লাগে না..



৪।



লতা-গুল্ম আর কচি ঘাসের জীবন




' প্রিয় পাখি ,



আজ আমার ক্লাস সেভেনের ফাইনাল পরীক্ষার শেষ দিনে স্কুল থেকে তামান্না, স্বপ্না আর আমি আমরা সরাসরি আমাদের বান্ধবী লাবনীদের বাসায় চলে যাই। ওদের বাসায় আমরা যখন মনোপলি খেলায় ব্যস্ত আর লাবনীর মা আমাদের দুপুরের খাবার টেবিলে সাজাচ্ছিলো , ওর টিপুভাই অকারণেই আমাদের সামনে ঘোরাঘুরি করছিলো বলে আমরা লাবনীকে ওর ভাইয়ের স্বভাব নিয়ে ক্ষেপাচ্ছিলাম , ঐ সময়েই আমাদের কাজের মেয়ে তাসলিমা দৌড়ে দৌড়ে এলো লাবনীদের বাসায় । বললো – কণা আপা, আপনের মায় আপনেরে আমার লগে অখনই বাসায় যাইতে কইছে। কি নিয়া জানি খালাম্মায় চেইত্যা রইছে।’ একবুক ভয় নিয়ে বান্ধবীদের সঙ্গ ছেড়ে বাসায় গেলে জানতে পারি আমার বয়সে নাকি বন্ধু- বান্ধবীর সঙ্গ ভালো না। লাবনীদের বাড়িতে উঠতি বয়সী ছেলে আছে। তাছাড়া ঋতুবতীও হয়েছি তাই রাস্তায় খেলাধূলাও বন্ধ করার ব্যাপারে নজর না দেয়ায় মা নিজেই নিজেকে দোষারোপ করলো । আর ফুপাতো ভাই সুজন এলে যেন তার সামনেও না যাই বলে মা চলে গেলো সামনে থেকে। সেদিন দুপুরে আমার আর খাওয়া হলো না।



শুরু হয় আমার বড় দু’বোন এর কারণে আমার শিকল পড়া জীবনের অসহনীয় দিনাতিপাত এবং আমার সবুজ, রঙিন কৈশোরকে ধুয়ে-মুছে রঙহীন করার ষড়যন্ত্র। হুম, আমি আমার শৃঙ্খলিত জীবনকে তাদের তৈরি করা ষড়যন্ত্রই বলি।







এই বয়সেই দেখ আমার কতো কষ্ট আর তোকে কেন সব জানালাম জানিস ? এই অন্ধকার, আমার বুকের কষ্টগুলো সবই তুই অন্য কোথাও রেখে আসবি দূরে কোথাও উড়ে গিয়ে আর ফেরার সময় রঙধনুর রঙ নিয়ে আসবি যা আমার মা, বোনেরা তুলে দিচ্ছে রোজ একটু একটু করে ।



আমি তোর ফিরে আসার অপেক্ষায় থাকব রে পাখি।



তোর রঙহারা বন্ধু



- কণা ’




হঠাৎই আলমিরার সামনে দাঁড়িয়ে মনে পড়লো সেদিন লাবনীদের বাসা থেকে ফেরার পর আমার পায়ে যে শিকল পড়ানোর সূচনা করা হয়েছিল, আমার লতা- গুল্মের কচি ঘাসের গন্ধওয়ালা পোশাকটা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিলো সেদিন আমার পড়নে সবুজ রঙের কামিজই ছিল; আমার স্কুল ড্রেস।



সে সময়টায় আমার পিঠাপিঠি ভাই মুহিব মাঝে মাঝে আমার জন্য স্নিগ্ধ বাতাসের এক খোলা জানালা হয়ে উঠতো । তবে আমার কাছে ওর একটা অদ্ভুত দাবী ছিলো । সুমি আপার কাছে ওর হয়ে প্রেমপত্র লিখে দিলে ও আমাকে গল্পের বই এনে দিবে বাসার কাউকে না জানিয়ে এই ছিলো ওর দাবী। সে যে কি দুরূহ কাজ একজনের হয়ে প্রেমপত্র লিখে দেয়া। তবে একই সাথে আমার ডায়েরিতে চিঠি লেখা চলছিল আমার নিঃসঙ্গতার সঙ্গী কাল্পনিক পাখিকে উদ্দেশ্য করে ।



‘ বুঝলি পাখি ,



আমি এখন অন্য এক জগতে চলে গেছি। বলতে পারিস এ এক আনন্দের জগত। যে জগতে আছে স্বপ্ন, বিপ্লব, স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার প্রত্যয় এবং নাতিশীতোষ্ণ ফাল্গুনীবাতাস।



আজ সমরেশ মজুমদারের সাতকাহন পড়লাম। একটা ভালো রেজাল্ট করতে পারলেই আমিও ঠিক দীপাবলি’র মতো হয়ে যাবো। আর তখনই আমি চলে যাবো এই বাসাটা ছেড়ে। তবে দীপাবলির বিয়ে করার মতো ভুল আমি করছি না। আমিও তোর মতো স্বাধীন হব রে পাখি।

’৭১ এর হাতিয়ারের মতো গর্জে ওঠার প্রস্তুতি নিচ্ছি আমি। সাথেই থাকিস।



তোর সাহসী বন্ধু

- কণা ’




মা , দেখে যাও তোমার ছোট মেয়ে কেমন সংগ্রামী হয়েছে। দেখো মা, কণা ডায়েরিতে এসব কি লিখে রাখছে – বললো মেজো আপা রুনা। সামনে তোর এসএসসি পরীক্ষা আর তুই বিয়ের কথা চিন্তা করতাছো কারণটা কী ? এই ঘরে আয়, আমার কথা শুইন্যা যা – শোবার ঘর থেকে মায়ের গলা শুনতে পাই আমি।



মা, আমি তো বলেছি আমি বিয়ে করতে চাই না।



বিয়ার নাম তুই মুখে আনবি কেন নির্লজ্জ মেয়ে – বলে মা।



তুই আমার ডায়েরি ধরসিস কেন রুনা আপা – বলে আমি আমার ডায়েরি রুনা আপার হাত থেকে কেড়ে নিতে চাইলে মা জানায় বাবা আসলে খাবার টেবিলে ডায়েরি পড়া হবে। তুই বেশী বারছস , তোর ডানা কাটনের ব্যবস্থা করতাছি দাঁড়া।



আমার ডানা কেটে ডায়েরি জব্দ করা হলেও এসএসসি পরীক্ষার পর মুহিব ভাইয়া আমাকে আরেকটা স্বপ্নের খাতা কিনে দেয় ওর বান্ধবী সুমিকে এখন থেকে নিয়মিতভাবে চিঠি লিখে দিবো এই শর্তে। ততদিনে আমি গর্ভধারিণীর ' জয়িতা ' হয়ে উঠেছিলাম।



" প্রিয় পাখি ,

আমি খুব শীঘ্রই এই বাসা ছাড়বো। কোনো এক পাহাড়ে গিয়ে থাকবো। ওখানে হবে আমার আলাদা একটা পৃথিবী। ইচ্ছা আছে আদিবাসীদের জ্ঞানের আলো দিবো , অধিকার সচেতন করে তুলবো, স্বপ্ন দেখতে , স্বাবলম্বী হবার প্রত্যয়ে গড়ে তুলবো। আমি জানি আমি পারবো।



তখন তুই আমার সাথে থাকবি তো পাখি ?



- তোর সাহসি বন্ধু

কণা "




নাহ বেশী কথা লিখলে আমার পরিকল্পনা বাসার লোকজন জেনে ফেলতে পারে ভেবে এখন সংক্ষিপ্তভাবে কম কম লিখি। তবে এবার যে-ই আমার ডায়েরি ধরুক তার হাত কাটবো আমি - ভাবতেই এক সংগ্রামী উন্মাদনার অনুভবে আমার মাঝে একটা সবুজরঙা হাসি ছড়িয়ে পড়ে ।







৫।



অন্ধকারের নির্জনতায়




তিনদিনের ফোন কথোপকথনে রুম্পার গলার আওয়াজে বোঝা সম্ভব হচ্ছিলো না আমার পক্ষে ওর সঠিক বয়স কত। এটা মেয়েদের ক্ষেত্রে অবশ্য একটা কমন ফেনোমেনা। রূম্পা বলেছিল ওর বয়স পঁয়ত্রিশ।



- আমার ছেলে পার্থকে নিজের মনে করতে পারবেন তো কেমন নাক টেনে টেনে কান্নার ভঙ্গীতে জানতে চায় রূম্পা। হেলভেসিয়ার কোল্ড কফিতে চুমুক দিতে দিতে হাসি মুখে রুম্পার দিকে আমি তাকাই ওর কথা শুনে।



- একমাত্র পার্থর কথা ভেবে গত চারটা বছর একাই ছিলাম আমি ,বুঝলেন?



চারটা বছর একা থাকা একজন ইয়াং মেয়ের জন্য কতখানি কঠিন হতে পারে ভাবতে চাই আমি।কারন যৌবন আমেরিকা বা বাংলাদেশ ভিত্তিক নয় । তবে অন্তরালে যৌবন কি বাঁধা মেনে চলতে পারে কি না আমি জানতে চাই রুম্পার কাছে।



রূম্পা তার স্ট্রেইট করা চুল আর কানের লম্বা ঝোলা দুল নাচিয়ে দ্বিধান্বিত হয়ে আমার প্রশ্নের মানে বুঝতে তার অক্ষমতা প্রকাশ করে।ওর ঝুলে যাওয়া স্তন আর ঘন মেকআপের আড়ালে ওর ত্বকের কমনীয়তা খুঁজতে গিয়ে মনে মনে ওকে প্রস্ট বলে একটা গালি আমার মনে এলেও এক সময় আমার যথেচ্ছ যৌনাচারের কথাও আমার মনে পড়ে যায়।



- পার্থর ছবি দেখতে চান ?বলে রূম্পা ওর মোবাইল আমার সামনে এনে দেখায় ওর ছয় বছর বয়সী ছেলের ছবি।



আমি কি আসলেও দ্বিতীয়বারের মত কোনো নির্দিষ্ট নারী দ্বারা বাঁধা পড়তে চাই কিনা এ ভাবনাটা হঠাৎ করেই এল সিরিয়াস ভাবে রুম্পার সামনে বসে । যদিও পত্রিকায় পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন দেবার আগেই তা আমার ভাবা দরকার ছিল। আর সেই বিজ্ঞাপনের সূত্র ধরেই আজ রুম্পার সাথে দেখা করতে আসা। নিছক বাংলাদেশে এসে সময় কাটানোর জন্য এই বিয়ে বিয়ে খেলায় নামলাম কিনা বুঝে উঠতে পারছি না এখনো। ইচ্ছে করলেই আমার মোহাম্মদপুরের ফ্ল্যাটের নির্জনতায় রুম্পার শরীরের ম্যাপটা দেখে নিতে পারতাম। নিউজার্সি থেকে ফেরার আগেই মা- বাবাকে ফোনে জানিয়েছিলাম বাংলাদেশে এসে এবার খুলনায় না গিয়ে ঢাকায় নিজের ফ্ল্যাটেই উঠবো আমি।



পার্থ খুব সুন্দর একটা বাবু – আমার কাছ থেকে এই কমপ্লিমেন্ট শুনে রূম্পা যেন মাটিতে তার পা খুঁজে পেলো । রুম্পাকেই আমি বিয়ে করছি এই ব্যাপারটা নিশ্চিত করতেই যেন ও বলে উঠলো – আমি জানতাম আমার ছেলেকে আপনার পছন্দ হবেই।



শিশুরা সবসময়ই সুন্দর বলে আমি উঠে দাঁড়াই। চলুন এবার যাওয়া ফেরা যাক - বলি আমি ।



আবার কবে দেখা হচ্ছে রুম্পার এই প্রশ্নে ওকে সন্তুষ্ট করবার জন্য তখনকার মত শুধু এটুকুই বলতে পারি ফোনে নিশ্চয়ই যোগাযোগ হবে।



সিঙ্গেল মাদাররা বিয়ে কেন করতে চায় সন্তান থাকার পরেও – কথার এক ফাঁকে রুম্পার কাছে জানতে চেয়েছিলাম। সে কি শুধুমাত্র বাচ্চার ভরণপোষণ , একজন বৈধ অভিভাবকের অনুসন্ধান কিংবা ভবিষ্যতের নিরাপত্তার কথা ভেবেই নাকি এসব ছাপিয়েও একজন নারীর একাকীত্ব বা সঙ্গির প্রয়োজনও অনুভব হয় বলে ? কিন্তু রুম্পার আনস্মার্ট জবাবে ওর গৃহিণীসুলভ মনোভাব এবং তার ছেলে পার্থ ছাড়া আর ভিন্ন কোনো ভাবনা খুঁজে পেলাম না।





একজন মানুষ মা বা বাবা হবার পরেও তার আলাদা একটা পরিচয় সে মানুষ , এই বোধের অভাব অনেকের মাঝেই আমি দেখেছি এবং আজকে রুম্পাও আমাকে হতাশ করলো । শিক্ষার আলো তাহলে মানুষের কোন বোধে প্রকাশ পায় ভেবে সন্দিহান হয়ে পড়ি আমি। একজন ব্যক্তিসত্ত্বা হিসেবে নিজের প্রতি নিজের যতক্ষণ না মনোযোগ এবং ভালবাসা আসবে ততক্ষন পর্যন্ত সে পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠবে না। রূম্পা বা রূম্পার মত মেয়েরা শেষপর্যন্ত একটা মাংসপিণ্ড হয়েই জীবনে বেঁচে থাকে, যাদের চোখে থাকে না কোনো স্বপ্ন অথবা গায়ে থাকে না কোনো সবুজ পোশাক যা জীবনের প্রতীক।



৬।



সবুজ বিপ্লব এবং বিজয়




শুধুমাত্র ‘ মেয়েমানুষ ’ হয়ে আমার পক্ষে জীবন কাটানো সম্ভব হয়ে উঠবে না আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আমার ছটফটে স্বভাবটা একমাত্র মুহিব ভাইয়া বাদে আমার পরিবারের আর কারো পছন্দ ছিলো না। আমার মা, নানি, চাচি এবং আমার বড় দুই বোন ভবিষ্যতে আমি যে গৃহিণী হিসেবে অকৃতকার্য হবো এবং স্বামীর সংসারের ভাত আমার কপালে নেই – এই দুশ্চিন্তায় তারা শিউরে উঠতো কিনা জানি না তবে আমাকে রোজ এসব মনে করিয়ে দিতে ভুলতো না। তাই এইচএসসি পাশের পরপরই আমার মা যখন আমার বিয়ের জন্য পাত্র খোঁজা শুরু করলো , তখন আমার প্রিয় পাখিটা এসে জানতে চায় ‘ কি গো মেয়ে, এবার কি করবে? পালাও তুমি। পায়ে যে শিকল পড়লো বলে!’



আমার দীপাবলি কিংবা জয়িতা , নাচোলের ইলামিত্র হয়ে ওঠা হয় নি তবে পালিয়েও যাইনি ঘর ছেড়ে। বাবার সাথে খাবার টেবিল ছাড়া খুব একটা কথা হতো না আমার । তবে উপরে উপরে বাবা কাঠিন্য দেখালেও উনি ছিলেন আমার জন্য আরেক স্নেহের আঁধার। তাই খাবার টেবিলেই বাবাকে বলি –



- আমাকে ঢাকা যেতে হবে ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা দিতে। আপনি সাথে চলেন।

- এত দূর যাবার দরকার কি তোমার ? এখানেই স্থানীয় কোনো কলেজে ভর্তি হয়ে যাও না কেন !



দেখেন না আব্বা , আমি কি পাস কোর্সে পড়ি নাই? আমার কি ভালো বিয়ে হয় নাই ? আর কণা কাউরে না জানাইয়া ঢাকা ইউনিভার্সিটির ফর্ম আনাইয়া আবার জমাও দেওয়াইছে কারে দিয়া , আব্বা ওরে জিগান – বলে রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে রুনা আপা নালিশ করে। ভাবখানা এমন যেন তার কথাতেই সব কিছুর সিদ্ধান্ত বা সুরাহা হয়ে যাবে। একটা মেয়ের জীবন বা পরিচয় যে শুধুমাত্র বিয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় তা কবে যে আমার ঘরের মানুষগুলো বিশেষ করে আমার বোন বুঝতে পারবে তা চিন্তা করছিলাম আমি। রিপন ভাইয়া মানে মেজো আপার হাসব্যান্ড জাপান থাকতো বলে রুনা আপা শ্বশুর বাড়ি না থেকে আমাদের বাড়িতেই থাকতো আর আমার জীবনটা অতিষ্ঠ করে তুলছিলো বলে ওর প্রতি ছিলো আমার ভীষণ রাগ।



- দেশের যা অবস্থা , হরতাল- অবরোধ লেগেই আছে। কীভাবে এতদূর যে তোমাকে পড়তে পাঠাই ঢাকাতে … বাবার মুখের কথা শেষ করতে না দিয়েই মা বলতে থাকে –



- তোমার মাইয়ার মতিগতি তো আমার ভালো ঠেকে না। দেখবা রাজনীতিতে জড়াইয়া যাইব, দেশ উদ্ধারে নামব। ওর তো ঝাঁসির রানী না হইলে হইব না! কত কষ্ট কইরা কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন থেইক্যা ওর নাম কাটাইতে আজিজের হাতে পায়ে ধরছিলাম ভুইল্যা গেছো ? ওর কোনো জায়গায় পরীক্ষা দিতে হইব না। ভালো দেইখ্যা একটা পোলা পাইলে বিয়া দিয়া দেও।



ইন্টারমিডিয়েট দ্বিতীয় বর্ষে কলেজের ডিবেট প্রতিযোগিতা আর বর্তমান রাজনীতি নিয়ে ছাত্রসমাজের ভাবনার পাশাপাশি সাধারণ জনগনের মতামত তুলে ধরতে আমাদের পাঁচজনের যে টিম ছিল তার পেপারওয়ার্ক এবং মাঠ পর্যায়ের কাজেও আমি ছিলাম মা এটা জানে না। তবে জানতে পারলে মা আজিজ ভাইয়ের গুষ্ঠি উদ্ধার করে ফেলতো নিশ্চিত। আর মেজো আপার সাথে যে আজিজ ভাইয়ের একটা লুকোচুরি সম্পর্ক ছিলো ঐ কলেজের ছাত্রী অবস্থায় তা মনে হয় এখন মেজো আপা ভুলে যাবার ভান করছে। কত জ্ঞানী জ্ঞানী ভাষণ এখন মেজো আপার মুখে। ভন্ডামি দেখলে গা জ্বলে যায়। সুখে থাকার অভিনয় করতে করতে এখন কোনটা অভিনয় আর কোনটা সুখ নিজেই বোঝে না বোধহয় !



- দেখছেন আব্বা , আপনের ছোট মাইয়াটা একটা ফাজিল। ওর চুপ কইরা থাকা দেইখ্যা বুঝতাছেন না আপনে মানা করলেও ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিবো



- আহ রুনা , দেক না ও পরীক্ষা। আর চান্স না পেলে তো ভর্তি হচ্ছে না।



- জাহাঙ্গীরনগর আর রাজশাহী ইউনির ফর্ম এনেছিলাম। ওখানেও আমার পরীক্ষা দিতে হবে - বলে আমি খেতে থাকি।



আমার স্বপ্ন, মানুষ হয়ে অধিকারবোধের লড়াই বৃথা যেতে দেইনি আমি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পদার্পণের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমার সবুজ বিপ্লব।



৭।

পরিবর্তনের হাওয়া অথবা আলোর মিছিলে




কার্লা চলে যাবার পর যে আমি খুব বিষণ্ণ হয়ে পড়েছিলাম তা নয়। ওর সাথে এক ফ্ল্যাটে থাকতে গিয়ে বরং মনে হতো নিজের ঘরেই নিজেকে অতিথির মতো থাকতে হচ্ছে। ও একটা টেলিকম কোম্পানিতে কাজ করতো বলে ওর ছিল শিফটিং ডিউটি। তাই বেশীরভাগ সময়েই সকালের নাস্তা বা ডিনার আমাকে একাই করতে হতো । তখন খুব রিল্যাক্স বোধ করার কারণেই হয়তো কার্লার কাছে জবাবদিহিতা করতে হতো বেডরুমে কেন খাবারের টুকরো অংশ পড়ে থাকে কিংবা পানির গ্লাসটা এখানে কেন ইত্যাদি নানান কিছু নিয়ে ।



আসলে এত বছর থেকেও আমার পক্ষে ষোল আনা আমেরিকান হয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। তেমনি করে কার্লারও আমার বাঙ্গালিয়ানা সত্ত্বাকে ভালোবাসা হয়ে ওঠেনি , যা এক সাথে সংসার না করলে বোঝা হতো না। কার্লা অবশ্য আমাকে সবসময় বলতো আমার নাকি Typical Indian Tendency যদিও তার এশিয়ান কালচার, মূল্যবোধ নিয়ে যথেষ্ট ধারণা ছিল না। আমার কিছু আচরণ বা অনুভূতিকে কার্লা ট্রিট করতো কর্পোরেট সোসাইটিতে বসবাসের অনুপযোগী হিসেবে এবং সেই মানবিক আবেগগুলোর কারণেই সে এশিয়ানদের আচরণের দুর্বলতা ভাবতো এবং নিজের প্রভাব, ইংরেজ জাতি হিসেবে ও এশিয়ানদের চেয়ে উচ্চে অবস্থান করছে এসব ভেবেই ও খুব আরাম পেতো । যতদিন যাচ্ছিলো একমাত্র শারীরিক ব্যাপার ছাড়া কার্লা আমার আমার সঙ্গ পছন্দ করতো না আর আমিও ভালবাসাহীন সঙ্গমে ক্লান্তি বোধ করতাম একটা দাম্পত্য সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে। তাই বোধ হয় আমরা আলাদা হয়ে যাই যা প্রকাশ্যে এনেছিলো কার্লা।



এবার দেশে ফিরে নির্জনতা পেতেই খুলনায় মা – বাবার কাছে ওঠা হয় নি। একমাত্র সন্তান হিসেবে হয়তো আমার কাছে তাদের প্রত্যাশাটা বেশীই ছিল কিন্তু একমাত্র ফোনে খোঁজ- খবর নেয়া এবং টাকা- পয়সা দেয়া ছাড়া তাদেরকে অন্য কোনোভাবে আমি সন্তুষ্ট করতে পারিনি এ যাবত পর্যন্ত ।



সঙ্গ ছাড়া মানুষের ব্রেইন যেমন ভোঁতা হয়ে যায় তেমনি করে ভোঁতা হয় শরীরও। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় দেশে ফেরার ক’দিন পরই মাথায় যন্ত্রণা শুরু হলে গিয়েছিলাম বসুন্ধরার এপোলো হসপিটালে নিউরোলজি বিভাগে। ডাঃ অমিত , ইন্ডিয়ান ভদ্রলোকটি বেশ হাসিখুশি স্বভাবেরই ছিলো ।আমার সমস্যার কথা সব শুনে কিছু ওষুধপত্র ধরিয়ে দেবার পাশাপাশি দাম্পত্য জীবনে নতুন করে প্রবেশের পরামর্শ দিলো এবং সাথে দিয়েছিলো ইসিজি, সিটিস্ক্যান জাতীয় কিছু পরীক্ষা।



সেখানেই ওয়েটিং রুমে বসে পত্রিকার পাতা ওলটাচ্ছিলো কণা। তবে পত্রিকার পাতা উল্টিয়ে ভালো , মন ফুরফুরা করা টাইপের কোনো খবর যে ছিলো না তা কণার দীর্ঘশ্বাস ফেলে পত্রিকাটা পাশে সরিয়ে রাখতেই বুঝতে পারছিলাম। যদিও আমার চোখ কণাকে দেখার পাশাপাশি সেখানকার টিভি স্ক্রীনে এনিমেল প্ল্যানেট চ্যানেল দেখে দেখে বোর হচ্ছিলো ।



- এক্সকিউজ মি স্যার, মিস্টার অমিত উইল বি লেট ডিউ টু আ সিরিয়াস অপারেশন। উই আর ভেরি স্যরি ফর ইওর ইনকনভিনিয়েন্স। এসিস্ট্যান্ট মেয়েটির কথা শুনে কণা খুব বিরক্ত হয়ে জানালো ফোনে যখন ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নেয়া হয়েছিলো তখন হসপিটাল থেকে আমাদের জানিয়ে দেয়া উচিত ছিলো ডাক্তারের অপারেশনের শিডিউল দেয়া আছে। আর কম্পিউটারাইজড হসপিটালগুলোর এটাও জানা উচিত আমাদের সময়ের মূল্য আছে, অফিস ম্যানেজ করে তবেই আমাদের বের হতে হয়।



- স্যরি ম্যাম, উই এপোলাইজড টু ইউ হার্টলি– বলেও এসিস্ট্যান্ট মেয়েটি কণাকে সন্তুষ্ট করতে পারে না।



- ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড , টিল দেন ইউ ক্যান এনজয় নেসক্যাফে বলে কণাকে ওয়েটিং রুমের কর্নারে রাখা কফি মেশিনটি দেখালে কণা বলে



- আরে বলবেন না , সময়ের মুল্য নিয়ে দেখি না কাউকেই সিরিয়াস হতে। বিরক্ত লাগে খুব।



এভাবেই কথার সূত্রপাত কণার সাথে এবং ডাক্তারের আসার আগ পর্যন্ত এখানে বসে থাকার চেয়ে বাইরে হেঁটে আসলে মন্দ হয় না জানাতেই কণা রাজি হয় বলে আমরা হসপিটালের বাইরে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বসুন্ধরা বারিধারার যে কিছু জমির প্লট আছে ওখানে গিয়ে থামি।



কণা সংস্কারগ্রস্ত কোনো মেয়ে ছিলো না কিংবা ধর্মভীরুও নয়। সেদিন সেদিন হাঁটতে হাঁটতে ওর সাথে আমার বেশী কথা হয় নি। তবে ওর সাথে হাঁটতে হাঁটতে এক ফাঁকে মনে হয়েছিলো দেশে ফিরে পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন না দিয়ে ‘ বন্ধু চাই ’ বিজ্ঞাপন দিলে ভালো হতো বরং। কয়েকবছর আগে আরমান ভাই বান্ধবী চাই বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশে ছুটি কাটাতে এসে। বাংলাদেশে তার যে সময় ভাল কেটেছিলো তা উইকেন্ডের পার্টিতে যোগ দিলেই বুঝতে পারতাম। তবে আসল কথা হচ্ছে এই যে আমি মাংসসর্বস্ব মানুষ নই । তাই কণার সংক্ষিপ্ত সব উত্তরে বা ছোট ছোট দুই একটা বাক্যে নিজের অজান্তেই ঝলমলে একটা রোদ্দুরের গন্ধ পাচ্ছিলাম, আকাশটাকেও মনে হচ্ছিলো নীচে নেমে এসেছে অনেকখানি যেন চাইলেই ছুঁয়ে দেয়া যাবে। গাছের পাতাগুলোও সবুজ আর প্রানবন্ত লাগছিলো বলেই কণাকে বলে ফেলেছিলাম সবুজ রঙের লুকোচুরি খেলা দেখতে বেশ লাগে আমার।



কথায় কথায় কণা জানিয়েছিল ওর মাইগ্রেনের ব্যথাটা বাড়ায় ডাক্তারের কাছে এসেছিলো চেক করাতে।



- হুম , মাইগ্রেন একটা ভয়াবহ যন্ত্রণারই নাম বটে বলেছিলাম আমি। মন- মেজাজের সুস্থতা অসুস্থতার সাথে মাইগ্রেনের চেহারা রঙ বদলায় – আমার এই কথা শুনে কণাও তাতে সম্মতি জানায়।



আমি কোনো উত্তর করি না । বদলে ভাবি – একটা মরুভূমির এপ্রান্তর ওপ্রান্তর জুড়ে যে বিশাল সীমারেখা , সেখানে অনেক কিছুই হয়তো অংকিত আছে না পাবার ভাষায় যেরকম করে একজন মৃত মানুষের হাতের রেখায় থাকে না কোনো সবুজপাতা কিংবা সোনালী লতা-পাতায় থাকে না শিশিরকণা বা জলের স্পর্শ। তবুও কি মরুভূমি গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলে না বাতাসে কেঁপে কেঁপে সেও একটু সবুজ হয়ে উঠবে , রাত্রির নীল আলো ঢেউ খেলবে তার রুপোলী বুকে !



নিজেকে কণার সামনে একজন মৃত মানুষ মনে হতে থাকে যে কিনা আলোর মিছিলে যেতে চেয়েও ছটফটিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলো অনেক কাল আগেই ।



৮।

স্বপ্নের নির্মাণ এবং পথ চলা




কৈশোরের যে বোধ , মাথা নত না করা অন্যায়ের সামনে এবং মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার বোধের এই তরঙ্গগুলো আমার মাঝে কীভাবে গেঁথে গিয়েছিল তা খুঁজতে বসতাম তখনই যখন মা আর বোনদের ফোন আসতো বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হবার পরও কেন বাড়ি যাচ্ছি না , ছেলে বন্ধু জুটিয়ে উচ্ছন্নে ভেসে গেছি নিশ্চয়ই কিংবা মাদকের নেশায় জড়িয়ে পড়লাম কিনা ইত্যাদি নানান হীন চিন্তায় তারা বুঁদ থাকতো আর এসব শুনে আমারও মন বিষিয়ে উঠতো আরো বাড়ির ব্যাপারে। তাদের প্রতি দিন দিন অনীহাই তৈরি হচ্ছিলো আমার।



আমার ভাই মুহিব ছিলো খুব সাধারণ স্বপ্ন দেখা টাইপের একজন মানুষ। তাই ডিগ্রী পাসের পরপরই ইউরোপে পাড়ি জমিয়েছিলো । ওর অবশ্য ছোট একটা দুঃখ ছিলো সুমি আপাকে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে পারেনি বলে। আমার এই ভাইটা সেই ছোটবেলা থেকে আজ অবধি আমার একটা খোলা জানালা হয়েই আছে আমাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আর একজন হচ্ছে আমার বাবা। দেশের বাইরে থেকে মাঝে মাঝে ফোন করে মুহিব ভাইয়া আমাকে বলতো ও একেবারেই পাখি হয়ে গেছে। তাই এতো দূরত্ব অতিক্রম করে ওর বাংলাদেশে আর আসতে ইচ্ছে করতো না। সুমি আপাকে বিয়ে করতে না পারার পেছনেও কারণ ছিলো আমার মেজো আপা আর আমার মা কারণ সুমি আপাকে তাদের পছন্দ ছিলো না । কেন যে তারা অমন করতো কে জানে!



আমার বাবার মাঝে লুকিয়ে ছিলো একজন গভীর সত্ত্বার মানুষ আর এই সত্ত্বাকে অপরিসীম ধৈর্যে সবার অগোচরে লালন করে কি করে মায়ের মত বিপরীত মনের একজন মানুষের সাথে দীর্ঘ চল্লিশটা বছর সংসার করলেন ভেবে সত্যিই অবাক লাগতো । সেবার ঈদের ছুটিতে বাড়ি না গিয়ে বান্ধবী লামিয়াদের বাড়িতে কাটিয়েছিলাম সময়টা। হলে ফেরার পর বাবার একটা চিঠি পেলে অমঙ্গল আশংকায় বুকটা খালি খালি লাগলেও চিঠিটা মেলে ধরেছিলাম চোখের সামনে –



পার্বতীপুর





স্নেহের কণা,



আমার চার ছেলে- মেয়ের মাঝে তোমার মানসিক গড়ন একেবারেই আলাদা এবং তুমি খুব সংবেদনশীল বলেই জানি। আমিও খুব অন্তর্মুখী মানুষ তুমি জানো । তাই ঘরে কারো সাথেই আমার তেমন বাক্য বিনিময় হয় না। তবে তোমার মায়ের আর বোনদের তোমাকে ঘিরে সন্দেহ বাতিকগ্রস্ততা এবং অকারন দুশ্চিন্তায় দিনাতিপাত করতে দেখে তোমাকে ফোন না করে চিঠি লিখলাম। কারণ ফোনে এতো কথা আমি হয়তো তোমাকে গুছিয়ে বলতে পারতাম না।



আমি , তুমি বা আমরা মানুষরা কেন বেঁচে থাকি তা কি কখনো ভেবেছ ? জীবনে প্রত্যেকেরই একটা লক্ষ্য থাকে একটা সৌধ গড়ে তোলার , জীবনকে বড়, মহৎ এবং কীর্তিময় করে তোলার জন্য আমরা প্রতিনিয়তই স্বপ্ন দেখি। মনে রেখো যত দীর্ঘজীবন তুমি পাবে তোমার সাফল্য বা ব্যর্থতাও তত দীর্ঘ হবে।



সংশয় বা হতাশা কখনো আলগোছে মানুষের চিন্তা- চেতনায় ঢুকে পড়লে চলার পথটা কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে যেতে পারে। তখন হয়ত বেঁচে থাকবার বা জন্মাবার কারণ নিয়ে ভাবতে গেলে একটাই উত্তর আসবে – জানি না কেন বেঁচে আছি। কোনো কারণ নেই , কোনো উদ্দেশ্যেও নেই - এরকমটাই মনে হতে পারে।

তোমাকে এসব বলবার অর্থ আশা করি বুঝতে পেরেছো । তোমার জীবনটা তোমার , প্রত্যেকেরই অধিকার আছে নিজের মত করে বাঁচার। তোমার মায়ের কাছে প্রায়শই শুনতে পাই তুমি নাকি তোমার জীবনটা একলাই কাটাতে চাও। এখনো তুমি মাস্টার্স শেষ করোনি। হয়ত শেষ পর্যন্ত বাকী জীবনটা তুমি একা থাকার সিদ্ধান্তে নাও থাকতে পারো । তবে বাবা হিসেবে এটুকু বলবো , যে সিদ্ধান্তই তুমি নাও না কেন কখনো যেন তোমার মাঝে আফসোস না কাজ করে নিজের কৃতকর্মের জন্য।



তোমার বহির্মুখী মনে স্থিরতা আসুক, তুমি থিতু হও তোমার চিন্তায় এবং কাজে।

পারলে বাড়ি এসে কিছুদিনের জন্য ঘুরে যেও।

- তোমার বাবা




ভোরের হলদে আলোর গুড়োয় বাবার চিঠিটা আমাকে এক নাম না জানা সৌরভ দিয়েছিলো আর চোখের কোলটা একটু ভিজে উঠেছিলো আমার বাবার বিরহী সত্ত্বার জন্য।



মাস্টার্স ফাইনালের পর পার্বতীপুর কিছুদিনের জন্য বেড়াতে গেলেও স্বাবলম্বী হবার তাগিদে জীবিকার অন্বেষণে ঢাকা চলে এসেছিলাম পায়ের বেড়ীবাঁধ পড়ানোর চক্রান্ত থেকে মুক্ত হয়ে। মা বারবার বলেছিল আমার মুখ আর দেখতে চায় না। আমারও অভিমানে চার বছর হতে চললো আর ওমুখো হওয়া হয়নি ।



আমি আমার চিন্তায় স্থির ছিলাম। যদিও আমাদের আর্থিক অবস্থা মুহিব ভাইয়া বিদেশ যাবার আগেও বেশ ভাল ছিলো তবুও নিজের উপার্জন যে একটা মানুষের জীবনে বাড়তি আনন্দ যোগ করতে পারে তা বেশ উপভোগ করছিলাম নিজে যখন মহাখালির ব্র্যাক সেন্টারে জয়েন করলাম হেলথ প্রোজেক্টে ফ্লোর ম্যানেজার হয়ে।



৯।

সবুজের হাতছানি





বাংলাদেশের অভিভাবকরা তাদের মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে পাত্রের শিক্ষা, পরিবার , তার চরিত্রগত দিক এসব দেখার চেয়ে দেখলাম তারা আর্থিক নিরাপত্তা এবং আমেরিকান ভিসাকেই গুরুত্ব নিয়ে দেখছে। এক্ষত্রে পাত্রের আগের একটি বিয়ে থাকলেও তা দ্বিতীয়বার বিয়ের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না এবং আমেরিকান পাসপোর্টের এমনই মাজেজা যে এক্ষেত্রে অবিবাহিত মেয়েদের ভিড়ই ছিল বেশী।



এর মাঝে রূম্পার সময়ে- অসময়ের ফোনে যথেষ্টই বিরক্ত হচ্ছিলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে এইসব পাত্রী আর অভিভাবকদের আগ্রহ খালি ঘুরে ফিরে একটা দিকেই যাচ্ছিলো – বিয়ের কতদিন পর তারা আমেরিকা যেতে পারবে!



প্রথম পরিচয়ে কারো ফোন নাম্বার বিশেষত মেয়েদের ফোন নাম্বার চাওয়া শোভন নয়। তবে সেদিন শেষপর্যন্ত হসপিটালে ডাক্তার দেখিয়ে কণার কাছ থেকে বিদায় নেবার সময় ইচ্ছাকৃতভাবেই কণার আগ্রহ বোঝার জন্য বলেছিলাম –



আশা করছি আবার আপনার সাথে কথা হবে। সে পর্যন্ত ভাল থাকবেন সবুজরঙা ‘কণা’।



তখন হয়তো ভদ্রতা করেই কণা ওর ভিজিটিং কার্ডটা এগিয়ে দিয়েছিলো। বলেছিলাম ওর সাথে যোগাযোগ করবো কিন্তু করা হয়ে ওঠেনি। আসলে আমি ইচ্ছে করেই যোগাযোগ করিনি। ভয় পাচ্ছিলাম। পুড়ে যাবার ভয়।



দেশে ফেরার পর আমার ঘুম হতো না ভালভাবে। আর বুঝেও পেতাম না ঠিক কোন সময়টায় ফোন করলে কণাকে বিব্রত করা হবে না। হুট করেই ক’দিন আগে সকাল সাতটার দিকে কণাকে ফোন দিয়ে বেশ বিব্রতভাবেই নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চাই ওর ঘুম ভাঙ্গালাম কিনা। যদিও ও জানালো ওর ঘুম ভেঙ্গেছে আগেই বিছানায় গড়িয়ে নিচ্ছিলো কিন্তু ওর ঘুম ঘুম আদুরে কণ্ঠে বেশ বুঝতে পারি আমার ফোনেই ওর ঘুম ভাঙলো মাত্র।



- বাহ, আপনি তো বেশ আর্লি রাইজার বলে সপ্রতিভ হয়ে ওঠার চেষ্টা করে কিংবা ঘুমের রেশ কাটতে ও হয়তো বিছানায় উঠে বসে।



- আসলে কখন ফোন দিলে আপনাকে ঠিক ফ্রী পাওয়া যাবে বুঝতে পারছিলাম না বলি আমি। তাছাড়া এমনিতেও আমার ঘুমের সমস্যা কিংবা ট্রাভেলজনিত ব্যাপার সব মিলেমিশেই এই সক্কালবেলাতেই ঘুম ভেঙে যাবার কারণ।



- হুম বলে চুপ হয়ে থাকে কিছুক্ষণ কণা। সকালে না আমার মুড আসলে ঠিক থাকে না একমাত্র ছুটির দিন ছাড়া , বুঝলেন নির্ঝর ? সকালের ঘুমটা আমার খুব প্রিয় কিনা – এটুকু বলার পর শুনতে পাই কণা আবার হাই তোলে।



আমি আসলে ঠিক বুঝে উঠতে পারি না কি কারণে কণাকে ফোন দিয়েছি বা এবার আমার ফোনটা রাখা উচিত কি না। একটুপর ওকে নিশ্চয়ই অফিস দৌড়োতে হবে হয়তো । আমি রেখে দিতে চাইলে কণা জানায় অফিস ছুটির পর সময় নিয়ে কথা বলতে পারবে। আমি ওর ছুটির সময় আর লোকেশন বুঝে নিয়ে ফোন রাখি।



সন্ধ্যা ছয়টার আগেই আমি কণার অফিসের কাছে পৌঁছে যাই। কণা যদি আমার কাছে জানতে চায় ঠিক কি কারণে আমি ওর কাছে এসেছি বা ফোন দিয়েছিলাম সকালে তাহলে এর সঠিক উত্তর আমি আমি দিতে পারবো না। তবে ওর কথা ভাবলেই যে আমার মাঝে একটা ভাল লাগার বুদবুদ তৈরি হয় সে কথাও ওকে বলা নিশ্চয়ই এতো সহজ নয় আমার জন্য।



কণা আমার গাড়িতে উঠলে ’পরে ওর হোস্টেলের পথে ড্রাইভ করতে থাকি উত্তরার দিকে। ততক্ষণে আমাকে জিজ্ঞেস করে করে কণার জানা হয়ে যায় এবার দেশে আমি অনেকদিনের জন্য এসেছি এবং আমার বাবা- মায়ের কথা, খুলনায় কাটানো আমার ছেলেবেলার কথা।



গাড়িতে আমি যদিও কম কথা বলছিলাম কিংবা বলা যেতে পারে আমার কথাগুলো কণার কাছে এসে হারিয়ে যাচ্ছিলো । কণা মাঝে একবার জানতে চায় বাংলাদেশে কেন একেবারেই চলে আসছি না। এইবারের ছুটি কাটানোর মাঝে নির্ভর করবে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে থাকবো কি না। সাথে ওকে আরও জানাই পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনের কথা , আমার প্রাক্তন স্ত্রী কার্লার কথা। আমার সংক্ষিপ্তভাবে বলা সব কথার মাঝেও যে একটা দীর্ঘশ্বাস বা আমার অতৃপ্ত বোহেমিয়ান সত্ত্বাটা তাকে ছুঁয়ে দিতেই যেন কণা জানতে চায় আমার ছুটে চলা শেষ হবে কবে?



আমার সেই উত্তর জানা নেই বলেই কণাকে জিজ্ঞেস করি ওর চাকরী জীবন কেমন উপভোগ করছে। কলকল করে কণা হয়ত অনেক কিছুই বলে গেলো যার সব কথা স্পষ্ট ভাবে আমার কানে ঢুকলো না। বরং আমি ওর সজীবতায় বুঁদ হয়ে থাকি। এ যুগের মেয়েদের মাঝে আমি অনেক ফ্রাস্ট্রেশন দেখি কিন্তু কণা যেন সে সবের বাইরে।



- কণা, সেদিন কিন্তু বসুন্ধরার ছবির মত সাজানো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আমি আপনার সম্পর্কে ভুল কিছু বলিনি । আপনার মাঝে আসলেই কিন্তু একটা সবুজ আলো আছে !



- হুম , আপনার এই কথাটা সেদিন রাতে আমাকে কিন্তু নিজের রুমে ফেরার পর ভাবিয়েছিলো



- সত্যতা খুঁজে পেয়েছেন?



- ছেলেবেলায় আমার একটা স্বপ্ন ছিল বটে মানুষ হিসেবে বাঁচবো । উত্তরণের পথ যেন তথাকথিত নারীসুলভ সংকীর্ণতায় শৃঙ্খলিত না হয়ে যায় পরিবারের মানুষ দ্বারা সেজন্য ঘর ছেড়েছি চার বছর হয়ে গেলো । সে স্বপ্নটা পরিনত বয়সে এসে এখনো আছে একই রকম – স্থির, অবিকৃত এবং একাকী। বলে কণা চুপ করে থাকে।



বাইরে ব্যস্ত নগরী , রাজপথের আলোর ফোয়ারা , বিজ্ঞাপনের বিলবোর্ড গাড়ির শীতল কামরার কাঁচ ভেদ করে ভেতরে আসতে পারে না বলেই আমাদের নৈঃশব্দ্য গাঢ় থেকে গাঢ়তর হতে থাকে। কণার উচ্চারিত শেষ তিনটা শব্দ নিজের ভেতরে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে থাকি - স্থির , অবিকৃত এবং একাকী।



কণার একাকী জীবনকে স্বাগত জানাবো কিনা ভাবতে থাকি। কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারি না । এই প্রথম পরিণত বয়সে এসে একেবারেই অন্যরকম এক অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হই আমি। বেদনা কাকে বলে টের পেতে থাকি , হয়তো এই অনুভূতিকেই বলে ' পুড়ে পুড়ে যাওয়া '। আমার মনে হতে থাকে কণা কোচর ভর্তি কদমফুল নিয়ে আমার পাশেই বসে আছে । ভীষণ ইচ্ছে করে আমার মৃত্যুকাতর নিঃসঙ্গ হাত দুটি বাড়িয়ে ওকে বলি ফুলগুলো আমার হাতে তুলে দিতে।





আমি বেঁচে উঠতে চাই। ঘুমহীন নিঃশব্দ রাত্রি , চার দেয়ালের ঘন তমিস্রা - এ সব যেন মৃত্যুর মতো এক ভয়ংকর চেহারা নিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে । কণার তেজস্বী অথচ কোমল ত্বক, মেঘচুল আর চোখের দিকে তাকিয়ে আমি বিড়বিড় করে বলতে থাকি - আমি আবার ঠিক বেঁচে উঠবো তোমাকে নিয়ে। প্রাণপণে চাইতে থাকি আমার এই কথাগুলো ইথারে ভেসে ভেসে কণার কাছে চলে যাক। ও জানুক। যেভাবেই হোক , আমার যে বাঁচতে হবে ।



১০।

আমার প্রজাপতি হয়ে ওঠা এবং অতঃপর … … …




ইদানীং বাবার কথা খুব মনে পড়ছে আমার। আসলে বলতে চাচ্ছিলাম অনেক বছর আগে আমাকে লেখা বাবার চিঠিটার কথা মনে পড়ছে খুব বেশী , যে সময়টায় আমি একরাশ স্বপ্ন নিয়ে একরকম জোর করেই চলে এসেছিলাম শহরে পড়াশোনা করতে। বাবার চিঠির একটা লাইন এই মুহূর্তে বিশেষভাবে একটা মানে হয়ে দেখা দিয়েছে “ হয়ত তুমি তোমার সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারো ”। বাবার ঐ চিঠিটা আমার জন্য ছিলো একটা আলোকবর্তিকার মত , সেই তখন থেকে আজ অবধি।



আসলে প্রেম-ভালবাসা, বিরহ এইসব নিয়ে কখনো মাথা ঘামানোর কথা চিন্তাই হয়নি আমার। কেমন পুতুপুতু টাইপ একটা ব্যাপার মনে হতো আমার। স্কুলে থাকতে তো মারিয়া, বীথি, মণি ওদের কত ক্ষেপাতাম এসব নিয়ে! ওদের ছলছল চোখ আর ছেলে বন্ধুকে লেখা প্রেমপত্র নিয়ে আমি , লাবনী , তামান্না খুব হাসতাম। মনে আছে একবার খুকু ম্যাডামের কাছে বীথীর ছেলেবন্ধুর চিঠি তুলে দিয়ে ওর সেই বয়সের প্রেমে বাঁধা দেয়াতে ওর জন্মের শত্রু হয়ে গিয়েছিলাম।



কয়েকদিন যাবত বিশেষ করে নির্ঝরের সাথে সেদিন অনেকটা সময় কাটিয়ে আমি নিজের মাঝে অন্য এক আমিকে অনুভব করছিলাম যে অনুভবের কথা আগে শুধু বইতে পড়েছিলাম। ওর সাথে পরিচয়ের প্রায় তিন মাস হতে চললো । এর মাঝে আরও কয়েকবার দেখা হয়েছে তার সাথে , ফোনে কারণে- অকারণে কথাও হয়েছে। তবে কথা বলার কারণের চেয়ে অকারণটাই ছিলো বেশী। আর এই অকারণ অনুভবের পুরোটা জুড়েই ছিলো অস্থিরতা। টের পাচ্ছিলাম খুব ধীরে আমার একা থাকার সিদ্ধান্তটা বদলে যাচ্ছে।



গতকাল নির্ঝর জানিয়েছিলো ওর হালকা জ্বর আর মাথা ব্যথায় কিছুটা অসুস্থ বোধ করছে। আজ আমার ছুটি থাকায় ওকে জানাই বিকেলে আমি আসবো ওকে দেখতে।

আহা ! আমি ডুবে যাই যেন প্রত্যাশার অথৈ জলে!



১১।

অসময়ের শ্রাবণধারা এবং শীতবোধের স্থবিরতায়




কণার চোখে আমার বেঁচে ওঠার আশ্বাস দেখেছিলাম বলেই পাত্রীর সন্ধান দিতে আসা ফোন কলগুলো আমাকে যথেষ্ট বিরক্ত করছিলো । যদিও আমি পত্রিকার বিজ্ঞাপনটা ছাপাতে নিষেধ করেছিলাম পত্রিকার অফিসে ফোন করে । তবে এর মাঝে রূম্পার শারীরিক আবেদনময় ফোন কলগুলো রাতের বেলায় এড়ানোটাও আবার আমার জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছিলো । মনের আর শরীরের ক্ষুধাবোধ যে একই রেখায় চলে না তা বোঝার জন্য যথেষ্ট জ্ঞানী হবার প্রয়োজন নেই। পত্রিকায় পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনের সাথে মোহাম্মদপুরের আমার এই ফ্ল্যাটের এড্রেসটা ছিল বলে রূম্পাকে ফোনে শরীর খারাপের অজুহাতে দুর্বলভাবে এড়াতে চাইলেও দুপুরে ওর বাজানো ডোরবেলের শব্দে ঘুম ভাঙে আমার।



মানুষের জীবনে জাগতিক চাহিদা পূরণ হলে কিংবা জাগতিক বোধের বাইরে যখনই কোনো অপার্থিব বোধের জন্ম হয় তখনই বোধ হয় মানুষ অসুখী হয়ে পড়ে, শুরু হয় তার অন্তর্দহন। কেউ পোড়ে সঙ্গোপনে আর কেউ বা ভালবাসে পোড়াতে। আমি সঙ্গোপনে পুড়ি বলেই আমি ছিলাম দুর্বোধ্য; কার্লা বা রূম্পা এবং ক্ষণস্থায়ীভাবে যেসব নারীরা এসেছিলো আমার জীবনে তাদের কাছে ।





তাই রূম্পা আমাকে অঝোর ধারায় কোনো স্বার্থ নিয়ে এই নির্জন ফ্ল্যাটে স্নাত করাতে এলেও আমার মানসিক দহন বা অতৃপ্তিকে সে নেভাতে পারে না বিন্দুমাত্র। বিছানায় আমার পাশে রূম্পার নগ্ন শরীরটা যখন ওর উপর উপগত হয়েছিলো তখনও শুধুমাত্র রূম্পা আমার শারীরিক উত্থান দেখেছিলো যা শরীরের চাহিদা মিটিয়েছিলো মাত্র। অবশ্য তা বোঝার বোধ এই মেয়ের নেই বললেই চলে।



বিছানার সাইড টেবিলের উপরে রাখা মোবাইলের শব্দে আমার ভাবনা যখন ছুটে গেলো দেখি রূম্পা গুটিসুটি মেরে আমার বুকের ভেতর সেঁধিয়ে যাবার পায়তারা করছে। রূম্পা শুধুমাত্র একটা নারী দেহই লাভ করেছিল। তাই ভালবাসাহীন একটা সঙ্গমকেই সে অধিকারবোধের চূড়ান্ত স্বীকৃতি ভেবে নিয়ে যখন মোবাইলের রিঙের শব্দে বিরক্তি প্রকাশ করলো ততক্ষণে ফোনের অপরপাশে কণা জানায় ও বিকেলে আসছে আমার বাসায়।



কণার মানসিক সান্নিধ্য পাবার পর অন্য কোনো মেয়ের নিঃশ্বাসের শব্দও আমার ভাল লাগছিলো না আসলে। বরং এটা ভেবে সান্ত্বনা বা অপরাধবোধ থেকে মুক্তি খুঁজছিলাম রূম্পার সাথে কিছুক্ষণ আগে ঘটে যাওয়া শারীরিক ব্যাপারটা জীবনের একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র যা একটা শাওয়ার নিলেই সব ক্লেদ ধুয়ে মুছে যাবে। আমি কণার কাছে কোনো কিছু নিয়েই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম না তবু কেন যেন অস্বস্তি হচ্ছিলো আমার। কণার কথা ভাবলেই আমার ভেতর থেকে একটা আশ্চর্য নীল পাখি ডানা মেলে উড়তে চায়।



আমি এখন একা থাকতে চাচ্ছি রূম্পা। তুমি যাবার সময় দরজাটা টেনে ভেতর থেকে লক করে দিয়ে চলে যেও বলে ওকে কথা বাড়ানোর সুযোগ না দিয়ে শাওয়ার নিতে আমি ফ্রেশরুমে ঢুকে পড়ি। এই মুহূর্তে ওকে অসহ্য লাগছিল।



আমি জানি না শুধুমাত্র আমি অসুস্থ বলেই কণা আমাকে দেখতে আসছে কি না কিংবা বিশেষ কিছু বলবে কি না । এক অসহনীয় অপেক্ষার ছটফটানিতে ডুবে গেলেও আমার কণার কথা ভাবতে ভালো লাগছিলো বাথটাবের পানিতে নিজেকে ছেড়ে দিয়ে আমি অনুভব করতে থাকি আমার বুকের কাছটায় কণার গরম নিঃশ্বাস। আর ঠিক তক্ষুনি আমার মৃত বিমর্ষতার সব রঙ , ছায়ারা কণাকে আলিঙ্গন করে সবুজ হয়ে ওঠে। বাস্তব- অবাস্তবের ভেদ মুছে যায়।



শাওয়ারে ঠিক কতক্ষণ সময় পার হয়েছে হিসেব করে উঠতে পারি না। ডোরবেলের আওয়াজে সম্বিত ফিরলে ড্রেস-আপ করে বের হয়ে দেখি রূম্পা গেট খুলে নিজে বের হলো আর গেটের বাইরে একজোড়া চোখ স্থির হয়ে আমাকে দেখছে। আ ফাকিং বিচ রূম্পা। ওর কলজেটাকে পেলে ছিঁড়ে খুঁড়ে মাটিতে পুঁতে রেখেও শান্তি হতো না আমার সে সময় ।



কণার স্থির ঐ দু’চোখে কি ছিলো ? ঘৃণা , রাগ কিংবা হয়তো আরক্ত কোনো অভিমান বা স্বপ্ন ভঙ্গ। কণা আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো অদ্ভুত নিষ্পলক চোখে।



এরপরেই কণা দৌড়োতে দৌড়োতে লিফট ছেড়ে উদভ্রান্তের মত সিঁড়ি দিয়ে নামতে থাকে। আমি খোলা দরজার বাইরে এসেও নির্জন সিঁড়িতে ওর চটির ফটফট আওয়াজ পেতে থাকি। আমি জানতাম ওকে ফেরানো যাবে না তাই একবারই বলেছিলাম মাত্র ‘ কণা, দাঁড়াও। শুনে যাও।’



কণা দাঁড়ালে, আমার কথা শুনতে চাইলে কি বলতে পারতাম ওকে? ওর চোখ দেখেছে রূম্পাকে বের হতে আমার ফ্ল্যাট থেকে তা তো আর মিথ্যে নয়। আমার ইচ্ছে হয় কণার চোখের মধ্যে এক প্রহর কেঁদে নিতে।



কিছুক্ষণ পর সূর্য অস্ত যাবে। বিকশিত চাঁদ উঠবে আমার নির্জন ফ্ল্যাটটিকে গ্রাস করতে আমাকে সহ। আমি ডুবে যাই হতাশার চোরাবালিতে। নাম না জানা এক বোধ এসে আমাকে স্থবির করে রাখে। চোখের কোলে বড্ড অভাব বোধ করি সে সময় দু’ফোঁটা নোনা জলের।



( সমাপ্ত)



মন্তব্য ১১৬ টি রেটিং +৩০/-০

মন্তব্য (১১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৪

আমিনুর রহমান বলেছেন:


আজকে ভুল ধরমু :P
বেশ বড় পোষ্ট কাজ শেষ করে আসতেছি :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমিও ভয়ে ভয়ে আছি পোষ্ট দেবার পরেই। কারণ লেখাটা খুব বড় হয়ে গেছে। সমস্যা নাই , ভুল ধরিয়ে দিলে সম্পাদনা অপশন তো আছেই , ঠিক করে নেবো।

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:২২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
অপর্ণা আপু, আপনার প্রত্যেক পোস্ট থেকেই আমি কিছু না কিছু শিখি। যেকোনো লেখায় পাঠককে আটকে রাখার যে স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য আছে আপনার তা খুব কম লেখকেরই থাকে। প্রথম দুই তিনটা লাইন পড়ার পর সম্পূর্ণ পোস্ট শেষ না করে উঠবে সেই সাধ্য আছে কার? তবে আজকের পোস্টটা আমি পুরো পড়তে পারছিনা, কারন হাতে সময় একদম নেই। একটু পর নানা বাড়িতে যাব। মাকে আনতে যাচ্ছি, আম্মা নানাবাড়ি গিয়ে বসে আছে এদিকে আমার খাওয়ার খুব কষ্ট যাচ্ছে। পোস্ট প্রিয়তে নিলাম। ফিরে এসে সময় নিয়ে পড়ব। সেই পর্যন্ত ভাল থাকুন এই কামনা করব।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমাদের সবারই কারো না কারো কাছে কিছু না কিছু শেখার থাকে। তবে তোমার বলার ধরণটা এত ভালো লেগেছে নাজিম কী বলব , আমি মুগ্ধ হলাম।

তোমার ফেবু স্ট্যাটাস তেহকেই দেখেছিলাম তোমার মা বাসায় না থাকায় তোমার খাওয়া দাওয়ার কষ্ট হচ্ছে ! তুমিও ভালো ভাবে ফিরে এসো। ভালো থেকো।

পোষ্ট প্রিয়তে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ নাজিম

৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:২৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
১।

I'm gonna start again
This world I painted black
Just needs some colour
I'm gonna live my life like the other
Person I should have been

I ain't tappin' out, no no no no
To this dark and twisted dream
That's kept me living
I pray to my soul
To keep this fire burning
And when it does
I'm gonna let it shine

I'll make the best of this life I've got left
Got no time for no regrets
Gonna show you just what I can be
The person I should have been

And it might take time, take time
'Cause this life has taken it right out of me
I wanna change my perspective of reality
Be a much better version of me
The person I should have been

I make the best of this life I've got left
I put my sincerity to the test
Wake up my senses finally
The water washes me clean

What shouldn't have been has all been done
If I don't get a grip

Then the world has won
Making me think that I'll never be
The person I should have been

Who am I now?
A lonely man that's fallen down
No I can't change
The past that time has all burned out
But I know somewhere inside of me
Is the person that I could have been

Make the best of this life I got left
Got no time for no regrets
Gonna show you just what I can be
The person I should have been

What shouldn't have been has all been done
If I don't get a grip
Then the world has won
Make me think that I'll never be
The person I could have been

I said the person, person I could have been
I said the person, person I could have been
Oh oh, the person I could have been
I said the person, person I could have been
the person I could have been

২।

Time to live
Time to lie
Time to laugh
Time to die

Take it easy baby
Take it as it comes
Don't move to fast if you want
your love to last
You've been movin' much to fast

Time to walk
Time to run
Time to aim your arrows
At the sun

Take it easy baby
Take it as it comes
Don't move to fast if you want
your love to last
You've been movin' much to fast

Go real slow
You'll like it more and more
Take it as it comes
Specialize in havin' fun

Take it easy baby
Take it as it comes
Don't move to fast if you want
you're love to last
You've been movin' much to fast
Movin' much to fast
Movin' much to fast

৩।

I was standing
Alone against the world outside
You were searching
For a place to hide

Lost and lonely
Now you've given me the will to survive
When we're hungry, love will keep us alive

Don't you worry
Sometimes you've just gotta let it ride
The world is changing
Right before your eyes
Now I've found you
There's no more emptiness inside
When we're hungry, love will keep us alive

I would die for you
Climb the highest mountain
Baby, there's nothing I wouldn't do

I was standing
Alone against the world outside
You were searching
For a place to hide
Lost and lonely
Now you've given me the will to survive
When we're hungry,love will keep us alive
When we're hungry, love will keep us alive
When we're hungry, love will keep us alive




আপনার এই ভিন্নধর্মী পোস্টে একটু ভিন্নধর্মী মন্তব্য করতে ইচ্ছে করল তাই আমার খুব প্রিয় তিনটি গানের লিরিক দিলাম। ২ য় লাইকটি আমার।

ও আর হ্যাঁ এত অসুস্থতার মাঝেও যে কষ্ট করে এত বড় একটি পোস্ট দিয়েছেন সে জন্য স্যালুট। আপনার সার্বিক সুস্থতা কামনা করি।

একেতো আপনি আমার দেশী তার উপর ইয়ারমেট তাই বন্ধু ভেবেই গান তিনটি ডেডিকেট করলাম আপনাকে।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গানের লিরিক গুলো সুন্দর । যদিও ইংরেজি গান তেমন শোনা হয় না।
লাইকের জন্যও ধন্যবাদ।

ওকে দেশী ভাই , ইয়ারমেট বন্ধু ভেবে গান ডেডিকেট করার জন্যও অনেক ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন ।

৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩১

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: পাক্কা ৩২ মিনিট লাগল লেখাটা শেষ করতে। আসলে আপনি এত ভালো লিখেন, আমার মত সাধারন একজন মানুষের পক্ষে সেটার বিশ্লেষনে যাওয়া খুব কঠিন একটি ব্যাপার। শুধু এই টুকুই বলব, এই ধরনের বা এই মানের লেখা সামুতে অনেক কম।

পোষ্টটি নিঃসন্দেহে অনেক বড়, কিন্তু আগেও বলেছি ভালো লেখা হলে কোন সমস্যা নেই। জীবনবোধের খন্ড চিত্র খুব সুন্দর ভাবে তুলে এনেছেন।


০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ৩২ মিনিট লাগলেও শেষ পর্যন্ত পড়েছ গল্পটা , এটাই ভালো লেগেছে।
পোষ্ট আসলেই খুব বড় হয়ে গেছে। আর এত বড় লেখা ব্লগে দিবো কিনা দ্বিধান্বিত ছিলাম। খলিল ভাইয়ের সবুজ অঙ্গনের জন্য লেখাটা বইমেলায় দিয়েছিলাম। আজ সপ্তাহের শেষ দিন , কালকেও ছুটির দিন ভেবে গল্পটা শেষ পর্যন্ত দিয়েই দিলাম।

আমার যে কোনো লেখা নিয়ে স্বচ্ছন্দে কথা বলতে পারো। আমি খুশিই হবো কেননা কমতি আমার মাঝেও আছে।

ভালো থেকো ভাইয়া ।

৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪০

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
প্রথম গল্পে আমাদের অভিভাবকদের লোভ, দৈন্যতার কথা ফুটিয়ে তুললেন খুব সংক্ষিপ্ত কিন্তু দারুন সুন্দরভাবে।
দ্বিতীয় গল্পে একজন তরুনীর নিজের ভেতর বদলে যাওয়া, ভালোলাগার দারুন বর্ণন।
তৃতীয় গল্পে শুরু শেষে সঞ্জীব এসে যাওয়া অন্য ভালোলাগা টুকু হারিয়ে গেল। তবে সঞ্জীবের উপমা আসাতেই বার বার পড়বো।
চতুর্থ গল্পের 'কণা' চরিত্র মনে ধরছে। এরকম স্বাধীন চেতা চরিত্রগুলোর রুপায়ন বারবার পড়তে ইচ্ছে জাগে।
পঞ্চম গল্প তো জীবন কেন্দ্রিক, জীবন পাঠ।
ষষ্ঠ গল্প স্বপ্ন পূরন, বৃত্ত ছেড়ে বেরিয়ে পড়ার; সুন্দর।

আপাতঃত ৬ টা গল্প শেষ করলাম।
প্রতিটাই দারুন।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: প্লিওসিন অথবা গ্লসিয়ারের এই পোষ্ট পড়ে

সঞ্জীব চৌধুরীর গান প্রথম শুনি। ( পোস্টের লিঙ্ক দিতে পারি না ঠিক ভাবে )

তুমি এভাবে ভেঙে ভেঙে খুব সুন্দর করে গল্পের মূল কথাগুলো তুলে ধরেছ ৬ টা অংশের। খুব ভালো লেগেছে।

বাকি অংশের পাঠ প্রতিক্রিয়া জানার অপেক্ষায় রইলমা। ভালো থেকো দূর্জয়।

৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২

মাক্স বলেছেন: পড়তে পড়তে একটা সময় মনে হচ্ছিল কণার সবুজ স্বপ্নটার বোধহয় ইতি ঘটবে। তা না হওয়ায় কেমন জানি অদ্ভুত একটা ভালোলাগা কাজ করল।

৪র্থ ভালোলাগা!

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মানুষ অনেক সময় না চাইলেই হয়ত অজান্তেই অনেক সম্পর্কে জড়িয়ে যায় / পড়ে। তাই হয়ত কণা কোনো বন্ধনে জড়াতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত তার স্বপ্নের ইতি ঘটতে দেয়নি।

ভালো থাকবেন।

৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭

লাবনী আক্তার বলেছেন: চমৎকার গল্পগুলো!

এদানিং বড় লেখা পড়তে ইচ্ছে হয়না। কিন্তু আপনার লেখা আমাকে পড়তে বাধ্য করেছে! এত সুন্দর লেখনি! প্রথম লেখা পড়েই অনুসরণ করছি আপনাকে!

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক ব্যস্ততার মাঝেই মানুষ ব্লগে সময় ব্যয় করে নিজে লেখে বা অন্যের লেখা পড়ে। সে হিসেবে বলা যায় আমার লেখাটা বেশ বড়ই হয়ে গেছে।

ধন্যবাদ লাবনী।

৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৬

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ১ আর ২ পড়ে শেষ করেছি ! বাকীটা রাতের আগে হবেনা ! মিনিমাম ৫ টা পোষ্ট দিতে পারতেন পর্ব করে !
প্রথম অংশেই দিকভ্রান্ত এবং একই সাথে সম্ভবত হতাশ কণার সাথে পরিচিত হলাম ! বাকী অংশের ক্লাইমেক্স টা আপাত নষ্ট করতে চাচ্ছিনা বাকীদের মন্তব্য পড়ে !

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:২৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গল্প একসাথে পুরোটা না দিলে পড়তে মজা লাগে না , আমি নিজেও তেমন মজা পাই না । কারণ আগের পর্ব ততদিনে ভুলে যাবার সম্ভাবনাও থাকে।

মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো অভি। তবে দ্বিতীয় অংশে হতাশ কণার ব্যাপার ছিল না , বরং স্বপ্ন দেখা একটা মেয়ের পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছিলো।

ভালো থেকো। :)

৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নেক্সাস বলেছেন: লম্বা লিখা..পড়ে ভাল লাগলো। আরো একবার পড়বো কাল এসে। ভাল থাকবেন

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ নেক্সাস । ভালো থাকবেন ।

১০| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩

বোকামন বলেছেন:







একটি সবুজ প্রজাপতি !! আচ্ছা, কয়েকটি সবুজখেকো প্রজাপতি উড়ছিল। এগুলোর মধ্য থেকে লেখক ঠিকই সবুজরঙ-চটা প্রজাপতিটির উপরে সযত্নে ফোকাস করেছেন। যে সিঁড়ি বেয়ে গল্পটি উপরে উঠে আসলো একই সিঁড়ি ব্যবহার করে পাঠককে নিচে নামিয়ে আনলেন। প্লটের ডাইনামিক ক্লু টি অতিশয় ভালো লেগেছে। বিশেষ করে প্রতিটি প্লটের একটি শিরোনাম গল্পটিকে গল্পগুলো করে পাঠককে ধাঁধায় ফেলার ইচ্ছে ছিল কী। গল্পে গভীর মনোযোগ না দিলে ভালোলাগা বের করে আনা সম্ভব হবে না। সুতরাং আমি বলবো বাধ্য করার ব্রিলিয়ান্ট প্রয়াস। সাদা-কালো প্রজাপতি সবুজ রঙের লুকোচুরিতে ক্লান্ত হয়নি। প্রতিটি সত্তার এক একটি ভিন্নতা সবুজে মিলে মিশে একাকার হয়ে উঠলো। গভীর কিছু জীবন-প্রেম-বাস্তবতা বোধ লেখক সত্তাটির সাথেও পরিচয় করিয়ে দিলো বৈকি।

অনুভূতির অনুভূতিময় মায়ায় ফ্যান্টাসি হয়ে উঠেনি, এ যেন মাটিতে পা রেখেই আকাশ ছুঁয়ে দিলো । লেখককে বিশেষভাবে ধন্যবাদ দিবো এই জন্য- তিনি চরিত্রগুলোকে সময়োপযোগী রেখেছেন। গল্পের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ডানা মেলে উড়তে চাওয়া নীল পাখিটির খাঁচা বন্দি অবস্থা বেশ আহত করলো। চমৎকার দুর্দান্ত বর্ণনায় বিষণ্ণতা,কল্পনা,প্রকৃতি,স্বার্থ,কাম,আংশিক রসবোধ ইত্যাদির সহায়তায় অসময়ে বৃষ্টিপাত ঘটালেন লেখক।

গল্প শেষে ব্রাকেটে সমাপ্ত লিখেছেন তবে গল্প শেষ করে উন্মেষিত ভালোলাগায় ব্রাকেট বসানো দুরূহ হবে। নির্জন সিঁড়িতে চটির ফটফট আওয়াজ সাময়িক নির্জনতাও এনে দিতে পারে। গল্পটি ভালো লাগলো ভীষণ সেই সাথে গল্পে থাকা সুপ্ত ম্যাসেজগুলোতেও বোধ উদ্রেককারী ভালোলাগা রইলো।

থিসিস... সঞ্জীব চৌধুরী, মিলে গেল!! সঞ্জীব-দা’কে মিস করছি।
“Typical Indian Tendency” !! হা হা হা ...

সম্মানিত লেখক,
খুব বেশী কাজের চাপ থাকায় আপনার লেখাটিতে পুর্ণমনোযোগ দিতে একটু সমস্যা হয়েছে, ক্ষমা করবেন। যাইহোক, অতি সাধারণ একজন পাঠক হিসেবে, আমার মন্তব্যটি আপনার অসাধারণ গল্পটির মূল্যায়ন করার বিন্দু মাত্র ইচ্ছা থেকে নয় বরং যান্ত্রিক জীবনে সবুজের ছোঁয়া পেলাম; ভালোলাগা থেকেই কিছুটা বিশদ মন্তব্য করা হলো। প্রথম দিকে মন্তব্য করছি, তাই প্লটগুলো নিয়ে বিস্তারিত মন্তব্য না করাই ভালো।

সবসময় ভালো থাকুন-এই কামনা করি।



রঙের লুকোচু রিনির্ঝরের
আমার ব্যলাকনীতে দাঁড়িয়ে




০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কাজের চাপ থাকার জন্য পূর্ণ মনোযোগ দিতে না পেরেও এত চমৎকার ভাবে পাঠ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন , তাতে বিশেষ সম্মানিত বোধ করছি।

শব্দ দুটোর কারেকশন করে নিয়েছি। ধন্যবাদ ভাইয়া।

১,২,৩ এভাবে প্রতিটি শিরোনাম কে আলাদা ভাবে দিয়েছি প্রতিটিতে চরিত্রদের গুরুত্ব তুলে ধরতে , মনোযোগ বাড়াতে। আলাদা আলাদা ভাবে এক একটি অনুভব তুলে ধরতে।

কণা যখন ডায়েরি লিখত , সে মুক্ত হবে শৃঙ্খল থেকে - দিপাবলী, জয়িতা ওদের মতো হতে চাইত সে অংশে কিছুটা ফ্যান্টাসির ভাব থাকলেও শেষ পর্যন্ত পরিবারের প্রতিকূলতার বিপক্ষে থেকেও সে যেভাবে উঠে এসেছে, সাবলম্বী হয়েছে শেষ পর্যন্ত সেটা আর ফ্যান্টাসি থাকে নি -- যা আপনি খুব সুন্দর ভাবে প্রকাশ করলেন।

আপনার বিশদ মন্তব্য খুব ভালো লেগেছে। আমি হয়ত এক রকম ভেবে লিখেছি কিন্তু আপনার চোখে ধরা পড়েছে আরও অর্থ যা আমাকে বিশেষ ভালো লাগা দিচ্ছে।

ভালো থাকবেন খুব। আপনার মনোযোগী পাঠের জন্য অনেক ধন্যবাদ ।

১১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: অনেক টাইম নিয়ে পড়লাম :) :) :)


ভাল লাগলো। অনেক +++++++++

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: প্লাসের জন্য ধন্যবাদ বর্ষন । ভালো থাকবেন আপনি।

১২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ইয়েস! আমি পেরেছি!

দেখলেন দাগাদাগি ছাড়াই আমি পড়তে পারি। :D

গপ্পটা একটু বড় হইসে। তবে গল্প বলার সাবলীলতায় খুব বড় মনে হয়নি।

যদিও গল্পটার শুরুটা পরিচিত একটা গল্পের মতো লাগছিলো, কিন্তু তা কেবল মাত্র শুরুতেই।

গল্পে ফোনের ব্যবহারটা একটু বাড়াবাড়ি লাগলো। কণার বাবা কণাকে চিঠি লিখেছে ১৯৯০ সালে! আর তখন ফোনের ব্যবহার এতো ছিলো না। আর নির্ঝর এর সাথে কণার পরিচয় হয় চিঠি পাওয়ার চার বছর পর। তারমানে ১৯৯৪ সালে! ১৯৯৪ সালে মুঠোফোনের ব্যবহার দেখানোটা একটু বাড়াবাড়িই, মনে হচ্ছে।

বাই দ্যা ওয়ে এই বেশী কিন্তু অন্যকিছু বুঝায়।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তুমি যে না দাগাদাগি করে এক বসায় পড়তে পারছ ( ধমক খাবার আগেই ) সেজন্য অনেক ধন্যবাদ।

গল্পের কিছু কিছু অংশ আমি ফেসবুকে দিয়েছিলাম বলেই হয়তোবা তোমার কাছে পরিচিত মনে হচ্ছে।

আর তুমি খুব ভালো একটা পয়েন্ট ধরছ - ১৯৯৪ সালের দিকে ফোনের ব্যবহার ( মোবাইল ) এত সহজলভ্য ছিল না । ল্যান্ড ফোন বা কার্ড দিয়ে ব্যবহারই বেশী ছিল । খুব ইমোশনাল হয়ে লেখার কারণেই হয়ত এই পয়েন্ট চোখের আড়ালে রয়ে গিয়েছিল । অনেক থ্যাংকস এই পয়েন্টে ফোকাস করার জন্য।

কণার বাবার চিঠির অংশের সালটা তাই বাদ দিয়ে দিলাম।

ধন্যবাদ , ভালো থেকো তুমি ।

১৩| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৩

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ও হ্যাঁ সবুজরঙ্গা মেয়ে!

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সবুজরঙা প্রজাপতি :)

১৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৪

সায়েদা সোহেলী বলেছেন: এতো বড় লেখা একবারে পড়ে শেষ করা আমার পক্ষে সম্ভব না :( আর ভেঙ্গে ভেংগে পড়লে গল্পের আমেজ নস্ট হয়ে যায়

।তাই কয়েক লাইন পড়েই প্রিয়তে নিলাম , অপর্না অনেক ভালো লিখে সেটা আমি জানি :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৫৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আচ্ছা সমস্যা নেই সোহেলী । আপনার প্রপিক এবং নাম দুটোই খুব সুন্দর !
ভালো থাকবেন আপনি

১৫| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫০

হাসান মাহবুব বলেছেন: এত বড় একটা লেখাও পড়তে ক্লান্তি লাগেনি অধ্যায়গুলো সুন্দর নামকরণে বিন্যস্ত করে দেয়ার জন্যে। গল্পটার কাহিনী সাধারণ। স্রোতের বিপরীতে চলা একজন মেয়ের সাথে ভোগবাদী পুরুষের সম্পর্কের রসায়ন। গল্পের ভেতরেও অনেক গল্প আছে, মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রাচীন মানসিকতা, প্রবাসের প্রেম এবং ভোগবাদীতা, ধনাঢ্য প্রবাসীদের প্রতি মেয়েদের মনোভাব, স্নেহশীল পিতার মমতা মাখা চিঠি, ইত্যাদি। তবে এসব গল্প চরিত্রগুলোকে ফুটিয়ে তোলার জন্যে দরকার ছিলো। এজন্যেই একজন হতাশ ভোগবাদী পুরুষ আর উচ্ছল সবুজ নারী, যাদের কোন সম্পর্কে থিতু হওয়া নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিলো না, তাদের একসাথে পথচলা দেখে আমরা আশান্বিত হয়ে উঠি। ব্রেক আপের অবশ্যম্ভাবী সম্ভাবনা আমাদের বিষাদাক্রান্ত করে।

সমালোচনা যদি করতেই কন তো কমু, কণা আর লোকটার মনের ভেতরের প্রেমভাব জাগ্রত হওয়া দেখাইসেন, কিন্তু কীভাবে এসব হল তা আরেকটু বিস্তারিত হলে ভালো হত। ডাক্তারের চেম্বারে বসে পরিচয় তারপর হাঁটতে যাওয়া ঐদিনই সবুজ রঙা মেয়ে বলা, শুইনা কণার ভেতর উথাল পাথাল ঠিক বাস্তবানুগ লাগে নাই। বিশেষ করে কণার মত একটা মেয়ে, যে ভালোবাসাকে লুতুপুতু ভেবে তুচ্ছ জ্ঞান করে তার ক্ষেত্রে এমন ভাবাটাই স্বাভাবিক ছিলো যে "ব্যাটায় ফ্লার্ট করতেছে আমার লগে। লুইচ্চা ব্যাটা!" ঘটনাপ্রবাহ এইখানে দ্রুতই ঘটে গেল যেন।

ওহ, আরেকটা বিশেষ প্রশংসা আপনার প্রাপ্য, তা হল গল্পের সময়কালকে এদিক-ওদিক করে, ঠিক সরলরেখায় না রেখে ঘুরপথে সমাপ্তির দিকে যাওয়া। এটা খুবই আধুনিক একটা স্টাইল। চমৎকার।

ভালো লেগেছে গল্প। শুভকামনা রইলো।

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সমালোচনার অংশ থেকেই তাহলে শুরু করি।

কণার সাথে নির্ঝরের দেখা হবার প্রথম দিনেই কণার মনে লুতুপুতু ভাব কিন্তু জেগে ওঠে নাই। বরং কণার প্রশংসা করাতে কণা মনে মনে বলছিল - হোয়াট অ্যা সিলি ডায়ালগ ! ধীরে ধীরে ফোনে কথোপকথন , অফিস থেকে বাসায় মানে হোস্টেল এ ড্রপ করে দেয়া ইত্যাদি থেকেই তার ভেতরে একটা বোধ তৈরি হয় যে সে তার বাকীটা জীবন একা থাকবে না এমন একটা সিদ্ধান্ত নিবে নিবে করছিল। যাইহোক সমালোচনা সাদরে গৃহীত হইলো।


গল্পটা অবশ্যই সাধারণ। তবে চেষ্টা করেছিলাম এই সাধারণ ঘটনাকে কি করে একটু বৈচিত্র্যময় করে তোলা যায়। অদম্য মনোবল থাকলেই পরিবারের এই ধরণের মানসিক পীড়ন উৎরেও কেউ কেউ নিজের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। গল্পের প্রধান চরিত্র কণা এবং নির্ঝর তাই অন্য চরিত্র গুলোকে বিস্তারিত করিনি। আর তাতেই গল্পের আকার বিশাল হয়ে গেলো।

আর বিশেষ প্রশংসার জন্য আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আপনার জন্যও রইলো শুভকামনা।

১৬| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:১৭

আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: অসম্ভব ভালো লেগেছে!!! :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ । ভালো থাকবেন

১৭| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:২৬

মামুন রশিদ বলেছেন: প্রতিটা শব্দের ব্যঞ্জনা, প্রতিটা ব্যক্ত-অব্যক্ত অনুভূতি ছুঁয়ে দেখার চেষ্টা করেছি । হাজার চারেক শব্দ হয়ত, আরো বেশি হলেও কিছুই এসে যেতো না । গল্পের মুগ্ধতায় এতটাই ডুবেছিলাম । এক দিকে পড়ে গেছি, অন্য দিকে ভেবে গেছি । কিন্তু শেষটায় এসে মনে হলো মাথায় কিছু নেই, সব ফাঁকা । কণার চলে যাওয়া কিংবা অরন্যের আত্মদহন, কোনটাই আর ভাবায় নি । গল্পের পরতে পরতে এত মজা এত জীবনরস, শেষটায় কিছুতেই কিছু এসে যায় না । যদিও গল্পের প্রয়োজনেই কণার এরকম প্রত্যাখ্যান জরুরী ছিলো ।


গ্রেট স্টোরি, গ্রেট ওয়ার্ক বাই অপর্ণা ;) :)

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:১৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ৬,৩৯৩ শব্দের গল্প ! অল্প কথায় লিখতে পারি না তাই গল্প এত বড় হয়ে যায়। খুব সুন্দর করে আপনার অনুভব প্রকাশ করলেন, আমি কী বলব খুঁজে পাচ্ছি না মামুন ভাই।

খুব ভালো থাকবেন।

১৮| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩১

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: দ্বিতীয় অংশের ব্যাপারে বলিনি কিন্তু আপু প্রথম অংশের ব্যাপারেই বলেছি দিকভ্রান্ত এবং হতাশ ! ২য় অংশ টাতে নো কমেন্ট ! কালকে ২ টা পরীক্ষা , আমি মাত্র জানলাম , অনেক ইচ্ছা ছিল আজকেই গল্প টা শেষ করবো ! আমার মনে হয় প্রতিদিন ২ টা করে অংশ পড়বো আর জানিয়ে যাবো !

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: দুঃখিত অভি , তুমি লিখেছিলে ১ এবং ২ পড়েছ। আমি খেয়াল করিনি ঠিকভাবে ।

সমস্যা নেই , তুমি ভালো মতো পরীক্ষার পড়া পড়। সময় সুযোগ হলেই গল্প এসে পড়ে যেও। ভালো থেকো।

১৯| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৮

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: এইটা তো একটা মিনি উপন্যাস হয়ে গেছে। কোনদিন পড়া শেষ করলে তখন জানাবো নে কেমন লাগলো !

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হাহাহহা, বড় লেখা হয়ে গেছে । আচ্ছা শেষ করতে পারলেই না হয় জানাবেন। ভালো থাকুন

২০| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:২২

*কুনোব্যাঙ* বলেছেন: ফেসবুকের একটি গ্রুপে আজ আমি কোথাও যাবো না এই পোষ্টটি শেয়ার দিয়ে বলেছে, সামুতে এত ভালো লেখা কমইপড়েছি! মুগ্ধ আমি! এত শৈল্পিক লেখা দেখেনিজেকে মুর্খ মনেহয়েছে!


সত্যি বলতে কি, একদিকে আপনার লেখা অপর দিকে ফেসবুকে একজন সহব্লগারের এমন কপ্লিমেন্টই মূলত এত দীর্ঘ গল্প পাঠে আমাকে আগ্রহী করেছে। এবং অবশ্যই ধন্যবাদ জানাই এমন চমৎকার একটু গল্প আমাদের উপহার দেয়ার জন্য।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমরা ব্লগার - এই গ্রুপে আমি দেখছি আমার পোষ্টটাকে শেয়ার দিয়ে উনি এই কথা বলেছিলেন। সত্যি বলতে কি খুব ভালো লেগেছিল।

আর আমি আরও খুশী এই ভেবে যে যে কয়জন পাঠক পেয়েছি তারা সত্যিই আমার প্রতি আন্তরিক যা আমাকে আরও কৃতজ্ঞ করে রেখেছে এই সামু ব্লগের প্রতি। সহব্লগারদের কাছে সঠিকভাবে মুল্যায়িত হতে পারলেই ভাববো লেখালেখির সার্থকতা।

কুনোব্যাঙ আপনাকেও ধন্যবাদ।

সুপ্রভাত।

২১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০৭

রাশেদ রিয়াদ বলেছেন: সাইজ দেখেই তো ভয় লাগতাসে... :(

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আচ্ছা ভয় কমলে পইড়েন গল্পটা

২২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ২:৫২

বটবৃক্ষ~ বলেছেন: আমার রাত্রি জাগরণ সার্থক হয়েছে.........

সবুজ প্রজাপতিটার জন্যে কষ্ট হচ্ছে....:( :(

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো গল্পটা পড়ার জন্যও রাত জেগেছেন। তবে সবুজ প্রজাপতিটা শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যচ্যুত হয়নি ভেবে মন ভালো রাখতেও পারেন।

সুপ্রভাত ।

২৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪

অপু তানভীর বলেছেন: সত্যি কথা বলতে কি আমি হালকা টাইপের লেখা লিখলেও পাঠক হিসাবে আমি বেশ সিরিয়াস ! ব্লগে অনেকের লেখা পড়ি কিন্তু খুব কম মানুষের লেখাই আমি পছন্দ হয় ! কারো কারো লেখা পড়লে মেজাজও খারাপ হয় ! কিন্তু আজ বহুদিন পরে নতুন একটা লেখা আমার পছন্দ হল !
এক কথায় বলতে কি, আমি মুগ্ধ হয়ে পড়লাম ! আজ থেকে আপনার লেখার প্রেমে পড়লাম !
আশা করি নিরাশ হব না ! লিখবেন নিয়মিত !

ভাল লাগা নিরন্তর !! :) :)

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমিও আপনার কিছু লেখা পড়েছি, আপনার লেখার ধরণ বোঝার চেষ্টা করেছি - তবে যে কয়টা লেখা পড়েছি সবগুলোতে কমেন্ট করা হয়নি। একজন মনোযোগী পাঠক হওয়াটাও বেশ সম্মানের এবং তৃপ্তির ব্যাপার একজন লেখকের জন্য।

সবার রুচিভেদ এক নয় বলেই লেখায় আর পাঠে মানুষে মানুষে ভিন্নতা থাকে। লেখালেখি ভালোবাসি ভীষণ , থামিয়ে দেবার ইচ্ছে নেই একেবারেই। শুভকামনার জন্য আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন অপু ।

২৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩

নীল-দর্পণ বলেছেন: কিছু বলার ক্ষমতা আমার নাই। মুগ্ধ হয়ে শুধু ভাবি মানুষ কিভাবে পারে এরকম লিখতে।
চমৎকার....

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার মুগ্ধ পাঠের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শুভকামনা রইলো।

২৫| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪২

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:


সপ্তম গল্প পড়ে 'মাইগ্রেন' নিয়ে এক আধটু জানতে হবে মনে হচ্ছে।
অষ্টম গল্পঃ নিজের উপার্জন! কবে যে নিজে একটু কাজের হবো। এখন শঙ্কায় কাটে দিন-রাত্রি।
নবম গল্পের শুরুতে আৎকে উঠছিলাম, প্রথম গল্প টা আবার না তো। পরে দেখা গেলো বেশ কয়েকটা পর্বের সমন্বয়। শেষ দিকের মুক্তগদ্যের মতো অংশগুলো দূর্দান্ত।
দশম গল্পঃ স্বপ্নের পথে হাটা! ডুবে যাওয়া প্রত্যাশার অথৈ জল। আগের পর্বগুলো কাজে লাগতেছে।
এগারোতম গল্পঃ লক্ষ্যে অটুট সবুজ প্রজাপতি।

পুরো গল্পটা আলাদা আলাদা পর্বে এতো দারুন ভাবে তুলে ধরেছেন, প্রথম ৭/৮ টিকে আলাদা ছোট গল্প হিসেবেও পড়া যায়। দারুন।
এতো দীর্ঘ গল্প, তবুও পড়তে একটুকুও ক্লান্তি ধরে না।
দারুন।

শুভকামনা আপু।
(প্রিয়তে নিলাম, এই পোস্ট।)

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মাইগ্রেন নিয়ে নেটে পড়াশুনা করে জানো সমস্যা নাই কিন্তু মাইগ্রেনে ভোগো কখনোই চাই না ! ভয়াবহ এক পেইনের নাম মাইগ্রেন।তীব্র রোদ, টেনশন, মেজাজ খারাপ, অতিরিক্ত কাজের চাপ আর চোখের উপর প্রেশার ইত্যাদিতে মাইগ্রেন হওয়া ছাড়াও আরও কিছু কারণ আছে। শারীরিক ভাবে মাইগ্রেনের তীব্র ব্যথায় অনেক ক্ষেত্রে বমিও হয়। মানসিক ব্যাপারও অনেকক্ষেত্রে মাইগ্রেনের সাথে জড়িত। বিরক্তি ,মেজাজ খারাপ হলেই চট করে এই পেইন হয়। কপালের দুপাশ চাপ দিয়ে ধরে থাকা, ঘাড়ের উপরে ব্যথা হওয়া, এক নাগাড়ে এই ব্যথা ২-৪ দিন ও থাকতে পারে। আর এসব যা লিখলাম সব আমার হয় এবং খুব কম দিনই আছে যে নিজের মাথা , মাইন্ড আমার ফ্রেশ লাগে যেদিন ব্যথা মুক্ত থাকি।


পড়াশুনা শেষ হলে নিজেই উপার্জনের চিন্তা করবে। সে সময়টা খুব আনন্দের। তবে আনন্দ চিরস্থায়ী না , চাকরী বা প্রফেশন যেটাই হোক না কেন বোরিং লাগে একটা সময়। সুতরাং জব থাকাও জ্বালা না থাকাও জ্বালা।


অনেক ধৈর্য ধরে পুরো গল্পটা শেষ করেছ , ফাঁকে ফাঁকে পাঠ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছ এজন্য এবং প্রিয়তে নেবার জন্যও অনেক কৃতজ্ঞতা।

ভালো থেকো ভাইয়া।

২৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: বেশ বড় পোস্ট হলেও সুন্দর। থিম, বর্ণনা, ডায়ালগ, সেটিং - এক কথায় অসাধারণ।

আরও ভাল গল্প পাবো এই আশা রাখি। শুভেচ্ছা।

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনাকে আমার পোস্টে এ পেয়ে খুব খুশী হলাম ইসহাক ভাই !

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

২৭| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

আহমেদ জী এস বলেছেন: অপর্ণা মম্ময়,

পড়লাম । অনেক মন্তব্যও দেখলাম । যা বলতে চাই বলে মনে হয়েছে তা হাসান মাহবুব, বোকামন ওরা বলে ফেলেছেন ।
একটি মেয়ের আলাদা হয়ে ওঠার বাসনা, সমাজের বর্তমান মানসিকতা, প্রবাসীদের "আয় আয় তু...তু" বললেই অনেকেই ছুটে আসবেন এমোন ধরনের ইচ্ছে পোষন, এ সবই বাস্তব ।
তার পরেও বলি - এই কঠিন বাস্তবতার মাঝেও, মাঝে মাঝে মন যে চুরি চুরি করে সবুজ প্রজাপতি হতে চায় তাও ঠিক । আর এরকম প্রজাপতিদের যে ডানা হঠাৎ করে খসে যায় তার বর্ণনাটুকু বেশ হয়েছে । আর অসময়ে শ্রাবন ধারা এভাবেই তো ঝরঝর হয় যেমন বলেছেন । "কর্মে ফল "এ রকম একটা প্রবাদ আছে । গল্পের নির্ঝরের মতো বাকীরাও যেন এর মর্ম বুঝে নিতে শেখেন ।

সবশেষে বলি , একটা জায়গাতে এসে খটকাতে পরে গেছি । গল্পের ২য় পর্ব - "ধূলিকণা এবং সবুজ স্বপ্নের সূচনা"র ৩য় প্যারার শেষে -
এটা যে শুধুই কথার কথা তা ভেবে হাসি পাচ্ছিলো কণার লিখেছেন ।
এই পর্বের কথক কনা । তাই এখানে "কনা" নাকি "আমার" শব্দটি বসবে ! ধন্ধে পরে গেছি তাই ।

শুভেচ্ছান্তে । ভালো থাকুন .......

০৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনি যেখানে এসে খটকাতে পড়েছেন , আপনার অনুমান ঠিক আছে। ওখানে আমার লেখার ভুল। ' আমার ' লিখতে গিয়ে ' কণার' লিখে ফেলেছি।

প্রত্যেকটা মানুষেরই আছে মানুষ হিসেবে বাঁচার অধিকার , স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অধিকার। নারীরা একটু অবহেলিত সেটা পরিবার থেকেই বলে কিনা অধিকারহীনতা একটু বেশীই চোখে পড়ে। তাই সবুজ হতে চাওয়া কণার , প্রজাপতি হয়ে বেঁচে উঠতে চাওয়া বা জীবনের পথে, আলোর পথে চলতে চাওয়া।

পুরুষও কখনো তার অবস্থায় বেকায়দায় পড়ে হাঁসফাঁস করে বৈকি যেমন করে নির্ঝর তার স্ত্রী কার্লার সাথে পড়েছিলো, দম বন্ধ অবস্থায় কিছুটা সময় জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েও সে মুক্তি পেয়েছিলো, তবে যথেচ্ছ জীবনে জড়িয়ে গিয়ে আলো দেখতে পেয়েও যার শেষ রক্ষা হয়নি।

ভালো থাকুন আপনিও।

২৮| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪১

খেয়া ঘাট বলেছেন: অ-সা-ধা-র-ণ
++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এক গুচ্ছ প্লাসের জন্য।

২৯| ০৫ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০৬

রহস্যময়ী কন্যা বলেছেন: এতোক্ষণ সময় যে হয়ে গেলো টেরই পেলাম না আপি।পোষ্টে ভালো লাগা :)

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এতক্ষণ সময় নিয়ে যে গল্পটা পড়েছ এজন্য অনেক ধন্যবাদ তোমাকে

৩০| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫০

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: শেষ করলাম, মনে হলো সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় সাদামাটা গল্পের দুর্দান্ত একটা ছবি দেখলাম! পরিচালক এক্ষেত্রে আপনি, আপনার লেখনী আর ঘটনা বিন্যাসে অসাধারণ হয়ে উঠেছে! গল্পে রুম্পার কম উপস্থিতি ভাবাচ্ছিল কিন্তু নি:সন্দেহে অনুঘটক চরিত্র! কণার হতাশাগ্রস্থ শুরুর পর ওর সবুজ কণা হয়ে উঠা আমাকে ভাবাচ্ছিল কি ঘটেছে যে সবুজ নীল হয়ে গেলো! কণার কষ্ট পাওয়া টা যেমন মেনে নিতে পারছিনা একইভাবে কণার আমেরিকা ফেরত নির্বোধের প্রেমে পুরোপুরি মজে যাবার মুক্তি কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে! একটা সময় মনে হচ্ছিল যুবক নিজেকে ফিরে পাচ্ছে কিন্তু কুকুরের লেজ কখনো সোজা হয় না! কণার জীবনে নিশ্চয়ই সবুজের মত সতেজ কেউ আসবে! শুভকামনা আপু!

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অভি তোমার চমৎকার মন্তব্যে আমি খুব মুগ্ধ হলাম ভাইয়া।

এটা ঠিক ঘটনা খুব সাধারণ কিন্তু এই একটা গল্পে টুকরো টুকরো অনেক কিছু ভাবার মতো আছে। একটা মানুষের মানুষ হয়ে বাঁচার ইচ্ছে সে নারীই হোক বা পুরুষ , ভালোবাসার মতো একটা অনুভবের দানা বেঁধে ওঠা, পারিবারিক সদস্যদের পারষ্পারিক সম্পর্ক ইত্যাদি ।

ভালো থেকো তুমিও অভি।

৩১| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০৪

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: অফ লাইনে পড়েছিলাম । ভাল লাগা জানিয়ে গেলাম

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ প্রত্যাবর্তন । শুভকামনা রইলো।

৩২| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৫

আমি ইহতিব বলেছেন: অনেক সময় লাগলো লেখাটা পড়ে শেষ করতে, নাজিম ভাইয়ের লেখা পড়ার পর থেকে বড় লেখাগুলো আর এড়িয়ে যাইনা, তবে সেক্ষেত্রে লেখকের লেখনীর দক্ষতা একটা বড় ভূমিকা রাখে। যেমনভাবে আপনার লেখাতে আটকে গেলাম তাতে আর আপনার লেখনীর প্রশংসা করার মতো যুক্তিযুক্ত কোন ভাষা বা শব্দ খুঁজে পাচ্ছিনা। অপ্সরা সিজেলকে ধন্যবাদ আপনার লেখাটা শেয়ার করার জন্য। ওনার জন্যই আপনার এই দারুন গল্পটা পড়ার সৌভাগ্য হলো। পোস্টে +++

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: বড় আকারের লেখা পড়তে আগে আমি নিজেও ভয় পেতাম ব্লগে আর লেখার কথা তো ভাবতেই পারতাম না। তবে কিছু কিছু ব্লগারের লেখা পড়ে এতটাই মুগ্ধ হতাম যে তখন এই চিন্তা আর কাজ করতো না লেখাটা বড় নাকি ছোট !

অপ্সরা সিজেলের পোস্ট ' আমরা ব্লগার ' গ্রুপে আমি নিজেও দেখেছি। এজন্য সে স্পেশাল ধন্যবাদ প্রাপ্য। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সময় নিয়ে গল্পটা পড়লেন বলে।

ভালো থাকবেন।

৩৩| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:০৪

আমিনুর রহমান বলেছেন:


দেরী করে ফেললাম আসতে। ভুল কিছু ঠিক করার চেঞ্জ পেয়ে গেলেন এই ফাকে :P প্রথমে আপনাকে কমেন্ট আর লাইক দিয়েই পড়া শুরু করেছিলাম কিন্তু কাজের চাপে আর স্যারের ডাকাডাকি আমার মনোযোগ নষ্ট করে দিয়েছিল। আমি ছোটগল্প একবারে পড়ে ফেলার চেষ্টা করি না হলে তৃপ্তি পাই না।

উপরে আলোচনা-সমালোচনা যা করার অনেকেই করেছে। আর অনেক মুগ্ধ হয়ে গেলে আমি এমনিতেই কিছু বলতে পারি না। অসাধারণ ও অনন্য। খুব গতানুগতিক একটা বিষয় নিয়ে চমৎকার করে লিখা আর পাঠককে পাঠে মুগ্ধ করা ভীষণ কঠিন। তাতে আপনি পুরোপুরি সার্থক। বর্ণনা অনেক চমৎকার আর গতি ছিলো ভয়ানক, মনেই হলো না এত বড় একটা লিখা পড়ে ফেললাম এক নিঃশ্বাসে।

বানান ভুল তো কিছু আছেই আর এত বড় লিখায় সেটা থাকাই স্বাভাবিক।

দেখে একটু ঠিক করে নিয়েন।


লিফট ব্যাবহার – ব্যবহার

অবিবাহিত পাত্রীদের অভিভাকদের কাছে মূল্যবান ব্যাপার ছিলো - অভিভাবক

সবার কাছ থেকে জবাদিহিতার ভয়েই একরকম আমার আমেরিকায় পালিয়ে আসা। - জবাবদিহিতা

আমি খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সবুজ দেখতে চাই আমার ব্যালকনীতে দাঁড়িয়ে – সম্ভবত ব্যলকনী হবে সেক্ষেত্রে বারান্দা লিখটাই ভালো মনে হয়।

যে জগতে আছে স্বপ্ন, বিপ্লব, সাবলম্বী হয়ে ওঠার প্রত্যয় এবং নাতিশীতোষ্ণ ফাল্গুনীবাতাস। - স্বাবলম্বী

হয়তো কার্লার কাছে জবাদিহিতা করতে হতো বেডরুমে কেন খাবারের টুকরো অংশ পড়ে থাকে - জবাবদিহিতা

বাংলাদেশের আবহায়াওয়ায় দেশে ফেরার ক’দিন পরই মাথায় যন্ত্রণা শুরু হলে – আবহাওয়া

কথায় কথায় কণা জানিয়েছিল ওর মাইগ্রেনের ব্যাথাটা বাড়ায় ডাক্তারের কাছে এসেছিলো চেক করাতে। - ব্যথা

এক্ষত্রে পাত্রের আগের একটি বিয়ে থাকলেও তা দ্বিতীয়বার বিয়ের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না – এক্ষেত্রে।

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ইশ আপনি কতই না ভয় পাইছেন ভাইয়া যে আবার এসে নিজের মন্তব্যের ভুল নিজেই ঠিক করে গেছেন । ( ইমো মন্তব্যের মাঝে কিভাবে দেয় জানি না ) না হলে নিজের নামের বিপরীতে পাওয়া সুন্দর উপাধির ব্যবহার করে নিতাম যা কাল্পনিক ভাইয়া দিয়েছে ! :)

অনেক ধন্যবাদ টুকটাক ভুল গুলো ধরিয়ে দেবার জন্য। ঠিক করে নিয়েছি। আর ব্যালকনী বানান টা এটাই হবে। আপনি যে মনযোগী পাঠক এটা বোঝা গেলো। তবে বানান ভুল আমারও যে হয় সেটা তো দেখলেন। লেখা বড় হয়ে যাওয়াতে অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়ে গেছে অবশ্য।

আপনার মুগ্ধ পাঠ আমাকে মুগ্ধ করলো। ভালো থাকবেন ভাইয়া।

৩৪| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫

দূর্যোধন বলেছেন: কি অবস্থা মাম্মা ? বিশাল বিশাল প্রশংসাবানীতে ভাইস্যা যাইতাছো আর এইদিকে বৃষ্টিতে দ্যাশ ;)

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আরে মাম্মা ! তুমি আইছো আমার বাড়িতে !!! তুমি তো প্রশংসা করলা না ! এত্ত গুলি পচা তুমি

৩৫| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:০২

আমিনুর রহমান বলেছেন:

ভুল কিছু ঠিক করার চেঞ্জ পেয়ে গেলেন এই ফাকে :P *চান্স

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নিজের কমেন্ট শুদ্ধ করে আবার লিখলেও ফাঁকে বানান ভুলই রইলা গেলো :প হাহহাহা

৩৬| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

নীল কথন বলেছেন: কনা সত্যিটা জানতে পারছে। লেখককে ধন্যবাদ। না হলে লেখককে বকতাম। :ঢ়

০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ফাঁকিবাজি কমেন্টের জন্য তোর কপালেও বকা প্রাপ্য হইছে !

৩৭| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৩

নীল কথন বলেছেন: গল্পটাতো আমি বইতেই পড়ছি। আচ্ছা একটা বড় কমেন্ট করে যামু।

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ওকে। ভালো থাকিস।

৩৮| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৫

সায়েম মুন বলেছেন: মেগা পোস্ট দিয়েছেন দেখি। কালকে সময় করে পড়ে বিস্তারিত মন্তব্য দিবো।

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সেটা ঠিকই বলেছেন ! পোস্ট বড় হয়ে গেছে।

৩৯| ০৬ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৮

মামুন রশিদ বলেছেন: আজকে আবার পড়লাম, অন্য রকম মজা পেলাম । তারমানে প্রায়ই এসে গল্পটা পড়ে যেতে হবে । ঐ যে বলে না, প্রতি কামড়ে আলাদা স্বাদ । :P


ও হ্যাঁ, আজকে হালকা মেজাজে পড়েছি । "গল্পের রস আস্বাদনে মেজাজেরও ভূমিকা থাকে"- একটা আস্ত বাণী দিয়ে দিলাম ;)

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এরকম আমার অনেক হয়েছে একই বই বেশ কয়েকবার পড়েছি। একেক মুডে বইয়ের গল্প বা উপন্যাস একেক রকম লাগে। মুডের উপর অবশ্য ভালা লাগা , মন্দ লাগা প্রভাবিত হয় কখনো কখনো।

জেনে ভালো লাগলো মামুন ভাই আপনি আবার এসে পড়েছেন গল্পটা।
শুভকামনা আপনার জন্য।

৪০| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪৭

স্বাধীন বিদ্রোহী বলেছেন:

বড় গল্প পড়ার একটা সুবিধা হল সময় কেটে যায় কিন্তু ছোট গল্প পড়তে পড়তে ফুরিয়ে যায়। আপনার গল্প পড়ে সুন্দর সময় কেটে গেলো।

প্লাস দিয়ে প্রশংসা না করে বরং বলি বানান ভুল এগুলো কোন বিষয় নয়। অনেক বড় বড় রাইটার আছেন তারাও যখন লিখেন বানান ভুল হয়। সেগুলো পরে প্রকাশিত হবার আগে সম্পাদিত হয়।

আপনার লেখার মান ভাল লেগেছে। সাহিত্যের সাধ পুরোপুরি নেয়া গেলো।

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আসলে বড় গল্প আমরা ছাপার অক্ষরে পড়েই বেশী অভ্যস্ত ( যাদের পড়ার অভ্যাস আছে )। কিন্তু ব্লগে একই সাথে অনেকের লেখ আপরা , নিজস্ব কিছু কাজ থাকার ফলে অনেক সময় লেখার আকার বড় দেখলে আমরা হাঁপিয়ে উঠি। আর সে হিসেবে আমার গল্পের আকারও বেশ বড়।

বানান কম বেশে অনেকের ই ভুল হয় । আমারও হয়। তবে চেষ্টা করি নির্ভুল রাখতে। বড় লেখার জন্যই অনিচ্ছাকৃত ভাব একিছুতা ভুল রয়ে গেছিলো, তবে সহব্লগারদের আন্তরিকতায় সেসব বানান ঠিক করে নিয়েছি।

ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকুন।

৪১| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:১৭

সায়েম মুন বলেছেন: সম্পর্কের টানাপোড়েন। একটা মেয়ের সমাজ সংস্কার সম্পর্কে উদাসীনতা, বা বিদ্রোহী মনোভাব, সবুজের প্রতি মোহগ্রস্থতার কথা উঠে এসেছে গল্পে। মেয়েটার মাঝে অনেক সময় বিদ্রোহী, অনেক সময় প্রেমিকা, অনেক সময় সন্ন্যাসী অনুভূতির কথা জানতে পারলাম।

সাতকাহন আর গর্ভধারিনী উপন্যাস দুইটা যে পড়েছিলাম। এটা আপনার গল্প পড়ে মনে পড়লো।

টাইপো: অনুভুতিশুন্য, দৌড়ে দৌড়ে ঠিক করে নিয়েন। আরও কয়েকটা আছে। যা হোক যা জানা গেল ভুল বানান সব সময় এড়ানো সম্ভব হয় না। তবে গল্পের ক্ষেত্রে এটার ভ্যালু কিছুটা কম। কবিতার ক্ষেত্রে খুব বেশী অশোভন। #:-S

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কলেজে থাকতে এই সাতকাহন, গর্ভধারিণী খুব বেশী পড়তাম। আর সমরেশ মজুমদারের ' আট কুঠুরি নয় দরজা' অনেক বার পড়েছি। গর্ভধারিণী পড়ে যে কতটা মোহগ্রস্ত ছিলাম , কতদিন যে জয়িতা হতে চেয়েছিলাম ! দীপাবলির চেয়ে জয়িতা অনেক ধারালো চরিত্র।


অনুভূতিশুন্য আর দৌড়ে দৌড়ে কোন পার্টে লেখা খুঁজে বের করাটা ঝামেলার ! নাম্বারগুলো না হয় বলে দিতেন সাথে !! কবিতা ছোট একটা আকারের হলেও অল্প কথায় গভীর ভাবে প্রকাশের মাধ্যম, তাই ভুল বানান বাঞ্ছনীয় নয় । হাহাহা .......। কিন্তু গদ্যে কিছুটা শিথিল। তবে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর পাঠ প্রতিক্রিয়ার জন্য।

ভালো থাকবেন সায়েম।

৪২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৩৮

একলা চলো রে বলেছেন: ডিফরেন্ট টাইপের একটা লেখা। আই লাভড ইট! + + + +

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ! আপনার মন্তব্যও ডিফরেন্ট টাইপের। ভালো লেগেছে।
শুভকামনা আপনার জন্য।

৪৩| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩১

অদৃশ্য বলেছেন:





ছোট গল্পের ভেতরে টুকরো টুকরো চিঠি লিখাটা আমার কেন জানি ভালো লাগেনা, আমি ভাবি লেখক কি চিঠিগুলো লিখে গল্পের টাইম পাস করছেন... ছোট গল্পে এক'দু লাইনের এক্সট্রা নোট হলে ভালোলাগে... যা হোক মানুষের ভালো লাগা না লাগার কোন শেষ নেই, এটা স্রেফ পাঠকের মতামত...

গল্পটা আমার তুলনামূলক দীর্ঘ মনে হয়েছে... লিখাটি আরো কিছুটা ছোট করে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধির চেষ্টা হয়তো লেখক/লেখিকা করতে পারতেন...

তবে শেষমেশ এসে লিখাটি ভালো লেগেছে... সুন্দর সমাপ্তির কারনে




শুভকামনা...

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লাগা না লাগার যেমন শেষ নেই তেমনি কারণও নেই সুনির্দিষ্ট। কিন্তু এটা আমি খুব উপভোগ করি গল্পের মাঝে চিঠি দেয়া । ভালো লাগে এর একটা আলাদা আবেশ পাই বলে।

গল্পটা দীর্ঘ তবে আমি ছোট করে লিখতে পারি না । মনে হয় ভাব বা চরিত্র ভালো করে ফুটিয়ে তোলা হলো না বুঝি।

সবশেষে যে আপনার ভালো লেগেছে গল্পটি জেনে আমারও ভালো লাগলো ভাইয়া।
ভালো থাকবেন এই কামনা রইলো ।

৪৪| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৭

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আবার প্রথম থেকেই পড়লাম। বড় গল্প বলে ব্লগে দিতে দ্বিধা করবেন না আপু। খুব ভাল একটা বড় লেখা পড়ে কিছুটা সময় ব্যয় করাটা কোন অর্থেই সময়ের অপচয় নয়। বড় গল্প পেলেই আমি আয়েস করে বসে সমস্ত মনোযোগ এক করে পড়ি।

মূল গল্পটা খুব সিম্পল। একজন আমেরিকা প্রবাসী, পশ্চিমা কালচারের প্রতি বিতৃষ্ণ বাঙ্গালী ছেলে আর সাধারন ঘরের একজন স্বাধীনচেতা বাঙ্গালী মেয়ের কাছে আসার গল্প।

মূল গল্পের আড়ালে বেশ কিছু ছোট ছোট দৃশ্যকল্পের সন্ধান পেলাম। অনেকটা যেন- গল্পের ভেতরে বেশ কিছু গল্প উঠে এসেছে। মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবন যাত্রা, পিঠাপিঠি ভাই বোনদের ছোটখাট বিবাদ , একজন মেয়ের সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একলা চলার প্রচেষ্টা, প্রাশ্চাত্য কালচারে মিশে একজন বাঙ্গালীর উদ্দাম জীবন যাপন, নিজের পরিবারের নিয়মতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা, আভিজাত্যের মাঝে থাকা সত্ত্বেও জাতিগত ঐতিহ্যের প্রতি হৃদয়ের এক কোনে কিছুটা দুর্বলতার অবস্থান সহ আরও অনেক কিছু।

প্রতিটি অধ্যায়ের আলাদা নাম করন গল্পটিতে অনেক বেশি ইউনিকনেস এনে দিয়েছে। খুব সাধারন একটা কাহিনী একজন গুণী লেখকের সৃষ্টিশীল লেখনীর দ্বারা কতটা অসাধারন হয়ে উঠতে পারে তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তের সাক্ষী হয়ে রইলাম।

ভাল থাকুন অপর্ণা আপু।

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: যদিও আগে কোনো গল্প লেখার আগে মাথায় কাজ করত ব্লগে দিলে কেউ আমার লেখাটা পড়ে মতামত দিবে তো , বিরক্ত হবে না তো ইত্যাদি নানান ভাবনা। অল্প কথায় পরিপূর্ণ ভাব ফুটিয়ে যারা তুলতে পারেন তাদের রীতিমত জিনিয়াস মনে হয় আমার কাছে কারণ আমার কাছে এটা খুব কঠিন কাজ লাগে।

আমাদের জীবনটা খালি চোখে সাদামাটা মনে হলেও অলক্ষ্যেও অনেক বৈচিত্র্যময় কিছু ঘটে। টুকরো টুকরো সে ঘটনাকে সামনে আনলেই টের পাওয়া যায় সেটা এবং বিশাল ক্যানভাসে ধরা দেয়।

তুমি এত সুন্দর করে তোমার পাঠ প্রতিক্রিয়া টা তুলে ধরেছ নাজিম , আমি সেভাবে আসলে তোমাকে উত্তর দিতে পারছি না। শুধু বলবো ভালো লেগেছে তোমার এই বিশ্লেষণ।

তুমিও ভালো থাকো নাজিম। শুভকামনা রইলো।

৪৫| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার লেখায় ভাললাগা :)

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মনিরা আপু

৪৬| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১

সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: অসাধারণ লেখেন আপনি । ++++++++++++++++++++++

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপু , আপনি নিজেই খুব চমৎকার লিখেন।
প্লাসের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

৪৭| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৭

সকাল রয় বলেছেন:
৭দিন লাগবে পড়ে শেষ করতে প্রতিদিন একটুএকটু করে পড়বে।

০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আচ্ছা । সময় থাকলে না হয় সময় নিয়েই একটু একটু করে পড়ো।
ভালো থেকো ।

৪৮| ০৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:১৪

তীর্থক বলেছেন: নাটকীয়তা বলব না, সিনেমাটিক একটা গল্প। "Alejandro González Iñárritu" র "ব্যবেল" নামে একটা মুভি আছে। যারা দেখেছেন তারা সিনেমাটিক শব্দটার সাথে নিজে থেকেই পরিচিত হয়ে গেছেন।

গল্পে খুব নতুনত্ব কিছু পাইনি। লেখা সাবলিল ছিল। কিছু যায়গায় একই শব্দের অনিচ্ছাকৃত রিপিটেশান হয়েছে। গল্পটা দেখতে দীর্ঘ হলেও পড়তে দীর্ঘ লাগেনি। বরং কোথাও কোথাও আর একটু দীর্ঘ হলে (মানে সময় দেয়া গেলে) বেশি বাস্তবসম্মত হত মনে হয়। যেমন কনা আর নির্ঝরে'র প্রেম'টা একটু দ্রুতই হয়ে গেছে। কনা'কে যে ধরনের ক্যরেক্টার হিসেবে দেখান হয়েছে তাতে তার খুব দ্রুত নির্ঝরে'র প্রেমে পরে যাওয়াটা তাকে স্বাভাবিকে'র উর্ধ্বে তুলতে পারেনি।

এছাড়া কনার ক্যরেক্টার'কে যে ডাইমেনশান থেকে ব্যক্ষা করা হয়েছে নির্ঝরের ক্যরেক্টারও সেই একই ডাইমেনশান থেকে ব্যক্ষা করা হয়েছে। যদিও এটা লেখকের চরিত্র বিশ্লেষনের শক্তিমত্বার প্রমান দিয়েছে কিন্তু নির্ঝরে'র চরিত্রটাকে কোথাও কোথাও মাল্টি ডাইমেনশনাল (দ্বৈত চরিত্র) মনে হয়েছে। এটা লেখক সেচ্ছায় না অনিচ্ছায় করেছে ঠিক বোঝা যায়নি।

সব মিলিয়ে আমি পাস মার্ক দিচ্ছি :-)
+

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পারফেকশনিস্ট হওয়া হয়তো কারো পক্ষেই পরিপূর্ণভাবে সম্ভব না। একই লেখার যেমন করে আসে বিভিন্ন ধরণের পাঠ প্রতিক্রিয়া। কারো কাছে ভালো লাগে কারো কাছে লাগে মোটামুটি ইত্যাদি ইত্যাদি সব ব্যাপার।

মানুষের জীবনে একটা সময় আসে যখন কেউ প্রাপ্তবয়স্ক হবার পর অনুভব করে সে একজন 'নারী' বা ' পুরুষ' হতে পেরেছে। ঐ সময়টায় একটা হু হু করা , বুক চেরা অনুভবের সাথে পরিচয় হয়। যার নির্দিষ্ট কোনও সংজ্ঞা নেই । হতে পারে সেটা একাকীত্ব , আবার অনেকের মাজে থেকেও একলা থাকার অনুভব ! এরকম অনেক থাকে না ছোট বেলায় তারা প্রেমের নামই শুনতে পারে না , ঘোর বিরোধী টাইপ ব্যাপার -- কিন্তু তারাও প্রেমে পড়ে।

কণার বাবা একটা ইঙ্গিত করেছিল কণাকে লেখা এক চিঠিতে " হয়ত শেষ পর্যন্ত বাকী জীবনটা তুমি একা থাকার সিদ্ধান্তে নাও থাকতে পারো । " । কণা যে রকম মানসিকতার মেয়ে তার সাথে লুতুপুতু ভাব যায় না। তবে একটা প্যারাতে ছিল এমন যে --


" কয়েকদিন যাবত বিশেষ করে নির্ঝরের সাথে সেদিন অনেকটা সময় কাটিয়ে আমি নিজের মাঝে অন্য এক আমিকে অনুভব করছিলাম যে অনুভবের কথা আগে শুধু বইতে পড়েছিলাম। ওর সাথে পরিচয়ের প্রায় তিন মাস হতে চললো । এর মাঝে আরও কয়েকবার দেখা হয়েছে তার সাথে , ফোনে কারণে- অকারণে কথাও হয়েছে। তবে কথা বলার কারণের চেয়ে অকারণটাই ছিলো বেশী। আর এই অকারণ অনুভবের পুরোটা জুড়েই ছিলো অস্থিরতা। টের পাচ্ছিলাম খুব ধীরে আমার একা থাকার সিদ্ধান্তটা বদলে যাচ্ছে। "


ঐ অস্থিরতাই ভালোবাসা বা প্রেম কিনা কণা নিজের মাঝে নিশ্চিত নয়। তবুও এখানে বোঝানো হচ্ছিলো নির্ঝরের সঙ্গ কণা পছন্দ করছে। সে হিসেবে আমার মনে হয়েছে কণার যে ফিলিংস এখানে দেখিয়েছি সেটা ঠিক আছে।

তবে আরও যত্ন নিলে হয়তো আরও কিছু পরিবর্তন আসতো। লেখাটা আবার যদি আমি সম্পাদনা করি তাহলে এই গল্পে যারা যারা আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন লেখার কিছু ত্রুটি সম্পর্কে সেটা সংশোধন করে নেবো।

শুভেচ্ছা আপনার জন্য।

৪৯| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:৪০

তীর্থক বলেছেন: যেমন কনা আর নির্ঝরে'র প্রেম'টা একটু দ্রুতই হয়ে গেছে। কনা'কে যে ধরনের ক্যরেক্টার হিসেবে দেখান হয়েছে তাতে তার খুব দ্রুত নির্ঝরে'র প্রেমে পরে যাওয়াটা তাকে সাধারনের উর্ধ্বে তুলতে পারেনি।

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:২১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: যদিও অনেক সময় নিয়েই গল্পটা লিখেছিলাম। তারচেয়েও বেশি সময় নিয়ে টাইপ করেছি। পরবর্তী কোনও গল্প লেখার সময় আরও যত্নবান হবো। যদিও সহসা নতুন কোনও লেখায় হাত দেয়া হচ্ছে না, নতুন কিছুই লেখা হচ্ছে না আমার।

ভালো থাকবেন তীর্থক।

৫০| ০৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১১

তীর্থক বলেছেন: আসলে লেখাটা খারাপ হয়েছে তা কিন্তু বলিনি। লেখাটা সাবলিল লেগেছে। এক বসায় পড়েছি মানে এক বসায় পড়ার যোগ্য হয়েছে। এটা লেখকের কৃতিত্ত্ব।
লেখাটার সমালোচনা করার আরও অনেক যায়গা ছিল, সেগুলো কিন্তু ইচ্ছা করেই বাদ দিয়ে গেছি কেননা এধরনের গল্পে (অল্প পরিষরে পরিপু্র্ণ একটা কাহিনি)ছোট খাট কিছু অসামন্জস্য থাকবে এটা ধরে নিয়েই পড়তে শুরু করেছিলাম।
আমি যেই পয়েন্টে ফোকাস করেছি সেটা হচ্ছে কনার প্রেমে পরা। গল্পের ভিতরে হয়ত আরও কিছু ঘটনা যোগ করা যেত যেগুলো পাঠক'কে নির্ঝরের প্রতি কনার আকর্ষনের হেতু বুঝাতে সক্ষম হত। আসলে বাবার চিঠি,কিংবা "কয়েকদিন যাবত বিশেষ করে নির্ঝরের সাথে সেদিন অনেকটা সময় কাটিয়ে" বা "আরও কয়েকবার দেখা হয়েছে তার সাথে , ফোনে কারণে- অকারণে কথাও হয়েছে " এই জাতিয় শব্দের ব্যবহারের চাইতে সেদিন নির্ঝরের সাথে সময় কাটানোটা কেমন ছিল, চোখাচোখি হয়েছিল কি না, আবগজড়িত কোন কথা হয়েছিল কিনা, নিজের অজান্তেই হাতে হাত স্পর্শ হয়েছিল কিনা কিংবা ফোনে কারনে- অকারনে কি কথা হত বা হয়েছিল আর তা কততা ভালোবাসায় রাঙিয়ে দেয়ার মত এগুলো লেখার মাঝে চলে এলে ভালোবাসা হয়ে যাওয়ার একটা জোড়াল ব্যক্ষা দাড় করান যেত। এই দিকটা বাদ পরেছে মনে হয়।

কনার মত মেয়েরা এখনও রুম্পাদের নির্ঝরে'র ফ্লাটের দরজা দিয়ে বেড় হতে দেখলে অতটা আপসেট হয়ে যায় আর ১৭ তলা ফ্ল্যাটের সিড়ি বেয়ে ছুটে নেমে যায় এটা সিনেমাটিক। গ্রামের মেয়ে কনার জন্য তা স্বাভাবিক। তবে যে কনা'কে আমি গল্পের ভিতর দিয়ে কল্পনা করেছি, ভার্সিটি পড়ুয়া অতি আধুনিক, জয়ীতা কিংবা দীপাবলির সাথে তুলনিয় কনা সেরকম করতে পারেনা। আমি অন্তত তাই বিশ্বাস করি।

ধন্যবাদ :-)

০৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: যতটুকু কৃতিত্ব সেটা পেয়ে খুশী হলাম আর আপনার দাঁতভাঙা জবাবেও খুশী , আমার দন্ত বিকশিত হচ্ছে । :)

আলোচনা, তর্ক ইত্যাদি সবই চলতে পারে। তবে উত্তর আগেও দিয়েছিলাম আমি যখন আবার বসব এই গল্পের এডিট নিয়ে আপনার পরামর্শ অনুযায়ী ভালোবাসা প্রকাশের ছোট ছোট যে মাধ্যমগুলো , সেগুলো নিয়ে কাজ করবো অবশ্যই।

ভালোবাসা তাও যদি হয় প্রথম বারের মতো সেখানে আবেগের বহিঃপ্রকাশ কণার মতোই সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে যাবার মতোই হতে পারে এবং সিনেমাটিকও।

তবে আপনার মতামত আমার কাছে সাদরে গৃহীত হয় প্রতিবারই। আর প্রতিমন্তব্যে যা লিখি সেটা আমার দৃষ্টিকোন থেকেই লিখি, আর নিজের লেখার জন্য সবারই একটা কাউন্টার পয়েন্ট থাকে।

ছুটির দিন ভালো কাটুক আপনার। শুভকামনা তীর্থক।

৫১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: কিছুদূর পড়েছি। বেশ ভাল লেগেছে। বাকিটা পড়ে কমেন্ট করব। এত বড় পোস্ট কষ্ট করে পড়ানোর জন্য (সুন্দর লেখনীর মাধ্যমে) আপনারে অগ্রিম ''মাইনাচ''

০৯ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুঁজে নিয়ে লেখা পড়েছেন সেটাই তো বেশি। সময় করে পরে পড়লেও হবে , সমস্যা নেই।
মাইনাচের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন আহসান।

৫২| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১০

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভোগী পুরুষরা ভোগ করে চলে, অচেতনে। ত্যাগী নারীরা ত্যাগ করে চলে, কারণে বা অকারণে। গল্পে হাড়ের গঠন গতানুগতিক ছিল। কিন্তু তার ওপরে যে মাংসের কারুকাজ হল, তাতে সেই গতানুগতিক কংকালের ভোল পালটে গেল, গল্প হয়ে গেল চমৎকার এক প্রাণী।

কাহিনিপটকে দুমড়ে মুচড়ে এমনভাবে সাজান হয়েছে, যে যখন সবগুলো খণ্ডচিত্র এক বিন্দুতে এসে মিলে যায়, তখন চমৎকার একটা অনুভূতি হয়। কথাসাহিত্যিকের সংস্পর্শে থাকার অনুভূতি।

প্লাস ত দিলামই, প্রিয়তেও নিয়ে গেলাম।

শুভকামনা।

১২ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেকদিন পর আপনাকে পাওয়া গেলো ! প্রিয় কয়েকজন ব্লগারের মাঝে সামুতে আপনিও আমার প্রিয় একজন ব্লগার ; লেখায় , মন্তব্যে !

আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়া খুব ভালো লাগলো শঙ্কু । প্রিয়তে নিয়েছেন বলে ভালো লাগলো ।
আপনার জন্যও শুভকামনা।

৫৩| ১৪ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২৩

অলওয়েজ ড্রিম বলেছেন: "বলা যায় আমি ছিলাম তার নৈঃশব্দ্যের সকল গান"; "আপনি সবুজরঙা মেয়ে ; অনেক সতেজ!" ২ নম্বরের এই বাক্যবন্ধগুলি আমার কাছে বেশ লেগেছে।

অনেকদিন আগেই হালকা চোখ বুলিয়ে গিয়েছিলাম। পড়ার সুযোগ পাই নি। আজকেও পুরোটা পড়তে পারলাম না। প্রিয়তে নিয়ে রেখেছিলাম সেদিনই, যাতে পরে সহজে আবার পড়তে পারি।
ভাললাগা জানিয়ে গেলাম। অনেক ভাল থাকবেন আর বেশি বেশি লিখবেন।

১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার যখনই সময় হবে তখনই পড়লে হবে, তাড়াহুড়ার কিছু নেই।
আপনিও ভালো থাকুন। প্রিয়তে নেবার জন্য ধন্যবাদ

৫৪| ১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০২

অমি_০৭০৪ বলেছেন: এত বেশী ঘোর লাগানো! মুগ্ধ হয়ে পড়েই যাচ্ছিলাম!

১৭ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ অমি। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

৫৫| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৬

কথক পলাশ বলেছেন: অদ্ভুত! অসাধারণ!
কি বলবো বুঝতে পারছিনা।

মানুষের স্থায়িত্ব কিসে, তা মানুষই জানে!

২০ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মানুষের স্থায়িত্ব সম্ভবত তার কাজে !

শুভকামনা আপনার জন্য পলাশ। ভালো থাকবেন।

৫৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:০৪

বৃতি বলেছেন: কার্লা যাবার আগে ঘরে রাখা আমার দুইটা ক্রেডিট কার্ড এবং কিছুদিন আগের সই করা একটা চেক নিয়ে গিয়েছিলো যা আমি রেখেছিলাম আমাদের ফ্ল্যাটের ইন্সটলমেন্ট দেয়ার জন্য ।

আপনার লিখা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই - unified লেখা আপনার । উপরের লাইনটা নিয়ে শুধু বলতে চাই, আমেরিকার আস্পেক্টে ক্রেডিট কার্ড বা চেক নিয়ে কার্লা আসলে তেমন কিছু করতে পারবে না, যদি নির্ঝর সেই ব্যাঙ্ক বা ক্রেডিট কার্ডের অফিসে সে সম্পর্কে কিছু জানিয়ে রাখে ।

অনেক ভালো লাগা থাকলো গল্পটায় ।

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমি জানি সেটা ! তবে প্রস্তুতি ছাড়াই কার্লা এসব না জানিয়ে নিয়ে চলে গিয়েছিল। যদিও গল্পে এটুকু বলেছি মাত্র । অর্থাৎ বিবাহিত সম্পর্কের অবিশ্বস্ততা বোঝাতে এই লাইন গুলো লেখা।

৫৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

এরিস বলেছেন: সেদিন তার সাথে খুব বেশী বাক্য বিনিময় আমার হয়নি। তবে রাতে ঘরে ফিরে আলমিরা খুলে খুঁজে দেখছিলাম সবুজ বা সবুজে আচ্ছাদিত আমার কোনো জামা বা শাড়ি অন্য জামা-কাপড়ের ভিড়ে কোথাও লুকিয়ে আছে কি না।

সামনাসামনি নির্ঝরের কথাগুলোকে সিলি ডায়লগ মনে হলেও ভেতরে ছুঁয়েছিল। কে জানে হয়তো সব কাঠিন্যের আড়ালেই অবচেতন মনে কাজ করে চিরাচরিত কিছু আকাঙ্ক্ষার আমঘ হাতছানি। সম্পূর্ণ উল্টো দিকে চলা কঠিন মেয়ে কণারও সে হাতছানি এড়িয়ে চলার ক্ষমতা নেই, বাহ্যিক দিক থেকে না, মনের দিক থেকে।


একজন ব্যক্তিসত্ত্বা হিসেবে নিজের প্রতি নিজের যতক্ষণ না মনোযোগ এবং ভালবাসা আসবে ততক্ষন পর্যন্ত সে পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠবে না। রূম্পা বা রূম্পার মত মেয়েরা শেষপর্যন্ত একটা মাংসপিণ্ড হয়েই জীবনে বেঁচে থাকে, যাদের চোখে থাকে না কোনো স্বপ্ন অথবা গায়ে থাকে না কোনো সবুজ পোশাক যা জীবনের প্রতীক।


আমি বিশ্বাস করি সব মানুষের মধ্যেই একটি সবুজ সত্ত্বা থাকে, কেউ কেউ সেটা মেলে ধরতে পারে, কেউ পারেনা। কারো কারো মনের মধ্যে হারিয়ে যাবার ভয় থাকে, যেন নিজেকে দাঁড় করিয়ে রাখাটা সবচেয়ে জরুরী। কেউ কেউ সমাজের বাধার পড়ে সবুজের আত্মাহুতি দেয়, কেউ সব ছিঁড়ে খুঁড়ে বেরিয়ে যায়, লোকে বলে অজানার পথে, আমি বলি- নিজের পথে। তারাই পারে সবুজ হতে। সবাই সবুজ, কেউ রং লুকিয়ে রাখে, কেউ হারায়, আর কেউ কেউ তার উপরেও রঙ মাখিয়ে চারপাশের মানুষগুলোকেও সতেজ করে। আমি কোন পদের সবুজ? অতীতে বহুবারের মতো আরও একবার ভাবালেন, আপনি ভাবালেন।


নিজেকে কণার সামনে একজন মৃত মানুষ মনে হতে থাকে যে কিনা আলোর মিছিলে যেতে চেয়েও ছটফটিয়ে প্রাণ হারিয়েছিলো অনেক কাল আগেই ।


স্বপ্নের মানুষগুলোর সামনে নিজেকে ম্লান লাগাটা স্বাভাবিক। যেমনটা আমার লাগে ..... র লেখার সামনে।

সব পেয়েছি। বিদেশ বিভূঁইয়ে আভিজাত্যের আড়ালের একাকীত্ব,
মনের অমিলে বিচ্ছেদ, নিষিদ্ধের প্রতি আকর্ষণ, পরিবারের খুঁটিনাটি ঝগড়া বিদ্বেষ, বেসামাল মনকে সামাল দেয়ার মিথ্যে চেষ্টা, নিজের হাতে গড়া জীবনবোধ থেকে ছিটকে যাওয়া, আবার সেই ছিটকে পড়া থেকে পালিয়ে ফেরার চেষ্টা, সব ছিল। বুঝেছি, নিঃশব্দে ফিরে যাওয়া অসম্ভব প্রায়। হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ চটিতে ফটফট আওয়াজ হয়ে হয়তো পৃথিবীকে জানিয়ে দিতে পারেনা, একটা নিঃসঙ্গ একা সিঁড়ি কিন্তু সাক্ষী হয়েই থাকে, যে সিঁড়ি দিয়ে কেউ উঠেছিল, আবার সেই পথেই নেমে গেছে।


( অভিমান কমেছে। তাই মন্তব্য করে গেলাম। বেশিদিন থাকা গেল না। :( )

০৬ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: চমৎকার করে নিজের মতামত প্রকাশ করে গেলে।

হুম অনেকদিন পর আমার ব্লগে তোমাকে দেখা গেলো তবে অভিমান টা চিন্তা করলে ভালো , খারাপ দুটোই লাগে।সে যাই হোক , তোমার লেখালেখিতে , নিয়মিত ব্লগিং এ ব্লগে আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে এই কামনাই করি।

আমাদের সবুজ স্বপ্নও গুলো মুখ তুলে বাঁচতে শিখুক, যাতে হারিয়ে না যায় নিজেদের পরিচয় ।

ভালো থেকো এরিস।

৫৮| ২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:৫২

রুদ্র জাহেদ বলেছেন: ব্লগে প্রিয় লেখকদের লেখা পড়তে দারুণ লাগে।যাদের লেখা ভালো লাগে তার মধ্যে আপুনি অন্যতম একজন।পড়ব পড়ব বলে পড়া হয়ে উঠে না,আজকে পুরো গল্পটা পড়ে ফেললাম।

উপরের কমেন্ট এবং প্রতিউত্তরও সবগুলো পড়েছি।যা আলোচনা করার সব হয়ে গিয়েছে।আর আমার ভালো লাগা প্রকাশ করার মতো ভাণ্ডারও এখনো অর্জিত হয়নি বোধহয়।

অসাধারন সাবলীল বর্ণনা, বাক্যের বুনন দারুণ।মুগ্ধ হয়ে পাঠ করে গেলাম।পড়তে একটুও বিরক্ত আসেনি।আমাদের সমাজে এরকম দোলাচল বোধহয় অহরহ।নিজের সত্ত্বাকে দৃঢ়ভাবে বিকশিত করে রাখতে পারে না।কণার চরিত্রটা দারুণ ভালো লেগেছে।
প্রিয়তে রাখলাম অনবদ্য লেখাটা

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ রুদ্র। আপনি অনেক আগের একটা পুরনো লেখা পড়ে মন্তব্য করে গেলেন। এই পোস্টের মন্তব্য প্রতিমন্তব্য গুলো আমার জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
খুব খুব ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.