নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

তার চোখে দেখি নীল আকাশ

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

১।



মীরাকে প্রথম দেখেছিলাম ঢাকা ক্লাবের বারে।সামনে একটা শূন্য গ্লাস নিয়ে বসে ছিলো । হয়তো এর আগেও মীরা এখানে এসেছে কিন্তু আমার চোখে পড়ে নি। মীরার পোশাকটা ছিলো অদ্ভুত। ঢাউস একটা কোট গায়ে চাপানো ছিলো ওর। তখন শীতকাল হলেও ঢাকা শহরে ঢাউস কোট পড়ার মত শীত পড়তে দেখি নি কখনো। তাছাড়া ক্লাবের ভেতরেও ছিল আরামদায়ক উষ্ণতা।





মীরার গায়ের রঙটা আপাতদৃষ্টিতে ফর্সা দেখালেও ওকে কিছুদিন পর আমার ফ্যাকাশে মনে হয়েছিলো , যখন ওকে প্রতিদিনই দেখতাম একটা শূন্য গ্লাস সামনে নিয়ে বসে থাকতে। ওর সামনে রাখা গ্লাসে কোনরকম পানীয় কেন থাকত না তা এক রহস্য বটে। কিন্তু সেটা জানতে চাওয়ার মত পরিচয় তখনো মীরার সাথে আমার তৈরি হয় নি। হয়তো ও আমাকে খেয়াল করেই দেখেনি এমনও হতে পারে। আর সেরকম সম্ভাবনাই বেশী। কারন ওকে আমার ভীষণ অমনোযোগী মনে হতো ওর আশেপাশের পরিবেশ নিয়ে। নিজের ভেতরেই বুঁদ থাকতে পছন্দ করত।



আমি আগে শুধুমাত্র শুক্র- শনি এই দুইদিন ক্লাবে গেলেও মীরাকে দেখার পর থেকে নিয়মিত সেখানে যেতে শুরু করলাম অফিস ছুটির পর। আসলে মীরাকে নিয়ে সত্যিকারের কৌতূহল কাজ করেছিলো সেদিন থেকে। যেদিন রবিবার সন্ধ্যায় বার ওপেন করার পর তখনো লোকজনের আনাগোনা তেমনভাবে শুরু হয় নি, সে সময়টার কথা বলছি আমি। মীরাকে দেখলাম ওর সেই ঢাউস কোটের ভেতর থেকে ছোট একটা মাম পানির বোতলের সাইজ কাঁচের বোতল বের করলো । পরে ভালোমত খেয়াল করতে দেখি ওটা আসলে একটা থার্মোফ্লাক্স। তারপর শুনি ও খুব নিচু স্বরে কাউকে অনুরোধ করছে ফ্লাক্সের ভেতরের দুধটুকু খেয়ে নিতে। আমাকে কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে থাকতে দেখেই ও ওর কোটটা গায়ের সাথে একটু টেনেটুনে বসলেও কেমন যেন চাপা স্বরে কাউকে ধমকাতে শুরু করলো যে ফ্লাক্সের দুধটুকু খেতে চাচ্ছিলো না তাকে। ওকে নীরবে অনুসরন করছিলাম বলে ও একটু আমার দিক থেকে ঘুরে আড়াল হয়ে বসলো যাতে আসল ঘটনা আমি না দেখতে পারি।





একদিন আমি ক্লাবে ঢোকার মুখে মীরার সাথে প্রায় মুখোমুখি হয়ে গিয়েছিলাম। তখন কাছ থেকে দেখেছিলাম ওর চোখগুলো ঘন নীল। ওর চোখের পাতার কাঁপন ছিলো বেশ দ্রুত।তবে আমার ধারণা ওর চোখের পাতায় সারাক্ষণ একটা তিরতিরে কাঁপন লেগে থাকে। ওর ত্বকটা ছিলো অদ্ভুত রকমের ফ্যাকাশে আগেই বলেছিলাম। ওর চিবুকের নীল রগগুলোও সেই ফ্যাকাশে রঙের কারণে দেখা যেত যা ওর থুতনির দিকে এসে অস্পষ্ট হয়ে মিলিয়ে গিয়েছিলো । সেদিন ক্লাব থেকে বেরিয়ে যাবার সময় ওর ভঙ্গিতে কেমন ব্যস্ততা ছিলো । তবে মীরা সেদিন চলে যাবার পর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই গুলো খেতে গিয়ে মনে হচ্ছিলো কেমন মিইয়ে আছে কড়কড়ে করে ভাজা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই গুলো ।



২।



বস্তুত আমার তেমন কোনো বন্ধু- বান্ধব ছিলো না। মীরাকে দেখার পর থেকে ওকে অজান্তেই অনুসরণ করা আমার একটা রুটিন বিশেষ হয়ে গিয়েছিলো । তাই সন্ধ্যেটা আগের মত আর ম্যাড়ম্যাড়ে লাগতো না। তবে মীরার ঘন নীল চোখজোড়া দেখলে আমার মা নিশ্চয়ই বলতো - ' এই চোখ মানুষের হতেই পারে না। নির্ঘাত কোন ডাইনি বা জ্বিন- পরী মানুষের ছদ্মবেশ ধরে লোকালয়ে মিশে আছে আমাদেরই সাথে।' মা মীরার কথা বা ওর ঘন নীল চোখের কথা জানলে হয়তো আমার ক্লাবে আসাই বন্ধ করে দিতো । তবে মা'র এখন জানার কোনো সুযোগ নেই আর এটাই বড় স্বস্তির ব্যাপার।



ক্লাস ফোরে যখন পড়ি, আমার ক্লাসমেট নীলার সাথে একদিন ছুটির সময় গেট দিয়ে আমাকে বের হতে দেখে মা কেমন থমকে গিয়েছিলো ।নীলা সবে আমাদের স্কুলে নতুন ভর্তি হয়েছিলো । বাসায় ফেরার পথে সেদিন মা আমার সাথে সারা রাস্তায় কোনো কথা বলে নি। রাতে ঘুমোতে যাবার আগে গুড নাইট বলে যাবার সময় কঠিন মুখে জানিয়েছিলো নীলার সাথে আমি যেন আর খেলা না করি।কারন ওর চোখ গুলো পাথরের। ও জ্বিন-পরীর বাচ্চা না হয়ে যায়ই না।



নীলা আমাকে একটা কাগজে একটা ছবি এঁকে দিয়েছিল যেখানে একটা পরী উড়ে যাচ্ছিলো যার হাতের মুঠোয় বন্দি ছিলো একটা ছোট ছেলের হাত। মা ঐ ছবিটা আমার স্কুলের ডায়েরির মাঝে ভাঁজ করা অবস্থায় দেখতে পেয়ে সেখানে আবিষ্কার করেছিলো নীলা আমাকে নিয়ে উড়ে চলে যাচ্ছে পরীর দেশে। তার কয়েকদিন পরেই মা আমাকে অন্য নতুন স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। আর সেই বয়সেই আমি প্রথম আমার এক বন্ধুকে হারিয়ে ফেলি মায়ের জন্য।



মীরার ঘন নীল চোখ অনেকদিন পর আমাকে নীলার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলো ।



৩।



আরেকদিন সন্ধ্যায় মীরাকে দেখলাম নিচু হয়ে টেবিলের পাশে কি যেন খুঁজছে। পুরো বারের মাঝে যে কয়টা টেবিল আর পর্দার আড়াল ছিলো সব জায়গায় কি যেন ও খুঁজছে। অনেকক্ষণ ধরে ওর এভাবে খোঁজাখুঁজি দেখে বললাম –

- কিছু হারিয়েছে নাকি?

- হু , হারিয়েছে।



কি হারিয়েছে জানতে চাইলে কেমন দ্বিধান্বিত হলেও বললো - আমার বিড়ালটা খুঁজছি।



মীরার সাথে অদ্ভুত অদ্ভুত সব ব্যাপার জড়ানো থাকবে এটাই যেন স্বাভাবিক ছিলো । মীরার বয়স কত হতে পারে তা অনুমান করার চেষ্টা বৃথা জেনেও ধরে নেই ওর বয়স চব্বিশ কিংবা পঁচিশ হতে পারে। এ যাবত ওকে পনিটেল করেই চুল বাঁধতে দেখেছি। তবে আজকে ওর পড়নে সেই কোটটা ছিলো না যেটাতে ওর মত আরো দুজন মীরা অনায়াসেই ঢুকতে পারতো ।



বাইরে গেলে বিশেষত ক্লাবের বারে কেউ বিড়াল কোটের ভিতর ভরে নিয়ে আসতে পারে তা অবিশ্বাস্য হলেও মীরার ক্ষেত্রে কেন যেন আমার স্বাভাবিকই মনে হতো ওর পোশাক-আশাক, জুতো , হাতের মোটা ব্যাঙ্গেলস , গোল বড় বড় এয়ার রিং আর নিজের মনে কিছু কিছু ব্যাপার ভেবে মুখ টিপে টিপে ওর হাসি দেখে। ও চোখে কাজল দিতো না। এরকম নীল চোখে কাজল মানায় কি না কে জানে!



- আজকে ছাড়া পেয়ে ঠিক আবার কোথাও হারিয়ে গেছে। কোটটা পড়ি নি তো তাই !



মীরার কথা শুনে বুঝতে পারলাম বিড়ালটার কথা বলছে। বলেই ও হতাশ হয়ে বসে পড়লো আমার টেবিলের সামনে। যদিও ওর এই হতাশ ভঙ্গী খুব অল্প সময়ের জন্যই ছিলো । আমি দেখছিলাম ওর হাতের লম্বা আঙ্গুলগুলো। ওর ফ্যাকাশে হাতের আঙুলে নখে লাগানো ছিল কালো কিংবা গাঢ় চকলেট রঙের কোনো নেইলপলিশ।



বিড়ালটা যদি আর খুঁজে না পাওয়া যায় কি হবে জানতে চাইলে ও বললো –

সমস্যা নেই। আগেও হারিয়েছিলো কয়েকবার। অ্যালেনপো’র বিড়াল তো। একটু রহস্যময়ই হয়।



অ্যালেনপো’র বিড়াল ওর কাছে কীভাবে এসেছিলো তা জানতে চাইলে হয়তো আরও এমন কোনো গল্প শুনতে হতে পারে আর আমার বিস্মিত চোখ দেখে যদি ও ভেবে বসে আমি এসব বিশ্বাস করছি না , তাই আমি চুপ করে থাকি। কিছু বলি না।



বিড়ালটা শুধু দুধ খেতেই পছন্দ করতো । হালকা গরম দুধ ওর পছন্দ। ওর এই কথা শুনে এবারো আমি কিছু বলি না। অপেক্ষা করি ওর পরবর্তী কাজ দেখার জন্য।



ওর কাঁধে ঝোলানো চামড়ার ব্যাগ থেকে একটা ছোট কালো রঙের নোটবুক বের করে দেখলাম ও কলম খুঁজছে ব্যাগ হাতড়ে। আমি কলম এগিয়ে দিতেই ও বললো -



- ভালই হয়েছে। কিরীটা হারিয়ে গেছে। এত এত কাজ জমে ছিলো । ওর জন্য কিছুই করা হচ্ছিলো না।



বুঝলাম ওর বিড়ালটার নাম কিরীটা। কিন্তু যে মেয়ে সন্ধ্যার পর অনেকটা সময় এখানে কাটায়, কোত্থেকে ও আসে, বিড়ালের জন্যও যে কারো এত এত কাজ জমে যেতে পারে আমি অবশ্য তার কিছুই জানতে চাই না। তবে ওর কাজ-কর্ম, ওর অঙ্গ-ভঙ্গীমা কিংবা ওর ভাবনার যে অংশটা আমার অজানা ছিলো তা কেন যেন না জেনেই আমার ভাল লাগতো । যান্ত্রিকতার ভিড়ে একরাশ নির্মল ছোঁয়া যেন মীরা।



ও কাগজে বড় বড় করে লিখলো –



“তোমার দ্রোহের পুষ্পরেণু

উড়িয়ে দাও

ছড়িয়ে দাও।



এই ঘর, চারদেয়াল

নিক্বণ ধ্বনি

সবই অপার শূন্যতা ।”




লিফলেট বিলি করতে হবে। কাগজে এই কথাগুলো ছাপিয়ে দেয়ালে দেয়ালে সেঁটে দিতে হবে। কোথায় ছাপাখানা আছে জানো তুমি ?



মীরার কথা শুনে আমি ছাপাখানার ব্যাপারে অজ্ঞতা প্রকাশ করি মাথা নাড়িয়ে। দেয়ালে কাগজ সাঁটালে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ওকে জানালে ও বলে- রাতে রাতে কাজ সেরে ফেলবো । পুলিশরা তখন ঘুমায়। সমস্যা হবে না । বলে ও আবার মুখ টিপে একটু হাসলো ।



মীরা ঠিক কত কপি লিফলেট ছাপাবে কে জানে। নীলক্ষেতে গেলে হয়ত জানা যেতে পারে ওকে বলতেই ও ঝটপট ওর নোটবুকটা ব্যাগে ভরে উঠে দাঁড়ালো । ওর পিছু পিছু আমিও বের হয়ে আসি ক্লাব থেকে। দেখলাম গেটের কাছেই রাখা ওর মোটর সাইকেলে চড়ে বসেছে হেলমেট মাথায় লাগিয়ে।



- রাতের বেলায় বাইরে ঘোরাঘুরি করো না। বাসায় চলে যাও। পদে পদে কিন্তু বিপদ ঘুরছে।



যে মেয়ে আমাকে রাতের সম্ভাব্য বিপদ নিয়ে সাবধান বাণী দেয় অথচ নিজে রাতের রাজপথে দেয়ালিকা সাটাবে বলে নীলক্ষেত ছুটছে প্রেসের সন্ধানে – সে মেয়েকে জানার জন্য একটা আকর্ষণ ভেতরে ভেতরে যে কারোই কাজ করবে।



আসলে আমি ছিলাম কারাগারে বন্দী একজন রাজপুত্র। মীরার মোটর সাইকেল দেখে আমার শৃঙ্খলিত দিনের কথা মনে পড়ে গেলো ।



মীরা আমার কাছে একটা স্বাধীনতার প্রতীকের মত ছিলো । ও যাবার সময় আমার নীল জেল পেনটা নিয়ে গিয়েছিলো । হয়ত মনের ভুলেই ব্যাগে ঢুকিয়েছিলো । প্রিমিও গাড়ির আরামদায়ক সিটে মাথা ঠেকিয়ে মনে হচ্ছিলো মীরার মত আমারও একটা মোটর সাইকেল থাকলে মন্দ হতো না।



৪।



দিনের বেলা মীরা ওর সময়টা ঠিক কি কি কাজে ব্যয় করে ওকে জিজ্ঞেস না করলেও বুঝতাম ওর মাথা দিনের বেশীরভাগ সময়টায় ব্যস্ত থাকতো নানান চিন্তায় যা সে প্রকাশ করতো তার কাজের মাধ্যমে। মাঝখানে ওকে দেখি নি কিছুদিন।



সেদিন অফিস থেকে বেরিয়ে যানজটে আটকে পড়ে ক্লাবে পৌঁছলাম দেরীতেই। তখন ঘড়িতে সময় প্রায় রাত সাড়ে আটটা। ধরেই নিয়েছিলাম আজও হয়ত মীরার দেখা পাবো না। নির্ধারিত টেবিলের সামনে যেতেই ওকে দেখলাম কেমন শুকনো মুখে বসে আছে।



হয়ত ও নিজ থেকেই বলবে চলমান কোনো ঘটনা কিংবা কোথাও কিছু ঘটেছিলো কিনা এর মাঝে যা ছিলো ওর বিগত কয়েকদিনের অনুপস্থিতির কারণ। তাই আমি চুপ করেই থাকি। আসলে পত্রিকায় যে নিউজগুলো চোখে পড়তো কিংবা টিভিতে কোনো প্রতিবেদন দেখতাম ঠিক একই ঘটনা মীরার চোখ দিয়ে দেখলে যেন আরও বেশী কিছু খুঁজে পাওয়া যেতো । এ যেন অনেকটা ঘটনার মাঝেও আরেক সুপ্ত কোনো ঘটনা খুঁজে পাওয়ার মত ব্যাপার ছিলো আমার কাছে।



ওকে ক্লান্ত দেখাচ্ছিলো ভীষণ। জিজ্ঞেস করি - তুমি কি অসুস্থ ছিলে ? ক’দিন দেখি নি যে তোমায় !



- ফুলবাড়ি সীমান্তে গিয়েছিলাম গত পরশুদিন ঝুলন্ত বাংলাদেশকে দেখতে। আজ সকালেই ফিরলাম।বলে ও নীরব হয়ে গেলো আবার। অন্যদিনের চেয়ে ও যেন আজকে বেশী চুপচাপ ছিলো এমনই মনে হচ্ছিলো আমার। খেয়াল করলাম একটু পর পর ও জিভ দিয়ে ওর শুকিয়ে যাওয়া ঠোঁট আর্দ্র করে নিচ্ছিলো ।



ঝুলন্ত বাংলাদেশ দেখতে ওকে ফুলবাড়ি যেতে হয়েছে শুনে বুঝলাম নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে যা স্পর্শকাতর।



- আকাশটা গতকাল সন্ধ্যার পর গাঢ় অন্ধকারে ঢেকে ছিলো , বুঝলে ! এমনকি একটা নক্ষত্রও ছিলো না। ভীষণ ঠাণ্ডা সে জায়গাটা – এটুকু বলে মীরা খুকখুক করে একটু কাশে। পকেট থেকে টিস্যু বের করে দেখলাম নাকও মুছে নিলো ।



- কোন জায়গাটা অনেক ঠাণ্ডা ? গরম কাপড় ছিলো না তোমার সাথে ?



- উফ গলাটা একেবারে শুকিয়ে গেছে আমার ! কিন্তু আজ যে আমার পানি পান করা বারণ।



মীরাকে জিজ্ঞেস করে করে ফুলবাড়ি সীমান্ত, ওর পানি পানের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসব তথ্য বের করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। অফিস থেকে ফেরার কারণে আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম। হালকা খাবারের অর্ডার দেবার জন্য উঠতে চাইলে মীরা জানায় ওর জন্য যেন না দেই।



আমি আবারো অপেক্ষা করি মীরা আরও কিছু বলে কিনা শোনার জন্য। যান্ত্রিকতার এই সমাজে মীরা ছিলো আমার কাছে একটা প্রতিবাদের নাম। যদিও আমি ছোটবেলা থেকে শৃঙ্খলিত জীবনযাপন করেছি বলেই চলে এসেছিলাম এক অসুস্থ সিস্টেম এর মাঝে , যেখানে মানবিক আবেগ বা মুল্যবোধ যাই- ই বলি না কেন তাকে গন্য করা হত চরিত্রের দুর্বলতা হিসেবে। সে সিস্টেম থেকে বের হবার পথগুলো ছিলো রুদ্ধ কিংবা তা ছিলো আমার অজানা।



মীরার মত হতে ইচ্ছে করে ভীষণ। কিন্তু তথাকথিত সিস্টেম থেকে বের হতে পারি না বলে বুকের ভেতর থেকে দীর্ঘশ্বাসের এক জোড়া বিষাদপাখি উড়িয়ে দেই।



মীরার গায়ের লাল-নীল পাঞ্জাবীটা দেখালাম আজ কেমন দোমড়ানো , কুঁচকে থাকা অবস্থায়। হয়তো গত রাতের পরনের পোশাকটাও সে বদলায় নি কিংবা ভুলে গেছে বদলে নিতে ।



- আজকের দিনে ফেলানিকে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিলো । ও চার ঘণ্টা ঝুলে থেকে পানি পানি করে , পানি না পেয়ে ও মরে গিয়েছিলো ।আমি কেমন করে পানি পান করি বলো ! আমার গলা যে শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে !



ফেলানি তো মারা গেছে। তবুও ও ঠিক কি কারণে ফুলবাড়ি গেলো বুঝতে পারি না আমি। তবে ওর কয়েকদিনের অনুপস্থিতির কারণ, ওর অসুস্থতা এবং বিষাদগ্রস্ততা , ফেলানির জন্য তার আজকের অনশনের সব কারণ আমার কাছে এতক্ষণে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর বুঝতে পেরে বাইরের ঝলমলে ঢাকা শহর, বারের আলোকসজ্জা এই মুহূর্তে আমার কাছে কেমন অন্ধকার গুহার মত মনে হচ্ছিলো । ক্ষিধেটাও মরে গেলো হঠাৎ করেই।



- ছবি আঁকতে পারো ? – মীরা জিজ্ঞেস করে আমাকে।



আমি মাথা নাড়িয়ে না জানালেও মীরা মুহূর্তেই আবার আগের মত চঞ্চল হয়ে ওঠে। বলে-



- শোনো, পুরো ক্যানভাসটা হবে কচি সবুজ রঙের। মাঝখানে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। আর রক্ত রঙে লেখা থাকবে



“ মুমূর্ষু স্বপ্নদের বাঁচতে দাও !

স্বপ্ন বাঁচবে , মানুষ বাঁচবে !

চল জীবনের গান গাই তবে … … … “




মীরার এই ব্যাপারটাই আমার ভালো লাগে সবচেয়ে বেশি। ও ভীষণ আশাবাদী জীবনের ব্যাপারে যেখানে আমার চোখে মৃত শালিক স্থির হয়ে থাকে অহর্নিশি।



আজ আমি তাহলে যাই। ক্যানভাসটা বানাতে হবে। দেখি চারুকলার সামনে কাউকে পাই কি না বলতে বলতে মীরা উঠে দাঁড়ায়।



- ক্যানভাস আঁকানো শেষ হলে এটা নিয়ে কোথায় যাবে ? ও উত্তর না দিয়ে গেটের দিকে এগিয়ে গেলো যেখানে ওর মোটর সাইকেল রাখা।

এত রাতে কে ওর জন্য চারুকলায় বসে থাকবে ক্যানভাসে রঙ মাখাতে আর শ্লোগান লিখে দিতে কে জানে!



মীরা হয়তো ডুবে আছে ওর লাল- সবুজ প্রত্যাশার অথৈ জলে যেখানে ওর স্বপ্ন আছে !



৫।



টানা দশ দিন পর মীরাকে বারে আবার দেখলাম। চোখের নিচের কালি স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিলো । কালো একটা শর্ট পাঞ্জাবী আর জিন্স পরনে ছিল ওর। বরাবরের মতই শূন্য একটা গ্লাস ওর সামনে ছিলো । একদিন ওকে জিজ্ঞেস করে জানতে হবে শূন্য গ্লাসের রহস্য কি।



- কি সব খবর ভালো তো ?

- হুম, ভালো । শুধু … … … নাহ। থাক, কিছু না।

- নীলক্ষেতে গিয়েছিলে পোস্টার ছাপাতে ?



প্লেট থেকে বাদাম তুলে চিবুচ্ছিলো মীরা। বলে -



দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়েছি তো । কিন্তু কিছু কিছু পোস্টার কে যেন খামচে তুলে নিয়েছে।



দেয়াল থেকে পোস্টার খামচানো যায় নাকি জানতাম না। ওকে বলি- একলা এতগুলো পোস্টার লাগালে কি করে ?

- কি আজব , একলা একলা লাগাবো কেন !

- তাহলে ?



ও অবশ্য আমার উত্তর দেবার প্রয়োজন মনে করে না। কথার মাঝখানে থেমে যাওয়া , কোনো কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেয়া , চুপ করে থাকাটাই ছিলো ওর স্বভাব।তাই ধরে নেই হয়তো কোনো একদিন নিজ থেকেই আবার বলতে শুরু করবে।ওর কথা কোন জায়গা থেকে শুরু আর কোথায় গিয়ে হঠাৎ থেমে যাবে বোঝা বড় মুশকিল।



- ক’দিন ধরেই ঘুম হচ্ছে না বুঝলে ? আমার মনে হচ্ছে পুরো ঢাকাবাসী … বলে থেমে গেল ও। আসলে কেউই ঘুমোতে পারছে না ক’দিন ধরে। জানুয়ারি মাস কিনা।বলতে বলতে হাই তোলে মীরা।



ওর ঘুম না হওয়াটাই চোখের নিচে কালি পড়ার কারণ বুঝতে পারি আমি। ওর ঘুম না হবার সাথে ঢাকাবাসীর ঘুম না হবার এবং জানুয়ারি মাসের সম্পর্ক কি তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই অবশ্য।কারণ ওর অদ্ভুত চিন্তার সাথে আমার ভাবনার অনেক ব্যবধান হবে এটা আমি জানতাম।



- রোজ রাত বারটার পর মিরপুরের বধ্যভূমি থেকে অনেক শ্লোগান ভেসে আসে। শব্দে আমি ঘুমোতে পারি না। বলে হাই তুলতে তুলতে ওর মাথাটা টেবিলে ঠেকায় ।



আমি মীরার পরবর্তী বাক্য শোনার জন্য অপেক্ষা করতে থাকি। ধারণা করে নেই মীরার বাড়ি মিরপুর কিংবা এর আশেপাশের কোথাও হবে। অবশ্য ও সেখানে বা মিরপুরের আশেপাশে না থাকলেও অবাক হবো না।কারণ ওর ইন্দ্রিয়শক্তির প্রসারতা এবং গভীরতা নিয়ে ততদিনে আমার ধারণা হয়ে গিয়েছিলো ।



স্বাধীনতার এত বছর পার হবার পরেও বধ্যভূমি থেকে শ্লোগান ভেসে আসতে পারে এবং মীরার কান যে সে শ্লোগান এড়িয়ে যেতে পারে না , আমি ওর রাত জাগা মলিন মুখ দেখে বিশ্বাস করেছিলাম। যদিও আমার গড়ে ওঠা বোধ , বিশ্বাস আর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে মীরার অনেক তফাত ছিল কিন্তু ওর কোনকিছুর উপর গভীরভাবে বিশ্বাসের মায়াবী নীল হাতছানিকে আমি উপেক্ষা করতে পারতাম না।



- কিসের শ্লোগান , শুনি নি তো আমি !

- দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘুমাও নাকি , বলে মীরা।



মীরা না জেনে বললেও কথাটা মিথ্যে ছিলো না। দরজা-জানালা ভালমত আটকেই আমি ঘুমাতাম হালকা নীল রঙের একটা ঘুমবাতি জ্বেলে। চার বছর বয়স থেকেই সাহসী হবার প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিলো আমার মা ,যাকে সবসময় আমার কারারক্ষী মনে হত আমার রাজপ্রাসাদের।গাঢ় অন্ধকারে ভয় পেতাম বলে অনেক অনুনয় করে একটা নীল ঘুমবাতি পেয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত। একা একা সেই বয়সে বিছানায় ঘুমানোকে আমার মা সাহসিকতার ব্যাপার মনে করতো কোন দৃষ্টিকোণ থেকে তা আজও আমার কাছে দুর্বোধ্য।



- ফুলের তোরণ কোথায় বানায় জানো ? জানতে চায় মীরা।

- শাহবাগের দিকে খোঁজ নিতে পারো । কেন কী করবে ?

- ৩১ তারিখে ভোরে ওগুলো পৌঁছে দিতে না পারলে খুব মন খারাপ করবে তারা। হাতে একেবারেই সময় নেই , বুঝলে ?



কারা মন খারাপ করবে জিজ্ঞেস করার আগেই মীরা বলতে থাকে নিজ থেকে এ ক’দিন মিরপুরের বধ্যভূমির আশেপাশে ঘোরাঘুরি করলাম। কেমন নোংরা নোংরা হয়ে আছে সেখানটা। ফুলের গন্ধ পাওয়া যায় না। ভাবছি তাদের শ্লোগানকে শ্রদ্ধা জানাতে কয়েকটা ফুলের তোরণ দিয়ে আসব।

- কাদের তোরণ দিতে চাচ্ছ ?

- জানুয়ারির ৩১ তারিখ ’৭২ এ মিরপুর স্বাধীন হয়েছিলো । তাই জানুয়ারি এলেই তাদের কাছে যাই আমি। বলে উঠে দাঁড়ায় মীরা। ওকে আজ ভীষণ অন্যমনস্ক লাগে আমার।



আমিও মীরার দেখাদেখি বাড়ি যাবার প্রস্তুতি নেই।বাড়ি তো নয় যেন কারাগর আমার। অবশ্য কারারক্ষী দেহ ত্যাগ করেছে বছরখানেক হয়েছে। যদিও আমি নিশ্চিত নই মীরা এখন ওর বাড়িতেই যাচ্ছে কিনা।



৬।



মীরাকে অনেকদিন ধরে দেখে আসছি বলেই ওর করা কাজ অন্যদের চোখে অদ্ভুত ঠেকলেও আমার কাছে স্বাভাবিক বলেই মনে হতো । ব্যাপারটা হয়ত এমন যে , আমি যা করতে পারি নি, নিয়ম আর অনুশাসনের ভেতর দিয়ে চলতে হয়েছে বলে চিন্তা-ভাবনার গণ্ডি অর্থ- বিত্তে আটকে গিয়েছিলো আর সাথে অর্জন করেছিলাম কিছু মুল্যবান সার্টিফিকেট।



আচ্ছা , আমি কি কখনো মীরার মত করে কারো কষ্ট অনুভব করতে পেরেছি কিংবা ওর মত দেখার চোখ আমার মাঝে তৈরি করতে কি পেরেছিলাম ! পারিনি বলেই হয়ত উন্মুখ হয়ে ছুটে যেতাম ক্লাবে। মীরার বাসার ঠিকানা, যোগাযোগের নাম্বার চাইলেই হয়ত মীরা বা অন্য কোনও মাধ্যম থেকে বের করা যেতো । কিন্তু সেটা করলে হয়তো একজনের ব্যক্তিগত আড়ালের অসম্মান করা হবে। অবশ্য আমি নিজেও কখনো অনুভব করিনি মীরাকে চাইলেই খুঁজে পাবার উপাদানগুলো হাতের নাগালে পেতে। তবে মুখে না বললেও ঢাকা ক্লাবের এই জায়গাটি হয়ে উঠেছিলো আমার আর মীরার বসার জায়গা। দুজনেই জানতাম এখানে এলেই দেখা হবে আমাদের।



মীরা আমাকে নিয়ে কখনো ভেবেছে কি না জানি না আমি। আর মীরার মত একজন মেয়ে আমাকে নিয়ে ভাববে সে প্রত্যাশাও করি নি। ওর মত মানুষ ব্যতিক্রম এবং দুর্লভ। তাই মীরা ছিলো আমার দেখা একমাত্র ব্যক্তি যার কাছে এলে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলা যায়, একটা সবুজ ভূখণ্ড আঁকা যায়, মুমূর্ষু স্বপ্নেরা চোখ মেলে তাকায়।



একদিন কথায় কথায় মীরা জানায় ইদানীং রাতে ও খুব ভয়ে ভয়ে থাকে। ওর চোখের দিকে তাকালে দেখতে পাই সত্যিই সেখানে আছে বিগত রাতগুলোর আতংক। বাইরে হয়তো এতক্ষণে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমেছে যা বারের উজ্জ্বল আলোতে বোঝা যাচ্ছিলো না ভেতরে বসে। আমি চেষ্টা করলাম মীরার রাত্রিকালীন ভয়কে নিয়ে সম্ভাব্য কারণগুলো খুঁজে বের করতে, যদিও জানতাম আমার জন্য তা হবে দুরূহ কাজ। আমার সাধারণ চিন্তা- ভাবনার পথের সাথে ওর চিন্তা - ভাবনার ছিলো অনেক দূরত্ব।



- প্রায় রাতেই ভূমিকম্প হয়। একেবারে রাত যখন অনেক গভীর সে সময়ে । তখন আমি দৌড়ে আমার রুম থেকে ছাদে গিয়ে দেখেছি অন্যরাও কি আমার মত টের পেলো কি না ভূমিকম্প, কারো ঘরেও কি লাইট জ্বলে উঠলো কি না। কিন্তু অবাক হয়ে দেখি কেউ টেরই পায় নি । আচ্ছা তুমি কি টের পাও ভূমিকম্প হলে?



মীরা যখনই আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করে আমি কখনো ওর প্রশ্নের উত্তর দিতে পারি না। ভূমিকম্প হলে যে কেউ মধ্যরাতে দৌড়ে ছাদে চলে যায় তা কখনো আমার চিন্তায় আসে নি। ছাদের প্রসঙ্গ আসাতে ওকে বলি –



- ভূমিকম্পের সময় মানুষ খোলা মাঠ বা রাস্তায় চলে যায় শুনেছি। কিন্তু … বলে আমি চুপ থাকি। হয়ত ছাদ নিয়েও ওর কোনও যুক্তি তৈরি থাকতে পারে।



- ছাদ তো খোলা জায়গায়ই। আমি তো আমাদের বাড়ির সাত তলায় যে চিলেকোঠার রুমটা আছে সেখানে থাকি।যেদিন যেদিন ভুমিকম্প হয়, হোক তা মৃদুভাবে সেদিন রাতে আমি আমার রুমে ঘুমাতে পারি না। উঠোনেই ঘুমাই। মানে শুয়ে থাকি।



- উঠোন মানে !!



- এত বিশাল একটা ছাদ কি উঠোন হতে পারে না ? দিন দিন বাংলাদেশ বিশেষ করে ঢাকা কি রকম ভূমিকম্প প্রবণ হয়ে উঠছে খেয়াল করেছো ? কোথাও মাটি নেই। কবে যে ইট- পাথরের নিচে চাপা পড়ে মরবো কে জানে! এখনো কত কাজ যে বাকি।





এসব বলতে বলতে দেখলাম ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের দুর্দশাগ্রস্ত চেহারা আর ওর অগ্রীম অসমাপ্ত কাজের কথা চিন্তা করে ওর চোখে বিষণ্ণতা ভর করেছে। যদিও জানি ওর এই বিষণ্ণতা ক্ষণস্থায়ী। নিশ্চয়ই কিছুক্ষণের মাঝে ও আশাবাদী হয়ে উঠবে আবার নতুন কোনও চিন্তা বা স্বপ্নের বাস্তবায়ন নিয়ে।



আমার ওকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে ও চিলেকোঠায় থাকে কেন কিংবা ওর পরিবারের বাকি সদস্যরা কোথায়। মীরা কি ছোটবেলা থেকেই এমন অদ্ভুত ছিলো ! আশ্চর্য নীল চোখের এক মেয়ে মীরা।



- জানো, গতকাল ভোরে ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম!



মীরার বলার ভঙ্গীতে বুঝতে পারি ওর কথা শেষ হয় নি। আরও কিছু বলতে চাচ্ছে হয়তো ও আমাকে। ধরে নেই ওর ভয়ের কারণগুলোও অদ্ভুতই হবে।সারাদিন মীরার এত এত কাজ, রাতেও কাজ থাকে। কি এতো কাজ যে ও করে কারো কাছে কোনও প্রত্যাশা ছাড়াই, কে জানে! যে মেয়ে রাতেও ঠিক ভাবে ঘুমায় না আবার ভোরেও উঠে পড়ে, কি করে পারে সে এত সব ! এতো কিছু জানতে ইচ্ছে করলেও তা জানতে না চেয়ে মীরাকে বলি –



- ভয় পেয়েছিলে কেন ?



- ভোরে ঘুম ভেঙ্গেই আমি ছাদের পূর্ব দিকটায় গিয়ে দাঁড়াই। সূর্যের প্রথম রশ্মিটায় অদ্ভুত একটা নরম ছোঁয়া আছে জানো ? পবিত্র হওয়া যায় সে রশ্মিতে। তাহলে সারাদিনে কোনো পাপ – অশুভ শক্তি তোমাকে ছোঁবে না। আমাদের বাড়ির পূর্ব দিকেই একটা কবরস্থান আছে। গতকাল ভোরে দেখলাম সামনের দিকটায় একটা নতুন কবর হয়েছে আর দুইজন সাদা শাড়ি পড়া মহিলা দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। অথচ এর আগের দিনও কবরটা ছিলো না। ছাদ থেকে যেটুকু দেখা যায় তাতে কবরস্থানের একটা পাশ আমার মুখস্থ হয়ে গিয়েছে। কোন কবরটার পাশে গাছ আছে, কোন কবরটা ইট- পাথরে বাঁধাই করা, কোনটায় বাঁশের বেড়া দেয়া সব। তাই ঘুম ভেঙ্গেই ধাক্কার মত খেয়েছি ভোরে সাদা শাড়ি পরিহিত মহিলা দুজনকে দেখে।



আমাকে চুপ থাকতে দেখে মীরা বললো – আমি জানতাম তুমি বিশ্বাস করবে না। হয়তো বলবে আমি চোখে ভুল দেখছি।



মীরা বানিয়ে বানিয়ে মনগড়া কিছু বলতো না তা আমি বুঝতাম। ছেলেবেলায় আমি একটা দুঃস্বপ্ন দেখতাম যা বড় হবার পরেও আমার পিছু ছাড়ে নি। দেখতাম একটা কবর ভাসতে ভাসতে আমার আমার জানালার কাছে চলে এসেছে। কবরের মুখটা থাকত খোলা। তা দেখে আমি ভয় পেয়ে দৌড়োতে থাকতাম। ক্লান্ত হয়ে যখন থামতাম পিছু দেখতে, সে ছিলো আরও ভয়াবহ দৃশ্য। স্রোতের সাথে সাথে সাঁতার কেটে আমার দিকে এগিয়ে আসছে অগনিত মৃত মানুষ, যাদের চোখের কোটরে ছিল বীভৎস গর্ত । দেখে মনে হয় কেউ খুবলে তুলে নিয়েছে।



দিনের পর দিন একই স্বপ্ন। তাই আমার পায়ের কাছের জানালাটা সব সময় বন্ধ রাখতাম যেখানে রোজ রাতে এই খোলা কবরটা ভাসতে ভাসতে চলে আসতো। যদিও আমার বাসার আশেপাশে কোনো কবরস্থান ছিলো না। কিন্তু ভয়াবহ এক কবরভীতিতে আমার শৈশব – কৈশোর ছিলো আচ্ছন্ন।



আমার অন্ধকারগুলো মীরাকে বলতে ইচ্ছে করে না।এগুলো বরং অজানাই থাকুক ওর কাছে। যদিও আমার কোনো ব্যাপারেই ও জানেনি এ পর্যন্ত বা জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন বোধ করেনি। হয়ত কাউকে যে কিছু জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে হয় তাই ওর জানা নেই। এমনকি আমার নামটা পর্যন্ত ও জানেনি এখন পর্যন্ত।



তার বদলে আমি কৃতজ্ঞ হতে থাকি দিন কে দিন মীরার কাছে। খুব ধীরে ধিরেই নিজের অজান্তেই আমি মীরার সবুজ স্বপ্নগুলোতে উজ্জীবিত হয়ে উঠছিলাম , যা ছিল গণমানুষকে ঘিরে।



৭।



ব্যস্ততায় যেমন করে আমার দিন কাটছিলো কর্মক্ষেত্রে তেমনি তার পাশাপাশি নিত্য কোনো চমকপ্রদ খবর কিংবা সারাদিনের মানসিক ক্লান্তি, জড়তা কাটাতে অফিস শেষের পর মীরার ভাবনার অবগাহনে আমার আসক্তি বাড়ছিলো দিন দিন। বিশেষ করে ওর মোটর সাইকেল চালানো দেখে আমিও প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম একটা মোটর সাইকেল নিজের জন্যও কিনে নিবো । যদিও কেনাটা আমার জন্য সমস্যার ছিলো না। কিন্তু একটা অভ্যাসের গণ্ডিতে আটকে বড় হয়েছিলাম বলে চেনা-জানা আরামকে ছেড়ে পা ফেলতে ছিলো আমার যত দ্বিধা। দূর থেকে মীরার পাখির মত স্বাধীন জীবন, ওর মুক্ত চেতনার সত্ত্বাকে দেখে দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলাকে নিজের কাছেই একেক সময় কাপুরুষতা বলে মনে হতো ।



নানান কথায় একদিন মীরাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ও ক্লাবের বারে এসে সামনে শূন্য গ্লাস নিয়ে কেন বসে থাকে। ও শুনে হেসে ফেলেছিলো । বলেছিল- জানো না তুমি ?



কি অবাক কাণ্ড! মীরার কাজকর্ম বা ওর ভাবনার জগত নিয়ে কি আমার জানার কথা! ওর এই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে আমি বোকা বোকা হাসিতে সপ্রতিভ হতে চেষ্টা করি।



মন্দের সংস্পর্শে থেকেও নিজের ভেতরের শুভ শক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় – এরকমটাই বাবা সব সময় বলতো আমাকে। প্রতিমুহূর্তে বাবার এই কথাটা আমার মনে বাজতে থাকে- জানায় মীরা। পুরো জগতটাই দেখো চলমান। অথচ এই বারে আসলে এখানের উজ্জ্বল আলো, কিছু রঙিন পানীয় ছাড়া আর কিছুই এখানে চলমান নয়। চিন্তা-ভাবনারা এখানে ছুটে যায় না, আমি মনঃসংযোগ করতে পারি এখানে বসে। বাইরের জগত এখানে অনুপস্থিত। ওর কথা শুনে মনে হচ্ছে ও এগুলো আমাকে জানাচ্ছে না , বরং নিজেই নিজেকে বলছে যেন! ওর বাবার সম্পর্কে জানার অদম্য ইচ্ছেকে সে মুহূর্তে চেষ্টা করি নিয়ন্ত্রণ করতে। ধরে নেই ওর বাবাও এ ক্লাবের একজন সম্মানিত সদস্য ছিলেন ! আচ্ছা ছিলেনই বা ভাবছি কেন ।



- মন্দ বলতে কি বোঝাচ্ছো মীরা ?

- রঙিন পানীয় , ষড়যন্ত্র ইত্যাদি !



মীরার অনেক কিছুই আমার কাছে ছোঁয়া না ছোঁয়া, ধরা অধরার মাঝে থেকে যায় !



সেদিন ওর বলা ছোট কিন্তু শক্তিশালী , প্রানবন্ত কথাটা আমার সমস্ত সন্ধ্যা, রাতকে নিয়ন্ত্রিত করে রাখে। নিজের অজান্তেই আমি মীরার এই কথায় প্রভাবিত হয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তের দিকে যেতে থাকি, যা আমার ভেতরটাকে সত্যিই আলোকিত করে তুলবে।



রোজকার অনলাইন পত্রিকা কিংবা পত্রিকার হার্ড কপিতে সংবাদের যে শিরোনাম আমি দেখি তা যে শুধুমাত্র চোখ বুলিয়ে রেখে দেবার জন্যই নয়, বরং নিজের বিবেক এবং শক্তির সামর্থ্য অনুযায়ী সমাজের অনিয়ম পরিবর্তনের জন্যও তা মীরাকে দেখে বুঝতে শিখেছিলাম নতুন করে। যখন ওকে বলতাম –



- মীরা , তুমি কি পারবে একা এক অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে? আর কি হবে প্রতিবাদ বা মিছিল করে!

আমার এই হতাশাজনক চিন্তার মাঝে আশার আলো ছড়াতেই যেন ও উৎসাহ নিয়ে বলে উঠতো –



- কাউকে না কাউকে এগিয়ে আসতেই হবে, তাই না? তবে সেই মানুষটা কেন আমি হবো না ?



একেক সময় আমি অবাক হতাম যখন জানতে পারতাম ও প্রায়ই পত্রিকা বা টিভিতে দেয়া মুমূর্ষু রোগীর রক্তের প্রয়োজন বিজ্ঞাপন দেখে হাসপাতালে ছুটে যেতো । তখন মনে পড়ে যেতো আমারও , একবার ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময় কলেজে লায়ন্স ক্লাব থেকে এসেছিলো রক্তদান কর্মসূচি নিয়ে। সেদিন আমাদের ক্লাসের মাঝে একমাত্র সিমিন ছাড়া আর কেউ রক্ত দেয়নি। লজ্জায় মাথা নিচু করে চলে এসেছিলাম সেদিন।



আমার রক্তকণিকার রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গিয়েছিলো যে যান্ত্রিকতা বা স্বার্থপরতার বিষবাষ্প, মীরাকে দেখে তা আজ আমাকে জীবনের প্রতি, একটা সুস্থ সমাজ ব্যবস্থা ফিরে পাবার প্রতি আগ্রহী করে তোলে – যেখানে এতটা দিন আমি একাই দাঁড়িয়েছিলাম। অন্ধকারটা সরে গিয়ে যেন চারপাশটাকে ফের আলোকিত করে আমার মাঝে ধীরে ধীরে মীরা যেন কোনো স্বপ্ন প্রোথিত করে দিচ্ছিলো যা আমি ভুলতে বসেছিলাম।



২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দিয়েছে এ ভাবনায় আহ্লাদিত হয়ে কথা প্রসঙ্গে যখন মীরাকে বলছিলাম এবার ২১ তারিখ অনেক সভা, প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সরকার এবং মিডিয়া , বিভিন্ন অরাজনৈতিক দলগুলো তখন মীরা বলে –



- ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তি স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর এলেও আমাদের যুদ্ধ কি সত্যিই শেষ হয়েছে বলে মনে করো ? রোজ কিছু না কিছু নিয়ে আমাদের তো লড়াই করতেই হচ্ছে, তাই না ? আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই আলাদা আলাদা করে একটা যুদ্ধ আছে। আর সেখানে দারিদ্র্যতার বিরুদ্ধে লড়াই অনেক বড় একটা লড়াই যা আজো প্রবাহমান।



আমি নিশ্চিত ’৭১ এর মত একটা লড়াই এখন যদি আবার আমাদের দেশে হয় মীরা সেখানে ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমার মনোভাব টের পেয়ে ও জানায়-

- ’৭১ এর লড়াইটা ছিলো আমাদের জন্য সম্মানের। বিশ্ববাসীও এখন তা জানে। কিন্তু এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কোনো লড়াই হলে তা হবে আভ্যন্তরীণ লড়াই, ক্ষমতা দখলের লড়াই। যা হবে লজ্জাজনক। দেখো না, বাংলাদেশের কিছু কিছু বিভাগে বিচ্ছিন্নতাবাদী দলের নাম শোনা যায় , যারা বাংলাদেশের মূল ভূ-খণ্ড থেকে আলাদা হতে চায় কারন বর্তমান সরকার ব্যবস্থা দ্বারা তারা সন্তুষ্ট নয় বলে।



মীরার মত এভাবে ভাবতে না পারলেও ওর ভাবনাতে একঘেয়ে জীবনের সমাজব্যবস্থার আর্ত চিৎকার শুনতে পাই। মীরা জানায় , গতকাল ও ওর বাইক নিয়ে বের হয় নি। রাত বেশী হয়ে যাবার কারণে রিকশা না পেয়ে যখন রাতের পথ ধরেই ও বাড়ি ফিরছিলো তখন সম্ভবত শহরের সমস্ত কুকুরগুলোও ঘুমিয়ে পড়েছিলো । রাত্রির ঐ অপার্থিব নিঃসঙ্গতায় তখন ওর মনে হচ্ছিলো পৃথিবীটা মনে হয় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে আর ও ছিলো একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা ফাঁকতালে জীবিত ছিলো সেই ধ্বংস হয়ে যাওয়া পৃথিবীতে। নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছিলো এই ভেবে হয়তো ওর দ্বারাই হতে পারে নতুন পৃথিবীর সূচনা – যেখানে বেঁচে থাকার মাঝে থাকবে না কোনো গ্লানি, যার যার কাজের জন্যও থাকবে জবাবদিহিতা।





একদিন মীরাকে দেখে আমি সত্যিই অনেক চমকে উঠি। প্রতিদিনের দেখা চেনা-জানা মীরা নয় যেন ও। ভীষণ খুশি দেখাচ্ছিলো ওকে। এর আগের দিনই আমাকে বলে রেখেছিলো ও সকালে আসবে আমার সাথে দেখা করতে, জরুরী কি কাজ নাকি আছে আমার সাথে। সকাল ছয়টায় ও ক্লাবের গেটে দাঁড়িয়ে আছে। পরনে সবুজ-লাল শাড়ি আর চোখে গাঢ় টানা কাজল যা ওকে আগে কখনো দিতে দেখি নি কিন্তু ওকে বেশ মানিয়ে গিয়েছিলো । দিনের ঝলমলে আলোয় দেখা আজকের মীরা যেন অন্যরকম যাকে এতদিন জিন্স আর পাঞ্জাবীতেই দেখে এসেছি। কিন্তু আশেপাশে ওর মোটর সাইকেলটি দেখতে পেলাম না। বরং ওর সাথে ছিলো অসংখ্য গ্যাস বেলুন এবং বাংলাদেশের ছোট ছোট পতাকা।



আমার জিজ্ঞাসু চোখ দেখে ও বুঝতে পারলেও আমার কৌতূহল না মিটিয়ে বললো ওর সাথে আমাকে হাঁটতে। ছোট ছোট একেকটা লাল-সবুজ পতাকায় বাংলাদেশের মানচিত্র আঁকা আর দু’পাশে দুইটা করে গ্যাসবেলুন সুতোয় বাঁধা দেখলাম। এগুলো নিয়ে মীরার পরিকল্পনা কি হতে পারে তা জানার জন্য অপেক্ষা করতে থাকলেও ওর পাশাপাশি হাঁটতে থাকি । সকালের এই নির্জন রাস্তায় মীরার পাশে হাঁটতে হাঁটতে ওর চুড়ির টুং টাং আওয়াজ আমাকে একটা ভালো লাগা দিচ্ছিলো এই চুড়ির আওয়াজকে হয়তো মীরা বলবে ‘ রণসঙ্গীত’। রোজকার একঘেয়েমি অভ্যাসের তাড়নায় অফিসে যাওয়ার বদলে আজকের এই সকালটাকে অনায়াসেই আমি আমার জীবনের অন্যতম স্মরণীয় একটা সকাল বলতে পারি। যদিও জানি না বাকি সময়টা কেমন যাবে মীরার সাথে কিংবা আর কি কি বিস্ময় অপেক্ষা করছে আমার জন্য।



আমরা শহীদ মিনার চত্বর, শিখা অনির্বাণ, অপরাজেয় বাংলা, সংসদ ভবনে গিয়ে পতাকাসমেত গ্যাসবেলুন উড়িয়ে এক সময় হাজির হই জাতীয় স্মৃতিসৌধে। এরকম বেলুন ওড়াতে দেখে শেষ পর্যন্ত মীরাকে জিজ্ঞেস করি আজ বিশেষ কোনো দিন কিনা। ও বলে –



- তুমি শুধু বেলুনই দেখলে বুঝি ? আর কিছু দেখোনি এর মাঝে? বলে মীরা হাসতে থাকে মিটিমিটি। আকাশপানে ছেড়ে দেয় হাতে রাখা বেলুনের ঝাঁক।ও বলে আজ অপারেশন ফ্লাইং ফ্ল্যাগস ডে।



১৪ আগস্ট কেন ফ্লাইং ফ্ল্যাগস ডে হল আমার সত্যিই জানা নেই কিংবা বাংলাদেশে এই দিবস পালন করা হয় কিনা তাও। এদেশে তো দিবসের আর শেষ নেই , যা শুধু পালনের মাঝেই সীমাবদ্ধ থাকে দেখেছি । কাজে পরিণত হয় কমই।



আজকের এই দিনে ১৯৭১ সালে ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধারা খুব মজার একটা কাজ করেছিলো যা সাহসিকতারও বটে। পাকিস্তানিরা যখন নিশ্চিত আমাদের দেশে শোভা পাবে তাদের তারকাখচিত পতাকা এবং তারা যখন ব্যস্ত ছিলো তাদের স্বাধীনতা দিবস পালনে তখন আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা রাতে রাতে পতাকা বানিয়ে ১৪ তারিখ সকালে গ্যাস বেলুনের সাথে আকাশে উড়িয়ে দেয়। সেদিন বীর প্রতীক হাবিবুল আলম, চিত্রশিল্পী রফিকুন নবী আর তার পরিবার এই পতাকা বানাতে অনেক অবদান রেখেছিলো । এসব বলতে বলতে মীরা ’৭১ এর সেই দিনগুলোতে চলে যায় যেন।



আমি জানি না বাংলাদেশে কেউ এই দিনটির কথা মনে রেখেছে কিনা। বাইরে সূর্যছায়ার ভেলকিবাজিতে ক্রমশ রোদের তেজ বাড়তে থাকলেও আমি অনুভব করতে থাকি সমুদ্রের হিংস্র কোমল ঢেউ যেন আমার পায়ে আছড়ে পড়ছে। পাশেই তাকিয়ে দেখি মীরা উবু হয়ে যেন কি লিখছে সাদা ক্যানভাসে। ওর ব্যাগে ও মনে হয় সারা দুনিয়া নিয়ে হাঁটে। ওর পাশে একসময় যেন আমি ধীরে ধীরে মোমবাতি হয়ে যাই।প্র খর সূর্যের তাপে আমিও গলে গলে ঝরাতে থাকি মীরার ক্যানভাসে আগুন রক্ত –



“ শুনতে কি পাও অতৃপ্ত পাখির আর্তনাদ ? দেখো , কাঁদছে মেধাবী শহর, বিবস্ত্রমান বালিকা, পুরুষের পাথরসম চোখ।



ফিরিয়ে দাও গেরস্থের এক চিলতে উঠোন। ছড়াতে দাও জ্যোৎস্নার অপার্থিব আলো।”





মীরা স্বপ্ন দেখে যেখানে দিগন্ত জুড়ে আজো সূর্য ওঠে, আকাশভরা তারার মেলায় জেগে ওঠে অনির্বাণ প্রেম, যেখানে এখনো শেষ হয়ে যায় নি মনুষ্যত্ব। তবে কেন মানুষ সেখানে সুখের আশায় বুক বাঁধবে না, কেন এখনো পৃথিবী কঁকিয়ে উঠবে ব্যথায়, কেন কান পাতলে শুনতে হবে পৃথিবীর মিহি সুরে কান্না ! মীরার মত আমিও স্বপ্ন দেখি শেষ হবে প্রাচীন বঞ্চনার দিন।



মীরার সাথে সাথে আমিও এখন দেখতে থাকি আকাশে শুধুমাত্র গ্যাসবেলুনই উড়ছে না; উড়ছে শোষণ আর অসাম্য থেকে মুক্তি পাবার শেষ সংকল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিরিশ লাখ শহীদের রক্তাক্ত স্বাক্ষর। উড়ছে বাংলাদেশ।



( সমাপ্ত )



মন্তব্য ৮৪ টি রেটিং +২২/-০

মন্তব্য (৮৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৮

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
তৃতীয় প্লাস, আপু।

''মীরা স্বপ্ন দেখে যেখানে দিগন্ত জুড়ে আজো সূর্য ওঠে, আকাশভরা তারার মেলায় জেগে ওঠে অনির্বাণ প্রেম, যেখানে এখনো শেষ হয়ে যায় নি মনুষ্যত্ব। তবে কেন মানুষ সেখানে সুখের আশায় বুক বাঁধবে না, কেন এখনো পৃথিবী কঁকিয়ে উঠবে ব্যথায়, কেন কান পাতলে শুনতে হবে পৃথিবীর মিহি সুরে কান্না ! মীরার মত আমিও স্বপ্ন দেখি শেষ হবে প্রাচীন বঞ্চনার দিন।''

গল্প পাঠে গল্পের এই লাইনগুলোই বললাম।

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:১০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: বড় আকারের গল্প দিলেই একটু ভাবনা চলে আসে পাঠকের না আবার বিরক্তি ঘটায় !

ভালো থেকো দূর্জয় ।

২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৫

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: এখনো ঝুলন্ত বাংলাদেশ টাই চোখে ভাসছে ! মীরার ফেলানীকে ভাবনা চোখে পানি নিয়ে আসতে বাধ্য করেছে ! বদ্ধভূমি থেকে হয়তো সত্যি সত্যি স্লোগান ভেসে আসে আর আমরা সবাই পুরো বাংলাদেশ একসাথে দরজা , জানালা বন্ধ করে ঘুমিয়ে আছি ! ১৪ আগষ্ট কেন যে হারিয়ে গেল ! আজকেই জানলাম এমন গৌরবময় কিছু হয়েছিল নিজস্বতার খোঁজে !
আমরা সবাই আসলে কেমন জানি একটা অদ্ভূত সময়ের ভিতর দিয়ে যাচ্ছি , মীরার মত আশাবাদী হতে গেলে নিজেকে এলিয়েন মনে হয় ! স্বপ্নে কিংবা কল্পনায় এমন আশাবাদী টুকটাক আমরা সবাই "উড়ছে বাংলাদেশ ! "

কি জানি একদিন সকালে ঘুম ভেঙ্গে দেখবো বদলে গেছে চারপাশ , বাংলাদেশ , ভিতরে বাইরে একটাই চেতনা , বদ্ধভূমিতা আজো যারা স্লোগান দেয় তাদের আর্তনাদ তখন সুখী নোনাজল হবে !
এই শহরের শূন্যতা মুছে যাবে আত্নবিশ্বাসী আর আত্নসম্মানে বলীয়ান একটি বাংলাদেশ দিয়ে ! শুভকামনা আপু !


২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পুরো গল্পের কথা খুব সুন্দর করে সংক্ষেপে তুমি তোমার মন্তব্যে প্রকাশ করলে অভি। আসলে ১৪ আগস্ট , জানুয়ারির ৩১ তারিখ ইত্যাদি বিশেষ দিনগুলোর কথা বা পালন করা হয় না বলেই আমরা জানি না ।

এরকম যদি সত্যিই হতো একদিন সকালে ঘুম ভেঙে বাইরে বেরিয়ে দেখবো স্বপ্নের মতো একটা দেশ পেয়েছি , যেখানে জন অধিকারকে প্রাধান্য দেয়া হয় সবচেয়ে বেশি । নোনাজলও সুখের পরশ দেবে , এমন যদি হতো !

খুব সুন্দ রকরে কমেন্ট করার জন্য , অনুভব করার জন্য অনেক অনেক ভালোবাসা রইলো অভি তোমার জন্য।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৪

আরজু পনি বলেছেন:

লেখাটার শুরুতে ধরতেই পারি নি কোথায় যাবে...

তবে ফেলানীর ব্যাপারে উপস্থাপনটা স্পর্শ করে গেছে।

আর ঢাকা ক্লাবের একেবারে কাছেই তো ফুলের দোকান ...
আরে শেষে ১৪ তারিখ ....নিয়ে বলা কথাগুলো ...ভালো লেগেছে বেশ...

আর বিশেষ ভালো লেগেছে -

মন্দের সংস্পর্শে থেকেও নিজের ভেতরের শুভ শক্তি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মীরার খেয়ালি স্বত্বার সাথে মিল রেখেই ওই ডায়ালগ এসেছিলো ফুলের তোরণ কোথায় বানানো হয় ! হয়ত তার খেয়ালেই আসেনি ক্লাবের কাছেই ফুলের দোকান আছে ! যা লেখা হয়েছে নিতান্ত গল্পের খাতিরে খেয়ালী মীরাকে ভেবে।

ফেলানির নিউজ গুলো পেপারে যখন পড়েছি ওর মৃত্যু দিনে সেদিন আমারও খুব কষ্ট হচ্ছিলো ! একটা অসহায়ত্ব চেপে বসেছিল এই ভেবে জীবনের কোন দাম নেই ! সরকার বা প্রতিবেশী দেশ কারো কাছেই নেই !

ধন্যবাদ পনি মতামতের জন্য।

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এরকম একটা গল্প পড়ে কিছু বলতে গেলে শব্দশূন্যতায় ভোগা-টা স্বাভাবিক। একটা অনুভূতি নয়, অনেকগুলো আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটল, নতুন এ্ক আশাবাদের ইঙ্গিত পাওয়া গেল।

আশাবাদ একটা শাশ্বত বৃত্তের মতন। শেষ নেই, শুরু নেই, কিন্তু বহমান, চলমান। গল্পে এই জিনিষটা পেলাম- বহমানতা। বৃত্তের মাঝে সময় থেমে যাচ্ছে, কিন্তু কাহিনি বয়ে চলছে, আমরা আশা করছি ঠিকই। আমাদের ইতিহাস, আমাদের গর্ব মুছে যায়নি, অচেতনে হলেও, প্রবলভাবেই সেটা বিদ্যমান।

একটানে শেষ করলাম। এই গল্পে বহুমাত্রিক একটা ভাবনার সরল সমাপ্তি ঘটেছে, এটা দেখে ভাল লাগল।

শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৫০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনি খুব সুন্দর করে বললেন ! অতটা সুন্দর করে হয়ত আমি রিপ্লাই দিতে পারবো না । এটা ঠিক একটা নির্দিষ্ট বিষয় না আসলেও এখানে টুকরো টুকরো অনেক গুলো ঘটনা এসে যেগুলো আবার যোগ করলে একটা ব্যাপার খুঁজে পাওয়া যায়।

ইতিহাস মুছে যাওয়া মানে দেশ নাই হয়ে যাওয়া। গর্ব করতে আজো ভালো লাগে বাংলাদেশ পেয়েছি যদিও নানা ভাবে সেটা কলুষিত হচ্ছে। তবুও স্বপ্নও দেখতে ক্ষতি কি !

আপনার জন্যও শুভকামনা শঙ্কু ।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৮

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: +(৬)

মীরার সাথে সাথে আমিও এখন দেখতে থাকি আকাশে শুধুমাত্র গ্যাসবেলুনই উড়ছে না; উড়ছে শোষণ আর অসাম্য থেকে মুক্তি পাবার শেষ সংকল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিরিশ লাখ শহীদের রক্তাক্ত স্বাক্ষর। উড়ছে বাংলাদেশ।

স্বপ্ন সত্যি হবে তো? নাকি দুঃস্বপ্নের বেড়াজালে বন্দী থাকব?

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কিছু স্বপ্ন আছে যেগুলো দেখা হয়ত বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপরাধের শামিল। তবুও চাই দুঃস্বপ্নের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে।
ধন্যবাদ আহসান ।

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৬

সোমহেপি বলেছেন: অনেক বড় :|

পরে পড়তে হবে।

প্রথমেই বারের কথা না পড়লে মিস হবে

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ।

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৪৮

একজন আরমান বলেছেন:
প্রথম দিকে মীরা চরিত্রটা একটু অস্পষ্ট লেগেছিল, মাঝে মনে হয়েছিল এই টপিকে এই চরিত্রের দরকার কতটুকু আর শেষে এসে মনে হল না একদম পারফেক্ট।

চমৎকার।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো।
ভালো থাকুন আরমান ।

৮| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০৮

কয়েস সামী বলেছেন: কাজের চাপে গল্প পড়ার সময় খুব একটা পাই না বললেই চলে। তাই গল্পের স্লো গতিটা ধৈর্যে বেশ কবার বাঁধা দিয়েছে।
তবে
পড়ার পরে রেশটা রয়ে গেছে এখনো।
মীরা চরিত্রটা পাঠক মনে দাগ কাটতে পুরো মাত্রায় সক্ষম বলে মনে করি।
ঘুমবাতি শব্দটি আগে পেয়েছি বলে মনে পড়ে না। শব্দটা দাগ কেটেছে।
আশা করি আপনাকে আমার ব্লগে পাবো।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা রইলো।

৯| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:১৬

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: দীর্ঘ গল্প। কিন্তু পরাবাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গে উঠে এসেছে বাস্তবতাও। যেন দুটো ভিন্ন ভিন্ন সুর শেষটায় ঐকতানে মিশে গেছে।

মীরার সাথে সাথে আমিও এখন দেখতে থাকি আকাশে শুধুমাত্র গ্যাসবেলুনই উড়ছে না; উড়ছে শোষণ আর অসাম্য থেকে মুক্তি পাবার শেষ সংকল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিরিশ লাখ শহীদের রক্তাক্ত স্বাক্ষর।[/sb

-এ কথাগুলোই এক সময় আমাদের দেশেপ্রেমী সবার মনের ভেতরর থেকে উৎসারিত হচ্ছিল। কিন্তু মীরজাফর যে বীজ বপন করে গিয়েছে বাংলার মাটিতে তা আজ সবার অলক্ষ্যে মহীরুহে পরিণত হয়েছে। যার শেকড় উৎপাটন করতেও প্রয়োজন কম করে হলেও আরো ৩০০ বছর।

খুব ভাল বলবো না আপনার আরো কয়েকটি গল্পের মতো। কিন্তু এ গল্পেও লেখকের স্বকীয়তার পরিচয় আড়াল থাকে তা বলা বাহুল্য।

আশা করি আরো অনেক অনেক গল্প পাবো আপনার হাত দিয়ে। ততদিন ভাল থাকুন।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:১২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মীরজাফরি বীজের উৎপাটন জীবদ্দশায় দেখার কথা ভাবি না যদিও , তবুও দেশের কলংক কমুক।

ইদানীং বোধ হয় লিখতে পারছি না, এটা জানুয়ারি মাসে লিখেছিলাম। এর মাঝে কিছুই লিখতে পারছি না বলে রেস্টে আছি। সব গল্প হয়ত সব সময় পাঠককে ভাবায় না। তবু চেষ্টা থাক এভাল কিছু লিখতে।

আপনার কাছে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা। ভালো থাকুন জুলিয়ান দা

১০| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২২

মাহবু১৫৪ বলেছেন: খুব ভাল লাগলো পড়ে

তবে বিশাল বড় লেখা /:)

১১ তম ভাল লাগা

++++++

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জি গল্পটা একটু বড়ই ! ধন্যবাদ প্লাসের জন্য।

১১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১৮

নীল_সুপ্ত বলেছেন: চিন্তা করে পেলাম না, এতো সহজবোধ্য ভাবে কিভাবে মানুষ উপস্থাপন করতে পারে... লেখাটা বড় ছিল, ভেবেছিলাম পুরোটা পড়তে পারবো না, কিন্তু কিসের কি...

++++

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: শেষ পর্যন্ত পড়তে পেরেছেন পুরোটা , জেনে ভালো লাগলো ।
শুভকামনা আপনার জন্য।

১২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:০৫

অনাহূত বলেছেন: দীর্ঘ গল্প, সময় লাগবে। পড়তে ভালো লাগছে।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ওকে সময় নিন।
ভালো থাকুন। শুভরাত্রি

১৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৫০

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন:
আপু, কি বলব আসলে ভেবে পাচ্ছিনা। প্রথমে একটা কথা বলে নেয়া ভাল, মিরার চরিত্রটি কাল্পনিক হলেও বাস্তবে তা আজ আর অপ্রতুল নয়। এমন দেশপ্রেমের শক্তিতে বলীয়ান মানুষ নিজের আসে আশেই অনেক দেখছি।

গল্প পড়তে পড়তে ফেলানির অংশে আসার পর খারাপ লাগছিল খুব। মিরার ফুলতলি যাওয়ার কথা যখন চিন্তা করছিলাম বার বার সেই ঝুলে থাকা লাশটির দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। গপ্লের আড়ালে প্রতিবেশি দেশের বৈরি আচরন, ভাষা আন্দোলন, বাংলার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি পাওয়া, একাত্তরের চেতনা, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য উঠে এসেছে। আর বিশ্বাস করবেন না, গল্পের শেষের দিকে গিয়ে আমার গায়ের রোম দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল সব।

তাই বলব, মীরার সাথে সাথে আমিও এখন দেখতে পাচ্ছি আকাশে শুধুমাত্র গ্যাসবেলুনই উড়ছে না; উড়ছে শোষণ আর অসাম্য থেকে মুক্তি পাবার শেষ সংকল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিরিশ লাখ শহীদের রক্তাক্ত স্বাক্ষর। উড়ছে বাংলাদেশ।

আপনার জন্য শুভকামনা আপু। শুভরাত্রি। :)

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:১০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা নতুন কিছু না, মারাও গেছেন অনেকেই। তবে ফেলানি হত্যা বিশেষ করে তাকে ঝুলিয়ে রাখাটা মানুষের মনে ব্যাপক নাড়া দিয়েছে নৃশংসতার কারণে ! যদিও এর কোন প্রতিকার হয়নি !

গল্পের শেষ অংশ তোমাকে এতটা ছুঁয়ে গেছে জেনে সত্যিই ভালো লাগলো নাজিম।

শুভকামনা তোমার জন্যও ।

১৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ২:০৪

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: প্রথম থেকে শেষ - বাঁক পরিবর্তনগুলো দারুণ ।

দীর্ঘ গল্প অবশ্য ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:১২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: দীর্ঘ গল্প পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রত্যাবর্তন।
ভালো থাকবেন।

১৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৩৩

নোমান নমি বলেছেন: বেশ দীর্ঘ একটা গল্প পড়লাম অনেক দিন পর। বেশ দারুণ।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ নোমান।

১৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৮:৩৯

দিকভ্রান্ত*পথিক বলেছেন: সময় নিয়ে পড়লাম, সকাল সকাল দারুণ একটা লেখা পড়তে পেরে বেশ লাগছে! ১৩তম প্লাস।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: প্লাসের জন্য ধন্যবাদ পথিক ।
শুকামনা রইলো

১৭| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫২

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: গপ পড়তে একটু টাইম লাগছে। কিছু অংশের উপস্হাপনা দারুণ আর কিছু কিছু অংশ মোটামোটি। সবকিছু মিলিয়ে এভারেজ গপ হইছে!

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৩১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার কমেন্ট এর ভঙ্গী ভালো লাগে মাসুম ভাই । এভারেজ হইছে ক্ষতি নাই , দেখি একটা সেইরাম গল্প লিখতে ট্রাই করবো। :)

১৮| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৮

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: কাহিনী খুব দারুণভাবে এগিয়েছে। অনেক ভালোলাগা জানবেন।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ইসহাক ভাই

১৯| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: মূমুর্ষু স্বপ্নদের বাঁচতে দাও !
স্বপ্ন বাঁচবে , মানুষ বাঁচবে !
চল জীবনের গান গাই তবে


সুন্দর লিখেছেন। বেশ উপভোগ্য।


চলেন জীবনের গান গাই
নিষ্ঠুর এ পৃথিবীটাকে ভালবাসার রঙে সাজাই।

২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৫৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২০| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৫৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: অপর্ণা মম্ময়,

একটি আবাহন আছে প্রেমের , গল্পটির শরীর জুড়ে । প্রথমে ঢাউশ কোটের আড়ালে , পরে সবুজ-লাল শাড়ীর জমিনে । এ প্রেম মাটির জন্যে , মানুষের জন্যে । ইতিহাসের টিপখানি গল্পটির কপালে জেগেছে সুন্দর, করেছে আকর্ষনীয়া ।

আসলে শুধু মীরাই নয় , দেখবেন এ প্রেম আছে সকলের হৃদয়ে । কেউ বোঝে , কেউ বোঝায় । গল্পের গাথুনী, বাক্য বিন্যাস যদি অশরীরি গাঢ় নীল চোখে দেখি তবে তার ছবিটাকে এককথাতে বলতে হয় - " ইনহাস্ত ওয়াতানম..." ।

ভালো থাকুন । শুভেচ্ছান্তে .....

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: প্রেমের আবাহন টা কথকের চরিত্রে কিছুটা স্পষ্ট , আর মীরার ক্ষেত্রে অস্পষ্ট রেখেছি। ইতিহাস আসলে ভুলে যাওয়া ঠিক নয় ।

আপনার সুন্দর করে করা মন্তব্যের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা রইলো ভাইয়া।
আপনিও ভালো থাকবেন ।

২১| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৩

হামিম কামাল বলেছেন: অসামান্য গল্প লিখেছো বুবু। ফিকশনাস ফিকশন, মানে যেমন দেখি তেমন নয়, যেমন দেখতে চাই তেমন। মীরা উচ্চবিত্ত। উত্তমপুরুষ সঙ্গিটিও তাই। দেশাত্মবোধ যেখানে শূন্য সেখানে ফুল ফুটছে। আরও টেনেছে একটা ব্যাপার, একজন নারী একজন পুরুষ কেমন প্লেটোনিক ভাবে মিশছে। এসময়ে খুব দরকার এমন লেখা। এভাবে মিশতে শেখাতে হবে।

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তোরে যে কতদিন পর দেখলাম হামিম !

যখন লিখেছি তখন কিন্তু তোর করা মন্তব্যের ব্যাপার মাথায় কাজই করে নি । :) । দেশপ্রেমের ঘোর নিয়ে লিখে গেছি শুধু ।

ভালো থাকিস ভাই

২২| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৮

নস্টালজিক বলেছেন: ভালো লাগছিলো পড়তে!

মীরা ক্যারেকটার-টা ভালো পোট্রেট করসো!


শুভেচ্ছা নিরন্তর!

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

২৩| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৩৩

মামুন রশিদ বলেছেন: বরাবরের মতই মুগ্ধপাঠ!


মীরার সাথে সাথে আমিও এখন দেখতে থাকি আকাশে শুধুমাত্র গ্যাসবেলুনই উড়ছে না; উড়ছে শোষণ আর অসাম্য থেকে মুক্তি পাবার শেষ সংকল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিরিশ লাখ শহীদের রক্তাক্ত স্বাক্ষর। উড়ছে বাংলাদেশ।


অসহায় বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে মীরাদের দিকে ।


২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মীরার স্বপ্নগুলো যদি সত্যিই পরিপূর্ণ হয়ে যেতো ! যদি সকলে মিলে এগিয়ে এতো ! কতই না ভালো হতো !

শুভকামনা মামুন ভাই

২৪| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:৩৮

অন্ধকারের রাজপুত্র বলেছেন: চমৎকার একটা গল্প পড়লাম ! :)

ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম !
++++++

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ রাজপুত্র । ভালো থাকুন

২৫| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:২৪

সায়েদা সোহেলী বলেছেন: এক কথায় চমৎকার! !! +

অনেকে অনেক ভালো গল্প লেখে সময়ের অভাবে শুধু দীর্ঘকায় গল্পের শরীরে চোখ বুলাই আজ একবারে ই পুরো টা পড়লাম ,সত্যি বলতে কি মীরা কে অনুসরণ করতে করতে ভাবনায় হারিয়ে যে শেষ করে ফেলেছি :)

ঢাকা ক্লাবের বার লাউঞ্জ থেকে মিরপুর বদ্ধভূমি !! মীরা চরিত্রের মতই মনভাবনা না থাকলে ত লেখকের এটা লেখা সম্ভব ছিলো না! !!

" মন্দের সংস্পর্শে থেকেও নিজের ভিতরের শুভ শক্তি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায় ----আমারও এমনটাই বিশ্বাস ,যেমন মেঘলা আকাশের কালো মেঘ দেখে মেঘমুক্ত নীল আকাশে শুভ্র মেঘ কতটা সুন্দর শুভ্র উপলব্ধি হয়

মীরার শপ্ন একদিন পুর্ন হবে সেই প্রত্যাশায় .. ,,

ওনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো অপর্না

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমার এরকম একটা ভীতি ছিল। ব্লগের বড় কোনও লেখা দেখলেই এড়িয়ে যেতাম। শুধু কবিতা পোস্টেই আনাগোনা ছিল। আমার কাছে বড় লেখা মানেই প্রিন্ট করা কাগজে আরাম করে শুয়ে শুয়ে পড়ার মতো।

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপু। স্বপ্ন পূরণ হোক না হোক , মীরারা বা আমরা স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি। তাই স্বপ্ন দেখে যাই , বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে জেনেও।

২৬| ২৬ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
'উড়ছে বাংলাদেশ।’ অসাধারণ বোধনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় স্বপ্নসম্ভাবনার আশাজাগানিয়া গল্পটি। শুরুতে মীরাকে যেভাবে দেখা যায় কিরীটি নামক একটা দুগ্ধপোষ্য বিড়ালকে কোটের পকেটে নিয়ে সন্ধ্যায় বারে এসে শূন্য গ্লাস সামনে নিয়ে টেবিলে বসে থাকতে, গল্পের অনেকদূর পর্যন্ত এসেও তাকে আমার অদ্ভুত অবাংলাদেশি একটা চরিত্র মনে হচ্ছিল। এরকম একটা মেয়ে, গায়ে কোট জড়িয়ে বাইকে ঘুরে বেড়ানো নারী আমাদের দেশে এখনো দেখা যায় না; তবে আমি গল্পটাকে আরও ৫০ বছর এগিয়ে নিয়ে (ধরুন ২০৫০-৬০ সালের দিকে যখন আমাদের নারীদের পোশাকাশাক চালচলন এরকম হয়ে উঠতে পারে) ভাবতে শুরু করলাম যখন মীরাকে দেখি ফেলানীর জন্য কিছু লিফলেট, ইত্যাদি ছাপানোর জন্য ব্যস্ত হচ্ছে।

ফেলানীর জন্য বা বুদ্ধিজীবীদের জন্য মীরার কর্মসূচি কোনো পরিণতি না পেলেও ১৪ আগস্টের কর্মসূচি বেশিরভাগ পাঠকের কাছেই একটা নতুন তথ্যরূপে হাজির হবে; আর মীরার প্রোগ্রামটাও ছিল অভিনব যা পাঠককে ১৪ আগস্টে এরকম একটা কর্মসূচি পালনে অনুপ্রাণিত করবে। ২০১৩ সালে এরকম কিছু হয়ে গেলে, এবং এর পরের বছর থেকেও, সেটিতে কেবল আপনারই অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মীরার শূন্যগ্লাস দর্শন ভালো লেগেছে।

একটা পরিপূর্ণ গল্প, যা সিরিয়াস পাঠকের মনের তৃপ্তি মেটাতে সক্ষম।

কিছু টাইপিং মিসটেক আছে, যা খুব নেগলিজিবল।

শুন্য> শূন্য
পাণ>পান
শাড়ি পড়া> শাড়ি পরা
মূমুর্ষু>মুমূর্ষু

একটা পরামর্শঃ লাইন স্পেসিং সিংগেল রাখা যেতে পারে। কমা, দাড়ি, ইত্যাদির আগে স্পেস দেবেন না। এতে বই বের করার কালে এডিটিঙে যেমন সুবিধা হবে, পত্রিকার সম্পাদকগণকেও এডিটিঙের জন্য কম হাঙ্গামা পোহাতে হবে ;)

শুভ কামনা আপু।


২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এরকম একটা মেয়ে, গায়ে কোট জড়িয়ে বাইকে ঘুরে বেড়ানো নারী আমাদের দেশে এখনো দেখা যায় না;

-- দেখা যায় না আবার দেখা যায় কিন্তু ভাইয়া। পোশাক-আশাকের আধুনিকতা বর্তমানেও যেমন আছে , অতীতেও ছিল। আমার কলেজের এক ম্যাডাম কে দেখেছিলাম উনি যত না সুন্দরী ছিলেন ততোধিক ছিলেন স্মার্ট ; মননে, বাচনে।

১৪ আগস্ট নিয়ে মীরার উদ্যোগ টা যদিও সত্যিই কাজে লাগানো যায় চমৎকার হয় কিন্তু।

কমা, দাড়ি, ইত্যাদির আগে স্পেস দেয়া সংক্রান্ত তথ্য দিয়েছিলেন যখন সবুজ অঙ্গনের লেখা পাঠাবার নিয়মাবলী দিয়েছিলেন। তখন চেষ্টা করেছিলাম সেটা মনে রেখে মেনে চলতে। হয়তো কিছু কিছু জায়গায় ভুলেও গিয়েছিলাম। শুধু জানা হয়নি আপনার এডিটিং এ কতটা সুবিধা বা পেরেশানি বাড়িয়েছিলাম । :)

টাইপো ঠিক করেছি। শাড়ি পরাটা খুঁজে পাচ্ছি না :( , আবার খুঁজতে হবে।

২৭| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪৪

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

পড়ছিলাম মাঝে মাঝে মীরাকে নিয়ে ভাবছিলাম আবার ভাবনাগুলো এলোমেলো হয়ে যাচ্ছিল আবার মীরাকে ফিরে পেয়েছি পরে এসে।

গল্পে প্লাস রইল।

২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ কাণ্ডারী ভাই

২৮| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:২১

হাসান মাহবুব বলেছেন: মীরার চরিত্র অঙ্কন চমৎকার হয়েছে। পাঠক খুব সহজেই তাকে ভালোবেসে ফেলবে। গল্পের মধ্যে ইতিহাস বলার এবং বর্তমান প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণের প্রয়াস থাকলে, অনেকসময় গল্প ঝুলে যায়। প্রবন্ধ অথবা বক্তৃতার মত হয়। এই গল্পটায় সেরকম হবার সম্ভাবনা ছিলো, কিন্তু হয় নাই। অনুপ্রেরণা যোগাতে পারে এ গল্প। ভালো লাগা রইলো।

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: দুঃখিত , উত্তর দিতে দেরী হলো।

এটা ঠিক ঐতিহাসিক কোনও ভিউ আনতে চাইলে মাঝে মাঝে গল্প ঝুলে যাবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয় কখনো কখনো। আম এমন ভয় পাচ্ছিলাম ! যা শেষ পর্যন্ত প্রবন্ধ বা বক্তৃতার মতো লাগেনি জেনে ভালো লাগলো।

শুভকামনা রইলো।

২৯| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৯

সায়েম মুন বলেছেন: মীরা ক্যারেক্টারটা খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রতীকি নয় এরকম হাজার মীরার দরকার এখন। গল্প একদম ঝরঝরে গতির। পরিপূর্ণ একটা গল্প বলা যায়। মীরাকে অনেক দিন মনে থাকবে।

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভকাম্না থাকলো আপনার জন্য।

৩০| ২৭ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

সায়েম মুন বলেছেন: গল্পের শিরোনামটা শুধু 'মীরা' করা যেত। অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি কম্প্যাক্ট একটা নামের কথা। যে শিরোনামটা অতি অল্পতেই চোখে ভাসবে। :)

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:১৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গল্পের নাম শুধু " মীরা " হলে ব্যক্তিকেন্দ্রিক ভাব চলে আসতো। যেহেতু গল্পটা ব্যক্তি মীরাকে ঘিরে নয়। এখানে ফোকাস টা দেশভিত্তিক বা সার্বজনীন বেশীরভাগ সময়টায়। আর মীরার চোখ দিয়ে আরেকজন দেশকে দেখছে, সময়টা বুঝতে চাইছে, গল্পের কথকের অপূর্ণতা বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে বলেই নামটা " তার চোখে দেখি নীল আকাশ " ই আমার কাছে যথার্থ মনে হচ্ছে।

ভালো থাকুন ভাইয়া :)

৩১| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯

অদৃশ্য বলেছেন:
দিদি

শুরু করলাম আপাতত...

আপনার কয়েকটি লিখা পড়েই বুঝেছি আপনি চমৎকার লিখেন... তাই যে কোন গল্পেই চমৎকার সুন্দর কিছু পাবার আশাই রাখি...

পড়বো...

শুভকামনা...

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া অনুপ্রেরণার জন্য ।
আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো।

৩২| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:১৮

তীর্থক বলেছেন: ম্যাসেজ পরিস্কার। আর তাতে ভালো লাগা।


১। ঢাউস কোট 'টা এই গল্পে কতটা জরুরী ছিল বুঝিনি। বিড়ালটা আনা হয়েছে কি কথকের সাথে মীরার'র পরিচয় ঘটিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যেই নাকি আর কোন কারন ছিল?

২। আর সেই বয়সেই আমি প্রথম আমার এক বন্ধুকে হারিয়ে ফেলি মায়ের জন্য। আমার এক প্রেম'কে হারিয়ে ফেলি।

৩। "বিড়ালের জন্যও যে কারো এত এত কাজ জমে যেতে পারে"। এই অংশটা ঠিক কেন এলো ধরতে পাড়িনি। মীরার কাছে কোনটা বেশি জরুরী, বিড়ালের জন্যও কাজ জমিয়ে রাখা নাকি কাজের জন্য বিড়ালকে জমিয়ে রাখা?

"রাতের বেলায় বাইরে ঘোরাঘুরি করো না। বাসায় চলে যাও। পদে পদে কিন্তু বিপদ ঘুরছে।" এই অংশটাও মীরার ক্যারেক্টারে সঙ্গে যায়নি মনে হয়।

যতক্ষন "নীলক্ষেত" শব্দটা আসেনি ততক্ষন এটাকে কোন বিদেশি গল্প ভাবছিলাম। বারে যাওয়া মোটর সাইকেল চালানো মেয়ে ভাবলেই বাংলাদেশি মেয়ে ভাবতে পারিনা। বাংলাদেশ নিয়ে ডুবে থাকা মেয়ে রঙিন পানির বারে যায় কারন "এই বারে আসলে এখানের উজ্জ্বল আলো, কিছু রঙিন পানীয় ছাড়া আর কিছুই এখানে চলমান নয়। চিন্তা-ভাবনারা এখানে ছুটে যায় না, আমি মনঃসংযোগ করতে পারি এখানে বসে। বাইরের জগত এখানে অনুপস্থিত।" আমি মিলাতে পারি না।

৪। ফেলানি'কে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা আর পানি পান না করতে দেয়ার সাথে মীরার পানি পান না করা একটা প্রতীকী প্রতিবাদ। ভাল লেগেছে।

ফেলানি তো মারা গেছে অনেক আগেই।

- শোনো, পুরো ক্যানভাসটা হবে কচি সবুজ রঙের। মাঝখানে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। আর রক্ত রঙে লেখা থাকবে

“ মুমূর্ষু স্বপ্নদের বাঁচতে দাও !
স্বপ্ন বাঁচবে , মানুষ বাঁচবে !
চল জীবনের গান গাই তবে … … … “


৫।- কিসের শ্লোগান , শুনি নি তো আমি !
- দরজা-জানালা বন্ধ করে ঘুমাও নাকি , বলে মীরা।

আমরা আসলে দরজা-জানালা বন্ধ করেই ঘুমাই। কোন শ্লোগানই এখন আর আমাদের ঘুম ভাঙ্গায় না। এমন কি সাগর-রুনি কে কারা হত্যা করল তা তাদের পাশের ফ্ল্যাটের লোকও জানতে পারেনি। আমি বাকরুদ্ধ!!

৬। মীরা ছিলো আমার দেখা একমাত্র ব্যক্তি যার কাছে এলে স্বস্তিতে নিঃশ্বাস ফেলা যায়, একটা সবুজ ভূখণ্ড আঁকা যায়, মুমূর্ষু স্বপ্নেরা চোখ মেলে তাকায়।

অসাধারন!

তবে ভুমিকম্পের বিষয়টা এই গল্পে না এলেই বোধহয় ভালো হত। বুঝতে পারি যে মীরার দেশ নিয়ে ভার্সেটাইল চিন্তা আর উদ্বেগ তুলে আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তবুও।

"গতকাল ভোরে দেখলাম সামনের দিকটায় একটা নতুন কবর হয়েছে আর দুইজন সাদা শাড়ি পড়া মহিলা দাঁড়িয়ে আছে সেখানে।" এই অংশটি বুঝিনি। এই অংশটির প্রয়োজনীয়তাও বুঝিনি।

৭। মীরার সাথে সাথে আমিও এখন দেখতে থাকি আকাশে শুধুমাত্র গ্যাসবেলুনই উড়ছে না; উড়ছে শোষণ আর অসাম্য থেকে মুক্তি পাবার শেষ সংকল্পে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য তিরিশ লাখ শহীদের রক্তাক্ত স্বাক্ষর। উড়ছে বাংলাদেশ।

স্যালুট!


সব মিলিয়ে ১০ এ ৬ :-)

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৪৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মীরার সাথে অদ্ভুত অদ্ভুত সব ব্যাপার জড়ানো থাকবে এটাই যেন স্বাভাবিক ছিলো

-- এই একটা লাইন আমি দুই তিনবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করেছি এই গল্পে।

সে হিসেবে ঢাউস কোট, বিড়ালের প্রসঙ্গ আসতেই পারে। আরও একটা মূল ব্যাপার হলো - কোনও গল্প যখন দীর্ঘ হয় ( বা উপন্যাস ) তখন মূল বক্তব্য ছাড়াও ক্ষেত্রবিশেষে সাব টপিক আসে। ব্যাপারটা তেমন ধরে নিতে পারেন।

গল্পের কথক যখন তার মায়ের জন্য তার বন্ধু নীলাকে হারিয়ে ফেলে তখন সে ক্লাস ফোরে পড়ে। সে বয়সে প্রেম বোধ তেমন ভাবে কাজ করে না। তাই বন্ধু ভাবাটাই শ্রেয়।

---
রাতের বেলায় বাইরে ঘোরাঘুরি করো না। বাসায় চলে যাও। পদে পদে কিন্তু বিপদ ঘুরছে।" এই অংশটাও মীরার ক্যারেক্টারে সঙ্গে যায়নি মনে হয়।

---- সবাই সাহসী হলে সমাজের অনাচার তো দূর করাই যেতো ! তাহলে তো একলা মীরাকে ভাবতে হতো না। গল্প কথকের ডায়ালগের চেয়ে, একশনের চেয়ে তার ভাবনার অংশ এ গল্পে বেশি আসছে। তাই হয়তো মীরার এমন মনে হয়েছে সে খুব একটা সাহসী না !


ফেলানি, ফ্লাইং ফ্ল্যাগস ডে, মিরপুরের বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবী হত্যার ব্যাপার প্রতিটাই অতীত ! কিন্তু বর্তমানে এসে ঐ অতীত অনুভবের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানো হচ্ছে।


----

"গতকাল ভোরে দেখলাম সামনের দিকটায় একটা নতুন কবর হয়েছে আর দুইজন সাদা শাড়ি পড়া মহিলা দাঁড়িয়ে আছে সেখানে।" এই অংশটি বুঝিনি। এই অংশটির প্রয়োজনীয়তাও বুঝিনি।

==== উপরে একবার বলেছি সব সময় গল্পে ডায়ালগ বা ঘটনা প্রাসঙ্গিক ভাবেই যে আসবে সেটা নয় ! মীরার ঘুম ভাঙার পরের একটা ব্যাপার তুলে আনা হয়েছে শুধু মাত্র তার অনুভব বোঝাতে বা কথোপকথন চালাতে ।


আপনি খুব মনযোগী পাঠক বোঝা যাচ্ছে। আর আপনার মার্কিং এর ব্যাপারটা মানে গল্পের রেটিং এর ব্যাপারটা আমি উপভোগ করি ।

ভালো থাকুন তীর্থক।

৩৩| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪০

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
পাঠকদের এত কষ্ট দেওয়া ভালনা!

পড়ার পর মনে হলো কষ্টটা উসুল হয়ে গেছে...

ধন্যবাদ...

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কষ্ট করে পড়লেন, আমার লেখাটাও বৃথা যায় নি মনে হচ্ছে এখন !
শুভকামনা সুপান্থ।

৩৪| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭

সোমহেপি বলেছেন: গল্পটা পড়েই আপনার ওয়েট জানতে ইচ্ছে করছে।

কচ্ছপ দৌড়ের গল্পে সস্তা! সেন্টিমেন্টের কথা যেমন আছে তেমনই আছে লেখার অসীম ধৈর্য্যের একটা তাৎপর্য।শিখতে চাইলে আমরা এখান থেকেও শিখতে পারি।
তবুও যদি শিখতে পারতাম। :(

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৪৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আবার এসেছেন গল্পটা পড়তে এবং ধৈর্য ধরে পড়লেন। এজন্য কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকবেন সোমহেপি

৩৫| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৮

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: “তোমার দ্রোহের পুষ্পরেণু
উড়িয়ে দাও
ছড়িয়ে দাও।

এই ঘর, চারদেয়াল
নিক্বণ ধ্বনি
সবই অপার শূন্যতা ।”


এই লাইনগুলো দারুন লাগলো! মীরা চরিত্রের শুরু দারুন রহস্যে ঘেরা, এই জিনিসটা ভালো লেগেছে। অন্যদিকে ঢাকা ক্লাবের বার জায়গা নিয়ে কোন ধারনাই নাই। আমি মীরাকে মধুর ক্যান্টিন অথবা অথবা কোথাও কল্পনা করে স্বস্তি পাচ্ছি। গল্প হিসেবে এর উত্থান দুর্দান্ত, কিন্তু আশাবাদী দেশপ্রেমিক আবেগের পরিসমাপ্তি আমার কাছে একটা দুর্বল দিক মনে হয়েছে।

সব মিলিয়ে চমৎকার! :)


শুভকামনা!

৩০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১:৪৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তোমার কমেন্ট ও ভালো লাগলো । মীরার ইউটপিয়ান জগতটা এরকমই । তবে ব্যাপার গুলো সত্যি হলে ভালো হতো । মানে গণ মানুষের পর্যায়ে গিয়ে যা মীরা একা একা করছে এমনটা প্রকাশ পেয়েছে গল্পে। গল্পটা দেশ প্রেমের ব্যাপারকে উদ্বুদ্ধ করতেই একটু ডিফারেন্ট টাচে লেখার প্রয়াস ছিল ।

তোমার জন্য শুভকামনা।

৩৬| ৩০ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৬:৪৭

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: গল্প ভালো লাগল

তবে শুরুর দিকটা আরেকটু সংক্ষেপ করা যেতে পারত মনে হয়

৩০ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৪৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ তানিম ভাই।
শুভকামনা রইলো।

৩৭| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২

তুষার কাব্য বলেছেন: “ শুনতে কি পাও অতৃপ্ত পাখির আর্তনাদ ? দেখো , কাঁদছে মেধাবী শহর, বিবস্ত্রমান বালিকা, পুরুষের পাথরসম চোখ
চারদিকে এত আর্তনাদ ! ভালো লাগল আপু।

০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ২:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ তুষার কাব্য।

৩৮| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৭

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আপু সময় নিয়ে এলাম! একটা বড় মন্তব্য করেছিলাম, কিন্তু কমেন্ট করতেই দেখি কমেন্ট হাওয়া। কারন লগ ইন সমস্যা। ভীষন রাগ লাগছে!

এই গল্পে একটা টার্ম ব্যবহার করেছেন, উড়ছে বাংলাদেশ। সমগ্র গল্পের সবচেয়ে নির্মম টার্ম আমার কাছে এটাই লেগেছে। মীরাকে কেন যেন ভালো লাগছে। হতে পারে আপনি নিদারুন চরিত্র বর্ননা করেছেন।

এই বড় একটি লেখা পড়ার মত ধৈর্য আপনি পাঠকদের মাঝে সৃষ্টি করেছেন, এটা অনেক বড় একটা অর্জন। লেখাটা তার নিজ গুনের কারনেই শেষ লাইন পর্যন্ত যেতে বাধ্য করেছে।

প্লাস রইল। প্লাস আগেই দিয়েছি। কিন্তু মন্তব্য দেরী করে করলাম আপু। আপনি তো জানেনই কেন! :( অনেক ভালো থাকেন। শুভেচ্ছা রইল।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তোমার ব্যস্ততার খবর জানি আমি। সমস্যা নেই। আর কমেন্ট না করলেও যে লেখাটা পড়েছিলে সেটা অনুমান করেছিলাম।

মীরাকে আমারও ভালো লাগে।

ভালো থেকো তুমি ।

৩৯| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

অদৃশ্য বলেছেন:




দিদি

এই লিখাটি শেষমেস শেষ হয়েছে... সত্য বলতে কি লিখাটি আমাকে তেমন টানেনি... কেন যেন বোর ফিল করছিলাম লিখাটি পড়তে পড়তে... হয়তো অংশ অংশ করে পড়ছিলাম বলে এমনটা হতে পারে... অথবা মন থেকে পড়ছিলাম না...
সাদামাটাভাবেই বলে গেলাম...

পরের গল্প বা কবিতার অপেক্ষায় থাকলাম...

শুভকামনা...

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সব লেখা সবার ভালো লাগে না ভাইয়া আমি জানি। আর একজন লেখকের সব লেখাই যে তার পাঠক কে টানে তাও না।

সাদামাটা জবাবের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো।

৪০| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৬

নীল কথন বলেছেন: মীরার মাধ্যমে ইতিহাস নিংড়ানো গল্প। ইতিহাসের নানা তারিখতে টার্চ করে গেছো, পল্লবী থাকায় ৩১ তারিখের উদযাপনটা দেখি। এখানের আসার আগে ৩১ জানুয়ারীতে মিরপুর শক্রমুক্ত হয়েছিল, জানা ছিল না।

ইতিহাস নির্ভর গল্প যে হয়, এটাও তেমনি। ফেলানির নামটা আনছো, ভালো লাগছে।

ভালো থাকো সবসময়।

০৫ ই আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমি নিজেও জানতাম না ৩১ তারিখের ব্যাপার কিংবা ১৪ অগাস্টের কথা। কিন্তু জানা হয়েছে পড়তে গিয়ে, গল্প লিখতে গিয়ে।

তুইও ভালো থাকিস ।

৪১| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:১৪

মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো আপা। এক দফায় শেষ করতে পারিনি, দুই দফা লেগেছে। সব ভুলেই যাচ্ছি আমরা !! পাঁচ বছর আগে অন্য সরকার কি করেছিল, সেটাই মনে থাকেনা আর ৪০/৪২ বছর আগের কথা মনে রাখব ?? আমরা যে ভুলোমনাদের দলে!! অথচ একাত্তর আমাদের শিকড়, প্রাণ, অস্তিত্ব। একবারও কি ভেবে দেখেছি ২৫ মার্চ আর ১৪ ডিসেম্বরের শহীদ বুদ্ধিজীবিরা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আজ কোথায় থাকত ?? মীরার কথাগুলো বাস্তবে বলতে গেলে সবাই পাগল ঠাউরে বসে থাকবে, অথচ কী সত্য !! কী স্পষ্ট, স্বচ্ছ প্রতিটা কথা।

পোস্টে ভালো লাগা জেনো :)

২৯ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তোর ভাবনায় মুগ্ধতা রইলো।
কিছু কিছু ব্যাপার চাইলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়তো। সদিচ্ছাই যথেষ্ট।

৪২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩২

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: গল্পটা যেখানে শুরু হয়েছিলো আর যেখানে গিয়ে শেষ হলো, সেটা পড়তে বিচিত্র রকম ভালো লাগা লেগে গেলো । চিন্তা ভাবনার জায়গাটা অনেক বিশাল আপনার ক্যানভাসে । অনেকখানি মুগ্ধতা রেখে গেলাম ! :) :)

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পুরনো লেখা খুঁজে পড়লেন, এজন্য বিশেষ ধন্যবাদ। শুভকামনা আপনার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.