নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

নুহা-১২

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০২

নুহা-১১



একটা ট্রেতে করে চা এনে দেখি রেজা বিছানায় হেলান দিয়ে একটা রিয়েলিটি শো দেখছে। এ সময়কার খুব জনপ্রিয় এক শো, নাম - " গ্রান্দে ফ্রাতেল্লো "। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় " বিগ ব্রাদার "। এর কয়েকটা পর্ব আমি দেখেছি ঘরের কাজকর্মের ফাঁকে ফাঁকে, আমার ভালো লাগেনি। টিভি দেখার নেশা আমার কখনোই তীব্রভাবে ছিলো না। আর ইতালিয়ানদের টেনে টেনে সুর করে বলা কথার ধরণটা কেন যেন ভালো লাগে না আমার। ট্রেটা বিছানার উপর রেখে আমিও বিছানায় হেলান দিয়ে বসলাম। অন্যদিন ও একাই টিভি দখল করে রাখে, কিন্তু রিমোট আজকে আমার হাতে দিয়ে বললো -



- আসো একটা মুভি দেখি। ঐদিন ব্লকবাস্টার থেকে কী জানি একটা মুভি আনছিলা না ওইটা ছাড়ো, দেখি। নামটা জানি কী ?



- সাইলেন্স অব দ্য ল্যাম্বস



- ফেরত দেয়ার ডেট কবে? পরে কিন্তু জরিমানা হইবো



- জরিমানা হয়ে গেছে ইতিমধ্যে । রেজার দিকে তাকিয়ে আমি হাসি। ছবি দেখার দরকার নেই, তুমি তোমার প্রোগ্রাম দেখো, চায়ে চুমুক দিতে দিতে বলি। রেজা চিনি বেশি খায় বলে আলাদা একটা পটে করে ওর জন্য চিনি রাখা আছে ওর কাপের পাশে। ওকে বলি , লাগলে আরও চিনি মিশিয়ে নাও।



- তুমি বানাইছো , এমনেই মিষ্টি হইছে। আর চিনি লাগবো না , বলে ও ট্রে থেকে চায়ের কাপ হাতে তুলে নেয়। আমার দিকে মনে হয় না ওর মনোযোগ আছে। দিব্যি টিভির দিকে তাকিয়ে আছে, হাসছে। বাহ্‌ , ও বেশ সুখীই মনে হয়, অন্তত এ মুহূর্তে সেরকমই লাগছে।



- সারাদিন কি তোমার কাজের খুব ব্যস্ততা ছিলো রেজা? আজ যে একবারও ফোন করলে না!



- কাজ মানে প্রচুর কাজ। আজকে ক্যামিক্যাল কোম্পানির লোক আসছিলো তাদের নতুন প্রোডাক্ট নিয়া। আন্দ্রেও ঐ লোকটার নাম যে আসছিলো। আমারে খুশী করতে তিন বোতল লিকুয়িড সাবান দিয়ে গেলো কাপড় পরিষ্কারের। বাসায় আনতে ভুইল্যা গেছি, গাড়িতে রাখা আছে। কালকা মনে কইরো। বলতে বলতে ও শোয়া থেকে উঠে বসে চায়ের কাপ হাতে নেয়। গ্রান্দে ফ্রাতেল্লো প্রোগ্রামের বিজ্ঞাপন বিরতির সুযোগে ও টিভির চ্যানেল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে সংবাদের চ্যানেলে এসে স্থির হয়।



- তোমাকে খুশী করতে হবে ব্যাপারটা বুঝলাম না।



- সোজা হিসাব, আমি যে কোম্পানি কে এপ্রুভ করবো তাদের ক্যামিকেলের জন্য শুধু সে কোম্পানিই আমাদের হোটেলে ওয়াশ করার সব ডিটারজেন্ট সাপ্লাই দিবো। আমি ইনচার্জ না! আমি না হয় কাজ নিয়া ব্যস্ত আছিলাম, তাই ফোন দেই নাই। তুমিও তো দিতে পারতা। বলে ও বেশ গম্ভীর একটা ভাব নেয়।



- কে বললো ফোন করি নি ? আমার চা খাওয়া ততক্ষণে শেষ। কাপটা নামিয়ে রাখতে রাখতে বলি আমি। পানির বোতল খুলে দুই চুমুক পানি খাই। যে কোনও কিছু খাবার পরেই আমার পানি খাবার অভ্যাস বলে রেজা আমাকে মাঝে মাঝে তিরস্কার করে। অবশ্য এই তিরস্কার আমি গায়ে মাখি না। আমি ফোন করেছিলাম।

- কখন করছিলা ?

- আমি আসলে তোমার হোটেলের সামনে গিয়েই ফোনটা করেছিলাম দুপুরে। এক সাথে খাবো বলে বের হয়েছিলাম বাসা থেকে।

- তারপর ?

- তারপরেরটা তুমি জানো রেজা। আমার কথা শুনে ও বজ্রাহত হয় কিনা কে জানে। টিভির দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে আমার দিকে তাকায়। কী জিজ্ঞেস করবে বুঝে উঠতে না পেরে বোধ হয় কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে কিংবা প্রাথমিক বিস্ময় কেটে যাওয়ার অপেক্ষা করে। কিন্তু ও অন্য কিছু জিজ্ঞেস না করে কিংবা কোনো জবাবদিহিতা না করে উল্টো ক্ষেপে ওঠে। ওর ভঙ্গী দেখে আমার হাসি পায়। বাহ্‌ একেই বলে আসল পুরুষ, সিংহের মতো গর্জন।



- তুমি আমার হোটেলে গেছো , আমারে বলো নাই কেন ? ঐখানে কি আমি বেড়াইতে যাই? তুমি জানো না ওইটা আমার কাজের জায়গা ? ঐখানে হুটহাট যে চাইলেও যাওন যায় না এইটা তোমার মাথায় রাখন দরকার আছিলো। এতো না শিক্ষিত মাইয়া মানুষ তুমি ! হেহ্‌



ওর মুখে 'মাইয়া মানুষ' শুনে , শুধু ওর মুখেই না যে কারো মুখেই এই মাইয়া মানুষ জাতীয় কথা শুনলে আমার গায়ে মনে হয় ফোস্কা পড়ে। আমার ভয়াবহ রাগ হয়ে গেলো ওর এই হেয় করে কথা বলার ধরণ শুনে। আমার গলা উচাবার স্বভাব নেই বলে আমাদের এই ছোট ফ্ল্যাটটা এখনো রাতের নিস্তব্ধতাকে জড়িয়ে রাখে তীব্র ঘৃণার দহনে। ওকে আমার আজ সকালে ঘুম ভাঙার পরের মুহূর্তের কথা আর জানাতে ইচ্ছে করে না যে শুন্য ঘরে ওর জন্য এক নিদারুন হাহাকারে আমি আছড়ে পড়ে মারা যাচ্ছিলাম। কোনও আগপিছ না ভেবে এতটা পথ রোদের মাঝে বাস, মেট্রো করে ওর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সারাটাদিন অভুক্ত ছিলাম। এসবের মানে ও মনে হয় বুঝবেও না। তবুও বলি -



- আমি তোমার হোটেলের ভেতরে যাই নি। বাইরে থেকেই ফোন দিয়েছিলাম তোমার মোবাইলে। কিন্তু মোবাইল বন্ধ পেয়ে হোটেলের নাম্বারে ফোন দিলে তোমার কলিগ মান্নান ভাই ধরে জানালো তুমি বেলা বারোটার দিকেই বের হয়ে গেছো, আমাকে হাসপাতালে নিতে হবে বলে ছুটিও নিয়েছো। আমি তোমার কাজের জায়গায় গিয়ে এমন অন্যায় করে ফেলিনি যে তুমি আমার সাথে গলা চড়িয়ে কথা বলবে। রাত হয়েছে, গলাটা নামালেই বোধ করি ভালো হবে আমাদের জন্য। মিথ্যা বললে একটার পর একটা একটা আসতে থাকে এটা জানার পরেও কেন যে আমরা বেশীরভাগ মানুষেরাই একটা মিথ্যাকে ঢাকতে আরেকটা মিথ্যা বলি কে জানে। রেজাও এর ব্যতিক্রম না দেখা যাচ্ছে। তাই হয়তো আরও এক ধাপ এগিয়ে বলে -



- আমার বাইরে একটা কাজ আছিলো। হালারা ছুটি দেয় তো মাইপ্যা মাইপ্যা। কী করুম , তাই হাসপাতালের কথা কইয়া হোটেল থেইকা বাইর হইছি। বলে সে হাই তোলার ভাব করে, আমাকে বোঝায় এখন ও ঘুমাবে। কথা যা বলার বলে ফেলেছে। টিভিটাও রিমোট চেপে বন্ধ করে দিয়ে শোয়ার প্রস্তুতি নেয়। জিজ্ঞেস করে , ঘুমাইবা না ? রাইত হইছে তো।



- কাল না তুমি ছুটি নিয়েছো ? মুভি দেখবা, গল্প করবা বললা আমার সাথে। মাত্র বাজে রাত সাড়ে এগারোটা। রাত তো সবে শুরু হলো। তোমার রোম্যান্টিক মুড দেখে তো ভাবলাম আজ আমাকে সারা রাতই জাগিয়ে রাখবে বিয়ের সেই প্রথম দিনগুলোর মতো করে, বলে আমি তার দিকে হাসি। ও কী একটু অস্বস্তিতে ভোগে এই কথা শুনে? ওর চোখে চোখ রেখে আমি বোঝার চেষ্টা করি। চেহারা শুকিয়ে ফেললে কেন রেজা ? আমি বিছানা থেকে নেমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়াই চুল আঁচড়াতে।



- এতো রাইতে চুল আঁচড়াও কেন ? লাইট নিভাইয়া শুইতে আসো। বলে ও হাত পা টানটান করে বিছানায় শোয়, কপালের উপরে একটা হাত রেখে চোখটা একটু ঢেকে নেয় যাতে লাইটের আলো চোখে না পড়ে ।



- আমি তো ঘরে থাকলে কিছুক্ষণ পর পর চুল আঁচড়াই তুমি খেয়াল করো নি। একটু পরে লাইট নিভাই রেজা। ব্রাশ করে আসি। তুমি কিন্তু ঘুমিয়ে যেও না, কথা আছে তোমার সাথে। আমি জানি রেজা খুব টেনশনে পড়ে গেছে আমার আচরণে। কারণ শারীরিক ব্যাপারগুলোতে আমি ওর সাথে খুব একটা সাড়া দেই না আর এতেই ও অভ্যস্ত। সাড়া দিয়েই বা কী হবে, ওর কাছে শরীরে প্রবেশ করা মানেই আদর, সোহাগ। এর বাইরেও কিছু আছে তাতে তার নজর তো নেই- ই , নিজে তৃপ্ত তো ব্যাস এবার ঘুমিয়ে পড়ি, এরকম একটা মনোভাব ওর মাঝে কাজ করে বলে ওর সাথে আমার এই দিকটা নিয়ে খুব বিতৃষ্ণা কাজ করে। মেয়েদের শরীরের যন্ত্রণা যে কতটা তীব্র হতে পারে স্বামী কাছে থাকার পরেও যদি স্বামী ঠিকভাবে মনোযোগী না হয়, এ নিয়ে রেজার ধারণা আছে বলে মনে হয় না। ফ্রেশরুম থেকে এসে দেখি রেজা এখনো জেগে আছে, টেনশনে নাকি আমার বিশেষ কোনো কথা শুনতে বুঝতে পারি না যদিও। হুট করেই ওকে জিজ্ঞেস করি -



- বাইরে কী কাজ ছিলো রেজা ? গাড়ির ইনস্যুরেন্সের টাকা দিতে।

- হুম।

আমার হাসি শুনে রেজা কপালের উপর থেকে হাত সরিয়ে আমার দিকে তাকায়। পাশ ফিরে শুতে শুতে বলে , কী ব্যাপার হাসো কেন ?

- হাসি কারণ তুমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছো। গত সপ্তাহেই তোমার ছুটির দিনে আমাকে সাথে নিয়ে গিয়েছিলে ইনস্যুরেন্সের কাজ করাতে। আমার কথা শুনে ও বিছানায় উঠে বসে। জিজ্ঞেস করে -

- তোমার কী হইছে নুহা, বলো তো আমারে। আজকা এতো কথা জিগাইতাছো কেন আমারে?

- লিয়ানার সাথে তোমার বাইরে যাবার দরকার হয়েছে এটা লুকোচুরির কিছু নেই রেজা। তোমাদের কলিগদের মাঝে আশি পারসেন্টই মহিলা। আর একটা জায়গায় কাজ করতে গেলে দুই তিনটা ভালো ফ্রেন্ড হতেই পারে, সেটাও দোষের কিছু না। আমারও কোএডুকেশনে পড়তে গিয়ে আর এর বাইরেও কিছু বন্ধু আছে যারা ছেলে, সেজন্য আমি তো মরমে মরে থাকি না। তুমি কেন অস্বস্তিতে ভুগছো ? আমার কথায় ও জিজ্ঞেস করতেও ভুলে যায় আমি কার কাছ এশুনলাম ও লিয়ানার সাথে বের হয়েছিলো। তবুও ও আমাকে ঘাড় বাঁকিয়ে উত্তর দেয় -



- শুনছোই যখন লিয়ানার সাথে বাইর হইছিলাম তাইলে আবার এইটা নিয়া নকশা করতাছো কেন হুদাই।



- নকশা করছি কারণ তুমি গোপন করছো , রেগে যাচ্ছো , নার্ভাস হচ্ছো। রেজা আমার সাথে মিথ্যে বলো না প্লিজ। আমি খুব ঘৃণা করি এই মিথ্যেটা। তুমি লিয়ানার সাথে কেন , কোথায় গিয়েছিলে সেসব জানার কৌতূহল আমার ছিলো না , শুধুমাত্র তুমি মিথ্যে বলে আমাকে আমার নিজের মতো করে ভাবতে বাধ্য করছো। দুঃখিত তোমাকে রাত জাগিয়ে রাখলাম। ঘুমাও, বলে আমি রুমের বাতিটা নিভিয়ে দেই।



বাসায় ফিরে ঘণ্টা দুইয়েকের মতো ঘুমিয়েছিলাম। তাই এতো তাড়াতাড়ি হয়তো আমার ঘুম আসবে না। রেজা আমার উল্টো দিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়ে আছে। ও ঘুমায়নি জানি আমি। কিন্তু নড়াচড়া করছে না। আমি পারতাম ও ঘরে ফেরার সাথে সাথেই ওকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে, চিল্লিয়ে বাসা মাথায় তুলে ফেলতে, পারতাম কান্নাকাটি করতে। কিন্তু এই শিক্ষাটা আমার হয়নি বলেই আমি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি না, ভাবতে বসি, ধৈর্য ধরি। আর কান্নাকাটির ধাত আমার তেমন নেই, যখন খুব বেশি কষ্ট হয়, চোখটা জ্বালা করে খুব। এই যেমন এখন জ্বালা করছে। মিথ্যা বলা, প্রতারণা আমি সহ্য করতে পারি না একেবারেই। দাম্পত্য জীবনে স্বামী- স্ত্রীর একে অপরের বিশ্বস্ত থাকাটা খুব জরুরী, মন খুলে কথা বলাটা জরুরী বিশেষ করে সাংসারিক বিষয়ে যেসব ব্যাপারে মনমালিন্য হবার সম্ভাবনা থাকে সে বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়ে নেয়াই ভালো। আমি অন্তর্মুখি স্বভাবের মানুষ হলেও সাংসারিক এই ব্যাপারগুলোতে নিজের অবস্থান স্বচ্ছ রাখার নিয়মটা মেনে চলি। রেজা কিছুক্ষণ পর পর এপাশ ওপাশ করছে চোখ বন্ধ থাকলেও আমি টের পাই। আজকে আমি ওর প্রতারনার জন্য হইচই করলাম না ঠিকই কিন্তু ও নির্ঘাত ভেবে নেবে এটা আমার দুর্বলতা, কমজোরি। লিয়ানার ব্যাপারে আরও প্রমাণ দরকার, তাই আপাতত ওকে অল্পের উপর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েই আমি ক্ষান্তি দিলাম।



গতরাতে আমার ঘুমাতে বেশ দেরী হয়েছিলো, বাসায় ফিরে সন্ধ্যায় অসময়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম বলে। সজাগ ছিলাম বলেই টের পেয়েছি রেজার কাল রাতে ঘুমাতে অনেক কসরত করতে হয়েছে। ও বিছানায় যাওয়ার কিছুক্ষণের মাঝেই ঘুমিয়ে যায়। মাঝে মাঝে হালকা নাকও ডাকে। নাক ডাকার আওয়াজ হঠাৎ বেড়ে গেলে কখনো সখনো গায়ে ধাক্কা দিলে নাক ডাকা বন্ধ হয়। ও যে নাক ডাকে ও বিশ্বাস করতে চায় না। একবার বলেছিলাম -

- দাঁড়াও, তোমার নাক ডাকার আওয়াজ আমি রেকর্ড করে শোনাবো। শুনিয়েছিলামও , কিন্তু বিশ্বাস করেনি। উল্টো বলেছিলো -

- নিজে নাক ডাইকা তুমি আমার নাম দিতাছো। বলে হো হো করে হাসতে শুর করে। প্রথমে শুনে আমি একটু অবাক হয়েছিলাম অবশ্য, বলে কী আমি নাক ডেকে রেকর্ড করেছি ! পরে ওর হাসি দেখে আমিও হেসে ফেলি।



অনেকবার এপাশ ওপাশ করে গতকাল রাতে ও শেষ পর্যন্ত ঘুমাতে পেরেছিলো। একবার দুইবার আমার গায়ের উপর হাত রেখেও সরিয়ে নিয়েছে, কাছে এসেও শুয়েছিলো। আমি ওর দিকে ঘুরে না শুলেও টের পেয়েছিলাম। কীসের টেনশনে ও ঘুমাতে পারছে না কে জানে! ও সবসময়ই বলে, ঘুম ঠিক তো সব ঠিক। আর সে ব্যক্তির এক রাত ঘুম না হওয়া,বিছানা যাওয়ার পরেও এপাশ ওপাশ করা একটা বড় ব্যাপারই বটে!

আমার কতো রাতে চোখ লেগে এসেছিলো জানি না কিন্তু একটা খুঁটখুঁট শব্দে ঘুমটা ভেঙে যায়। এমনিতেই আমার ঘুম পাতলা, তার উপর এই সকাল বেলাতেই ঘুম ভেঙে যাওয়া আরও বিরক্তিকর। আমি শব্দের উৎস খুঁজতে চোখ আধো আধো খুলে দেখতে চেষ্টা করি। দেখি রেজা বারান্দার দরজা খুলে শাটার তুলে দিয়েছে বাইরের ঝকঝকে সকালের রোদে ঘরের উজ্জ্বলতা বাড়াতে। যার রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে যাবার অভ্যাস, সে ছুটির দিনেও একই নিয়মে ঘুম থেকে জেগে যাবে স্বাভাবিক। উফ্‌ ঘুমের তাড়নায় আমার চোখ এখনো জ্বলছে। এই ঘুমটা অনেক আরামের। চোখে আলো এসে পড়াতে আমি বালিশের পাশ থেকে ওড়নাটা টেনে নিয়ে চোখের উপরে রাখি। রেজাকে বলি পর্দাটা নামিয়ে দিতে। ও পর্দা নামিয়ে দিতে দিতে বলে,

- আচ্ছা। তুমি আরেকটু ঘুমাও। আজকে আমি নাস্তা বানাইয়া তোমারে খাওয়ামু।

-উমমম! বানাও কিন্তু শব্দ করো না বেশি। দিলে তো আমার কাঁচা ঘুম ভাঙিয়ে। রান্নাঘরের দরজাটা একটু আটকে নিও। বেডরুমেরটাও বন্ধ করে দিও। ও দরজা বন্ধ করতে করতে বলে যায় -

- আমার তো ঘুম ভাঙছে সেই কোন সকালে কিন্তু তোমার না ঘুমের ডিস্টার্ব হয় তাই দেরী করে বিছানা থেকে নামছি। রেজার কথা শুনে ঘুম ঘুম অবস্থাতেও আমার হাসি পায়।এখানে এসে ঘুমাবার সময় কোলবালিশের অভাব অনুভব করি। কোলবালিশ নিয়ে ঘুমাবার মজাই আলাদা। অবশ্য এখানেও রেজার থিউরি আছে। থিউরিটা বলা যায় মুরুব্বীদের মতো -



- বিয়ার পরে মাইয়াদের আবার কোলবালিশের কাজ কী জামাই থাকতে! ভালো হইছে এই দেশে কোলবালিশ নাই। অবশ্য তোমারে দিয়া ঠিক নাই, দেশ থেকে কেউ আসতাছে এইখানে শুনলে পারলে তারে দিয়াও দেখা যাইব তুমি বালিশ আনাইবা। আমারে ধইরা শুইলেও তো পারো!



ঘুমের সময় নিজের আরামদায়ক পজিশনে ঘুমাতে হয় এই ব্যাপার ওকে বোঝানো মানে সময় নষ্ট। স্বামী-স্ত্রীর টিপিক্যাল নিয়মেই ও চলতে বেশি অভ্যস্ত, তবে সেটা নিজের সুবিধা অনুযায়ী শুধু। আমার এসব ভাবতে ভাবতেই আবার চোখ লেগে আসছিলো। ট্রে নিয়ে শব্দ করে রেজা আবার রুমে ঢুকলো বোধ হয়। হঠাৎ শব্দে ভয়ে আমার বুক কেঁপে যায়। রেজার মাথার বালিশটা বুকের কাছে চেপে ঘুমিয়েছিলাম, ও এসে সেটা টেনে সরায়। বলে -

- ওঠো। সকাল দশটা বাজে। খিদা লাগছে তো আমার।

- তুমি খাও না রেজা। আমি আরেকটু ঘুমাই, বলে আমি আবার উপুড় হয়ে শুই বালিশে মুখ গুঁজে।

- এতো বেলা কইরা ঘুম থেকে ওঠো দেইখাই তুমি রাইতে ঘুমাইতে পারো না। ওঠো, ওঠো বলে ও আমাকে টেনে বিছানায় উঠিয়ে বসায়। উইঠা ফ্রেশ হইয়া খাইয়া নেও। তোমারে নিয়া বাইরে যামু।



বিছানায় উঠে বসার পরেও আমি ঘুমে ঢুলতে থাকি। রেজার তাড়া খেয়ে ফ্রেশ রুমের দিকে ঝুলতে ঝুলতে হেঁটে যাই। সকালে ঘুম থেকে উঠলে আমার মেজাজ ঠিক থাকে না। নিজের মুডে ফিরে আসতে কিছুটা সময় লাগে। ফ্রেশ রুম থেকে বেরিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে একটু উঁকি দেই দেখতে রেজা রান্নাঘরের কী অবস্থা করে রেখেছে। রান্নাঘরের দরজাটা খুলে দেই যাতে ডিম ভাজার গন্ধটা বেরিয়ে যায়। রান্নাঘরের পাশেই বারান্দাটা। টবের গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে মনটা একটু একটু করে ফুরফুরে হয়ে যায়। আজকের আবহায়াওটা মনে হয় সুন্দর, বাইরে কী সুন্দর নীল আকাশ। একেই কী বলে শরতের নীলাকাশ ! এখন বাংলা কোন মাস কে জানে! মা'কে জিজ্ঞেস করতে হবে ফোন করে। ভেতরের রুম থেকে রেজার গলার আওয়াজ পাই, আমাকে ডাকছে। ঘরে গিয়ে দেখি বিছানার উপরে একটা তোয়ালে বিছিয়ে সে নাস্তা সাজিয়ে আমার অপেক্ষায় করছে। বিছানায় বসে খাওয়াটা আমার একটুও ভালো লাগে না। খাবারের গুঁড়া যত সাবধানেই খাওয়া হোক না কেন বিছানায় পড়বেই। চুলটা আঁচড়ে বিছানায় এসে বসি পা তুলে। দেখি আমার জন্য আজকে স্পেশাল কী নাস্তা বানিয়েছ বলে আমি প্লেটের ঢাকনাটা খুলি। সস্যেজ হালকা ভেজে চিজ দিয়ে পাউরুটি, দুই স্লাইস করে টমেটো আর শসা আর মালটার জুস। অনেকদিন পর মনে হয় ঘরে বানানো কোনো খাবার খাচ্ছি, রেজাকে জানাই।

- হ তুমি তো এক নাম্বারের অলস। নাস্তা বানাইয়া খাইতে হইবো এই ডরে তো না খাইয়া থাকো, নাইলে বারে গিয়া খাইয়া আসো। সস্যেজের ভাজাটা ঠিক আছে না, নুহা ?

- হুম

- তোমার জুসে কিন্তু হালকা কইরা বিট লবণ দিছি। তুমি তো টক খাইতে পারো না

- বাব্বাহ্‌ ! এতো খাতির যত্ন! ঘটনা কী। আমি হাসতে হাসতে বলি। মালটার জুসে চুমুক দিয়ে দেখি খেতে কেমন হলো। নাহ সকালের নাস্তাটার জন্য রেজাকে একটা ধন্যবাদ দিতেই হয়। আমার দিকে রেজা তাকিয়ে বলে, চা কিন্তু তুমি বানাইবা। সকালের নাস্তায় চা না খাইলে মনে হয় দিনটাই শুরু হইলো না। আমি মাথা নেড়ে সম্মতি জানাই হাসি মুখে। খাবার শেষে সব গুছিয়ে রাখাটা বেশ ঝামেলার। ঘরে এসে ঘরটাও ঝাড়ু দিয়ে ফেলি বিছানাটা ঝাড়ার সাথে সাথে। রেজাকে জিজ্ঞেস করি -



- আমাকে নিয়ে বাইরে কোথায় জানি যাবার কথা বললে, তখন ভালো মতো শুনিনি ঘুমের মধ্যে।

- ভিক্টোরিয়া যামু বাজার করতে। আজকা গরুর মগজ দিয়া ভাত খাইতে মনে চাইতাছে আর দেশী গোল গোল বড় রসওয়ালা লেবু। লও যাইয়া দেখি বাংলাদেশ থেইক্যা টাটকা কী কী সবজি আইলো। আর তোমার ঘরের আর কি টুকিটাকি জিনিস লাগবো লিস্টি কইরা নেও। পরে ভুইল্যা যাইবা।



আজ দেখি রেজা একের পর এক চমক দিচ্ছে। গতকাল রাতের ঘটনা বা লিয়ানা ঘটিত ব্যাপার স্যাপার ভুলে গেলো নাকি এরই মধ্যে। কেমন সহজ স্বাভাবিক যেন কিছুই হয়নি কাল! যখনকার ঘটনা তখনই ঝেড়ে ফেললো নাকি! বেশ ভালো। এভাবে মিথ্যে বলা আর চালাকির অভ্যাসটা ঝেড়ে ফেললেও ভালো হয়। একদিন সময় সুযোগে প্রাসঙ্গিক ভাবে ওকে জানিয়ে দিবো কথাটা মনে মনে ভাবি আমি। কিন্তু মুখে সেটা না বলে ওকে জানাই -



- আচ্ছা সে না হয় যাওয়া যাবে। এর আগে অন্য কাজ আছে, চলো সেটা করি

- শোবার ঘর থেকে টিভি সরিয়ে পাশের ঘরে নিতে হবে। আজ থেকে শোবার ঘরে খাওয়া, টিভি দেখা পুরা বন্ধ। আজকে রেজা অন্য যুক্তি দেখাবার রাস্তায় না গিয়ে একবারেই মেনে নিলো আমার কথা। অথচ এর আগেও কয়েকবার ওকে বলে এই কাজ করাতে পারিনি আমি। রেজা কেন যে এতো বড় বাসা নিয়েছে কে জানে। তবে অন্য এলাকার চেয়ে আমাদের এখানে বাসাটা তুলনামূলক সস্তাতেই পেয়েছি। মাত্র সাড়ে আটশো ইউরো। অথচ শবনম ভাবীরা যে দুই রুমের বাসায় থাকে সব মিলিয়ে তাদের প্রায় এগারশো ইউরো পড়ে যায়। তাদের ভাড়া বেশি হবার কারণ সম্ভবত ওরা কমার্শিয়াল এরিয়াতে থাকে বলে। আমাদের পাশের রুমটায় রেজা তেমন যায়ই না ধরতে গেলে। এই রুমে ছোট একটা বুক শেলফ আছে আমার। দেশ থেকে আসার সময় জামা কাপড় আনার পাশাপাশি বইও এনেছিলাম বেশ কিছু। পরবর্তীতে এখানকার পরিচিত কেউ দেশে গেলে তাদের দিয়েও আনিয়েছি কিছু বই। দুই সিটের একটা আর আরেকটা সিঙ্গেল ছোট কাউচ আছে এ রুমটায়, সাথে একটা গোল আয়নার সেন্টার টেবিল আর একটা ইজি চেয়ার। এক পাশে কম্পিউটারের টেবিল। আমাদের আগে এ বাসায় যারা ভাড়া ছিলো তারা বাসা ছেড়ে যাবার সময় দুইটা পেইন্টিংস ফেলে গিয়েছিলো যা এখনো দেয়ালে ঝুলছে।



চলবে

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:২৮

নেক্সাস বলেছেন: প্রথম কমেন্ট। চলতে থাকুক নুহা সিরিজ....

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হুম চলবে

২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২

সোনালী ডানার চিল বলেছেন:
দাম্পত্যজীবনের খুটিনাটির চমৎকার বর্ণনার সাথে
কাহিনীও জমছে বেশ।
আমার তো ভালো লাগছে পর্বগুলো।

সাথে আছি শুভকামনা সমেত................

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া

৩| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫০

মামুন রশিদ বলেছেন: কাহিনী জমে উঠছে ক্রমশ.. নুহা কথা বলা শুরু করেছে । দেখা যাক কি হয় ।


চলতে থাকুক :)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:২৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নুহা তো সারাক্ষণই নিজের সাথে কথা বলে :||

৪| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪

আমি ইহতিব বলেছেন: আজ আর দেরী হয়নি আপু, নূহা ১২ পড়ে ফেললাম।

বেশীরভাগ মেয়েই মনে হয় এমন, অশান্তির ভয়ে সব মুখ বুজে মেনে নেয়, হাসিমুখে সংসার করে যায়। নিজের মনের মধ্যে কষ্টের পাহাড় জমতে জমতে হঠাৎ একসময় তা ভেঙ্গে পড়ে।

নূহার সেই প্রতিবাদী চেহারা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম, জানিনা আপনি নূহাকে কেমন করে উপস্থাপনের চিন্তা করছেন ভবিষ্যতে। সাথেই আছি।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নিজের ভেতরে ক্ষোভ জমতে জমতে একদিন সেটা ফেটে পড়তে বাধ্য। দেখা যাক কী হয়

৫| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

চলুক

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার ফাঁকিবাজিও চলুক সেই সাথে

৬| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৫

শ্যামল জাহির বলেছেন: কিন্তু ও অন্য কিছু জিজ্ঞেস না করে কিংবা কোনো জবাবদিহিতা না করে উল্টো ক্ষেপে ওঠে। ওর ভঙ্গী দেখে আমার হাসি পায়। বাহ্‌ একেই বলে আসল পুরুষ, সিংহের মতো গর্জন।

আমি পারতাম ও ঘরে ফেরার সাথে সাথেই ওকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করতে, চিল্লিয়ে বাসা মাথায় তুলে ফেলতে, পারতাম কান্নাকাটি করতে। কিন্তু এই শিক্ষাটা আমার হয়নি বলেই আমি চাইলেই অনেক কিছু করতে পারি না, ভাবতে বসি, ধৈর্য ধরি।

দাম্পত্য জীবনে স্বামী- স্ত্রীর একে অপরের বিশ্বস্ত থাকাটা খুব জরুরী, মন খুলে কথা বলাটা জরুরী বিশেষ করে সাংসারিক বিষয়ে যেসব ব্যাপারে মনমালিন্য হবার সম্ভাবনা থাকে সে বিষয়গুলো পরিষ্কার হয়ে নেয়াই ভালো।

দেয়ালে ঝুলা পেইন্টিংস এর মত রেজার দাম্পত্য নামক কৃত্তি্ম দেয়ালে ঝুলে আছে নুহা!
দেখি কী হয়, সাথেইতো আছি!

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: অনেকেই জেনে বুঝে, না চাইলেও ঝুলে আছে।
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

৭| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৭

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: বিয়ার পরে মাইয়াদের আবার কোলবালিশের কাজ কী জামাই থাকতে! =p~ =p~ =p~ =p

বর্ষপূর্তির অভিনন্দন আপু । :)
ভাল থাকবেন ।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তুমিও ভালো থেকো মাহমুদ

৮| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:০৭

শামীম সুজায়েত বলেছেন: সত্যি খুব দারুণ লাগছে নুহা।
ভাল হচ্ছে লেখার ধরণ।
লেখা পড়ছি, আর থেমে থেমে ভাবছি। মনে হচ্ছে টেলিভিশনের সামনে বসেই দেখছি নুহা ।

ভাল থাকবেন ।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ শামীম ভাই

৯| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২২

শামীম সুজায়েত বলেছেন:
ইংরেজিতে যাকে বলা হয় " বিগ ব্রাদার " ।এর কয়েকটা পর্ব আমি দেখেছি ঘরের কাজকর্মের ফাঁকে ফাঁকে, আমার ভালো লাগেনি।

। পরে " দিন।

তা না হলে এই লাইনটা "এর কয়েকটা পর্ব আমি দেখেছি" পড়া যাচ্ছে না। আমিতো কপি করে "ইনভাইটেড কম্ " উঠিয়ে পড়লাম।

অপর্ণা, বলুন সব পাঠক কিন্তু এমন করবে না?

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সবার মানসিক গঠন তো এক নয়। কেউ কেউ পরামর্শ দেয়াকে ভালো চোখে দেখেন না। এটাও ঠিক।

পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ।

১০| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৫৭

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই পর্বে কথোপকথনটা ভালো লেগেছে। নিতান্ত শব্দে স্বামী-স্ত্রীর স্বাভাবিক ভঙ্গিটা ফুটে উঠেছে। এই পর্ব আগেরটার চেয়ে বড় হয়েছে- এজন্যে খুশি হয়েছি।

'নুহা' বলে রেজা ডাকল অনেক দিন পর। নাকি আজকেই চোখে পড়ল? যাই হোক, ক্রমশ ভালো লাগছে নুহাকে।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এবার ইচ্ছে করেই এই পর্বটা বড় করেছি। আশা করছি নেক্সট পর্ব গুলোও বড় হবে।
ধন্যবাদ শঙ্কু

১১| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২০

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: কাহিনী জমে উঠছে ক্রমশ.. নুহা কথা বলা শুরু করেছে । দেখা যাক কি হয় ।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আচ্ছা। তোমার ৫ মিনিট পর পোস্ট না পড়ার যে রোগ শুরু হইছে সেটা দূর হোক। ভালো থেকো

১২| ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪১

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: আরে তোমার তো দেখি এক বছর হইসে দেখা যাই! খাওয়াইবা কবে? তুমি আমার এক মাসের জুনিয়র দেখা যায়! এখন থিকা সেলাম দিবা, নাইলে পোস্ট নির্বাচিত পাতা থেকে নামায়ে দিমু! :P

নুহা এই রেজাটার সাথে আছে কেন? সময় দেয় না, কিছু না, কই কী যায়, মিথ্যা কয়, তার চেয়ে নুহা পালায়ে যাক কোনো জলপাই বাগানের হাত ধরে!

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: জলপাই বাগানের রাস্তা নুহাকে চেনাতে হবে দেখছি। তোমার কমেন্ট গুলো খুব মজার।

আমার পোস্ট নির্বাচিত পাতা থেকে নামাইয়া দাও কোনও সমস্যা নাই কিন্তু আমি যখন তোমার পোস্ট মুছে দিবো তখন কান্দাকাটি কইরো না। :P

১৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:০০

ভিয়েনাস বলেছেন: আজকের পর্বটা পড়ে ভালো লাগলো। নুহা আর রেজার মতো আমার মন টাও ফুরফুরে হয়ে গেল :)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হাহহাহা মন ভালো রাখা জরুরী ব্যাপার

১৪| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:২১

মামুন রশিদ বলেছেন: প্রথম বর্ষ পূর্তির অভিনন্দন আপু !:#P


খাওয়াবেন কবে ? :-* :-B

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:২৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কষ্ট করে এক বছর লিখলাম, কই আপনারা খাওয়াবেন আমাকে সেটা না করে উল্টো আমার কাছে দাবী করছেন ! আগে পুরনো সব পোস্ট পড়ে পড়ে আসেন, তারপর বিবেচনা করবো :P

১৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: পড়ে গেলাম নুহা’র দ্বাদশ পর্ব। যেন নুহা আর রেজার ছায়াসঙ্গী হয়ে ওঠেছি :)

শুভেচ্ছা, অপর্ণা মম্ময় :)

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভাইয়া আপনাকেও শুভেচ্ছা

১৬| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

অদৃশ্য বলেছেন:





রেজার সবসময় লোকাল ভাষা ব্যবহারের ব্যপারটাতে পাঠক হিসেবে আমি কিছুটা বিব্রত হচ্ছি...

যেহেতু রেজা সম্পর্কে অনেক কিছুই এখনো জানা হয়নি তাই তার ভাষাগত ব্যপারটা নিয়ে লেখককে শুধু টাচ করে গেলাম... হয়তো মাঝে মাঝে রেজার কথা বলার ধরনটা বদলে গেলে আরও ভালো লাগতো... পাঠক হিসেবে আমি এমনটাই ভাবি...

রেজা কি ভীত হয়ে পড়লো গতদিনের ঘটনা নুহা জেনে ফেলায়... সে কি ভেতরে দগ্ধ হচ্ছে তাই সে সেই আলোচনাকে দমিয়ে দিয়ে নুহার মনযোগ অন্য দিকে নিয়ে যাচ্ছে... একটি পজিটিভ ফিলিংস তৈরী করবার প্রত্যয় নিয়ে... সেটা অবশ্য শুধুমাত্র লেখকই বলতে পারবেন...

গালে হাত দিয়ে বসে আছি... দেখছি সামনে আরও কি আসছে...

শুভকামনা...

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: শুধু রেজা কেন , রেজার জায়গায় যে কেউই থাকুক না কেন সে কিছুটা হলেও দগ্ধ হবে তার চুরি বৌয়ের কাছে ধরা পড়ে গেলে। তাই হয়তো নুহার মনোযোগ অন্যদিকে সরাতে সকালের নাস্তা থেকে শুরু করে বাজার করা, ছুটি নেয়া কাজ গুলো করেছে। আর রেজার লোকাল ভাষা ইউসের ব্যাপারটা ভেবে দেখবো।

আপনার জন্যও ভাইয়া শুভকামনা থাকলো

১৭| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:০৯

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ১ বছর ২ দিন !
আগে দুপুরের খাবার খাবো(পোলাও , ইলিশ মাছ , গরুর মাংস ) , তারপর বোরহানী খাবো , তারপর মিষ্টি !

কবে , কোথায় কিভাবে ঠিক করে জানিয়ে দিন !

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: তুমি অর্ডার দিতে থাকো, অ্যাম কামিং ;)

১৮| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আমিও ভেবে পাই না নুহার এত্ত এত্ত নকশা করবার দরকারটা কী! রেজা ফটকাটা বাইরে কী করে আর লিয়ানার সঙ্গেই বা কী করে তা নিয়ে বোকা নুহাটার এত মাথা ঘামানোর কী দরকার?

মানুষ তো ঘরেও ভাত রুটি যাই হয় খায় আবার বাইরে গিয়ে চটপটি ফালুদা ঝালমুড়ি-টুড়ি কত অখাদ্যই খায়। এতে তো ঘরের ভাতগুলা শুকিয়ে আবার চাল হয়ে যাচ্ছে না।

অনেকে ব্যাপারগুলো মেনে নেয়। কেউ কেউ মেনে না নিলেও নুহার মতো এত্ত এত্ত নকশা করে। আরে বাপু ঝামেলার সঙ্গে বসবাসের চাইতে ঝামেলা দূর করে দিলেইত্ত হয়।

চলুক নুহা। আহা বেচারি নুহা!

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সব মানুষ তো সমান মানসিকতার না। বাইরের ঝালমুড়ি, ফুচকা নুহার পছন্দ না তাই হয়তো সে নকশা বেশি করে। বিয়ের সম্পর্কটা চাইলে অনেকে খুব সহজে হুট করে ভেঙে দিতে পারে না সমাজ ব্যবস্থার কারণে। ইউরোপে থাকার মানেই এই না যে সে তার মূল্য বোধ ফেলে দিয়ে আসছে, বাংলাদেশ কে ফেলে আসছে।

আসলেই নুহা একটা বেচারি ! :P

১৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

স্বপনচারিণী বলেছেন: রেজা ভাইয়ের আপ্যায়নে(ধরা খাওয়ার পর) আমি অভিভূত।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হাহহাহাহা , মনে করেন পুলিশের একদিন এটা !

২০| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫০

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
এই পর্বটা অনেক বড় হয়েছে সেই সাথে রেজার সাথে নুহার ইন্টারেকশন আগের গুলোর চাইতে বেশি হয়েছে। ভাল লাগল। একটু পিছিয়ে আছি ব্যস্ততার কারনে, তবে সাথে আছি। শুভেচ্ছা রইল।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:১৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পর্ব ছোট হয় দেখেই তো আপনারা নোটিশ দেন, তাই একটু বড় করে দিলাম।
সমস্যা নেই, ব্যস্ততা কমলেই আইসেন এই বাড়িতে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.