নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

নুহা-১৪

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৭

নুহা-১৩



অবশ্য বিয়ের পর জেনেছি রেজা ডিগ্রিতে ভর্তি হয়ে ক্লাস করেনি একদিনও, জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছে ইতালিতে। এতো পইড়া কী হইবো, যার অনেক টাকা আছে, তারে কী কোনোদিন কেউ জিগায় তার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? আর টাকা দিয়া যেখানে সার্টিফিকেটই কিনতে পাওয়া যায় সেখানে কে আর সময় নষ্ট কইরা পড়াশুনা করবো বলো ? এমনটাই বলেছিলো রেজা তার পড়াশুনা করতে না পারার কারণ হিসেবে। আবার এটাও ঠিক বিয়ের পর থেকে আরাম আয়েশী জীবনে অনেকটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি, তাই বলে মনের বিরুদ্ধে আপোষ করে চলাটা ভীষণ শক্ত হয়ে যায় কখনো কখনো। কতটা সময় এসব ভেবে ভেবে পার করেছি জানি না, হয়তো মিনিট দশ কী পনেরো। রেজা গা এলিয়ে পড়ে আছে আমার পাশে। স্বামী-স্ত্রী আদর সোহাগ কী একতরফা হয়ে যাচ্ছে না? এমনটা ঘন ঘনই হচ্ছে। যদিও শরীরই যাদের কাছে মুখ্য তার চোখে এসব ধরা পড়বে না,তারা শুধু জানে উপগত হতে। ঘুমটা আর হলো না, ভাবছি গোসলটাই সেরে নেবো। রেজাকেও বললাম ফ্রেশ হয়ে এসে শুতে। আমার কথায় কান না দিয়ে বরং চাদরে মুখ ঢাকতে ঢাকতে বললো - এখন আরামের ঘুমটা নষ্ট কইরো না তো! ঘুমের থেকে উঠে করবো নে গোসল। তুমিও ঘুমাও।



হাহ্‌ আমার আর ঘুম। বিছানা থেকে নেমে ওয়ারড্রব থেকে জামাকাপড় নেই। মাথা ব্যথা করছে। গোসল সেরে দেখি এক কাপ কফি খেতে হবে। অনেকদিন গান শুনি না, আজ গান শুনবো।



গোসল সেরে আমি সরাসরি পাশের রুমে চলে আসি, শোবার রুমে না ঢুকে, রেজা ঘুমাচ্ছে,ওর যাতে ডিস্টার্ব না হয় আমার টুকটাক প্রসাধনের কাজে। সাইনাসের সমস্যা বলে ডাক্তার বলে দিয়েছে গোসলের পর চুল ড্রায়ার দিয়ে শুকিয়ে নিতে। এখন ঐ রুমে গেলেই ড্রায়ার চালাতে হবে আর সে শব্দে রেজার ঘুম নষ্ট হবে। শরীরটা এতো ক্লান্ত লাগছে যে এখন আর ইচ্ছে হচ্ছে না রান্নাঘরে ঢুকি কফি বানানোর জন্য। এ রুমে আমার গল্পের বইগুলো রাখা বলে আমি এর নাম দিয়েছি লাইব্রেরী রুম। এ রুম আর আমাদের শোবার রুমের বারান্দা দুটোই একসাথে লাগোয়া। রুমে ঢুকে বারান্দার দিকের দরজাটা খুলে দেই। দরজা লাগিয়ে রাখার পরেও কোত্থেকে যে এতো ধুলোবালি এসে জমা হয় কে জানে ! বুকশেলফের উপরে, কাঁচের সাইডে সাইডে ধুলো পড়ে আছে। গোসল সেরে এসে আর ইচ্ছে করছে না এ রুমের ঝাড়পোছের কাজ শুরু করতে। কম্পিউটারের টেবিলটাও পরিষ্কার করা দরকার ছিলো, কম্পিউটার অন করতে করতে ভাবি। আচ্ছা করবো নে এক সময়। এখন আমার গা জুড়ে রাজ্যের আলস্য। আমার পছন্দের গানের ফোল্ডারটা ওপেন করে কিছু গান সিলেক্ট করে দেই যাতে বারবার উঠে বদলাতে না হয়। বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া গান একেকটা কালেক্ট করেছি একেক সময়ে। আমার আবার একই গান বারেবারে রিওয়াইন করে শোনার অভ্যাস আছে। আমার মা এবং রেজা দুজনেই বলে - এটা তোমার অভ্যাস না, বলো যে বদভ্যাস। অভ্যাস বা বদভ্যাস যাইই হোক না কেন এক গান আমার বারবার শুনতে ভালোই লাগে যদি কোনো গান আমার মাঝে দাগ কেটে যায়। হয়তো এভাবে শুনতে শুনতে কোনো কোনো গানের লিরিক আবার কোনটার সুরই মুখস্থ হয়ে যায়। একটা মজার ব্যাপার হলো, আমি বারবার একই গান শোনার ফলে সেই গানের সুর মাঝে মাঝে মাকেও দেখছি গুনগুন করে ভাঁজতে। ব্যাপারটা এখন মনে করে আবারো আমার হাসি পেলো। ইজিচেয়ারে হেলান দিয়ে দুলে দুলে গান শোনার মজাই আলাদা। চোখ বন্ধ করে আমি এখন গান শুনছি, লো ভলিয়ুমে।



" এই মোম জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে

এসো না গল্প করি ... "



- আরতি মুখোপাধ্যায়ের এই গানটা আমার এতো প্রিয় কী বলবো। খুব রোম্যান্টিক একটা গান। বিয়ের পর পর যখন রেজার সাথে গল্প করতাম, এই গানটা বেশিই শোনা হতো। তখন ও হাসি হাসি মুখে শুনতো, ভালো না লাগলেও হয়তো শুনতো। যখন আমি বলতাম, গানটা কত সুন্দর তাই না?

ও বলতো - তাই ! হুম সুন্দর!



- কল্পনা করোতো দৃশ্যটা! জ্যোৎস্নার আলো গায়ে মাখিয়ে কত সুন্দর আহ্বান একজন প্রিয় মানুষের জন্য একজন নারীর, অনুভব করতে পারো রেজা ?



- হুম। ভালোই তো খারাপ না । কিন্তু বাংলা গান শুনলে আমার ঘুম চলে আসে বুঝলে? কিছু মনে করলে না তো !



তখন রেজা আমার সাথে কথা বলার জন্য লোকাল ভাষাটা ব্যবহার করতো না। নাহ কিছু মনে করার মতো এতো দ্রুত সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারি না। আমার যে কাউকে বুঝতে, তার কাজের ধরণে হিসেব মিলাতে সময়ই লাগে। গাড়িতে বাংলা গানের সিডি রাখা হয় না কারণ রেজা শুনতে চায় না। হিন্দি গান ওর পছন্দ, আমারও হিন্দি গান পছন্দ তবে সফট মিউজিক। রেজার কাছে রবীন্দ্রসংগীত মানেই নাকি প্যানপ্যানানি। তাই যে কোনো বাংলা গানের প্রতিই ওর অনীহা চলে এসেছে। এই তো গেলো নববর্ষে ওকে বলেছিলাম আজকে ছুটি নাও, চলো বাইরে কোথাও ঘুরে আসবো কিংবা বাঙালিদের যে নববর্ষ উদযাপনের যে মেলা হয় ওখান থেকে বিকেলে শবনমকে সাথে নিয়ে না হয় বেড়িয়ে আসবো। ও উত্তর দিলো - হুম খেয়ে দেয়ে আর কাজ নাই, সারা মেলা জুইড়া প্যানপ্যানানি গান চলবো আর আমি যাবো ঐ জায়গায়। অন্য কোথাও হইলে বলো বিকালে ছুটি নিয়া যামুনি ঘুরতে। মাঝে মাঝে ওর কথাবার্তা শুনেলে হাসি পায় রাগ করতে গিয়েই। ইজিচেয়ারের দুলুনির তালে তালে কেমন ঘুম ঘুম লাগতে থাকে। আমি দুলতে থাকি গান শুনতে শুনতে, তলিয়ে যেতে থাকি ঘুমের রাজ্যে। আহ্‌ ঘুমোতে কী ভীষণ শান্তি। গত কয়দিনের নির্ঘুম রাত্রিগুলোর দেনাপাওনা নিজেকে বুঝিয়ে দিতে আমি এক সময় ঘুমিয়ে পড়লেও রেজার ডাকে এক সময়ে ঘুম ভাঙে আমার। কত সময় ঘুমিয়েছি বুঝতে পারি না। বাইরে সূর্য ডুবে অন্ধকারের রঙ ছড়িয়েছে ছিটেফোঁটা ইতিমধ্যেই। ঘুম থেকে এ সময় ওঠার পর সবসময়ই আমার কেমন বিষণ্ণ লাগে, বাংলাদেশের কথা মনে পড়ে, মা আর বাবার কথা মনে পড়ে। খুব কান্না কান্না পায়। রেজা গায়ে মৃদু ধাক্কা দেয়, বলে - ওঠো। সন্ধ্যা হয়ে গেছে।

- হুম , উঠছি বলে আমি আরও কিছুক্ষণ হেলান দিয়ে থাকি চেয়ারে। রেজা রুমের লাইট জ্বালিয়ে টিভি অন করে। টিভিটা আজ দুপুরেই এ ঘরে আনা হয়েছে। এখন ও একটানা টিভি দেখবে। আমি উঠে কম্পিউটার সাট ডাউন করে দেই।একটু আড়মোড়া ভেঙে ফ্রেশ রুমের দিকে যাই।





ঘুম ভাঙার পরেও ঘুমের আমেজ কাটতে সময় লাগে আমার। চোখে মুখে পানি দিয়ে মনে হলো দাঁতটাও ব্রাশ করে নিলে ভালো হয়। কেমন জানি লাগে ঘুম ভাঙার পর মুখের ভেতরটা। ব্রাশে টুথপেস্ট লাগিয়ে দাঁড়িয়েই থাকি বেসিনের সামনে। বেসিনটার সাথে সুন্দর স্কয়ার সাইজের আয়না লাগানো আর তার দুই পাশে লম্বা মতো দুইটা বক্স। ওখানে আমার, রেজার ব্রাশ, শ্যাম্পু, সাবান, বাথরুম পরিষ্কারের মেডিসিন ইত্যাদি জিনিস ছাড়াও রাখা আছে কাপড় ধোয়ার লিকুইড। ঘরে আমাকে কাপড় ধুতে হয় না এটা একটা সুবিধা। রেজা আমাদের কাপড়চোপড় থেকে শুরু করে বিছানার চাদর, ভারী, পাতলা সব ধরণের কম্বল সব হোটেল থেকেই ক্লিন করে আনে। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছি মনে হয় মিনিট পাঁচেক হয়ে গেছে। প্রচণ্ড আলসেমী লাগছে ব্রাশ করতে। টুথপেস্ট দেখার মাঝে কোনো সৌন্দর্য আছে এমন না, তারপরেও ইচ্ছে করছে না ব্রাশটা দাঁতে লাগাতে। বেসিনের আয়নাটার উপরের দিকে ছোট ছোট দুইটা লাইট আছে। আমি সে দুইটাও জ্বালিয়ে দেই। আমার চোখে মুখে উজ্জ্বল আলো এসে পড়ে আর ফ্রেশরুমের মেইন লাইটটা অফ করে দেই। এইবার বেশ শান্তি লাগে, অকারনেই। একটা ছেলেমানুষি আনন্দ বলা যায়। বেসিনের কলটা ছেড়ে আমি আয়নার লাইটের আলোতে নিজের চেহারা দেখতে থাকি। অনেকদিন পর মনে হয় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজেকে দেখছি। সবাই বলে আমার চেহারায় নাকি আমার বাবার সাথে অনেক মিল আছে গায়ের রঙ বাদে। বাবার গায়ের রঙ কালো আর আমারটা ফর্সা। রেজা ফান করে বলে কাপুচিনোর মতো তোমার গায়ের রঙ। বাবার মতোই আমার নাকটা লম্বা, চোখ গুলোও বড় বড়। আর কী আছে আমার চেহারায় দর্শনীয় দেখার জন্য মুখটা আয়নার দিকে আরেকটু এগিয়ে নেই। চোখের দিকে তাকিয়ে থাকি আয়নার ভেতর দিয়ে, খুব কাছাকাছি। আমার চোখ দেখতে তেমন স্পেশাল কিছু না, শুধু টানা টানা, কাজল দিলে আরও লম্বা লাগে এই আর কী! চুলগুলো খুব একটা লম্বা না হলেও সিল্কি। আচ্ছা চুলগুলো কী একটু ছেঁটে আসা দরকার পার্লারে গিয়ে কিংবা কালার করে আসবো। এমনিতে আমি সাজুগুজু করিই না বলতে গেলে। তবে ছোট ছোট যত্নআত্তি নিজের জন্য মনে হয় করা উচিত। পার্লারে যদিও খরচটা একটু বেশিই হয় এ দেশে। খরচ হয় হোক, পার্লারে যাবো এমন একটা সিদ্ধান্ত নেই এবং সাথে চুলে কালার করাবো। আমার চুলের রঙ কুচকুচে কালো। এতে মেরুন কালার দিলে চুলে হালকা একটা রেডিস ভাব আসতে পারে মনে হয়। মেহেদী দিতে পারলে ভালো হতো। বাংলাদেশে থাকতে মাসে দুইবার দিতাম মেহেদী, ডিম, চা- পাতা ভিজিয়ে এর পানি আর মেথি মিশিয়ে। মেহেদীর গন্ধটা আমার অদ্ভুত ভালো লাগে, এই ভালো লাগার অনুভূতি ব্যাখ্যার ভাষা আমার জানা নেই। আচ্ছা তাহলে ঠিক করলাম কি কি ? চুল কাটাবো আর চুলে কালার করাবো। ফেসিয়াল টেসিয়াল এসব করাবার ইচ্ছে নেই। আমার মনে হয় এগুলো করাতে গেলে অকারনেই স্কীনে র‍্যাশ হবে। মুখের, গলার কাছটার চামড়া ভালো মতো আয়নার সামনে নিয়ে দেখি, চোখের কোণায় রিংকেল পড়লো কিনা। কই, কোনো রিংকেল তো নেই। আর পড়লেই বা কী। নায়িকা হতে তো আর যাচ্ছি না। এ কথাটা ভেবেই ফিক করে হেসে ফেলি। আমার স্কুল জীবনের সবচেয়ে ক্লোজ বান্ধবী রিপার কথা মনে পড়ে যায়। ক্লাস সেভেনে পড়ি তখন। সে সময়ে রিপারা ওদের বাসায় 'তারকালোক' এই ম্যাগাজিনটা রাখতো। কোন তারকার খাবারের রুটিন কী, কে কী ড্রেস পড়লো, কোন জুতো কিনলো ইত্যাদি সব খবর সে রাখতো এবং তাদের রূপচর্চার নিয়মকানুনও ফলো করতো। যখন জিজ্ঞেস করতাম না খেয়ে খেয়ে এভাবে ডায়েট করিস ক্যান ? ও জানাতো - বলা তো যায় না, কখন কোন অডিশনে চান্স পেয়ে যাই।



- এই বয়সে ?



- এখন না হোক, পরে বড় হলে। যখন কলেজে উঠবো। আমার মডেল হওয়ার অনেক শখ। দেখিস না রুবি এখনই দুইটা অ্যাড করে ফেলছে।



রেজা এসে দরজা নক করে। কী ব্যাপার আজকে কী আর বের হইবা না ?কী করো এতক্ষণ তুমি ?



- আসছি।



ইশ অনেকটা সময় পার করে দিয়েছি ছেলেমানুষি আবেগে। নিজেকে আয়নায় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখাকে কী ছেলেমানুষি আবেগ বলা যায় ? কী জানি ! রেজা গেলেই তো জিজ্ঞেস করতে থাকবে এতো দেরী হলো কেন । ফ্রেশরুম থেকে বের হয়ে সোজা রান্নাঘরের দিকে যাই। রাতের রান্নাটা শুরু করার আগে এক কাপ কফি খাওয়া দরকার। চুলায় কফির জন্য দুধ বসিয়ে বসিয়ে রাতের খাবারের মেনুর জন্য ঠিক করা গরুর মগজ আর শিং মাছটা রান্নার জন্য পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ, অন্যান্য মশলা কাবার্ড থেকে নামাই। এক চুলাতে ভাত বসিয়ে দেই। দুপুরের ডাল যেহেতু বেঁচে গেছে, ওটা ওভেনে গরম করে নিলেই হবে ভেবে রাখি। ও ঘর থেকে রেজা গলা উঁচিয়ে বলে -

- এক কাপ চা, কফি কিছু দিবা না নাকি ? বিস্কুট থাকলে বিস্কুটও দিও।



দুইটা কাপে কফি আর বিস্কুট নিয়ে বারান্দায় রাখি। রেজাকে বলি বারান্দায় এসে বসতে। টিভির প্রোগ্রাম রেখে উঠতে হব এবলে ঘ্যানঘ্যান করলেও শেষ পর্যন্ত রান্নাঘরের পাশের বারান্দায় এসে বসে। যদিও বসার জন্য চেয়ার টেবিল নেই। আমরা দুজনেই ফ্লোরে বসি। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে রেজা বলে - কী ব্যাপার তুমি এতক্ষণ ফ্রেশরুমে কী করছো ? পেট খারাপ নাকি ?



- ধুর কী সব বলো এইগুলি ?



- এক ঘণ্টা হইয়া গেছে বাইর হও না তাইলে কী কমু আমি ! হাসো কেন ?



- নাহ্‌ কিছু না। এমনি হাসি। আমি আমার হাসিটা কেন যেন থামাতে পারছি না।



- কও না হাসতাছো কেন ?



- এমনি হাসি। ফ্রেশরুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নিজের চেহারা দেখছিলাম। স্কুলে- কলেজে থাকতে যেভাবে দেখতাম।



- কী দেখলা ?



- দেখলাম আমার চেহারাতে কতটা পরিবর্তন আসছে, নিজের সৌন্দর্য বাড়াতে আর কী কী করা দরকার এসব।



- তুমি তো এমনিতেই সুন্দরী। নাদুসনুদুস। বলে ও আমার গালটা টিপে দেয়।



- হুম সুন্দরী ! নাদুসনুদুস না ভুটকী ? জিমে ভর্তি হওয়া দরকার।



- মন চাইলে ভর্তি হও, কিন্তু স্লিম হইলে তোমারে ধইরা কী আর মজা পামু ?



- ধরাধরি পরে করবে, এখন এসে পেঁয়াজ কেটে দিয়ে যাও। পেঁয়াজ কাটতে আমার ভালো লাগে না। আমি চায়ের কাপ গুছিয়ে নিয়ে উঠে দাঁড়াই।



- তুমি অনেক রসকষহীন নুহা



- হাহাহহা, আর তুমি রসের আঁধার। দুইজনে এক হলে কী করে হবে। আমি না হয় একটু কমই থেকে দুনিয়ার সমতা রক্ষা করি, কী বলো ? আমি হাসতে হাসতে চলে যাই রান্নাঘরের দিকে। এসে দেখি ভাত প্রায় হয়ে এসেছে। প্লাস্টিকের ছাঁকনিতে ভাতটা ঢেলে দেই মাড় গালতে। প্লাস্টিকের ছাঁকনিতে ভাতের মাড়টা ঝরাতে দিলে ভাতটাও খুব সুন্দর ঝরঝরে থাকে, একটার সাথে আরেকটা লেগে যায় না। এখানে আসার সময় খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম কারণ ভাতের মাড় গালতে পারি না, মাছ কাটতে পারি না, অনেক কিছুই আমি পারি না। রান্নবান্নাও পারি না তেমন। মা তো বলে - পারবি কই থেকে? পড়াশুনা ছাড়া আর কোন কাজটা তুই পারিস শুনি? এগুলো রেজার সাথে আমার বিয়ে ঠিক হবার পরের কথা। তখন বাবাই আমার পক্ষ হয়ে দুই একটা কথা বলতে এগিয়ে আসে। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে মা'কে বলে -



- আমার মা পড়াশুনা কইরা সময় পায় কই ! ও পারে না এইসব কাটাকাটি, রান্নাবান্নার কাজ তো তুমি আছো কী করতে। শিখাইয়া দাও বকাবকি না কইরা।



আমার মায়ের বকাবকি যদিও কমেনি কিন্তু ডিম ভাজা, মাছ ভাজা, টুকটাক দুই একটা তরকারি রান্না শিখেছিলাম ভাত রান্না করা ছাড়া। মায়ের বকা খেয়েও পারিনি ভাতের মাড় গালা শিখতে। মা, চাচী উনাদেরকে দেখি কতো দক্ষ হাতে এলুমিনিয়ামের ঢাকনা দিয়ে ভাতের হাঁড়ির মুখ আটকে কেমন চটপট মাড় গেলে ফেলে। উফ এর চেয়ে কঠিন আর কী হতে পারে। বিয়ের পর পর রেজা যখন আমাদের বাসায় আসতো, একদিন বাবা কথায় কথায় রেজাকে জানায় রান্নাঘরের কাজে আমার অপটু হাতের কথা। শুনে রেজা হেসেছিলো, বলেছিলো - চিন্তা করবেন না। দেশের বাইরে গেলে আর নিজের সংসার হলে এমনিতেই মেয়েরা কাজকর্ম শিখে যায়। রেজার কথায় আমার বাবা নিশ্চিন্ত হলেও মায়ের দুশ্চিন্তা কমেনি। এখনো বাংলাদেশে ফোন দিলে রান্নাবান্না কতোটা শিখলাম সে খোঁজ নিতে ভোলে না। রেজা পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ , করলা আর আলু কেটে দিয়ে চলে যায়। যদিও বলেছিলো রাতের রান্নাটা ও নিজেই করবে কিন্তু এখন ওর মনোযোগ টিভির দিকে। শিং মাছে হালকা মশলা মাখিয়ে একটু ভেজে নেই। মাছ আর গরুর মগজ রান্না করতে বেশি সময় লাগার কথা না। রান্নার সময় রান্নাঘরের দুইটা দরজাই বন্ধ করে নেই। মশলার ঝাঁঝে প্রতিবেশীদের সমস্যা হতে পারে, রেজা এখানে আসার পরপরই আমাকে এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছিলো। দুই চুলায় দুই তরকারী বসিয়ে দিয়ে আমি পেঁয়াজ, তরকারী খোসা গুলো টেবিল থেকে পরিষ্কার করে নেই। বেসিনটা মুছে রাখি। আদা-রসুন ব্লেন্ড করা দরকার, কালকের দিন পর্যন্ত রান্না চলবে যে পরিমান ব্লেন্ড করা আদা বক্সে আছে। এখন রাত করে আর ইচ্ছে করছিলো না এসব করতে, তাছাড়া ব্লেন্ডারে শব্দও হবে বেশি রাতের বেলা। দরজা খোলার শব্দে দেখি রেজা কর্ডলেসটা নিয়ে রান্নাঘরে ঢোকে। জানায় - শবনম ভাবী ফোন করছে। কথা বলো । ফোন নিয়ে হ্যালো বলতেই শবনম বলে -



- কিরে তোর জামাই বাসায় আসছে কখন ?



- আজকে তো কাজেই যায় নাই । তুই কী করিস ?



- ওহ জামাই বাসায় দেইখাই তুই আজকে ফোন দেস নাই। হায়রে পিরিত রে জামাইয়ের লগে। বলে ও হাহহা করে হাসে। ওর সাথে আমিও হাসি। বলি -



- হুম পিরিতই তো ! ভিক্টরিয়া গেছিলাম বাজার করতে, তারপর রান্নাবান্না, ঘুমাইছিও। এখন আবার রাতের রান্না। আলী ভাই আসছে বাসায় ? তোর রান্না শেষ ?



- নাহ, চিংকু এখনো বাসায় আসে নাই। কাজে গেছে তো দুপুরে। ঘরে ফিরতে রাইত বারোটা বাজবো। ভাল্লাগতাছে না ঘরে একলা একলা। তাই ভাবলাম তোরে ফোন দেই। হ রান্না শেষ করছি বিকালেই। তারপর দেশে একটু আম্মুরে ফোন দিলাম, শম্পারে ফোন দিলাম।



- তুই বাসায় একলা আছিস এইটা আরও আগে জানালেই তো পারতি, তাইলে বাজার কইরা ফেরার পথে তোরে আমাদের বাসায় নিয়া আসতাম।



- তোর বাসায় আসি নাই ভালো হইছে একদিক দিয়া। আর তোর জামাইয়ের তো আজকা ছুটি, আমি আসলে বরং রেজা ভাই বিরক্ত হইতো। হের তো বউয়ের লগে ঘসাঘসি না করলে হয় না।



শুনে আমি হাসি। শবনমও ফোনের ওপাশে হাসতে থাকে। বলি - আসলে রেজা সব সময় অমন করে না। শুধু শুধুই তুই লোকটাকে নিয়া টিজ করতাছিস। বলে আমি আবার হেসে ফেলি। শবনম বোঝে আমিও ফান করছি।



- আচ্ছা শোন, আমি ফোন রাইখ্যা দেই। তোর রান্না শেষ হইছে ? আর কালকে আমার সাথে একটু হসপিটালে যাইতে পারবি সকাল নয়টার দিকে?



- হুম পারবো। আমি তাহলে তোর বাসায় আর আসবো না, একবারে সানপাওলোর মেট্রো স্টেশনে থাকবো। তুই ওখানেই চলে আসিস আর আমি বাসা থেকে বের হবার আগে তোকে ফোন দিবো নে। তারপর বিদায় নিয়ে শবনম ফোন রেখে দেয়।



চলবে

মন্তব্য ৪২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৩

মামুন রশিদ বলেছেন: গানটা সত্যিই খুব রোমান্টিক । জোছনায় অঙ্গ ভিজিয়ে গল্প করার আহবা.. চমৎকার ;)


রেজার কথাবার্তায় রাগ হয়, আবার মজাও পাই ।

কী ব্যাপার তুমি এতক্ষণ ফ্রেশরুমে কী করছো ? পেট খারাপ নাকি ?


২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: গান টা আসলেও খুব চমৎকার। অনেকদিন শোনা হয়নি ,

রেজার ওই কথাটা বলা যায় বেশ ফানিই !!

২| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৪

নেক্সাস বলেছেন: নুহা সিরিজ ভালই লাগছে....

++++

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ নেক্সাস

৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৬

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: আমারে শুধু দুইটা পর্ব লেখতে দাও, দেখ আমি নুহারে কই নিয়া যাই! নুহার জীবনটা বড় একঘেয়ে লাগতেসে, বেচারীর কিছু করার নাই! ওরে একটু সিসিলি বেড়াতে নিয়ে যাওয়া দরকার! কিছু মাফিয়োসো ঘটনা ঘটলেই সব ঠিক হয়ে যাবে! B-))

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খেয়েদেয় আমার আর কাজ নেই , নুহাকে তুমি লেডি ডন বানিয়ে দাও আর কি। শেষে দেখা যাবে দুনিয়াময় নুহার ছোটাছুটি ! এরচেয়ে ঘন ঘন কবিতা না পোস্টাইয়া তুমি সিসিলি দ্বীপ নিয়ে একটা গোয়েন্দা গল্প লিখে ফেলো ।

৪| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯

স্বপনচারিণী বলেছেন: সংসারটা আসলে মন্দ জায়গা না। মাঝে মাঝে টক-ঝাল-মিষ্টি ভালই লাগে।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: একটানা খুব ভালো বা একটানা খুব খারাপ চলতে থাকলে একঘেয়েমি আসতে পারে। সে হিসাবে টক ঝাল মিষ্টি খারাপ না বোধ হয় !

৫| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১২

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
উপন্যাস দারুন হচ্ছে।
মাঝে মধ্যে কবিতা, ছোট গল্পের পোস্ট ও চাই।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কবিতা লিখি না অনেকদিন ! ইনফ্যাক্ট লিখতে পারছি না। আর নুহার ফাঁকে অন্য কিছু লেখার মতো সময় করে উঠতে পারছি না, মনে হচ্ছে অন্য কিছু লিখলে এই লেখার ফ্লো টা নষ্ট হয়ে যাবে

৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১৪

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “-তুমি অনেক রসকষহীন নুহা
-হাহাহহা, আর তুমি রসের আঁধার।”


মজা পেলাম।

আমার মনে হচ্ছে, এতো বিভেদের মধ্যেও মানুষ মানুষকে এক প্রকার ভালোবাসেই! নুহাও।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আসলে মনে তীব্র অশান্তি নিয়ে থাকলেও মনে হয় এক সাথে থাকলে একটা মায়ার মতো বোধ তৈরি হয়, একটা অভ্যাসের ব্যাপার আর কি !

৭| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২১

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ৎঁৎঁৎঁ এর সাথে একমত ! বেচারীর জন্য মায়া লাগতেছে !
রেজা হলো বোধহীন মানুষ , অবশ্য ওর ভিতরে বোধ না নিয়ে আনার ব্যার্থতা নুহার ই কিছুটা হলেও !

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নুহা কেন রেজার সাথে স্বস্তি ফিল করে না এই বিষয় গুলো নিয়ে পরের কিছু পর্বে লিখবো । স্বামী বা স্ত্রীর মন উচাটন হলে, ঘরের চেয়ে বাইরের দিকে নজর গেলে আগে মানুষ ঘরের সঙ্গীর দিকেই আঙুল তুলবে এটাই স্বাভাবিক !

৮| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩

আমি ইহতিব বলেছেন: নূহার বিষাদে আর খুনসুটিতে ভরা দিনলিপি পড়তে ভালোই লাগলো।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৩৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপু । ভালো থাকবেন

৯| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:০৫

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এই পর্যন্ত নুহার চিন্তাভাবনা একটা নির্দিষ্ট ধাঁচ নিয়ে প্রকাশ পেতে দেখছি। সেখানে কি পরিবর্তন আসবে? নাকি নুহা প্রবাসিনীর একাকীত্বের অন্য কোন মাত্রা দেখতে পাব?

দেখা যাক সামনের পর্বে।

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নুহার মনে পরিবর্তন আসতে বাধ্য , মানুষ যতই কিছু সংস্কার আঁকড়ে ধরে থাকুক না কেন কখনো কখনো মানু ষ পাকচক্রে পড়ে অনেক কাজ করে ফেলে। নুহাও এর বাইরে নয় !

১০| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:২৮

শ্যামল জাহির বলেছেন: গোসল সেরে দেখি এক কাপ কফি খেতে হবে।

গোসল শেষে লাইব্রেরী রুমে এসে ভাবছে চা খাবে নুহা।

শরীরটা এতো ক্লান্ত লাগছে যে এখন আর ইচ্ছে হচ্ছে না রান্নাঘরে ঢুকি চা বানানোর জন্য।

গোসল শেষে নুহা'র তো কফি খাওয়ার কথা ছিল!

এখন প্রশ্ন আসতে পারে-

- কফির বদলে চা খাবে, ধারণা পাল্টালো কেন নুহা'র?
অথবা, সে কি ভুলে গেছে, চা নয় কফি খাওয়ার কথা ছিল!

যদি ধারণা পাল্টায়- বুঝতে হবে পরিস্থিতিতে চিন্তা-মতে'র সঙ্গে স্থির হতে পারছেনা সে।

বা, অল্প পরে কি করবে যদি ভুলেই যায়- বুঝে নেব মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে স্মরণশক্তি কমে আসতেছে বিচক্ষণ নুহা'র!


স্ফুট হোক নুহা। সাথেই আছি। :)

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এটা নুহার সিদ্ধান্তহীনতার ব্যাপার না। আসলে আমার ভুল , লিখতে লিখতে কখন কফিকে চা বানিয়ে ফেলেছিলাম , বুঝতে পারি নি । ধন্যবাদ জাহির ভাই মনোযোগী পাঠের জন্য। আমি ঠিক করে নিচ্ছি এখুনি।

১১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১৩

ভিয়েনাস বলেছেন: আমারো একটা বদ অভ্যাস আছে যে গানটা ভালো লাগে সেটা বার বার শুনি , দি, বার বার মানে অনেক বার কিন্তু :)

সাথে আছি........

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: এই অভ্যাস আমারও আছে ! আমার ছেলে তো পুরাই বিরক্ত হয়ে যায় আমার এই স্বভাবের কারণে ! :P

১২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর, অনেক ভাল লেগেছে।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ সুজন।

১৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: খুব খুঁটিনাটি বর্ণনা , যেন এতটুকু অংশ ও বাদ দেয়ার জো নেই । এসবের মধ্য দিয়ে অনুদিত হচ্ছে যাপিত জীবনের পালস , এত বলাতেও মনে হচ্ছে
কিছু অনুক্ত থেকে যাচ্ছে , যাবেও যেটা হৃদয় দিয়ে বুঝে নিতে হবে । । আমার কেন জানি মনে হচ্ছে
লিখাটায় মানুষের বোধ , অনুভূতি , ইন্দ্রিয় এর চরম শৃঙ্গে ডিল করাবেন
আপনি ।
লিখায় যথারীতি আটকে রইলাম । সাবলীল বয়ান ।

আছি লেগে । দেহি নুহা কই যায় :)
ভাল থাকবেন আপা ।
শুভকামনা রইল অনেক । :)

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মানুষের বোধ , অনুভূতি , ইন্দ্রিয় এর চরম সংমিশ্রণ ঘটাতে পারবো কিনা জানি না, তবে নুহার মাধ্যমে চেষ্টা করবো এর প্রকাশ করতে।

তোমার জন্যও শুভকামনা রইলো মাহমুদ।

১৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৪২

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: আমি একবারে সবগুলো একসাথে পড়ার অপেক্ষায় আছি, খণ্ড পড়ে অপেক্ষা করতে পারি না । :( :(

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমি তো ভাইয়া পুরোটা লিখে এখনো শেষ করতে পারিনি। জানি না ঠিক কতোতম পর্বে এর সমাপ্তি টানতে পারবো। তবুও এসে দেখা দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।

১৫| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৮

অদৃশ্য বলেছেন:




এই পর্বে রেজা ও নুহা সম্পর্কে আরো কিছুটা জানা হলো... যেহেতু মূল চরিত্র নুহা তাই নুহাকে ভাবতেই হয় সবসময়... আর এই ভাবনার পথে নুহার একটি ক্লিয়ার চিত্র থাকলে ভাবনাটা আরও সহজ হয়... নুহাকে নিজের মতো করে সাজিয়ে নেওয়া যায়...

নুহার বাবার মুখমন্ডল কিছুটা লম্বাটে টাইপের নাকি কিছুটা গোলাকৃতি টাইপের... ঠিক শিউর না, তবে গোলাকৃতি বা কিছুটা গোলাকৃতি মুখমন্ডলে বড় চোখই সম্ভবত মানানসই... আর লম্বাটে মুখের সাথে কিছুটা ছোট চোখ হলেও খুব মানিয়ে যায়... এতো কথা বলবার কারন একটাই, নুহার একটি পরিচ্ছন্ন চিত্র মনের মাঝে আঁকতে চাচ্ছি...

এই পর্বে নুহা ও রেজার সম্পর্কটাকে তুলনামূলক অনেক সহজ মনে হয়েছে... অনেকটা আন্তরিকতা ও ভালোবাসায় ভরে ছিলো...

পড়ছি...

শুভকামনা...

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৩২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: নুহা দেখতে কেমন, চুল কেমন, গায়ের রঙ, চোখ কেমন এসবের একটা ছোঁয়া দিয়েছি লেখায় যাতে নুহার চেহারা কিছুটা স্পষ্ট হয় আগের চেয়ে।

প্রত্যেকটা দম্পতিই চায় তাদের সংসারটা ভালোভাবে চলুক। আসলেই কী সবারটা যায় !!! কিছুটা অতৃপ্তি মনের গহীনে রয়েই যায়।

আপনার জন্যও ভাইয়া শুভকামনা থাকলো।

১৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৪৯

গোর্কি বলেছেন:
-এ পর্বটা পড়লাম। ভাল লাগল।
-আগের পর্বগুলো পড়ে নেব আগামীর সাথে তাল মেলাতে।
-আরতি মুখার্জীর সবগুলো গানই চমৎকার। প্রায়ই শোনা হয়।
-শুভ কামনা।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। আরতির খুব বেশি গান শোনা হয়নি আমার ।
তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয় -- উনার গাওয়া এই গানটাও খুব চমৎকার !

শুভকামনা আপনার জন্য।

১৭| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২৮

অদৃশ্য বলেছেন:





হ্যাঁ, অনেকটা ধারনা পাওয়া গ্যাছে... যেহেতু নুহাকে ভিত্তি করেই পুরো উপন্যাস তাই নুহার আরো ডিটেইল সামনে আশা করবো...

একটি মুখ আমি চাইলেই ভাবতে পারি... তবে আপনার নুহাকে মানসপটে স্থির করবার জন্য তার ডিটেইল আপনার লিখাতে থাকাটা জরুরী মনে হয় আমার কাছে... যদিও পাঠক নিজের মতোই ভাববে তার পরেও নুহার একটি সুস্থির চেহারা দেবার জন্য আপনার লিখায় তার বর্ণনার চেয়ে ভালো কিছুতো আর হতে পারেনা...

এখন পর্যন্ত নুহাকে ফতুয়ার সাথে লংস্কার্টেই আমার কল্পনায় বেশি মানানসই মনে হয়েছে... হয়তো ভাবনাগুলো আস্তে আস্তে বদলাবে অথবা না...

আমি কিভাবে ভাবছি, ঠিক সেটাই আপনাকে বলে যাচ্ছি... লেখক বিরক্তবোধ করলে কথা বলবার সময় পাঠকের ভাবনা বেড়ে যাবে...

শুভকামনা...



২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৩৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনি মতামত দিচ্ছেন, নুহাকে দেখার চেষ্টা করছেন এটা তো একজন লেখক হিসাবে অবশ্যই আমাকে ভালা লাগা দিচ্ছে। আমার মাথায় রইলো নুহার ব্যাপারটা ।

ভালো থাকবেন ভাইয়া

১৮| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৭

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: ঠিকাছে ! আপাতত ঢুঁ দিয়ে যাবো কিন্তু কেমন লাগলো সেটা সেটা সব পর্ব শেষ হলেই বলবো!!! শেষ পর্বে আমাকে দাওয়াত দিয়েন ! :P :P

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আচ্ছা দাওয়াত দেবো

১৯| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৪১

নীল কথন বলেছেন: দিনালিপির গান...... দ্রুত আসুক পরের পর্ব। অপেক্ষায়...

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:১৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হুম দিচ্ছি পরের পর্ব

২০| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৯

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

নুহা +

২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: কাণ্ডারী অথর্ব ভাইকেও +

২১| ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:০২

শান্তির দেবদূত বলেছেন: "রবীন্দ্রসংগীত মানেই প্যানপ্যানানি" -- রেজ দেখি পুরাই বদ পোলা! X( X(

আরতির এই গানটা আমারও অনেক প্রিয়, কলেজ লাইফে যে পাগলের মত কত শুনেছি!! একি গান বার বার শুনার আভ্যাস আমারও!

পড়ছি, কিন্তু একটু স্লো মনে হচ্ছে। প্রথমদিকের পর্বগুলো একটু গতিশীল ছিল।

০৫ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমি নিজেই স্লো হয়ে গেছি লিখতে লিখতে , নুহা তো স্লো হবেই :||

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.