নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবনের কোথাও একটি ছাপ রেখে যেতে চাই

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময়

চিত্রদীপ জ্বেলে রেখো ময়ূখ পিদিম; রাত্রি-কথায় বেঁধে নেবো ভোরের খোঁপা।

অপর্ণা মম্ময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

নুহা -১৭

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৮

নুহা-১৬



আমি শবনমের এলাকা সানপাওলো পৌঁছাবার প্রায় মিনিট দশেক পরে ও আসে। ওকে দেখতে কেমন মলিন লাগছে আজ। বারে ঢুকে কাপুচিনো আর কর্নেত্তো খেতে খেতে জিজ্ঞেস করি ওর সমস্যা কী? ওকে এমন দেখাচ্ছে কেন ?

- আর কইস না, পেট বিষ।

- মানে ?

- তলপেট ব্যথা। দেখস না দাঁড়াইতে পারি না ঠিক মতো। মরার অসুখ যে কবে ভালো হইবো কে জানে।

- তোর এপয়েনমেন্ট কয়টায় জিজ্ঞেস করি শবনমকে।

- দশটায়। রক্ত পরীক্ষা আর আলট্রাসনোগ্রাম করাইতে হইবো

- তুই যে খেলি এখন, ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করছিলি না খেয়ে করতে হবে না কি খেয়ে পরীক্ষা করাতে হবে?

- হুম জিগাইছি। চল। বারে খাবারের বিলটা শবনমই দেয়। আমি মেট্রো স্টেশনের বুথ থেকে চারটা টিকিট কিনি। এখানে মিনিট খানেক পর পরই মেট্রো আসে। আর দেরী হলে সর্বোচ্চো মিনিট তিন অপেক্ষা করতে হয়। আজ অন্যদিনের চেয়ে শবনম একটু চুপচাপ। ওর ব্যথা মনে হয় আসলেই অনেক বেশি। আমিও চুপচাপ। কথা বলতে ইচ্ছে করছে না আমারও। তবুও বলি -



এভাবে মেট্রো তে করে যাবি, বাসে উঠবি, একটু হাঁটবি তারপর হাসপাতালে যাবি। তোর কষ্ট হবে। আলী ভাই কী আজ খুব ব্যস্ত ? গাড়িতে করে গেলে তোর কষ্ট একটু কম হতো মনে হয়।



- আজ ও চায়না মার্কেটে যাইবো মাল কিনতে। অনেক দূরে। কর্মচারী ব্যবসাতে বসাইয়া রাইখা গেছে। আমার এমন ব্যথা উঠবো কে জানতো ! যার থাইক্যা মাল কিনবো তারেও সময় দেয়া হইয়া গেছে।



- আচ্ছা, ভয় পাস না। ব্যথা কমে যাবে। আমরা আবার চুপ করে থাকি। কথা খুঁজে পাই না ব্যাপারটা এমন না। কেন যেন ভালো লাগে না আমার। মাইকে নেক্সট মেট্রো আসার এনাউন্সমেন্ট হলে আমি উঠে গিয়ে টিকিট পাঞ্চ করি। মেট্রোতে এ সময়টায় অনেক ভিড় থাকে। শবনমের জন্য বসার একটা জায়গা পেলেই হয় মনে মনে ভাবি, যদিও দুই স্টপেজ পর নেমে যেতে হবে আমাদের। তারপর বাসে করে একটু সামনে গেলে 'ভিয়া ক্রিস্টোফার কলম্বো', সেখানেই হাসপাতাল। অন্যসময় হলে মেট্রো থেকে নেমে শবনম আর আমি গল্প করতে করতেই যেতে পারতাম। আজকের ব্যাপারটা আলাদা। দেশের বাইরে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে খুব সমস্যা। সবাই এতো ব্যস্ত আর কমার্শিয়াল যে কার এতো দায় পড়েছে অসুস্থ ব্যক্তিটিকে সেবাযত্ন করার, আত্মীয়ও আত্মীয়কে এখানে অনেক সময় অসুস্থ হলে সময় দিতে পারে না। সবাই যার যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। শবনম একটা সিটে অবশ্য বসার জায়গা পায় আর আমি মেট্রোতে সিটের উপরের দিকে ঝোলানো হুক ধরে দাঁড়িয়ে থাকি। ও জিজ্ঞেস করে, তোর কী হইছে রে ? চোখের নিচে কালি কেন ?

- শরীর ভাল্লাগতাছে না। রাতে ঘুম হয় নাই। ভয়ের স্বপ্ন দেখছি।

- কী স্বপ্ন ?

- তেমন কিছু না। আজগুবি স্বপ্ন। চলে আসছি কিন্তু, এখন নামতে হবে। আমাকে ধরে দাঁড়া।



দশটা বাজতে চললো। বাসের খবর নেই। কী করে যে সময়মত পৌঁছাই ওকে নিয়ে। বুঝতে পারি আজ কপালে ভোগান্তি আছে। মোবাইলে এস এম এস আসার শব্দ পাই পর পর তিনটা। এস এম এসের কথা মনে পড়তেই আবার আমার লিয়ানার কথা মনে পড়ে গেলো আর এস এম এস গুলো এসেছে রেজার ফোনেই। সময়মত পৌঁছাতে না পারলেও শবনমকে নিয়ে ওর কাজগুলো ভালোভাবেই শেষ করতে পারি। হাসপাতাল থেকে বের হতে হতে দুপুর প্রায় একটা বেজে যায়। শবনম বেরিয়েই বললো - আয় আজকে ম্যাকডোনাল্ডে যাই। কাছেই তো ।



- হুম কাছেই বলেছে তোকে। বাসের জন্য কতক্ষণ দাঁড়াতে হবে জানিস ?



- সমস্যা নাই, চল তো ! ব্যথা এখন একটু কম আমার।



বাসায় ফিরতে ফিরতে অনেক সময় লেগে যাবে ভেবে ম্যাকডোনাল্ডে যেতে সম্মতি জানাই। তবুও শবনমের বাইরে খাওয়ার ব্যাপারে কিছুটা রেস্ট্রিকশন আছে সেটাও ওকে মনে করিয়ে দেই। ফ্যাট জাতীয় খাবার ওকে ডাক্তার কম বলেছে খেতে এটা জানার পরেও বেশীরভাগ সময়েই ও নিয়মের বাইরে খাওয়াদাওয়া করে। এর মাঝে আলী ভাইও ফোনে খবর নেয় শবনমের। কী রে নুহা তোর কী হইছে বলতো আমাকে ? এমন গম্ভীর কেন ?



লিয়ানার র ব্যাপারটা নিয়ে মেজাজটা খুব খারাপ লাগছে আমার, এটা শবনমকে বলতে ইচ্ছে করছে না। মোবাইলে ফোন আসাতে আমি ব্যাগ থেকে রেজার মোবাইল বের করি। দেখি লিয়ানার নাম্বার। আমি রিসিভ করতেই কেটে দিলো। কী আশ্চর্য মানসিকতা ! ইউরোপেও যে মানুষের মাঝে এমন লুকোচুরি ব্যাপার কাজ করে জানা ছিলো না। ভাবছি রেজাকে ফোন করে বলবো যাতে সে লিয়ানার সাথে ফোনে যোগাযোগ করে নেয় আর এ ধরণের অভদ্র আচরণের কারণ কী সেটাও জানা দরকার। এমন লুকোচুরি ধরণের আচরন, এসএমএস দেয়া, লিয়ানার ব্যাপারে রেজার এমন অপ্রস্তুত ভাব, ক্ষেপে যাওয়া ইত্যাদি একটা ব্যাপারকেই নির্দেশ করে রেজা আর লিয়ানার সম্পর্ক নিয়ে যা আমি সত্যিই ভাবতে চাইছিলাম না। ইতালি আসার পর পর রেজার যে আচরণগুলো আমাকে কষ্ট দিয়েছিলো, ধীরে ধীরে নিরাসক্ত করে তুলেছিলো সেগুলো আমি নতুন করে মনে করতে চাইছিলাম না। কিন্তু লিয়ানা আর রেজার লুকোচুরি আমাকে মনে হয় সেগুলো আমাকে ভুলতে দিবে না প্রতিজ্ঞা করেছে। উফফফ !



কী রে কার এতো মেসেজ আসে একটু পর পর, আমি খেয়াল করছি কিন্তু আগেই। আবার ফোন দিয়া কথা বলে না। কে তোর নয়া কোনও প্রেমিক হইলো নাকি এইখানে আইসা ?



- ইশশ আগেও যেন আমার প্রেমিক ছিলো কতো ! আমার ফোনে না, রেজার ফোনে মেসেজ আর ফোন আসছে।



- ওহ। কিন্তু তোর চেহারা এমন কালা কেন, কী হইছে ? নাগরের লগে ঝামেলা লাগছে নাকি ?



শবনম রেজার বিবিধ কাজকর্মের কারণে রেজাকে আমার' নাগর' বলে ডাকে, যার অর্থ খুব একটা স্বাস্থ্যসম্মত না। না রে শবনম, তেমন কিছু না। এমনি আমার ভালো লাগছে না কয়েকদিন ধরে কিছু। সময় কাটে না। ভাবছি জব করা দরকার, সময় টা যাতে ভালো ভাবে কাটে। বাসের অপেক্ষায় থাকতে থাকতে এর মাঝে আমরা হেঁটেই চলে আসি ম্যাকডোনাল্ডের কাছে। সালাদ, চিকেন বার্গার আর আইসক্রিমের অর্ডার দিয়ে এসে বাইরে বসি যেখানে ব্যালকনির মতো আছে। জায়গাটা খুব সুন্দর। বিকেলের দিকে এখানে ঘুরতে খুব ভালো লাগে। পার্ক আছে কিছু, এর মাঝে একটা পার্কের নাম ' লুনা পার্ক '। বাচ্চাদের খুব পছন্দের পার্ক হলেও বড়রাও যে সে পার্কের রাইডগুলোতে চড়ে না তা নয়। আমি আর শবনম অনেকবার গিয়েছি সেখানে। কিন্তু আজ সবকিছুই বিস্বাদ লাগছে, খাবারগুলোও। রেজাকে ফোন দিবো ভাবছিলাম কিন্তু এর মাঝে রেজাই ফোন দিলো। বললো -



- কী করো ?



- শবনমের সাথে। ম্যাকডোনাল্ডে এসেছি। খাচ্ছি



- হুম সব ভালো তো ?



- না সব ভালো চলছে না রেজা। আজ তোমার মোবাইলটা বাসায় রেখে গেছো। তোমাকে একজন খুব খুঁজছে। সে বুঝি আজ কাজে আসে নি ? আমার চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলার ধরণে শবনম ওর খাওয়া বন্ধ করে আমার দিকে তাকিয়ে থাকে



- লিয়ানার ফোন তুমি ধরছিলা নাকি ? ও আজকে কাজে আসে নাই তো, তাই মনে হয় কাজের ব্যাপারেই ফোন দিতাছে।



- বুঝলে কে করে লিয়ানাই ফোন দিয়েছে ? বাহ্‌! কোন ব্যাপারে তোমাকে ফোন দিচ্ছে সেটা আমার জানার কথা না। এসএমএস ও পাঠাচ্ছে



- আইচ্ছা তুমি মোবাইলটা বন্ধ কইরা রাখো। আর তোমারে আজকা শবনম ভাবীদের বাসা থেকে নিয়ে আসবো নে সন্ধ্যায়। আজ একবেলাই কাজ, রাখি, তোমরা খাও।



- আমাকে নিতে আসতে হবে না তোমার। শবনমকে বাসায় পৌঁছে আমি চলে আসবো।



- আরে থাকো ভাবীদের বাসায়। গল্পগুজব করো। তোমার মুড ভালো থাকবো

আমি কিছু না বলে ফোনের লাইন কেটে দেই রেজার। ওর তেলতেলে ধরণের হাসি আর কথাবার্তা ভালো লাগছিলো না আমার। যে ব্যক্তি তেল পুড়িয়ে এতদূরে যেয়ে শবনমদের বাসায় গিয়ে আমাকে অন্য সময়ে আনতে চায় না, শবনমদের বাসার নিচ থেকেই আমাকে ফোন দেয় ও গাড়িতে বসে আছে আর আজ ও নিজ থেকেই বলছে শবনমদের বাসায় থাকতে। ভালোই বুদ্ধি, জানে শবনমের সাথে থাকলে আমার মুড ভালো থাকে। লিয়ানার ফোন, এসএমএসের কথা শুনেই কোণঠাসা একটা বোধে আক্রান্ত হয়েছে বলেই তার এমন সুরেলা কণ্ঠে এখন কথা বলছে রেজা, আমি ভালোই বুঝতে পারি। মেজাজটাই তেতো হয়ে যাচ্ছে আমার।



- সমস্যা কী ঐ লিয়ানাকে নিয়া? এই কারণে তোর চেহারা কালো বানাইয়া রাখছিস ? ঐ ছেমড়ির ঘটনা কী ? ওইটার না বয় ফ্রেন্ড আছে, তোর জামাইয়ের লগে আবার কী ? আজ বাসায় গেলে গলায় চিপ দিয়া ধরবি রেজা ভাইরে ঝাইরা কাশনের লাইগা। ফাইজলামি পাইছে নাকি সে ? শবনম রাগে গজগজ করতে থাকে আমার রেজার ফোনের কথোপকথনে। আসলে ব্যাটা মানুষগুলিরে টাইটে রাখন দরকার, বুঝছস? চিংকুর উল্টাপাল্টা কিছু দেখুম তো সোজা বাংলাদেশে যামু গা।



- বাংলাদেশে গিয়ে কী করবি ? বাপ-মায়ের বোঝা বাড়াবি ? বিয়ের পর তো মেয়েরা বাবা-মায়ের বোঝা হয়ে যায় স্বামীর বাড়ি ছেড়ে আসলে বুঝিস না আশেপাশের ঘটনা শুনে? আর তুই তো পড়াশুনাও শেষ করিসনি। অনার্সে ভর্তি হয়েও তো আর পড়লি না। কোকের গ্লাসে অল্প অল্প চুমুক দেই আমি।



- শ্বশুর বাড়ি থেকে তো পড়তেই দিলো না কী করুম আর চিংকুও তো চায় নাই আমি পড়ি বিয়ার পরে। আমার কথা বাদ দে, তুই কী করবি? রেজা ভাইকে আজ বাসায় গিয়া ভালমত জিগাবি তার সমস্যা টা কী ঐ মাইয়ার সাথে। আগে যা করার করছে, এখন কী? একজন মানুষ বিবাহিত জাইনাও কেন ঐ মেয়ে বিবাহিত একজন মানুষের আশেপাশে ঘুরঘুর করবো ? ফ্রেন্ডশীপ আর আজাইরা সম্পর্ক দুইটা দুই জিনিস, এইটা বুঝার মতো ঘিলু কী তোর জামাই বা ঐ মাইয়ার নাই নাকি ?



অহেতুক প্ল্যান ছাড়া হইচই করে নিজের বিপদ ডেকে আনার দলে আমি নই। তাই শবনম আমার সমস্যা নিয়ে যতই উচ্চবাচ্য করুক না কেন আমি আমার লক্ষ্য ঠিকই জানি আমাকে কী করতে হবে। খাওয়াদাওয়া সেরে আমি আর শবনম বের হই। বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতে মিনিমাম বিকেল চারটা বাজবে। শবনম আমাকে বলে অবশ্য বিকেলটা ওদের বাসায় কাটিয়ে যেতে। ও একা একা থাকবে বলেই হয়তো আমাকে জোর করে ওদের বাসায় থাকার জন্য। আমি নিষেধ করলে ও বলে -



- ক্যান রেজা ভাই বলছেই তো তোকে আইসা নিয়া যাইব সন্ধ্যায়, থাক না প্লিজ আমার বাসায়।



- আমার ভালো লাগছে না রে শবনম। কাল রাতে আজেবাজে দুঃস্বপ্ন দেখেছি, ঘুম ভালো হয়নি। এখন বাসায় গিয়ে একটু ঘুমাবো। বলে ওর সাথে মেট্রো স্টেশনের দিকে হাঁটতে থাকি। এখান থেকে মেট্রোতে উঠলে সোজা শবনমদের এলাকায় গিয়ে নামা যাবে। মাঝে আর কোনও বাস বদল করতেও হবে না। এ সময়টা অফিস ফেরতা মানুষ বা স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের তেমন একটা ভিড় থাকে না। দুজনেই বসার জায়গা পেয়ে যাই। ফেরার পথে আমাদের খুব একটা কথা হয় না। সানপাওলোতে নেমে শবনমকে জিজ্ঞেস করি ওকে বাসা পর্যন্ত দিয়ে আসবো কিনা। আমার যদিও ওকে বাসায় দিয়ে আসতে ইচ্ছে করছিলো না। তাহলে অনেকটা পথ হেঁটে আবার আমাকে বাসে উঠতে হবে। মেট্রো স্টেশনের কাছ থেকেই মালিয়ানা যাবার ১২৮ নাম্বার বাসটা ছাড়ে। ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি স্টপেজে গিয়ে দাঁড়াই। বাইরে কড়কড়ে রোদ। চোখে লাগছে। সানগ্লাসটা বের করে চোখে দেই। বেশীক্ষণ দাঁড়াতে হয় না অবশ্য। বাসে বসার জায়গাও পেয়ে যাই। ফোনের রিং বাজতেই ধরি। রেজার ফোন।



- তুমি কই ?



- বাসায় যাই।



- তোমারে না বললাম সন্ধ্যায় আমি নিয়া সব তোমারে শবনম ভাবীদের বাসা থেকে। সারারাত ঘুমাইতে পারো নাই, তাদের বাসায় একটু রেস্ট নিতা।

ওর ঢঙের কথা শুনে মেজাজটা খারাপ হয়ে যায় আবার। আমি সারারাত ঘুমাইনি ও যেন খুব দেখেছে। আমার জন্য এতো দুশ্চিন্তা করার দরকার নেই তোমার - এ কথাটা বলতে গিয়েও বলি না ওকে। বাসায় গিয়েই ঘুমাবো জানাই ওকে আমি। ফোন রাখতে চাইলে ও আমাকে জিজ্ঞেস করে -



- আমার মোবাইলটা কী বন্ধ করছিলা ? আর কোনও ফোন আসছিলো আমার ?



- না বন্ধ করি নাই। জানি না ফোন এসেছিলো কিনা !



আমি রেজার ফোন রেখে দিতে দিতেই আমি আমার বাসার কাছের স্টপেজে পৌঁছে যাই। নাহ্‌ আজকের রোদটা বড্ড কড়া। সারা গায়েই কেমন ছ্যাকা দিচ্ছে। বাসায় গিয়েই জামাকাপড় বদলে গোসল সেরে নিতে হবে। গরমে গা জ্বলছে। প্রতিবারই আমার এক রকম ফিলিংস হয় বাস স্টপেজ থেকে নেমে বাসায় আসার জন্য এই উঁচু পাহাড়ি রাস্তাটা বেয়ে উঠতে গিয়ে আর সেটা হচ্ছে ব্যাগ থেকে চাবি করতে করতে আমার দেরী সহ্য হয় না। মোট তিনটা গেট পার হয়ে তবেই ঘরে ঢোকা। এই উঁচু পথটা বেয়ে উঠতে গেলে কাপ মাসলে খুব ব্যথা হয়। ঘরে ঢুকে দ্রুত কাপড় বদলে গোসল সেরে নেই। একটু ঘুমানো দরকার। বিছানায় শোবার আগে ফ্রিজটা খুলে একটু উঁকি দেই। ফ্রুট জুস ছিলো দুই বোতল। গরমের মাঝে ঠাণ্ডা এই জুসটা খেতে ভালো লাগে। আইস টি টা কদিন আগেই শেষ হলো। আবার আনতে হবে। লেবুর চেয়ে পীচ ফলের আইস টি টা আমার বেশি পছন্দের। শবনমকে ফোন দিয়ে জানালাম আমি বাসায় ফিরেছি। না হলে দেখা যাবে কিছুক্ষণ পর ঐ আবার আমাকে ফোন দিবে, আমার সাধের ঘুমের বারোটা বাজবে।



বিছানায় শুয়ে ঘুমে চোখ ঢুলু ঢুলু করলেও কী এক নিদারুন কৌতূহলে আমি রেজার মোবাইলটা হাতে নেই। লিয়ানাকে ঘিরে ওর আচরণের জন্য আমার স্বভাব বিরুদ্ধ কাজ করতে হয় এখন। ও কী নির্বোধ না ইচ্ছে করেই মোবাইলে মেসেজ জমিয়ে রেখেছে কে জানে। সেন্ট আইটেমের এক মেসেজে রেজা লিখেছে -



" জাস্ট রিচড হোম। নো এস এম এস, নো কল। মিস ইউ সিনোরিটা। চাও "



লিয়ানারও কিছু মেসেজ দেখলাম-



" লাঞ্চের সময় তুমি আমার সাথে কথা বললে না কেন ? সামনে লোক ছিলো তো কী হয়েছে ! আজ এলেক্স ফোন করেছিলো, আমি ওকে ভুলতে চাই। প্লিজ হেল্প মী "



হাহহাহা মজার তো ! নিজের বয় ফ্রেন্ডকে ভোলার জন্য আরেকজন স্বামীর কাছে সাহায্য প্রার্থনা। আমার পুরনো কিছু ঘটনা মনে পড়ে গেলো। আমি তখন নতুন এসেছি ইতালিতে। আমার কাগজপত্রের কিছু কাজের জন্য আমি আসার পরপরই রেজা তিনদিনের ছুটি নিয়েছিলো। আমার রেসিডেন্ট কার্ড, স্টে পারমিশন, মেডিক্যাল কার্ড ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে বেশ ব্যস্ততায় গিয়েছিলো ওর। এরপর যা হবার তাই, ও সারাদিন থাকে কাজে আর ফেরে রাত দশটায়। আমি বুঝি এটাই ওর কাজের জায়গা আর বাংলাদেশে ও যখন যায় সেটা বেড়াবার উদ্দেশ্যে। আমাকে সারাদিন বা একটা বেলা দেয়ার মতো সময় ওর কোথায় একমাত্র ছুটির দিন ছাড়া! কিছুদিন মনমরা লাগতো আমার একা একা। সে সময়টা দেশে খুব ফোন দিতাম। আমাকে প্রথম প্রথম সঙ্গ দিতে ও অবশ্য দুপুরের দিকেও বাসায় আসতো কাজের জায়গা থেকে লাঞ্চের সময়। একসাথে খেয়ে দেয়ে যখন বিছানায় কিছু ঘনিষ্ঠ সময় কাটাবার পর ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম তখন দেখতাম রেজা চুপি চুপি বিছানা থেকে উঠে মোবাইল নিয়ে গল্প করতো । কখনো কখনো ঘণ্টা ধরে চলতো সে গল্প। ওর কথার আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙে যেতো। আর ইতালিয়ান ভাষা জানতাম না বলে ওর সব কথাই ছিলো আমার কাছে দুর্বোধ্য। আমি তখন চোখ বন্ধ করেই অনেকটা ঘুম ঘুম স্বরেই বলতাম -



এবার ফোনটা রাখো না ! কত কথা বলো তুমি।



ও তখন বলতো - আরে সব কথা কী কাজের এখানে বসে বলা যায়? কাজের জায়গায় কত ঝামেলা থাকে তুমি বুঝবে নাকি ?



আসলেই আমার তো বোঝার কথা না কাজের জায়গায় রেজার কী সমস্যা, কার সাথে কী কথা বলতে হয়। কিন্তু আরও দিন গেলে দেখি ও রাতে খেতে বসলেও খুব তাড়াহুড়া করতে থাকে। আমার খাওয়া শেষ হতে হতেই ওর খাওয়া শেষ হয়ে যায়। ওকে বলি -



কী ব্যাপার তুমি কী ভাত চিবিয়ে খাও না? নাকি গিলে ফেলো পানির সাথে সাথে ?



ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসে কিছু না বলে । হাতের ইশারায় বলে তুমি খেয়ে তাড়াতাড়ি আসো। আমি খেয়ে , রান্নাঘরের সব গুছিয়ে যখন ঘরে যাই, রেজা তখন থাকে বারান্দায়। কানে যথারীতি ফোন। সে সময়ের শীতের রাতে ও ফিনফিনে একটা গেঞ্জি পড়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করতো লিয়ানার সাথে। আরও পরে বুঝেছিলাম যে মেয়েটা লিয়ানা ছিলো। সেসব দিনগুলো আমার মনঃকষ্টে কাটত। নিজের বিবেক দিয়ে এটাই কাজ করতো বিয়ে হবার পর সবাই তার স্বামী বা স্ত্রীকে হয়তো মন থেকে ভালোবাসতে না পারলেও অন্তত বিয়ের পর কারো অসৎ হওয়া ঠিক না। আর এরেঞ্জ ম্যারেজের ক্ষেত্রে চট করে দাম্পত্য ভালবাসাটাও আসে না, এটা সময়ের ব্যাপার। দুজনের কাজকর্ম, চিন্তা, কেয়ারিংনেস এসব থেকেই তো আস্তে আস্তে ভালোবাসাটা জন্মায়। এই যে আমি বাংলাদেশ থেকে সবাইকে ছেড়ে সমাজ যাকে সবচেয়ে আপন, নির্ভরতা বলে সামাজিক স্বীকৃতি দিয়েছে তার কাছেই এলাম কিন্তু সে যদি এভাবে আমার সাথে লুকোচুরি খেলে, উপেক্ষা করে তাহলে আমার কী করার থাকতে পারে বুঝে উঠতে পারিনি সে সময়। একবার মা'কে বলেছিলাম, মা রেজা যেন কেমন করে !

- কেমন করে ?



- ওর অন্য কোথাও রিলেশন আছে বোধ হয়



- তুই দেখছস নিজের চোখে, শুনছস নিজের কানে ?



- না দেখিনি কিন্তু বোঝা যায় তো ! আমি আমার গলায় উদ্বিগ্নতা লুকিয়ে রাখতে পারি না



- হ তোরা আজকালকার পোলাপাইন তো বেশি বুঝস। নিজের মনে মনে অনেক কিছুই তোরা বুইঝা ফালাস। কই তোর বড় বইনের মুখে তো কোনোদিন শুনলাম না ওর জামাই শফিকরে নিয়া আজেবাজে চিন্তার কথা কইতে। আর তুই গেলি রেজার কাছে কয়দিন হইছে যে রেজার সম্বন্ধে উল্টাপাল্টা কথা কইতাছস।



মা আমার কথাকে পাত্তা দেয়নি সেদিন। ভেবেছে আমার চিন্তাভাবনায় সুর মেলালে হয়তো আমি বিদ্রোহী হয়ে উঠবো,রেজার সাথে মনমালিন্য বাড়বে। যে কোনও নারীর জন্য তার ঘরের সাপোর্ট, মায়ের সাপোর্ট আগে। কিন্তু আমার মা কেন যেন আমার সাথে সব ব্যাপারেই চাপ দিতে পছন্দ করতো, প্রভাব খাটাতে পছন্দ করতো। মা কী করে বুঝবে আমি যার সাথে থাকি সে কেমন ! কিছু কিছু ব্যাপার আছে না যে প্রমাণ করা যায় না, চোখে দেখা যায় না কিন্তু অনুভব করা যায়, রেজার সাথে লিয়ানার ব্যাপারটা ছিলো তেমন। আমি শুধু অনুভব করতে পারতাম রেজার মনটা আমার দিকে নয়, কয়েক ভাগেই বিভক্ত হয়েছিলো বিয়েরও আগেই। সেটা সমস্যা নয়। কিন্তু বিয়ের পর পুরনো সম্পর্ক রক্ষা করে চলাটা আমার কাছে ভালো লাগছিলো না মোটেও। তাছাড়া একদিন রেজার মোবাইলে ফোন রিসিভ করার পর পরই যখন মেয়েটা ফোন রেখে দেয়, রেজাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম মেয়েটা কে ?



- ওহ ঐ মেয়েটা? লিয়ানা । তুমি তো দেখছই ওকে



- আমি ফোন ধরলে ফোন রেখে দেয় কেন?



- তুমি কী ইতালিয়ান ভাষা জানো নাকি যে ও কথা কইবো তোমার সাথে ! তুমি বুঝবা কিছু ?



- সাধারণ হাই হ্যালো জাতীয় কথা গুলো তো আমি বুঝিই রেজা। ঘরে বসে তো ইতালিয়ান ভাষা শিক্ষার বই পড়িই কিন্তু আমি ফোন ধরলে মেয়েটা কেন ফোন রেখে দেয়।



- হয়তো ভাবে আমারে ফোন দিলে তুমি রাগ করবা তাই



- এরকম ভাবনা ঐ মেয়ের মনে কী করে ঢুকলো যে আমি রাগ করবো ! আমার সম্বন্ধে তুমি কী বাজে ইম্প্রেশন দিয়েছ নাকি ঐ মেয়েকে ? ঠিক আছে , আমি ভাষা শিক্ষার স্কুলে ভর্তি হবো। তারপর ঐ মেয়ের সাথে কথা বলবো দেখি তখন ফোন রেখে দেয় কিনা। ঐ দেশে চলাফেরার জন্য মিনিমাম ভাষা জ্ঞান থাকাটা জরুরী ভেবেই নিজে নিজেই একদিন গিয়ে স্কুলে ভর্তি হয়ে এলাম রেজার অনিচ্ছা সত্ত্বেও। সে চায়নি আমি ভাষা শিখি, পড়তে লিখতে শিখি। কী অদ্ভুত! এটা ঠিক লিয়ানার ব্যাপারেই কিছুটা বিক্ষিপ্ত হয়ে ওঠার পড়েই আমি স্কুলে ভর্তি হবার ব্যাপারে রেজার কাছে বলা শুরু করি। তাই ও ধরেই নিয়েছিলো আমি শুধুমাত্র ওর আর লিয়ানার ব্যাপারে আগ্রহী হতেই বুঝি স্কুলে ভর্তি হয়েছি। এরপর রেজা কিছুটা সতর্ক হয়েছিলো। ঘরে ফিরে লিয়ানার সাথে আগের মতো কথা বলতো না বা এসএমএসও দিতো না। আমি যে ওর সাথে এ বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি করতাম তাও না, শুধু একটু চুপ হয়ে যেতাম। বিছানায় তেমন রেসপন্স করতাম না। একদিন ও আমাকে বললো - চলো পার্ক থেকে ঘুরে আসি। সানপাওলো যাই চলো। ওখানে এক ভাবী আছে তার সাথে তোমাকে পরিচয় করিয়ে দিবো, ভালো লাগবে। সেদিন বেশ খুশী মনেই সেখানে গিয়েছিলাম। পার্কের সাথে একটা বেশ বড়সড় গির্জাও আছে। রোমের বিখায়ত কয়েকটি গির্জার মাঝে এটি অন্যতম। ব্যাসিলিকা সানপাওলোর গির্জাতে সবসময় দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে। দেশ থেকে তখন মাত্র নতুন নতুন এসেছি, হোমসিকনেস তখনো পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারিনি। টেলিফোনের বুথ দেখলেই বুকটা ছলকে ওঠে দেশে ফোন করার জন্য। পার্কে বেশ কয়েকটা বুথ পাশপাশি দেখে রেজাকে বলি, রেজা দেশে ফোন করে আসি? দেশে ফোন করার জন্য কয়েকটা ফোন কার্ড তখন আমার ব্যাগেই থাকতো। রেজা সম্মতি জানালে আমি ফোন করতে ঢুকি ফোন বুথে। রেজা আমাকে জানালো, তুমি কথা বলো। আমি বার থেকে কফি খেয়ে আসি।

মায়ের সাথে ফোনে কথা শেষ হবার পরেও দেখি রেজার কফি খেয়ে বের হবার নাম নেই। না ওকে হারিয়ে ফেলেছি ভেবে আমি যে ভয়ে কাতর ছিলাম সেরকম কিছু নয়। জাস্ট ওকে রেখে বা ওকে ছাড়া একা একা হাঁটবো কিনা কিংবা এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে থাকবো কিনা বুঝতে পারছিলাম না। আশেপাশে বিভিন্ন বয়সের মানুষ পার্কে ঘোরাফেরা করছিলো। কেউ কেউ ফুটবল খেলছিলো, বয় ফ্রেন্ড গার্ল ফ্রেন্ডদেরকেও দেখা যাচ্ছিলো ঘনিষ্ঠ হয়ে কোমর জড়িয়ে হাঁটতে, বেশ কয়েকটা গ্রুপকেও দেখলাম গির্জার ভেতর থেকে বের হতে টুরিস্ট গাইডের সাথে। আমি হাঁটছিলাম আর এদিক সেদিক চোখ রাখছিলাম রেজাকে দেখা যায় কিনা, এমনকি যে বারে কফি খেতে যাবে বলে আঙুল দিয়ে ইশারা করেছিলো সেখানেও উঁকি দিয়ে এলাম, ও নেই সেখানেও। একপাশের বেঞ্চিতে দেখলাম বাঙালি কিছু মহিলাকে গল্প গুজব করতে। হয়তো আশেপাশেই কোথাও থাকে এরা। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করেই আমার চোখ সামনের দিকে গেলো, অনেকটা দূরের দিকে তাকালে দেখি রেজা কানে ফোন নিয়ে কথা বলছে, আমি ওকে দেখে ফেলেছি বুঝতে পেরেই ও চট করে মোটা এক গাছের গুড়ির আড়ালে লুকিয়ে গেলো। ওর আচরণটা এতো অদ্ভুত লাগলো আমার যে আমার ইচ্ছে করলো না ওর কাছে হেঁটে হেঁটে যাই, গিয়ে ওকে বলি - কোথায় ছিলে, তোমাকে খুঁজছিলাম। সেদিন ও আমার মুডটা খুব খারাপ করে দিয়েছিলো। ও সামনে আসার পর ওর সাথে আমি আর কথা বলিনি, চুপ করেই ছিলাম। ও বললো চলো, আলী ভাইদের বাসায় তোমাকে নিয়ে যাই। উনারা অনেক চমৎকার মানুষ। মাঝে মাঝে এখানে এলে ভাবীর সাথে দেখা করতে পারো। কিন্তু চাইলেই চট করে বিনা নোটিশে কারো বাসায় যাওয়া যায় না। রেজা ফোন করে আলী ভাইয়ের সাথে কথা বললো, সেদিন উনি বাসাতেই ছিলেন।পরে শবনম রেজাকে বললো আমাকে ওদের বাসায় নিয়ে যেতে। আমার মুড সেসময় ঠিক ছিলো না বলে রেজাকে বললাম, আজ যাবো না। আরেকদিন আসবো ভাবীকে বলে দাও। পরে ফোনে ভাবী আমার সাথে ফোনে কথা বলতে চাইতেই রেজা আমাকে মোবাইলটা এগিয়ে দেয়। অনেক রিকোয়েস্ট করার পর সেদিন ওদের বাসায় যাই প্রথম। এভাবেই শবনমের সাথে প্রথম পরিচয়। শবনমের সাথে মোবাইলটা রেখে ডায়াল লিস্টটা চেক করে দেখি একটাই নাম লাস্ট লিস্টে -- লিয়ানা! এই লিয়ানা আজও পিছু ছাড়ে নি ! এরকম আরও ছোটখাটো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটতেই লাগলো আর ধীরে ধীরে আমার আর রেজার মাঝে একটা দেয়াল তৈরি হলো যা খালি চোখে দেখা যায় না কিন্তু অনুভব করা যায়, কতটা মোটা সে দেয়াল যে চাইলেই সহজে ভেদ করা যায় না, গুড়িয়ে দেয়া যায় না। শুধুমাত্র একটা নারীকে কেন্দ্র করে কারো দাম্পত্য জীবন পুরোপুরি কী অসুখী হতে পারে ? ব্যক্তির আচরণ, চিন্তাভাবনা এসবও অনেকটা প্রভাব ফেলে। রেজার সেসব দিকও আমি ভীষণ ভাবে খেয়াল করতাম। বেশীরভাগ সময়েই ও আমাকে হতাশায় নিমজ্জিত করে দিতো। দীর্ঘ ক্লান্তিকর একটা দাম্পত্য জীবনে এভাবে বয়ে বেড়ানো কতটা দুঃসহ হতে পারে সেটা ভেবেই আমি নিজের মাঝে যেন গুটিয়ে যাচ্ছিলাম। বলে বলে একজন মানুষকে সংসারে মনোযোগী হতে বলা, বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করে তাকে ধরে রাখা, নিজের কাছে বেঁধে রাখাটা নিতান্তই একটা ছেলেমানুষি ব্যাপার। আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি নিজের ইচ্ছায় ঘর রেখে বাইরে মনোযোগী হতে চায়, চুরি করতে চায়, গোপন রাখতে চায় কিছু তাকে অন্তত বলে বলে ফেরানোটা শোভা পায় না। জোর করে, ঝগড়া করে, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপে কোনও সম্পর্ক বেশীদিন দৌড়াতে পারে না, একটা সময় মুখ থুবড়ে পড়ে, এমনটাই আমার মনে হয়।



পুরনো এসব কথা গুলো ভেবে আমার মাঝে কিছুক্ষণ আগের যে বিরক্তি, রাগের অনুভব গুলো ছিলো , সেটা আস্তে আস্তে মিইয়ে আসে। কোনও বোধই এখন আর কাজ করে না। ঘুমানোর চেষ্টা করা বৃথাই জেনেও বিছানায় এপাশ ওপাশ করি। আবারো তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হই কিনা বুঝতে পারি না। চোখের সামনে মনে হয় দ্রুত কিছু সড়সড় করে নড়াচড়া করছে। আরও কাছে গিয়ে দেখি একটা স্কার্ফ বাতাসে উড়ছে। এ দেশের ভাষায় স্কার্ফকে বলে 'সার্পা'। হাতে নিয়ে দেখি এটা তো আমার নয়, আর সার্ফ থেকে ভেসে আসা পারফিউমও আমি ইউস করি না। এটা এলো কোথা থেকে রেজাকে জিজ্ঞেস করবো ভাবছি এমন সময় রেজাই এলো খুব উত্তেজিত ভঙ্গীতে, কী ব্যাপার তুমি এই সার্পা নিয়া ঘুরতাছো কেন। অন্যের জিনিস না জিগাইয়া ধরো, কেমন ভদ্রতা জ্ঞান তোমার! ও ভীষণ উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছে দেখে ওকে জিজ্ঞেস করি -

- তুমি এমন করছো কেন রেজা ?এই স্কার্ফ কার আমি জানি না। দেখলাম বারান্দায় কী যেন একটা নড়ছে। এমন সময় দেখি লিয়ানাও ঘরে এসে ঢুকলো। এসেই রেজার সাথে চোটপাট শুরু করে দিলো,

- তোমাকে বলেছি না আমাদের বাসায় এ মেয়েটাকে আনবে না। লিয়ানা আমার দিকে আঙুল তুলে দেখালো। ওকে এ বাসায় কেন নিয়ে আসছো ? তাহলে আমার সাথে থাকার তোমার কী দরকার রেজা ! আমাকে ঠকাচ্ছো কেন ! বলে শব্দ করে লিয়ানা কাঁদতে থাকে।



আমি রেজা আর লিয়ানার মাঝে পড়ে পুরোই বোকা বোকা হয়ে যাই। বলে কী এই মেয়ে, আমি ওর বাসায় এসেছি মানে? ওদিকে রেজাও আমাকে ধমকাতে থাকে, আমি কেন ওকে না জিজ্ঞেস করে এই বাসায় এলাম, এখানকার ঠিকানা কোথায় পেলাম ইত্যাদি বলে। ওকে পরমুহূর্তেই ব্যস্ত হতে দেখা যায় লিয়ানাকে নিয়ে। মন খারাপ করো না লিয়ানা, বেইবি আমার। ওর মাথায়, চুলে হাত বুলাতে থাকে রেজা, কপালে চুমু খায়। ভাবটা এমন যেন এখানে আমার কোনও অস্তিত্বই নেই, দুজনে দুজনার - লিয়ানা-রেজা, রেজা-লিয়ানা ! ওদের মাঝে কাবাবের হাড্ডি হতে ভালো লাগছিলো না বলে সেই বাসা থেকে চলে যাওয়ার জন্য গেটের দিকে পা বাড়াই। কিন্তু লিয়ানা দৌড়ে এসে আমার পথ আটকায়, বলে - আমার সার্পা নিয়ে কোথায় যাচ্ছো লোভী মেয়ে ! বলে টান মেরে আমার হাত থেকে সেটা ছিনিয়ে নেয়। আমি আর বলতে পারলাম না এটা আমার স্কার্ফ ! কী অদ্ভুত ! আমি আমার চক্ষু লজ্জার জন্য কিছু বলতে পারলাম না লিয়ানাকে। একটা আক্রোশে ভেতরটা ফেটে যাচ্ছিলো আর ভীষণ অস্থির লাগছিলো। ঘুম ভাঙলে বুঝি পুরোটাই স্বপ্ন ছিলো। এরকম একটা ওর্থলেস স্বপ্ন দেখার কী মানে ছিলো এই মুহূর্তে কে জানে ! এজন্যই মুরুব্বীরা বলে অসময়ে ঘুমাতে নেই।



এখন কয়টা বাজে দেখার জন্য মোবাইল হাতে নেই। সন্ধ্যা হয়ে গেছে বাইরে এতক্ষণে। সাড়ে আটটা বাজে। রেজা তো বলেছিলো তাড়াতাড়িই চলে আসবে, এলো না তো ! না আসুকগে। বাসায় এসেই বাহানা দেয়া শুরু করবে, আমি না জিজ্ঞেস করলেও। ওর মিথ্যা কথাগুলো আমি বুঝতে পারি এখন, আগে বিশ্বাস করতাম। ও মিথ্যা বলে এটা যেহেতু বুঝতেই পারো তাহলে এখানে আছো কেন ওর সাথে, চলে যাও। ওকে সরাসরি বলতে পারো না , রেজা তুই একটা মিথ্যুক। আমি ধমকে উঠি আমার আরেকটা সত্ত্বাকে। আহ হচ্ছে কী নুহা এসব। তুই তোকারি করছ কেন ?



চলবে

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:১০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

চলুক , চলতেই থাকুক

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৫৯

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আচ্ছা

২| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: সমস্যার মূল পাওয়া গেছে ! লিয়ানার গায়ে পিঁপড়া ছেড়ে দেয়ার ব্যাবস্থা করতে হবে !

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হুম দেখি পিঁপড়া কই পাওয়া যায় !

৩| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৫

মাহমুদুল হাসান অনিক বলেছেন: :( :( :( :(

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ইমোটিকন !!!

৪| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:১৯

ভিয়েনাস বলেছেন: ছুটির দিন বলেই হয়তো একটু বড় লেখা পাওয়া গেল। বুঝা যাচ্ছে লিয়ানা সমস্যা বিরাট সমস্যা হয়ে আসছে ।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ছোট দেই বলে অভিযোগ আসে, তাই বড় করেই দিলাম। লিয়ানার সমস্যা কোন পর্যন্ত গড়ায় দেখা যাক

৫| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৭

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
এই পর্ব একটু বেশি দীর্ঘ।
তবুও পড়তে ভলোই লাগছে।
চলুক... শুভকামনা।।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ দূর্জয়

৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ২:৩৪

মাহমুদুল হাসান অনিক বলেছেন: একটানে ৫ থেকে ১৭ পর্যন্ত পড়ে ফেললাম আগে খেয়ালই করি নি যে এটা উপন্যাস

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: একটানে ১৭ পর্যন্ত পড়ার জন্য ধন্যবাদ অনিক

৭| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:১৫

মামুন রশিদ বলেছেন: আপাতত ভাললাগা জানিয়ে গেলাম ।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ভালো লাগলো জেনে ধন্যবাদ মামুন ভাই

৮| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫০

নির্জন শাহরিয়ার বলেছেন: :-B

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পড়লেন ?

৯| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:৪২

হাসান মাহবুব বলেছেন: একে তো মন মানসিকতায় বিশাল ফাড়াক তার ওপর অসততা। এ সম্পর্ক টিকবে বলে মনে হচ্ছে না।

কর্নেত্তো কিরকম খাবার?

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: যে কোনও সম্পর্কের অসততা শেষ পর্যন্ত ভালো ফল বয়ে আনে না।

কর্নেত্তো এক ধরণের রুটি, গরম গরম খেলে খুব সফট থাকে। এতে চিনির সিরা দেয়া হয়, চকলেটের ফ্লেভারও থাকে আবার এসব ছাড়াও রুটি বানানো হয় , বিভিন্ন আকৃতির। অনেক টেস্টি, না খেলে বুঝবেন না !!!

১০| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: এনাউন্সমেন্ট হলে আমি উথে গিয়ে টিকিট পাঞ্চ করি
বারান্দায় গিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করতো লিওনার সাথে

এই পর্বের ডিটেইলিং ভালো লেগেছে। আর রেজাকে তো আরও খারাপ মনে হচ্ছে এখন। উপযুক্ত সুযোগ পেলে সম্পর্কটা ভেঙে দেওয়া উচিত নুহার, কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা ততটা সুবিধার না...

দেখা যাক পরের পর্বে।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: উঠে আর লিয়ানা -- এই দুটো ঠিক করে নিয়েছি। ধন্যবাদ।

আসলেই নুহার উচিত সুযোগ পেলে যোগ্য জবাব দেয়া নুহাকে।

১১| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১১

নীল কথন বলেছেন: ঘটনায় আরো ধোঁয়াশায় ডুবতেছে।
হাজিরা দিয়ে গেলাম। :)

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:০০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হাজিরা গননা করা হলো

১২| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১:৪৩

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: পুরোটা পড়তে পারিনাই । বাকি টা পড়ে কমেন্ট করবো। এমনিতে আমার ভাল লাগছে সব কয়টাই।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ধন্যবাদ সুজন ভাই।

১৩| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২৬

গোর্কি বলেছেন:
যে কোনো সম্পর্কের ভেতর বিশ্বাস আর ভালবাসা বিশুদ্ধ হলে তৃতীয় ব্যক্তি কোনো ব্যাপারই না। সাথে থাকছি। দেখি, কোথাকার জল কোথায় গড়ায়!

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৪

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: ব্যাপারটা সেটাই। সম্পর্কে বিশ্বাস থাকা জরুরী যেটাকে আমরা সততা বলি।
আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

১৪| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫২

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: নুহার রেজাকে পিঠানো উচিত ছিল ।

ভাল থাকুন আপা । ;)

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সবকিছু সব সময় চাইলেও সম্ভব হয়ে ওঠে না, সমস্যাটা এখানেই ।

তুমিও ভালো থাকো

১৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:০৭

স্বপনচারিণী বলেছেন: রেজাকে একেবারে ভিলেন বানিয়ে ছাড়লেন। ওর তো দেখি বাঁচার আশা নাই।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:১২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: হাহাহাহা , ভিলেনরা তো এখন নায়ক হয়। তাদের কদর বেশি সমাজে !!!
শুভকামনা থাকলো

১৬| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৬

নওরীন ইশা বলেছেন: রেজার প্রতি তিব্র ঘ্রিনা হচ্ছে।আর নুহার জন্ন মায়া লাগছে ।পরকিয়াকে মনে প্রানে ঘ্রিনা করি।।।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩১

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনার তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ ইশা।

একই কমেন্ট দুইবার এসেছে, একটা মুছে দিলাম এজন্য।

১৭| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৪৬

শ্যামল জাহির বলেছেন: সূর্য হতে জোৎস্না'র আলো ধারণ করা মানিক চাঁদ নুহা'র কাছে স্পষ্ট।
সূর্য-চাঁদের এই লুকোচুরি খেলা আরো সুস্পষ্ট হোক।


আছি সাথেই।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:১৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া

১৮| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

আমি ইহতিব বলেছেন: কি করবে নূহা? রেজা আর লিয়ানার সম্পর্কের সবরকম ঈঙ্গিত পাওয়ার পরও কি চুপ করে থাকবে নাকি রেজার সাথে এব্যাপারে সরাসরি কথা বলবে তা জানার আগ্রহ নিয়ে পরের পর্বে যাচ্ছি।

এই পর্বের বর্ণনাগুলো ভালো লেগেছে।

০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৩

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: মানুষ অনুভূতিপ্রবণ বলেই অনেক কিছু করতে যেমন বাধ্য হয়, অনেক সময় সাময়িক মেনেও নেয়।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ

১৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:১৯

অদৃশ্য বলেছেন:





নুহা ১৮ টা দেখে মনে পড়লো যে ১৭টার কিছুটা এখনো পড়া বাদ আছে... ওটাই শেষ করলাম...

নুহার ভেতরের ক্ষোভ ও দ্বন্দগুলো কারন আজ অনেকটা প্রকাশ করে ফেললেন... এটা ডেঞ্জারাস ব্যাপার, মেনে নেওয়াটা খুবই কঠিন...

সামনে বুঝা যাবে নুহা কতটুকু শক্ত স্বভাবের... প্রতিবাদ, যুদ্ধ নাকি ছাড়...


হাসান ভাইকে কর্নেত্তো নিয়ে যেভাবে বললেন তাতেতো মনে হচ্ছে ওটা খাবার জন্য ইতালিতেই যেতে হবে... যেতেই হবে

শুভকামনা...

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১২:২০

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
কিছু কিছু মানুষ আছে সাথে সাথে রিএক্ট করতে পারে না, ধীরে ধীরে ক্ষোভ জমে বার্স্ট করে।
কর্নেত্তো আসলেই মজার খাবার !

আপনার জন্যও শুভকামনা রইলো

২০| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন: “আসলে ব্যাটা মানুষগুলিরে টাইটে রাখন দরকার, বুঝছস? চিংকুর উল্টাপাল্টা কিছু দেখুম তো সোজা বাংলাদেশে যামু গা।”

শবনম ভাবির এপ্রোচটা মন্দ না ;)
সোজা চলার একটা মজা আছে, ঝুঁকি তো একটু থাকবেই!

সার্পা বিষয়ক দুঃস্বপ্নটি তো ভাবিয়ে তুলেছিলো এই পাঠককেও!

শুভেচ্ছা অফুরন্ত :)

০৯ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৫

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আপনাকেও অনেক শুভেচ্ছা রইলো ভাইয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.