নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শাহজাদীর বিয়ে কিভাবে হতে পারে আপনি কি কল্পনা করতে পারেন? আমাদের কল্পনায় যা ভেসে উঠে তার পুরোটাই নাটক সিনেমার অবদান! নাটক সিনেমায় অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাহজাদীদের বিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু? হ্যা কিছুটা কিন্তু আছে! আর সেই কিন্তুর কথাই এখন বর্ণনা করব। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষের মেয়ের গল্পটা আপনাদেরকে বলছি! যে মানুষকে সৃষ্টি করা না হলে এই পৃথিবীটাকেই সৃষ্টি করা হত না! সেই মানুষটির বিয়ে না জানি কেমন অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হয়েছে।
হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর প্রাণ প্রিয় কন্যা হযরতে ফাতেমা (রাঃ) বিয়ের কথা বলছি! হযরত ফাতেমা (রাঃ) এর বিয়ে সহায় সম্বলহীন হযরত আলী (রাঃ) এর সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের প্রাককালে রাসূল (সঃ) আলীকে প্রশ্ন করলেন, দেন মোহর দেবার মত তোমার কাছে কি আছে? আলী জবাব দিলেন তেমন কিছুই নেই! তখন আল্লাহর রাসূল বললেন, তোমার কি তরবারিটাও নেই? আলী (রাঃ বললেন, জ্বি তা আছে! আল্লাহর রাসূল বললেন, সেটাই যথেষ্ঠ! তারপর আলী (রাঃ) বাজারে সেই তরবারিটি বিক্রি করে ৪২০ দিরহাম পান! সেই ৪২০ দিরহাম দিয়েই আলী (রাঃ) তার মোহরানা আদায় করেন। এছাড়াও আলী (রাঃ) এর কাছে একটি পশমী চাদর এবং একটি ভেড়ার চামড়া ছিল! সেগুলোও তিনি তার নববধূ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ আল্লাহপাকে প্রিয় হাবিবের কন্যা ফাতেমা (রাঃ) কে উপহার প্রদান করেন।
বিবাহ সম্পন্ন হয়ে গেলে আল্লাহর রাসূল বললেন, শাদির জন্য ওলিমার প্রয়োজন রয়েছে। সা’আদ (রাঃ) রাসূল (সঃ) এর কথা শুনে বললেন, আমার একটা ভেড়া আছে, তা দিয়েই ওলিমা করা হোক। সাহাবাগণ ওলিমার আয়োজন করলেন।
বিয়েতে আল্লাহর রাসূল নিজ কন্যাকে সামান্য কিছু উপহার প্রদান করলেন। সেই উপহারগুলোর মধ্যে ছিল,একটি চারপায়া,একটি চামড়ার গদি,দুটো মাটির পাত্র,একটি মশক,আটা ভাঙ্গার দুটো যাতা এবং একটি ছাগল ঐ ঐতিহাসিক বিয়েতে আল্লাহর রাসূল প্রদান করেন।
আলী (রাঃ) ছোটকাল থেকেই রাসূল (সঃ) এর বাড়িতে থাকতেন। যার কারণে তাঁর আলাদা কোন বাড়ি ছিল না। বিবাহের পর বাসস্থানের অভাব দেখা দিল। হাবসা বিন নোমান আনসারীর কিছু সংখ্যক ঘর ছিল। তিনি আলী (রাঃ) এবং ফাতেমা (রাঃ) এর সাহায্যে এগিয়ে এলেন। তিনি রাসূল (সঃ) এর দরবারে গিয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এবং আমার সমস্ত সম্পদ আপনার জন্য। আপনি আমার কোন গৃহ গ্রহণ করলে আমি খুবই খুশি হব। এর অর্থ হল তিনি তার বাড়িতে নবদম্পত্তিকে রাখতে চান। তখন তার একটি ঘরে আলী এবং ফাতেমা (রাঃ) সংসার শুরু করলেন।
এটাই ছিল পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষের মেয়ের অনাড়ম্বর বিয়ের অনুষ্ঠান! সেই বিয়েটি আজও ইতিহাসের পাতায় অমর হয়ে আছে! কিন্তু অমর হয়ে থাকার কারণ, না তাদের বিয়েতে লক্ষ লক্ষ টাকা দেনমোহর দেয়া হয়েছিল! না তাঁদের বিয়েতে হাজার হাজার মানুষকে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয়েছিল! না তাদের বিয়েতে আলোকসজ্জ করা হয়েছিল! না তাদের বিয়েতে কোটি টাকার যৌতুক দেয়া হয়েছিল!
প্রিয় ভাই, একটিবার চিন্তা করে দেখুন তো! এই ঘটনাগুলো বুখারী শরীফে কেন বর্ণনা করা হয়েছে। এগুলো বর্ণনা করার একটাই কারণ যেন আমরা এগুলো থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি! আমরাও যেন বিয়েটাকে সহজ ভাবে সমাধান করতে পারি! কিন্তু আজকাল যে রেওয়াজ চালু হয়েছে তাতে একটি বিয়ে সম্পন্ন করতে ছয় মাস আগ থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়! ফার্নিচারের দোকানে ছয় মাস আগেই সব অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়! বিয়েতে দেনমোহর প্রতিযোগিতা করে নির্ণয় করা হয়।
আমার স্মরণ আছে, স্কুলে পড়াকালীন অবস্থায় আব্বার সঙ্গে এক বিয়েতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম! বিয়ে পড়ানোর সময় হঠাৎ করেই তুমুল ঝগড়া লেগে গেল! ঝগড়াটি ছিল দেনমোহর নিয়ে। মেয়ের বাবা বলে, আমার পাশের বাসার বিয়েতেই ৫ লাখ টাকা দেনমোহর করা হয়েছে! আমার মেয়ের বিয়েতে ১০ লাখ করতে হবে! কি অদ্ভুত প্রতিযোগিতা! দেনমোহর বৃদ্ধিতে নাকি আজকাল সামাজিক প্রতিপত্তিও বৃদ্ধি পায়! আমরা আজ অদ্ভুদ মুসলিম জাতিতে পরিণত হয়েছি।
ইদানিং কালের বিয়েতে হাজার হাজার মানুষ খাওয়ানো হয়! শুধু খাওয়ানোটা উদ্দেশ্য হলে আমার কোন কথা ছিল না! কিন্তু বিয়েটাকেও মানুষ ব্যবসায় পরিণত করে ফেলেছে! যত বেশি মানুষকে দাওয়াত করা যাবে তত বেশি উপহার পাওয়া যাবে! অথচ রাসূল (সঃ) বলেছেন, যে বিয়েতে খরচ কম সেই বিয়েতে বরকত বেশি!
২| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:২০
অাব্দুল্লাহ অাল কাফি বলেছেন: খুব ভালো লাগলো,,,,,,,,,
৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৩৩
সামিউল ইসলাম বাবু বলেছেন: অনেক সুন্দর তথ্য
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৬
আদর্শ সৈনিক বলেছেন: আমিও তো বিয়ে করতে চাই,