নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময় মানুষকে কিভাবেইনা বদলে দেয় ,বদলে যাই - বদলে যায় সবাই! আনমনে স্মৃতির পাতা উল্টাই বেছে বেছে জমে থাকা ক্লেদগুলোকে উগলে ফেলে দেই স্বস্তির নিঃশ্বাসের চাদরে নিজেরে জড়াবো বলে! কিন্তু কতটা পারি বা পেরেছি কতটাই বা পারা যায় খুঁতের মাঝে নিখুঁতের বীজ বোনা !
প্রিয় শুভ্র,
লিখবো কি লিখবোনা ভাবতে ভাবতে অবশেষে লিখেই ফেললাম। তোমার হাতে পড়বে কিনা বা পড়লেও পড়ার সময় হবে কিনা আমি জানিনা। কিন্তু কথাগুলো বলতে না পেরে বোবা কান্না'য় দুমড়ে মুষড়ে যাচ্ছিলাম আমি। পড় বা নাইবা পড় সেটা'র দায় তোমার'ই। আমি আজ বলতে না পারলে হয়ত আর কখনই পারবোনা ।
সেদিনটা'র কথা মনে আছে তোমার শুভ্র ?যেদিন কাশফুলের রঙ মেখে মেখে আমাদের ভালবাসা'র শুভ্রতা ছড়িয়ে দিয়েছিলে অসীম দিগন্তে। এক ঝাঁক দুরন্ত বক হেসে হেসে স্বাগত জানিয়েছিল। তোমার বুকে মাথা রেখে শরৎ এর মাতাল জোছনায় কি অস্থিরভাবে শিহরিত হয়েছিলাম আমি, আর তুমি নির্ভরতা'র আলিঙ্গনে ফিস ফিস করে আমায় বলেছিলে ''এভাবেই নির্লিপ্ত হয়ে মিশে থাক সুলোচনা।''
তুমি আমার নাম দিয়েছিলে সুলোচনা। আমার চোখের গভীরে নাকি তুমি প্রশান্তির নদী খুঁজে পাও-শীতল হও সেই সুখের নোনাজলে। কত গোধূলি কেটে গেছে আমার, তোমার বিমুগ্ধ বাক্যবাণে। হিজল বনের পাশ দিয়ে ঘেঁষে যাওয়া সেই বিলাসী নদীটার কথা তোমার মনে আছে? কত সবুজ স্বপ্নের মালা গেঁথে গেঁথে ভাসিয়ে দিতাম উদ্বেলিত স্রোতে। তুমি বলতে ''এ্যাই মেয়ে তোমার আঁচলটা ভাসাওতো দেখি !জোনাকগুলো দিয়ে তোমার শাড়ির আঁচলের কারুকাজ করি।''আমি বলতাম ঠিক আছে।তুমি তখন জোনাকগুলো ধরে ধরে আমার আঁচলের নীচে গেঁথে দিতে। কি অদ্ভূত আলো ছড়াতো ওরা তাইনা ?
আজ এসব শুধুই রঙচটা স্মৃতি'র কাফনে মোড়ানো দুঃস্বপ্ন। আজ শরৎ এর চাঁদের রূপে আকৃষ্ট হয়না বিদগ্ধ মন ,জোনাক পোকাগুলো হাহাকার করে আমাদের খোঁজে ,কাশফুলের পাপড়িগুলো খসে খসে পড়ে অনাদরে। বিলাসী নদী কেমন যেন মিইয়ে গেছে সুতীব্র অভিমানে। আকাশসম দীর্ঘশ্বাস আর হাহাকার ,সমুদ্রসম ক্ষোভ আর কষ্টের নোনাজল মেখে মেখে আমি যেন নিজেই নিজের কাছে ম্রিয়মান হয়ে গেছি ।
তোমার মনে আছে যেদিন তোমাকে এয়ারপোর্টে বিদায় দিতে গেলাম সেদিন তুমি বলেছিলে এইতো কটা দিন ,আমি তোমাকে শীঘ্রই নিয়ে আসব।কিন্তু সেই যে গেলে- বছর পর বছর গেলো ,না তুমি এলে,না আমি গেলাম।
মা নাকি বলেছে, ''ছেলের বৌ কিন্তু কয়েক বছর তার কাছেই থাকবে।''কিন্তু কখনও তুমি আমাকে ভুল করেও একথা বলনি ।ঠিক আছে আমি মেনে নিলাম। আমার বাবা ঐশ্বর্য দিয়ে তোমার ঘর ভরে দিতে পারেনি সেজন্য আমাকে তিলে তিলে কথা'র আগুনে পুড়তে হয়। ঠিক আছে তাও মেনে নিলাম।
তোমার একটাই কথা ,তোমার পরিবার নিয়ে কোন অভিযোগ আমার কাছ থেকে শুনতে চাও না। তাও মেনে নিলাম ,আমি আজ পর্যন্ত তোমাকে কিছু বলিনি। আমার মাষ্টার্স পরীক্ষাটাও তোমারা দিতে দিলে না। আমি জানিনা আমার অপূর্ণতা কোথায় ছিল!
এত কিছু মেনে নেবার পরও আমার আকাশ আজ মেদুর মেঘে ঢেকে যাচ্ছে কেন শুভ্র? তুমি তোমার পরিবারের সকল হাঁ'তে হাঁ করে যাচ্ছ। আমার চরিত্রে কি ঘটা করে কলংক লেপন করে যাচ্ছে আর তুমি কি নির্লিপ্ত! তুমি কি একবারও সত্যতা যাচাই করার প্রয়োজন মনে করলেনা? তুমি কি আমাকে তবে ভালইবাসনি? আমদের একটা স্বপ্নের মতো ভালবাসার জগৎ ছিল,বিশ্বাস ছিল,শ্রদ্ধা ছিল। কিন্তু আজ এসব কোথায় গেলো? তুমি সময়ের স্রোতে কেন বদলে গেলে শুভ্র?
শুনলাম তোমার জন্য আবার পাত্রী দেখা হচ্ছে। তুমি সম্মতি দিয়েছো। আজ আমি তোমাকে ছাড়লাম ,তোমার ঘরও ছাড়লাম। বিশ্বাসের ভিত যেখানে নড়বড় ,যেখানে নারীসত্ত্বাকে অন্ধ আবেগে গিলে ফেলা হয় ,যেখানে স্বার্থের কালো থাবা ওত পেতে থাকে শিকারের লোভে সেখানে আর যাই হোক সংসার হয় না। আমি নিজেই হয়ত তোমাকে চিনতে ভুল করেছি! কোথায় যাব জানিনা!
ঠিকানা কি ছিল কোন কালে না আদৌ আছে ?
সোনার অঙ্গে গাদ পড়েছে
টিপ টিপ বুকের পাঁজর জেলারে'র দাপটে
জঞ্জাল আসলেই জঞ্জাল
এমন গুঞ্জরন বাতাসে ভাসে সেই অব্দি থেকে
মাঝে মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করি অপচ্ছায়া রূপে -----------।
ভাল থেকো এই কথাটা বলতে পারলামনা বলে দুঃখিত।
''সুলোচনা''
০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:২৬
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে মামুন ভাই লেখাটি পড়ার জন্য ।ভাল থাকুন ।
২| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:৪০
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
চিঠি নিয়ে কিছু ফ্যান্টাসি ছিলো, আছে এখনও।
চিঠি বিষয়ক লেখা কিংবা চিঠি পোস্ট তাই এমনিতেই পছন্দ।
তারপর আপনার চিঠিতে ভিন্নরকম দৃশ্যকল্প খেলা করছিলো।
মুগ্ধতা।
০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:৫৩
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: জেনে ভাল লাগল আপনার মতামত দূর্জয় ।
মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম ।
ভাল থাকবেন এবং ধন্যবাদ জানবেন।
৩| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১১:৪২
সময়ের গ্যাঁড়াকল বলেছেন: ভালো লাগলো।।অনেক সাজানো-গুছানো কথা।।
তবে একটা কথা যে ভালবাসা নিতে পারে না তাঁকে ভালবাসা না দেওয়াই শ্রেয়।
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৯:০৭
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ ভাই ।তবে ভালবাসা কি আর অত হিসেব করে আসে ! সময়ের সাথে সাথে সবই বদলে যায় ।আপনজনদের ভালবাসায় ও রং বদলায় ।
কি জানি এমন কেন হয় বা হয়ে যায় !!
ভাল থাকবেন ।
৪| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১১:৪৪
ডার্ক ম্যান বলেছেন: কখনো কাউকে চিঠি লেখা হয় নি বা কারও কাছ থেকে পাওয়া হয় নি। তারপর চিঠি বিষয়ক লিখা পড়তে ভাল লাগে।
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৯:০৪
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: এ যুগে কি কেহ চিঠি লেখে ডার্ক ম্যান ভাই !!!
তাই কেউ আপনাকে হয়ত দেয়নি ।কিন্তু অনলাইনের যুগে সে আশা করা ও বোকামি ।
তবে চিঠিতে যেভাবে মনের কথা উপস্থাপন করা যায় সেটা মনে হয় আর কোন মাধ্যমে যায়না ,।
লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
৫| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ সকাল ৭:৪৯
সায়েদা সোহেলী বলেছেন: ।নাসরিনের চিঠির মায়ায় আটকে গেলাম! !!
+++
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৯:০১
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: বাহ এত সুন্দর করে বলছেন আপুনি ।খুব খুশি জেনে ।লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ সোহেলী আপু।
৬| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ সকাল ৯:৫২
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
মুগ্ধ পাঠ্য +++
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৯:০০
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে কান্ডারি।
৭| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৭
হামিদ আহসান বলেছেন: ঝরঝরে গধ্যে সাবলীল র্বণনা। নানা দৃশ্যকল্পে বোধের গভীরতা অনেক ভাল লাগল......................................
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৫
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: যাক হামিদ ভাইকেও পেলাম এখানে ।ভালই লাগছে পরিচিত মুখগুলোকে দেখে ।লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।প্রথম আলো ব্লগে লেখাটি হয়ত পড়ে থাকবেন আগে ।
৮| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৩
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
মন ছুঁয়ে গেলো
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৮:৪৮
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ মইনুল ভাই ।আপনার মন্তব্যে আমার ও মন ছুঁয়ে গেলো ।
০৪ ঠা মে, ২০১৪ রাত ৮:৫৯
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: আমার একটা প্রশ্ন ছিল ভাইয়া ,আমার লেখাগুলোকে আমি প্রথম পাতায় দেখিনা কেন ?গত দুটো লেখার আগে দুটো লেখা প্রথম পাতায় দেখেছি কিন্তু এখনকার গুলো দেখতে পাচ্ছিনা কিন্তু পাঠক খুঁজে পাচ্ছে ।কারনটা কি? আমি কিন্তু এখন সাধারন ব্লগার ।দুমাস ধরে নিয়মিত পোষ্ট দেবার পর সাধারন ব্লগার হিসেবে গন্য করা হয়েছে ।
৯| ০৫ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৬
সাজিদ এহসান বলেছেন: valo laglo... onno lekha gulo somoy kore pore nebo... suvo kamona
০৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১২:০৬
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ সাজিদ ।ভাল থেকো ।
১০| ১১ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৭
পাখির বাপ বলেছেন: বলতে গেলে চিঠির যামানা অনেকটা হারিয়ে গেছে। শৈশবে-কৈশোরে সুযোগে অনেকের ভালোবাসার চিঠি পরার সুযোগ হয়েছিলো। আপনার লেখাটাতে সেইসরম ভালোবাসার শব্দচয়ন দেখে ভালো লাগলো। +++
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০০
নাসরিন চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটি পড়ার জন্য। চিঠির জামানা হারিয়ে গেছে এস এম এস এর যুগে। আমার লেখাটি প্রথম আলো ব্লগে চিঠি প্রতিযোগিতায় দেয়া হয়েছিল।
ভাল থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:১৭
মামুন রশিদ বলেছেন: যাদুময় বর্ণনা, মুগ্ধ পাঠ!!