নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অটিজম আক্রান্ত শিশুদের সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা জরুরি

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১২

অটিজম-উন্নয়নশীল বাংলাদেশের সামনে একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘ সময় ধরে অজিম সমস্যা জগতজুড়েই আছে। দেশেও এটি আলোচনায়।

সরকারের হিসাব বলছে, প্রতি ৫০০ শিশুর মধ্যে ১টি শিশু অটিজমে আক্রান্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বর্তমানে অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ১৪ লাখ।

আন্তর্জাতিক উদারাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) অটিজম দিবস ২০১৮ সালের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য তুলে ধরে বলছে, পরিবার ও চিকিৎসকদের জ্ঞানের অভাবে অটিজম আক্রান্ত রোগীর সঠিকসংখ্যা নিরূপিত নয়।

এ রকম একটা প্রেক্ষাপটে অটিজম নির্ণয়ের জন্য সীমিত সুযোগেরও সঠিক প্রচারণা নেই। জানিয়ে রাখি সরকারি হাসপাালগুলোতে অটিজম নির্ণয় ও এটি থেকে উত্তরণের জন্য 'শিশু বিকাশ কেন্দ্র' রয়েছে। দু'একটি বাদে অন্য সব হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সুবিধা নেই।

এটি আসলে আমার আলোচনার মূল বিষয় নয়, যে বিষয়টির প্রতি অটিজম দিবস ঘিরে আমি বিষয়টির অবতারণা করেছি, সেটি হলো আপনার-আমার আচরণগত পরিবর্তনটা খুব জরুরি। অটিজম আক্রান্ত শিশু, ব্যক্তির প্রতি আপনার-আমার আচরণটা বদলাতে হবে। আপনি-আমি-আমাদের মনে হতে পারে - সঠিক আচরণই আমরা করছি। এ ধরণের শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল।

যদি তা হয়, তাহলে এটা খুবই আনন্দের খবর। তবে বাস্তবতার নিরিখে আমি কিছু বিষয় এখানে বলতে চাই--- অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসার দরকার আছে । আছে অন্যসব মানুষের মতই তার প্রয়োজনীয় এবং দিনযাপনের অনুষঙ্গগুলোও। কিন্তু সেটি করতে আমরা তাদের উৎসাহিত করি না।

আমি আবারো বলছি- আমরা তাদের উৎসাহিত করি না। এ না-করাটা অপরাধ। এ অপরাধ দু'পক্ষ করছেন, এক পক্ষ হলেন- মা বাবা- আত্মীয় স্বজন। আরেক পক্ষ হলো সমাজ।

পরিবার পরিজন চাইলেও সমাজ এমন একটা চাপ তৈরি করে রাখে।পরিবারের অন্য সদস্যদের অনেকটা করুণাকাঙ্খি হিসাবে সমাজ বিবেচনা করে থাকে। বিষয়টি এমন নয় বাচ্চাটার হার্টে ফুটো আছে, সেটি আপনি কার্ডিয়াক সার্জনের কাছে গিয়ে মেরামত করতে পারছেন। এটি এমন একটা সঙ্কট- একটা শিশুকে নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক সময়ের দরকার হয়।

প্রথমে যদি শিক্ষার কথা বলি- সরকারি বা বেসরকারি স্কুলের ভর্তির ওয়েবসাইটে গেলে আপনি দেখেতে পাবেন অটিজম বাচ্চাদের পড়ার অপশন আছে। আমি এটি বলছি দেশের সবচেয়ে অগ্রসর শহর রাজধানী ঢাকাকে ধরে। কিন্তু অত্যন্ত বেদনার বিষয় হলো , এখানে অটিজম শিক্ষার্থী নেওয়া হয় না।

এখানে সরকারি বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠানই মূলধারার শিক্ষায় অটিজম আক্রান্ত শিশুকে নিতে চায় না। সরাসরি বললে, না নেয়ার জন্য যত রকমের ছুঁতো আছে, তার সবই তারা ধরে রাখেন। আর আপনাকে মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে থাকেন।

এ সুযোগকে সামনে রেখে রাজধানীকে অটিজম বাচ্চাদের জন্য 'বিশেষ স্কুল' প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে অভিভাবকরা পড়িয়ে থাকেন, আর যেহেতু কোন একজন ব্যবসায়ী দয়া করে স্কুল চালান, তাই রাষ্ট্রের এখানে কিছুই করণীয় নেই। করণীয় আছে একটা অবশ্যই - সেটি সুন্দর বক্তৃতা মালা।

বিশেষ স্কুলগুলোর ফি কমপক্ষে মাসে ৪ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সেশন ফি' তো আছেই। একটি স্কুল প্রশিক্ষিত শিক্ষক ছাড়াই দিনের পর দিন স্পেশাল স্কুল চালাচ্ছে, কিন্তু এর কোন প্রশ্ন অভিভাবক করে পারবেন না। করলে তাকে বোঝানো হয়, আপনার বাচ্চার বহু সমস্যা , তবুও দয়া করে যে তাঁরা রাখছেন, এটা একটা বিশাল মাহানুভবতা। আপনি সেটাকে সেলাম না করে উল্টো অভিযোগ অপরাধ করছেন!

একজন অটিজম আক্রান্ত বাচ্চার জন্য চার রকমের থেরাপি দরকার হয়ে থাকে-- কারো ক্ষেত্রে ২ বা এক রকমের।
থেরাপিগুলো হলো--১. ফিজিও থেরাপি, ২. অকুপেশনাল থেরাপি ৩. স্পিচ থেরাপি ৪. বেহেইভিয়ারাল থেরাপি।

সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ফাউন্ডেশন বিনামূল্যে থেরাপি দেয়। রাজধানী ডাকা ছাড়াও ঢাকার বাইরে অনেক জেলায় তাদের কার্যক্রম রয়েছে। তবে সিআরপি প্রতি ৪৫ মিনিটের থেরাপির জন্য ৩৪৫ টাকা। অন্য সব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ৪৫০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা নিয়ে থাকে। তার উপর সিরিয়াল পাওয়া খুবই কষ্টের। কিন্তু এ কষ্ট, সমস্যা এবং থেরাপিস্টের অবহেলার কথা আপনি জানাতে পারবেন না, কারণ অভিযোগ করলে ওরা আপনাকে বাচ্চা নিয়ে সেখানে যেতে ডিসকারেজ করবে।

আপনি বাচ্চাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে আশপাশের লোকেরা বিরক্ত হয়। কারণ আপনার বাচ্চাটি হয়ত হঠাৎ করে হেসে উঠলো, বা কেঁদে ফেললো বা তার অনুভূতি প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়ে সে চিৎকার করলো, লাফালাফি করলো--- এ সব সবার কাছে অস্বাভাবিক। তারপর ফিসফিস করে বলবে-- এমন বাচ্চা নিয়ে রেস্টুরেন্টে কেউ আসে! ওদের দেখি কাণ্ডজ্ঞানও নেই।

ঢাকায় গণিত শেখানোর কোচিং ব্যবসা করে আলোহা। তারা বিশেষ বাচ্চাদের নেয় না। কারণ তাদের সে রকম ক্যাপাসিটি নেই! এটা বলেই তারা বিদায় করেন অভিভাবকদের।

অনেকে আছেন হয়ত আপনার কথা শুনে খবু মন খারাপ করলেন, তারপর ভুলে যাবেন। যখন কোন রেগুলার স্কুলে বাচ্চাকে ভর্তি করতে চাইবেন স্কুলে সবারই এমন একটা ভাব আপনি একটা উটকো ঝামেলা ঘাঁড়ে চাপাতে এসেছেন। এখানে বাচ্চা নিয়ে ঢুকে পরিবেশটা নষ্ট করেছেন।

স্কুলে যাবেন, মাদরাসায় নিয়ে যাবেন--- সবখানে ও তো বসে না। আমরা ওকে নিয়ে কি করবো? খুবই বাস্তবভিত্তিক প্রশ্ন। কিন্তু এটাকে কেউ চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিতে চান না। এমনকি বাবা মা যদি বিশেষ শিশুর জন্য একজন শিক্ষকের বাড়তি বেতনও দিতে চান, তারপরও স্কুল এতে আগ্রহি হয়না।

আমার নিজেরও একজন অটিজম আক্রান্ত বাচ্চা আছে, সে অভিজ্ঞতা থেকে আমি এটা লিখছি।

তবে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর দিক থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সুইমিং পুল অনন্য। বাতিঘর সাংস্কৃতিক স্কুল, নালন্দা অন্যতম। অটিজম আক্রান্ত বাচ্চাদের জন্য সুইমিং দারুণ কাজ দেয়, বিশেষ করে হাইপার একটিভ বাচ্চার ক্ষেত্রে।

হতাশা নয়, কষ্ট। যারা মুখোশ পরে কথা বলেন, তাদের জন্য কষ্ট। কথার চেয়ে বিশেষ শিশুদের জন্য কিছু করার সময় এখন। সে করাটা -তাদের সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা। সেই মানসিকতাই পারে সমাজের বিশেষ শিশুদের জন্য স্বস্তি এনে দিতে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪৮

রোকনুজ্জামান খান বলেছেন: অনেক ভালো লেগেছে....।
শুভ কামনা রইলো.।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫২

মোরতাজা বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৩

মোরতাজা বলেছেন: :)

৩| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১৪

কাবিল বলেছেন: সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই অটিজম প্রতিরোধ করতে হবে। পরিবারে কারো অটিজম অথবা কোন মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা থাকলে, পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে অটিজমের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে পরিকল্পিত গর্ভধারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় অধিক দুশ্চিন্তা না করা, পর্যাপ্ত ঘুম, শিশুর সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন হতে হবে।


পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৯

মোরতাজা বলেছেন: একমত। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.