নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংবাদ তৃষ্ণা ও গণমাধ্যম!

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৪

১.

সংবাদ জানা এবং জানানোর একটা তৃষ্ণা সমাজ-রাষ্ট্রে বহু আগ থেকে চলে আসলেও এর ভেতর নানা কূট-কূটনীতিও কৌশলের প্রয়োগও নতুন ঘটনা নয়।

সংবাদ নিয়ন্ত্রণ চেষ্টা, সংবাদ কর্মীদের হয়রানি উন্নত-উন্নয়শীল দেশে হামেশাই ঘটছে। এ সত্যকে মেনেও সাহসি সাংবাদিকতা সম্ভব এবং সেটি হচ্ছেও। তবে পরিবারের অন্ন সংস্থান বিপন্ন হলে তা অনেক সময় অসম্ভব হয়ে উঠে।

আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ থেকে বলছি, গত দুই দশকে দেশে সাংবাদিকদের জীবিকা সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে। নতুন কাগজ এসেছে, স্যাটেলাইট চ্যানেল চালু হয়েছে। তবে সাংবাদিকদের নিরাপদ জীবিকার সংস্থান হয়নি (সরকারি বার্তা সংস্থা বিএসএস, বিটিভি এবং রেডিও বাদে)।


তবুও সংবাদ, সংবাদকর্মীরা কাজ করেন। এটাকে সমাজারে প্রতি দায় না বলে আমি বলি নেশা থেকে। এ সব সংবাদকর্মী চাইলে জীবনে বহুভাবে নিজের জীবিকা নিশ্চিত করতে পারতেন, সেটি না করে তাঁরা সংবাদের নেশায় মেতে আছেন। নতুন খবর, নতুন একটি প্রতিবেদন নতুন করে পিতা হবার অনুভূতির মত!


২.

সংবাদ মানুষকে নানাভাবে প্রভাবিত করে, সে প্রভাব এবং পরবর্তী সমীকরণ বাস্তবতা মেনে সংবাদের গুরুত্ব একেকজনের কাছে একেক রকম।

গরিব দেশের মানুষের কাছে খবর আর বিত্তবান দেশের কাছে খবরের বৈচিত্র হয়ত ভিন্ন । কিন্তু আবেদন সমান। তাই সংবাদের ভেতরের খবর জানার জন্যও মানুষ আকুল হয়ে ওঠেন।

শূণ্য দশকে আমরা যারা সংবাদ নিয়ে কাজ শুরু করি সে সময়টার সাথে এখনকার সময়টার বিস্তর ফারাক। তবে এটা নিশ্চিতভাবে আমার মত একজন অপাঙতেয় সংবাদকর্মীর উপলব্ধি যে, বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যম গুটিকতক ব্যতিক্রম ছাড়া ঠিক পেশা এবং শিল্প মান উত্তীর্ণ হতে পারেনি।

এ হতে না পারার পেছনে দু’পক্ষই দায়ি-একপক্ষ যারা সংবাদকর্মী। অন্যপক্ষ উদ্যোক্তা। এ দু’পক্ষের মধ্যে যারা সমন্বয় করেন- তাদের আমি পক্ষ না বলে মিডিয়েটর বলি। এ মিডিয়েটররা মিডিয়ায় এক বড় আপদ । তাঁরা নিজেদের দিকটায় সব সময় সামলানানোর চেষ্টা করেন। কর্মীর দিকটা নয়।


তবুও সংবাদ, সংবাদ নিয়ে কাজের লোক ও বার্তা কক্ষ এক ধরণের সম্মোহন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তার সাথে যুক্ত হযেছে গ্ল্যামার সাংবাদিকতা। যেটাকে আমরা টিভি সাংবাদিকতা নামে ডাকি।

যে নামে, বা যে আবরণেই আমরা নিজেদের তুলে ধরিনা কেন, সমাজে সংবাদ, সংবাদ সরবরাহকারীদের নিয়ে নানা রকমের সঙ্কট-সম্মান-সংশয়-অপমান-অসম্মান এবং বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রব্যবস্থার সঞ্চালকদের তল্পিবাহকদের কারণে। সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিক নিয়ন্ত্রণের একটা ফর্মূলা বা তরিকা কিন্তু তল্পিবাহকরাই শিখিয়ে দেন, যেটি রাজনীতিকরা এখন বেশ রপ্ত করেছেন।

৩.

গোড়াতেই যে কথা বলছিলাম- সংবাদের ক্ষুধা-তৃষ্ণা। হাজার খানেক কাগজ, কয়েক হাজার ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যম, কয়েক ডজন টেলিভিশন চ্যানেল এবং ডজন খানেকেরো বেশি রেডিও স্টেশন থাকার পরে সংবাদদের ক্ষুধা মেটেনা ১৬ কোটি মানষের!

এটা নিয়ে কোন সংবাদ মাধ্যম পাঠকের মতামত জানতে চায়নি। প্রেস কাউন্সিল বা প্রেস ইন্সটিটিউটও শুনতে চায়নি, পাঠক আপনার চাহিদা কি?

সংবাদ মাধ্যম বা সংবাদ নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সবারই গৎবাঁধা কিছু তত্ত্ব মেনে সংবাদ পরিবেশনের ছক আঁকা। সে ছকে আটকে আছে সংবাদ। পাঠকের রুচি যে বদলেছে, ডিজিটালাইজেশেনের সুবাধে পাঠক এখন চাইলে যে কোন ধরণের সংবাদ মুহুর্তে জেনে নিতে পারছেন, সেটি আমাদের বার্তা কক্ষ পরিচালকরা জানলেও খুবই কম আমল করছেনা।

দেশীয় সংবাদ মাধ্যমের উপর মানুষের আস্থা কম। এটা ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ। এ আস্থার সঙ্কটের সুযোগটা নিয়ে অনেক সাধারণ মানুষ- অসৎ উদ্দেশে সংবাদ, সংবাদের নামে গুজব কিন্তু বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে-ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রামের মত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আবার বহু ভালো খবরও দিচ্ছে এসব মাধ্যম। বহু নতুন খবরের উৎসও হচ্ছে।

৪.

সংবাদের মূল প্রবাহ বা সূত্র ঠিক রাখেন সংবাদকর্মীরা। সেটাকে আরো পোক্ত করার কাজ করেন বার্তাকক্ষের প্রাজ্ঞজনেরা। সেখানে পরিস্থিতি বিবেচনায় অনেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় বা নিতে বাধ্য হয়। এর পেছনে বড় কারণ নিরাপত্তা। তারপরেই আছে বেতন- ভাতা । চাকুরি হারানোর শঙ্কা। এ রকম চাপে থেকে সংবাদকর্মীরা স মানুষের তৃষ্ণা মেটানোর মত খবর জোগাড়ের আগ্রহ পাবেন না-এটাই বাস্তব এবং সত্য। এ শূণ্য স্থানটা ভরাট করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। কোন বাছ বিচার ছাড়াই ছেড়ে দিচ্ছে খবর। এ সব থেকে কখনো কখনো সৃষ্টি হচ্ছে রামু, কখনো নাসির নগর। আবার কখনো টেকনাফ।

সংবাদ মাধ্যমে দলীয় রঙ, প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার কৌশল আগেও ছিল। এখনো আছে। তবে এ সব ছাপিয়ে নতুন ধারার সংবাদ চর্চা যে একেবারেই হয়নি সেটিও আমি মানি না। বহু সংবাদে মানুষের কাজে লেগেছে। নিরপরাধ মানুষ সাজা মওকুফ পেয়েছে। সে সব উদাহরণ কম হলেও আছে।

সংবাদ মাধ্যমে নিয়ে যে সব প্রতিষ্ঠান পাঠ দান করে সেখানেও চলমান সময় এবং বাস্তবতার নিরিখে পরিবর্তন আসেনি, বার্তাকক্ষের পরিবেশও বদলায়নি, বদলায়নি মালিকদরে আচরণ এবং রাজনৈতিক নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গি।

সংবাদ মাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠ কাজের জায়গা না বাড়ালে সামনের দিনগুলো মানুষ সংবাদ মাধ্যমের চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমেই বেশি আস্থা রাখতে বাধ্য হবে, সেটি এ শিল্পের জন্য ভালো খবর হবে নয়। কারণ এতে সংবাদ মাধ্যমের রাজস্ব বঞ্চনা যেমন বাড়বে, তেমনি সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা ও জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৭

নতুন বলেছেন: মিডিয়া গুলি এখন একটা ব্যবসা মাত্র।

টিভিগুলি মানুষকে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখানোর পথ মা্ত্র। সংবাদ তো সুধু উছিলা।

কাগজের পত্রিকাগুলি এক সময় বন্ধ হয়ে যাবে।
টিভিগুলি অনলাইনের চ্যানেলে পরিনত হবে।

পত্রিকার বিজ্ঞাপন এখন কমে গেছে সেটা সরে এসেছে অনলাইনের বিজ্ঞাপনে।

রাজনিতিক দল তাদের ক্ষমতার জন্য মিডিয়াগুলি নিয়ন্ত্রন করে।

এটা জনগনকে নিয়ে একটা ব্যবসা ছাড়া কিছুই না।

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১২

মোরতাজা বলেছেন: এ সবই এখন এ শিল্পের উদ্বেগ তৈরি করছে!

২| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৩১

আলআমিন১২৩ বলেছেন: বিনা বেতনে শুধুমাত্র একৃডিডেশন কার্ডের বিনিময়ে অনেক সাংবাদিক পয়দা হয়েছে।এরা অধিকাংশই উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ে কাজ করছে। রাস্তার বেকার এখন মাশাল্লাহ ভাল আছে। এদের অধিকাংশই বাড়ি,ফ্লাট করেছে-সাথে চেহারায়ও একটা তেলতেলে ভাব এসেছে।বাইক তো আছেই-কারো আবার ইতিমধ্যে গাড়িও হয়ে গেছে। ওদের জাদুর কাঠি নিয়ে কিছু লিখুন। জাদুর কাঠির মাজেজাগুলি আমাদের মত বোকা পাব্লিক কিছু জানুক।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৩৯

মোরতাজা বলেছেন: একৃডিটেশন কার্ড ওদের নাই ভাই। আইডেনটিটি কার্ড আছে। আমাদের মিডিয়া লিটারিসি না থাকার কারণে ‘সাংবাদিক’ শুনলে আঁতকে উঠি। এ আঁতকে ওঠাকে ওরা পুঁজি করে কিছু করছে- এটা আমিও একমত। এ সব মেনে নেয়ার পরেও আমার মতামত হলো দেশে সৎ সাংবাদিকের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:০০

রাজীব নুর বলেছেন: ভোরে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে পত্রিকা পড়ার মজাই আলাদা। আবার টিভিতে সংবাদ দেখা দারুন ব্যাপার।

০১ লা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৩৯

মোরতাজা বলেছেন: একমত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.