নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প :: যতনে অযনে ভালোবাসার টান

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:৩৪




রিছাং ঝর্ণা, খাগড়াছড়ি
ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া

যত্ন করে কিছু লুকানোর ইচ্ছা আমার কোন কালেই ছিল না। এখনো নেই। কেবল তোমার সাথে সম্পর্কটা লুকিয়েছি। যত্ন করেই লুকিয়েছি। তোমার ডাগর চোখ, শি।ট চাহনি আর ঘাই হরিণীর কামোল্লাস আমি যত্ন করে রেখেছি, আমার নিজের জন্য।

মানুষের নিজের কিছু একটা থাকতে হয়। তুমি আমার দ্বিতীয় প্রেম। তোমাকে আমি যতনে রেখেছি; ছোটি! কতটা পথ পেরিয়ে তোমাকে আমি স্পর্শ করেছি, তোমার চোখের তারায় নিজেকে ডুবিয়ে কতটাক্ষণ কাটিয়েছি-- সে কেবল আমিই জানি। এ জানাটা কাউকে বলতে চাইনি। এমন কি তোমাকেও না।

অনিকেতের মনে পুরনো সব দিনগুলো ছায়াছবির মত ভেসে উঠছে। নিজের ভেতর ডুবে থাকতে থাকতে তার চোখের পাতায় ভেসে উঠে সেই উন্মাতাল ঝরণাজল। তার পাশে দু'জন বসে কাটিয়েছিল বর্ষার একটি দিন দুপুর। সা্দা কাপড়ে, সবুজ পাহাড়ে, শ্বেতোচ্ছল ঝর্ণার জলে--- সব কিছুই ছিল প্রেমময়!

নিজের মুখ থেকেই অজান্তেই বেরিয়ে আসে-- একটা শব্দ! আহা! সব কেমন দূরে সরে যায়। মেঘের মত। হাওয়ার মত। ধুলোর মত।

ছোটিকে কোলে তুলে নিয়েছিল অনিকেত। পানি পারাপার, পানিতে ভেজার পর একটা আস্ত বেলা কাটিয়ে খাগড়াছড়িল সেই রিছাং ঝর্ণার ধারে। নিজেকে লুকিয়ে নিজেকে আবিষ্কারের কী অদ্ভূত নেশায় মত্ত অনিকেত, এখনো সেই সব দিনের কথা তার মনে আছে। মনে থাকবেই না বা কেন! কেউ তাকে এমন যত্ন করে কখনো বলেনি, তুমি হাতটি ধরো। বাটফুলের মত করে তুমি আমাকে উজ্জ্বল করো! ছোটির গলাটা ভারি মিষ্টি। শরীরটা বাঁকানো। শ্যামল রং রমণী। অনিতেকের পছন্দের সব কিছুই তো আছে তার মধ্যে। তার উপর সে যদি হয় তার দ্বিতীয়া তাকে উপেক্ষা করাটা অসম্ভব!

রিছাংয়ের জলে ভিজতে ভিজতে; ভালোবাসার যে পুণ্যস্নান সে করেছে, তার জীবনে এ এক স্মরণীয় বেলা। তবে অনিকেতের নিজেকে প্রকাশগত একটা সমস্যা পুরনো। এ সমস্যাটা ছোটির ক্ষেত্রেও ছিল। নিজেকে মেলে ধরে কিম্বা উন্মুক্ত প্রশংসার জোয়ারে সে ভাসাতে পারেনি তাকেও । এটা তার কাছে ভালো লাগে না। তবুও মানুষ এও পছন্দ করে, এটা তার জানা।

অনিকেত জানে প্রশংসার জোয়ার তুলতে না পারাটা প্রেমের জগতে মানানসই কথা না। যা ইচ্ছা হবে না তাও নাকি বলতে হয়! না বললে সাজে না সব। প্রেমময় ফেসবুকীয় প্রকাশ হয়না। এখানে নাকি প্রকাশ এক অনিবার্য সত্য। এ সত্যকে সে অস্বীকার করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানুষের সুখ দেখে তার পা হড়কে যায়না। মাথা ঘুরে যায় না। বরং তাদের প্রায় সবই লোক দেখানো; এ টুকো অন্তত অনিকেতের জানা।

ফেসবুকে সংযুক্ত পাঁচ হাজার মানুষের অন্তত সাড়ে চার হাজার মানুষকে তো অনিকেত চেনে। বেশি ভালো করে চেনে অন্তত একহাজার মানুষকে। তাদের জীবন, প্রণোয়োল্লাস --- সবই মিথ্যা। তা তো জানে অনিকেত। তবুও --- দেখানোর একটি তৃপ্তি তারা উপভোগ করে। এমন তৃপ্তি উপভোগ অনিতেকের স্বভাবের সাথে যায় না।

ছোটিই প্রথম তাকে টেনেছিল। তিন্দুর জলের মত, সাঙ্গুর স্রোতের মত, সেন্টমার্টিনের দুধ জোছনার সমুদ্রের ঢেউয়ের মত--- প্রেমের টান, কামের টান। যতনে অযনে ভালোবাসার টান। সে টান উপেক্ষা করবার শক্তি হারিয়েছিল অনিকেত। ছোটির কাঁধে কাঁধ রেখে অনিকেত ধরেই নিয়েছিল, জীবন অনেক সুন্দর। ক্ষনিকের সেই সৌন্দর্য তাকে মোহিত করে, আচ্ছন্ন করে রেখেছে পুরোটা জীবন।

বাইরে ঝমঝম করে বৃষ্টি নামছে। জানালাটা খুলে দিলে বৃষ্টির ছাট এসে ভিজিয়ে যাচ্ছে অনিতেকের গাল। নিজেরে ভেতর ফিরে আসে। ছোটির লাস্যময় কিছু ছবি এখনো তারে চোখে ভাসে। ইন্সটাগ্রামে তার কিছু খোলামেলা ছবিও আছে। যদিও এ সব ছবি অনিকেতের দেখতে ভালো লাগে না। তাতে কি। তার চোখে আঁধারে ঢেকে থাকা এক জোনাকী ছোটি। যার শরীর পদ্য পাঠ করতে করতে নিজেই শক্তিমান শরীর-মনো কবিতে রূপান্তরিত হয়েছে অনিকেত।

এখন এত রাতে তার কেন এ সব কথা মনে পড়ছে? এর কোন কারণ নেই। তবুও মনে পড়ছে। কতগুলো বছর দু'জনে অন্য দু'জন মানুষের সাথে শোয়, বাচ্চা পয়দা করে, ভিন্ন এক জীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবুও বৃষ্টি ভেজা এমন রাতে ভেসে উঠে পুরনো স্মৃতি। সেই স্মৃতি কেবল কষ্ট বাড়িয়ে যায়! কষ্ট--- ছোটি!



মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৮

রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর। সহজ সরল ভাষা। খুব ভালো লাগলো।

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:০০

মোরতাজা বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.