নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেডলি ট্রাভেল লাভিং ওয়ান।

মোরতাজা

আমি সাধারণের একজন। বেড়াতে, বেড়ানোর আয়োজন করতে ভালোবাসি।

মোরতাজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

শুভ পর্যটন! শুভ পর্যটন দিবস!!

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:২৮




পর্যটন কর্মী হিসাবে আমি কাজ করি বছর ২১ হবে। নিজের মত করেই করি। এর মধ্যে কিছুকাল পর্যটনের 'নেতাগিরি'ও করেছি। তবে এবারই প্রথম একটা মহামারি কালে বিশ্ব পর্যটন দিবস দেখছি। এ সময়ে যার থিম ধরা হয়েছে- ট্যুরিজম অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট। বাংলায় যাকে বলা হচ্ছে- 'গ্রামীণ উন্নয়নে পর্যটন'।

পেক কাদা মাখামাখির মেঠোপথ, বৃষ্টি ভেজা কাক-শালিকের ওড়াওড়ি, ঘোলা জলে জোছনা উপভোগের গ্রাম আমাদের। ঋতুভেদে পর্যটনের যে বৈচিত্র; সেটি এই বাংলায় সবচে বেশি। সেই দিক বিবেচনায় আমরা গ্রামীণ পর্যটনে এগিয়ে থাকবার কথা। 'থাকবার কথা' এ জন্য বলছি--- আমরা আসলে এ ক্ষেত্রে এগিয়ে নেই।

আমাদের দেশের মানুষের জীবনযাত্রা- গ্রামে, গঞ্জে মানুষের জীবনাচরণ, সংস্কৃতি, হাট বাজার, হস্ত শিল্প, কৃষি; পিঠাপুলি আর আপ্যায়ন---এ সব পর্যটনের দামি পণ্য। যদিও আমাদের অনেকের কাছেই এটা খুবই আজগুবি শোনাবে। তবুও এটাই সত্য। অস্ট্রলিয়াতে গ্রামীণ জীবন উপভোগ করা সবচেয়ে ব্যয় বহুল পর্যটন। নিউজিল্যান্ডেও তাই।

শহুরে জীবনে অভ্যস্ত অথবা শহুরে জীবনের দুর্নিবার সুখের সন্ধান মেলে--- এ ভাবনা মাথায় রেখে আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ভেতরে ভেতরে যে বদলটা হয়েছে, সেটি আসলে সঠিক এবং গঠনমূলক বদল নয়। গ্রাম ও শহরের মেলবন্ধনটা এখানো জরুরী। সে দিকটা উপেক্ষিত। এর পেছনে বহু কারণও নিশ্চয় আছে।

আজকের বিশ্ব পর্যটন দিবসের পর আবার গ্রাম নিয়ে আলোচনা সে অর্থে জমবে না। তবে এ কথা আমি আরো এক দশক আগেও বহু জায়গায় বলেছি। এখনো বলছি---আমাদের মূল প্রডাক্ট গ্রাম এবং গ্রামের মানুষ। বিদেশিরা এটা দেখতেই এখানে আসতে পারেন। এ দেশের মানুষের সারল্য, বিপদের সময়ও হাত নেড়ে অভিভাবদ কিংবা বন্যায় ডুবে যাওয়া ঘরের উপর বসে হাসতে পারে--- আমাদের গ্রাম বাংলার মানুষ। অকপটে বলতে পারে, এক খিলি পান খান। নেন একটু সরবত খান।

এমনকি অভ্যন্তরীণ পর্যটকদের কাছেও গ্রাম আকর্ষণীয় হবে। এর কিছুটা অবশ্য আমরা উপভোগ করি বহু বছর থেকে। তার একটি বিরিশিরি । অন্যটি পার্বত্য চট্টগ্রাম। যড়িও ঠিক গ্রাম নয়, পাহাড় এবং জনগোষ্ঠী মিলিয়ে আমাদের একটা সমন্বতি পর্যটন সেখানে। তবে এর বাইরেও বিশাল জগত রয়েছে গ্রামের।


গোধূলী-- নোয়াখালীর একটি গ্রাম থেকে তোলা ছবি

গ্রাম বাংলার কতশত রকমের বৈচিত্র; সেটি কেবল ঢাকা থেকে দু পা ফেলে বের হলেই সহজে উপভোগ করা সম্ভব। একেকটা গ্রামের মানুষের খাদ্য একেক রকম। একেক রকম তাদের গান বাজনা। ধর্ম চর্চা। কৃষি। ফসল তোলার গান। উৎসব। এ সবই গ্রামীণ পর্যটনের অংশ।

আমরা এ পণ্যকে সাজাতে পারি নানাভাবে। সাজানো হচ্ছেও। কমিউনিটি ট্যুরিজমের ডেভেলমন্টে হবে। সামনে এটি অনেকদূর যাবে। দেশের প্রথম গ্রামীণ পর্যটনের ভিতটা তৈরি হয়েছির লাউচাপড়ায়। এখন সেটি ভিন্ন স্থানে ছড়েয়ে যাচ্ছে। এটাকে আরো অর্গানাইজ করতে হবে। পর্যটকের নিরাপত্তা, উৎসব-প্রকৃতি উপভোগের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য এবং এ খাতে বিনিয়োগ আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগ নিতে হবে। এ উদ্যোগ সরকারি বেসরকারি দু'খাতেই হতে পারে।

আমার ব্যক্তিগত মত- সরকার পৃষ্ঠপোষক হোক। বেসরকারি লোকরাই ব্যবসাটা চালাক। তাহলে এ খাতে সফলতা আসবে।

ওয়াল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড টুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) হিসাব বলছে, ২০১৮ সালে দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৩ দশমিক ৯ শতাংশ অবদান পর্যটন খাতের। ২০১৯ সালে এটি কিছু বাড়লে এ মহামারিকালে এটি কমছে। তবে গ্রামীণ পর্যটন ঘুরে দাঁড়ালে এখাতের অবদান জাতীয় কর্মসংস্থান এবং মোট দেশজ উৎপাদনে বাড়বে--- এট নিশ্চিত করেই বলা যায়।

সংস্থাটি বলছে, মহামারিকালে পর্যটন খাতে সারা বিশ্বে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। লোকসান হবে ২ ট্রিলিয়ন ডলার।

জাতিসংঘের বিশ্ব পর্যটন সংস্থা জানাচ্ছে, চলতি বছরই পর্যটন আবার পুরোপুরি চালু হলে তিনটি দৃশ্য দেখা যাবে। ১. জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক ভ্রমণ ও পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে ৬১ কোটি পর্যটক পাওয়া যাবে। ২. নিষেধাজ্ঞা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থকলে পর্যটক পাওয়া যাবে ৪০ কোটি। নিষেধাজ্ঞা ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকলে পর্যটক পাওয়া যাবে ৩২ কোটি।

আশার কথা হলো ইতোমেধ্যে বহু দেশে পর্যটনের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিচ্ছে। বাংলাদেশও এটি সহসা তুলে না নিলেও গ্রামীণ পর্যটন শিল্পের বিকাশের মাধ্যমে স্থানীয় অর্থনীতিতে একটা বড় ধরণের পরিবর্তন আনা সম্ভব। এ কারণে সম্ভব যে মানুষের অভ্যন্তরীন ঘোরাঘুরি উপর ইতোমধ্যে সরকতার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।

শুভ পর্যটন। শুভ পর্যটন দিবস।

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:৩৯

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: চমৎকার!
ভালো লাগলো!!
গ্রাম আমার প্রিয়, কিন্তু জীবিকার টানে শহরে এসে আটকা পড়েছি, গ্রামে যাবার সময়-সুযোগ বর্তমানে একদমই নেই!!

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪১

মোরতাজা বলেছেন: ঠিক বলেছেন। জীবিন-জীবিকা সবই নগর ভিত্তিক হবার কারণে, আমাদের সবারই একই দশা!

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:১৮

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: বাংলাদেশের পর্যটন খাতে আরও আয় করা সম্ভব। তবে সঠিক নীতি ও কর্মপদ্ধতির অভাবে আমরা আমাদের এই খাতটিকে আরও সমৃদ্ধ করতে পারছি না।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

মোরতাজা বলেছেন: একমত। ধন্যবাদ।

৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:২৮

আমি সাজিদ বলেছেন: আমার দেশের মাটির গন্ধে
ভরে আছে সারা মন
শ্যামল কোমল পরশ ছাড়া যে
নেই কিছু প্রয়োজন
প্রাণে প্রাণে যেন তাই
তারই সুর শুধু পাই
প্রাণে প্রাণে যেন তাই
তারই সুর শুধু পাই
দিগন্ত জুড়ে সোনা রঙ ছবি
এঁকে যাই সারাক্ষণ.....

বাংলাদেশ মানেই গ্রাম বাংলা। গত ইশতেহারে এক হাস্যকর কথা বলেছিল ক্ষমতাসীনরা, 'গ্রাম হবে শহর'।

গ্রাম বরং গ্রামই থাকুক। আধুনিক গ্রাম দেখতে ভীড় জমাক নানা দেশের ভ্রমন পিপাসু মন।

পর্যটন খাতে আমাদের করার অনেক কিছুই আছে। আপনি ভেতরের মানুষ এখাতের। আপনার কথায় আশাবাদী হতে চাই।

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

মোরতাজা বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শুভ পর্যটন।

৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৩৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
২৭ সেপ্টেম্বরঃ কোভিড-১৯ এর অস্থির সময়ে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব পর্যটন দিবস শুভ হোক বিশ্ব পর্যটন দিবস

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪২

মোরতাজা বলেছেন: শুভ পর্যটন।

৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৩

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে ২ লক্ষ ৫৪ হাজার পর্যটক মালয়েশিয়ায় বেড়াতে এসেছিলেন .।
পক্ষান্তরে মালয়েশিয়া থেকে কয় জন পর্যটক বাংলাদেশে গেছে সেই ব্যাপারে কোনো তথ্যই কোথাও নেই ।
তবে এটা 50 জনের বেশি হবে না এটা বলাই বাহুল্য।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৩

মোরতাজা বলেছেন: হুমমম।।

৬| ২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৫

রাজীব নুর বলেছেন: আজও আমাদের দেশে পর্যটন শিল্প অবহেলিত।

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৩

মোরতাজা বলেছেন: ঠিক বলছেন।

৭| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:১১

মুরশীদ বলেছেন: মোরতাজা সাহেব, প্রথমেই ধন্যবাদ ভাল একটি সময়োপযোগী পোস্ট দেয়ার জন্যে। আপনার সব গুলো প্রস্তাবনার সাথে আমি একমত। পর্যটন শিল্পে গ্রাম কে, গ্রামের মানুষকে সম্পৃক্ত করা নিঃসন্দেহে এই শিল্পকে আরো ইনক্লুসিভ করা যাবে ঠিক, কিন্তু আমার প্রশ্ন আমরা সবসময় চিন্তা করি শহরের মানুষ এবং বিদেশীরা গ্রামে যাবে বেড়াতে। কেন? গ্রামের মানুষ পর্যটনের উদ্দেশ্যে শহরে আসবেনা? আমি দেখেছি তিয়েনআনমেন চত্বরের পাশে মাওসেতুং এর সমাধি দেখার জন্যে গ্রাম থেকে আগত হাজার হাজার কৃষক পর্যটক ভোর থেকে লাইন ধরে এক গুছ ফুল কিনে মাওয়ের সমাধিতে রাখছে। আমিও তাদের লাইনে শরিক হয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা দাড়িয়ে ছিলাম। আশ্চর্য হয়েছিলাম গ্রাম থেকে দল বেধে পরিবারের সকলেই এসেছে সমাধিতে শায়িত তাদের নেতা কে দেখতে, বেইজিংকে দেখতে। আমার কথা হল আমরা দেশের আভ্যন্তরীণ পর্যটন কে গুরুত্ব নয়া দিয়ে শুধু বিদেশীদের কিভাবে আকর্ষণ করব তা ভাবি। দেশের ১৭ কোটি মানুষ গ্রাম থেকে শহরে শহর থেকে গ্রামে পর্যটক হিসেবে যাওয়া আসা করলে এর পরিধি অনেক বড় হবে। বঙ্গবন্ধুর সমাধিকে সারা দেশের পর্যটকদের জন্য দেখার সুযোগ করে দিলে আমার মনে হয় মানুষের অভাব হবেনা।

০৩ রা অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:৪২

মোরতাজা বলেছেন: একমত। আমাদের দেশে মানুষ এমনিতেই শহরমুখি। তিয়েনআনমে স্কয়ারে আমিও গেছিলাম ২০০৬ এ। আপনার সাথে একমত। শহরের মানুষ গ্রামে যাবার কথা এ জন্য যে তারা মেখড় হারাচ্ছে। আর বিদেশিরা শহরে এসে পুরোই একটা কৃত্তিম সমাজ দেখেন। তাই শহরেরর পাশপাশি গ্রামে বেশি মনযোগি হওয়া দরকার। আপনি জেনে খুশি হবেন- দেশে এখন অভ্যন্তরীন পর্যটকের সংখ্যা বছরে ৬৫ লাখেরোও বেশি। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.