নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অনুসূর্যকে লেখা রূপকথা

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য

অনুসূর্যকে লেখা রূপকথা

নির্ঝর নৈঃশব্দ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাকে ছুঁইনি কোনোদিন

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৬


কখনো নিজের লেখাগুলি পড়তে পড়তে নিজেকে আশ্চর্য জাদুকর মনে হয়। কেমন আশ্চর্য সুন্দর সব শব্দ আমি লিখে রেখেছি এখানে সেখানে, খাতায়, বটের পাতায়, বাতাসে ও ধূলিতে। কিছু ছাপিয়ে রেখেছি বইয়ের ভিতর, কিছু প্রোথিত আছে মাথার ভিতর। যে আমি চিরদিন দীর্ণ হয়ে আছি সেইসব শব্দের দংশনে। আমি সুন্দর হয়ে ফুটে আছি যেনো বা কুসুম, উত্থিত তরঙ্গ, নিবিড় পাতালের ছায়ায় শুয়ে উত্থিত হয়ে আছি আকাশ চিরে।তার মানে আমিই শব্দ। কিংবা শব্দই আমি।

আমার শব্দেরা ছিলো কোনো ঝিলের জলের ওপর রক্তলগ্ন ডাহুকের চঞ্চুতে। যাকে ছুঁইনি কোনোদিন, তাকে কুসুম বলে ডাকি। তার মানে শব্দ মানে কুসুম। কুসুম, তোমার মুখ কই? শিরার ভিতর রক্ত থই থই। আর বাতাসের স্রোতে দৃশ্য ডুবে গেলে পদতলে শ্রাবণ শেষ হয়ে যায়। ঘাসের বয়স বাড়ে, রোদেরও বাড়ে। তোমার মুখের ছায়া কখনো পড়ে না।

শব্দ সে এক চির-অমৃত অনঙ্গ-শৃঙ্গার। আমি এইসব শব্দশৃঙ্গারের রাতে জেগে থেকে ঘুম যাই দূর নক্ষত্রের দিকে পা টেনে। ঘুমের ভিতর উড়ে বেড়াই মেঘের লোমে পা রেখে। খুঁটে খাই আকাশের তারা, সশব্দে। আকাশের তারা খেতে সুন্দর। সুন্দর মানে তার স্বাদ শ্যাম, চিরহরিৎ চিরহরিৎ। বহুদূর কুসুমের আঙুলের মতো স্বাদ, কখনো তার অশ্রুর মতো স্বাদ।যথা তার তৃষ্ণার্ত জিবের করাত। আশ্চর্যকথা সব নিস্তব্ধতার শব্দ হয়ে সাতস্বরে বাঁধা পড়ে যায় ফুলের দিকে। আমি ফুলের দিকে আগুন হয়ে যাই। আগুন যায় জলের দিকে তাহার তিনটি নাম। কী কী তাহার নাম? রতি, রক্ত, লাল। রতি মানে কী? কিছু না, রতি মানে শৃঙ্গার, এইটা হলো অচেতন। এইটা এক প্রকার শব্দব্রহ্ম, গোপন আগুন। রক্তের ভিতর সারাক্ষণ সারাক্ষণ লাল হয়ে জ্বলে। যথা ব্রহ্মাণ্ড, যথা ব্রহ্মা ইতি আদি।

শব্দ হলো বাক্য গঠ‌নের মূল উপাদান যা এক বা একাধিক বর্ণ ও অক্ষর সমন্বয়ে গঠিত হয়ে থাকে। আমার সেইসব কালো শব্দরা আছে পৃথিবীময়, মহাকাশে আছে তারার আগুনের রূপ। আমি তা কুড়িয়ে এনেছি দশ আঙুলে। ইহা এক ধরনের শক্তি। এই শক্তি সঞ্চালিত হয় শব্দ-তরঙ্গের মিহিন সুতো ধরে । এই তরঙ্গ হলো অনুদীর্ঘ । কোনো মাধ্যমের কণাবলির সংকোচন ও বিস্তারের মাধ্যমে এই তরঙ্গ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সঞ্চালিত হয়।

শব্দ হলো সেই তরঙ্গ, যা বস্তুর কম্পনের ফলে সৃষ্টি হয়। মানুষের কানে এই কম্পন ধরা পড়লে শ্রুতির অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এই তরঙ্গ বায়বীয়, তরল এবং কঠিন পদার্থের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়। ইকোও শব্দ, প্রতিধ্বনি হয়ে নার্সিসাসকে বৃক্ষ ও পাথরে পরিণত করে। শব্দের ধামে আমিও নার্সিসাস একাকার। এক বা একাধিক ধ্বনি একত্রিত হয়ে কোনো অর্থ প্রকাশ করলেই শব্দ হয়। কিন্তু আমার কান শুনতে পায় না, রক্তের ভিতর টের পায়। শব্দই প্রথম এবং পরম। প্রথম গান, ইশারার কর্ণহারি প্রকাশ, স্পর্শাতীত। তারমানে যাকে ছুঁইনি কোনোদিন তাকে শব্দ বলে জানি। নিজেকে ছুঁইনি। তারমানে শব্দ মানে আমি নিজেই। রক্তজবার ছায়ায় চিরদিন চুপিচাপ ঘুম যাই।

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪৫

শায়মা বলেছেন: কখনো নিজের লেখাগুলি পড়তে পড়তে নিজেকে আশ্চর্য জাদুকর মনে হয়। কেমন আশ্চর্য সুন্দর সব শব্দ আমি লিখে রেখেছি এখানে সেখানে, খাতায়, বটের পাতায়, বাতাসে ও ধূলিতে। কিছু ছাপিয়ে রেখেছি বইয়ের ভিতর, কিছু প্রোথিত আছে মাথার ভিতর। যে আমি চিরদিন দীর্ণ হয়ে আছি সেইসব শব্দের দংশনে। আমি সুন্দর হয়ে ফুটে আছি যেনো বা কুসুম, উত্থিত তরঙ্গ, নিবিড় পাতালের ছায়ায় শুয়ে উত্থিত হয়ে আছি আকাশ চিরে।তার মানে আমিই শব্দ। কিংবা শব্দই আমি।


বাহ ভাইয়া !!!


অনেক অনেক ভালো লাগা! :)

২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৫৯

জাহিদ অনিক বলেছেন: শব্দ তরঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে গেলেন। বেশ ভাল লাগলো।

তারমানে শব্দ মানে আমি নিজেই। দারুণ।

ব্লগে আপনাদের নিয়মিত আসা যাওয়া একান্ত কাম্য।

ধন্যবাদ

৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:০২

আহমেদ জী এস বলেছেন: নির্ঝর নৈঃশব্দ্য ,




ছুঁয়ে না দেখলে তো শব্দরা অধরাই থেকে যাবে , তাতে বাক্য হবে কি করে ?
অথচ লিখেছেন কেমন আশ্চর্য সুন্দর সব শব্দ আমি লিখে রেখেছি এখানে সেখানে, খাতায়, বটের পাতায়, বাতাসে ও ধূলিতে .... এরমানে আপনি শব্দকে ছুঁয়ে দেখেছেন । তাদেরকে সাজিয়েছেন মনের মাধুরী মিশিয়ে ।

লেখাটি একটু অস্পষ্ট আর এলোমেলো মনে হলো ।

৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৪৮

রায়হানুল এফ রাজ বলেছেন: মুগ্ধ হয়ে একমনে পুরোটা পড়লাম। অনেক ভালো লেগেছে।

৫| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬

ফাহমিদা বারী বলেছেন: খুব সুন্দর লেখা। মন ছুঁয়ে গেল একরাশ ভালোলাগা।

৬| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:০৬

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন: ফেসবুকে নির্ঝর নৈঃশব্দ্যের ব্লগ লিংক দেখে ক্লিক দিলাম, সম্ভবত দু বছর পর ব্লগে আসা এবং পাসওয়ার্ড উদ্ধার করা, ভালোলাগা জানান না দিলে কেমন হয়!

দাদা, অনেকদিন ফেসবুকে নেই!

৭| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:১৩

ইমন তোফাজ্জল বলেছেন: কী আর বলব ! বাকরুদ্ধ !
যেন ঐশীপাঠ !

৮| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:০১

সালাউদ্দীন খালেদ বলেছেন: বাহ!

৯| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ২:৫০

নক্ষত্র নাবিক বলেছেন: দারুন লাগলো ভাইয়া! আমার কাছে মনে হয়, অনেক শব্দের কেমন একটা ঘ্রাণ থাকে! অনেক গানে শব্দগুলো প্রাণ পায়!
আপনার লেখাটা পড়ার সময় মনে পড়ে গেলো অর্ণব দাদার গান "শব্দ"!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.