নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহস্য গল্প ; ইশিকারি নদী ।

২০ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:২৯

গল্প হলেও সত্যি । খুব ভয়ংকর !ঘটনাটা যে কেউ শুনলে ভয় পাবে । আমি তাদের প্রায় দেখি । আমার বাসা থেকে সামনের দুই টা বিল্ডিং পর একটা দুতলা বাসা । বাসার সামনে খুব সুন্দর রঙের ল্যাভেন্ডার আর লিলি ফুলের সমন্বয়ে বাগান । জাপানিরা ফুল ভালবাসে । বাগান করা সম্পর্কে তাদের খুব সুন্দর জ্ঞান থাকে । ল্যাভেন্ডার ফুল এর বিচিত্রতা আর লিলি ফুলের নেশা করা ঘ্রান । আমি আমার বাসার বারান্দা থেকে কফি খেতে খেতে দেখি । ভদ্রলোক তার স্ত্রীকে অত্যন্ত যত্ন সহকারে লাল রঙের গাড়িতে তুলে । গাড়িটা মোড় নেওয়ার সময় আমার বাসার সামনে দিয়ে যায় । তাদের মনোযোগ ও আমার দিকে আসে । আসলে ব্যাপারটা না চাইলেও ঘটে । তারা একটু সৌজন্য হাঁসি দেয় । এই ব্যাপার গুলো ঠিক প্রথম দিকের ঘটনা । কয়েক মাস তার সাথের মহিলা কে দেখি না । ভদ্রলোক একা একা গাড়ি নিয়ে বের হয় । আবার কিছুদিন হয় আবার আগের দৃশ্য । সেই ভদ্রলোক তার স্ত্রীর সাথে গাড়ি নিয়ে কোথায় যেন যায় । যাওয়ার সময় আমাকে সৌজন্য হাঁসি দিয়ে যায় । কয়েক মাস আবার একই ঘটনা । এরই মধ্যে একদিন । আমার বাসার সামনে ডিনার বেল নামের চব্বিশ ঘণ্টা খোলা একটি বড় দোকান আছে । যেখানে সব সময় প্রয়োজনীয় সব কিছু পাওয়া যায় । সেখানেই ভদ্রলোক এর সাথে আচমকা কথা হল। সে একজন গবেষক এবং চিকিৎসক । সে ভাল ইংরেজি জানে । এখানে নতুন সবার জন্য জাপানিজ ভাষা কঠিন ।আর জাপানিজরা ইংরেজি বলতে চায়না । কিন্তু সে খুব সুন্দর ইংরেজিতেই শুরু করল । তার বাবা বাংলাদেশি আর মা জাপানিজ ছিল । সে আমার বাড়িওয়ালার কাছ থেকে জেনেছে যে আমি বাংলাদেশি । তাই আমাকে সে দূর থেকেই আপন মনে করে । কথাটা শুনে আমার খুব ভাল লাগলো । আমরা আন্তরিক হলাম । আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ,তোমার সাথে যে সে কে ?
সে জানাল ,আমার ওয়াইফ । সে চাইনিজ উইগুর জাতির মুসলিম ।
আমি জানালাম আমিও মুসলিম ।
সে হাসল । আমি জানতে চাইলাম তোমার বাচ্চা নেই । সে একটু অন্য মনস্ক হয়ে গেল ।তারপর দীর্ঘশ্বাস দিয়ে জানাল ,ছিল দুইজন । কিন্তু তারা বেঁচে নেই । আমি আর কথা বাড়ালাম না । তার স্ত্রীর সাথেও আমার বেশ আন্তরিক সম্পর্ক তৈরি হল । তার অল্প কিছুদিন যেতেই বুঝলাম কেমন যেন অদ্ভুত তার আচরন । হয়তো একটু খিঁচুনি রোগ আছে । সে ভাল শিক্ষিত । খুব সুন্দর কথা বলে । আর কেমন করে যেন গভীর ভাবে তাকায় । আর কিছুক্ষণ পর পর দাঁত কিট মিট করে খিঁচুনি দিয়ে উঠে । আমি মনে মনে একটু ভয় পাই । সেই ভদ্র মহিলার আচরন আমাকে ভাবাল । একদিন আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ,তোমাকে মাঝে মাঝে দেখিনা কেন?
সে হাঁসতে হাঁসতে বলল , আমি হারিয়ে যাই ।
আমি কপাল কুঁচকালে ,সে বলে আসলে আমি হাঁসপাতালে অনেকদিন সময় নিয়ে চিকিৎসা নিতে যাই ।
আমি আর তাকে কিছু জিজ্ঞেস করিনা । মাঝে মাঝে বিকেলে এক সাথে হাঁটা হাঁটি করা ,কফি খাওয়া । ভালই চলছিল । তখন রোজার মাস । জাপান এ সেহেরি শুরু হয় মধ্য রাতে । আমি সেহেরি তৈরি করছি ।হঠাৎ কলিং বেল । আমার স্বামী দরজা খুলল । সেই ভদ্র মহিলা । আমাকে আমার স্বামী ডেকে জানাল তোমার বান্ধবী । আমি মনে মনে অবাক । কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না । সে জানাল সে এখন হাঁটতে বের হয়েছে । আমি যেন তার সাথে যাই । আমি কি করব ঠিক বুঝতে পারলাম না । অনেকটা ভদ্রতার খাতিরেই তার সাথে বের হলাম । আর সাথে তার জন্য ইফতার নিলাম । জাপান খুব নিরাপদ । একটা ভরসা আছে । আমি জিজ্ঞেস করলাম ,তোমার স্বামী কোথায় ? সে জানাল ল্যাব এ গিয়েছে । তার একা একা লাগছে তাই সে আমার কাছে এসেছে । আমি তাকে সান্ত্বনা দিলাম । গবেষকদের জীবন এমনই । দিন রাত নেই । কোন নির্দিষ্ট ছুটি নেই । সে পথেই আমার দেওয়া ইফতারি খাওয়া শুরু করল । আমি বললাম বাসায় নিয়ে দুজনে খেয়ো। এমন অনেক কথা বলতে বলতে কখন যে ইসিকারি নদী পার হয়ে গেছি আমার জানা নেই । আমার বুকটা কেঁপে উঠল । জানিনা কেন জানি একটু ভয় ভয় লাগছিল । আমি বললাম আর যেতে হবে না । সেহেরির সময় শেষ হয়ে যাবে । আমার স্বামী রাগ করবে । সে কথাটা এড়িয়ে বলল । বাসার কাছেই আমরা । তোমার গলার লকেটটা কি বাংলাদেশি ?
আমার কিছু ভাল লাগছিল না । আমি বললাম হ্যাঁ ,এবার চল । আমরা অনেকদূর চলে এসেছি ।আমি জানি এটা ইসিকারি নদী । হঠাৎ সে আমার গলা টিপে ধরল । হয়তো মেরে ফেলার জন্য । খুব জোরে ।আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না । আমার হৃৎস্পন্দন বেড়ে গেল । আমার রক্ত প্রবাহ থেমে গেল । আমি জানি না কতক্ষণ তার সাথে জীবন নিয়ে যুদ্ধ করেছি । তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে আমি শুধু দৌড় ।হাঁপাতে হাঁপাতে বাসায় ফিরলাম । কোন শব্দ মুখ দিয়ে বের হলনা । নিজের কানে শুধু আমি আমার আতংকিত হৃৎস্পন্দন শুনলাম । কি ভয়াবহ ! কিছুক্ষণ পর মোবাইলে আজান শুনলাম । দুই তিন দিন পর । সে বাসা থেকে ভদ্রলোক একাই বের হচ্ছে । আমি সাহস করে নিচে নেমে জিজ্ঞেস করলাম ,সে কোথায় । সে শান্ত ভাবে জানাল ,হাসপাতালে । তার স্ত্রী আসলে মানসিক রোগী । তার দুই বাচ্চা কে সে নিজের হাতে মেরে ফেলেছে । কিংবা কোথাও ফেলে রেখে এসেছে । তার জানা নেই । আমার ভিতরের ভয়াবহ আতংক আরও বেড়ে গেল । আমি আর কিছু জিজ্ঞেস করলাম না । কারন বিপদজনক মানুষ আর ঘটনা যত জানব ততো বেশি নিজের চেনা জগত বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে । মানুষের মতো হলেও সবাই মানুষ না ।অদ্ভুত ভয়ংকর কিছু । খুব ভয়ংকর !

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০২

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: ভালো লেগেছে

২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৮:৫১

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আরণ্যক রাখাল ।।আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ।

২| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন !

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৩

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: গিয়াসলিটন ভাই উৎসাহ মানুষকে পৃথিবীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল করে । আপনাকে ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা ।

৩| ২২ শে জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪৩

হাসান মাহবুব বলেছেন: খুব একটু ভালো লাগে নি। ক্যারেকটার ডেভেলপমেন্ট নাই। ফ্ল্যাট। তবে লিখতে থাকুন। শুভকামনা রইলো।

২৩ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:৩৮

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: হাসান মাহবুব ভাইয়া হা হা হা .।।আপনার মন্তব্যটা কিন্তু আমার অনেক ভাল লেগেছে । হা হা হা হা .।সরি ।।ভাইয়া ন্যাচারাল হাসি । থামাতে পারছি না । ঘর হল না ,বাড়ি হল না ।সরাসরি ফ্ল্যাট !!! হা হা হা .।সবার চিন্তা যদি এক হতো আর ভাল লাগার পৃথিবীটা যদি এক হতো এমন তাহলে এমন প্রতিক্রিয়া গুলো ও থাকতো না । অনেক কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ কষ্ট করে পরার জন্য !! অনেক ভাল থাকুন সব সময় ।

৪| ২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৩২

আমিনুর রহমান বলেছেন:


ভীষণ আতকে উঠার মতো ঘটনা তবে পড়ে আতকে উঠতে পারলাম না। সরল সোজা ঘটনা মনে হয়েছে শুধু।
গল্পের মতো করে লিখা হয়ে উঠেনি। চালিয়ে যান একদিন হয়ে যাবে :)

২৭ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১১:৫৭

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: সরল সোজা ঘটনা মনে হয়েছে শুধু!! ধন্যবাদ আমিনুর ভাই আপনার এই লাইনটার জন্য । আমি সরল সোজা ঘটনাই লিখেছি সরল সোজা পাঠকদের জন্য । কঠিন আমি বুঝিনা কিংবা পারিনা । এমন হয়তো আমার ভাবনার জগত এমন সরল সোজা ঘটনায় আক্রান্ত ঠিক গল্প না । ভাল থাকুন । সব সময় ।

৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৫ রাত ৯:০৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ভাল লাগল এমন সম ঘটনার কথা আগেও শুনেছি। আমরা জিনে ধরা বলে থাকি।এমন ই কিছু হবে।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৬:৫১

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: মাহমুদুর রহমান সুজন ।।আমরা যারা মুসলিম তারা নিশ্চয়ই জীন এবং ইনসান কে বিশ্বাস করি । হতে পারে আপনার কথা ঠিক । এছাড়াও এই পৃথিবীতে এবং মানুষের মধ্যে অদ্ভুত কিছু একটা বিষয় আছে .।যা মানুষের মধ্যে রহস্য তৈরি করে কিন্তু সমাধান দিতে পারে না । আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।

৬| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:২৭

Foe বলেছেন: জীবনটা মাঝে মাঝে খুবই রহস্যময়।
খারাপ হয় নি।

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৫

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.