নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

যৌতুকের আধুনিক রূপ বেশি বেতনের বড় চাকুরে বউ!

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:২১



সত্য ঘটনা:আমার পরিচিত এক আপু। ধরলাম তার নাম ফারহিনা (ছদ্ম নাম) । এই তো কয় বছর আগে একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তে চাকুরি করছিলো। ঐ যে পরিবারের চাপ। সমাজের কথা। আপনি কি একা। এক সময়ের ঢাবির তুখোড় ছাত্রী। বিতর্ক, কবিতা, অনুষ্ঠান উপস্থাপনা। বলা যায় রূপে গুনে সব দিক থেকেই সেরা। চারপাশের নারী নির্যাতন আর স্বার্থপরতা দেখে সে বিয়ে করতে চাইতো না। তাছাড়া সে নিজেও বেশ সচেতন ছিল। কিন্তু প্রকৃতি আর জীবনের নিয়ম। একদিন সবাইকেই চেষ্টা করতে হয় বিয়ে নামক বন্ধনে আবদ্ধ হতে। হঠাৎ একদিন শুনলাম আপু বিয়ে করেছে। আপুর বর কোন বেসরকারি বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তারপর আরো কয়েক মাস শুনলাম আপুর বর সুইডেনে গিয়েছে পড়াশুনা করতে। এইতো পিএইচডি না এম এস যেন। তারপরে আরো কয়েকমাস পর। শুনলাম আপুকেও যেতে হবে। কর্মস্থলে বরকে ছাড়া একা আছে। সবাই বাজে বকতো। কিন্তু উঠতি ক্যারিয়ারের এই সময়ে বিদেশে গেলে নিজের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়বে।। এই দিকে দূরত্বের কারনে নিজের দাম্পত্যজীবন ও হুমকিতে পড়লো। বাধ্য হয়ে যেতে হলো বরের কাছে। সেখানে যেন আরেক বাস্তবতা। নতুন দেশ। মানিয়ে নেওয়ার নানা রকম লড়াই। ভেবে ছিলো উচ্চ শিক্ষা নিবে। কিন্তু কপালে জুটলো না। বর ভেবেছে উচ্চ শিক্ষা নিতে গেলে টাকা জমানো হবে না। দুজন পড়তে গেলে অনেক সমস্যা। ধীরে ধীরে মনেহল সে তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলছে। সবারতো আর স্কলারশিপ হয়না। নিজ খরচে পড়া অনেক কঠিন। কাজ করে টাকা আনে বর সে টাকা নিজের কাছে এই প্রয়োজন ঐ প্রয়োজনের কথা বলে নিজের অধিকারে নেয়। কোম্পানি চাকুরিতে দীর্ঘদিন ছুটি নেই। তাই দেশে রেখে আসা চাকুরিটা হারাতে হলো। শুরু হয়ে গেলো তার অসহায়ত্ব নিয়ে পৃথিবীর মানুষের তামাশা। ব্যক্তিগত জীবনে চরম অবহেলা। ননদ দেবর শশুড় শাশুড়ি সবাই মিলে মানসিক এবং শারিরীক টর্চার। বিয়ের আগের জমানো টাকা কোথায়? বসিয়ে বসিয়ে তো বউ পালা যায় না। সামাজিক ভাবে হেয় করা। ছেলেকে বাবা মা শশুড় বাড়িতে যেতে দিবে না। যদি তাদের হয়ে যায় ছেলে। সব সময় শাশুড়ি ছেলে আর ছেলের বউয়ের রুমে কান পেতে থাকে। কখনও মা জিজ্ঞেস করে “রাতে আমার ছেলে কি বলল? তোমরা কি কথা বলো? ”
এইদিকে আপুর মুক্তি যোদ্ধা এবং কলেজ শিক্ষক শশুড় বলে, “এতো দেরীতে ঘুম থেকে উঠেছো। রাতে কি করছো? “
আমরা সবাই শুনে অবাক। একজন শিক্ষক এবং মুক্তি যোদ্ধা মানুষের ব্যক্তিগত অভিরুচি এমন হতে পারে। বাস্তবতা ভীষন কঠিন। কেউ কেউ বিশ্বাস করুক না করুক। আমি অন্তত করি। চারপাশে পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত মূল্যবোধেরর যে অবক্ষয় এখনকার এই সময়ে সব সম্ভব। মা যদি নিজের নিজের সন্তান কে নিমর্মভাবে হত্যা করতে পারে। যেখানে মানুষের সর্বোচচ নিরাপত্তা। নির্ভরতার জায়গা। তাহলে একজন শিক্ষক মুক্তি যোদ্ধা কি লোভী হতে পারে না? লম্পট হতে পারে না? অবশ্যই পারে। যখন মানুষের ভিতরের চেতনা আর মানবিক মূল্যবোধ কে অবক্ষয় খেয়ে ফেলে। যদিও আমার দেখা এই অভিজ্ঞতা সাধারন মেয়ে এবং মেয়ের বাবা মায়েদের জন্য দু:খজনক খবর। ফারহিন আপুর শশুড় বাড়ি কুমিল্লা। আপুদের বাড়ি গাজীপুর । পারিবারিক সংস্কৃতি কোন কিছুই মিল নেই।
এই দিকে মানসিক নির্যাতনের কারনে সে মানসিক দিক দিয়ে মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত।
যদি সে ডিভোর্স নেয় সেটা কি অন্যায়ে হবে? নাকি সব নির্যাতন সহ্য করে কোন একদিন সব ঠিক হবে এই আশায় নষ্ট সময়ের স্বপ্ন রচনা করবে।
খুনের হওয়ার চেয়ে ডিভোর্স ভাল। আর সমাজে একাকি ডিভোর্সী হয়ে থাকার চেয়ে মানিয়ে নেয়া অনেক ভাল। তবে তো আর মানাতে বা মানতে পারেনা। সবার একই রকম পরিস্থিতি থাকে না।
এই সমাজকে আরো একটু বুঝতে হবে।যদি কোন কারনে কেউ একা হয়ে যায় তাকে সাধারন স্বাভাবিক ভাবে মেনে নাও। আমরা কতোটা হিংসুট আর লোভী সমাজে বসবাস করছি আমরা নিজেরাও জানি না।
শুধু বলবো যদি ভাই আপনার অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী না হোন এই ভাবে ভদ্র মানুষ সেজে কাউকে বিয়ে করে জীবনটা নষ্ট করবেন না। আর আমরা মেয়েরা সমাজের মানুষের কথায় কান দিয়ে নিজের জীবনটা অনিশ্চয়তা ফেলে দিবেন না। কিছুদিন বান্ধবী র বাসায় গিয়ে শুনলাম তার ননদ নাকি প্রতি মাসে তার বেতন নিজের কাছে নিয়ে নেয়। কারন ভাইয়ের অর্ডার। শশুড় সব সময় ছেলের কান ভারী করতে থাকে। আর তখনই ছেলে গিয়ে বউয়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এমন যদি হতেই থাকে তাহলে জীবন চলবে কিভাবে। তবুও কেউ কেউ সুখেই আছে। একে অন্যকে মেনে নিয়ে। ভালোবেসে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১:২৬

শফিউল আলম চৌধূরী বলেছেন: একজনের একটা ঘটনা দিয়ে এত বড় কঠিন একটা টাইটেল দিয়ে ফেললেন আপু? লাখ লাখ উদাহরণ দেখানো যাবে যেখানে ছেলে "বেকার মেয়ে"কে বিয়ে করছে; এবং কখনোই মেয়ে পরে কত ইনকাম করতে পারবে তা চিন্তা করছে না। এমন একটা টাইটেল ছেলেদের ঘাড়ে চাপানোটা অন্যায়।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪১

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ভাই আপনার কথাটা প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ব্যতিক্রম।যা উদাহরন হয়না। আমি কিন্তু সবার শেষে লিখে ছিলাম। এর মধ্যেও কেউ কেউ ভালো আছে। আমার লেখার উদ্দেশ্য যারা এমন করে তাদের বিরুদ্ধে। একটি পরিবার সুখের জন্য দুজনের সমান ত্যাগ এবং বোঝাপড়ার দরকার। মেয়েরা শিক্ষিত হচ্ছে নিজের জীবনের হাল ধরতে কারও লোভ কে উসকে দিতে নয়। আপনার ভাবনাটা মিথ্যে নয়। অনেক ছেলেরা ভালো এবং তাদের পরিবারও ভালো। তারা ভালোই আছে। কিন্তু এই সমস্যাগুলো ও কিন্তু এখন প্রকট তা অস্বীকার করার উপায় নেই। ধন্যবাদ

২| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:২৩

ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: এক দুইজনের উদাহরণ সবার জন্য প্রযোয্য না। আমার মা চাচিদের আমলে এমন শ্বশুর, শাশুড়ি হয়ত ছিল বেশি। এখন যুগ পালটে গেছে।
আমরা ৪ বোন। সবাই শ্বশুর বাড়ি যথেষ্ট সম্মান নিয়ে আছি, আমার ভাইয়ের বউ ও আছে আদরে, যত্নে।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৯

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: আপু আপনি আর আমি ভালো আছি। আলহামদুলিল্লাহ্‌। আর দুই একজন নয়।শত শত মেয়ের তার নিজের ইনকাম নিজে খরচ করার অধিকার নেই । আপনি সঠিক ডাটা এনালাইসিস করে দেখেন বাস্তব অবস্থা কি। গবেষনা কি বলে?আপনি ভাল আছেন। আপনার চারপাশের পরিবেশ ভালো। তাই আপনার কাছে বেশির ভাগ পরিবারের পরিবারে কি ঘটছে জানেন না। সমাজে আমরা সুখি মানুষের ভান করি। প্রকৃতই অন্দরমহলে বঞ্চনার কথা খুব কম মানুষই প্রকাশ করে।

৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫০

করুণাধারা বলেছেন: লিলিয়ান, ঠিক একই ধরণের কাহিনী আমার চেনা এক মেয়ের জীবনেও ঘটেছে। এমন অনেক স্যাডিস্ট শ্বশুরবাড়িই আছে, এরা উচ্চশিক্ষিত, কর্মজীবী বউকে প্রথমে বেকার করে, তারপর তাকে প্রতি পদে পদে অপদস্থ করে, শুধু বলতে থাকে তুমি কিছু জাননা, কিছু পারনা, কিছু বোঝনা।
এ অভিজ্ঞতা যার নেই সে কিছুতেই এই যন্ত্রণা বুঝবে না।

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৪

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এমন ঘটনা বহু আছে। সামাজিক সচেতনতার দরকার। মেয়েদের ছোট করে দেখার প্রবনতা থেকে এখনও কিছু শিক্ষিত মানুষই বের হয়ে আসতে পারেনি। এমন অনেক শশুড় শাশুড়ি আছে ছেলেকে শশুড় বাড়ি যেতে নিষেধ করে যদি ছেলে পর হয়ে যায়। আবার ছেলের বউকে শিক্ষিত কাজের লোক হিসেবে ট্রিট করে। মান সম্মানের ভয়ে অনেকেই প্রকাশ করে না বা পারিবারিক অশান্তির ভয়ে ও অনেকে সহ্য করে যায়। আপনাকে ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.