নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাস"অরোরা টাউন"পর্ব৯-নুরুন নাহার লিলিয়ান

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৫৯



ধারাবাহিক উপন্যাস"অরোরা টাউন"
পর্ব ৯
নুরুন নাহার লিলিয়ান

হঠাৎ করেই গাঁ টা কেমন ঘেঁমে উঠে। নিজের গায়ে কেমন ভ্যাপসা গন্ধ অনুভব হয়। তবে এই ব্যাপারটা বেশিক্ষন স্থায়ী হয়না। রুমের মধ্যে হিটিং মেশিনের তেমন প্রয়োজন হয় না।
এই ভ্যাপসা গরমে কেমন অস্থিরতা কাজ করে। তবে বাইরে দমকা হাওয়া আছে।
মে মাসের সূর্য একটু বেশি তেজী দ্বীপ্ত। কেমন যেনো মাঝে মাঝে আবার শীত ও অনুভব হয়।

তবে শীতের ভারী পোষাক গুলো গাঁয়ে রাখা যায় না। ঋতু বদলের সাথে মানুষের জীবন যাপনে আসে পরিবর্তন।

বাইরের পরিবেশটায় কেমন একটা পরির্বতনের হাওয়া। শীতকালটা একটু একটু করে বিদায় নিচেছ।আবার কখনও হঠাৎ করেই হালকা তুষাড়পাত হয়। গভীরভাবে মেঘাচ্ছন্ন হয়ে উঠে।কখনও তীব্র রোদ আর দমকা হাওয়ার অদ্ভুত মিতালি। তখন ছাতা মাথায় নিয়ে হোক্কাইডো দ্বীপের ঐশ্বর্যময় প্রকৃতির রূপ উপভোগ করতে বেশ ভালো লাগে।

এর মধ্যে ল্যাব থেকে দুটো ট্যুরে যেতে হয়েছে। বেশ অনেকদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনে খাওয়া হয়নি।

মধ্য দুপুরে বিদীর্ণ দু:খ সুখ গুলো একটু ভিন্ন অনু্ভূতি দিয়ে যায়। ঠিক সময় মতো আজ অরুনিমা মধ্যাহ্ন ভোজে গেলো। মনে মনে মাসাহিকো কে মনে হলো। ক্যান্টিনের ভীড় খাবারের মেন্যু আর সময় সূচি সব ঐ রকম আছে। কিন্তু একটা মানুষের শূন্যতাবোধ অরুনিমার সমগ্র মন ছেয়েঁ রইলো।
কেমন একটা নিঃসঙগতাবোধ
মনের ভেতর কুড়ে কুড়ে খেতে লাগলো। বুকের কোথাও একটা চিন চিন ব্যথা।

হঠাৎ এমন অর্থহীন অনু্ভূতির আরেক নাম কি হতে পারে!
একটু লজ্জা বোধও মনের কোথাও উঁকি দিলো। আবার একটা শাসন ও মনকে নিয়ন্ত্রণ করেছিলো।
অনেক ভাবনার সাথে মনটা এলোমেলো খেলা করতে লাগলো।
ক্লান্ত মন নিয়ে ল্যাবের কাজ করতে হলো। হালকা পিচিছল রাস্তা। এর মধ্যে কেউ কেউ সাইকেল নিয়ে বের হয়েছে। জাপানি ছেলে মেয়েদের কাছে সাইকেল হলো পরম বন্ধু। কারও কাছে সাইক্লেলিং অনেকটা নেশার মতো। কারও কাছে সাইকেল ছাড়া জীবন অচল।

সাপ্পোরো শহরে সাইকেল ছাড়া মানুষ চিন্তা করা যায় না। খুব ছোট বয়স থেকেই এখানকার মানুষজন সাইকেল চালানো শিখে।

বাংলাদেশে একটু একটু সাইকেল চালাতে পারলেও জাপানে আসার পর পুরোদমে রপ্ত করে নিয়েছে।
নি:সঙগ প্রবাস জীবনে সাইকেলও একটা বড় বন্ধু।ল্যাবের কাজ শেষ করেই আজকে সাইকেল বের করলো। মনে মনে ভাবলো কিছুটা সময় সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াবে।

রাস্তার দুপাশে মৃত প্রায় বরফ স্তুপ গুলো একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচেছ।
বরফে আবৃত শহরটা ক্রমশ জেগে উঠেছে।এই পরিবেশে সাইকেল নিয়ে দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে পারলে ভালো হতো।কিংবা ছাতা মাথায় নিয়ে হেটে হেটে শেষ দিগন্তে চলে যাওয়া। হৃদয়ের কতো রকমের শূণ্যতা ঘেরা চাওয়া। ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো খুব স্বাভাবিক ভাবেই উপভোগ করা যায়।

মনে মনে নিজের সাথে বিচিত্র আলাপন। হোক্কাইডো বিশ্ব বিদ্যালয়ের ভেতরে ধীরে ধীরে সাইকেল চালিয়ে যাচিছল। কিছুদূর যেতেই কেউ একজন পাশে সাইকেল নিয়ে এলো। সাইকেলের সাথের মানুষটার যে ছায়া সামনে পড়েছে তা অরুনিমার ভীষন পরিচিত।

অরুনিমা তাকাতেই ছেলেটি হেসে দিলো। কিছুটা সময় নিয়ে সে সাইকেল থেকে নামলো। তারপরে সাইকেল নিয়ে অরুনিমার পাশাপাশি হাটতে লাগলো।

বেশ অনেকটা পথ। দুজন কেউই কিছু বলছিলো না।তারপর একটা জায়গায় এসে মাসাহিকো থামলো। সেই সাথে অরুনিমা ও থামলো।
একটা নিশ্বাস ছেড়ে দিয়ে অরুনিমা কে জিজ্ঞেস করলো," তুমি যে ড্রেসটা গত মাসে পড়ে এই পথেই যাচিছলে সেটা কি বাংলাদেশি নাকি ভারতীয় পোষাক?
অরুনিমা জিজ্ঞেস করলো, " কোন পোষাকটা? "
মাসাহিকো উত্তর দিল," তোমার সাথে আরও দুই একজন ছিলো। ঠিক তোমারই মতো সাজ সজ্জা। তোমাদের সবাইকে পরীর মতো লাগছিলো। "
অরুনিমা বলল," ওহ!বুঝতে পেরেছি। সেই পোষাকটার নাম শাড়ি। সেটা বাংলাদেশি পোষাক। "

মাসাহিকোর চেহারায় আশ্চর্যজনক হাসি। সে খুব আন্তরিকতা নিয়ে আবারও বলল," খুব সুন্দর পোষাক। তোমাকে খুব সুন্দর লাগছিলো।"
মাসাহিকোর প্রশংসা আর কথায় অরুনিমা লজ্জা পেয়ে গেলো। নিজেরও হাসি পেয়ে গেলো। তারপর নিজেকে একটু সামলে নিয়ে বলল," ভারতীয়রা ও শাড়ি পড়ে। তবে তাদের থেকে আমাদের সংস্কৃতি একটু আলাদা। "
মাসাহিকো বলল," আমি ইন্টারনেটে ভারত এবং বাংলাদেশের ইতিহাস সামান্য জেনেছি।"
অরুনিমা বলল," খুব ভাল।"
তারপর মাসাহিকো আবার জিজ্ঞেস করলো, " সেদিন তোমাদের কোন প্রোগ্রাম ছিলো? "
অরুনিমা আন্তরিকতার সাথে বলল," বাংলা নববর্ষ। আমরা অনেক বাংলাদেশি পরিবার একত্রিত হয়ে আমাদের নববর্ষ উদযাপন করেছি।"
মাসাহিকো মজা করে জাপানি স্টাইলে মাথা নিচু করে বলল," লেট শুভ বাংলা নববর্ষ। "
অরুনিমা ওর কিঞ্চিৎ পাগলামি দেখে হেসে দিলো।তারপর বলল," তোমাকে লেট ধন্যবাদ।"

মাসাহিকো বলল," ধন্যবাদ না দিলেও চলবে।মাল্টিকালচারে অনেক দেশের নববর্ষ উদযাপন করা যায়। তাদের জীবন সম্পর্কে ও জানা যায়।"
অরুনিমা হঠাৎ সিরিয়াস হয়ে বলল," নিজ দেশের নববর্ষ কোন কিছুর সাথেই তুলনা হয় না। সবারই নিজ সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত।"
মাসাহিকো বলল," একদম ঠিক। সেই সাথে সারা পৃথিবীর জানা অজানা সংস্কৃতির প্রতি ও আগ্রহ থাকা দোষের কিছু নয়।"
অরুনিমা বলল,"এখন আধুনিক যুগে অনেক মানুষেরই নিজ সংস্কৃতির চেয়ে অন্য সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ বেশি থাকে। কখনও সে আগ্রহবোধ নিয়ে অনেকের গর্ব থাকে। "
মাসাহিকো পাল্টা বলল," মানুষের মধ্যে অজানা অচেনা বিষয়ের প্রতি আগ্রহ থাকবেই।সে আগ্রহবোধটা মানুষের মধ্যে আছে বলেই আমরা পৃথিবীর মানুষেরা নতুন নতুন বিষয় জানতে পারি। নতুন নতুন তথ্য প্রতিনিয়ত যোগ হচেছ আমাদের জ্ঞান ভান্ডারে।"
অরুনিমা বলল," তাই আমরা প্রতিদিনই জ্ঞানী হয়ে উঠছি।হা হা হা। "
মাসাহিকো দুষ্টুমি ভরা কথায় হেসে দিলো। তারপর বলল," এটা কিন্তু সত্যি। যে কারনে আমরা প্রতিদিন একটু একটু করে পরিপক্ব হচ্ছি।"
হঠাৎ অরুনিমা জিজ্ঞেস করলো, " এতোদিন কোথায় ছিলে? তোমাকে ক্যান্টিনে দেখিনি।"
মাসাহিকো খুব আগ্রহ নিয়ে আবেগ জড়ানে কণ্ঠে পাল্টা জিজ্ঞেস করলো, " তুমি আমাকে খুজেঁ ছিলে? "
অরুনিমা খুব হালকা ভাবে বলল," অনেক দিন তোমাকে দেখিনি।"
মাসাহিকো বলল," টোকিওর চিবায় একটি গ্যাস কোম্পানির প্রজেক্টে কাজ শুরু করতে যাচিছ। মাস্টার্স শেষ হলেই জয়েন করবো।বেশ ভালো এবং মর্যাদা সম্পন্ন চাকরি।"
অরুনিমা বলল," অভিনন্দন তোমাকে।"
মাসাহিকো উৎফুল্ল হয়ে বলল," ধন্যবাদ।ধন্যবাদ।ধন্যবাদ।"
অরুনিমা ও মজা করে বলল," স্বাগতম। স্বাগতম। স্বাগতম।"

অরুনিমার দুষ্টুমি ভরা কথা আর হাসিতে মাসাহিকো অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো। চারপাশের প্রকৃতির মতো মাসাহিকোর মনের ভেতরটা ও উষ্ণ হয়ে উঠলো ক্রমশ কোথাও।রক্ত প্রবাহ একটু বেশি চঞ্চল হতে শুরু করলো। সমস্ত লোমকূপ গুলো ঘামে ভিজে উঠলো। বুকের ভেতর কেমন তোলপাড় শুরু হলো।

সব কিছু ঝাপিয়ে মাসাহিকো অসহায় চাতক চোখে একটা গভীর গোপন কথা বলতে চায়।অরুনিমা কি সেই গোপন কথাটা উন্মোচন করতে পেরেছে?
কি অদ্ভূত একটা রহস্য দুজনের সম্পর্কের মাঝে অদৃশ্য দেয়াল করে রেখেছে। সে দেয়ালটা ভীষন কঠিন আর বন্ধুর। তাদের মাঝের সে দেয়ালটা ভাঙা কারোরই সাহস নেই। কি জানি নাকি সম্পর্কের প্রতি বিনয় আর শ্রদ্ধা।হতে পারে আরও অনেক অন্য কিছু।

পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই নিজের ভেতরটা আবিস্কার করতে ব্যর্থ। মাসাহিকো ও নিজের ভেতরের ভাষা প্রকাশ করতে পারছে না।দুজনের মনের আকাশটা যেন ভাষাহীন নিরবতায় ভেসে বেড়াচেছ। এই অদ্ভূত নিরবতায় দুজনেই নির্বাক। তারপর কোন কিছু না বলে। কোন বিদায় না নিয়ে। মাসাহিকো নিশ্চুপ সাইকেলের প্যাডে পা রাখলো। তারপর খুব দ্রুত সাইকেল নিয়ে চলে যাওয়া মাসাহিকোর দিকে তাকিয়ে রইলো। সমস্ত ভাবনা গুলো অরুনিমা কে ঘিরে স্থির হয়ে রইলো। তা কতোক্ষন অরুনিমা নিজেও জানে না।একান্ত গোপনে মাসাহিকো কে কেন্দ্র করে তার চারপাশে কি ঘটে যাচেছ ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না।সাইকেল নিয়ে অনেকটা সময় দাড়িয়ে রইলো। সে সময় ছন্দা এবং পিংকি সাইকেল দিয়ে পাশ দিয়ে যাচিছলো।

ছন্দার ডাকে অরুনিমার ঘোর কাটলো। হঠাৎ ওর চমকে উঠা দেখে দুজনেই হেসে দিলো। তারপর ছন্দা এবং পিংকি কাছাকাছি এলো।
খুব শান্ত ভাবে ছন্দা বলল," আপু এখন সাইকেল চালানো কিছুটা ঝুঁকিপূর্ন। আর কিছুদিন পর আরাম করে সাইকেল চালাতে পারবেন। "
অরুনিমা বলল," এখনও সমস্যা হয়নি। কিছু কিছু রাস্তা বেশ পরিস্কার। আর কোন কোন রাস্তায় একটু ঝামেলা হলে সাইকেল থেকে নেমে পড়ি।"

ছন্দা এক হাতে সাইকেল আর অন্য হাত দিয়ে পিংকিকে দেখিয়ে বলল," আপু ও হচেছ পিংকি। খুব ব্যস্ত মানুষ।তিনটা পার্ট টাইম কাজ করে। তাই সেদিন প্রোগ্রামে আসতে পারেনি। "
পিংকি লজ্জা পেয়ে বলল, " আরে কি বলো! আপু আমাকে একটু ব্যস্ত থাকতে হয়। তাছাড়া এদেশের জীবন খুব কঠিন। আমি নেক্সট ইয়ার থেকে পিএইচডি শুরু করবো। স্কলারশিপ না পেলে নিজ খরচেই শুরু করবো। তাই একটু পরিশ্রম করছি। "
অরুনিমা বলল," আসলেই এখানে জীবনটা কঠিন এবং ব্যয় বহুল। আমি ও ল্যাব করার পাশাপাশি কিছু করবো। কিন্তু কাজ খুঁজে পাওয়া কঠিন মনে হচেছ। "
পিংকি বলল," আপু আমার বরের স্কলারশিপ নেই। ডিগ্রী নিতে খুব কষ্ট হচেছ। তাই আমি নিজে কাজ করে সংসারের ব্যালেন্স রাখছি। সঠিকভাবে সামাজিকতা রক্ষা করতে পারিনা বলে অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হই।"
অরুনিমা বলল," জীবন যুদ্ধে বাস্তবতাই একমাত্র সত্য।সামাজিক ধারনা গুলো প্রতি মূহূর্তে পাল্টায়।"
ছন্দা বলল, " আপু বাংলাদেশের মানুষ গুলো এখানকার মতো কাজ পাগল হলে দেশ অনেক এগিয়ে থাকতো। তবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের দৃশ্যপট ও পাল্টাবে। তারপর সেদিনকার প্রোগ্রাম কেমন লাগলো? "
অরুনিমা উত্তর দিল," ভালো লেগেছে।তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হওয়ায় সবার সাথে পরিচয় আর কথা বলা সম্ভব হয়নি।"
পিংকি বলল," সবার সাথে যে কথা বলতে হবে এমন নয়। কেউ কেউ আমাকে অসামাজিক ভাবে। তবে এটা নিয়ে তেমন ভাবিও না। "
ছন্দা একটু মুচকি হাসি দিয়ে জিজ্ঞেস করলো," ডা: পাপন নামের লোকটার সাথে পরিচিত হয়ে ছিলেন? "
অরুনিমা আন্তরিকতার সাথেই উত্তর দিলো," একদিন শপিংমলে কিছু বাংলাদেশিদের সাথে ওনাকে দেখেছি। সাধারন পরিচয় হয়েছে কিন্তু কেন?

ছন্দা একটু থামলো। কিন্তু পিংকি হেসে দিলো। দুজনে দিজনের চোখের দিকে কোন এক রহস্য নিয়ে তাকালো।
তারপর পিংকি বলল," ডা: পাপন দেখতে যেমন ভেতরটা ঠিক উল্টা। উনি একটা ইন্দোনেশিয়ান ছাত্রীর সাথে লিভটুগেদার করে। উনার নাকি বাংলদেশে স্কুল পড়ুয়া তিনটা বাচ্চা আছে। "
অরুনিমা খুব অবাক হয়। জোরে নি:শ্বাস নিতে নিতে বলে, " দেখলে একদমই বুঝা যায় না। তবে ব্যাপারটা মনেহয় জনপ্রিয় গোপন বিষয়। "

ছন্দা আর পিংকি একসাথে হেসে দিলো। তারপর হাসতে হাসতে পিংকি পুনরায় বলল," জনপ্রিয় গোপন বিষয়!একদম সত্যি। শুনেছি উনার স্ত্রী আবারও প্রাগন্যান্ট।সে ভন্ডামি করে ফেসবুকে আপডেট দেয় যে সে ফ্যামিলি কে খুব মিস করছে। এদিকে ইন্দোনেশিয়ান আনন্দে আত্মহারা। হা হা হা। "
অরুনিমা বলল," এমন একজন মানুষের জন্য পুরো সমাজটার বদনাম। এমন ভদ্রবেশী শয়তান আমাদের সমাজের সব স্তরে। অথচ আমরা সমাজের মানুষগুলো তাদের মতো মানুষের যেকোন সফলতায় তাকে নিয়ে বিগলিত হয়ে যাই।সম্মানের উঁচু স্থানে বসিয়ে রাখি।"

পিংকি একটু সিরিয়াস ভাবে বলল," আমরা চিন্তা করে সম্মান করি না। অন্যকে দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সম্মান করি।"
ছন্দা বলল, " খুব কম মানুষ নিজের বিবেক সাথে নিয়ে চিন্তা করে। বেশির ভাগ তার পাশের মানুষটির কথা দ্বারা প্রভাবিত হয়।"
পিংকিও কথার সাথে একমত হলো।তারপর বলল," যদি কোন ছেলে বা মেয়ের সম্পর্ক ভেঙেগ যায়। আর তারা যখন নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন শুরু করে আমরা সমাজের মানুষ তাদের অতীত আর বর্তমান নিয়ে কথা বলতেই থাকি। কিন্তু ডা: পাপনের মতো অনেক পুৃরুষ অথবা মহিলা আছে একটি সম্পর্কের আড়ালে হাজারো নারী কিংবা পুরুষ নিয়ে মেতে আছে।সেটা নিয়ে কেউ কথা বলে না। কারন সেগুলো আড়ালে থাকে।অনেকেই এমন লোক দেখানো ভন্ডামি করে। "

ছন্দা আবার ও বলল," লোক দেখানো ভন্ডামিতেই এখন সমাজ রঙিন। চিন্তার সঠিক চর্চা এবং বিকাশের সংস্কৃতি বাংলাদেশে নেই। "

তারপর তিনজন সাইকেল নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেলো। চারপাশে অদ্ভূত স্নিগ্ধ পরিবেশ।স্নিগ্ধ বাতাসে সূর্যের হালকা আন্তরিক তাপ। সূর্যের কাছ থেকে আসা সোনাঝোরা রৌদ্রছায়া কেমন পুরো শরীরটা ছুয়েঁ ছুয়েঁ যায়।এমন মন মাতাল করা পরিবেশে নিজেকে মুক্ত বিহঙ্গের মতো মনে হচেছ। বরফে ঢাকা পথটা অল্প কিছুদিনের মধ্যে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়ে সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

এই পরিবেশে তিনজন বাংলাদেশি মেয়ে মনের আনন্দে সাইকেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচেছ। এমন দৃশ্য গুলো নিজের মাতৃভূমি তে কম দেখা যায় বা কোথাও আশা করা যায় না।
সাইকেল নিয়ে তিনজন কিছুটা পথ এক সাথে আসার পর অরুনিমা বলল," আপনাদের দেখলে আমার ভেতরে খুব ভালো লাগা কাজ করে। মনেহয় জাপানের নিরাপদ পরিবেশে সদ্য বিবাহিতা নববধূরা সাইকেল নিয়ে পাখির মতো স্বাধীন ভাবে ইড়ে বেড়াচেছন।"
পিংকি বলল," বাংলাদেশে এখনও নারীকে দমিয়ে রাখার জন্য অনেক রকমের ফাদঁ পাতানো থাকে। প্রতারনার যেনো শেষ নেই। "
ছন্দা বলল, " প্রতারনামূলক কিন্তু এই সুন্দর জীবনকেই ভালোবেসে বেচেঁ থাকতে হয়। "
জীবনের গভীরতম সত্য গুলো জেনে বুঝেই আমাদের জীবন রচনা করতে হয়। আর সে জীবন এবং নিয়তির কাছে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে।

হোক্কাইডো বিশ্ব বিদ্যালয়ের সারি সারি গাছ গুলো শীতের আড়ঁমোড়া ভেঙে একটু একটু করে জেগে উঠছে। আর কিছুদিন পর থেকে তুষাড়কনায় ভেজা শীতল রাস্তা গুলো গ্রীষ্মের দমকা হাওয়ায় আনন্দে মেতে উঠবে। গাছে গাছে ছেয়ে যাবে সব সবুজ আনন্দে।জিংগিস খান আর বারবি কিউ পার্টিতে ব্যস্ত হয়ে উঠবে শিক্ষার্থীরা।

প্রতিনিয়ত যা কিছুই ঘটে যাক জীবন থেমে থাকে না কোন কিছুতে।জীবনের নিয়মকে আটকানো যায় না কোন কিছু দিয়ে।
তাই তিনজন বাংলাদেশি তরুনী জীবনের সব নিয়মকে সঙ্গী করে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। আর পৃথিবীর সব সৌন্দর্য চেয়ে থাকে তাদের স্বাধীন জীবনের পথের দিকে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৯:৫৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বাহ বেশতো!

শেষদিকে বক্তব্য বেশি হলেও সবেই সত্য! তবে গল্পের আমেজটা যেন কেটে গেছে !!

ভাল লাগল

+++++++++++

০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আগামি বই মেলায় সংগ্রহ করতে ভুলবেন না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.