নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার গল্পটা হোক পৃথিবীর সেরা গল্প ।কারন আমি হতে চাই একজন সত্যিকারের জীবন শিল্পী ।

নুরুন নাহার লিলিয়ান

নুরুন নাহার লিলিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাপানে বাংলাদেশি আকাশলীনের কৃতিত্ব।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১০:১৬




তিনিই একজন আকাশলীন। পুরো নাম আকাশলীন বদরুদ্দোজা দিঠি। তার মায়ের স্বপ্ন ছিলো মেয়ে আকাশের নক্ষত্রের মতো হবে। তাই তার নাম রাখা হয়েছিলো আকাশলীন। তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমির (বাফা) ছাত্রী ছিলেন।মাত্র আট বছর বয়স থেকে আকাশলীন নাচের তালিম নেন।তিনি নাচ শিখেছেন ওস্তাদ শিবলী মোহাম্মদের কাছে ‘কত্থক’; ‘সাধারণ নৃত্য’ ও ‘ভরতনাট্যম’ শিখেছেন আব্দুস সাত্তার স্যার এবং দীপা খন্দকার ম্যাডামের কাছে।


ছোটবেলায় মেয়ের শখ দেখে আকাশলীনের মা, প্রয়াত প্রফেসর আখতার জাহান মীর্জা তাঁর অমানুষিক পরিশ্রম ও অক্লান্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের মেয়েকে এমনভাবে গড়ে তোলেন যে সে এক পর্যায়ে কত্থক নাচের জন্য “নতুন কুঁড়ি” প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করে।সে সময় তিনি “জাতীয় পুরষ্কার” অর্জন করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে। তারপর আনুমানিক বিশবছর পেরিয়ে যায়।শিল্পকলার প্রায় প্রতিটি শাখায় তিনি মেধা প্রমান করেছেন।

আকাশলীন নিজে কোনদিন ভাবেননি যে কখনো এমনও দিন আসতে পারে যখন তার মা আর তার পাশে থাকবেন না। একদিন মেয়েকে ঠাট্টার ছলে বলেছিলেন- “আচ্ছা, আমি মারা গেলে কি তুই আর নাচবি না?” আকাশলীন সেদিন বোঝেনি যে এই পৃথিবীর দুর্গম পথটা শুভাকাঙ্ক্ষীর ছদ্মবেশ ধরে আসা হিংস্র সহযাত্রীদের সাথে তাকে একাই পাড়ি দিতে হবে।
এই পৃথিবীতে একজন মানুষ ছিলেন যে আকাশলীনের নাচ সবচেয়ে আগ্রহ নিয়ে দেখতেন। যেদিন টিভিতে অনুষ্ঠান হতো সেদিন যেন খুশীর বন্যা বয়ে যেতো। উনি সবাইকে ফোন করে গর্ব করে বলতেন- “আজকে আমার মেয়ের নাচ দেখাবে টিভিতে, দেখো কিন্তু…!”
মা’র সেই ছেলেমানুষী আনন্দের কথা ভাবলে আজও আকাশলীনের চোখে জল আসে। তবে আজকের চিত্রে নতুন আরেকজন চরিত্র যুক্ত হয়েছে। তিনি হলেন আকাশলীনের স্বামী ডাঃ রিয়াসাত হাসান।
আকাশলীন যদি আজও স্টেজে তার ও তার মায়ের স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে নৃত্য পরিবেশন করতে সক্ষম হয় তাহলে তাতে অবশ্যই তার স্বামীর অবদান অনস্বীকার্য।
সমাজের কোন লোককথায় কান না দিয়ে ডাঃ মো রিয়াসাত হাসান তার স্ত্রীর প্রতিভাকে বিকশিত হতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। শিল্প-চর্চা অনেকেই ধরে রাখতে পারেন না পর্যাপ্ত সমর্থন না পাবার কারণে। কিন্তু আকাশলীনের ক্ষেত্রে এমন হয়নি। তার মা মারা যাবার পর আসলেই সে নিজের শিল্প স্বত্ত্বাকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। বিয়ের পর তার স্বামীর অনুপ্রেরণায় সে আবার শিল্প চর্চায় ফিরে আসেন।

যে স্বপ্ন, যে ভালো লাগা তার মায়ের চোখে ফুটে উঠতো আকাশলীনের নাচ দেখে, আজ সেই রকম আরেকজন গুণ মুগ্ধ দর্শক আকাশলীনের জীবনে ফিরে এসেছে।
শুরু সবাই করতে পারে, কিন্তু চর্চা করে এগিয়ে যাওয়া সব সময় সম্ভব হয় না।

আকাশলীনের গতি ধীর ছিলো কিন্তু তার সংকল্প ছিলো স্থির। তার মা ভালোবেসে প্রতিভার যে চারাটিকে সযত্নে বপন করেছিলেন আজ তা বৃক্ষে পরিণত হয়েছে। আকাশলীন তার অর্জিত সমস্ত সাফল্য তার মায়ের নামে সমর্পিত করেছেন।



( জাপানে পুরুস্কার গ্রহন করার সময়)



(এগারো বছর বয়সে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে পুরুস্কার গ্রহন করছেন)

২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৬ সালে জাপানের হেলথ সাইন্সেস ইউনিভার্সিটি অফ হোক্কাইডোতে আয়োজিত ইয়ার এন্ড কালচারাল কম্পিটিশনে অংশ গ্রহণ করে পরপর তিনবার প্রথম স্থান অধিকার করেছে।
হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট এ্যাসোসিয়েশন প্রতিবছর “বুনকাসাই” ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করে- যেখানে সমস্ত পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা নিজের প্রতিভা প্রকাশের মাধ্যমে নিজ দেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে বিশ্ববাসীর সামনে। ২০১৬ সালে আয়োজিত “বুনকাসাই” ফেস্টিভ্যালে আকাশলীন অঙ্গশগ্রহন করে বাংলাদেশী সংস্কৃতিকে নিজের নৃত্যের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।
আকাশলীনের মায়ের পড়াশোনা করার খুব শখ ছিলো। সে তার মায়ের মতো ফার্স্টক্লাশ ফার্স্ট ছাত্রী ছিলেন না কখনও; কিন্তু তার মা ও বাবার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে- অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে আকাশলীন বর্তমানে পিএইচডি করছেন জাপানে বায়োম্যাটেরিয়ালস ও বায়োইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর।

অবসরে তিনি কবিতাও লিখেন প্রেম ভালোবাসা,প্রকৃতি আর মানবিকতাবোধ নিয়ে।জীবনের ঘাত প্রতিঘাত কে আপন করে নিয়ে দেশ থেকে বিদেশে নিজের মেধার দ্রুতি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। নিজ প্রতিভাগুনে নিজ মাতৃভূমির সমৃদ্ধ সংস্কৃতি কে তুলে ধরেছেন বিশ্ব মানচিত্রে।











যুগ যুগ নারীর জীবনে আসে আলো অন্ধকারের রহস্যময় ছায়া।সবাই সে ছায়াকে অতিক্রম করতে পারেন না। কেউ কেউ সূচনায় থেমে যায়। যারা আকাশলীনের মতো আত্ম প্রত্যয়, পরিশ্রম আর বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যায় তারাই কেবল সময়ের সোনালীগর্ভে বিজয়ের হাসি হাসতে পারে।
আকাশলীন বদরুদ্দোজা দিঠি তেমনি এক অসাধারন নারী




সামু ব্লগ পরিবার থেকে তাঁর জন্য রইলো প্রানঢালা শুভেচ্ছা এবং ভালোবাসা।

তার বর্নিল জীবনের কিছু ছবি:


( স্বামী ডা: মো: রিয়াসাত হাসানের সাথে)


(কোরিয়ায় আনন্দঘন সময়ে তোলা ছবি)




(জাপানি প্রফেসরদের সাথে)


(ঐতিহ্যবাহি মানালি ড্রেসে তোলা ছবি)


( সমুদ্রে আইসড্রিফটিং অভিজ্ঞতা নেওয়ার সময়ে তোলা ছবি)


(জাপানি পোষাক কিমোনো পড়ার অভিজ্ঞতা)


(বাংলাদেশি কমিউনিটির সাথে)


(নীল সমুদ্রে একা একজন আকাশলীন)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯

চাঁদগাজী বলেছেন:


মেয়েটা সফল হিক, সুখী হোক; তবে, এগুলো দরকারী কিছু না।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৩

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: এই যে চাদঁ গাজী।। প্রথম সারির পাজি।।।হোক্কাইড আইল্যান্ড এ বাংলাদেশ যে একটা দেশ আছে অনেকে জানেই না। এই নারীর সফলতা বাংলাদেশ শব্দটা শিক্ষিত শ্রেনীর কাছে সম্মানিত হয়েছে। আর বলেছেন দরকারি কিছু না।
বাংলাদেশে আপনার মতো এমন পাজি টাইপ লোকজন যারা উৎসাহের পরিবর্তে মন নষ্ট করে সব সময় হীন আচরন করা লোকের কারনে এই দেশে কেউ কাজ করতে চায় না। আগ্রহ পায় না।

পৃথিবীর পথে বেচেঁ থাকতে হলে সব কিছুর দরকার আছে। তা বোঝার জ্ঞান আপনার নেই।

২| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:০৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: নুরুন নাহার লিলিয়ান ,




পৃথিবীর দুর্গম পথটা শুভাকাঙ্ক্ষীর ছদ্মবেশ ধরে আসা হিংস্র সহযাত্রীদের সাথে একাই পাড়ি দিয়ে যে মেয়েটি এ পর্যন্ত এসেছেন তার শ্রীবৃদ্ধি ঘটুক ।
আত্ম প্রত্যয়, পরিশ্রম আর বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাওয়া আকাশলীনের বিজয়ের হাসি থাকুক অক্ষুন্ন ।

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:০৫

নুরুন নাহার লিলিয়ান বলেছেন: বিদেশে যেকোন অর্জনই বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করে। পরিচিত করে।।।।আপনাকে
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.