নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মনটা বড়ো বর্ণচোরা। সে নানা রকম বর্ণ ধারণ করতে খুব পটু। এই রঙ হলুদ,নীল, বেগুনী কিংবা আকাশী নয়, অদৃশ্য কিছু হাজার রকম রঙের ছুড়োছুড়ি এ মনে।।ফেসবুকের: অদ্ভুত মানুষ

মধ্যবিত্তের ছেলে

একজন অদ্ভুত মানুষ

মধ্যবিত্তের ছেলে › বিস্তারিত পোস্টঃ

সে আমার হাতের রেখাই ছিল

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২

সন্ধ্যার আগে আগে কারওয়ান বাজারের জ্যামটা খুব অত্যাধিক রকম বাজে হয়। কখনো কখনন শাহবাগ মড় থেকে ফার্মগেট যেতে প্রায় ঘন্টা ২-১ লেগে যায়। আবার যখন সাপ্তাহিক ছুটির দিনটা চলে আসে বাইকে করে রাস্তায় ঘুরার মজাটা বাইকাররাই বুঝে। মঙ্গলবারের এই সাপ্তাহিক বন্ধের দিনটায় আমিও তাই করলাম। তিনজন মিলে ঢাবির জহুরুল হক হল থেকে বের হয়ে পরলাম বাইক নিয়ে। (ঢাবিতে এসেছিলাম ছোট ভাইকে দেখতে, তাছাড়া একসময় আমিও ঢাবির ছাত্র ছিলাম। এখন চাকরি করছি এবি ব্যাংকে, ময়মনসিংহ ব্রাঞ্চে)। অনেকদিন আসা হয় না প্রিয় যায়গাটায়,তাই সময় করে ঘুরতে চলে আসা। যথারীতি সেদিন টিএসসি ঘুরে শাহবাগ হয়ে কারওয়ান বাজার হয়ে বসুন্ধরা সিটিতে যাব।

পান্থপথ সিগনালে সেদিন পুলিশের ডিউটিটা হয়ত একটু কড়াকড়িই ছিল। পুলিশের ইশারায় গাড়ি থামাতে হলো। দুর্ভাগ্য!!গাড়ির কাগজ গুলো নিয়ে আসা হয়নি, বাড়িতে রাখা ছিল। আমাদের পুলিশের বাধায় পরার একমাত্র কারন হলো আমরা বাইকে ৩জন ছিলাম।যা একেবারেই নিশিদ্ধ ঢাকা শহরে। কন্সটেবলকে হাত জোড় করে বলার পরেও মানলো না। বলে, ইনপেক্টর মেডামের কড়া নিশেধাজ্ঞা আছে। কিছুটা বিচলিত হয়ে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম "মেডাম"!!
- জ্বী,মেডাম। আপনি মেডামের সাথে কথা বলে গাড়ি ছাড়িয়ে নিয়ে যান। আমি কিছু করতে পারব না।(কন্সটেবল)
- ভাই, আমাদের ছেড়ে দিয়ে এই উপকারটা করেন না!!প্লিজ।(আমি)
(ভাই ডাকটা শুনতেই অদ্ভুত এক চেহারা তৈরী করে আমাদের সবাইকে কিভাবে যেন দেখছে)
কিছু টাকা হাতে গুজে দেওয়ার চেষ্টা করতেই বলে উঠল, কি!! ঘুষ দিচ্ছেন!??(ক)
(ভেতরে ভেতরে ভাবছি পুলিশ আবার হঠাৎ এত ভাল হয়ে গেল কবে,এখন নিজ থেকে দিচ্ছি বলে বলছে ঘুষ আর অন্য সময় রাতে জোড় করে যখন নেয় তখন তা রসগোল্লা!!)
আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে ইন্সপেক্টর মেডামের কাছে সুপর্দ করে বললেন,
- মেডাম, এই লোক পুলিশরে ঘুষ দিতে চাইতাসে, হাতে নাতে ধরা পরসে। আর মেডাম, তার গাড়িতে তিনজন চলা অবস্থায় আটকানো হইসে।সাথে গাড়ির কাগজপত্রও নাই।
মাথা নিচু করা ছিল। ঘুষ দেওয়ার কথাটা গায়ে খুব লেগেছিল। ইন্সপেক্টর মেডাম আমার অবস্থা দেখে বললেন,
- আপনাকে দেখে মনে হচ্ছে শিক্ষিত ভদ্রলোক। ঘুষ দেওয়া অন্যায়, তা কি জানেন না??(কিছুটা উঁচু গলায়) এদিকে তাকান।
- উনার দিকে তাকিয়ে আমি কিছু একটা বলতে যাব, কিন্তু তা আর হয় নি। কি বলব সব ভুলে গিয়েছি। হা করে তাকিয়ে দেখছিলাম। হঠাৎ, মুখ থেকে বলে ফেললাম, সনিয়া!! তুমি?? আমার এ কথা শুনে সে কিছুটা লজ্জার সম্মুখীন হয়ে পরে। আমি তাই নিজ থেকেই কথা ঘুরিয়ে বললাম, সরি মেডাম।মাফ করে দেবেন আশা করি। গাড়ির কাগজ আনতে ভুলে গেছি। জরিমানা দিতে হলে বলুন,আমি দিয়ে দিব। (আমি)

আমার দিকে তাকিয়ে কথাগুলো সব গলধকরন করছিল। কিছুক্ষন পর...
- মিনহাজ সাহেব? উনাকে যেতে দিন আর পুলিশ বক্সে এসে দেখা করে যেতে বলুন।(সনিয়া)
- কথাগুলো শুনে নিজ থেকেই পুলিশ বক্সে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, সনিয়া বলে ডাকব নাকি মেডাম বলব? (আমি)
- তোমার মুখে মেডাম কথা শুনতে বেমানান
লাগবে। সনিয়াই বলতে পারো এখন। ও!
বসো,দাঁড়িয়ে আছো কেন!!(স)
(বসার এক পর্যায়ে দুকাপ কফির অর্ডার করল)
- কেমন আছো? (স)
- এইত, ভাল। তুমি?(আ)
- হুম, তোমার মতই।(স)
- কিছু বলবে?(আ)
- আসলে তোমার সাথে এভাবে দেখা হবে কখনো
ভাবি নি। প্রত্যেকটা মুহুর্ত আমার কাছে খুব
কাল্পনিক মনে হচ্ছে। (স)
- হেসে হেসে বললাম, বাস্তবে ফিরে আসতে
পারো। না হয় চিমটি কেটে দেখেতে
পারো,কাল্পনিক নাকি বাস্তবিক! হা হা হা।(আ)
- দুষ্টুমি স্বভাবটা এখনো যায় নি বুঝি!! (কফিতে
চুমুক দিতে দিতে বলল)।(স)
- বিয়ে করেছ?(আ)
- না, কারো ক্ষতি করার অপরাধে বিয়েটা করিনি।
তুমি করো নি?(স)
- না। তেমন কাউকে পছন্দ হয় নি, তবে বাবা মা ডাক্তার পড়ুয়া মেয়ে দেখছেন। এবার মনে হয় বিয়ে সেরেই ফেলতে হবে। বয়সের ছাপ পরে গেলে আবার সমস্যা..
(মেয়েটা আজো বদলায় নি, ভার্সিটি পড়ুয়া ওই সাদাসিধে গড়নের সনিয়াই রয়ে গেল। এয়ো বুঝতে পেরেছি আমার কথাটা খুব লেগেছে।)
- তারপর! চাকরি করছ নিশ্চই! (স)
- হ্যা, ৪ বছর হলো এবি ব্যাংকে আছি।
তাহলে, তোমার প্রত্যাশা তুমি পুরন করেছ
শেষমেশ!?? ইন্সপেক্টর সিনিয়া হয়েই গেছো।
congratulation (আ)
- কিছুটা মলিন সুরে বলল, কেন খুশি হও নি?(স)
- না, এমন কিছু না। অবশ্যই খুশি হয়েছি। (কফিটা
অর্ধেক খেয়ে গলা দিয়ে আর নামছে না, মনে
হচ্ছিল কেউ যেন গলা টিপে ধরেছে) দেখা হয়ে
খুব ভাল লাগল, ভাল থেকো। আজকের মত
বিদায় নিচ্ছি। (আ)
আমার এভাবে বিদায় নেওয়াটা হয়ত সে expect করেনি, একটু পর ও নিজ থেকেই বলল...
- তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিল। তোমার
সময় হবে কি? যদি তুমি চাও।(স)
- না করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু মানা করতে পারি নি। কিছুক্ষন চুপ থেকে মনের অজান্তেই বলে দিয়েছি আগামীকাল সোহরাওয়ার্দি উদ্দানের লেকের ওপাশটায় থাকব। তুমি হয়ত চিনতে পেরেছ আমি কোন পাশের কথা বলেছি। বিকেলে চলে এসো।(আ)
(বাম চোখের কোণায় কি যেন টলমল করছিল, আমার চোখ আড়াল করতে পারে নি ও। কখনো পারেও নি। আজকেও না।)
- আমি অপেক্ষায় থাকব। (স)
bye বলেই রুম থেকে বেড়িয়ে সোজা বন্ধুদের কাছে গিয়ে অবস্থা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। গাধাগুলো অযথা আমাকে নিয়ে টেনশন করছিল। সেদিন গাড়ি চালাতে আর সাহস পাচ্ছিল না। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি চায়না মোবাইলের ভাইব্রেটরের মত হাত কাঁপছে। এদিকে heart beat টাও বেড়েই চলছে।
- রাহাত, তুই গাড়ি চালা। আমি পারব না। ভাল
লাগছে না রে। (আ)
- কেন? কোন সমস্যা? কিছু হয় নি তো তোর?(রা)
- আরে নাহ, কেন জানি খুব ভয় লাগছে। আমি
চালালে হয়ত accident হতে পারে। তারচেয়ে
বড়ং তুই-ই চালা। আমি পেছনে বসছি।(আ)
- আচ্ছা, ঠিক আছে। চল চন্দ্রিমা উদ্যানের দিকে
ঘুরে আসি।(রা)
- হুম, চল (আ)
সারাদিন ঘুরেছি অনেক যায়গায়,কিন্তু সেই স্পৃহা নিয়ে ঘুরতে পারি নি। সনিয়ার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে তার সাথে কাটানো ৩ বছরের যতসব স্মৃতি ছিল সব যেন একাধারে চোখের সামনে ভাসছে। সাদাসিধে গড়নের মেয়েটাকে ভালবেসেছিলাম ঢাবিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই। প্রথম প্রথম শুধু আড়ালে তাকিয়ে দেখতাম। ও আড় চোখে তাকিয়ে দেখত আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি কিনা। মাঝে মাঝে চোখের সামনে পরে থাকা চুলগুলো সড়ানোর অভিনয় করতো, বুঝাতে চেইতো যে সে আমাকে দেখছে না। আমি সবই বুঝতাম। কথা বার্তা হতো কিন্তু কখনো মনের না বলা কথাটা বলি নি।এরই রেশ ধরে ৪র্থ সেমিস্টারে এসে বহু প্রতিক্ষিত ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে (ভালবাসা দিবসে) তাকে একটা বাক্স পাঠিয়েছিলাম। আমার এক বন্ধুবির মাধ্যমে। বাক্সটার ভিতর চারকোণা করে কাটা একটা কাগজ ছিল আর ছিল একটা নাকফুল। কাগজে লিখা ছিল- নাকফুলটা কি পড়িয়ে দিতে পারি? কাল বিকেল ৪টায় সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের শিখা চিরন্তন পাশটায় অপেক্ষায় থাকব তোমার উত্তরটা মুখে শুনার জন্য।
পরদিন সম্ভবত সাড়ে ৪:৫০ টা নাগাদ বসে ছিলাম। আমার পেছনে ও এসে বলল, তোমার চিঠিটা ডিন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে চেয়েছিলাম। উত্তরটা স্যারের কাছ থেকে শুনলে মনে হয় আরোও ভাল হত। আমার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল। ও হয়ত তা বুঝতে পেরেছিল।একটু পর আবার বলল, তবে যা লিখেছ তার জন্য না, এতদিন পর কেন দিলে তার জন্য। ওর দিকে তাকিয়ে আমার হেসে দেওয়া উচিৎ ছিল। কোন এক অজানা সুখের কারনে আমি চোখের পানিটা আর ধরে রাখতে পারি নি। গাল বেয়ে পরছিল। সনিয়া কাছে এসে লোকচক্ষুর আড়ালে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে বলল, মেয়েদের মত এভাবে কাঁদছ কেন? নাকফুলটা কি আমি তোমাকে পড়াব?? হাসিয়ে দিল মেয়েটা শেষ পর্যন্ত। সনিয়ার হাত থেকে নাকফুলটা নিয়ে ওর নাকে পড়িয়ে দিয়েছিলাম। উফফফ, শুরশুরি লাগে তো!!(নাক চেপে ধরে কথা বললে যেমন শুনা যায় তেমন করে আমিও তার কথাগুলো শুনছিলাম) মেয়েটাকে হঠাৎ এত সুন্দর লাগছিল, বলে বুঝাতে পারব না। তার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছি যে ও লজ্জায় মুখ লুকিয়ে বলছিল, সব দেখা কি আজকেই দেখে নিবে? ভবিষ্যতের জন্য কি কিছু রাখবে না? দিনটা কোনদিন ভুলে যাব না বলে হলে এসে ডায়রীতে সব লিখে রাখেছি।

ওর প্রতি ভালবাসা আমার কোনদিনই কম ছিল না। আবার আমার প্রতি তার ভালবাসাও কম ছিল না কোনদিন। তবে মেয়েটার একটা দিক খুব কষ্ট লাগত, খুব জেদি টাইপের। কোন কোন সময় আমার কথা ত শুনতই না তার সাথে তার বাবা মার কথাও। এই যেমন, মন স্থীর করে নিয়েছে আজ রাতে খাবে না, খাবেই না। আবার রাত জাগে আমার সাথে কথা বলতে মানা করলে খুব রাগ করত। রাগে গদগদ করত। কনকনে এই শীতের সকালে তাকে কোণ আইসক্রিম খাওয়াতে হবেই,না হলে সম্পর্ক বিচ্ছেদ।কি সাংঘাতিক মেয়ে রে বাবা, আইসক্রিমের সাথে প্রেমের সম্পর্ক মিক্সড করে জগা খিচুরি পাকিয়ে তাতে আমাকেই রেঁধে খেয়ে ফেলবে মনে হয়। কি আর করার, আমারই রাগ ভাঙাতে হতো। আর অন্যদিকে ওর প্রতি আমার দুর্বলতার প্রধান দিক হচ্ছে, ও আমার ছবি আঁকত। সিনেমার মত কোন মেয়েকে সামনে রেখে না কিন্তু!! আমার অনুপস্থিতিতে। আবার আরেকটা দিকও আছে, কখনো যদি বলতাম একটা কবিতা পড়ে শুনাতে, ও সাথে সাথে তা বানিয়ে শুনাত। অস্বাধারণ ছিল কবিতাগুলো।

সনিয়ার সাথে আমার শেষ দেখা হয়েছিল ৩৮ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে। সেদিন সম্পর্কের ইতি টেনেছিল সে নিজেই। তবে আমার কিছু কথায়। বিগত ২-৩ সপ্তাহ যাবত আমার সাথে তার তুমুল ঝগরা হচ্ছিল। এই ঝগরার মুল কারন সে জেদ করে বলেছিল পুলিশে যোগ দেবে। প্রথম প্রথম ভেবেছিলাম দুষ্টুমি করছে,কিন্তু না। আর তাই এদিকটা আমি মানতে পারছিলাম না। কেন জানি মনের ভেতর একটা ক্ষুত ক্ষুত ভাব জন্মাচ্ছিল, আমার স্ত্রী পুলিশে চাকরি করবে!এটা বাবা মার কাছে বলব কিভাবে?? (আমার বাবা মা এত শিক্ষিত ছিলেন না) তারা কখনই তা মেনে নেবেন না। আর সে জন্যই আমি সনিয়াকে বলেছিলাম পুলিশে যোগ না দিতে। ও সেদিন বলেছিল, আমার স্বপ্ন আমি বাস্তবায়ন করবই।এতে যদি তার সব থেকে প্রিয় জিনিসটাকে ছেড়ে দিতে হয় তবে তাই-ই করবে। তার মুখ থেকে শুনা আমার সবথেকে কষ্টকর বচন ছিল এটিই। এতটা কষ্ট ও কোনদিন দেয় নি। যতটা সেদিন দিয়েছিল। বরাবরের মত সেদিনও আমি ওর জেদ ভাঙাতে পারি নি। আমার থেকে একটু দুরে গিয়ে কাগজে কি যেন একটা লিখছে। কিছুক্ষন পর একটা কাগজ দিয়ে সেইযে চলে গিয়েছিল তার পর আজ ভাগ্যের পরিক্রমায় দেখা হয়ে গেল। কাগজটায় লিখা ছিল "তুমিই আমার সব থেকে প্রিয় ছিলে,আজ থেকে হয়ত আর না।"
সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ার জন্য আমার সাথে যা ঘটেছিল তা হয়ত অনেকের কাছে মামুলি একটা বিষয় হতে পারে। তবে, এদিকটা আমার একেবারে পরিষ্কার হয়েছে যে, ছোট ছোট কারন গুলোই একদিন বড় আকার ধারন করে।
হলের যে রুমটায় আমার ভাই থাকে, ওই রুমটাতেই আমি থাকতাম। রাত তখন ৩টা হয়ত। শুয়ে শুয়ে দিনগুলো ভাবছি। এক পর্যায়ে বুঝতে পারলাম বালিশের একটা অংশ ভিজে গেছে। কান্না পাচ্ছিল, পুরুষের কান্না নাকি গলা ফেটে বেড়োয় না। আমারও তাই হয়েছে।

পরদিন দুপুরে জহুরুল হক হলের উত্তর পাশের চির পরিচিত জামাইয়ের দোকানে গিয়ে অল্প ভাত খেয়ে গাড়ি নিয়ে বিকেল ৫টায় চলে গেলাম সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের শিখা চিরন্তন যায়গাটায়। একটা নাটকের শুটিং হচ্ছিল।বসে বসে দেখছিলাম। বাংলাদেশের নাটক জগতের কমেডিয়ান সিদ্দিকুর রহমান আর নায়িকা হয়ত নতুন মুখ। ভালই উপভোগ করছিলাম। এমন সময় মনে হলো সনিয়া বলেছিল সে আমার জন্য অপেক্ষায় থাকবে, কিন্তু অপেক্ষা ত আমি করছি।ব্যপারটা কি!? ভাবলাম পেছন দিকটা দেখে আসি। দুরে তাকিয়ে দেখলাম কন্সটেবল মি.মিনহাজকে। উনি আমার দিকে ইশারা করে বললেন, মেডাম প্রায় ২ঘন্টা যাবত আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু সনিয়াকে ত কোথাও দেখছি না। আমি যেখানটায় দাঁড়িয়েছিলাম তার একটু সামনেই খোলা চুলে চোখে কাজল দেয়া জামালপুরের জামদানি শাড়ি পড়নো একটা মেয়ে হেঁটে আসছে। সামনে এসে দাঁড়াতেই আমি জিজ্ঞেস করলাম
- নাকফুল পড়ো নি কেন?? পরলে আরো সুন্দর
লাগত। (আ)
- পড়িয়ে দেবে কি?(স)
- তোমার না শুরশুরি লাগে আমি নাকফুল পরিয়ে
দিলে?(আ)
- তোমার আজো মনে আছে এ কথা!!? (স)
- না মানে.... কিছু কিছু স্মৃতি অমর থাকে। মরে
না। কিন্তু ব্যাথ্যা দেয়।(আ)
- ( আমার হাত দুটো একসাথে করে তার মধ্যে চুমু
দিতে দিতে কাঁদতে লাগল।) বলল, আদনান
আমাকে ক্ষমা করে দাও। তোমাকে একবার
হারিয়েছি আবারহারাতে চাই না।
আমি জানি কতটুকু কষ্ট আমি
তোমাকে দিয়েছি। এর জন্য তুমি যা শাস্তি দিবে
আমি মাথা পেতে নিব।
- হ্যা, শাস্তি ত পেতেই হবে। ইন্সপেক্টরকে শাস্তি
দেওয়ার মত এমন সুযোগ আর কখন আসে
না আসে তার জন্য ত ভাগ্য লাগে!!(আ)
(সনিয়ার চোখে মুখে অপরাধীর ছাপ দেখতে পাচ্ছিলাম)
- হ্যা, বলো। কি শাস্তি দেবে? (স)
- এখান থেকে নয়াপল্টন, কাজি অফিস
পর্যন্ত আমার সাথে হেঁটে হেঁটে যেতে হবে।(আ)
সন্ধ্যা হয়ে প্রায় অন্ধকার হয়ে গেছে। তাই আর এবার আত্মসম্মানবোধ না ভেবে পাগলিটা কপালে না দিয়ে সোজা ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে বলল- এবার ত নাকফুলটা লাগিয়ে দেবে, নাকি??

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.