নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভাল যেকোন বিষয় পড়তে ভাল লাগে, লেখার চেয়ে।

সাইফুর রহমান পায়েল

খুবই শান্ত মনের ও ঠান্ডা মেজাজের একটা চমৎকার মানুষ।

সাইফুর রহমান পায়েল › বিস্তারিত পোস্টঃ

"জাকির ওরফে জ্যাকি ৩য় খন্ড"

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:০৫

#জাকির_ওরফে_জ্যাকি

৩য় খন্ডঃ

জাকিরকে মোবাইলে পাচ্ছি না। ওর বাসায় ২ বার হানা দিয়েছি। পাইনি।
ছ্যাকা ট্যাকা খেয়ে আবার কিছু ঘটালো নাকি?
নাকি আমার ভয়ে আর ঐ পোড়া মুখ দেখাতে চাচ্ছে না।
ওই দিন রেস্টুরেন্ট থেকে বের হয়ে ঝেরেছি অনেক। সেই ভয়েই কিনা।

মোবাইলের শব্দ শুনে দেখি একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন।
রিসিভ করে হ্যালো বলতেই ওপাশ থেকে মেয়ে কন্ঠ ভেসে এল।
-হ্যালো সাইফ ভাইয়া।
-জ্বী, কে বলছেন?
- ভাইয়া আমি।
-ওহ আচ্ছা আপনি "আমি"। কিন্তু এই আমিটা কে!
- ভাইয়া আমি নিশি।
-কোন নিশি।
-আপনার ভার্সিটি তে পড়ি আমি।
-চিনতে পেরেছি কি খবর? কেমন আছ?
- ভাইয়া একটা দরকারে ফোন দিয়েছি। আমার বাসা আপনার বাসার পাসেই।
-আমার বাসা কোথায় সেটা তুমি কিভাবে জানলে!
-জাকির ভাইয়া, স্যরি জ্যাকি ভাইয়া বলেছিল।
- আচ্ছা বল কি দরকার।
- আপনি ভাল ছাত্র জানি, আপনার এক্সামো শেষ। আপনার নোট গুলো একটু দরকার। দেয়া যাবে কি?
- যাবে নিয়ে নিও।
- আপনি চাইলে আমি বাসায় এসে নিয়ে যেতে পারি যদি আপনি না আসেন। আপনার লাগ্লে ফটোকপি করে আবার ফেরতও দিয়ে যাব ভাইয়া।
- না না, তোমাকে কষ্ট করতে হবে না। বাসার ঠিকানা মেসেজ করে রাখ। আমি দেখছি বিষয়টা।
-থ্যাংক ইউ ভাইয়া।
- ওয়েল্কাম।
ফোন কেটে দিলাম।
নোট গুলো জাকিরকে দিয়ে পাঠাই। কিন্তু ওকে কোথায় পাব। আবার ওর বাসায় গেলাম।
পেলাম না। ফিরলেই যেন আমার সাথে যোগাযোগ করে সেটা বলে আসলাম।

নোট গুলো কপি করতে বের হলাম। জ্যাকি কে টেক্সট করে দিলাম। দেখলে যাতে ফোন দেয়।
কপি করে বাসায় আসলাম।
নিশির মেসেজ দেখে নিলাম। বাইকে গেলে কয়েক মিনিট লাগবে।
মেসেজের নিচে সুন্দর করে লিখে দেয়া, ভাইয়া আজকেই বিকালে আসবেন প্লিজ। আমি আজ বাসায়ই আছি। প্লিজ প্লিজ।

জ্যাকি কে না পেয়ে আমিই বিকেলে গেলাম। নিশি কে ফোন করে জানালাম আসছি সে বাসায় কিনা। নিশি বাসায়। আসতে বলল।
আমি গিয়ে ফোন দিলাম।
ফোন ধরেই বলল, ভাইয়া ৩ তলায় বারান্দায় আমি দেখতে পাচ্ছেন?
আমি তাকালাম। কালো সাদা ড্রেসে আসলেই নেয়েটাকে সুন্দর লাগে।
আমি দেখে হাত নাড়লাম।
সে হাত নেড়ে বলল আসুন আমি গেইট খুলে দিচ্ছি। নিচে দারোয়ান কে আমার নাম বললেই হবে।

দারোয়ান কিছু জিজ্ঞেস করল না। আমাদের হাত নাড়ানাড়ি দেখেছে।
তিন তলায় গিয়ে দেখি নিশি দারানো।
আসুন বলেই ভেতরে নিয়ে গেল।
আমাকে বসতে বলে ভেতরে গেল।

সোফায় বসে চার দিকে চোখ বুলালাম।বাসার আসবাব আর দেয়ালের লাগানো ছবি দেখেই আভিজাত্য বোঝা যাচ্ছে।
বেশ সৌখিন মনে হচ্ছে।
এক পাশে বিশাল সাইজের একুরিয়াম। তাতে বিভিন্ন মাছ। কচ্ছপও আছে।
মাথার উপরে প্রকান্ড এক ঝাড়বাতি এই আভিজাত্য কে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এসির হাল্কা ঠান্ডা বাতাস টের পাচ্ছি।
সাম্নের দেয়ালের টিভি টা অনেক বড়।
নিশি এসে পাশে বসলো।
স্যরি ভাইয়া বসিয়ে রাখলাম।
-না না ঠিক আছে। তোমার নোট।
- নিশি নিল। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আমি একটা হাসি দিলাম।
-আমি আজ উঠি নিশি
-উঠি মানে! অনেকক্ষন থাকতে হবে। আমার আজ বিকেলে কাজ নেই।
এমন সময় একটা চাকা লাগানো টি টেবিল ভর্তি খাবার নিয়ে এল এক মহিলা।
আমার সামনে রেখে চলে গেল।
নিশি বলল
-ভাইয়া খান।
-এত কিছু কিভাবে খাব! দেখেই তো ক্ষিদে মরে যায়।
- কি বলেন ভাইয়া সামান্য কিছু। আপনি তো হটাৎ করেই চলে এলেন।
-এই সামান্য কিছু খেয়ে কিভাবে এত স্লিম থাকা যায় সেই বিষয়ে একদিন জানতে হবে তোমার কাছে।
নিশি হেসে দিল।
আমাকে শুরু করতে বলে। সেও আপেল নিল।
বিসমিল্লাহ্‌ বলে শুরু করলাম।
খাওয়ার ফাকে ফাকে নিশি আমার বিষয়ে খোজ খবর নিতে থাকলো।
আমার ফ্যামিলি, গ্রাম, ছেলেবেলা সব। জ্যাকির গল্প শুনে সে হেসেই খুন।
একসময় আমার গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা জিজ্ঞেস করলো।
আমি হেসে বললাম, অভাগা যেদিকে চায় সাগর শুকিয়ে যায়।
একটা মেয়ে কে ভাল লেগেছিল। পরে খোজ নিয়ে দেখি সে বিবাহিত।
এর পরে আরেকটা মেয়েকে ও ভাল লাগে। সেই মেয়ের বাচ্চাও ছিল।
নিশি হাসতেই থাক্লো।
হাসতে হাসতে বললো ভাইয়া এর পরে মেয়ে পছন্দ হলে দেখবেন মেয়ের বাচ্চাও আছে এবং হাজবেন্ড মারা গেছে।
মেয়েটা হাসলে ভাল লাগে দেখতে।
সুন্দরী মেয়ের যত গুন থাকা চাই সব আছে।
এর মধ্যে নিশির আম্মু এলেন।
আমি সালাম দিলাম।
আন্টি বসে কিছুক্ষন কথা বললেন।
তার পরে চলে গেলেন।
আমিও চলে আসতে চাইলাম। কিন্তু নিশি আরেকটু থাকুন ভাইয়া বলে রেখে দিল।
এর পরে বলল ছাদে যাবেন?
অনেক বড় ছাদ। বাতাস অনেক। ভাল লাগবেই। আম্মুকে বলে আসি বলে আমার উত্তরের অপেক্ষা না করে চলে গেল।
ছাদে গিয়ে আসলেই ভাল লাগ্লো।
নিশি অনেক ছবি তুললো।
আমার ফেইসবুক আইডি নিল।
সন্ধ্যে নেমে এলে আমরা নেমে এলাম।
নিশি তার জীবনের সেরা একটি দিন কাটালো নাকি। আজ নাকি সে অনেক হেসেছে।
আমি ওর আম্মু কে বলে চলে এলাম।
ফেরার পথে জ্যাকির খোজ নিলাম। এসেছে।
বাইরে আসতে বললাম।
কাচুমাচু করে আমার কাছে এসে বলল,
দোস্ত স্যরি। আসলে রাত্রি কেস টাতে আমার দোষ ছিল না।
আমি কিছু বললাম না।
ওর চেহারা দেখে হেসে দিলাম।
ওর চেহারায় ও হাসি।
আরে পাগল ওই সময় মেজাজ গরম হয়েছিল বলে বলেছি অনেক কিছু।
আসলে কি করতাম নাকি।
আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল ব্যাটা আগে বলবি তো, তাহলে স্যরি টা বিফলে যেত না।

আমি জ্যাকিকে বললাম নিশির বাসায় যাওয়ার কথা। সব শুনে জ্যাকি বল্লো তুই যোগাযোগ রাখ।
আমি বললাম আমি ক্যান তুই রাখ।
-না দোস্ত, তুই রাখ, আমি যাব তোর সাথে। ২ জনে। এটা আমার জন্য সুযোগ ।
তুই বাসায় যাওয়ার সময় আমাকে নিয়ে যাবি।
-আমি হেসে বললাম আচ্ছা।

জ্যাকির প্লান কাজ করছিল। নিশি দের বাসায় যাওয়ার জন্য বললেই আমি বলি জ্যাকি আছে, আর সে বলে নিয়ে আসেন।

জ্যাকি খুব খুশি।
দিন যায় সপ্তাহ যায়। আর আমি, জ্যাকি এবং নিশি খুব ভাল বন্ধু হয়ে যাই।

একদিন বিকেলে নিশি আমার বাসায় এসে হাজির। জ্যাকিকে ফোনে পাইনি। পিক করেনি। মেসেজ দিয়ে রাখলাম যে নিশি এসেছে, তারাতারি বাসায় আসতে বললাম।
নিশি ঘন্টা খানেক ছিল। তার পরে বলল ভাইয়া আপনি কি বের হবেন?
আমি বললাম ক্যান?
-সন্ধ্যে হয়ে গেছে তো একটু এগিয়ে দিলে ভাল হত যদি সমস্যা না থাকে আপনার ।
আমি বের হলাম।
নিশি বললো ভাইয়া বাইক কি নস্ট?
- না তো, ঠিকই আছে। কেন?
-আমার হাটতে ইচ্ছে করছে না। সমস্যা না থাকলে আনবেন একটু?
আমি বাইক নিয়ে বের হই, নিশি পেছনে উঠে।
ওদের বাসার কাছের মোড়ে আমি ডানের লাইট জালাতেই নিশি বলল ভাইয়া বামে যান।
আমি বামেই গেলাম।
কিন্তু ওর বাসা তো ডানেই ছিল। সন্ধ্যে বেলা বলে ভুল হয়ে গেল নাকি।
নিশি তার মত করে নির্দেশনা দিচ্ছে।
কিন্তু এটা তো নিশি দের বাসার রোড না!

আমি জিজ্ঞেস করলাম, নিশি আমরা কোথায় যাচ্ছি?
-অসাধারন একটা জায়গায়।
-সেই যায়গাটা কোথায়?
-মিরপুর বেরিবাধ হয়ে আশুলিয়া।
-এখন যাব?
-কোন সমস্যা হবে। স্যরি, আমি হয়তো অনধিকার চর্চা করে ফেল্লাম। আপনি তো আমার বয়ফ্রেন্ড না। আচ্ছা চলুন ফিরে যাই।
-আমি আমতা আমতা করে বললাম আমার তো সমস্যা নেই। তোমার সমস্যা হবে, আসতে তো লেট হবে যে জ্যাম।
নিশি শব্দ করে হাসেনি, কিন্তু আমি বুঝতে পারছি মেয়েটা মুখ টিপে হাসছে।
জ্যাম পার করে বেড়িবাঁধ এর আগের রাস্তাটা জঘন্য খারাপ।

নিশি নিজেকে ব্যালেন্স করার জন্য আমাকে চেপে ধরলো।

আমি কিছু বললাম না। আশুলিয়ার পারে সন্ধ্যের পরে বেশ ভাল আবওহাওয়া। বাতাস অনেক। আমার তো এটাকে মিনি পতেঙ্গা মনে হয়। নিশিকে খুব খুসি মনে হচ্ছিল।
আমাকে বলল ভাইয়া জানেন, আমাকে কেউ এভাবে ঘুরতে নিয়ে যায়নি।

৮টা ৩০ এ আমি ফেরার জন্য মিনতি করি।
নিশি রাজি হয়।
মিনতি এই কারনে আগেও ২ বার বলেছি। নিশি যাবে না। এবার তাই কাকুতি মিনতি করে রাজি করালাম।

ফেরার পথে নিশি চুপ করে রইলো।
একবার শুধু বলেছিল, ভাইয়া আপনাকে ধরে বসি।
আমার উত্তরের অপেক্ষা করেনি। সেভাবে ধরেই বাসা পর্যন্ত আসে।
বাসার সামনে এসে আমি বললাম নামো।
নিশি নেমে গেল। যাওয়ার সময় বলল, ভাইয়া অসাধারন কিছু সময়ের জন্য ধন্যবাদ।
আমি হাসি দিয়ে বাইক ঘুরিয়ে বললাম গেলাম কেমন।

নিশি বলল ভাইয়া কিছু মনে না করলে একটা কথা বলি?
-হু বলো।
-এক্টা কথা আছে, বুদ্ধিমান মানুষের৷ জন্য ঈশারাই যথেষ্ট । এটা শুনেছেন?
- হু শুনেছি, হিন্দি তে। সামাঝদার লোগো কি লিয়ে ঈশারাই কাফি হোতা হ্যায় সম্ভবত ।
-হ্যা সেটাই। কিন্তু আপনি সামাঝদার না।
এটা বলে হেসে দিল। তার পরে বায় বলেই চলে গেল।
আমি শুধু চেয়ে চেয়ে ওর চলে যাওয়া দেখলাম কোন উত্তর করলাম না।
চলে যাওয়ার পরে আস্তে বললাম বায় নিশি।
(চলবে)

আমার ফেবুতেও প্রকাশিত হয়েছেঃ Click This Link

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪০

মোঃ ফখরুল ইসলাম ফখরুল বলেছেন: চলুক তবে B-)

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: চলুক তবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.