নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিটল রাইটার এবং জার্নালিস্ট

মোঃ রাকিব খান

লিটল রাইটার এবং জার্নালিস্ট

মোঃ রাকিব খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সায়েন্স ফিকশন : রহস্যময় স্মৃতিচারণা

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১২:২০





শুধুই অন্ধকার! চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কিছুই পরিষ্কারভাবে চোখে পড়ছে না। হাঁড়কাপানো ঠান্ডা, বেঁচে আছি নাকি মরে গেছি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। হাত - পা - শরীর বলে কিছু আছে কিনা আমার, জানি না। বহু দূরে অদ্ভুত কিছু আলোক রশ্মি চোখে পড়ছে। সেটা লক্ষ্য করেই এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু মনে হচ্ছে যতই সামনে যাচ্ছি আলোক রশ্মি ততই দূরে সরে যাচ্ছে। পায়ের নিচে হিমশীতল বরফ আর বরফ।মুখ হতে বায়ু বেরুতে না বেরুতেই যেন জমে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে চারদিকে ধোঁয়া উড়ছে। অন্ধকার যেন সবকিছুকে গ্রাস করে ফেলেছে। আলো হয়তো এখানে কোনোদিনই পৌঁছাবে না। তবুও যতক্ষণ পা চলে, চালিয়ে যাব। হয়তো আর বেশিক্ষণ পারব না।

মনে পড়ছে সেই সোনালী দিনগুলোর কথা। স্ত্রী, ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে বেরিয়েছিলাম। কিছুদিন সমুদ্র - সৈকতে কাটালাম আমরা। কি মনোরম সেই দৃশ্যগুলো! একজন আরেকজনকে কাঁদা ছোঁড়া, পানি ছিটিয়ে দেওয়া, পানিতে ডুবোডুবি করা, বালুতে গড়াগড়ি, তা কি ভোলা যায়! পড়ে থাকা কলার খোঁসার উপর পা ফেলতেই রমনীর আছাড় খাওয়ার দৃশ্য উপস্থিত সকলকেই বেশ হাসির খোরাক জুগিয়েছিল। সৈকতের তীব্র বাতাস আরেকজনের পড়নের তোয়ালেখানা উড়িয়ে দূরে ফেলে দিয়ে তাকে কি যে নাজেহাল অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল! লজ্জায় তার মাথা কাঁটা যাবার উপক্রম!

এখন 50019 সাল। কয়েকদিন সৈকতে স্বাচ্ছন্দ্যে কাটানোর পর আমরা অন্যত্র চলে এলাম। ব্যক্তিগত অত্যাধুনিক মহাকাশযানে চড়ে সপরিবারে ঘুরতে বের হলাম। চালক বেশ দক্ষতার সাথেই বিভিন্ন গ্রহ, উপগ্রহকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিল। চারপাশের সে কি অপরুপ দৃশ্য! নিজেরচোখে না দেখলে বিশ্বাসই হতে চায় না! বেশ আনন্দেই কাটলো কয়েকটা দিন। কয়েকটি গ্যালাক্সি অতিক্রম করলাম আমরা। হঠাৎ একদিন অদ্ভুত কম্পন শুরু হল। সকলেই বেশ বিচলিত হয়ে পড়ল। মনে হল যেন পুরো মহাবিশ্ব কাঁপছে,ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে! ক্রমেই তা বেড়ে চলল। বাচ্চাদুটি হাউমাউ করে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। কিছুতেই তাদেরকে আশ্বস্ত করা যাচ্ছে না। অবস্থার ক্রমাবনতি দেখে নিজের মনেও অজান্তেই ভয় দাঁনা বাঁধতে শুরু করল। কি করব ঠিক ভেবে পাচ্ছি না। আকস্মিকভাবে একদা মহাকাশযানে ফাটল ধরল। কয়েক মুহূর্ত পরেই তোলপাড় শুরু হয়ে গেল। তারপর আর কিছু মনে নেই।

মস্তিষ্কে চিনচিন ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। চোখ খোলার পর সবকিছুই ঝাঁপসা ঝাঁপসা দেখতে পাচ্ছি। নিজেকে আবিষ্কার করলাম শ্বেত বরফ ভূমির উপর। প্রথমে চমকে উঠলাম, কিছুক্ষণ সময় লাগল ব্যাপারখানা বুঝে উঠতে। জানিনা কত কাল পার হয়ে গেছে। চারদিকে আবছা আলো, আবছা অন্ধকার। সবকিছুই ঈষৎভাবে দেখছি। অন্ধকার যেন ক্রমেই গাঢ় থেকে গাঢ়তর
হচ্ছে। জানি, আমার সঙ্গীরা কেউ বেঁচে নেই। তবুও খুঁজতে শুরু করলাম, কিন্তু লাভ হল না। হয়তো আমিও কিছুক্ষণ পরে মারা যাব। উদ্দেশ্যবিহীনভাবে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম।

ড. রোলা চিৎকার দিয়ে আনন্দে লাফিয়ে উঠলেন। 'আমি সফল হয়েছি। '
অন্যরা উৎসুক দৃষ্টি মেলে তার দিকে তাকিয়ে আছে, যেন তিনি মহামূল্যবান কিছু বলবেন। যদিও তারা এই লোকটাকে পাগলা গোঁছের লোক হিসেবেই জানে। তিনি আবার বলতে শুরু করলেন, 'আমি এই মৃত লোকটির ব্রেইন প্রতিস্থাপন করে তার স্মৃতিশক্তি পুনরুদ্ধার করে সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছি!'
একজন বলে উঠল, 'নিঃসন্দেহে আপনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী কিছু করতে সক্ষম হয়েছেন!'
' দীর্ঘদিন লোকটি মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। মস্তিষ্ক একেবারেই অকেজো হয়ে গিয়েছিল। তাই এতো দুর্ভোগ পোহাতে হল। এখন থেকে আমার পদ্ধতি ব্যবহার করে খুব সহজেই এ ধরনের পরিক্ষা - নিরীক্ষা চালানো যাবে। '
' দুর্ঘটনার কারণ হয়তো মহাজাগতিক কোনো ব্যাপার হবে। '
'জানি না, হতে পারে। শীঘ্রই আমরা সেটা জানতে পারবো। '
' লোকটার একটা ক্লোন তৈরি করলে কেমন হয়? '
' হুমম সেটাই ভাবছি। আজকের তারিখটা কত, বলতে পারো? '
' 7 ই এপ্রিল, 60699 সাল। '

লেখক :
মোঃ রাকিব খান
এনিম্যাল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারী মেডিসিন অনুষদ।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
প্রথম বই -" কয়লার মানুষ "


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৪৩

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
এটাকে কোন যুক্তিতে সায়েন্স ফিকশন কাতারে ফেলা যায়?

সাধারণ ফিকশনও তো মনে হচ্ছে না।

লিখতে থাকেন। সায়েন্স ফিকশন মানেই আউটার স্পেস, লক্ষ বছর পরের সাল আর রোবট না।

আপনার প্রথম বই কোন প্রকাশনী থেকে বের হয়েছিল?

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪২

মোঃ রাকিব খান বলেছেন: আমার কোনো লেখাই হয়তো আপনার ভাল লাগবে না। যাহোক, সময় নষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
বইটি বেরিয়েছিল বর্ণ প্রকাশ হতে।

২| ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: চালিয়ে যান, লিখতে থাকুন হাত খুলে। যত লিখবেন ততো বাড়বে লেখার ধার। শুভেচ্ছা রইল।

১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:৪৩

মোঃ রাকিব খান বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.