নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লিটল রাইটার এবং জার্নালিস্ট

মোঃ রাকিব খান

লিটল রাইটার এবং জার্নালিস্ট

মোঃ রাকিব খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্মৃতির আড়ালে তুমি

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৩৬



সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। লাল দ্যুতি ছড়াতে ছড়াতে কিছুক্ষণের মধ্যেই অস্তমিত হবে। সেই লাল সূর্যের দিকে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সজল। তার দৃষ্টি যেন দিগন্ত বিস্তৃত। নিষ্পলক চোখ দুটির নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে। মুখের সেই উজ্জ্বলতা এখন আর নেই। ছাদের উপর এমনিভাবে এক কোনায় দাড়িয়ে অনেকেই প্রকৃতির সৌন্দর্য অবলোকন করে। কিন্তু এই সৌন্দর্য তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ তার হৃদয়ের গভীরে যে পরিমাণ বেদনা জমা হয়ে আছে তা সমস্ত কিছুকেই ছাপিয়ে গেছে।

এখনও তার মনে পড়ে সেই মুহূর্তগুলোর কথা। তখনই যেন প্রশান্তিতে ভরে ওঠে মনটা।

বৃষ্টিস্নাত একটা মুহূর্তে শীলার সাথে প্রথম কথা হয়েছিল তার। ছাতার নিচে বৃষ্টি হতে কোনোরকমে নিজেকে আড়াল করে ফ্যাকাল্টি ভবনের নিচে এসে পৌঁছালো সে। ছাতা বন্ধ করে ভেতরে ঢুকবে এমন সময় দেখতে পেল পাশে একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। বৃষ্টির কারণে যেতে পারছে না। সজল তার ছাতাটা এগিয়ে দিল। মেয়েটি স্বাচ্ছন্দ্যে ছাতাটি হাত বাড়িয়ে নিয়ে হাসিমুখে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলে গেল। যদিও ক্লাসমেট তবুও তাদের মধ্যে আগে কখনও কথা হয়নি। কিছুদিন হল তাদের ক্লাস শুরু হয়েছে।

কয়েকদিন পরেও আবার একই অবস্থা! সজল আটকা পড়ে গেছে। আজ সে ছাতা আনতে ভুলে গিয়েছে। তাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি পড়া দেখছে। হঠাৎ কে যেন বলল, ' আপনি আমার সাথে চলুন। '
তাকিয়ে দেখল শিলা তার পাশে দাঁড়িয়ে! কিছুটা ইতস্তত করলেও শেষ পর্যন্ত শিলার ছাতার নিচেই আসতে বাধ্য হল সে। পরস্পরের মধ্যে কথোপকথনও শুরু হল।

তার পরদিন শিলা আর সে একই সারিতে বসেছে তবে পাশাপাশি নয় খানিকটা দূরত্ব বজায় রেখে। সজল শিলার দিকে নিষ্পলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। শিলা তার দিকে তাকাতেই সে দৃষ্টি সরিয়ে নিল। একটু পর যখন আবার তাকাল তখন শিলাও লাজুক ভঙ্গিতে মুখ ফিরিয়ে নিল।

রাতে ঘুমানোর আগেও শিলার মুখচ্ছবিটা ভেসে ওঠে তার হৃদয়ের আয়নায়। শিলারও অনুরুপ অবস্থা।
একদিন সাহস করে শিলাকে তার মনের কথা জানিয়ে বসল সজল। শিলাও যেন এই সময়েরই অপেক্ষায় ছিল বহুকাল ধরে।

ক্রমেই যেন পরস্পরের মিষ্টি মধুর সম্পর্ক গভীর হতে চলল। এক রিকশায় পাশাপাশি বসা, বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া, কখনও কখনও একটু আধটু দুষ্টুমি করা, রেষ্টুরেন্টে যাওয়া, অভিমান করা এবং নাটকীয়ভাবে তা গুড়িয়ে দেওয়া সবকিছুই যেন ঠিক ছিল। দিন যতই অতিবাহিত হচ্ছিল ততোই যেন একজন অপরজনের জন্য ব্যকুল হয়ে উঠছিল।

কিন্তু কে জানতো এমন হবে! চোখের সামনেই ঘটে গেল ঘটনাটা। কিছুই করতে পারল না সে! তার জন্যই তো এমনটা হয়েছে! এজন্য নিজেকেই দায়ী করছে সজল। কোনোদিকে খেয়াল না করে রাস্তার অপরপাশে তাকে দেখতে পেয়ে তার দিকে এগিয়ে আসছিল শিলা। সজল চিৎকার করে ব্যগ্রভাবে কিছু বলতে যাচ্ছিল, কিন্তু সে অনেক দেরী হয়ে গেছে! কথা শেষ হবার আগেই মুহূর্তের মধ্যে ঘটে গেল ঘটনাটা। চোখের সামনে দিয়ে ঘাতক গাড়িটি চলে গেল। রাস্তার উপর পড়ে রইল শিলার রক্তাক্ত নিথর দেখটি। কিছুই করতে পারল না সে!
শিলার মৃত্যুর জন্য নিজেকেই সম্পূর্ণ দায়ী করল সে মনে মনে।

সূর্যটা প্রায় আড়াল হয়ে গেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হয়তো অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে।কেউ একজন সজলের কাঁধে আলতো করে হাত রাখল। ধীরে ধীরে তাকিয়ে দেখল তার বন্ধু রনি। রনি তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করল। সজলের সিক্ত চোখের কোণা হতে কয়েকফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল।।

(কাল্পনিক অনুগল্প )

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২৭

অবনি মণি বলেছেন: অনেক ভালো লেগেছে!!

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩০

মোঃ রাকিব খান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.