নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাদের হাতে দলীল প্রমান কম তারা গালি দেয় বেশী

.

রাতুলবিডি৪

বলার কিছু নাই

রাতুলবিডি৪ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাতামুহুরী ও সাঙ্গু নদীর উৎস সন্ধানে ডিওয়ে এক্সপেডিটরস, উদীয়মান : উন্মোচনের অভিযাত্রী ডিওয়ে !

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৪০

প্রকৃতির রহস্য উন্মোচন, নতুন নতুন জায়গা আবিষ্কার, দুর্গম স্থানে পথ খুঁজে ফেরার আগ্রহ যখন নেশা হয়ে ওঠে? হ্যাঁ, তাতেই অসাধ্য সাধন করে চলেছে ডিওয়ে এক্সপেডিটরস। অচেনা পথে অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় পাহাড়ি ঝরনা বা পাহাড়ের চূড়ায় তাদের অভিযাত্রা



২০০৮ সালে ডিওয়ে এক্সপেডিটরস নামে একটি ক্লাব তৈরি করা হয়। এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হলেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ রোমান, কাজী আসাদুজ্জামান তুষার, মাহবুবুর রহমান শুভ, ফাহাদ বিন হোসাইন সৈকত, জহিরুল ইসলাম আকাশ, মাইনুল ইসলাম, কায়সার কবির সূর্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়েরাও এই দলে যোগ দেন। যেহেতু আগ্রহ আগে থেকেই ছিল



এবং ট্রেকিংয়ে কী ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়, তার একটা ধারণা ছিল, তাই গ্রুপটি বেশ আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে। সেবারই প্রথম প্রায় দুই সপ্তাহের বড় একটি ট্যুরে তারা অংশ নেন। অনভিজ্ঞ দলের এমন অভিযান দুঃসাহসিক বটে। ২০০৯ সালের পর থেকে প্রতিটি অভিযানের পথ ও অঞ্চলগুলো দুর্গম ও কঠিন হতে শুরু করে। যেসব স্থানে যাওয়া হতো, তার কোনোটারই নির্দিষ্ট কোনো রুট বা পথ তো ছিলই না, বরং কোন দিকে যেতে হবে, সেটিরও দিকনির্দেশনা আগে থেকে ছিল অজানা। দেখা যেতো, কোনো একটি গ্রামে প্রথমে যাওয়া হলো, তারপর সেই জনগোষ্ঠীর মাধ্যমে কিছু তথ্য নিয়ে পরবর্তী লক্ষ্যের দিকে যাত্রা শুরু হতো। সেই সব জনগোষ্ঠীর কাছ থেকে তথ্য পাওয়াও ছিল বেশ ঝামেলার। প্রথমত সেই মানুষগুলোর ভাষা ছিল দুর্বোধ্য, তাই সঠিক নির্দেশনামতো কোথাও পৌঁছাও ছিল কঠিন। অন্যদিকে পাহাড়ি অঞ্চলগুলো এতই দুর্গম যে সেখানে বসবাসরত মানুষও দূরের গ্রামগুলো সম্পর্কে ততোটা অবগত ছিল না। তারা সন্ধ্যার মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারবে, এমন জায়গার বেশি দূরে যেতো না। ফলে ম্যাপ, কম্পাস এবং ইন্টারনেট আসার পর গুগল ম্যাপই ছিল ভরসা।



ডিওয়ে এক্সপেডিটরসের লক্ষ্য ছিল প্রতিবছর কয়েকটি অভিযানে বের হওয়া, অনাবিষ্কৃত অঞ্চলে যাওয়া, নতুন জায়গা সম্পর্কে জানা, ভৌগোলিক তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেগুলোকে তুলে ধরা। তবে সেই প্রেজেন্টেশনগুলো এমন হতো যে শুধু ট্রেকিংয়ের সঙ্গে যারা জড়িত, তারাই সেসব বুঝতে পারবে এবং সেখান থেকে একটি দিকনির্দেশনা পাবে। প্রথম থেকেই ডিওয়ে এক্সপেডিটরস তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে বেশ সচেতন ছিল। বিভিন্ন ট্রেকিং গ্রুপ রয়েছে, যারা নানা স্থানে যায়, ছবি তুলে তথ্য সংগ্রহ করে এবং পরবর্তী সময়ে সেগুলো বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করে। তখন দেখা যায়, তথ্য বা নতুন স্থানের ছবির চেয়ে নিজের ছবি প্রকাশের প্রবণতা বেশি থাকে। এখানেই অন্যান্য গ্রুপ থেকে ডিওয়ে এক্সপেডিটরস নিজেদের ভিন্নভাবে উপস্থাপনে সক্ষম হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে তাদের নিজস্ব পেজে খুঁজে ফিরলেও গ্রুপটির সবার ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য পাওয়া মুশকিল। এ কারণে হয়তো তাদের পরিচয় জানানো যায়নি, তবে ট্রেকিংয়ে অনেককেই উৎসাহী করে তোলা সম্ভব হয়েছে। যারা পরবর্তীকালে বিভিন্ন গ্রুপ তৈরি করে নানা অভিযাত্রায় যোগ দিয়েছে। প্রতিটি অভিযানেই লক্ষ্য থাকতো পরবর্তী অভিযানের ম্যাপ তৈরি করা। তখনই অনেক তথ্য সংগ্রহ করে নিয়ে আসা হতো, যেন পরেরবার গন্তব্য সহজ ও নির্ভুল হয়।



অনেক সময় ইচ্ছা হতো কোনো একটি পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়ার পর সেখানে একটি বা দুই গ্রুপ ছবি তুলে সেটি ফেসবুকে তুলে দিতে। তোলাও হতো কিন্তু প্রকাশ করা হতো না। এই আনন্দ সাময়িক, কিন্তু এর ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। সেখানে যাওয়ার প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়ে যাবে। নিয়মিত যাওয়া হলে সেই স্থানের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। পাহাড়ি অঞ্চলের কিছু জায়গায় এখন অনেকে ভ্রমণ করায় সেখানকার পরিবেশ এবং অঞ্চলের অর্থনীতি ও জীবনযাত্রার ক্ষতি হচ্ছে।



ট্রেকিংয়ে থাকা অবস্থায় নতুন অঞ্চলের প্রতি আগ্রহ জন্মাতো তাদের। দেখা যেতো কোনো পাহাড়ের চূড়ায় যাওয়ার পর বহু দূরের কোনো স্থান দেখে অভিভূত হলে প্রবল নেশা পেয়ে বসে সেখানে পৌঁছানোর। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানুষেরা সহজে ট্রেকারদের বিশ্বাস করতে চায় না। কিন্তু যদি তারা বুঝতে পারে ট্রেকারদের উদ্দেশ্য, তখন তারা সাহায্য করে। এমনিতে তারা অতিথিপরায়ণ। তাদের কর্তাকে বলা হয় কার্বারি। নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি হচ্ছে, বাইরে থেকে আসা লোক কার্বারির বাড়িতে আশ্রয় নেয়।



udiyoman_2সাঙ্গু কিংবা মাতামুহুরী নদীর উৎসের খোঁজে যখন ডিওয়ে এক্সপেডিটরস রওনা হয়, তখন ভীষণ ঝুঁকি নিতে হয়েছিল। দুটি অঞ্চলই সংরক্ষিত। সরাসরি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী অঞ্চলগুলোর দায়িত্বে নিয়োজিত। কয়েকটি ট্রেকিংয়ে তারা যৌথভাবে অংশ নেয়। তাদের সঙ্গে ছিল ন্যাচারাল অ্যাডভেঞ্চার ক্লাব। প্রতিটি অভিযানে ট্রেকাররা একই স্থান নতুনভাবে আবিষ্কার করে। গ্রীষ্ম, শীত কিংবা বর্ষায় প্রকৃতির একেক রকম রূপ দেখা যায়। বর্ষার সময়টাতে ট্রেকিংয়ে একটু ঝুঁকি থাকলেও প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এ সময় সবুজের রঙ আরও গাঢ় হয়, ঝরনাগুলো থাকে প্রাণবন্ত। ডিওয়ে এক্সপেডিটরসের সদস্যদের ঝরনার উৎস এবং নতুন নতুন ঝরনা আবিষ্কারের নেশায় পেয়ে বসে। ফলে, এখন পর্যন্ত পাঁচটি সফল অভিযানে যোগ দিয়েছে দলটি। নতুন বেশ কিছু আবিষ্কারের কথা জানায় গ্রুপটি। শুধু নিজেদের আবিষ্কৃত ঝরনাগুলো নয়, অন্যান্য অ্যাডভেঞ্চার গ্রুপের আবিষ্কৃত ঝরনাগুলো নিয়ে ভবিষ্যতে বই প্রকাশের স্বপ্ন দেখছে। গ্রুপটি ঝরনার ভৌগোলিক অবস্থান, পানির প্রবাহ, আশপাশের পরিবেশ বা উচ্চতা- এসব তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। মূলত টপোগ্রাফিক্যাল সার্ভের জন্য। সব মিলিয়ে ঝরনাটির একটি ইমেজ বা ছবি তুলে ধরার চেষ্টা চলে।



বাংলাদেশে এখন ২৫ থেকে ৩০টি ক্লাব রয়েছে, যারা নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ডিওয়ে এক্সপেডিটরস তুলনায় ছোট। অনেক ক্লাবের সদস্যসংখ্যাও বেশি। পেশাগত কারণে বেশ কয়েকটি ট্রেকিংয়ে ক্লাবটির সব সদস্যের একসঙ্গে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ডিসেম্বরেই বড় একটি সার্ভে অভিযানে বেরোবে তারা, যার স্থায়িত্ব প্রায় দুই মাস। সদস্য ছাড়াও অনেক শুভাকাঙ্খীর তথ্য ও পরামর্শ দিয়ে দলটিকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে।



২০০৮ সালে ক্লাবটি গড়ে ওঠার পর ২০১৪ পর্যন্ত প্রায় ২৫টি অনুসন্ধানী অভিযান সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড়ের চূড়ায় অভিযান, ঝরনার তথ্য বিশ্লেষণের জন্য ভ্রমণ, তথ্য অনুসন্ধানী অভিযান, দুর্গম ঝরনা/জলপ্রপাত অনুসন্ধান চালিয়ে তারা সফল হয়েছে। প্রতিটি অভিযানের নামও ছিল ভিন্ন। যেমন- প্রজেক্ট ড্রাই ট্রেক, আনসারটেইন রুমা, বড় পাহাড়ের বড়দিন, এক্সপেডিটেশন সাঙ্গু সোর্স, হঠাৎ আলীকদম, প্রজেক্ট হান্ট ওয়াটার ফল ০১, ০২, ০৩, ০৪ ও ০৫ ইত্যাদি।



মাতামুহুরী ও সাঙ্গু নদীর উৎস সন্ধানের কাহিনি, মদকের রহস্য ও অন্যান্য অভিযানের গল্প বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। ভবিষ্যতে ডিওয়ে এক্সপেডিটরসের তথ্যগুলো নিয়ে বড়সড় পরিকল্পনার ইচ্ছা রয়েছে। যাতে তুলে ধরা হবে বাংলাদেশের প্রকৃতির রহস্য ও ছবি।



তথ্য : ফেবুতে ডিওয়ে : Click This Link

এবং : http://mycanvasworld.com/archives/16843

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৮

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ক্লাবটি সম্পর্কে জেনে ভালো লাগলো। তাদের জন্য শুভকামনা রইল। আশাকরি তারা আমাদেরকে তথ্যপূর্ণ একটি খবর শোনাতে পারবেন।

আপনাকেও ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৫

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই, ট্রেকিং এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশী মৌলিক অনুসন্ধানের কাজ গুলো এ ক্লাবটিই করেছে ।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৪:১৩

রিয়াদ হাকিম বলেছেন: ক্লাবের সবাইকে সালাম. যেতে খুব ইচ্ছে করে

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮

রাতুলবিডি৪ বলেছেন: ধন্যবাদ , ওনারা এখন দেড় মাসের সফরে বান্দরবন !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.