নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা বলি..... বর্তমানের- কথা বলি ভবিষ্যতের.......

মাই নেম ইজ রেজাউল ইসলাম। এন্ড আই অ্যাম নট এ রাজাকার !!!

মোঃ রেজাউল ইসলাম

আমি নতুন সর্বদা----

মোঃ রেজাউল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তান আমলের মতো আন্দোলন করতে হবে কেন?

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৫

যে জনগণ বাংলাদেশকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের নিগড় থেকে মুক্ত করে আনল সেই জনতাকে আজ তাদের পছন্দমতো সরকার নির্বাচন করার অধিকার দেয়া হচ্ছে না, এমন একটি বিষয় যেমন গভীর উদ্বেগের, তেমনি লজ্জারও। কারণ স্বাধীন দেশে সরকার গঠনে ভোটাধিকারকে দেখা হয় সার্বভৌম অধিকার হিসেবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার গঠন করার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় নীতি-কৌশলের মৌলিক ভিত্তি হিসেবে দেখা হয়েছে শাসনতন্ত্রে। মুক্তিযোদ্ধার দাবিদার হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার কোনোভাবেই নিজেদের পাকিস্তানি আমলের স্বৈরশাসকদের অনুসরণ করতে পারে না। সরকার যখন নির্বাচনী বৈধতার সংকটে ভুগছে, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ রকম দাম্ভিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার কোনো অর্থ হয় না যে, বিএনপি এবং অন্যান্য দলের পক্ষে গণআন্দোলন গড়ে তোলার মতো জনসমর্থন নেই। উপরন্তু ভোটারবিহীন নির্বাচনের পটভূমিতে জনগণের কাছে সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে কেন তাদের ভোটাধিকার হরণ করা হল। বিএনপি নেতাদের হয়রানি করে কিংবা মামলা দিয়ে দণ্ডিত করে অথবা অন্য কোনোভাবে সরকার যা নয় তা হতে পারবে না। এ সরকার যে জনসমর্থনহীন অনির্বাচিত সরকার- এ পরিচয় মুছে ফেলা যাবে না।



সবচেয়ে বড় কথা হল, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে তবু দাবি করলেই যদি নির্বাচিত সরকার হওয়া সম্ভব হয়, তাহলে ভবিষ্যতে তো আর নির্বাচনের প্রয়োজন থাকবে না। ক্ষমতা দখল করতে পারলেই হল। তাই এ ধরনের দৃষ্টান্ত কতটা ভয়াবহ, সেটা সবাইকে ভেবে দেখতে হবে।



তাছাড়া গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, বাংলাদেশের জনগণকে কেন ভোটাধিকারের জন্য, নির্বাচিত সরকারের জন্য পাকিস্তান আমলের মতো গণআন্দোলন করতে হবে? জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকার ব্যতীত গণতন্ত্র হতে পারে না। পাকিস্তান আমলে এদেশের জনগণকে তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরকার গঠন করতে না দেয়ার প্রতিবাদে যুদ্ধের মধ্যে জড়িয়ে পড়তে হয়েছে। কেন এ সত্য আওয়ামী লীগ সরকার স্বীকার করে নিতে পারবে না যে, ৫ জানুয়ারির বিজয়পূর্ব সব নির্বাচনী পূর্বাভাস ছিল আওয়ামী লীগের প্রতিকূলে, যেজন্য আওয়ামী লীগ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন মোকাবেলা করতে অস্বীকার করে? সরকারকে প্রত্যাখ্যান করার কথা ছিল জনগণের; কিন্তু তার পরিবর্তে সরকারই জনগণকে পরিত্যাগ করে।

সাংগঠনিক দিক থেকে বিএনপি, আওয়ামী লীগ উভয় দলই রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দুর্বল। কারণ, জনগণের সমর্থন এবং আস্থাপুষ্ট হয়ে কোনো দলই রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠতে চায় না। কোনো দলেরই সুশাসন দেয়ার মতো যোগ্য নেতৃত্বের প্রয়োজন হয় না। দলীয় নেতৃত্বে গণতন্ত্র চর্চার প্রয়োজনীয়তার কথাও কোনো দল স্বীকার করে না। ৫ বছর অন্তর সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে প্রধান দুটি দলের নেতৃত্বে অটো-প্রমোশন ঘটতে দেখা গেছে।



এর ফলে আওয়ামী লীগ অথবা বিএনপি কোনো দলই জনগণের দল হিসেবে গড়ে ওঠেনি এবং গণতন্ত্রকে কার্যকর করার ব্যাপারে কোনো দলই আগ্রহ দেখায়নি। রাজনৈতিক দলে স্থায়ী নেতৃত্বের অর্থ দাঁড়িয়েছে দুটি কায়েমি স্বার্থান্বেষী গ্র“পের মধ্যে ক্ষমতার লড়াই। যার একটি গ্র“পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা এবং অপরটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন খালেদা জিয়া। উভয়ে তাদের অনুসারীদের স্বার্থে একের পর এক দেশকে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যর্থ সরকার দিয়ে যাচ্ছেন। আর দলীয় রাজনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করে চলেছেন ধুরন্ধর ব্যবসায়ী চক্র। যারা রাজনীতিক নয়, তারা রাজনীতি করার সুবিধা ভোগ করছেন। উভয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করার জন্য একযোগে কাজ করে যাচ্ছেন। সত্যিকারের গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের প্রতি তাদের তেমন শ্রদ্ধা নেই। স্বাধীন বিচারব্যবস্থার প্রতিও তাদের কোনো বিশ্বাস নেই।



দুঃখের কথা, একদা যে দলটি ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয়, সেই দলটি এখন একটি অনির্বাচিত সরকারের পেছনে লুকোচ্ছে। সুশীল সমাজের সদস্যরা যা-ই বলুন, জনগণ অনেক বেশি দুর্নীতি প্রত্যক্ষ করেছে, মাত্রাতিরিক্ত ক্ষমতার অপব্যবহার হতে দেখেছে এবং অসহনীয় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেছে। তাই তারা এ দুটি দলের ব্যাপারে আর আশাবাদী হতে পারছে না। দল দুটির রাজনীতি মানে ক্ষমতা দখল ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা।

সাধারণ মানুষ শান্তিতে-নিরাপদে থাকতে আগ্রহী। এ কথার অর্থ এ নয় যে, তারা একই ব্যর্থ সরকার, ব্যর্থ নেতৃত্বকে সমর্থন করে সেই কাক্সিক্ষত শান্তি ও নিরাপত্তা খুঁজছে। জনগণ পরিবর্তন চায়, যে কোনো ধরনের পরিবর্তন। তারা সবাই বিএনপির সমর্থক হয়ে গেছে, তাও নয়।

এটাও সত্য, পরিস্থিতি যতই শোচনীয় হোক না কেন, জনগণ উত্তেজনায় ফেটে পড়ছে না। এর কারণ হচ্ছে, জনগণ শান্তিতে থাকতে চায়, শৃংখলা বজায় রাখতে চায়। জনমত গঠনকারীদের অধিকাংশের অভিমত হচ্ছে, বর্তমান শান্ত পরিস্থিতি ঝড়েরই পূর্বাভাস।



বর্তমানের অনির্বাচিত সরকার জনগণের এ মানসিক অবস্থার সুবিধা নিতে পারত, যদি তারা অপরাধ দমন ও লুটপাট বন্ধ করতে পারত। এ ব্যর্থতার কারণে সামগ্রিক অবস্থার অবনিত ঘটে চলেছে। খুন-গুমের ঘটনা ব্যাপকভাবে ঘটছে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মানবিক কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বেড়েই চলেছে। জনগণের অর্থনৈতিক দুঃখ-দুর্দশাও কম উদ্বেগজনক নয়। সর্বোপরি জনগণ ক্ষুব্ধ এবং নিপীড়নমূলক রাজনীতির হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য উদগ্রীব। কিন্তু সরকার সুশাসন দিতে অপারগ। তারা আরও বেশি ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণের পরিকল্পনা করছে এবং দেশকে একদলীয় পুলিশি রাষ্ট্রের রূপ দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য গণমাধ্যম এবং বিচার বিভাগকে অনুগত করার নতুন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। জনগণের কাজে আসার বদলে সরকার ক্রমাগত জনগণ থেকে দূরে, আরও দূরে সরে যাচ্ছে।



সুতরাং এটা পরিষ্কার যে, সরকার তাদের পরামর্শ শোনার ব্যাপারেই আগ্রহ দেখাচ্ছে, যারা একদলীয় বাকশালী স্বৈরশাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিল, যে ব্যবস্থায় নির্বাচন তার গুরুত্ব হারিয়েছিল, সংবাদপত্র হারিয়েছিল স্বাধীনতা এবং সরকারের হাতে ছিল সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের সাজা প্রদানের ক্ষমতা। তারপরও আমরা আশা ও বিশ্বাস করতে চাই, সরকার দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের সংশ্রব ত্যাগ করবে এবং নির্বাচন মোকাবেলার পথে ফিরে আসবে। কারণ, এটাই অধিকতর নিরাপদ পন্থা। জনগণ শান্তি চায়, কিন্তু তারা অসন্তুষ্ট ও ক্ষুুব্ধ। নির্বাচিত না হয়েও যে সরকার নির্বাচিত দাবি করতে পারে, ক্ষমতা হারানোর ভয় তার পিছু ছাড়ে না। এ রকম সরকার সর্বত্র ষড়যন্ত্র দেখতে পায়; কেবল জানতে চেষ্টা করে না যে, স্বৈরশাসন তার নিজের পতন নিজেই ডেকে আনে।



যারা ধারণা করেন যে, সরকার খুব জনপ্রিয়, তাদের উচিত সরকারকে নির্বাচন দেয়ার জন্য উৎসাহিত করা।

ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন : আইনজীবী ও সংবিধান বিশেষজ্ঞ

( যুগান্তর )

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুক্তিযোদ্ধার দাবিদার হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার কোনোভাবেই নিজেদের পাকিস্তানি আমলের স্বৈরশাসকদের অনুসরণ করতে পারে না। সরকার যখন নির্বাচনী বৈধতার সংকটে ভুগছে, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ রকম দাম্ভিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার কোনো অর্থ হয় না যে, বিএনপি এবং অন্যান্য দলের পক্ষে গণআন্দোলন গড়ে তোলার মতো জনসমর্থন নেই। উপরন্তু ভোটারবিহীন নির্বাচনের পটভূমিতে জনগণের কাছে সরকারকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে কেন তাদের ভোটাধিকার হরণ করা হল।

++++++++++++++++++++++

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫

হরিণা-১৯৭১ বলেছেন: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে ক্ষমতা দখলের দিক থেকে সবই মিল আছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.