নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথা বলি..... বর্তমানের- কথা বলি ভবিষ্যতের.......

মাই নেম ইজ রেজাউল ইসলাম। এন্ড আই অ্যাম নট এ রাজাকার !!!

মোঃ রেজাউল ইসলাম

আমি নতুন সর্বদা----

মোঃ রেজাউল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

আওয়ামী লীগে চোর-দুর্নীতিবাজের অভাব নেই।.............//বদরুদ্দীন উমর//

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:২২

আবদুল লতিফ সিদ্দিকী একজন চোর বটে। কোনো প্রকার দুর্নীতিতেই তিনি যে অপারগ নন এর প্রমাণ তিনি ২০০৯ সাল থেকে রেখে এসেছেন। এ বিষয়টি আওয়ামী লীগেরও শীর্ষ মহল থেকে সব মহলেরই জানা। অন্যদের কাছেও এই ব্যক্তির চুরি, দুর্নীতির কীর্তি অজানা ছিল না। কাজেই এখন চোর হিসেবে লতিফ সিদ্দিকীকে শনাক্ত করে চারদিকে ঢাকঢোল যেভাবে পেটানো হচ্ছে, তাতে মনে হয় এদিক দিয়ে তিনি একজন ব্যতিক্রমী মন্ত্রী! মনে হয় নরম সৎ ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই একমাত্র চোর! এর থেকে মিথ্যা ও হাস্যকর ব্যাপার আর কী আছে? শুধু তাই নয়, যেভাবে এখন লতিফ সিদ্দিকীকে চোর হিসেবে শনাক্ত করে তার জন্য শাস্তির ব্যবস্থা হয়েছে তাতে তার প্রতি 'অবিচার' করা হয়েছে, এটাও বলা যায়। কারণ অতীতে এমন দুর্নীতিও আছে যেখানে চোর ও মন্ত্রী হাতেনাতে ধরা পড়ার পর তাকে মন্ত্রীর পদ থেকে অপসারণ করে দেশ থেকে তাড়িয়ে না দিয়ে উল্টো পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাকে দু'দিন পরই আবার দায়িত্বমুক্ত মন্ত্রী পদে নিযুক্ত করে তার 'সম্মান' রক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে। চুরির টাকার বখরা কীভাবে ভাগাভাগি হলো তার কোনো হদিসও পাওয়া যায়নি!বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ১৮৫ জন সঙ্গী নিয়ে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। এই ১৮৫ জন ছাড়াও ছিলেন ২০ জন নিরাপত্তাকর্মী। অর্থাৎ এই সংখ্যা ছিল ২০০-এরও বেশি। বিশ্বের অন্য কোনো দেশই এই সংখ্যক লোক নিয়ে জাতিসংঘে যায়নি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দলে ছিলেন ৭৫ জন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দলে ছিলেন ১৪ জন। বাংলাদেশ ডেলিগেশনের ১৮৫ জনের মধ্যে একজন ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী। কাজেই ওই সময় পর্যন্ত তিনি ছিলেন একজন সৎ ও সম্মানিত ব্যক্তি। কিন্তু এই ব্যক্তি নিজের মূঢ়তাবশত অথবা অন্য কোনো গোপন বা রহস্যজনক কারণে নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের এক হোটেলে বাংলাদেশিদের এক সভায় হজ, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে বসেন। প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের প্রতি বিরূপ মন্তব্য এক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক, এ বিষয়টি আড়াল করে ধর্মের বিরুদ্ধে লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্য সামনে এনে সরকারি ও বেসরকারি কিছু মহলে বিরাট শোরগোল তোলা হয় এবং মন্ত্রীর এই অধার্মিক বক্তব্যের জন্য মন্ত্রিপরিষদ থেকে অপসারণসহ তার বিরুদ্ধে আরও কঠোর শাস্তির দাবি ওঠে। সরকার যেহেতু জনগণের, সেজন্য জনগণের এই কণ্ঠস্বর উপেক্ষা না করে প্রধানমন্ত্রী তার মন্ত্রীর বিরুদ্ধে শাস্তির পদক্ষেপ ঘোষণা করেন! এই শাস্তি এখন তাকে দেওয়া হয়েছে! মন্ত্রীর পদ থেকে তাকে সরিয়ে দিয়ে তার বিরুদ্ধে চুরি-দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে!এ প্রসঙ্গে বলা দরকার যে, লতিফ সিদ্দিকী নিউইয়র্কে ধর্ম বিষয়ে যেসব কটূক্তি করেছিলেন তার সঙ্গে তার এই চুরি-দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু যেভাবে ও যেসব নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে ও হচ্ছে তার থেকে মনে হয়, ধর্ম বিষয়ে তার বক্তব্যের সঙ্গে এসব অপরাধের সম্পর্ক আছে! তাছাড়া এটাও মনে হয় যে, এখন যেভাবে তার বিরুদ্ধে পাঁচ বছরের চুরি-দুর্নীতির মামলা দায়ের করা হচ্ছে, তাতে তার এসব কীর্তি সরকারের অজানা ছিল? সত্যিই যদি এটা অজানা থাকে, তাহলে সরকার কীভাবে এ দেশ শাসন করছে? এ দেশের অর্থনীতি কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে? সরকারের প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, তাদের দুর্নীতি দমন বিভাগ কীভাবে এসব ক্ষেত্রে চোখ-কান খোলা রাখছেন? এসবই তো চোখ বন্ধ রাখার ব্যাপার! একজন পাঁচ বছর ধরে অবাধে চুরি-দুর্নীতি করে সরকারি মিল-কারখানা পানির দরে অন্যদের কাছে বিক্রি করে দিয়ে আসছে অথচ এ খবর সরকারের জানা ছিল না। এটা কে বিশ্বাস করবে? কাজেই নিউইয়র্কে লতিফ সিদ্দিকীর বক্তব্যের পর কেন হঠাৎ করে এ বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হলো এ প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই করা চলে। আগেই বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগে চোর-দুর্নীতিবাজের অভাব নেই। মন্ত্রী, এমপি, দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে চোর-দুর্নীতিবাজ গিজগিজ করছে। প্রতিদিনই তাদের এসব চুরি-দুর্নীতির খবর সংবাদপত্রে প্রকাশ হয়। আজকের পত্রিকাতে আবদুর রহমান বদি নামে এক আওয়ামী লীগ সাংসদকে চুরি-দুর্নীতির দায়ে জেলে ঢোকানোর খবর আছে (ডেইলি স্টার, ১৩.১০,২০১৪)। এ চুরি, ডাকাতি, দুর্নীতি এত ব্যাপকভাবে হচ্ছে যাতে ছিটেফোঁটা দু'একজনের শাস্তি হলেও অপরাধীরা আইনের জাল ছিঁড়ে বাইরে আসছে এবং অধিকাংশই থাকছে আইনের আওতাবহির্ভূত। লতিফ সিদ্দিকীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের তোড়জোড় এবং এ বিষয়ে প্রচারণা নিউইয়র্কে ধর্মবিষয়ক তার বক্তব্যের কারণে শুরু হলো, না এর অন্য কোনো কারণ আছে, এটা ভেবে দেখার বিষয়। ধর্মের বিষয় ছাড়া অন্য বক্তব্যও তিনি প্রদান করেন। যাই হোক, পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন লতিফ সিদ্দিকী যেসব সরকারি মালিকানাধীন কলকারখানা বেসরকারি লোকদের কাছে বিক্রি করেছেন, সেগুলো সরকারের খাতে ফিরিয়ে আনার! এই ঘোষণা দেওয়া যত সহজ তা কার্যকর করা তত সহজ নয়। প্রথমত, এর অনেক আইনগত দিক আছে। আইনগত অনেক সমস্যা আছে। এগুলোর সমাধান কোনো সরকারি ঘোষণার মাধ্যমে সম্ভব নয়। কাজেই এই ঘোষণা শেষ পর্যন্ত কাগুজে ব্যাপার হিসেবে থেকে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় কারণ হলো, লতিফ সিদ্দিকী অথবা অন্য কোনো মন্ত্রী এ ধরনের কাজ করলে তার ফলভোগী হয় আওয়ামী লীগেরই লোকজন। আওয়ামী লীগ চোর ধরেছে এবং চোরদের শাস্তি দেওয়ার জন্য তারা বদ্ধপরিকর_ এসব সরকারি ক্ষমতায় থেকে প্রচার করা যত সহজ, এই প্রচারকে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করানো তত সহজ নয়। লতিফ সিদ্দিকী যে একজন চোর-দুর্নীতিবাজ এটা এতদিন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরা পর্যন্ত না জানলেও জনগণের ও ব্যবসায়ী মহলের কাছে এবং সাংবাদিক মহলে এটা বেশ ভালোভাবেই জানা ছিল। নিউইয়র্কে গিয়ে লতিফ সিদ্দিকী ধর্ম বিষয়ে নানা অপ্রাসঙ্গিক এবং অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলার পর সরকার যে চুরি-দুর্নীতির মতো অধার্মিক কাজের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করে তাদের মন্ত্রীকে সরকারি ও দলীয় সব পদ থেকে অপসারণ করেছে ও তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তার আরও কঠোর শাস্তির উদ্যোগ নিয়েছে, এটা কি শুধুই হাস্যকর? এর জন্য প্রশংসা কি তাদের প্রাপ্য নয়!উৎসঃ সমকাল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.