নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার যত কথা' মনের কথা-রফিকুল কাদের

সব ভাল কথাই ভাল নয়...........

কে এম রফিকুল কাদের

আমি দিক্ষণা বাতায়ন খুলে রাখি, বাধ ভাঙা মুক্ত বাতাসের অনুপ্রেবেশ ............

কে এম রফিকুল কাদের › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক -এর ঘোষণা

০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫২

সংগ্রামী ভাই ও বোনেরা,



আজ আমরা ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি। আপনাদের এই শ্রম, এই ঘাম আজ সারা বাংলার দৃপ্ত শপথ। আজ এখানে দল-মত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে যারা বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির পক্ষে এসে দাঁড়িয়েছেন, তাদের সবাইকে জানাই সংগ্রামী শুভেচ্ছা।



১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মত আজও পুরো দেশবাসী একত্রিত হয়েছি। এই “প্রজন্ম চত্ত্বর” থেকে ফাঁসির দাবি তুলেছি। আপনারা জানেন, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ এই “প্রজন্ম চত্বর” থেকে অল্প দূরে সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে গঠন করেছিলেন গণ আদালত। আর সেই আদালতের ঐতিহাসিক বিচারে ফাঁসি হয় গোলাম আযমের।



এরপর দীর্ঘ একটি সময় পেরিয়ে যায়। ২০০১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রীত্বের মাধ্যমে কলঙ্কিত হয় বাঙ্গালির ইতিহাস। ২০০৮ এর নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার জাতীয় সংসদে প্রথম অধিবেশনেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাবনা পাশ করেন। এই প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে গঠিত হয় অন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই ট্রাইবুনাল অত্যন্ত সফলতার সাথে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্য পরিচালনা করে আসছেন।



প্রিয় দেশবাসী,

আপনারা জানেন, কিছু দিন আগে ফাঁসির রায় হয় একাত্তরের নরপশু বাচ্চু রাজাকারের। আনন্দে উদ্বেলিত হয় পুরো জাতি। গত ৫ ফেব্র“য়ারি মিরপুরের কসাই রাজাকার কাদের মেল্লার মামালার রায় ঘোষিত হয়। এই নর পশুর বিচারের রায় হলো যাবজ্জীবন!



এ রায় কি আমরা মানি? মানি না।



এমন একটি পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম ব্লগ ও ফেসবুকের মাধমে একটি সাধারণ দাবিতে একত্রিত হয়। সে দাবি ফাঁসির দাবি। আপনারা জানেন, “ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক” এ আন্দোলন শুরু করে। প্রথমদিন থেকেই আপনাদের সবার হাত ধরে পূর্ণতা পায় এ আন্দোলন। রূপ নেয় আজকের এই মহাসমাবেশ।



এই মহাসমাবেশ গভীর ক্ষোভ, ঘৃণা লজ্জার সঙ্গে একাত্তরের কসাই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধী কাদের মেল্লার বিচারের রায় প্রত্যাখ্যান করছে। সমগ্র বাঙ্গালি জাতির আবেগ, অনুভূতি এবং প্রত্যাশার সঙ্গে একাত্ম হয়ে এই মহাসমাবেশ মনে করে, যারা মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কেবল বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধীতাই করেনি, প্রত্যক্ষভাবে গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ এবং জোর করে ধর্মন্তকরণের মতো জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিল, তাদের বিচারের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত “মৃত্যুদন্ড”। কিন্তু ৬ টির মধ্যে ৫ টি অভিযোগ সন্দেহাতিতভাবে প্রমানিত হওয়া সত্ত্বেও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল খুনি জামাত নেতা কাদের মেল্লাকে তার প্রাপ্য সর্ব্বোচ্চ শাস্তি না দিয়ে সমগ্র দেশবাসীকে হতাশ ক্ষুদ্ধ করেছে। এই রায় পূর্ণাঙ্গ ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। এই রায় কোন ভাবেই দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এই সমাবেশ দ্বর্থ্যহীন ভাষায় ঘোষনা করেছে যে, মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সর্ব্বোচ শাস্তির দাবিতে সমগ্র বাঙ্গালি জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। এটা কোনো রাজনীতির প্রশ্ন নয়।



এটা বাঙ্গালি জাতিকে কলঙ্গমুক্ত করার আরেক মুক্তিযুদ্ধ। ন্যায় বিচার, আইনের শাসন ও মানবধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাদেশকে রাজাকার মুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলাই হচ্ছে আজকের এই নিরস্ত্র শান্তপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে আমরা অবিচল। এই লক্ষ্য অর্জনের মধ্য দিয়েই বাঙ্গালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কর্তব্য সম্পাদন করবে এবং ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মদানকে সর্ব্বোচ্চ গৌরব দান করতে সক্ষম হবে।



এই মহাসমাবেশ থেকে আমরা উল্লিখিত লক্ষ্য অর্জন, সকল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুততর করা এবং তাদের সর্ব্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে তরুণ প্রজন্মসহ বাংলাদেশের সকল ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক, পেশাজীবি, বুদ্ধিজীবি, সংস্কৃতিকর্মী, নারী সংগঠন, মুক্তিযোদ্ধা, শিল্পি-সাহিত্যিক সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিকে ইস্পাত দৃঢ় জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।



এই মহাসমাবেশ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী, যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িত, সংবিধান অমান্যকারী, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী হিং¯্র ফ্যাসিস্টদের দল জামায়াতে ইসলামীকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশে গৃহযুদ্ধের হুমকী দিয়ে যে জামাত-শিবির বাংলাদেশকে একটি তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাচ্ছে, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধে তাদের প্রেফতার এবং কঠোরতম শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।



এই মহাসমাবেশ আরো দাবি জানাচ্ছে যারা যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীকে রাজনীতিতে পুর্ণবাসিত করেছে এবং এখনো নানা কৌশলে তাদেরকে সহযোগিতা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল, নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং দেশকে পুনরায় ৭৫ পরবর্তী প্রতিক্রিয়াশীল ধারায় নেয়ার ষড়যন্ত্র করেছে, সেই সব অপশক্তির বিরুদ্ধেও গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।



এই মহাসমাবেশ চলমান আন্দোলনকে জাতীয় নব জাগরণে পরিণত কার দৃঢ় সংকল্প ঘোষনা করেছে। একই সংগে কোনো অপশক্তি যেন জনতার এই স্বতস্ফূর্ত ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে কোনো রকম বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং দূর্বল করতে না পারে সে জন্য সকলকে সচেতন ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।



এই মহাসমাবেশ থেকে ভাষা শহীদের স্মৃতি বিজড়িত ফেব্র“য়ারি মাসে আমরা শপথ নেবো, এই চলমান আন্দোলনকে আরো বেগবান এবং সুসংহত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাবো। এই মহাসমাবেশ একটি স্পার্ক। আপনারা প্রত্যেকে নিজ নিজ এলাকায় চলমান এই আন্দোলনের স্পার্ককে ছড়িয়ে দিন।



আজ এই মহাসমাবেশ থেকে আমরা শপথ গ্রহ করবো। আপনারা সকলে আমার সঙ্গে বলুন-



আজ আমরা শপথ করছি-একাত্তরে যে সমস্ত ঘৃণ্য রাজাকার-আলবদর গণহত্যা ও ধর্ষনের মত মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড না হওয়া পর্যন্ত এই গণজাগরনের মঞ্চ গণমানুষের নেতৃত্বে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া আন্দোলন চালিয়ে যাবে।



আজ আমরা শপথ করছি-যুদ্ধাপরাধী জামাত শিবিরের রাজনীতি এদেশে নিষিদ্ধ ও তাদের এদেশের নাগরিকত্ব বাতিল না করা পর্যন্ত রাজপথে ও অনলাইনে সোচ্ছার থাকবো।



আজ আমরা শপথ করছি- পঁচাত্তরের পরে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন যে সমস্ত যুদ্ধাপরাধী, রাজাকার-আলবদরকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তাদের সকলকে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের আওতাধীন করার দাবিতে কাজ করবো।



আজ আমরা শপথ করছি- যুদ্ধাপরাধীদের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- ইসলামি ব্যাংক, ইবনে সিনা, ফোকাস, রেটিনা কোচিং সেন্টারসহ সব কিছুই আমরা বয়কট করবো। আমরা মনে রাখবো এগুলোর মাধ্যমেই অর্থ সংগ্রহ করে তারা এ দেশে স্বাধীনতাবিরোধী অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি যেসব শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তৈরি করে শিশুদের মাঝে স্বাধীনতা বিরোধী বিষবৃক্ষ বহন করেছে, সেগুলোও বয়কট করবো। এক কথায় রাজাকার-আলবদরদের সকল ব্যবসায়িক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান নিষিদ্ধ করার দাবিতে কাজ করবো।



আজ আমরা শপথ করছি- দেশে গৃহযুদ্ধের হুমকি দিয়ে জামাত-শিবির যে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছে তার জন্য তাদেরকে ভিডিও ফুটেজ ও সংবাদপত্রের ছবি দেখে অবিলম্বে গ্রেফতার করে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়ে যাবো।

আজ আমরা শপথ করছি- যুদ্ধাপরাধীদের গণমাধ্যম যেমনঃ দিগন্ত টিভি, নয়াদিগন্ত, আমার দেশ, সংগ্রাম পত্রিকা, সোনার বাংলা ব্লগ- এগুলোকে বয়কট করবো। কোন অফিসে কিংবা বাসায় যুদ্ধাপরাধীদের কোন পত্রিকা রাখবো না। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের গণমাধ্যমকে অনুরোধ করবো, যুদ্ধাপরাধী ও তাদের তাঁবেদারদের বয়কট করুন।



আমাদের এই শপথকে কাজে রূপান্তরিত করতে হবে। সকল যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে যাবো। আমাদের কর্মসূচি চলছে, চলবে।



জয় বাংলা।



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০২

নন্দিত নন্দন বলেছেন: জয় বাংলা
গনজাগরণের বাংলায়
রাজাকারের ঠাই নাই

২| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৫

টুকরো কাগজ বলেছেন: এই পাকি জারজের ফাঁসি চাই আর কিছু না।

৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৪

বিপদেআছি বলেছেন: ফাঁসি চাই ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.