নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রবাহূত

রবাহূত › বিস্তারিত পোস্টঃ

রোহিঙ্গা ভাবনা

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ১০:৪২

(কোন তথ্য উপাত্য বিশ্লেষণ নেই, যথারীতি নিষ্ফল আক্রোশ আর একগাদা আফসোসের আড়ালে মনের ঝাল মেটানো ছাড়া এ লিখায় আর কিসস্যু নেই।)



কিছু লিখতে ইচ্ছে করছিলো না, আবার চুপও থাকতে পারছি না, আবার লিখলেই বা কি হবে তাও ভাবি, এইসব ছাইপাঁশ লিখা তো এক কালের পত্রিকার চিঠি পত্রের চিঠির মত, কারুর কিছু যায় আসে না! তবে নিজে একটু হালকা হওয়া যায়!

বাংলাদেশের অবস্থা এত নাজুক ইতিহাসে আর কখন ছিল বলে মনে হয় না, এদিকে ইন্ডিয়া খড়ায় মারে, গরমে তো আবার ঢলে মারে বর্ষায়, ঘরে ঢুকে মারে, সিমান্তে মারে, আরেক দিকে মায়ানমার খালি ঠেলে, সমুদ্রে ঠেলে, রোহিঙ্গাদের ঠেলে, এখন তো দেখলাম আকাশ পথেও ঠেলে, এই দিকে ঠেলা আর ওদিকে ধাক্কা! নিজেদের পায়ের নিচে শক্ত নৈতিক জোড় না থাকায়, আমাদের সরকার শুধু দেখে আর শোঁকে কোথাও বিম্পি-জামাত গন্ধ পায় কিনা!

রুশ দেশের উপকথায় একটা দারুন গল্প আছে “কুড়ুলের জাও”, এক সৈনিক এক বুড়িকে বোকা বানিয়ে তার ভাড়ার খালি করে কুড়ুলের জাও বলে তাতে চাল নুন ঘি সব ঢেলে জাও বানিয়ে খেয়ে নেয় আর বুড়ি অবাক হয়ে ভাবতে থাকে “কুড়ুলেরও জাও হয়?!” বাংলাদেশ হচ্ছে বুড়ি আর ইন্ডিয়া হচ্ছে সে স্মার্ট রুশ সৈনিক, সব গিলে শেষ করে দিচ্ছে, আর আমরা অবাক হয়ে ভাবছি, “কুড়ুলেরও জাও হয়!” ধান ভাণতে শিবের গীতের কি মানে?! এখানে ইন্ডিয়া এলো কোথা থেকে?

মানি বা না মানি ইন্ডিয়া এ পাড়ার মোড়ল, এদের সমর্থন ছাড়া মায়ানমার এত আগে বাড়ত না! আর মোদীর সমর্থন সব স্পষ্ট করে দিয়েছে, আর যেই বাংলাদেশ একটু চিন মুখী হয়েছে, ইন্ডিয়াও মায়ানমার মুখী হয়েছে, আওয়ামীলীগ বুঝেও নিজের স্বার্থে মুখ বুজে আছে, কিচ্ছু বলার নেই, মসনদের মোহ বড় কঠিন!

রোহিঙ্গা সমস্যার তাত্ত্বিক আলোচনা করার মত জ্ঞানী আমি নই, কিন্তু বর্তমান এই ইস্যুর কারনে কিছু জিনিশ লক্ষ্য করলাম যে গুলি না বললেই নয়।

আমি বোধহয় বাংলাদেশের একমাত্র মানুষ ইরাক-ইউ,এস যুদ্ধে, যে ইউ, এস সোলজার মারা গেছেন তাঁদের জন্য দুঃখিত হয়েছি। তার তো অত দূরে বেঘোরে মরে পরে থাকার কথা নয়, একটা অন্যায্য যুদ্ধ রাষ্ট্র তাঁদের কাঁধে চাপিয়ে তাঁদের হত্যা করেছে, আমি এম্নটাই ভাবি। যে হাজার হাজার নিরীহ নাগরিক মারা গেছে তারা শুধুই মুসলিম বলেই দুঃখ পেয়েছি তা কিন্তু নয়, তারা মানুষ এটাই ভেবেছি সব সময়। রোহিঙ্গারা যদি মুসলিম না হয়ে বৌদ্ধ কিংবা হিন্দু হত আমি এমন ভাবেই ভাবতাম। দুঃখ এদেশে তার বিপরীত চিন্তার প্রতিফলনই বেশি দেখি। মায়ানমার সরকারের এই এথনিক ক্লিঞ্জিং কে বৌদ্ধদের আক্রমণ ভেবে, যারা এদেশের বৌদ্ধদের উপর কড়্গ হস্ত হচ্ছেন তাঁদের চিন্তার প্রতিবন্ধকতা দেখে আমি চিন্তিত হই। তাহলে তো আই এস/ বোকা হারাম এদের সবার দায় আমাদের নিতে হবে। তখন কিন্তু আপনি বলবেন এরা মুসলিম নয়! ঠিক তেমনি মায়ানমারে বৌদ্ধরা মারছে কই?! সেখানে তো একটি রাষ্ট্র-যন্ত্র তার পেটোয়া বাহিনী দিয়ে হত্যা যজ্ঞ চালাচ্ছে। কাজেই অহেতুক যখন মানুষ জন এদেশের বৌদ্ধদের প্রতি প্রতিহিংসা প্রকাশ করে আমি লজ্জিত হই। আগা-পাশ-তলা এ জাতি এখনো অপরিপক্ক! চিন্তায়, মননে, মানসিকতায়। পরিণত রাষ্ট্র নেতা না থাকলে এমনই হয়। তাই এত লাফ ঝাঁপ।

এ বিভাজিত জাতি যথারীতি এই ইস্যুতেও শত ভাগে বিভাজিত। আর তাদের আদি অকৃত্রিম কূট কাচালিতে লেগে আছে। কিছু বিবেক হীন মানুষ অদ্ভুত এক আওয়াজ তুলছেন, ছবি কিংবা ভিডিও গুলোর অথিন্টিসিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলে ব্যাপারটাকে মিথ্যা বলে প্রমান করতে চাইছেন, সেটি অবশ্য তাদের বিশেষ ঘরানার পরিচয়ই প্রকাশ করছে। তাদের প্রচন্ড গাত্রদাহ কেন তুর্কি ফার্স্ট লেডি আসলেন?! এলেন যখন কেন তাদের কোলে করে নিয়ে গেলেন না? অদ্ভুত সব যুক্তি, কতজন রিফিউজিকে তুর্কি নিয়েছে, কি করেছে তুর্কি? একটু যদি তারা ঘাটাঘাটি করত তাহলেই দেখতে পেত তুর্কি, সিরিয়া কিংবা অন্যান্য উদবাস্তুদের জন্য কি করেছে! ইউরোপে কত উদবাস্তু গেছে (বাংলাদেশের এসাইলাম লোভীরা হিসাবের বাইরে), আর তুর্কিতে কত গেছে?

আরেকদল এক্ষুনি ঝাঁপিয়ে পড়বে যুদ্ধে! কোন কিছুরেই মাথা মুণ্ডু বুঝিনা! কেউ বলছেন এদের মিলিটারি ট্রেইনিং দিয়ে মায়ানমারে ছেড়ে দিতে! কি ভয়ংকর আইডিয়া! কিচ্ছু বলার নেই!

এই বিপুল পরিমাণ রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমাদের কি সমস্যা হবে? কিভাবে এর সমাধা হবে, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মহল থেকে কোন দিক নির্দেশনা কিন্তু আসে নাই। শুধু আজ দেখলাম ব্যাক্তিগতভাবে কোন সাহায্য সহযোগিতা এদের করা যাবে না, কারো মন চাইলে রাজকোষে জমা দিবেন। এ কি শিয়ালের কাছে মুরগী জমা নাকি সত্যি কোন কাজের কাজ হবে কে জানে? তবে এক আধজন সৎ ও সক্রিয় লোক থাকলে তারা অনেক কিছুই করতে পারে তার উদাহরণ কিন্তু এই দুঃসময়েও আছে।

আমরা সাধারণ মানুষ অত বুঝি না, ভুখা নাঙ্গা লোক দেখলে কষ্ট হয়, মানুষ কে মরতে দেখলে কষ্ট হয়। সে বিশ্বজিৎ, কি তনু, কি সাগর না রুনি কিছুই ভাবি না! এই গুম খুনের মৃত্যু উপত্যকায় থেকেও এখনো অতটা পাথর হতে পারিনি! নিথর মায়ের দুগ্ধ পাণের আশায় যে শিশু প্রানান্ত চেষ্টা চালায় সে তো রাষ্ট্র বোঝে না, ধর্ম বোঝেনা, জাতি বোঝে না! আমার কাছে তো একাত্তর এদের ছবি হয়েও আসছে! আমার কাছে তো এই আমার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বিপন্ন প্রতিটি মানুষের পাশে দাঁড়ানো! ধর্ম, শিক্ষা, সংস্কৃতি তো এই শিখাই দেয়! চে, রবি ঠাকুর, নজরুল, ডিলান, সহ কত মনিষীর কত বড় বড় বুলি আউড়াই তারা তো সব অন্যায়, অন্যায্য অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলতেই বলেছে নাকি! যদি অত হিসেব কষতেন আমাদের মুক্তিসেনারা, তাহলে আজ আর স্বাধীন বাংলায় এই আস্ফালন করতে হত না!

পশ্চিম বঙ্গের মুখ্য মন্ত্রী কিন্তু বলেছেন, মোদী না চাইলেও আমরা রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করবো না! হায় মমতা বলতে পারে আমরা পারি না!

সবশেষে গুনের একটা কবিতা মনে পরে গেল...
“যুদ্ধ মানে ধ্বংস ধ্বংস খেলা
তোমার প্রতি আমার অবহেলা”।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:২৪

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন:

ছবিটি একটা সিনেমার ।



১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০১

রবাহূত বলেছেন: এতে কিছু আসে যায় না! এটা একটা সিম্বল!! মেকআপ, লাইট সবই স্পষ্ট! কিন্তু এর মত আরও ক্রুর ছবি আছে এ ন্যাক্কার জনক আক্রোশের, সেটি সভ্য সমাজে দেখানো যায় না

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.