নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অসঙ্গায়িত

দর্পণের প্রতিবিম্ব

প্রেমিকার চিরশত্রু!!!!

দর্পণের প্রতিবিম্ব › বিস্তারিত পোস্টঃ

CLOSE CALL

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:১৬




শেষ পর্ব


"আমাকে ধরেছো ঠিকই কিন্তু কি প্রমাণ হবে এতে??" নাজিম বললো। উত্তরে বললাম ন্যায়বিচার।
সে রাফির দিকে তাকিয়ে অট্টহাসি দিয়ে বললো, "ন্যায়বিচার!!!" তার হাসি থামছে না! আবার বললো, "আমরা কি এমন অবিচার করেছিলাম যে তুমি ন্যায়বিচার করবে?"
রাফি চুপ করে আছেন। নাজিম আবারও বললেন, "যে পরিবারটা অপমান হল, যাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হল তাদের ন্যায়বিচার এনে দিতে পারবে....? আমি জানি প্রশ্নের উত্তরটায় হাঁবোধক উত্তর দিবে কিন্তু করতে গেলে খুবই অসম্ভব হয়। যে ফাইলটা তোমরা পেয়েছো সেটায় শুধু কয়েকটা ছবি আর কিছু স্মৃতিময় মুহূর্তের ঘটনা।"
কিছুক্ষণ নিরবতার পর নাজিম তার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আরামপ্রিয় একটা হাসি দিয়ে বললো, "You have 600 seconds remaining, ask anything you like or want..."
তার কথাটা শুনে আশেপাশে তাকালাম। রাস্তায় কেউই নেই!! আকাশও ফাঁকা!! একটা পাখি পর্যন্ত নেই! কিসের ইঙ্গিত দিল সে!
"এসব ভেবে সময় নষ্ট করে লাভ নেই, এরপর আমার মুখ থেকে কিছুই শুনতে পাবে না তোমরা!!" নাজিম ঠোট বাকিয়ে বললো।
"আপনাকে সেলের মধ্যে নিয়েই সবকিছু বের করাবো.. সোজা আঙুলে তো ঘি কোনদিনও উঠবে না..." মামুনের কথা।
ওর কথা শুনে আবারও হাসি দিল নাজিম! হাসতে হাসতে বললো, "আমার সেলের নিয়ম আমাকেই শিখাবা তুমি মামুন???" ক্ষাণিকপর আবার বললো, "ভেবে ভেবে সময় নষ্ট কর না, যা জিজ্ঞেস করার করে ফেল। আমি বোরিং ফিল করতেছি তোমাদের একেকজনের মুড দেখে!"
- কিছু প্রশ্নের উত্তর চাই আমাদের, এলেক্স বললো।
- দেয়ার মত হলে পাবে।
- আমাদের গাড়িতে বোমা রেখেছিল কে?
- এই প্রশ্ন!!! আমি ভেবেছিলাম কি না কি। নাসির রেখেছিল।
আমি বললাম, "তাহলে সিলেটে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না কেন?"
"তদন্ত করে কিছু পাও নি বাবুল?" তাচ্ছিল্যের হাসি নাজিমের!
- সেটা তোমার জানতে হবে না।
- ট্র‍্যাকিং ডিভাইসের সাথে সিগন্যাল হ্যাকের সিস্টেম কানেক্ট করে নেটওয়ার্ক টাওয়ার পর্যন্ত পায় নি। শুধু আমিই পাচ্ছিলাম।
- নাসিরকে মারার কারণ? ক্যাপ্টেন রাফি বললেন
- কারণ সে তোমাদের গাড়িতে বোমা রেখেছিল!!
আমরা সবাই অবাক হয়ে গেলাম!! আমাদের গাড়িতে বোমা রাখার জন্য নাসিরকে মেরে ফেলেছে নাজিম!!!
"অবাক হওয়ার কিছুই নেই।" বলেই একটা নিশ্বাস নিল নাজিম!
"আমার টার্গেট ছিল শুধু রাফি। তোমরা কেউ না। এমন হলে অনেক সুযোগ ছিল তোমাদের মারার কিন্তু সেটা হতে দিই নি...। যতগুলো অপারেশনে ছিলে তোমরা, সব কয়টায় ফাঁদ পেতেছিল নাসির। যার জন্য আমি নাসিরকে ফাঁদে ফেলি!! তোমরা পৌঁছানোর বিশ পঁচিশ মিনিট আগে আমি কাজ সেরে ফেলি। আমি তোমাদের আসতে দেখছি এবং লুকিয়ে ছিলাম। কোন বারই রাফি একা আসে নি এবং একা আসলে এর ফলটা কি হতো সে জানে। যার জন্য অতিষ্ঠ হয়ে ট্রেনেই তোমাদের সামনে থেকে কিডন্যাপ করে নিই। ভাবছি কত সহজেই সবাই বিশ্বাস করে নিল আমার টিম দেশদ্রোহী ছিল!"
নাজিমের কথাটা শুনে আমরা সবাই থমকে যাই!! কিছুটা নিরবতা চলতে থাকে আমাদের মধ্যে।
"লোকেশন পেলে কিভাবে বাবুল?" নাজিমের প্রশ্নের জবাবে বললাম, "Days at heaven এর সুত্রে। যেভাবে হারিস বের করেছিল! পঞ্চগড়ে গৌতম যদিও পরে সে নীলফামারীতে ছিল, কুমিল্লায় মামুন এবং সিরাজগঞ্জে ক্যাপ্টেন রাফির কিডন্যাপ, স্পটগুলোর প্রথম অক্ষর মিলে হয় পাকশী..."
আমি আবারও প্রশ্ন করলাম, "কুমিল্লার এতগুলো মানুষ মেরে কি লাভ হল আপনার?"
"হালকা রাজনীতি" নাজিমের উত্তর।
"কিন্তু তোমরা প্রমাণ করতে পারবে না সেখানে কি হয়েছিল..." নাজিম আবারও বললো।
আমি বললাম আমাদের আই উইটনেস আছে, মামুন। সে আপনাকে আদালতে শনাক্ত করবে। আমার কথা শোনার পর সে আবারও হাসলো!
"উইটনেস!! সেটাও আবার Eye Witness!! কোর্টে নাজিম নামের কেউ থাকবে না। সবাই ব্যস্ত হয়ে যাবে রাফির কেস নিয়ে।"
আমি নাজিমের কোনো কথাই বুঝতে পারছি না! কি বুঝাতে চাচ্ছে সে!
"আমি ওয়াদা করছিলাম পাঁচটা ব্যক্তিকে তাদের ন্যায্যটা উপহার দিব, তাতে যদি আমার জীবন চলে যায় কোন আপত্তি থাকবে না।" নাজিম বললো।
- মানে? ক্যাপ্টেন রাফি বললেন।
- রাফি তুমি আজ জীবিত থাকলেও কাল তুমি মৃত, নিশ্চিত থাকো। সময় ফুরিয়ে আসছে তার বর্গের সমানুপাতিক হারে। আজও বেচে গেলে তবে আর্মি, মানুষ এবং আমি কেউই তোমাকে ছাড় দিব না। নাজিম বললো
আমি বললাম, "আপনার সাথে আরও পাঁচজন ছিল, তারা কে?"
- তারা ছিল না, তারা এখনও আছে...
আমরা কিছু বিপদের আভাস পাচ্ছি মনে হচ্ছে! আমরা এখন যমুনা সেতুর উপরে এবং সেতুর মাঝখানে!! এমন সময় দেখি দুটো হেভি ট্রাক আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে! একটি আমাদের ওভারটেক করে সামনে যায় এবং আরেকটি পিছনে থেকে যায়!
"Beat this close call soldiers..." এই বলে নাজিম মাথা নিচু করলেন এবং সাথে সাথে দুইটা ফ্ল্যাশব্যাক ড্রাইভার কেবিনে এবং আরেক জোড়া আমাদের মাঝে ছুড়ে মারা হল প্রথম ট্রাক থেকে! এরপর কিছুক্ষণ চোখে কিছু দেখতে পারলাম না এবং কানে চিকন কর্কশ আওয়াজ বাজতে লাগলো। আমাদের ড্রাইভার সজোরে ব্রেক চেপে ধরে। চোখ খুলে দেখি নাজিম নেই! তৎক্ষণাৎ নিচে নেমে দেখি নদীর পানিতে কিছুটা দুরত্বে ছয়টি ছোট ঢেউয়ের আন্দোলন তৈরী হয়েছে। বুঝতে পারলাম সে আবারও নদীতে ঝাপ দিয়েছে সাথে তার সঙ্গীরাও!
- আবারও সে আমাদের ফাঁকি দিয়ে বের হয়ে গেল এলেক্স!! আমি বললাম
- তাকে মরতেই হবে বাবুল, ক্যাপ্টেন রাফি
- খুবই চালাক সে, মামুন বললো।
আমরা আবারও ট্রাকে উঠলাম হঠাৎ দেখি সেখানে একটা মুখোশ ফেলানো!! ক্যাপ্টেন রাফি সেটা হাতে নিলেন। কিছুক্ষণ দেখে তার চোখ মুখ শুকিয়ে যেতে লাগলো! তারপর আমি নিলাম মুখোশটা। এটা নাজিমের চেহারা কিন্তু যে ছিল সে কে তাহলে? আমাদের মনের মধ্যে হাজারও প্রশ্ন তখন ঘুরপাক খাচ্ছে! তাহলে কে ছিল সে? রাফির মতে রুহুল শত্রুর হাতে মারা গেছেন এবং নাজিমের মতেও রুহুল শত্রুর হাতে মারা গেছেন! বাকি রইলো নাজিম এবং হারিস, নাজিমের মতে হারিস মৃত এবং রাফির মতে প্রথমে দুজনই মৃত ছিল। হঠাৎ করে নাজিমের আবির্ভাব হয়! নাজিম আমাদের বললো ঘটনাটা, তাহলে কি যে ছিল সে হারিস!! নাজিমের মতে হারিস ছিল সবচেয়ে পারদর্শী কমান্ড। হঠাৎ মামুন চিৎকার দিয়ে বললো, "Noooooo...! Don't Do this!!!"
মামুনের দিকে তাকাতেই এমন সময় একটি গুলির আওয়াজ খুব পাশ থেকে শুনতে পেলাম আমরা! পাশে তাকিয়ে দেখি ক্যাপ্টেন রাফি মাটিতে পরে আছেন! কপাল বেয়ে নদীর ধারার মত রক্ত বের হচ্ছে! নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই তিনি আত্মহত্যা করলেন। তাহলে সে নাজিম ছিল না, হারিস ছিল। বুঝতে পারলাম হারিসের জীবিত থাকার আন্দাজ পেয়ে ক্যাপ্টেন রাফি আগেই তার ভবিষ্যৎ দেখে ফেলেছেন। দুরে তাকিয়ে দেখি সেতু কর্তৃপক্ষের পুলিশবাহিনী আসছে! এরা যখন এসেছে তখন মিডিয়ার আসতেও সময় লাগবে না বলে মনে হয়।


১১ই সেপ্টেম্বর, ২০১২
বিকাল ৩টা
বাবুল মঞ্জিল


লেফটেন্যান্ট বাবুলের বাসায় দুপুরের খাবারের টেবিলে বসে আছে বাবুল, পিটার, এলেক্স, মামুন এবং গৌতম। দেশের প্রত্যেকটা চ্যানেলের ব্রেকিং নিউজে ক্যাপ্টেন রাফির কথা আছে। এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজ আদালত হাতে পেয়েছে যার ফলে আমাদের টিমের নাম খারাপ হচ্ছে। সুইজারল্যান্ডের তেল চুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং বানোয়াট যা শুধুমাত্র আমরা কয়েকজনই বিশ্বাস করেছিলাম। বাবুল বললেন, "এই টেবিলটা বানিয়েছিলাম যেন ছয়জন বসতে পারে। এই যে চেয়ারটা ফাকা সেটায় ক্যাপ্টেন রাফি বসতো। কিছু স্মৃতি সবসময় থেকে যায় যার মধ্যে এটি একটি। Days at Heaven ফাইলটায় একটা ছোট কলাম ছিল যেখানে লেখা ছিল লেফটেন্যান্ট রাফি সিনিয়র র‍্যাঙ্কে প্রমোশনের জন্য রুহুলকে কিছু অংকের টাকার ঘুষ দেয়। রুহুল অবস্থা বুঝতে পেরে সোজা মানা করে দেয় এবং পরবর্তীতে বার্তা হারিসের কানে পৌঁছে দেয়। হারিস বলে দেয় এটা কখনও সম্ভব না। শুধুমাত্র সিনিয়র র‍্যাঙ্ক পাওয়ার জন্য রাফি নাজিম এবং হারিসকে মারার পরিকল্পনা করে! নাজিম মারা গেলেও হারিস বেচে যায় এরপরও রাফি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে। রাফি জানতো না হারিস বেচে আছে থাকলে হয়তো সেই জঙ্গলে গিয়ে আবারও হারিসকে মারার জন্য মরিয়া হয়ে উঠতো! ক্যাপ্টেন রুহুল শহীদের সম্মাননা পেলেন কিন্তু সম্মাননা থেকে বঞ্চিত হলেন নাজিম এবং হারিস!!
এখন সবকিছু বুঝতে পেরেছি এলেক্স কেন হারিসের এত ক্রোধ ছিল রাফির প্রতি! তিনি বলেছিলেন পাঁচটা ব্যক্তির কথা, তারা হলেন নাজিমের ছোট তিন ভাই এবং নাজিমের দুই ছেলে। যেকোনো সময় ক্যাপ্টেন নাজিম শহীদের সম্মাননা পাবেন। দুর্ভাগ্য শুধু এই যে এটা পাওয়ার সময় তিনি জীবিত নেই। মৃত হয়েও অমর হয়ে আছে। ক্যাপ্টেন হারিস সবকিছু বিসর্জন দিয়ে দিলেন। বর্তমানে তিনি পলাতক আছেন। কোনো ডকুমেন্টস আমাদের হাতে নেই যেটায় আমরা সেই পাঁচজনকে শনাক্ত করতে পারবো। নিউজ চ্যানেল এবং সবকয়টা পত্রিকার হেডলাইনে থাকবে ক্যাপ্টেন নাজিম। আমরা কেউই ভাবতে পারি নি শেষ পরিণতি এমন হবে। একটি কারণে হারিসকে ধন্যবাদ দেয়া উচিৎ সেটা হল সত্য উন্মোচন করার জন্য। বাকি রয়ে গেল কুমিল্লা ট্রাজেডি, আমরা জানি সেটা হারিসের কাজ কিন্তু দেশবাসী জানবে নাসির এবং রাফির যৌথ প্লান। মামুন শুধুমাত্র নাজিমকেই শনাক্ত করতে পেরেছিল, বাকি পাঁচজনের চেহারা মনে করতে পারি নি। এখন আমাদের একজন দলনেতা দরকার নতুন করে শুরু করতে। দেখা যাক কে হয় বা কে আসে...."


২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০১২
রাত ৮টা
হোটেল সোনারগাঁও


হোটেল স্টাফ জেনারেল ওসমান এর গাড়ি পার্কিং থেকে মেইন গেটে আনলো। এক মতবিনিময় মিটিং শেষ করে বাসার পথে রওনা হলেন। মাঝপথে ড্রাইভার বললো, "স্যার, গ্যাস শেষের দিকে, বাংলো পর্যন্ত যাওয়া যাবে কিন্তু কাল যদি বের হন তবে গ্যাসের দরকার পরবেই, আজই কি নিয়ে নিব?"
জেনারেল ওসমান কিছুক্ষণ ভেবে ফিলিং স্টেশনে যেতে বললেন। ড্রাইভার গাড়ি ফিলিং স্টেশনে নিয়ে গেল।
-স্যার, কয় লিটার নিব?
- ফুল করে নাও।
- জ্বি স্যার।
যান্ত্রিক শহরে তার আর ভাল লাগে না! কিছু একটার বড্ড অভাব ফিল করছেন তিনি। একটু মানসিক শান্তির জন্য সিগারেট ধরালেন। একটু একটু করে ধোয়া বাতাসে মিশে যাচ্ছে এবং তিনি ভেবে যাচ্ছেন! কি ভাবছেন সেটা কাউকে জানাতে পারছেন না। তিনি কার সাথে তার মনের কথা শেয়ার করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। সিগারেট টানছেন আর যানবাহনের ছুটি চলা দেখছেন। একটু পর তিনি ড্রাইভারকে ডেকে বললেন গাড়ি ওয়াস করাতে!! ড্রাইভার তার আজকের কর্মকাণ্ডে কিছুটা অবাক হচ্ছেন! "জ্বি স্যার" বলেই ড্রাইভার চলে গেলেন। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বললো,
- স্যার আপনি ভিতরে বসেন।
- আমি ঠিক আছি আফজাল। তুমি যাও। গাড়ি নিয়ে আসো।
- স্যার গাড়ি তো ওয়াস করছে!!
- মানে??? কে বলেছে ওয়াস করার জন্য!!! রেগে গেলেন তিনি!!
- স্যার আপনিই তো বললেন কিছুক্ষণ আগে..
জেনারেল ওসমান ভুলে গেছেন যে তিনিই আফজালকে গাড়ি ওয়াসে পাঠাতে বলেছেন! কিছুক্ষণ আমতা আমতা করে বললেন, "ঠিক আছে তুমি যাও.."

-স্যার আমরা এসে গেছি।
আফজাল দরজা খুলে বললো।
- ওহ আচ্ছা!!
জেনারেল ওসমানের সে খেয়ালই নেই কখন তিনি বাসায় পৌঁছেছেন! তিনি ভিতরে এসে ইজি চেয়ারে বসলেন। চোখটা বন্ধ করতেই দরজায় টোকা পরলো!! খুলেই যাকে দেখলেন সেজন্য তিনি একদমই প্রস্তুত ছিলেন না!
জেনারেল অবাক হয়ে বললেন, "হারিস! তুমি এখানে কিভাবে? কেউ দেখে নি তো?"
হারিস ভিতরে এসে বললো, "এতটা সহজ না স্যার!"
- তুমি শেষ পর্যন্ত করে দেখালে!
- আপনি সাপোর্টে ছিলেন তাই সম্ভব হয়ে উঠেছে। আমি আপনাকে বলেছিলাম সে শুধু বদনাম ছড়াবে, সন্ত্রাস মূলক কাজেকর্মে লিপ্ত থাকবে না..
- ওরা কোথায়?
- আমি জানি নাহ, এরপর আর যোগাযোগ হয় নি আমার সাথে।
- আমি ভেবেছিলাম কেউ তোমাকে দেখে ফেলবে!
- আপনি কি ভুলে গেছেন এই চেহারায় সার্জারি করা হয়েছে?
- সত্যি ভুলেই গেছি হারিস। এই বলে তারা অট্টহাসি দিয়ে উঠলো!!
হারিস বললো, "কোনো প্রমাণ নেই যা হারিসকে বা তার পাঁচজন সাথীকে শনাক্ত করতে পারবে। সাত বছরের পরিকল্পনা এবং নাজিমের পরিবারের পাঁচজনকে সাত বছর ট্রেনিং দিয়ে সম্ভাব্য সকল প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য তৈরি করা সেটা অনেক প্রতীক্ষার এবং ধৈর্য্যের! আপনি জানেন নাজিম কেমন ছিল, শুধুমাত্র রাফির বানানো ঘটনা সবাইকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করবে এটা কেমন যেন কাকতালীয়!"
"আমি জানতাম নাজিম কেমন এবং তুমিই কেমন, তোমাদের বন্ধুত্ব এবং নিষ্ঠা সবই আমার জানা। অনেক মিশনে আমরা একসাথে ছিলাম। আমি খুব করে চাইতাম একটা তদন্ত কমিটি আবারও গঠন করা হোক সেই মিশনটা নিয়ে কিন্তু সুযোগ হয়ে উঠে নি! এর দুইবছর পর তোমাকে দেখে আমি তো হতবাক!" জেনারেল ওসমান।
হারিস একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বললো, "রাফি... লেফটেনেন্ট রাফি.... সেখান থেকে ক্যাপ্টেন রাফি!! দলনেতা। সেদিনের ছেলে যাকে আমি ট্রেনিং দিয়েছি সেই আমাকে কাটা ভেবে সরিয়ে দেবে সেটা কোনদিন ভাবতে পারি নি! যে যেমনটা করবে তেমন ফলই পাবে...."
"একটা ঘটনা শুধু লেফটেন্যান্ট বাবুল এবং তার সঙ্গীরা জানতে পারলো না! সেটা হল আমাদের মারার পর রাফি কিভাবে বেঁচে গেল! আমার ধারণা সে ফায়ার করার পরপরই পাইলটকে গুলি করে এবং ভাগ্যক্রমে চপার ক্র‍্যাশ হওয়ার আগেই লাফ দিয়ে বের হয়ে গেছে!
অথবা,
পাইলটকে মেলি এট্যাক করেছে আর তার আগে "May Day" বলে কনফিউজড করে তারপর মেরে ফেলেছে! চপার ক্র‍্যাশের পর চপারে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে যার ফলে বডি পুরে গেছে, ময়নাতদন্তে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি তাছাড়া বুলেট পাওয়া যায় নি যার ফলে এটাই সম্ভব্য ঘটনা হতে পারে। "May Day" বা স্বাভাবিক কনভারসেশন ছাড়া কোনকিছু রেকর্ডও হয় নি যার ফলে সেও বেঁচে যায় সাথে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন তো ছিলই! হারিসের বক্তব্য..
- ড্রিংকস চলবে হারিস?
- ইয়েস স্যার, চলবে, একটু বেশিই চলবে।
দুটো গ্লাসে বিয়ার ঢেলে "চিয়ার্স" এক ঢোকে পান করে "আহহহহহহ্ররররর" বলে ঝাকি দিয়ে উঠলো জেনারেল ওসমান এবং এক্স ক্যাপ্টেন হারিস। ভাল থাকুক এক্স ক্যাপ্টেন নাজিম এবং তার পরিবার...


লেখা: Dorponer Protibimbo

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.