নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
#ময়ুরপঙ্খী_আর_হলদে_জোনাক
আজ সোডিয়াম আলোগুলো ঘুমালো নাকি
- তা হতে যাবে কেন
তবে কেন জ্বলছে না হলুদ জোনাক গুলো।
-ধুত্তোরি জ্বলছে তো। এই ছেলে তুমি চোখে দেখতে পাও না।
হু
-হু কি। হয়েছে কি তোমার।
মরোগ।
-কি আবোল তাবোল বলছ। ম রোগ কি।
মন রোগ।
-ধুত্তোরি পাগলামী থামাও সন্ধ্যা হয়ে আসছে। এবার উঠতে হবে।
ও ।তবে যাও ।
-আর তুমি।
আলো জ্বালাতে হবে।
-কোথায়।
ল্যাম্পপোষ্টের হলুদ জোনাকিগুলোর শরীর জুড়ে।
একদম চুপ। পাগল একটা।
প্রিয়তা উঠে চলে যাচ্ছে। পিছন ফিরে তাকাবে না। আজ ও ভীসন রেগে আছে রুদ্রর উপর। অনেক রাগ। কিন্তু কিছুই বলতে পারলো। না। আসলে পাগলকে কি বলবে ও । রুদ্রর পাগলামী ওর মধ্যেও ঢুকে যাচ্চে আস্তে আস্তে রক্তে মাতালতা মিশতে শুরু করছে হলুদ আলোর। না আর ভাবতে পারে না প্রিয়তা ।রিকশা দেখে ডাক দেয় ।
মামা যাবা
-হ যামুই তো। কই যাবেন কন
বারিধারা।
-আশি ট্যাকা দিবেন তো।
কেন একশ দিলে চলবে না।
- মামা মাইন্ড খান ক্যারে। দিয়েন একশ ট্যাকা।ফ্রি গান হুনামু। আপনে বহেন পঙ্খিরাজে। উড়ায়া লিয়া যামু।
আচ্চা চলেন।
-মামার কি মুন খারাপ।
হু
-ক্যারে।
রাগ হচ্ছে না তাই।
- মামা যেকিতা কন রাগ না হইলে কি কেউ মন খারাপ করে নাকি।
হুমম। করে। অভিমানে। রাগ না করতে পারার অভিমানে।
-বুজছি। ডিসকলোফাইট কেস। তয় মাইয়ারা তো এই কেসে পড়ে না।
মানে কি।
-ছাড়বার চাইতাচেন বাট পারতাচেন না তো।
হু। আপনি বুঝলেন কেমনে।
-আমার ও ডিসকলোফাইট কেস আছিল। অখন বিয়া করচি তারেই। নাতিনাতনিগুলান যা বজ্জাত। হালার পো আমার লতুন লুঙ্গিখান হেদিন মুইত্তা ভাসায়া দিছে। তয় জানেন দিলে বড়ই সুখ মামা।
আপনি কিন্তু ফ্রি গান গাইলেন না।
-খাড়ান হুনাইতাচি।
♪ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা গো সখী,
ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা ♪
প্রিয়তা স্তব্ধ হয়ে গান শুনছে। ঢাকার বয়স্ক রিকশা ওয়ালাগুলো বেশ রসিক হয় যানা কথা তবে কেউ যে সব অভিমান এমন গান গেয়ে উড়াতে পারে মৃদু হাওয়ায় প্রিয়তা জানত না।
প্রিয়তা ভীসন অনুভব করতে লাগল পাগলটাকে। মায়া অনুভবিত হলো মনের এক কোণে । ভীসন মায়া। পাগলামির মায়া। বলে উঠলো
মামা রিকশা ঘুরান তাড়তাড়ি।
-কেন মামা আবার ফিইরা যাবেন।
হু
-যদি না পান।
আপনি নিয়ে যাবেন।
-ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা রে সখী ভাবেন মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা।
রিকশা ছুটছে পথের দুরত্ব মুছতে মুছতে। আর প্রিয়তা চোখ মুচছে নতুন করে অভিমান করার প্রয়াসে। কোনটা হচ্চে সেটা প্রিয়তাও জানে না রিকশাও না ।শুধু একটা কথা বাজছে বারবার।
" ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা রে সখী, ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা।
প্রিয়তা চলে যাওয়া পরও রুদ্র বসে আছে। কারণ ও ব্যাগ ফেলে গেছে। রুদ্র ভাবছে যে আজ কোন হলুদ আলো নেই কেন। হলুদ জোনাক জ্বলছে না কেন ফুটপাতের সীমানা টপকানোর দুরন্ততা নিয়ে তার চারপাশে । রুদ্র ভীসন ব্যাস্ত হয়ে হলুদ আলো খুজছে।
রুদ্র
-জানতাম আসবে।
তুমি জানতে।
-হু।
কেন
-ব্যাগ রয়ে গেছে তাই।
অমানুষ, পাগল।
প্রিয়তা ব্যাগ টা টান দিয়ে নিয়ে রুদ্রের গায়ে বাড়ি মেরে চলে যাচ্চে। আর চোখ থেকে রেখে যাচ্ছে মুক্তো দানা সন্ধ্যাদেবী ফুটপাতের বুকে অসংখ্য, ভীসন অভিমানে ।
এই মেয়ে শোনো।
-কি হযেছে ডাকলে কেন।
আমি জানতাম আসবে তুমি।
-হাতির ডিম জানতে।
না জানতাম তুমি শুধুই আসবে।
-কেন
-হলুদ জোনাকগুলো জ্বলবে বলে।
আবার।
-না। আমিও যাবো। মামা নিবেন না।
রিকশা ওয়ালা দার্শনিকের মত হেসে বল্লো। নিতে তো চাই। যাবেন তো।
রুদ্র প্রিয়তার হাত ধরে বসেছে রিকশায়। প্রিয়তা শক্ত করে ধরেছে রুদ্রের হাত মুঠোর মধ্যে।
এই মেয়ে দেখছো হলদেটে স্বপ্নালু আলোগুলো জ্বলছে।
-আগেও জ্বলছিল।
না।
-তবে।
তোমার মনে এখন জ্বলছে। আগে জ্বলছিল না।
-তাই কুজছিলে বুঝি।
হু
-রুদ্র।
হু।
হাতদুটো শক্ত করে বন্দী করল নিজেদের। রিকশাওয়ালা ফাঁকা রাস্তায় ময়ুরপঙ্কি উড়িয়ে নিয়ে যাচ্চে।
শুধু বাজছে টুংটুাং ময়ুরপঙ্খির ডাক আর একটা গান।
♥ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা রে সখী,
ভাবের মানুষ ঘুমাইলে বড় যন্ত্রনা রে। ♪
রুদ্র রাফি
©somewhere in net ltd.