নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

দুর্বল শিক্ষার্থীরাই শিক্ষকদের বেশি মনে রাখে

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪৪


ভালুকা ডিগ্রি কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম। হঠাৎ ১০-১১ বছর বয়সি এক ছেলে আমাকে এসে জড়িয়ে ধরল। ভ্যাবাচেকা খেয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছি। আমার হতভম্ব অবস্থা দেখে সে বলল, 'আমাকে চিনতে পারছেন না, স্যার? আমি সাজিদ। আপনার ছাত্র ছিলাম।'

চিনতে পারলাম তাকে। কুশলাদি বিনিময় করে তার খোঁজখবর নিলাম।

এখানেই একটা স্কুলে পড়াতাম '১৬ সালের শেষ থেকে '১৭ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত। ৩য়-৪র্থ শ্রেণির বাচ্চাদের ইংরেজি পড়াতাম। সাজিদ এখানেরই একটা শাখায় ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ত। ছাত্র হিসেবে খুব দুর্বল ছিল। তারচেয়ে বড় সমস্যা, সে অতিমাত্রায় অমনোযোগী ছিল।

কিন্ডারগার্টেন স্কুল। আমার ওপর চাপ ছিল যেভাবেই হোক ছেলেমেয়েদের ইংরেজিতে ভালো করাতে হবে। ভালো বলতে শুধু পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া নয়, এরা যেন ইংরেজিতে অনর্গল কথা বলতে পারে- এমন অবস্থা যেন তৈরি করা যায়।

আমি নিজে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উঠে গ্রামার পড়তে শুরু করি, অথচ এ স্কুলে ২য় শ্রেণি থেকেই পড়াতে হতো। যাহোক, অনেকে ভালো করা শুরু করছিল। আমার জনপ্রিয়তাও তৈরি হতে লাগল। বাড়তে লাগল টিউশনির সংখ্যাও। একসময়ের অভাবী আমি, টাকার মুখ দেখতে লাগলাম; সেই সঙ্গে সম্মানও বাড়ল।

এই যে ভালো ছাত্রদের ভিড়ে কয়েকজন ছিল অত্যাধিক অমনোযোগী, সাজিদ তাদেরই একজন। বকাঝকা, মাঝেমধ্যে মারধরও করতাম। অবস্থার উন্নতি হতে সময় লাগল।

স্কুল ছেড়ে দেওয়ার বছর খানেক পর ছেলেটা যখন রাস্তায় এভাবে জড়িয়ে ধরল, নিজেকে খুব অপরাধী মনে হলো। আহা বাছা! কত বকাঝকাই না করেছি, তাও আমাকে মনে রেখেছে।



ডিগ্রি কলেজের পাশেই আমার এক বোনের বাসা। তাড়াহুড়ো ছিল, তাই বাসায় যেতে পারিনি। সে তার মেয়ে নিয়ে কলেজ মাঠে আমার সাথে দেখা করতে আসবে। তাদের জন্য অপেক্ষা করছি; এমন সময় দেখি আমার পাশেই এক ছেলে বসা। সে আমাকে দেখেই হেসে দিল। বলল, 'এতদিন কোথায় ছিলেন, স্যার?'
'গাজীপুর থাকি।' আমি বললাম।

এই ছেলেটাও ৪র্থ শ্রেণির ছিল। মারাত্মক দুষ্টু। এত বকাঝকা করতাম, তাও পিছু ছাড়ত না।

আমার জন্মদিন ছিল। আমারই তেমন আগ্রহ ছিল না। টিউশনির ছাত্রছাত্রীরা জোর করল আয়োজন করবে। তারা কোনো খরচ করবে না, উপহার আনবে না- এমন শর্তে আয়োজনে সম্মতি দিলাম। তো এই ছেলেটা বলল, 'স্যার, আমিও কিন্তু আসব।'

এর যন্ত্রণায় ক্লাস ঠিকমতো করাতে পারি না। এ যদি জন্মদিনে আসে ঝামেলা করবে। আমি বলে দিলাম, 'তুমি এলে হাত-পা ভেঙে দেব।'

পরদিন দেখা গেল এই ছেলেটাই সবার আগে সবচেয়ে দামি উপহার নিয়ে হাজির। অন্যদিনের চেয়ে বেশ ধীরস্থির মনে হলো তাকে। কোনো ঝামেলা করল না। বকা দেব কী, আমি আবেগপ্রবণ হয়ে গেলাম এটা ভেবে, আমি ছেলেটাকে এমনিতেই বকাবকি করি, আসতে বারণও করেছি; অথচ ভালোবাসার টানে ঠিকই চলে এসেছে।


আমার এক ছাত্রী ভালো গান গায়। তার মায়ের সাথে আমার পাশের ঘরেই থাকে। মাঝেমধ্যে এসে পড়ে যায়। পড়া ছাড়াও সবসময় আমার কাছে এসে বসে থাকে। ওর মা বলে, 'স্যার সবসময় ব্যস্ত থাকেন। বিরক্ত করিস কেন?'
ও বলে, 'স্যার আপনি কি বিরক্ত হন?'
আমি বলি, 'মোটেই না।'

ও সকালে গানের রেওয়াজ করে। ওর মা বলে, 'আস্তে কর। স্যারের সমস্যা হয়।'

আমি বলি, 'সমস্যা হয় না। গান-রেওয়াজ এসব আমার ভালো লাগে।'

ওর মাও ভালো গান গায়। ওদের ছোট বাচ্চাটাও গায়৷ আমাকে দেখলে অবশ্য থেমে যায়। আমি ছাত্রীকে মাঝেমধ্যে বলি, 'মা গান শোনাও।'

'ও আমার দেশের মাটি এত সুন্দর গায়', পাষাণেরও বুক ফেটে যাবে।

আমি যখন গাজীপুর চলে আসব, মেয়েটা এমনভাবে জড়িয়ে ধরে কান্না করা শুরু করল, মনে হলো যেন মেয়েটার বাবা দূরে কোথাও চলে যাচ্ছে। সে জন্য সে কাঁদছে।


আমার এক ছাত্র'র নাম শাকিক। একদিন জিগ্যেস করল, 'স্যার, আপনার বাড়ি কই?'

বললাম, 'বাড়ি-ঘর নেই। জঙ্গলে থাকি।'

'আপনার বাবার নাম কী?'

বললাম, 'শাকিক!'

সে হেসে কুটিকুটি। বললাম, 'সত্যি কিন্তু।'

আমি শিক্ষক মানুষ মিথ্যে বলার কথা না। সে এটা জানে। আমার কথায় সে দ্বিধাদ্বন্দে পড়ে গেল। যদিও ততদিনে বুঝতে পেরেছে আমি বাচ্চাদের নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসি। যাহোক, এরপর থেকে সে আমার জন্য এটাসেটা নিয়ে আসত। একবার নিয়ে এল শীতের পিঠে।

একবার ক্লাসের সময় সে জানালা বেয়ে উপরে উঠছিল। এমন মার দিলাম, হাসিমুখটা কালো হয়ে গেল। ওর বাপ ওই স্কুলেরই প্রধান। উনি কিছু বললেন না যদিও, তাও নিজের অনুশোচনা হলো এটা ভেবে, এত মারলাম তাও কোনো অভিযোগ নেই ছেলেটার।



মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৫১

সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: এই বকাঝকা, বকাঝকা না এটা পরম ভালোবাসায় আগলে রাখা।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কমবয়সি ছেলেমেয়েরাও বিষয়টা বুঝত; এটা ভাবতেও ভালো লাগে।

২| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:

আপনার বাড়ি কি মল্লিক বাড়ি?
দিনুকে চিনেন?

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:০৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মল্লিকবাড়ি আমার নানার বাড়ি।

৩| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৯

সোনাগাজী বলেছেন:


শেষের ঘটনা: বাচ্চা জানালা বেয়ে উপরে উঠছে, তাকে মানা করলেই হতো, আপনি মারলেন কেন?

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:০৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ওয়াশরুমে যাওয়ার নাম করে ও বাইরে দিয়ে জানালা বেয়ে উপরে উঠছিল। এটা আবার অন্য শিক্ষকগণও দেখেছেন। হঠাৎ রাগ হওয়ায় মেরে নিচে নামাই। যদিও কাজটা ঠিক হয়নি।

৪| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৬

সোনাগাজী বলেছেন:



হঠাৎ রেগে গেলে শিক্ষকতা করা মুশকিল; আমি মুল চাকুরী করার সময় ফাঁকে ফাঁকে পার্টটাইম শিক্ষকতা করেছি।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৪১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ওই সময়টায় আমার শিক্ষকতা মূলত শুরু। মেজাজ চড়াই ছিল। আবার শহুরে ছেলেমেয়ে পড়াতে গেলে ঠান্ডা মেজাজও চড়া হতে বাধ্য।

৫| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫০

ডার্ক ম্যান বলেছেন: আমিও দুর্বল শিক্ষার্থী। তবে আমার কোন শিক্ষকের কথা মনে নেই।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: হয়তো মনে রাখার মতো শিক্ষক পাননি।

৬| ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:১৭

করুণাধারা বলেছেন: দুর্বল শিক্ষার্থী বলে আপনাকে মনে রেখেছে, এটা হয়তো ঠিক না। হয়তো আপনার কোন বিশেষত্ব ছিল, যে কারণে আপনাকে মনে রেখেছে, ভালবেসেছে। এইসব ভালোবাসাই জীবনের বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা।

০৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দুর্বল বলে আসলে ওদের ছোট করছি না। ভালো শিক্ষার্থীদের তো সব শিক্ষকই ভালোবাসেন। দুর্বলদের প্রতি নজর কম থাকে। আমি দুর্বল-সবল সবাইকেই গুরুত্ব দিতাম; এ কারণে হয়তো পছন্দ করত। এছাড়াও আমার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং উদারতা ওদের হয়তো ভালো লাগত। মাঝেমধ্যে আমি বকাঝকা করলেও ওরা বুঝতে সক্ষম ছিল আমি ওদের আপনজন।

৭| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার দেখছি ব্যাপক অভিজ্ঞতা শিক্ষকতায়! শেষের বাচ্চাটিকে আপনার এভাবে ধোলাই দেয়া ঠিক হয়নি। তবে আপনি যাদের দূর্বল বলছে তাদের স্মৃতিশক্তি বেশ সবল মনে হচ্ছে!

যাইহোক, প্রথম অংশে লিখেছেন একটি ১০-১১ বছরের বাচ্চা আপনাকে জরিয়ে ধরেছে। আমার মনে হয় এখানে আপনি ছেলেটির বয়স নিয়ে একটি ভুল করেছেন! কবে জরিয়ে ধরেছিল? যদি ২০২৩ জরিয়ে ধরে তাহলে ছেলেটির বয়স আরও বেশী হবার কথা! ২০১৬-২০১৭-তে যে ক্লাস ফোরে পড়ত তার এখন মেট্রিক দেবার কথা, বয়স ১৬-১৭ হবে হয়ত! ক্লাস ফোরে যখন পড়ত তখনই আইডিয়ালি বয়স হবার কথা ছিল ১০, অথবা সর্বনিম্ন ৮!

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: '১৭-'১৮ সালের দিকেই ওদের সাথে দেখা হয়েছিল।

৮| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার ট্রেনিং নেওয়া প্রয়োজন।

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: যুদ্ধের:| ?

৯| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৫

শায়মা বলেছেন: বাচ্চাদেরকে যদি কেউ আমাদের স্কুলে ব্যাডবয়ও বলে মানে টিচারেরা সাথে সাথে তার চাকরী চলে যায়। মার দেওয়া তো অনেকককককককককককককককককক দূরের কথা।


আবার কখনও শিক্ষকতায় গেলে কখনও আর মেরোনা বাচ্চাদেরকে ভাইয়া।


আমাদের বাসায় আসমার বোনের মেয়ে এসেছে টার বয়স ৯। কি মায়া লাগে। বাবা মা খেতে দিতে পারছে না। পাঠিয়েছে টুকটাক কাজ করে উপার্জন করতে।

আমরা কেউ ওকে দিয়ে কাজ করাতে পারি? বড়লোকের ছেলেমেয়ে হলে ঐ বয়সে কাজ করতে বলতাম??

কাজেই নতুন এক্সপেরিমেন্ট নিয়েছি হাতে। ওকে পরালেখা শেখানো হবে। কথা বলা সেখানো হবে।


এই যে এখন লিখছি সে আমার কাছেই দাঁড়িয়ে আছেন। ছবি এঁকে দিয়েছি রং করছে।

আজ বিকালে আমি ওকে নিয়ে শপিং এ যাবো। আইসক্রিম খাওয়াবো। আমার ওর জন্য অনেক মায়া লাগছে। চাঁদের মত গোল মুখের ফুটফুটে একটা বাচ্চা।

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: গরিব ঘরের ছেলেমেয়েদের পড়াতে গিয়ে ভালো অভিজ্ঞতা আছে আমার। এসব ছেলেমেয়ে শিক্ষকদের যেমন মানে, তাদের অভিভাবকগণও বিনয়ী। বখে যাওয়াও কিছু থাকে অবশ্য। গাজীপুরে শিক্ষকতা করে বেশ জটিলতায় পড়তে হয়েছে। তবে আমি পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম। এমনভাবে বশ হলো আমার, আমি বকা-মার যাই করি না কেন, আমার সাথে রাগ করেনি।

১০| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:২৪

প্রামানিক বলেছেন: দুর্বল ছাত্ররা জীবনে সফল হলোও অতীত মনে রাখে

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ঠিক।

১১| ০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:০৩

প্রথম সারির নিরাপদ ব্লগার বলেছেন: আমি আমার এক স্যারের মুখেও ঠিক এ কথাটি শুনেছিলাম।(শিরোনামের কথাটি)

০৯ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: উনিও হয়তো আমার মতো অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন।

১২| ১০ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: আপনার লেখাগুলোতে মফস্বলের জীবনের হাসি-কান্না আনন্দ অনুভুতির সুন্দর প্রকাশ ঘটে। লেখাগুলো জীবন ঘনিষ্ঠ ও মায়াময়।

তবে কখনই আর শিশুদের মারবেন না। আপনি আগেও এই ঘটনাটা অন্য একটা লেখায় লিখেছিলেন। সত্যি বলতে কি শিশুদের মারার জন্য আপনার শাস্তি হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু বাংলাদেশে অনেক বিষয়ে অনিয়মটাকেই আমরা নিয়ম বানিয়ে ফেলেছি যেটা খুব দুঃখজনক।

১০ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ঢাকায় আসার পর একটা তৃতীয় শ্রেণির বাচ্চাকে পড়াতাম। তার ছোট বোনও পড়ত সাথে। ১৩ মাস পড়ানোর পরও ছোটটার অগ্রগতি তেমন হলো না। একদিন মার দিলাম একটু। ওর মা-বাবা একটু মনঃক্ষুণ্ন হলো বটে। তবে মজার ব্যাপার হলো, এর পর থেকে মেয়েটার এত মনোযোগ এল পড়ায়, ১৩ মাস যা পড়িয়েছি একমাসে তারচেয়ে বেশি শিখে গেছে। এ বাচ্চা রিডিং পড়তে পারে, যোগ-বিয়োগ করতে পারে। ওর মা আমার ওপর ভীষণ খুশি। এত খুশি যে পড়ানো বাদ দিয়েছি তাও অন্তত শুক্রবার গিয়ে পড়াতে বলে। যাই। গেলে বাচ্চাটা খুশিও হয়। এখন বলেন ওই শাসনটুকু না করলে এত অগ্রগতি হতো?

বাচ্চাটাকে এতই আদর করতাম শুরু থেকে, মা ছাড়া ডাক দিতামই না। সে বলত, স্যার বাচ্চাদের আপনার ভালো লাগে? আমি হ্যাঁ বলতাম। এত আদর করলে বাঁদর হবে, তার মা জানতেন। তাই একটু শাসনও করতে বলতেন। একসময় বাধ্য হয়ে শাসন করতেই হলো। যে শিক্ষক মা-বাবা ছাড়া শিক্ষার্থীদের সম্বোধনই করেন না, উনি নিশ্চয়ই বাধ্য হয়ে শাসন বা মারেন? সব রোগের ওষুধ তো এক না। মাঝেমধ্যে কড়া হতে হয়। বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলোতে পড়ানো যে কী কষ্ট, যে পড়ায়নি সে কষ্টটা বোঝার কথা না।


আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.