নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবাকে নিয়ে কখনও তেমন কিছু লেখা হয়নি

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৪৬


অ্যালার্জির সমস্যা অনেক আগে থেকেই, তবে দু'বছর ধরে ভোগান্তিটা বাড়তি। কয়েকমাস ধরে একেবারে লাগামছাড়া। বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে ডাক্তার দেখিয়েছি বটে, কাজের কাজ কিছু হয়নি। গত পরশু আবারও গেলাম। টিকিট কেটে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে গিয়ে দেখি বিশাল লাইন। কিছু করার নেই। ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়াতেই হবে।

দাঁড়িয়ে আছি, আর চারপাশে নজর রাখছি। লোকে লোকারণ্য। ঢাকায় এত লোকের চর্মরোগ ভেবে খুব অবাক হলাম। যদিও সব বিভাগেই লোকজন আছে অনেক।

যাহোক, মোটামুটি ২৭-২৮ বছর বয়সি এক লোক তার বয়স্ক মা-বাবাকে নিয়ে এসেছেন ডাক্তার দেখাতে। তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। তার বাবা কিছুক্ষণ পরপর বলছেন, 'বাবা, তুমি বসো। আমি দাঁড়াই।'

ভদ্রলোক বসেন না। বাবা উসখুস করছেন। বলছেন, 'আমার ছেলেটার পায়ে সমস্যা। এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারবে না।'

আমি দেখলাম, আসলেই ছেলের পায়ে সমস্যা। একটা বড় ক্ষত তৈরি হয়ে গেছে।

পুরোটা সময় উনি দাঁড়িয়ে রইলেন। তার বাবা বারবার চেষ্টা করছিলেন ছেলেকে বসাতে কিন্তু ছেলে বসবেন না। মাঝেমধ্যে বাবাকে ধমক দিয়ে বসে থাকতে বলছেন। বাবার মন বলে কথা। ছেলেকে ভয় পাচ্ছেন, তবুও ছেলের জন্য কষ্ট হচ্ছে। বারবার তাকে বসতে বলছেন।

দু'জনের কাজকর্ম দেখে মনে হচ্ছে বাবাই ছেলে আর ছেলেই বাবা। এমন ঘটনা আজকাল চোখেই পড়ে না।

একই রকম ঘটনা আরেকটা ঘটল। এখনকার ছেলেটার বয়স ২১-২২ হবে। বাবার বয়স ৫০-৫৫। ছেলে লাইনে দাঁড়িয়ে আর বাবা বেঞ্চে বসে। বাবা বারবার বলছেন, 'আব্বু, তুমি বসো। আমি দাঁড়াই।' ছেলে রাজি হয় না। এদিকে বাবা বসে থেকে স্বস্তি পাচ্ছেন না।

বাবারা সচরাচর সন্তানের প্রতি সহানুভূতিশীল হন; এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সন্তান বাবা হয়ে যাবে; এমন ঘটনা ইদানীং ঘটে না৷সন্তান কর্তৃক বাবাকে মারধর করা, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া, জমি দখলে নেওয়ার ঘটনা তো অহরহই ঘটছে।


কয়েকজনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল বাড়িতে ফোন দেওয়া নিয়ে। সবাই বলছিল, মায়ের সাথেই বেশি কথা হয়। বাবার সাথে কম। কেন কম হয় জানতে চাইলে বলল, 'ছেলেদের সম্পর্ক তো মায়েদের সাথেই বেশি হয়। তাছাড়া বাবাকে ভয় পেতাম।'

এ কথা সত্যি যে, ছেলেদের সম্পর্ক মায়ের সাথেই বেশি হয়। বাবার সাথে দূরত্ব থাকে একটু। আর মেয়েদের সম্পর্ক বাবার সাথেই বেশি। আমার পরিবারের কথাই বলি। আমার মায়ের প্রতি যে টান, অতটা কি বাবার প্রতি হয়েছে কখনও? মনে হয় না। আমার বোনদের আবার বাবার প্রতি টান অনেক। ছোট বোন তো বাবাকে গত ২০ বছর যাবত গোসল করিয়ে দিচ্ছে। দু'বছর হলো ওর বিয়ে হয়েছে। এখন সপ্তাহে একবার করে হলেও আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। বাবার দাড়ি-গোঁফ সাফ করে দিয়ে যায়, যে ক'দিন থাকে গোসল করায়; খাইয়ে দেয়। মনে হয়, সে তার নিজের বাচ্চার সেবাযত্ন করছে। এ কথা কেন বলছি। সে আসলে বাবাকে ধমকায়ও, শাসনও করে। বাবা একটু একরোখা টাইপ। কারও কথা শোনেন না। বোন তাকে ধমকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।


আমার বয়স যখন ৫-৬ বছর, তখন বাবা বিদেশে চলে যান। মায়ের মুখে শুনি আমি নাকি একসময় উনার জন্য পাগল ছিলাম। নাওয়া-খাওয়া সব উনার সাথেই চলত। নানার বাড়ি বেড়াতে গেলেও বাবার জন্য কান্না করতাম। বাবা থালায় দুধ-ভাত মেখে দিতেন, আমি নাকি হাতের কবজি না ডুবলে ভাত খেতাম না। আমি একবার হারিয়ে গিয়েছিলাম, আমার শোকে তিনি পাগলপ্রায় হয়ে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ অভিমান

একসময় যে আমি বাবা অন্তঃপ্রাণ ছিলাম, উনি বিদেশে চলে যাওয়ার পর একটা দূরত্ব তৈরি হলো। ৫ বছর পর উনি যখন দেশে ফিরলেন, উনার সাথে কথা বলতে অস্বস্তি লাগত। অথচ বোনেরা ঠিকই তার সাথে মিশে গিয়েছিল। যে আমি মা-বাবাকে তুই-তোকারি করে কথা বলতাম, বাবাকে হঠাৎ আপনি সম্বোধন শুরু করলাম। দরকার ছাড়া কথাই বলতাম না। যদিও মাকে তুই করে, নিজের সন্তানের প্রতি যেমন দরদ হয়; তেমনই অনুভব করি সবসময়।

স্কুল-কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠার পর বাবার সাথে যোগাযোগ আরও কমে গেল। দেখা যেত, মাসের পর মাস বাবার সাথে দেখা হতো না, কথাও হতো না। আগের দূরত্বটা গোছানো সম্ভব হয়নি।

২০১২ সালের দিকে বাবাকে এক ঘটনায় একবার জেলে যেতে হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কী করতে হবে। আমাদের আইন-আদালত সম্পর্কে ধারণা ছিল না। আমার বাবা বিনা অপরাধে জেল খাটছেন; এটা মানতে কষ্ট হচ্ছিল। কিছুদিন পর অবশ্য মুক্তি পেলেন। সেদিন উনাকে জড়িয়ে ধরে জন্মের কান্না কেঁদেছিলাম।

আরও পড়ুনঃ আব্বা যখন জেলে ছিলেন

২০১৯ সালের শেষদিকে আমি গাজীপুরের কোনাবাড়িতে একটা স্কুলে পড়াতাম। তখন শুনি বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তড়িঘড়ি করে বাড়ি যাই, বাবাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে ভর্তি করাই। কয়েকদিন খুব গুরুতর অবস্থা ছিল। উনি বাঁচবেন বলে মনে হচ্ছিল না। যমে-মানুষে টানাটানি অবস্থা।

যাহোক, বাবা সে যাত্রায় বেঁচে যান। তবে আগের মতো আর থাকেননি। চলতে পারেন না, কারও সাথে কথাও বলতে পারেন না। চুপচাপ বসে থাকেন, শুয়ে থাকেন। আমাদের বাড়িটা একসময় বাবার কথাবার্তায় মুখরিত হয়ে থাকত; এখন সে বাড়ি নিঝ্ঝুম নিরালা। মনে হয় শ্মশান। মায়ের সাথে যখন কথা বলি, খুব আফসোস হয় বাবার সাথে যদি মন খুলে কথা বলতে পারতাম! চাইলেও তো আর সম্ভব না। খুব ইচ্ছে করে উনার সাথে অনেক কথা বলি। উনি ভালো হবেন কি না; সেটাও জানা নেই। মাথার উপর বটবৃক্ষ আছে; এটা ভেবেই সান্ত্বনা খুঁজি। কিন্তু মন তো আর সবসময় মানে না।

বাবাকে নিয়ে অল্প কথায় কিছু লেখা যায় না। তাকে নিয়ে কখনও তেমন কিছু লিখিওনি। মনে হয় লেখা উচিত ছিল, অনেক কথা বলা উচিত ছিল উনার সাথে। তাহলে হয়তো এত আফসোস হতো না। মায়ের সাথে একসময় কথা কম হলেও এখন অনেক কথা হয়। নিজেই তার বাবার ভূমিকায় অবতীর্ণ হই, অথচ বাবার সাথে তার বাবা হয়ে উঠতে পারি না।

ছবিঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ৩৬ টি রেটিং +১০/-০

মন্তব্য (৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:১৩

বিষাদ সময় বলেছেন: বাবা, মা আসলেই বটবৃক্ষের ছায়া। চিররকাল কথাটা বলেছি কিন্তু চলে যাওয়ার পর হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। ভাল লাগে আপনার আবেগময় কথাগুলো।

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:১৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: কাছে থাকলে অতটা বোঝা যায় না। যখন থেকে দূরে থাকতে শুরু করলাম, তখন থেকে বুঝতে পারি মা-বাবা কী অমূল্য ধন।

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫০

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আমার বাবা বেঁচে নেই। বাবার সঙ্গে অনেক কথা বাকি রয়ে গেলো। খুব কষ্ট লাগে। বাবার জন্য মনটা কাঁদে। আহা বাবা যদি আসতো ফিরে!!

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এ শূন্যতা অপূরণীয়।

৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৬

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


বাঙালী বাবারা ভালোবাসা কর্মে রুপান্তরিত হতে থাকে সবসময়।

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ঠিক তাই।

৪| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩২

মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: গত ১ বছর অনেক গুলো ঝড় গেসে।বাবা পাশে ছিলেন।
খুব বড় একটা বিপদ থেকে বাচলাম গতকাল আব্বুর জন্য।
আসলে বাবা হলেন ছায়া।

১৬ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বাবা পাশে থাকা মানে গোটা পৃথিবীটাই নিজের মনে হয়। বাবা মানে চলার শক্তি।

৫| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ ভোর ৬:৩৭

মিরোরডডল বলেছেন:




এই পোষ্ট পড়ে রূপককেও যেনো নতুন করে জানলাম।
বাবারা আসলেই বটবৃক্ষ।
বাবার জন্য অনেক শ্রদ্ধা।

এখন একটু ব্যস্ত কিন্তু পরে আবার আসবো।
এরকম লেখা পড়লে হৃদয় নরম হয়ে যাই।

সেরকম বলতে পারিনা কিছু, কিন্তু অনুভব করার থাকে অনেক কিছু।


১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মা-বাবাকে নিয়ে কিছু লিখলে আলাদা অনুভূতি হয়। জগতে আসলে তাদের মতো আপন কেউ নেই; এটা হাড়ে হাড়ে টের পাই।

৬| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৩৭

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার বোন কি একটাই?
বাবাকে নিয়ে স্মৃতিকথন খুব ভাল লেগেছে। আপনার নিজের উপার্জনে তো নিজেরই চলে না তবে সংসারের দায়িত্ব কার কাঁধে?
*ব্যক্তিগত প্রশ্নের উত্তর না দিলেও চলবে

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৩৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বোন তিনজন। আর ছেলে আমি একা। ছোট বোন একটা ছোট চাকরি করে। সুযোগ পেলে আসে। অন্য দু'বোনের সংসার বড়। তারাও টুকটাক সহযোগিতা করে।

৭| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ বলেছেন যে সন্তান এবং ছাত্রের কাছে হেরে যাওয়ার মত আনন্দ আর হয় না। কথাটা আসলেই সত্যি। ছাত্রের কথা বলতে পারবো না কারণ আমি শিক্ষক না। তবে আমার মেজ ছেলের সাথে কয়েক মাস আগে দাবা খেলায় হেরে গিয়ে খুব আনন্দ লাগলো। ওর সাথে জিতলে অপরাধী মনে হয় আর হারলে আনন্দ লাগে।

আমরা আমার মায়ের চেয়ে বাবার সাথে বেশী ফ্রি ছিলাম। আমার বাবা কখনও কিছুতে না বলতেন না সরাসরি।

আপনার ছোট বোনকে নিয়ে আপনারা গর্ব করতে পারবেন। বাবার প্রতি এই ধরনের ভালোবাসা খুব বিরল।

আমার বাবা বহু বছর বিদেশে থাকতেন। তাই তার দেখা পেতাম বছরে একবার। আমার বাবা যে দিন দেশে আসতেন সেই দিনটা ঈদের দিনের চেয়েও আনন্দের ছিল। যত দিন থাকতেন ততদিন খুব আনন্দে কাটতো।

আমার বাবার মৃত্যুর মুহূর্তে আমি হাসপাতালে ছিলাম না। আমি হাসপাতালে এসে দেখি তার মৃত দেহ একটা স্ট্রেচারে রাখা হয়েছে। আমি প্রথমে তাকে শোয়া অবস্থায় আলিঙ্গন করলাম যেন একজন বন্ধুকে মানুষ বিদায়ের সময় আলিঙ্গন করে থাকে। শেষ কয়েক বছর তার সাথে আমার প্রতিদিন অনেক কথা হতো। আমার চেয়ে আমার স্ত্রী বেশী কেঁদেছিল। সিএনজিতে সারাটা পথ সে কাঁদছিল। আমি বেশী আঘাত পেলে স্তব্ধ হয়ে যাই। তখন কান্না আসতে চায় না।

বাবা থাকা মানে মাথার উপরে একটা ছায়া। যাদের বাবা মা এখনও জীবিত আছে তাদের উচিত এই শেষ সময়টা বাবা মাকে দেয়া। এই সুযোগ বেশী দিন থাকবে না এটা অনেকেই বোঝে না। সুযোগ শেষ হয়ে গেলে আফসোস করবে। আমার মায়ের ক্ষেত্রে মনে হয় তার প্রতি পূর্ণ দায়িত্ব আমি মনে হয় পালন করতে পারি নাই। আরও কিছু করা উচিত ছিল কিন্তু তখন বুঝতে পারি নাই।

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৫৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মাকে যখন ফোন দিয়ে জিগ্যেস করলাম, 'বাবা কী করেন? কথাবার্তা বলেন?' উনি বললেন, 'এখন একেবারেই কিছু বলেন না। চুপচাপ থাকেন।' সর্বশেষ ৩ মাস আগে বাড়ি গিয়েছিলাম। তখন একটুআধটু কথা বলতেন। মায়ের কথা ভেবে মায়া যেমন লাগল, আফসোস হতে লাগল আগের সময়গুলোয় কেন কথা কম বলতাম! আসলে আমার সময় বেশিরভাগ সময় খারাপ ছিল। কারও সাথেই তেমন কথা বলতাম না। আমার বোনদের সাথেও কথা কম হতো। তবে তারা সারাজীবন আমার প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল বলে অভিযোগ করেনি। এখন বুঝি সময় ভালো যাক, খারাপ যাক প্রিয়জনদের সাথে কথা বলা উচিত, যোগাযোগ রাখা উচিত। কোনদিন কে চলে যায়!

৮| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০২

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: আমরা বেশিরভাগ লোকেরাই কোনো কিছু হারাবার পর আহাজারি করি, সময়ের বুঝ সময় থাকতে বুঝিনা। সময়ের কাজ সময়ে করলে অসময়ে আমাদেরকে আহাজারি করতে হতো না হয়তোবা।

সকল বাবাদের জন্য শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। ভাল থাকুন সকলের বাবা।

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ইচ্ছে থাকতেও অনেক সময় অনেক কিছু সম্ভব হয় না। আমরা খিদে পেটে থেকেও অনেক সময় এমনভাবে থাকি, মনে হয় পেট ভর্তি।

৯| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:২৯

হাসান জাকির ৭১৭১ বলেছেন: ২০১১ সালে বাবাকে হারিয়েছি। আজও তার কথা মনে হলেই অশ্রুশিক্ত হই। বাবাকে নিয়ে অনেক কথা লিখার ছিল, সারা দিন -রাত লিখলেও হয়ত শেষ হবে না। কিন্তু কিছুই লিখতে পারলাম না।

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:০৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বাবা শব্দটাই একটা আবেগ। শুধু অনুভব করতে হয়।

১০| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৪

মিরোরডডল বলেছেন:




২০১২ সালের দিকে বাবাকে এক ঘটনায় একবার জেলে যেতে হয়েছিল। আমরা বুঝতে পারছিলাম না কী করতে হবে। আমাদের আইন-আদালত সম্পর্কে ধারণা ছিল না। আমার বাবা বিনা অপরাধে জেল খাটছেন; এটা মানতে কষ্ট হচ্ছিল। কিছুদিন পর অবশ্য মুক্তি পেলেন। সেদিন উনাকে জড়িয়ে ধরে জন্মের কান্না কেঁদেছিলাম।

আহা বাবা ছেলের সেই মুহূর্তটা যেনো দেখতে পাচ্ছি!!
মানুষের জীবনে কত অজানা গল্প থাকে।

বাবা ছেলের সম্পর্ক খুব ক্লোজলি দেখেছি।
আমারও একটাই ভাই ছিলো।
বাবা ভাই দুজনেই চলে গেছে।
ওদের মুখটা মনে করলে কি যে কষ্ট লাগে!!!!

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:০৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনার অনুভূতি বুঝতে চেষ্টা করলাম। আপনি শক্তপোক্ত মানুষ বলে মনে হয়েছে সবসময়। কিন্তু বাবার প্রশ্নে আপনিও আবেগপ্রবণ হয়ে গেছেন। হওয়াটাই স্বাভাবিক। বটগাছ পড়ে গেলে আমরা হাওয়ার দাপট টের পাই। বাবা তো সেই বটগাছ।

১১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৫১

রানার ব্লগ বলেছেন: আমাদের সময় বেশিরভাগ বাবারা একটু বেশি রাশভাড়ি ছিলেন। এখন অবশ্য এমন টা নেই। বাবা ছেলের সম্পর্ক টা বেশ বন্ধু সুলভ হচ্ছে ধিরে ধিরে।

১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এখনকার বাবারা অনেক ফ্রি। আমাদের সময়ের বা তারও আগের সময়ের বাবার খুব চাপা টাইপ ছিলেন। সন্তানের প্রতি দরদ ছিল, তবে প্রকাশ করতেন না। সন্তানরাও অনুভূতি প্রকাশ করতে পারত না। তাছাড়া মাঝেমধ্যে ভুল বোঝাবুঝিও তৈরি হতো।

১২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ৯:৪২

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: ২০০৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বাবাকে হারিয়েছি।বাবা মানে সব সমস্যার সমাধান মুশকিল আসান বটবৃক্ষ।যে স্নেহশীলতা মমতা দিয়ে বাবা আমাদের শৃঙ্খলে সদাচরণে বেঁধে রেখেছিলেন নিজে বাবা হয়ে একমাত্র সন্তানকে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছিনা।এক অদৃশ্য যাদুবল বাবার মধ্যে ছিল কিন্তু আজ হারে হারে টের পাচ্ছি সন্তান কন্ট্রোলে রাখা কতোটা কঠিন।
বাবারা সত্যিই গ্রেট আর আমার মতো বাবারা পরাজিত সৈনিক।
আপনার বাবার দ্রুত আরোগ্য লাভ কামনা করি।বাবাকে নিয়ে আপনার এই কোলাজটি দিনের সেরা++
বিনম্র শ্রদ্ধা আপনার বাবাকে।

১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: হাসিমুখে সব সমস্যা মোকাবিলা করার অদ্ভূত এক শক্তি নিয়ে বাবারা জন্মান। বড় হয়ে আমরা বুঝতে পারি তারা কী সহ্য করছেন আমাদের জন্য।

১৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:১০

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আপনার বাবার জন্য দোয়া রইল। আল্লাহ আপনার বাবাকে সুস্থতা দিন। বাবা-উভয়ের হায়াত বাড়িয়ে দিন। বাবা সে আসলেই একটা কিছু সন্তানের জন্য সে বিষয়টা আমি টের পাই বুঝ হওয়ার আগেই যে বাবাকে হারিয়ে বসেছি। এখন কারোর গল্পের বাবার অংশটা চুম্বক ক্রিয়ায় টানে।

১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বাবা অসুস্থ; এ অবস্থায়ই যে খারাপ লাগে- উনি যখন থাকবেন না সে পরিস্থিতি কেমনে মোকাবেলা করব ভেবে পাই না।

১৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৪

কাছের-মানুষ বলেছেন: আপনার বাবাকে নিয়ে লেখাটা ভালই লাগল।
আপনার বাবা কি শুধু কথা বলতে পারেন না? তার স্মৃতিশক্তি কি ঠিক আছে?

১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: নিজে থেকে কিছু বলতে পারেন না। এটা-ওটা জিগ্যেস করলে হ্যাঁ/হুঁ করেন শুধু। আর সারাদিন চুপচাপ বসে থাকেন।

১৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:১১

রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেলো।

১৮ ই নভেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:২৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ওহ।

১৬| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:০৭

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:

বাবার সাথে কথা হয়। তবে বাবাকে এখনও ভয় পাই। এটা শ্রদ্ধা আর ভালবাসার মিশ্রণ বলা যায়।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: যত সময় দেওয়া যায় ততই তৃপ্তি।

১৭| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৩৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: এক সময় বাবা-মায়ের ভয়ে ছেলেমেয়েরা তটস্থ থাকে; আরেক সময় ছেলেমেয়েদের ভর্ৎসনার ভয়ে মা-বাবারা নিশ্চুপ থাকেন। এটাই দেখে এসেছি, শুনে এসেছি। তবে ব্যতিক্রম কিছু তো থাকেই।
আপনার এ পোস্টটা পড়া শুরু করেই, প্রথম ঘটনাটির বর্ণনায় থাকতে থাকতেই আর বেশিদূর এগোতে পারলাম না। প্রবাসী ছেলের কথা মনে পড়লো। ঘডির দিকে তাকিয়ে দেখি সকাল এগারটা বেজে গেছে, অর্থাৎ ওদের ওখানাে রাত এগারটা বেজে গেছে। পড়া থামিয়ে তাড়াতাড়ি ওকে ফোন করলাম। সংক্ষিপ্ত কুশল বিনিময় শেষে মনে শান্তি পেলাম।
খুব ভালো লাগল বাবাকে নিয়ে লেখা আপনার খোলামোেলা, অকপট অনুবভূতির কথাগুলো। আসলেই, আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক কালচারে বেশিরভাগ সন্তানেরাই মনে হয় তাদের বাবার সাথে কথাবার্তা বলার সময় একটু আড়ষ্ট থাকে। একই কারণে তারা বাবাকে নিয়ে খুব একটা লেখালেখিও করে না।

"বাঙালি বাবার ভালোবাসা কর্মে রুপান্তরিত হতে থাকে সবসময়" - খুবই চমৎকার একটি কথা বলেছেন শূন্য সারমর্ম!
"বটগাছ পড়ে গেলে আমরা হাওয়ার দাপট টের পাই" - আপনার এ উপলব্ধিটাও সত্য, এবং সেই গুণে চমৎকার।

পোস্টে দশম প্লাস। + +




০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বাবাদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশে সত্যিই আমরা কার্পণ্য করি। মায়েদের মতো স্বতস্ফুর্ত হতে পারি না। হয়তো পরিস্থিতিই এমন করতে বাধ্য করে। যত যাই হোক, অনুভূতি লুকিয়ে রাখা উচিত না।

১৮| ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১০

ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: বাবা-কে প্রতিদিনই মনে পড়ে। বাবা যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক। আবার কোন একদিন দেখা হলে বাবাকে বলবো তার চলে যাওয়া আমাদের জন্য কতটা কষ্টের ছিলো। সে পর্যন্ত অপক্ষোয় থাকছি। ধন্যবাদ।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৫৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমার বাবা খুব অসুস্থ। আমি ভাবি উনি চলে গেলে থাকব কীভাবে? খুব অস্থির লাগা শুরু করে। মনে হয় নিজের জীবনের বিনিময়ে তাকে বাঁচিয়ে রাখি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.