নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পরিচয় নতুন করে লেখার মত কিছুই এখনও হয়ন....

সাইফুল১৩৪০৫

সবার সাথে শিক্ষণীয় পোস্ট শেয়ার করতে চাই। আমার দ্বারা যদি কেউ উপকৃত না হয়, তো ক্ষতির শিকার হবে কেন?

সাইফুল১৩৪০৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আধুনিক কাজলরেখা

১২ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১২:১৪


ভাটি দেশের সওদাগর ধনেশ্বর নির্বাচনে হেরে সর্বস্বান্ত হলে তার আর্থিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য শরণাপন্ন হন এক সাধু বাবার কাছে। সাধু বাবার পরামর্শে ধনেশ্বর বাড়ি-ভিটা বিক্রি করে বাণিজ্যে যান। এবার বাণিজ্যে সফল হন। তারপর ধনেশ্বর তার বিবাহযোগ্যা কন্যা কাজলরেখার বিবাহের জন্য আবারও পরামর্শ চাইলে সাধু পরামর্শ দেন চম্পানগরের হীরাধন সাধুর অভিশপ্ত রাজকুমার সূঁচরাজার সাথে বিবাহ দেবার।

সূঁচরাজা সর্বাঙ্গে সূঁচগ্রথিত অবস্থায় বনবাসী। ধনেশ্বর নিজের বাবার কথা অমান্য করতে পারেন কিন্তু সাধু বাবার কথা মোটেও অমান্য করতে পারবেন না। কারণ এই বাপের পরামর্শেই সে ব্যবসায় সফল হয়েছে।

এবার কাজলরেখা সূঁচরাজার সর্বাঙ্গ থেকে একে একে সূঁচ তুলে নেন। শুধু দুই চোখের দুটো সূঁচ বাকী থাকে। কারণ কাজলরেখা নিয়মিত স্টার জলসা দেখত। তাই কাহিনী কিভাবে দীর্ঘায়িত করা যায় তা তার ভাল করেই জানা ছিল।

চোখের দুটো সূঁচ তুলে একটি বিশেষ পাতার রস লাগালেই সূঁচরাজা জীবন ও দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন। নবজীবনপ্রাপ্ত কুমার তখন ধর্মমতে প্রাণদায়ীনিকে বিবাহ করতে বাধ্য হবেন।

এসময় কাজলরেখা নিজেকে আসন্ন বিবাহের উপযুক্ত করে তুলতে চোখের সূঁচ না তুলেই স্নান করতে যান। স্নান সেরে মেকআপ করা ও ঝলমলে চকচক করা অলঙ্কার দিয়ে সাজুগুজু করতে যান।

স্নানের পূর্বাহ্নে এক দাস-ব্যবসায়ী একজন দাসী নিয়ে আসেন। কাজলরেখা ভাবলেন দাস ব্যবসায়ী হয়তো পাগলই হবেন। তা নাহলে যে বনে মানুষ নাই সে বনে ফোনের টাওয়ার কেন? স্যরি দাসীর ব্যবসা কেন? ক্রেতা জঙ্গলে থাকে নাকি? তাইতো জনবসতিপূর্ণ স্থানে ব্যবসা না করে, পাগলে গেছে জঙ্গলে ব্যবসা করতে।

দাস-ব্যবসায়ীর আহ্বানে কাজলরেখা তার হাতের কঙ্কনের বিনিময়ে দাসীটি ক্রয় করেন। সে সময় কিন্তু দাসী ক্রয় জরুরী ছিল না। তবুও কিনলেন। কারণ রাজার স্ত্রী হবেন বলে কথা। একদিন একটু বেশি খাজনা তুললেই হবে।

কৃতদাসীর নতুন নামকরণ করা হয় কঙ্কন-দাসী। কাজলরেখা কঙ্কন-দাসীকে সূঁচরাজার বিবরন এবং তার নিরাময়ের রহস্য জানিয়ে স্নান করতে যান। হায়! কামরুলরা শিশু পিটিয়ে হত্যার সময় ভিডিও করে যেমন বিপদে পড়েছিল তেমনি বিপদ বোধহয় কাজলরেখার জীবনেও আসে।

আশঙ্কাটাই সত্য হল। কঙ্কন-দাসী কাজলরেখার বর্ণিত পদ্ধতিতে সূঁচরাজাকে নিরাময় করে তোলে। সে ফেজবুকে একটা ভিডিও আপলোড করে। ভিডিওটা হিরো আলমের মত ভাইরাল হয়। কারণ পোলাপানের কাছে এটা ছিল একটা চমৎকার ইস্যু।

স্বত্তবদ্ধ সূঁচরাজা তখন কঙ্কন-দাসীকে বিবাহ করতে বাধ্য হন। কাউকে বিয়ের দাওয়াত দেয়নি। ঘরোয়াভাবে বিয়েটা হয়েছে। আমরা আখের ছোবড়া খাওয়ার আশায় হা করিয়া থাকিলাম। কবে যে দাসী-রাজার বিয়ের দাওয়াতের কার্ডটা পাব।
স্নান শেষে কাজলরেখা ফিরে এসে দেখেন তার যা সর্বনাশ হবার তা হয়ে গেছে। কঙ্কন-দাসী সূঁচরাজার কাছে কাজলরেখাকেই কঙ্কন-দাসীরূপে পরিচয় করিয়ে দেয়। নিরূপায় কাজলরেখা নায়িকা সাবানার মত নিশ্চুপ থেকে চোখের পানি ফেলেন।
সূঁচরাজা স্ত্রী এবং দাসীসহ দেশে ফিরে আসেন। তার রাজ্যাভিষেক হয়। কঙ্কন-দাসী রানীরূপে আর কাজলরেখা দাসীরূপে দিন অতিবাহিত করতে থাকেন।

প্রথম দর্শন থেকেই সূঁচরাজা কাজলরেখার রূপমুগ্ধ ছিলেন। এই মুগ্ধতাকে ভিন্নভাবে নেয়া যায় না। ইহা রাজার উদার মনের পরিচায়ক। তাছাড়া রাজার বয়স ৪০-৫০ বছর হলেও মনের বয়স কিন্তু প্রথম আলুর বয়সের সমান। মানে ১৮ বছর।

এমন সময় চম্পানগরে লন্ডন থেকে সূঁচরাজার এক বন্ধু আসেন। লন্ডনে গিয়েছিল সর্দির ট্যাবলেট ক্রয়ের নিমিত্বে। রাজার বন্ধু বলে কথা। বন্ধুটিও কাজলরেখার রূপে মুগ্ধ। এক কথায় কাজলরেখার যা চেহারা তাতে সবাই পাগল হতেই পারে।

বন্ধুকে চমৎকৃত করতে সূঁচরাজা আয়োজন করলেন এক অভিনব প্রদর্শনীর। প্রদর্শনীতে রানী আর কাজলরেখা উপস্থাপন করবে তাদের ক্রিয়েটিভিটি। রাজা চায় কাজলরেখা জিতুক।

রাজা তাদের দায়িত্বে দিল একটা ডোমেইন সুরক্ষার। কিন্তু রাজার মনোবাসনা পূর্ণ হল না! কারণ রানী ডোমেইনই চেনে না আবার সুরক্ষা।

সুশিক্ষিতা গোল্ডেন এ+ প্রাপ্ত কাজলরেখারও ঘাম ঝরল। রাজায় বুঝল গ্রন্থগত বিদ্যা আর রিজার্ভ ব্যাংকে ধন....

তথাপিও রাজা সবার মতই মানেন গোল্ডেন এ+ মানেই মেধাবী। এইদিক বিবেচনায় অশিক্ষিতা রানীর পরাজয় ঘটল। তাছাড়া রাজাতো রাজা। তার আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার দরকার কী? হারলেও সমস্যা নাই জিতলেও সমস্যা নাই।

ঘটনাক্রমে সেই সাধু বাবার পরামর্শে রাজা কাজলরেখাকে বিয়ে করলেন। কাজলের মেধা কম থাকায় কিছু মেধাবী লোক রাখলেন। এই লোকগুলার কারণেই তেললোভী ট্রাম্প, বুশ, বারাকদের নজর পড়ে গিয়েছিল চম্পানগরে।

এবার স্ত্রী কাজলরেখাকে নিজ দেশে ফিরিয়ে নেবার আগে সূঁচরাজা তার পূর্বতন রানীর (কঙ্কন-দাসী) সাথে এক প্রতারণার আশ্রয় নেন। প্রাসাদে ফিরে সূঁচরাজা কঙ্কন-দাসীকে বলেন যে, পূর্বোক্ত বন্ধুটি সদলবলে গুলশানের মত জঙ্গী হামলা করতে আসছে তাই পরিখাতে ধন-রত্নসহ আশ্রয় নেয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! কে বা কাহারা যেন পরিখার ভিতরই রানীকে (কঙ্কন-দাসী) গুলি করে হত্যা করে চলে যায়।

অতঃপর রাজার লোক কঙ্কন-দাসীর লাশ দূরে সরিষা ক্ষেতে ফেলে দেন। সবাই জানল সরিষা ক্ষেতে একটা অজ্ঞাত পরিচয় লাশ পাওয়া গেছে। রাজা বললেন যার পরিচয়ই পাওয়া যায়নি তার হত্যার মোটিভ বের করে কাজ কী?

এবার সূঁচরাজা কাজলরেখাকে সসম্মানে তার দেশে নিয়ে আসেন। অতঃপর তারা সুখে দিন কাটাতে লাগলেন।
* কাজলরেখা গল্প অবলম্বনে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৪৬

অগ্নি সারথি বলেছেন: :P :P :P

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.