নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার।

সারাফাত রাজ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।

সারাফাত রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

উত্তর ভারতের হিমালয় (পর্ব - ৩, আধিক্য বনগাঁ লোকাল )

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩


সবগুলো পর্ব

বনগাঁ স্টেশন থেকে কলকাতার দিকে দিনে ২৯ টার বেশি ট্রেন আছে। প্রতি ১৫ মিনিট থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যেই ট্রেনগুলো পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানলাম যে ১০’২৮ এর ট্রেনটা ২ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়বে। ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যেতে হলে ওভারব্রিজে উঠতে হবে। কে ওঠে!! ১ নম্বরেও একটা ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিলো সেটাতে উঠে গেলাম, তারপর লাফ দিয়ে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ানো ট্রেনে পৌছে গেলাম।





আমি সবসময় শেষের বগিটাতে বসি, প্রথম স্টেশনে সাধারণত এটি অনেকখানি ফাঁকা থাকে। হাঁটতে হাঁটতে শেষের বগিটাতে পৌছালাম। কিন্তু গিয়ে দেখি যে সবগুলো জানালার পাশের সিট দখল হয়ে গেছে। কি আর করা। ব্যাগটা উপরে তুলে দিলাম। আর তারপর একজনের পাশে বসে পড়লাম।





এই লোকাল ট্রেনগুলো খুবই যাত্রী সহায়ক। ইন্ডিয়ান লোকাল ট্রেনগুলোতে চড়ার সময় অবচেতন মনেই একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে। বনগাঁ থেকে দমদম ৭০ কিলোমিটার যাবো, ভাড়া ১৫ রুপি। অথচ ঢাকার বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত যেতে মাঝে মাঝে ৪৫ টাকার টিকিট কাটতে হয়, তারপরও অনেকসময় বগির মধ্যে উঠতে না পারার কারণে ইঞ্জিনে করে যেতে হয়। ইন্ডিয়ান লোকাল ট্রেনে সত্যিই খুব ভীড় হয়, কিন্তু তার মাঝেও বোধহয় একটা সুন্দর সিস্টেম চলে এসেছে। প্রতিটা বগিতেই অনেকগুলো করে ফ্যান, এবং সেগুলো সচল। দাঁড়িয়ে যাওয়া যাত্রীদের জন্য হাতলের ব্যাবস্থা। প্রতিটি বগিতে ৮ টা করে চওড়া দরজা। ট্রেনগুলোতে টয়লেটের ব্যাবস্থা নেই, কিন্তু ৪/৫ মিনিট পরপর ট্রেনগুলো যে স্টেশনগুলোতে থামে সেখানে টয়লেটের খুব ভালো ব্যাবস্থা আছে। আর আছে পানি খাবার ব্যাবস্থা। কোন কোন স্টেশনে ৫০টিরও বেশি খাবার পানির কল আছে।


লোকাল ট্রেনগুলোর কিছু কিছু আসন সংরক্ষণ করা থাকে। ইন্ডিয়াতে সিনিয়র সিটিজেনশীপ বলে একটা খুব ভালো ব্যাপার আছে। ৫৮ বছরের উপরের নারী এবং ৬০ বছরের উপরের পুরুষদেরকে বিশেষভাবে সম্মান করা হয়। এই সিনিয়র সিটিজেনশীপদের জন্য অনেক সামাজিক কর্মকাণ্ডেই কোটা সংরক্ষণ করা আছে। বিশেষ করে যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। ট্রেন, বাস, ট্রাম ইত্যাদি যানবাহনে এই বয়স্কমানুষদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা আছে। এমনকি দূরপাল্লার ট্রেনগুলোতে তারা প্রায় অর্ধেক ভাড়ায় ভ্রমণ করতে পারে। যেমন, কলকাতা থেকে দিল্লী পর্যন্ত ১,৪৪৬ কিলোমিটারের স্লীপার ক্লাসে সাধারন ভাড়া হচ্ছে ৬০৫ রুপি। কিন্তু সিনিয়র নারীদের জন্য এই ভাড়া হচ্ছে ৩৩০ ও সিনিয়র পুরুষদের ভাড়া হচ্ছে ৩৮৫ রুপি।


লোকাল ট্রেনগুলোতে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষন করা থাকে। এছাড়াও নারীদের জন্য কিছু আসন নির্ধারিত থাকে। প্রতিটি লোকাল ট্রেনের দুটি করে বগি নারীদের জন্য। এছাড়াও বনগাঁ থেকে শিয়ালদাহ পর্যন্ত শুধুমাত্র নারীদের জন্যও ট্রেন আছে। এইসব ট্রেনে কোন পুরুষ উঠলে তাদের কপালে সত্যিকারের খারাবী আছে।


ঠিক ১০ টা বেজে ২৮ মিনিটে ট্রেনটা ছেড়ে দিলো। এবং চালু হওয়া মাত্রই ট্রেনটা খুব দ্রুত চলা শুরু করলো। বিদ্যুৎ চালিত এই ট্রেনগুলি খুব দ্রুত গতি তুলতে পারে। দুপাশের দৃশ্য বাংলাদেশের মতোই। তবে এখানকার অধিকাংশ ঘরই হচ্ছে টালির। বাংলাদেশে তো এখন টালির ঘর প্রায় চোখেই পড়ে না। কয়েকজায়গাতে ফুলের ক্ষেতও চোখে পড়লো। আর জলাশয়গুলোতে শাপলা ফুল ফুটে আছে। ভালোই লাগছে দেখতে।


আমি যেখানটাতে বসেছি সেই বগিটা বেশ ফাঁকা। আমার পাশে যে ছেলেটা বসে আছে বোঝা যাচ্ছে যে সে নেশাখোর, ঢাকার তেজগাঁও স্টেশনে এরকম পোলাপান ভালোই চোখে পড়ে। মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রথম যে স্টেশনে ট্রেনটা থামলো সেখানেই এই নেশাখোর ছেলেটা নেমে গেল। আর আমি জানালার ধারটা দখল করে বসলাম।


প্রথম স্টেশনটার নাম হচ্ছে বিভূতিভূষণ হল্ট। এমন নাম কেন কে জানে! সুবিখ্যাত সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তর চব্বিশ পরগনাতেই জন্মগ্রহন করেন। বনগাঁ তো উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলাতেই পড়েছে। হয়তো খুব কাছাকাছির কোন গ্রামেই তাঁর বাড়ি ছিলো, এজন্যই হয়তোবা এই ষ্টেশনটা তাঁর নামে নামকরণ করা হয়েছে, বিভূতিভূষণ হল্ট।


আস্তে আস্তে ট্রেনের মধ্যে ভীড় হওয়া শুরু করেছে। তবে যাত্রীদের অধিকাংশই অল্পবয়সী, মানে ছাত্র-ছাত্রী। অফিস আওয়ারের ট্রেনগুলো সকালে চলে গেছে, এখন অন্য যাত্রীতে ভরপুর ট্রেন। তবে তরুন বয়সে যেরকম উচ্ছ্বাস দেখে আমরা অভ্যস্থ সে তুলনায় এই লোকাল ট্রেনগুলো বেশ নির্জীব বলা চলে।


বিভিন্ন ধরনের হকার উঠেছে, হরেক রকম জিনিস বিক্রি হচ্ছে। আমলকি বিক্রি হচ্ছে ছোট ছোট প্যাকেটে। অনেকেই এটা কিনে খাচ্ছে। এটা বোধহয় এখানে বেশ জনপ্রিয়। হকার যে শুধু পুরুষ ব্যাপারটা এরকম না, নারীরাও আছে। তারা সমান তালে তাদের জিনিসপত্র বিক্রি করছে। তবে কোন ভিক্ষুক আমার চোখে পড়েনি। নেই তা বলছি না, অন্তত আমি দেখিনি। ভিতরে যথেষ্ট ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও দরজায় কতোগুলো ছেলেমেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। খোলা দরজা দিয়ে আসা বাতাস যথেষ্ট আরামদায়ক, সে তুলনায় জানালা দিয়ে বাতাস প্রায় ঢুকছেই না।


ঠাকুরনগর, গোবরডাঙ্গা, মাছলান্দপুর এরকম স্টেশনগুলো একেএকে পার হয়ে চলেছি। আর একই সাথে ভিড় বেড়েই চলেছে। প্রতিটি স্টেশনে কয়েক সেকেন্ডের জন্য ট্রেন থামে আর হুড়মুড় করে যাত্রী ওঠে। ট্রেনটা একেবারে কানায় কানায় ভরে গেল।


লোকাল স্টেশনগুলোও বেশ বড় বড়। কোন ট্রেনের কোন বগি কোথায় কোথায় এসে দাড়াবে সেগুলো মার্ক করা রয়েছে। মহিলা বগিগুলো যেখানে দাড়াচ্ছে সেখানে মহিলাদের প্রচন্ড ভীড়। ইন্ডিয়াতে মহিলাদের পোষাক-আশাকগুলো বেশ চোখে পড়ে। সল্পবসনাদের আধিক্যই বেশি। নাহ! সল্পবসনা শব্দটি ঠিক হলো না। এরা অনেক কাপড় পড়ে ঠিকই, কিন্তু শরীরে কাপড় ধরে রাখার ব্যাপারে ততোটা যত্নবান না।


ট্রেনে আমি তো একেবারে জানালার ধারেই বসেছি, মুখটা জানালার গ্রীলে ঠেকিয়ে রেখেছি। যখন বিড়া স্টেশনে ট্রেন আসলো দেখি প্রায় ৪৫ বছর বয়সের একজন নারী, হালকা নীল রঙের টাইট জিন্স আর গাড়ো লাল রঙের শার্ট পড়ে আছে। শার্টের উপরের দুটো বোতাম খোলা। মোহনীয় একটা ভঙ্গী। হঠাত তার হাত থেকে কি যেন পড়ে গেল, তিনি জিনিসটা কুড়ানোর জন্য সামনের দিকে ঝুকে নীচু হলেন। এইরকম একটা ব্যাপার দেখার জন্য নিশ্চয় আমাদের দেশে বেশ একটা ভীড় জমে যেত। কিন্তু এখানে দেখলাম কেউ ফিরেও তাকালো না।


বিভিন্ন স্টেশনে দেখি কোন কোন ঠাকুরের একটা দুইটা ছবি আর তার নীচে টুকটাক উপকরন রেখে মন্দির বানানো হয়েছে। সেখানে প্রনামীর সংখ্যাও কম না।


ট্রেন থেকেই দেখা যাচ্ছে ষ্টেশনের টয়লেটগুলো। যদিও অনেকগুলো করে টয়লেট তবুও সেগুলোতে প্রচন্ড ভীড় আর লম্বা লাইন। এই টয়লেটগুলো বিনামূল্যের। ষ্টেশনের এই টয়লেটগুলোর উপযোগিতা খুবই বেশি। মানুষ তো খুব ভোরেই বাসা থেকে বের হয়, সারাদিনে তো তার অনেকবারই টয়লেটে যাবার প্রয়োজন পড়ে। ষ্টেশনের এই টয়লেটগুলো না থাকলে তো খুবই সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হবে। আহারে আমাদের দেশের স্টেশনগুলোর কি অবস্থা। পুরুষেরা তো নাহয় ট্রেন রাস্তার ধার ধরে দাঁড়িয়ে পড়তে পারে, কিন্তু নারীদের যে কি পরিমান সমস্যার সম্মুক্ষীন হতে হয় তা শুধুমাত্র ভুক্তভোগীরাই জানে।


প্রতিটা স্টেশনেই অনেকগুলো করে দোকান। সেখানে খাবার-দাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি হচ্ছে। আর রয়েছে লটারীর
দোকান। বিভিন্ন পোস্টার টাঙ্গানো দেখছি লটারী নিয়ে। এই দোকান থেকে লটারি কিনে ওমুক এতো হাজার টাকা লটারি জিতেছে, বিশ্বাস না হলে এই নম্বরে ফোন করে দেখুন, এইরকম ধরনের সব বিজ্ঞাপন।


যতোই কলকাতার কাছাকাছি চলে আসছি ততোই ষ্টেশনের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। দু-তিন মিনিট পরপরই একেকটা স্টেশন। মানুষে বোঝায় হয়ে গেছে ট্রেনটা। আশেপাশে যে কটা ট্রেন ক্রস করছে সেগুলোও যাত্রীতে ঠাসা। বিভিন্ন দিক থেকে কলকাতা অভিমুখে পাশাপাশি কয়েকটি ট্রেন ছুটে চলেছে। প্রতিটা স্টেশনেই প্রচন্ড ভীড়। অবশেষে বেলা প্রায় সোয়া বারোটাতে ট্রেন দমদম জংশন এসে থামলো। এখানেই ট্রেন অনেকখানি খালি হয়ে যায়। বেশিরভাগ যাত্রী এই স্টেশনেই নেমে পড়ে।


আমি যাবো বিবাদীবাগ স্টেশনে, সেজন্য শিয়ালদাহ যাবার দরকার নেই। সবচেয়ে ভালো হতো বনগাঁ থেকে ৯’৫০ এর ট্রেনটা ধরতে পারলে। ওটা সরাসরি বিবাদীবাগ যায়। কিন্তু যেহেতু সেটা ধরতে পারিনি, এখন দমদমে নামতে হবে। দমদম থেকেও বিবাদী বাগের ট্রেন পাওয়া যায়।


ট্রেনটা দাড়িয়েছে চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে। স্টেশনে নামতেই প্রচন্ড ভিড়ের খপ্পরে পড়লাম। কি পরিমান যে ভীড় তা কল্পনাও করা যাবে না। এই অবস্থায় বিবাদীবাগের ট্রেন খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সহজ উপায়টা বেছে নিলাম। মেট্রোর দিকে যাবার চেষ্টা। প্রচন্ড ভিড়ে সবকিছু উলোট-পালোট হয়ে যাচ্ছে। ক্যামেরা বের করে একটা ছবি তুলবো সেরকম অবস্থা নেই। কিছু সেকেন্ড পরপর একেকটা প্ল্যাটফর্মে একেকটা ট্রেন এসে দাড়াচ্ছে আর হাজার হাজার যাত্রী ওঠানামা করছে। আমি এই ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেলাম।


মেট্রোতে চড়ার জন্য ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মের দিকে যেতে হবে। ৪ থেকে ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে যেতে হলে মাটির নীচে ঢুকতে হবে। অনেক কষ্টে সুড়ঙ্গটা খুঁজে পেলাম। কিন্তু ভয়ঙ্কর ভিড়ে সেখানে বেসামাল অবস্থা। ব্যাগ টেনে যেতে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে। অনেক কষ্টে একটা স্রোতের মধ্যে যেতে পারলাম, আর তারপর সেই স্রোতটাই আমাকে মাটির নীচে টেনে নিয়ে গেল।


প্রায় দোতলা সমান নীচে নামতে হবে সরু একটা পথ দিয়ে। পথটা আসলে সরু না, কিন্তু সবসময় সেখানে এতো মানুষ গিজগিজ করে যে সেটা সরুই মনে হয়। মাটির নিচ দিয়ে এসে পৌছালাম ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে। এখান থেকেই মেট্রো ট্রেনের টিকিট কাটতে হবে।


কিন্তু ওরে বাবা!! এখানে আরো ভীড়। বেশ কয়েকটা কাউন্টার, অথচ অনেক লম্বা লাইন। লাইনগুলোতেও একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা, কে কার পিছনে দাড়িয়েছে সেটা বোঝা যাচ্ছে না। কিন্ত কোথাও কোন চিল্লাপাল্লা হৈ চৈ হুংকার নেই। সবাই মিলে চেষ্টা করছে লাইনগুলো ঠিক করার জন্য। বিপাকে পড়েছি আমি, কারণ আমার রয়েছে বাচ্চাসহ একটা বড় ব্যাগ।


কিছুক্ষনের মধ্যেই স্টেশনের একজন পুলিশ এসে লাইন ঠিক করে দিলো। আমার বড় ব্যাগটা দেখে সে স্পেশাল টেক কেয়ার করলো এবং সবাই তার নির্দেশনা মেনে চলে তাকে সহযোগিতা করতে লাগলো। অল্পক্ষনের মাঝেই সুশৃঙ্খল একটা ভাব চলে এলো। এতো মানুষের ভীড় অথচ খুব দ্রুত টিকিট বিক্রি হচ্ছে, লাইন খুব দ্রুত ছোট হচ্ছে। কাউন্টারে পৌছে একটা এম জি রোডের টিকিট নিলাম, ভাড়া ১০ রুপি। মেট্রো ট্রেনের টিকিট হচ্ছে প্লাস্টিকের ছোট্ট গোল একটা কয়েন।


টিকিট কাটা শেষ হলে ব্যাগ মেশিনে দিয়ে চেক করালাম। তারপর টোকেনটা মেট্রো স্টেশনে ঢোকার দরজাতে ছোঁয়ালাম। দরজা খুলে গেল। এরপর চলন্ত সিঁড়ি দিয়ে উপরের প্ল্যাটফর্মে উঠে গেলাম। কলকাতা মেট্রোর দমদমের অংশটা উড়ন্ত স্টেশন। অর্থাৎ এটা মাটি থেকে বেশ উপরে। প্ল্যাটফর্মে এসে দেখি একটা ট্রেন দাঁড়ানো অবস্থানে আছে। দৌড়ে সেটাতে ঢুকে পড়লাম। কিছুক্ষনের মাঝেই সংকেত দিয়ে দরজা বন্ধ হয়ে ট্রেনটি চলা শুরু করলো। আর তার অল্পক্ষনের মাঝেই ট্রেনটি উড়ন্ত অবস্থা থেকে মাটির নীচে ঢুকে গেল।


মেট্রো ট্রেনগুলি বেশ ভালো এবং আরামদায়ক। দরজার উপরে প্রতিটি ষ্টেশনের নাম লেখা আছে। যেগুলোতে লাল আলো জ্বলছে সেগুলোর মানে হচ্ছে যে এই স্টেশনগুলো পার হয়ে এসেছে, আর যেগুলিতে সবুজ আলো জ্বলছে তার মানে হচ্ছে এই স্টেশনগুলির দিকে ট্রেন যাচ্ছে। এছাড়াও বাংলা, ইংরেজি এবং হিন্দী এই তিন ভাষায় বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে ট্রেনটি এবার কোন স্টেশনে আসবে আর সেই স্টেশনে কোন পাশের দরজা দিয়ে নামতে হবে।


মাটির নীচের সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে ট্রেন খুব জোরে ছুটে চলেছে। একেএকে বেলগাছিয়া, শ্যামবাজার, শোভাবাজার, গিরিশ পার্ক পার হয়ে এলাম। এরপর ট্রেন এসে থামলো এম জি রোড। এখানেই নামলাম আমি। দমদম থেকে এ পর্যন্ত আসতে ৮ মিনিটও লাগলো কিনা সন্দেহ।


কলকাতার মেট্রো স্টেশনগুলিতে ছবি তোলা নিষেধ। মাটির নীচের প্ল্যাটফর্ম থেকে চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে দোতলা উপরে উঠে এলাম। এখানকার একটা ফিল্টার থেকে পেট ভরে ঠান্ডা পানি খেলাম। বোতলেও ভরে নিলাম। তারপর মেশিনের মধ্যে টিকিট টা জমা দিয়ে দিলাম, হাট করে দরজা খুলে গেল। তারপর আবারো চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে মাটির উপরে উঠে এলাম।


মেট্রো স্টেশন থেকে বের হয়ে দেখি চারিদিকে রোদ ঝলমল করছে, আর রাস্তায় গাড়ির বেশ ভিড়। রাস্তা পার হয়ে দেখি একটা বাস ডালহৌসি যাচ্ছে, খালি দেখে সেটাতে উঠে পড়লাম। বসার জায়গা নেই, আমি দাঁড়িয়ে আছি। আর কলকাতার বাসে বসতেও আমার ভয় লাগে, কোনটা যে নারীদের আর কোনটা যে সিনিয়র সিটিজেনশীপদের আর কোনটা যে পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত তা আমি মাঝে মাঝে গুলিয়ে ফেলি। বাসে দাড়াতেও খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে না, এখানকার অধিকাংশ বাসেই লাগেজ রাখার জন্য ভালো ব্যাবস্থা আছে।


বেশ কিছুক্ষন যাবার পর জানালা দিয়ে দেখি সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশন। হা কপাল! এম জি রোড না নেমে সেন্ট্রালে নামলেও তো হতো। আচ্ছা! অসুবিধা নেই। কয়েকটা সিট ফাঁকা হওয়া মাত্রই বসতে গেলাম, এসময় দেখি কন্ট্রাকটার ডালহৌসি ডালহৌসি বলে ডাকছে। ব্যাগটা কাঁধে চাপিয়ে কন্ট্রাকটারকে ১০ রুপির একটা নোট দিলাম, সে আমাকে খুচরা ফেরত দিলো। আর তারপর নেমে পড়লাম ডালহৌসিতে।

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:০২

ঢাকাবাসী বলেছেন: খুব সুন্দর বর্ণনা আপনার ভ্রমনের, দারুণ ভাল লাগল। ভারতের ট্রেন সার্ভিসের সাথে বাংলাদেশেরটা কোন তূলনাই হয় না। আদতে বাংলাদেশের রেল সার্ভিস পৃথিবীর সবচাইতে নিকৃস্টতম জঘন্যতম অবহেলিত একটা সেক্টর, মহা দুর্ণীতিতে ভরপুর। ভা্ল হবার আর কোন চান্সই নেই! তা তারপর কোথায় গেলেন। শেষ করুন।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
ভারতের ট্রেন সার্ভিস সত্যিই অসাধারণ। এখানে খুবই অল্প খরচে ট্রেনে চড়া যায়। দূর পাল্লার ট্রেনগুলো তো আরো ভালো। ওখানের ট্রেন ব্যাবস্থায় খুব ভালো শৃঙ্খলা আছে। যেটা আমরা এখনো আয়ত্ত্ব করতে পারিনি।

বাংলাদেশের ট্রেন ব্যাবস্থা সত্যিই দুঃখজ্বনক। তবে সরকারের সাথে যাত্রীদেরও একটা দায় আছে এ ব্যাপারে।



এরপর কোথায় গেলাম? :)
ক্রমশ প্রকাশ্য। আসলে একটা সিরিজ লিখছি তো, বেশ অনেকগুলো পর্ব হবে।

ভালো থাকবেন।

২| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৩

আহলান বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা .... ভালো লাগলো রে ভাই !

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৪৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আহলান ভাই। অনেকদিন পর আপনাকে পেলাম।

৩| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৫১

প্রশ্নবোধক (?) বলেছেন: আমি বরাবরই আপনার লেখার নিয়মিত পাঠক। যা সাধারণ চক্ষুতে উপেক্ষিত হত, তা ফুটে উঠে আপনার লেখায় সাবলীলভাবে। আপনার চোখে আমার না দেখা যায়গা গুলো দেখা হয়ে যায়। অনেক অনেক ভ্রমণ করুন, ভাল থাকুন।

[বিঃদ্রঃ কেউ কি ভ্রমন ব্লগার চকচাপড়ীকে চেনেন? উনার সাথে যোগাযোগ করা জরুরী দরকার]

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। :)


দুঃখিত ভাইয়া, আমি ভ্রমন ব্লগার চকচাপড়ীকে চিনি না।

ভালো থাকবেন সবসময়। B-)

৪| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৫৬

কলম চোর বলেছেন: শিরোনামের "বনগাঁ লোকাল" লেখা দেখে চোখ আটকে গেল কারণ সেখানে আমাদের আদী বাড়ী। এটা নিয়ে আমার একটা লেখা আছে Click This Link
বেশ উপভোগ করেছি লেখাটা। খুবই সুন্দর এবং গোছানো লেখা। আপনার ফলোয়ার বাটনে ক্লিক দিলাম :) "সল্পবসনাদের আধিক্য" পড়ে বেশ কিচ্ছুক্ষণ হেসেছি :v
পোষ্টে +++

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

সারাফাত রাজ বলেছেন:

আপনার লেখাটা পড়েছি। আপনি আরো বিস্তারিত লিখলে পড়ে আরো আরাম পেতাম। :)


কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। :D

ভালো থাকবেন সবসময়। B-)

৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:২২

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: কোন অঞ্চল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হলে, পর্যটকের চোখ একটি গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। আপনার পর্যটনের চোখের উপর ভিত্তি করে ভারতীয় কিছু বেশ অঞ্চলের সংস্কৃতি, কৃষ্টি, রীতি রেওয়াজ, পোষাক, জীবন যাত্রা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারলাম। আপনার লেখা বরাবর সুপাঠ্য, তাতে সন্দেহ নেই, তবে এই বার আপনার লেখাটিতে কিছুটা অপ্রয়োজনীয় বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন দেখে কিঞ্চিত বিরক্ত বা অবাক হলাম। গুরুত্ব দিয়েছেন কথাটি উল্লেখ্য করলাম, কারন ফেসবুকে আপনি ঐ অংশটি উল্লেখ্য করেই পোস্টটির প্রচারণা করেছেন। আমি বিশ্বাস করি, আপনার পোস্টের প্রচারনার জন্য সস্তা দৃষ্টি আকর্ষনের বর্ণনা দেয়া প্রয়োজন নেই, ব্যক্তি আপনিই আপনার লিখিত লেখার পড়ার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। আপনি হাতে গনা অল্প সংখ্যক ব্লগারদের মধ্যে একজন, যার প্রতিটি লেখা আমি অত্যন্ত আগ্রহ ভরে পড়ি এবং সংরক্ষন করি।

ভারতে সরকার নূন্যতম জবাবদিহীতায় বিশ্বাস করে, নূন্যতম ডেমোক্রেসী সেখানে বিদ্যমান। ফলে সেখানে বড় অন্যায় করে পার পাবার সুযোগ নেই। ফলে অধিকাংশ স্থানে একটা নূন্যতম সিস্টেম আছে। এটা বেশ দীর্ঘদিনের চর্চা, যা তারা পরাধীনতার আড়ালে থেকে ব্রিটিশদের কাছ থেকেই রপ্ত করেছে। ফলে তারা একটা সিস্টেমের ভেতর দাড়িয়ে গেছে। আমাদের এটা এখনও হয় নি। ফলে আমাদের সরকারী কোন সার্ভিস এখনও মানসম্মত হয় নি। আশা করি সামনে একদিন আমাদেরও এমন ভালো একটা সার্ভিস হবে। বাই দ্য ওয়ে, ৭০ কিলো যেতে কত সময় লেগেছে??

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: দুঃখিত ভাই, বোধহয় আমার কিছুটা কৈফিয়ত দেয়া উচিৎ।

ক্লাসে পরীক্ষার সময় আমার এক ক্লাসমেট আমাকে বিরক্ত করছিলো পরবর্তী পর্বটা কবে দেব এই নিয়ে। ওর উপর বিরক্ত হয়েই বলেছিলাম যে ( )। আসলে বন্ধুদের মাঝে তো বিভিন্ন রকম কথা হয়ই, যেগুলো জনসমুক্ষে আনা উচিৎ নয়। ওর সাথে কথোপকথোনেরই কিছুটা প্রভাব ছিলো আজকের লেখায়।

আমি সত্যিই দুঃখিত। :(

আপনার মন্তব্যটা পাবার সাথে সাথেই আমি লেখাটার অপ্রয়োজনীয় অংশটা মুছে দিয়েছি। এমনকি আমার ফেসবুক থেকেও সেটা ডিলিট করেছি।

ভাই সস্তা প্রচারনার জন্য ফেসবুকে ওই অংশটা দিইনি। আমার বন্ধুটার সাথে ঠাট্টা করেই ওটা দিয়েছিলাম। কিন্তু অনেকেই ইনবক্সে এটার ব্যাপারে বিশদভাবে আপত্তি জানিয়েছেন। আসলেই আমার আরো সচেতন হওয়া উচিৎ ছিলো।

তবে অপ্রয়োজনীয় অংশ লিখেও কিছুটা লাভ হয়েছে। অন্তত আপনি আমার লেখাতে মন্তব্য করেছেন। কতোদিন পর আমার কোন লেখাতে মন্তব্য করলেন আপনি। যদিও বুঝতে পারছি যে এখনো আপনি আমার উপর বিরক্ত।


আপনি আগ্রহ ভরে আমার লেখা পড়েন, আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি। ভাই, কৃতজ্ঞতা। :D


সত্যিই আশা করি যে আমাদের সবগুলো সরকারী সার্ভিস সর্বচ্চো মানসম্পন্ন হবে। :)

৭০ কিলোমিটার যেতে ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট মতো লেগেছে। মাঝে স্টপেজ ছিলো ২০ টি।

৬| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৩

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আরে না না! আমি বিরক্ত ছিলাম না। আপনি আমার পছন্দের মানুষ বলেই আপনাকে বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ্য করলাম। আমি জানি, আপনি বিষয়টি ফান বা কিছুটা রসাত্মক করতেই বর্ণনাতে এনেছেন। অবশ্য আপনার সাথে আমার সামনা সামনি আলোচনায় যদি এমন বর্ণনা আপনি বাদ দিতেন, তাহলে কিছুটা ব্যথিত হতাম। ;) :P লিখিত রুপে বাদ দিয়েছেন, ভালোই হয়েছে। আসলে নারী পুরুষ নির্বিশেষে অনেকের কাছেই আপনার একটি ইতিবাচক 'ইমেজ' বা ব্যক্তিত্ব আছে। তাই নারীদের জন্য বিব্রতকর হতে পারে, এমন কোন অভিজ্ঞতা আমরা যদি বর্ণনা করি, তারা আহত হতে পারেন। তাই সেই অনুরোধ করেছিলাম।

যাই হোক, ৭০ কিলোমিটার মানে হচ্ছে অনেকটা ঢাকা থেকে কুমিল্লার দুরত্ব। আহ! যদি আমাদের এখানে এমন ব্যবস্থা থাকত, আমি নিশ্চিত বহু মানুষ এমন দুরত্ব থেকে ঢাকায় এসে নিয়মিত অফিস করত, ঢাকার উপর চাপ কমত। সারাদেশের উন্নতিটা আরো বেশি হতো। আমার তো এখন বাসা থেকে অফিসে যেতেই প্রায় দেড় ঘন্টা সময় লাগে। অথচ দুরত্ব মাত্র ৮/৯ কিলোমিটার। ভাড়া দিচ্ছি নূন্যতম ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা। :(

এই বছরের শেষের দিকে বোকামন ভাইয়ের সাথে ইন্ডিয়া ভ্রমনের একটা পরিকল্পনার বীজ বপন করছি। আপনার সাথেও যোগাযোগ করব। যদি সময় সুযোগ হয়, তাহলে আপনাকেও আমাদের সাথে যোগ দেয়ার অনুরোধ করব।

ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইল।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫০

সারাফাত রাজ বলেছেন:
আমি জানি, আপনি বিষয়টি ফান বা কিছুটা রসাত্মক করতেই বর্ণনাতে এনেছেন। অবশ্য আপনার সাথে আমার সামনা সামনি আলোচনায় যদি এমন বর্ণনা আপনি বাদ দিতেন, তাহলে কিছুটা ব্যথিত হতাম। ;) :P

ভাই যে কি বলেন :D


আসলে ইতিবাচক ভাবমূর্তি বা এধরনের কিছু আমি কখনোই ভাবিনাই। হা হা হা। ব্যাপারটা আমার জন্য যথেষ্ট লজ্জ্বাজনক। :D
আমার সবসময়ই মনে হয় যে আমার সামনে কতোগুলো বন্ধু আছে, আর আমি তাদের সাথে গল্প করছি।
কিন্তু সেই বন্ধুদের মাঝে যে সিনিয়র ব্যাক্তিরা থাকেন এটা আমার সবসময় খেয়াল থাকে না। আপনার মন্তব্য আমাকে সচেতন করেছে, এরপর থেকে আমি কিছুটা সতর্ক থাকার চেষ্টা করবো। ( তবে সবসময় পারবো কিনা জানি না।) :P


ইন্ডিয়ান লোকাল ট্রেন ব্যাবস্থাটা আসলে খুবই উপযোগী। এটার জন্যই কলকাতা বা অন্য বড় শহরের উপর চাপ অনেক কম। যদি এই লোকাল ট্রেন ব্যাবস্থা না থাকতো আর সবগুলো মানুষ এই শহরেই বসবাস করতো তাহলে শহরটার কি ভয়ানক অবস্থা হতো তা কে জানে।

আহারে আমাদের প্রিয় ঢাকা!!!
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একজায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকবো এরকম জায়গারও অভাব দিন দিন প্রকট হচ্ছে।

ভাই আপনি তো অনেক তাড়াতাড়িই অফিসে যেতে পারেন।
আমি যখন বাসা থেকে বের হই তখন দেখি মসজিদে ফজরের নামায হচ্ছে। বাসায় আসি যখন তখন মসজিদে ইশার আযান দেয়। দৈনিক ৫ ঘণ্টারও রাস্তায় থাকতে হয়। তবে স্টুডেন্ট হিসাবে ভাড়া এখনো কমই দিতে পারি।

ইন্ডিয়া ভ্রমনের পরিকল্পনা!!! :#)
আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। :-B

৭| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩৭

জীবন সাগর বলেছেন: সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী। আমাদেরও জানা হল কলকাতার ট্রেন, ইস্টিশন সম্পর্কে।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। :)

আশাকরি সবগুলো পর্বেই আপনাকে পাশে পাবো। B-)

৮| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আপনার সাথে একবার বেড়াতে যেতে পারলে খুব ভাল লাগত। কিন্তু সময় নেই।
বাংলাদেশের রেলের কথা আর বলবেন না। রেল কর্মীরাই বাংলাদেশের রেল ব্যাবস্থপনাকে ধ্বংস করছে।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনার তো সময়ই হচ্ছে না। যাবেন কিভাবে? ;)

শুধু রেল কর্মীদেরই দোষ দিয়ে লাভ কি? তারা যে কেমন তা আমরা সবাই মোটামুটি জানি।
কিন্তু যাত্রী হিসাবে আমরাই কি ভালো?

আমার কাছে সবচেয়ে জঘন্য লাগে স্টান্ডিং টিকিট বিষয়টা। পুরো টাকা দিয়ে টিকিট কেটে একজন সিটে বসে যাচ্ছে, আবার পুরো টাকা দিয়ে টিকিট কেটে আরেকজন বসা মানুষটার ঘাড়ের উপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। দুজনের কেউই স্বস্তি পাচ্ছে না। মাঝে মাঝে তো দেখি এই দু'দলের মাঝে ঝগড়া বেঁধে যায়। যদি কোন ট্রেনের পুরো একটা বগি স্ট্যান্ডিং টিকিট যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ করা হয়, এবং তারা অন্য কোন বগিতে যেতে পারবে না এরকম ব্যাবস্থা করা হতো তাহলে অনেক ভালো হতো। অন্তত দুধরনের যাত্রীই সস্ত্বি পেত।

৯| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৯:৩৭

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভ্রমণ কাহিনীর মাধ্যমে অনেক কিছু জানা হলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।

ধন্যবাদ ভাই সারাফাত রাজ।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩১

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, খুব দ্রুতই পরের পর্ব দেবার চেষ্টা করবো।

আপনি আমার লেখা পড়েন, আমি যে কি আনন্দিত। :D

১০| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১০:৩৪

মনিরা সুলতানা বলেছেন: চমৎকার লেখা !!

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। আপনি নিজেই তো একজন চমৎকার লেখক। :)

১১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৫৩

রানা আমান বলেছেন: সুন্দর বর্ণনা সবসময়ের মতই , পড়ে ভালো লেগেছে , পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলুম ।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই, খুব দ্রুতই পরের পর্ব দেবার চেষ্টা করবো।

১২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪১

নতুন নকিব বলেছেন:



বরাবরের মতই সুন্দর ঝকঝকে ভ্রমন বর্ননা। অভিনন্দন।
ভালো থাকবেন নিরন্তর।
সময় করে আমার ব্লগ-কুটিরে এলে ধন্য হব।


১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: লেখা ভালো লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ। :)


আপনার কুটির থেকে ঘুরে এসেছি। নূতন এবং ঝকঝকে। B-)

১৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৪২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভাই, আপনার লেখা না পড়ার কোন যৌক্তিক কারণ নাই। ব্লগে যে সীমিত সংখ্যক ভালো লেখা আসে, তার মধ্যে আপনার লেখাগুলো অন্যতম। আমি কিন্তু ভালো লেখা পেলে অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়ি। এতে আমার নিজের লেখালেখি করতে সুবিধা হয়। যত তথ্য জানা যাবে, তত ভালো লেখা যাবে। একটা লিখলে দশটা পড়া উচিৎ। এখন অনেকেই পড়াকে কম গুরুত্ব দিয়ে লেখাকে বেশি গুরুত্ব দেন। আমি কিন্তু উল্টো স্রোতের মাঝি। আমি মনে করি, সবার কাছেই আমার কিছু না কিছু শেখার আছে।
লিখতে থাকুন। ভালো লেখার কদর চিরকালই ছিল, আছে এবং থাকবে। শুভকামনা রইল।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৬

সারাফাত রাজ বলেছেন: বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।

আপনার মন্তব্য আমার জন্য যথেষ্ট প্রেরণাদায়ক। :)

আমি লগ ইন না করেই অনেকের লেখা পড়ি। সত্যিই, অনেকেই বেশ ভালো লেখেন।
আর আপনি তো প্রথম সারির কয়েকজনের মধ্যে একজন।

ভালো থাকবেন সবসময়। আপনার প্রতিও শুভকামনা.... B-)

১৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১০:৩২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী। সত্যি অসাধারণ বর্ননাতে পোষ্টটি তার রূপবর্ধিত করতে পেরেছে। এত সাবলীল ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন যে যেন আপনার সাথে করেই নিয়ে যাচ্ছেন। তাই অনুসরণ করলাম ।ভাল থাকবেন সবসময়।

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:১৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। আশা করি সবসময়ই আপনার এরকম অসাধারণ মন্তব্য আমাকে সঙ্গ দেবে। ভালো থাকবেন সবসময়। :)

১৫| ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৩০

অদৃশ্য বলেছেন:




সুস্বাদু... খুব সুন্দর ও আরামদায়ক এক ভ্রমণ হলো আপনার সাথে বনগাঁ থেকে ডালহৌসি পর্যন্ত... যা কিছু লিখেছেন তার সবটাই গোগ্রাসে গিলেছি তাই খুব তাড়াতাড়ি পর্বটা শেষ হয়ে গেলো... বলতেই হচ্ছে যে মজা পাচ্ছি দারূনভাবে...

আর আশাকরবো এই ভ্রমণ কাহিনীতে আপনার একান্ত অনুভূতিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটাবেন... আপনি যা দেখছেন, যা শুনছেন বা চারিদিকে যা হচ্ছে আপনার দৃষ্টিতে/ভাবনায়/অভিজ্ঞতায় তা কেমন... পরিবর্তনের ছাপ সাথে সামাজিক অবস্থা, শিক্ষা, আচরণ সবকিছুই... প্রতিটি মুহুর্তেরই একটি রূপ আছে অথবা বলা যায় প্রতিটি মুহুর্তেরই বহুরূপ আছে...

আমরা কিন্তু আপনার এখান থেকেই অনেক শিক্ষা লাভ করছি এবং করবো... আবারো বলছি সুন্দর প্রকাশ... সাথে এও বলছি যে আরও যত্নবান হোন, এই সুন্দরেই থেকে থাকা যাবেনা...

পরেরটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকলাম...
রাজের জন্য শুভকামনা...

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৩০

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপনি যে একজন সত্যিকারের কবি তা আপনার মন্তব্য থেকেই বোঝা যায়। কি অদ্ভুদ সুন্দর একটা কথা বলেছেন
প্রতিটি মুহুর্তেরই একটি রূপ আছে অথবা বলা যায় প্রতিটি মুহুর্তেরই বহুরূপ আছে...
এরকম ভাবে যে কল্পনা করা যায় তা কখনো ভাবতেই পারিনি। সত্যিই অসাধারণ।

আমি কিন্তু সবসময়য় আপনার মন্তব্যের জবাব দিতে বিব্রত বোধ করি। এতো সুন্দর মন্তব্য করেন আপনি, অথচ আমি একেবারেই ভালো জবাব দিতে পারি না।


এতো গভীরভাবে লেখাগুলো পড়ার জন্য উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছি।

ভাই, আমার লেখাগুলো থেকে শিক্ষা লাভ করার কিছু নেই। এটাকে শুধুমাত্র বিনোদন হিসাবে গ্রহণ করলেই খুশি হবো।

ভালোবাসা জানবেন।

১৬| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:০০

আমি গাডডুর বাপ বলেছেন: একজন লেখক এর বড় সম্পদ হল তার চোখ।
চোখ বড় সম্পদ এই জন্য তার দেখা আর সাধারন মানুষের দেখার মধ্যে পার্থক্য। সাধারন আমরা শুধু ছবি দেখি, লেখক দেখে ছবির পিছনের গল্প।

আপনি আরও একবার প্রমান করলেন আপনি শুধু বড় লেখকও না সেই সাথে আপনার দেখার চোখটাও অনেক গভীর।

ইন্ডিয়ার এই অংশে আমি কক্ষনো যাই নি কিন্তু আপনার সাবলীল বর্ণনায় মনে হল জায়গা গুলু আমি আমার নিজের চোখ দিয়ে দেখছি।

আপনার লেখার প্রশংসা করে নতুন করে বলছি না শুধু একটা অনুরধ আপনি লেখালেখিতে আরও মনযোগী হোন আমার মনে হয় আপনি অন্য কিছু করার চিন্তা বাদ দিয়ে লেখালেখিটা পেশা হিসেবে নেন।

শুভ কামনা রইলো।

টিকা- আমাদের কফি খাওয়াটা কি এই জীবনে হবে না। এক শুক্রবার আমি ফ্রি থাকলে আপনি ব্যস্ত থাকেন আরেক শুক্রবার আপনি ফ্রি থাকলে আমি ব্যস্ত থাকি। এইভাবে কেম্নে কি?
আমাদের এই বিরহ কে শেষ হবে না???????

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৫৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের প্রথম অংশের সাথে দ্বিমত পোষণ করছি।
একজন লেখক এর সবচেয়ে বড় সম্পদ তার চোখ না, তার মন।

তবে যেহেতু আমি লেখক না, এজন্য আমার চোখই যথেষ্ট।
হা হা হা ;)

ভাই, কেমন আছেন? যে কয়েকজনের মন্তব্যের জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি আপনি সেই প্রথম সারির একজন। আর আপনিই কিনা আমাকে পর করে দিচ্ছেন!! সবার শেষে পাচ্ছি আপনাকে!!!!

লেখালেখি নেশা হিসাবেই থাকুক আপাতত।

টিকা- কফি কি আর আমাদের ভাগ্যে হবে?

১৭| ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৬

দাড়ঁ কাক বলেছেন: আপনি আমার দেখা অন্যতম সেরা স্টোরি টেলার। দেখার চোখ চমৎকার আপনার। বর্ননা সহজ ও বাহুল্যবর্জিত। ইদানিং লিখেন না?

১৮| ১৬ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:৫৯

রাজীব নুর বলেছেন: আমার ইচ্ছা আছে পুরো ভারত দেশটি ঘুরে বেড়াবো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.