নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার।

সারাফাত রাজ

পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর স্থান হচ্ছে বান্দরবান আর আমি একজন পরিব্রাজক।

সারাফাত রাজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশি ট্যুরিস্ট ও স্থানীয় মানুষ

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:০১



উত্তর ভারতের হিমালয় সিরিজের অন্য পর্বগুলো


দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করা আমার তীব্র নেশা। আমি আমার সামর্থ্যের স্বস্তিদায়ক অংশটুকুর সর্বোচ্চ প্রয়োগ করে ঘুরে বেড়াতে ভালোবাসি। দেশ বিদেশ বলতে অবশ্য আবার আমেরিকা ইউরোপ ভেবে বসবেন না যেন। এখন পর্যন্ত আমার দৌড় অবশ্য শুধু ভারত পর্যন্ত। যদিও অনেকেই আছেন যারা ভারতকে ঠিক বিদেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চান না, তথাপি আঞ্চলিক এবং পরিবেশগত বৈচিত্রতার কারনে আমার মত একজন ভ্রমনপিয়াসী ছাত্রের কাছে ভারতই ‘সেরা বিদেশ’।


এই ‘দেশ বিদেশ’ চলার পথে আমার সাথে অনেক মানুষের পরিচয় হয়েছে, নানা রকম অভিজ্ঞতাও অর্জন করেছি। এদের অনেকের কাছে বড় মুখ নিয়ে বাংলাদেশের গল্প করেছি, গর্ব করেছি, দেশে বেড়াতে আসার আমন্ত্রন জানিয়েছি। কিন্তু সত্যি বলতে পরক্ষনেই বুকের মাঝে একটা অস্বস্তির তোলপাড় অনুভব করেছি। খুব অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ এখনও পর্যটক বান্ধব রাষ্ট্র হতে পারে নি। আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা কখনই পর্যটন নিয়ে আন্তরিকভাবে চিন্তা করে নি, পর্যটকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নি। বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নানা রকম অনিয়ম চলছে, এই দেশে হাজারো স্পট আছে, কিন্তু সেইগুলোতে কোন প্রকার উন্নয়ন করা হয় নি।


কথাটা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে, পর্যটক হিসাবে অধিকাংশ বাংলাদেশীরা এখনও নূন্যতম মান অর্জন করতে পারে নি। সৌন্দর্যবোধের স্বাভাবিক মানবিক আচরন আমাদের মধ্যে আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় নেই বললেই চলে। পাশাপাশি, একটা অপরিচিত অঞ্চলের মানুষকে সম্মান, তাদের প্রচলিত রীতিনীতি, ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মান করার যে স্বাভাবিক বৈশিষ্ট তা থেকেও আমরা যথেষ্ট দুরে আছি। অথচ এই স্বাভাবিক বিষয়গুলো বুঝার জন্য অতিরিক্ত জ্ঞান কিংবা বুদ্ধিজীবি হবার প্রয়োজন নেই, নূন্যতম কমনসেন্স থাকলেই যথেষ্ট।


১।
একবার ভার্সিটি থেকে শিক্ষাসফরে গিয়েছিলাম। ওই প্রথম আর ওই শেষ, বিরাট শিক্ষা হয়ে গিয়েছিলো। ফেরত এসে কানে ধরেছিলাম। জায়গাটা ছিলো লাউয়াছড়া উদ্দ্যান। একটা বন যার শরীরকে ভাগ করে রেলপথ চলে গেছে, ছোট ছোট টিলা, ঝিরিপথ আর আদিবাসীদের গ্রাম। যদিও আমি তার কিছুদিন আগেই বান্দরবান থেকে ঘুরে এসেছি এবং লাউয়াছড়া আমার কাছে মনেহচ্ছে ফ্যান্টাসি কিংডম থেকে শিশুপার্কে আসার মতো। তারপরও সহপাঠীদের সাথে ঘুরতে যাবার মজাই আলাদা।


তো হঠাত দেখলাম আমার সহপাঠী বন্ধুরা খুবই উত্তেজিত। তারা একটা বানর দেখেছে। এবং বানর দেখার সাথে সাথে তাদের যে ইম্প্রেশন তা এইরকম, ‘ওই দেখ বান্দর বান্দর!! মার শালারে ঢিল মার!!”


একটা ভার্সিটির স্টুডেন্টরা যদি এরকম করে তাহলে অন্যান্যরা কি করবে।


স্টুডেন্টের কথা বাদ দিই। দুপুরে জম্পেশ খাওয়া-দাওয়া হলো। খাওয়া শেষে প্যাকেটগুলো আমাদের টিচাররা ডাস্টবিন নয় এমন জায়গায় ফেললো আর তারপর আমরা কয়েকশো স্টুডেন্টরাও সেখানে প্যাকেটগুলো ফেললাম। একটা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের একটা অংশ আমরা ডাস্টবিন বানিয়ে রেখে আসলাম।


আমরা যখন লাউয়াছড়া থেকে ফেরত আসি তখন দেখি সিলেটের কোন একটা কলেজ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষা সফরে এসেছে। তাদের সাথে একটা পিক-আপ। সেই পিক আপে ইয়া বড় বড় সাউন্ড বক্স।


একটা সুন্দর সংরক্ষিত বনাঞ্চল যেখানে কয়েকটা আদিবাসি পাড়া আছে, যেখানে কতোগুলো বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রানী কোন রকমে টিকে আছে সেখানে এই ইয়া বড় বড় সাউন্ডবক্স কি প্রভাব ফেলবে তা বোঝার জন্য কোন বিশেষজ্ঞ হতে হয় না।


২।
আমার দেখা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা হচ্ছে বান্দরবান। এতো রোমাঞ্চ মনেহয় দুনিয়ার আর কোথাও নেই। একবার সাত বন্ধু মিলে গেছি বান্দরবান, এতো অসাধারণ অনুভূতি তা বলে বোঝানোর ভাষা নেই। আমার এখনো মন খারাপ হলে আমি চোখ বন্ধ করে এই দিনগুলোর কথা ভাবি। কেওক্রাডাং পাহাড়ের চূড়ায় উঠেছি, চারপাশের দৃশ্য সর্বচ্চো পর্যায়ের অস্থির। এখানে একটা চুড়ার উপরে গোল একটা ছাউনি আছে, আমরা সাতজনই সেই ছাউনির ছাদে উঠে পড়েছি। আর তারপর চোখ বুজে গভীরভাবে এই নিস্তব্ধতা উপভোগ করছি । হঠাত মনেহলো সবগুলো পাহাড় একসাথে গর্জন করা শুরু করেছে, প্রচন্ডভাবে চমকে উঠলাম।


হয়েছিলো কি, আমাদের দলের একটা ছেলে কেওক্রাডাং এ ওঠার আনন্দে বাজি ফোটানো শুরু করেছে। মনেহচ্ছিলো যে টান দিয়ে একে যদি এই চূড়া থেকে একদম নীচে ছুড়ে ফেলে দিতে পারতাম!


রাত হলো, সেই রাতটা আমরা কেওক্রাডাং এর চূড়াতেই ছিলাম। এখনো পর্যন্ত আমার জীবনের সেরা রাত সেটি। এতোটা সৌন্দর্য সহ্য করাও আসলে মুশকিল। তো সেই রাতে সেই বাজি ফোটানো ছেলেটা করলো কি সব জামাকাপড় খুলে একেবারে ন্যাংটা হয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করলো। ব্যাপারটা আমার মনে হয়েছে অসভ্যতার একটা চূড়ান্ত পর্যায়। (নগ্ন শব্দটি ব্যাবহার করতে না পাড়ার জন্য দুঃখিত। ছেলেটার আচরণ এতোটাই বিকৃত মনে হয়েছে যে এখানে ওর জন্য ন্যাংটা শব্দটাই সর্বাধিক প্রযোজ্য)।


বান্দরবানের একটা অংশে কোন সম্প্রদায় বাস করতো যাদের মেয়েরা বুকে কোন কাপড় পড়তো না। (এখনো তারা টিকে আছে কিনা জানি না)। এটা নিশ্চয় তাদের কৃষ্টি-কালচার। তাদের এই সংস্কৃতি তো তারা ঢাকা শহরে দেখাতে আসছে না, বরঞ্চ আমরাই তাদের নিজস্ব গন্ডিতে অনুপ্রবেশ করেছি। তো এরকম একটা এলাকা পার হবার সময় হঠাত করে খেয়াল করে দেখলাম যে গতোদিনের ন্যাংটা হয়ে দৌড়াদৌড়ি করা ছেলেটা এতো বীভৎস ভাবে একজন আদিবাসী নারীর দিকে তাকিয়ে আছে যে সেই নারীটা প্রবলভাবে অস্বস্তিবোধ করছে। শেষপর্যন্ত এই নারী বাধ্য হয়েছিলো হাত দিয়ে তার বুক আড়াল করতে।


সারাদিন হেঁটে প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে এক আদিবাসিপাড়ায় পৌছেছিলাম পড়ন্ত বিকালে। গোসল করা খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিলো, কারণ আমরা সবাই ধুলি ধুসরিত ছিলাম। এই গ্রামের ঝরনাটা গ্রামের একটাপাশে একটু নীচের দিকে। ঝরনায় নামার আগে দেখি সেখানে কতোগুলো আদিবাসি মেয়ে গোসল করছে। ইতস্তত বোধ করলাম। কারণ যেখানে কতোগুলো মেয়ে গোসল করছে সেখানে নিশ্চয় যাওয়া উচিত না। ইতস্তত বোধ দেখে মেয়েগুলি খিলখিল করে হেসে উঠলো তারপর তাদের ভাষায় যেটা বললো তা অনেকটা এরকম, গোসল করতে এসো, কোন সমস্যা নেই। আমার কানে এখনো সেই মেয়েগুলির হাসি রিমঝিম করে বাঁজে।


বান্দরবান শহরের সবচেয়ে কাছের ঝরনা বোধহয় শৈল-প্রপাত। জায়গাটা একটা টুরিস্ট স্পটও বটে। এই ঝরনার আশেপাশে কতোগুলো আদিবাসি এলাকা আছে। এই এলাকার আদিবাসি মেয়েরা নাকি এখন রাতে গোসল আর খাবার পানি সংগ্রহ করতে আসে। দিনের বেলায় এই ঝরনায় টুরিস্টরা এসে এইসব মেয়েদের এতোটাই বিরক্ত করে যে এখানকার মেয়েরা তাদের জরুরী প্রয়োজন মেটাতে এখন রাতের বেলায় আসতে বাধ্য হয়।


৩।
টুকটাক কয়েকবার ইন্ডিয়াতে গেছি। কলকাতাতে যাওয়া তো খুবই সহজ। একটা কথা বলতে খারাপ লাগলেও চরম সত্য যে বাংলাদেশের থেকে অনেক কম খরচে ইন্ডিয়াতে ঘোরা যায়। কলকাতায় ঘুরতে যাওয়া বাংলাদেশী ইয়াং পোলাপানাকে নিয়ে আমার কিছু বিষয়ে পর্যবেক্ষণ আছে।

এরা থ্রী-কোয়াটার বা হাফপ্যান্ট পড়ে। সুন্দর সুন্দর টি শার্ট পড়ে। পায়ে দামী জুতো পড়ে। চোখে দামী সানগ্লাস থাকে। মাথায় ক্যাপ অথবা হ্যাট পড়ে। গলায় অথবা কোমরে একটা ব্যাগ থাকে যার মধ্যে পাসপোর্ট এবং টাকা পয়সা থাকে। কেউ কেউ ট্রাভেলার ট্রাভেলার ভাব আনার জন্য গলায় গামছা ঝোলায়। এরা নিউমার্কেট এলাকা ছাড়া আর কোথাও উঠে না। কয়েকটা বিখ্যাত খাবার হোটেল আছে যেমন কস্তুরি, রাঁধুনি এই হোটেলগুলিতে খায় আর বলে ‘একদম বাংলাদেশের মতো রান্না’। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে দুই আঙ্গুল উচু করে সেলফি তোলে। বন্ধুরা মিলে একসাথে চায়ের মাটির ভাড় হাতে নিয়ে ছবি তোলে আর ফেসবুকে আপলোড দেয় ‘দাদাদের দেশের এতোটুকুন চা’।


দুঃখিত, উপরোক্ত বিষয়গুলো কারো সাথে মিলে গেলে অথবা না মিললে আমি একেবারেই দায়বদ্ধ নই। আরো কিছু বিষয় আলোচনা করা যেত কিন্তু সেগুলো আপাতত থাকুক।

কিন্তু সমস্যা হয় সেসময় যখন এইসব সৌখিন টুরিস্টরা বাজেট ট্রাভেলারদের জন্য বিপদ সৃষ্টি করে। ছোট্ট একটা উদহারণ দিই। ধরুন কোন হোটেলের ভাড়া ৩০০ রুপি। কোন একজন ট্রাভেলার সেটা নিয়ে হোটেলওয়ালার সাথে দরদাম করছে। এসময় দুম করে একজন টুরিস্ট এসে হোটেলওয়ালাকে বলবে আমি ৫০০ দিচ্ছি, রুমটা আমাকে দিয়ে দিন।


অথচ ভারতের এক হোটেলে আমি দেখেছি একজন আমেরিকান তার লন্ড্রী খরচ বাবদ কেন ২ রুপি বেশি নেয়া হলো এই নিয়ে হোটেলওয়ালার সাথে তুমুল ঝগড়া করতে। দুজন রাশিয়ানকে দেখেছি ২০০ রুপির গাড়ি ভাড়া ১০০ রুপি নেবার জন্য ড্রাইভারকে রীতিমত হুমকি দিতে, এবং তারা সফলও হয়েছিলো। যেখানে ইন্ডিয়ান যাত্রীরা ২০০ রুপির ভাড়া দিচ্ছে সেখানে তারা ১০০ রুপি ভাড়ায় যাত্রা করলো। শুধু আমাদের বাংলাদেশীদেরই দেখেছি লোক দেখানোর মতো অনেক টাকা।


আমি একজন বাজেট ট্রাভেলার। কলকাতা আমার জন্য দিনদিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে।


৪।
আচ্ছা, বাংলাদেশের মানুষেরা কেমন? বিপদে পড়লে স্থানীয়রা ঠিক কিভাবে সাহায্য করে?


আমি একটি উদহারণ দিতে পারি। দুঃখিত উদহারনটি ভালো নয়।


একবার আমি আর আমার মামাতো বোন বাসে করে ঢাকা থেকে যশোরে যাচ্ছি। বাইরে বেশ বৃষ্টি হচ্ছে, আমরা দুই ভাইবোন সিটের উপরে মোটামুটি পা তুলে আয়েশ করে গল্প করছি। পাটুরিয়া ঘাটের কিছু আগে বাসটা এক্সিডেন্ট করলো। এক্সিডেন্টের ফলে বাসের সামনের অংশ পুরোপুরি ধসে গিয়ে আগুন ধরে গেল। সবাই তো আহত হয়েছেই, এই আহত যাত্রীরা আতঙ্কিত অবস্থায় জানালা দিয়ে লাফ দেয়া শুরু করলো। যেহেতু বাসে বেশ গতি ছিলো এবং সেই গতির কারণে বাস তখনো সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে । লোকজন সেই চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়ছে। আমি দেখলাম যে আমার মামাতো বোন আমাদের তিনখানা ভারী ভারী ব্যাগ নিয়ে আমাকে মাড়িয়ে এই জ্বলন্ত বাস থেকে নেমে গেল। বাস তখন কিছুটা মন্থর হয়ে এসেছে। আমি যেহেতু টিউবলাইট আছি, এজন্য পুরো ব্যাপারটা হৃদয়াঙ্গম করতে আমার কিছুটা সময় লেগেছে। সবাই নেমে যাবার পর আমি ধীরে সুস্থে বাস থেকে নামলাম। আল্লাহর রহমতে আগুন তার তীব্রতা বেশি ছড়াতে পারেনি, কারণ সেসময় খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছিলো।


বাস থেকে নেমে দেখি সে এক বীভৎস অবস্থা। বাসের সামনের দিকে যারা বসে ছিলো তাদের গায়ে জামা নেই। সুপারভাইজারের অবস্থা বেশি খারাপ, তার জামা তো নেইই প্যান্টের অবস্থা খুবই করুণ। সে বেচারা এক যাত্রীর কাছ থেকে লুঙ্গি নিয়ে পড়লো। প্রত্যেকটা মানুষ রক্তাক্ত। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা একটা তিন মাস বয়সী বাচ্চার। বাচ্চাটার শরীর পুরো রক্তে ভেসে গেছে। তবে পরে বুঝলাম যে আল্লাহর রহমতে বাচ্চাটার কিছু হয়নি, সে তার নানার কোলে ছিলো। তার নানার কপাল এমনভাবে কেটেছে যে সেই রক্তে বাচ্চাটা পুরো গোসল হয়ে গেছে।


আমি আমার মামাতো বোনের দিকে তাকালাম। তার অবস্থাও ভালো না। যেহেতু সে সিটে পা তুলে বসে ছিলো এজন্য পায়ে প্রচন্ড আঘাত পেয়েছে। এখন পা নড়াতে পারছে না। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তাহলে তখন তুই তিনটা ভারী ব্যাগ নিয়ে আমাকে ডিঙ্গিয়ে নীচে নামলি কিভাবে। আমার প্রশ্নে প্রচন্ড ক্ষীপ্ত হয়ে সে চোখা চোখা কতোগুলো গালাগাল দিলো।


যাই হোক, দুর্ঘটনার পর ভয়ঙ্কর একটা অবস্থা। যাত্রীরা প্রচন্ড আহত। সবাই মিলে আহাজারি করছে। আর এইসময় গ্রামবাসীরা ছুটে এলো। তারপর তারা সবাই মিলে বাসে উঠে যাত্রীদের যা যা মালপত্র ছিলো সেগুলো গুছিয়ে নিয়ে সুন্দর করে চলে গেল। এটা যে লুটপাট ছিলো তা বোঝার আগেই জিনিসপত্র হাওয়া। আর যাত্রীরা বাঁধা দেবে কি, সবাই তাদের হাত-পা শরীর সামলাতে আর আহত জায়গাগুলোর রক্তপাত বন্ধ করতে ব্যাস্ত।
আচ্ছা, দিনদিন আমরা বাংলাদেশীরা কি অমানুষ হয়ে যাচ্ছি?


বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী নিয়ে আমার মনোভাব কখনোই ভালো নয়। কিন্তু ভাগ্যিস এই সময়টাতে টহল পুলিশের একটা গাড়ি সেখানে উপস্থিত হয়েছিলো। তারা সেসময় সেখানে না আসলে যে কি অবস্থা হতো তা আল্লাহই জানে।


উপরোক্ত ঘটনাটি আমার উদহারণ। কিন্তু নিশ্চয়ই এই উদহারণটি দিয়েই সবাইকে পরিমাপ করা উচিত নয়। বাংলাদেশে অবশ্যই ভালো মানুষ আছে। কেউ বিপদে পড়লে অবশ্যই তাকে সাহায্য করার জন্য মানুষ ছুটে আসে।


৫।
ভারতের একটা জনপ্রিয় শৈল শহরে গিয়েছি। সঙ্গত কারণেই আমি সেই শহরটির নাম বলবোনা। কারণ আমি চাইনা টুরিস্টরা দলেদলে গিয়ে সেই সুবিধা নিক, আর আমার মতো ট্রাভেলার পরে গিয়ে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হোক। তবে বর্ণনার সুবিধার্থে ধরে নিই যে সেই শহরটির নাম সিমলা।


সিমলা শহরের সৌন্দর্য বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়ে এর পাহাড়ী ট্রেন। প্রায় ১৬ দিন উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন পাহাড় পরিক্রমা শেষে আমি এসেছি সিমলা শহরে। সারারাত জার্নির পর বাস থেকে যখন নেমেছি তখনো ভোরের আলো ফোটেনি। এসময় অধিকাংশ হোটেল বন্ধ। যে কয়েকটিতে যাবার সুযোগ পেলাম সেখানে যে ভাড়া চায় তা আমি দিতে পারবো কিন্তু আমি দিতে চাচ্ছি না। কারণ আমি জানি যে আমি আরো কমে ব্যাবস্থা করতে পারবো।


শেষ পর্যন্ত বিরক্ত হয়ে হাটতে হাটতে রেলস্টেশনে এসে উপস্থিত হলাম। আমি জানি যে স্টেশনে থাকার ব্যাবস্থা হয়ে যাবে। তখনো স্টেশন খোলেনি। আমি বাইরের একটা বেঞ্চে বসে চারপাশের প্রকৃতি দেখছি আর ক্রমান্বয়ে আরো মুগ্ধ হচ্ছি।


প্রায় দু’ঘন্টা পর স্টেশন মুখরিত হলো। কোন ট্রেন এসে পৌছায়নি কিন্তু স্টেশনের দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। ঝকঝকে এই স্টেশনটা আরো তকতকে করে রাখার কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই স্টেশনে আমিই একমাত্র ব্যাতিক্রম। কয়েকদিনের পথচলায় আমি শ্রান্ত। আমার পোষাকআশাক এর অবস্থা ভালো না। উত্তরাখন্ডের বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমার মুখের চামড়া পুড়ে গিয়েছিলো, সেগুলো এখন খসে খসে পড়ছে। সারারাতের বাসজার্নিতে আমি ক্লান্ত। এখনো পর্যন্ত ফ্রেশ হবার সুযোগ পাইনি। নিশ্চয় আমাকে খুব নোংরা দেখাচ্ছে।


স্টেশনের অফিস খুললে এই অবস্থাতেই আমি চললাম এক অফিসারের সাথে দেখা করতে। আমি যখন অফিসারের কক্ষটিতে উপস্থিত হলাম তখন দেখি যে অতিরিক্ত সুন্দর এবং হ্যান্ডসাম এক ভদ্রলোক বসে আছেন। তার পরনে সাদা শার্ট, কালো প্যান্ট আর কমলা রঙের কেডস। সবকিছু মিলিয়ে চল্লিশোর্ধ ভদ্রলোককে অসাধারণ করে তুলেছে। নিজের মনে তিনি কাজ করে চলেছেন। তিনি নিশ্চয় খুব ভালো সুগন্ধী ব্যাবহার করেছেন, কারণ তার সৌরভে পুরো কক্ষ সুরভিত হয়ে আছে। এই পরিবেশে কাউকে আর এর চাইতে ভালো লাগার কথা নয়।


আমি খুবই কুন্ঠিত হয়ে আছি। আমার পোষাক, আমার শারীরিক অবস্থা, সর্বোপরি আমি সকাল থেকে এখনো মুখে পানি পর্যন্ত দিয়ে একটু ফ্রেশ হতে পারিনি। বিনয় কন্ঠে তাকে বললাম, আমি আপনাকে কিছু বলতে পারি কি? কারণ বাংলাদেশে সারাজীবন দেখে এসেছি যে সরকারি মানুষের সাথে অতিরিক্ত বিনয়ের সাথে কথা বলতে হয়।


তো ভদ্রলোক আমার দিকে তাকিয়ে একটু হেসে আমাকে বললেন, ‘বলুন স্যার আপনার জন্য কি করতে পারি’।


তার স্যার সম্বোধন আমাকে পুরোপুরি হতভম্ব করে তুললো। আচ্ছা, আমি স্বপ্ন দেখছি নাতো!! আমি তৎক্ষণাৎ সিধান্ত নিলাম যে এখানে যদি আমার অভিলাষ পুরণ নাও হয় তবুও আমি প্রচন্ড তৃপ্ত থাকবো। কারণ ভদ্রলোকের ব্যাবহার আমাকে মুগ্ধতার শেষ পর্যায়ে নিয়ে গেছে।


তাকে আমার সমস্যার কথা জানালাম। বললাম যে এই শহরে আমি থাকার জায়গা পাচ্ছি না, আমি এই স্টেশনেই থাকতে চাই। কারণ এই স্টেশনের টানেই আমি এতোটা পথ পারি দিয়ে এসেছি।


ভদ্রলোক আমার কথা খুবই মনোযোগের সাথে শুনলেন। জানতে চাইলেন যে আমি কোথা থেকে এসেছি। বাংলাদেশ শুনে খুবই খুশি হলেন, কারণ বাংলাদেশীরা পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে। পাকিস্তানিদের প্রতি তার একরাশ ঘৃণা দেখলাম।


শেষে বিনয়ের সাথে আমাকে বললেন যে আমি যেভাবে স্টেশনের রুম বুক করতে চাচ্ছি সেরকম নিয়ম এখন আর নেই। এটি এখন পুরোপুরিই অনলাইন নির্ভর। তবে তিনি আমার জন্য সর্বচ্চো চেষ্টা করবেন। এজন্য আমাকে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে।


ভদ্রলোক সত্যিই তার সর্বচ্চো চেষ্টা করেছিলেন। আমি এই অসাধারন স্টেশনের একটি রিটায়ারিং রুম ২৪ ঘন্টার জন্য বরাদ্দ পেয়েছিলাম নামমাত্র মুল্যে।


স্টেশনের দ্বোতলায় পরিচ্ছন্ন দৃষ্টিনন্দন একটা কক্ষ, যার জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে অসংখ্য পাহাড় আর সেইসব পাহাড়ে ছবির মতো ঘরবাড়ি। ছোট ছোট পাহাড়ি ট্রেন হুইসেল বাজিয়ে স্টেশনে আসছে, আর সেইসব ট্রেন থেকে নামছে রঙ্গিন রঙ্গিন পর্যটক। অসাধারণ শৈল শহরে আমার অসাধারণ ২৪ ঘন্টা।


৬।
যেহেতু সিমলা শহরের কথা এসেছে তাই সেই শহরের কতোগুলো ছবি।



































৭।
একবার সত্যিকারভাবে মন খারাপ হয়েছিলো। উত্তরাখন্ডের বিশাল হিমালয়ের একটা অংশ থেকে বের হয়ে আসার সময় সেখানকার প্রহরী আমার শরীর আর ব্যাগ চেক করেছিলো। তাকে দেখাতে হয়েছিলো যে আমি এই বিশাল অভয়ারণ্যের কোথাও এতোটুকু ময়লা ফেলে আসিনি। গুনে গুনে তাকে দেখাতে হয়েছিলো বিস্কুটের ছেঁড়া প্যাকেট আর পানির খালি বোতল। আচ্ছা কি হতো একটা বিস্কুটের প্যাকেট এই বিশাল পাহাড়ের কোন এক কোনে ফেলে আসলে! কিন্তু ভারত সরকার তাতে রাজী নয়। সে একটা প্লাস্টকের টুকরো ফেলেও হিমালয়কে কলঙ্কিত করার ব্যাপারে খড়্গহস্ত। অথচ আমরা আমাদের সুন্দরবনকে কিভাবে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যাবহারের মাধ্যমে, আর সেই ধ্বংস সাধনের জন্যও কি বিশাল বিপুল মহাপরিকল্পনা করা হয়েছে।


তবে আশার কথা এই যে বাংলাদেশের ইয়াং জেনারেশনের একটা অংশ ইকো টুরিজমের ব্যাপারে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।


৮।
আমার কাছে এখনো পর্যন্ত মনে হয়েছে বাংলাদেশের সবচাইতে অতিথি বাৎসল্য মানুষেরা হচ্ছে পাহাড়ি আদিবাসীরা। আমার সবসময় মনেহয় পাকিস্তানি জানোয়াররা আমাদের সাথে যেরকম আচরণ করতো আমরাও ঠিক একই আচরণ আমাদের আদিবাসিদের সাথে করছি নাতো!



এই ছবিটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর একটি জায়গা বান্দরবানের

মন্তব্য ৬১ টি রেটিং +১৪/-০

মন্তব্য (৬১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:১৩

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আজ দেখি সব আমার প্রিয় ব্লগারদের লেখার ঢল নেমেছে।
ক্ষিদা লাগছে খাইয়া আসি তারপর পড়ব।
কারও পোষ্টে প্রথম কমেন্ট করতে পারছিনা।
একটু আগে খায়রুল আহসান ভাইয়ার পোষ্টে মনে করলাম প্রথম কমেন্ট করব। পড়ে কমেন্ট করে দেখি ছয় নাম্বারে আছি।
আপনারটায় না পড়েই কমেন্ট করলাম এখন দেখি কয় নাম্বারে থাকি।
ভাই আসেন এক সাথে খাইয়া নেই।
কাঁচ কলার সাথে শিং মাছ। বর্ষায় কম জমবে তবে খারাপ লাগবে না। হা হা হা।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: আজ কেমন ঈদ ঈদ লাগছে তাইনা! :)
আমি নিজেও আমার প্রিয় লেখকদের লেখা পড়ার জন্য মুখিয়ে আছি।

আশাকরি খাওয়া দাওয়া শেষ।

খায়রুল আহসান ভাইয়া একজন জনপ্রিয় লেখক। তার পোস্টে প্রথম কমেন্ট করা মুশকিল।

আমার ব্যাপারে আপনি বরাবরই ফাস্ট।

ভাই, একসাথে খাইতে পারলাম না বলে দুঃখিত। আমি রোযা আছি।

ভালো থাকবেন ভাই।
:)

২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১:২৪

রক বেনন বলেছেন: সারাফাত ভাই, অনেক সুন্দর আর গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট দিয়েছেন। এইসব ডিজুস পোলাপানের জন্য এখন দেশের ভিতরেও বাজেট ট্রাভেলিং অসম্ভব হয়ে পরেছে। এছাড়াও রয়েছে কিছু আলট্রা বড়লোক ফ্যামিলি যাদের কাছে টাকা মানে তেজপাতা। এর ভয়াবহ প্রভাব দেখবেন কক্সবাজার গেলে। আর পুরো বাংলাদেশ টাকেই এখন ডাস্টবিন বানানোর মহা পরিকল্পনা চলছে। গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার পথে দেখি টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত সমুদ্রপথে শুধু চিপস, চানাচুর আর প্লাস্টিকের বোতল সাগরের পানিতে ভাসছে। আর আমাদের জাহাজ সহ সব জাহাজ থেকেই সব অসভ্য, বর্বর আর ইতর লোকগুলো ও একই কাজ করছে। ইচ্ছে করছিল কয়েকটাকে লাথি মেরে সাগরে ফেলে দিয়ে বলি- যা, যা যা ফেলছস সব তুলে নিয়ে আয়। এইরকম জাতি মনে হয় পৃথিবীর অন্য কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

ভালো থেকবেন সারাফাত ভাই! পোস্টে প্লাস ++++++++

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:০৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: রক বেনন ভাই, আপনি অনেকটা সময় নিয়ে মন্তব্য করেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিনা জানিনা, তবে আমার কিছু ক্ষোভ আছে তারই কিছুটা উগড়ে দেবার চেষ্টা করেছি।

ডিজুস পোলাপান B-)) বাহ! মজাদার শব্দ বলেছেন তো!

তবে এইসব পোলাপান ইন্ডিয়াতে গিয়ে আরো কিছু কাজ করে। শালীনতা বজায় রাখার জন্য আমি সেগুলোর আলোচনায় গেলাম না।
পুরোপুরি ছ্যাচড়া না হলে এখন আর দেশের মধ্যে বাজেট ট্রাভেলিং দেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

তেজপাতা!!
তা ভাই কার কারো কাছে সত্যিই টাকা এখন তেজপাতা।

তবে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলার এই প্রবণতা সত্যিকার ভাবেই কষ্টদায়ক। ঢাকা শহরে ময়লা ফেলার জন্য অনেকগুলো ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছিলো। আল্লাহই জানে এখন সেগুলো কোথায় আছে।

বান্দরবানের গহীনে যেতে এখন আর গাইড লাগে না। আগের দলের ফেলে যাওয়া ময়লার চিহ্নগুলোই যথেষ্ট। বিস্কুট আর চিপসের প্যাকেটেই ট্রেইলগুলো ভরা। আর ঝরণাগুলো ভরা মিনিপ্যাক শ্যাম্পুর প্যাকেটে। কোন কোন ঝরণাতে নাকি বিরিয়ানির প্যাকেটও আছে যথেষ্ট পরিমানে।

কষ্ট কষ্ট কষ্ট


ভালো থাকবেন ভাই, শুভকামনা জানবেন।

৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০৩

Artcell Sabuj বলেছেন: এতো বিচক্ষণ চিন্তা খুব কম দেখা যায় এখন।

ভাই,
আমরা বাঙ্গালী,আমরা কর্মবিমুখ,আমরা অশ্লীল,আমরা নোংর,আমরা নিকৃষ্ট।

#বাঙ্গালী আর বাঙ্গালী নেই ভাই!
আগে বাঙ্গালী জান দিতো মান নয়;
এখন প্রাণ নয় পুটকি দিতে প্রস্তুত!

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: হা হা হা হা
ভাই, বিচক্ষণ চিন্তা নয়। আমার নিজস্ব টুকটাক পর্যবেক্ষণ।

ভাই,
আমরা বাঙ্গালী,আমরা কর্মবিমুখ,আমরা অশ্লীল,আমরা নোংর,আমরা নিকৃষ্ট।

হা হা, ভাই কিছুটা একমত।

#বাঙ্গালী আর বাঙ্গালী নেই ভাই!
আগে বাঙ্গালী জান দিতো মান নয়;
এখন প্রাণ নয় পুটকি দিতে প্রস্তুত!

হা হা হা হা
অস্থির ভাই অস্থির

৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:১৫

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: খুব দুঃখজনক একটি চিত্র এবং যা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। এই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য সকলের পর্যটন সংশ্লিষ্ট সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম যেমন আমাদেরকে চালিয়ে যেতে হবে তেমনি সরকারকে শতভাগ আন্তরিক হতে হবে, প্রয়োজনে কঠোর নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। তাহলে হয়ত পরিস্থিতির কিছুটা উন্নয়ন হওয়া সম্ভব।

আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি পোস্ট দেয়ার জন্য। আশা করি, আমরা সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের দেশের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ভুমিকা রাখতে পারব।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:২৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনার কথার সাথে পুরোপুরি একমত।

ভাই, আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা।

আমাদের দেশে একজন পর্যটনমন্ত্রী আছেন, একই সাথে তিনি বিমানমন্ত্রীও বটে। মনেহয় না এই বস্তাপচা বাম লোকের কাছ থেকে বাংলাদেশের কোন মানুষ কোন কিছু পাবার আশা করে।
তিনি যেমন স্বাভাবিকভাবে তার দপ্তরও তেমন হবে।

তবে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের পর্যটন বিষয়ে দায়বদ্ধতা তো কম না। আমরা যদি আমাদের নূন্যতম দায়িত্বগুলো পালনে সচেষ্ট থাকি তাহলেও বোধহয় কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে এক্ষেত্রে।

বাংলাদেশ পর্যটনে সবচাইতে ভালো হোক, মনে-প্রাণে এই প্রাথনা করি।

ভালো থাকবেন ভাই।

৫| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২২

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: ভ্রমন সংক্রান্ত এই লেখাটি একটু অন্যরকম মনে হল। মনের অনেক ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলেছেন এই লেখার মাধ্যমে।
আপনার অন্য লেখা থেকে কিছু কপি পেষ্টও করেছেন ।
আপনাকে কিন্তু আমার হিংসে হয় । কত জায়গা ঘুরলেন এই অল্প বয়সে । অথচ আমি বড় হয়ে সামান্য বান্দারবান কিম্বা কক্সবাজারও আজও যেতে পারিনি। জানিনা কবে যেতে পারব বা কখনও যেতেই হয়তো পারবনা।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইল। পৃথিবীর আরও অনেক সুন্দর সুন্দর স্থানে ঘুরে বেড়ান।
পর্যটন নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। সরকারের উচিত এ সকল বিষয়ে জনসচেতনতা গ্রহন করা। আর কঠোর কিছু আঈনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদকে সুরক্ষিত করা।
সুন্দর একটি পোষ্টের জন্য আবারও ধন্যবাদ ভাই।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৪৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, সবসময়ই চেষ্টা করছি একটি ভ্রমণ কাহিনী যেন অন্যটার চেয়ে ব্যাতিক্রম হয়। পড়তে গিয়ে কেউ একঘেয়েমিতে না ভোগে। আর এটা তো ঠিক ভ্রমণ কাহিনী না। তবে ভ্রমণ সংক্রান্ত টুকটাক ক্ষোভ।

আমারই অন্য লেখা থেকে কিছুটা কপি করেছি কারণ সেটা এই পোস্টের সাথে সামঞ্জস্য ছিলো। অতোখানি আবার নূতন ভাষায় লেখার ধৈর্য ছিলো না।

ভাই, আমাকে হিংসা করার কিচ্ছু নেই। আমি যতো জায়গায় ঘুরেছি, তার কোটিগুনেরও বেশি জায়গাতে ঘুরিনি।
আশাকরি আপনি অসাধারণ দর্শনীয় জায়গাগুলোতে সস্ত্রীক ঘুরতে পারবেন। ;)

পর্যটন নিয়ে আমাদের সচেতন হতে হবে। সরকারের উচিত এ সকল বিষয়ে জনসচেতনতা গ্রহন করা। আর কঠোর কিছু আইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদকে সুরক্ষিত করা।

আপনার কথার সাথে পুরোপুরি একমত।


ভালো থাকবেন ভাই। শুভকামনা জানবেন সবসময়।

৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২৩

পদ্মপুকুর বলেছেন: আপনার লেখার হাত ভালো, কোন সন্দেহ নেই। ঘুরতে ভালোবাসেন বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু সবচে যেটা ভালো, সেটা হলো অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এবং সংবেদনশীলতা।

আমাদের বাংলাদেশীদের মধ্যে এই জিনিশটাই সবচে বিরল। আমরা পাতায়া গিয়ে খালি বিকিনি আর জিরো ফিগার খুঁজি, ওদের ব্যবস্থাপনাটা দেখি না, কলকাতায় গিয়ে তাঁদের কৃপণতা নিয়ে উপহাস করি কিন্তু ওদের দেশপ্রেম আর উন্নতিটা দেখি না। পাহাড়ে গিয়ে বনমোরগের গোস্ত খেতে চাই, কিন্তু আদিবাসিদের সরলতাটুকু উপভোগ করি না। শুধু ঠকাই।

সেন্টমার্টিন্স এ গেলে মনটাই খারাপ হয়ে যায়, ৯৮ এ বোধ হয় প্রথমবার গিয়েছিলাম। কি সে সুন্দর, স্নিগ্ধ, মায়াবী একটা দ্বীপ ছিল! অথচ এরপর যতবার গিয়েছি, পূর্বের চেয়ে কেবলই খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি।

কিছুদিন আগে গেল নভেম্বরে সুন্দরবন গেলাম। আহা! এত সুন্দর একটা বন, কিন্তু কোন পরিকল্পনা নেই এর পরিবেশ রক্ষার। উল্টো ঢাকায় বসে রাক্ষসগুলো এই বনটা ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। একই কথা বান্দরবান, রাঙামাটি বা অন্য যে কোন যায়গার জন্য প্রযোজ্য।
আমরা এমন খাচ্চর জাতি যে কিভাবে হলাম, উপরওয়ালায় মালুম।

আর আপনার 'বান্দরবান পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর যায়গা' এই কথার সাথে আমি শতভাগ একমত, এর সাথে রাঙামাটিকেও যোগ করে নিন।

আরেকটা ব্যাপার, বলা হয়, বাঙালীরা খুব অতিথিপরায়ন জাতি। কি হিসেবে বলা হয় জানি না। অন্যান্য দেশে ভ্রমণে গেলে বোঝা যায়, বাঙালিরা নতুন মানুষের সাথে কি পরিমাণ টাউট আর বাটপারি করতে পারে!!! (সরি প্যালস)

১২ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৫১

সারাফাত রাজ বলেছেন: মন্তব্যের জবাব মানে শুধু এই না যে ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন, শুভকামনা জানবেন নিরন্তর। হ্যা এগুলো জবাবের গুরুত্ত্বপূর্ণ অংশ। তবে কিছু কিছু মন্তব্যের এতোটা গভীরতা থাকে যে তার জবাবে আরো অনেক কিছু বলার থাকে। সেই প্রতিমন্তব্যের ব্জন্য কিছু বাড়তি সময়ের দরকার। আমি সেই সময়টা নিতে চেয়েছি। আশাকরি দেরী করে আপনার কাছে ফিরে আসার ব্যাপারটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিকোন থেকে দেখবেন।

আপনার লেখার হাত ভালো, কোন সন্দেহ নেই। ঘুরতে ভালোবাসেন বোঝাই যাচ্ছে। কিন্তু সবচে যেটা ভালো, সেটা হলো অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা এবং সংবেদনশীলতা।
প্রথম কথা হচ্ছে, আমার মনে হয়না যে আমার লেখার হাত ভালো। আমার নিজেরই আমার লেখা পছন্দ হয় না। তবে অন্যের মতামতকে আমি সবসময়ই সম্মানের চোখে দেখার চেষ্টা করি। আমার কোন লেখা যদি কখনো আপনার ভালো লেগে থাকে ভাববো সেটা আমার সৌভাগ্য।
দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, আমি ঘুরতে সত্যিই খুব ভালোবাসি। যদিও বেশি ঘোরাঘুরির সৌভাগ্য হয়ে ওঠে না। তবে যতোটুকুই ঘুরি তার জন্য আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া।
তৃতীয় কথা হচ্ছে, পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা বা সংবেদনশীলতা কিনা জানি না তবে আমি যতোটুকুই ঘুরি খুবই মনোযোগের সাথে ঘোরার চেষ্টা করি। কারণ আমার সবসময়ই মনেহয় এরপর হয়তো আমার পক্ষে আর ভ্রমণ করা হয়ে উঠবে না, এজন্য যতোটুকু সম্ভব পুরোটুকুই গ্রহণ করার চেষ্টা করি।

আমাদের বাংলাদেশীদের মধ্যে এই জিনিশটাই সবচে বিরল। আমরা পাতায়া গিয়ে খালি বিকিনি আর জিরো ফিগার খুঁজি, ওদের ব্যবস্থাপনাটা দেখি না, কলকাতায় গিয়ে তাঁদের কৃপণতা নিয়ে উপহাস করি কিন্তু ওদের দেশপ্রেম আর উন্নতিটা দেখি না। পাহাড়ে গিয়ে বনমোরগের গোস্ত খেতে চাই, কিন্তু আদিবাসিদের সরলতাটুকু উপভোগ করি না। শুধু ঠকাই।
থাইল্যান্ডে কখনো যাওয়া হয়নি। শুনেছি ওরা নাকি অনেক খোলামেলা। এটা দেখার জন্যই হয়তো অনেক বাংলাদেশী সেখানে যায়। (সবই তো আসলে দেখার বিষয়বস্তু :#) )। কলকাতার ব্যাপারে বলতে পারি আতিথিয়েতার ব্যাপারে ওরা হয়তো একটু অন্যরকম। তবে আধখানা ডিম এই ব্যাপারটা ফালতু। ওখানে কোন হোটেলে ডিমের তরকারি মানে একজনের জন্য দুটো ডিম। দেখুন আমরা সবসময় হাসাহাসি করি ওরা চোঙ্গা প্যান্ট আর ছোট টাইট গেঞ্জি পরে বলে। অথচ ওদের মেট্রোতে করে যাতায়াত, ওদের বাস আর ট্যাক্সির সহজলভ্যতা, ওদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার প্রবণতা, ওদের পাবলিক টয়লেট আর পথচারীর খাবার পানির ব্যাবস্থা এগুলোর সাথে নিজেদের কম্পেয়ার করার প্রবণতা আমাদের নেই। কারণ আমরা জানি যে তাহলে আমরা অনেক পিছিয়ে থাকবো। চোখ বন্ধ করে আমরা আত্মতৃপ্তিতে ভোগার চেষ্টা করি।
পাহাড়ে গিয়ে শুধু বন মোরগ না, আরো অনেককিছু খাবার জন্য আমরা চাগিয়ে উঠি। আদিবাসীদের সরলতাটুকু আমরা ওদের দুর্বলতা মনে করি। মনে করি যে এরা সস্তা। শুধু ঠকায়। কিন্তু আল্লাহর কাছে এর জন্য একদিন অবশ্যই জবাবদিহী করতে হবে।

সেন্টমার্টিন্স এ গেলে মনটাই খারাপ হয়ে যায়, ৯৮ এ বোধ হয় প্রথমবার গিয়েছিলাম। কি সে সুন্দর, স্নিগ্ধ, মায়াবী একটা দ্বীপ ছিল! অথচ এরপর যতবার গিয়েছি, পূর্বের চেয়ে কেবলই খারাপ হয়েছে পরিস্থিতি।
সবসময় আফসোস হয়! সবাই পূর্বেকার সেন্ট মারটিনের এত্তো প্রশংসা করে। মনেহয় যে হয়তো মিথ্যা কথা বলছে অথবা রূপকথা শুনছি। আহা! সেই রূপ যদি দেখতে পারতাম!

কিছুদিন আগে গেল নভেম্বরে সুন্দরবন গেলাম। আহা! এত সুন্দর একটা বন, কিন্তু কোন পরিকল্পনা নেই এর পরিবেশ রক্ষার। উল্টো ঢাকায় বসে রাক্ষসগুলো এই বনটা ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। একই কথা বান্দরবান, রাঙামাটি বা অন্য যে কোন যায়গার জন্য প্রযোজ্য।
আমরা এমন খাচ্চর জাতি যে কিভাবে হলাম, উপরওয়ালায় মালুম।

একসময় আমাদের সন্তানেরা হততো তাদের পাঠ্যপুস্তকে পড়বে যে বাংলাদেশে সুন্দরবন নামে কিছু একটা ছিলো।
একটা ছোট অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি। ভারতের উত্তরাখন্ডে হিমালয়ের একটা অংশে গেছি। দুদিন ধরে সেখানে হেঁটে যেতেহয়। এছাড়া আর কোন উপায় নেই। সবচেয়ে কাছের শহরটা বছরের প্রায় ৬ মাস খোলা থাকে। তারপর শহরটি সবকিছু গুটিয়ে আরো কয়েকশ কিলোমিটার দূরে সরে যায়। তাহলে বুঝতেই পারছেন যে কিরকম দুর্গম। তো সেখানেও পুলিশ বাহিনী নিয়োজিত আছে। কোন পর্যটক এক টুকরো ময়লা ফেলেও হিমালয় দূষিত করছে কিনা তা তদারকির জন্য। নিজেকে খুবই অপমানিত লেগেছিলো সুন্দরবনের কথা ভেবে। আমরা দুনিয়ার সবচাইতে আত্মঘাতি দেশের মানুষ।

আর আপনার 'বান্দরবান পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর যায়গা' এই কথার সাথে আমি শতভাগ একমত, এর সাথে রাঙামাটিকেও যোগ করে নিন।
হা হা
আমার মনেহয় লেখা উচিত, বাংলাদেশের পার্বত্যঅঞ্চল পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর জায়গা।


আরেকটা ব্যাপার, বলা হয়, বাঙালীরা খুব অতিথিপরায়ন জাতি। কি হিসেবে বলা হয় জানি না। অন্যান্য দেশে ভ্রমণে গেলে বোঝা যায়, বাঙালিরা নতুন মানুষের সাথে কি পরিমাণ টাউট আর বাটপারি করতে পারে!!!
বাংলাদেশ অবশ্যই অতিথিপরায়ন জাতি। ৭১ সালে ভয়ঙ্কর যুদ্ধের সময় কোটি কোটি মানুষ নিজের বাসস্থান ছেড়ে চলে গিয়েছিলো। তারা তো বিভিন্ন জায়গাতেই আশ্রয় নিয়েছিলো। সেই পরিচয়ের অপরিচয়ের আশ্রয়স্থলগুলোই তো অতিথিশালা। এখনো দাদী/নানীর মুখে সেই আতিথিয়েতার গল্পগুলো শুনে মুগ্ধ হই, শিহরিত হই।

ভাই স্বপ্ন দেখতে তো দোষ নেই।

যা বলতে চেয়েছিলাম তার কিছুই বলতে পারিনি। সবকিছু কেমন যেন ওলোট-পালোট হয়ে গেল।
ভাই, ভালোবাসা জানবেন। শুভকামনা নিরন্তর।

৭| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৩০

নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: ভালো লাগলো জেনে। ছবিগুলো খুব সুন্দর।

শুভকামনা আপনার জন্য

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৫১

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই। ছবি ভালো লাগার জন্য আরো বেশি ধন্যবাদ।

ভালো থাকবেন ভাই। আপনার জন্যও শুভকামনা।

:)

৮| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:৫৯

রাতু০১ বলেছেন: অসাধারণ পর্যবেক্ষণ ।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: থ্যাঙ্কু ভাই। B-)
শুভকামনা জানবেন।

৯| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৭

রঞ্জন সরকার জন বলেছেন: দারুণ লেখা। আমাদের বাংলাদেশের পর্যটন খাতের প্রকৃত রুপ ফুটে উঠেছে লেখাটায়। ভ্রমণের ক্ষেত্রে জাতি হিসেবে আমরা কেমন তা অসাধারণভাবে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ। ভারতীয়রা খোলা জায়গায় পায়খানা করে আর ভারত ধর্ষণের দেশ এটা বলে আত্মতৃপ্তি পাওয়া জাতি যে নিজেরা কেমন সেটা খুব ভালভাবে উঠে এসেছে লেখায়। এত গরিব একটা দেশের মানুষ আমরা, অথচ এরাই কলকাতা গেলে বেশভুষায়, ভাবে-সাবে আর পয়সা ছেটানোতে আমেরিকান-ইউরোপীয়ানদের পেছনে ফেলে দেয়। আমাদের দেশের ৮০% মানুষের চরিত্রই আপনার বর্ণনার সাথে মিলে যায়।

আর আপনার অসামান্য পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা সত্যিই আপনাকে একজন ট্রাভেলার হিসাবে অনন্য করে তুলেছে।

১১ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৪৪

সারাফাত রাজ বলেছেন: লেখা ভালো লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাই। :)

আমাদের বাংলাদেশের পর্যটন খাতের প্রকৃত রুপ ফুটে উঠেছে লেখাটায়
এটা তো জানি না, তবে আমি আমার ক্ষোভ উগড়ে দেবার চেষ্টা করেছি।

ভ্রমণের ক্ষেত্রে জাতি হিসেবে আমরা কেমন তা অসাধারণভাবে তুলে ধরার জন্য ধন্যবাদ।
ভাই, আমি যা লিখেছি এটা আমার নিজস্ব পর্যবেক্ষণ। হয়তো সবার মতবাদের সাথে এটা মিলবে না।

ভারতীয়রা খোলা জায়গায় পায়খানা করে আর ভারত ধর্ষণের দেশ এটা বলে আত্মতৃপ্তি পাওয়া জাতি যে নিজেরা কেমন সেটা খুব ভালভাবে উঠে এসেছে লেখায়।
ভারতীয়রা যেমন খোলা জায়গাতে পায়খানা করে তেমনি তাদের পাবলিক টয়লেটের অবস্থাও ভালো। তাদের শহরগুলোতে প্রয়োজনের সময় টয়লেট পাওয়া যায় যা আমাদের এখানে বেশ দুর্লভ। ধর্ষণের ব্যাপারটা নিয়ে তো ঠিক বলতে পারবো না। তবে ওখানের মেয়েরা খুবই খোলামেলা পোষাক পরে। এতোটাই খোলামেলা যা আমাদের দেশে আমরা কল্পনাই করতে পারি না। অথচ ওখানে কিন্তু মেয়েদের দিকে কেউ হা করে তাকিয়ে থাকে না। আমাদের দেশের মেয়েরা অনেক ভদ্রস্থ পোষাক পড়েও অনেক পশুদের চোখের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ নয়।

এত গরিব একটা দেশের মানুষ আমরা, অথচ এরাই কলকাতা গেলে বেশভুষায়, ভাবে-সাবে আর পয়সা ছেটানোতে আমেরিকান-ইউরোপীয়ানদের পেছনে ফেলে দেয়
ভাই, আমরা কি সত্যিই গরীব! পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যায়বহুল রাস্তা, ফ্লাইওভার আমাদের দেশে। আমরা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে চাল কিনে খাই। আমরা কেন গরীব হবো!

আমাদের দেশের ৮০% মানুষের চরিত্রই আপনার বর্ণনার সাথে মিলে যায়।
অথবা হয়তো নয়। ;)

আপনার মন্তব্যের শেষাংশ আমার জন্য বিব্রতকর। :D

ভালো থাকবেন ভাই। শুভকামনা জানবেন সবসময়।

১০| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:২৭

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: আরও একবার হাজির হয়ে গেলাম সারাফাত ভাই!
সুন্দর প্রতিমন্তব্যর জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমি তো আর জানতাম না যে আপনি রোযা আছেন। জেনে ভাল লাগল আপনি রোযা আছেন। আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা সহিত রোযা পালনের তৌফিক দান করুন সে কামনায় করছি।
আপনি বলেছেন,ভাই, আমাকে হিংসা করার কিচ্ছু নেই। আমি যতো জায়গায় ঘুরেছি, তার কোটিগুনেরও বেশি জায়গাতে ঘুরিনি।
আশাকরি আপনি অসাধারণ দর্শনীয় জায়গাগুলোতে সস্ত্রীক ঘুরতে পারবেন। ;),
আমি আপনাকে সেই অর্থে হিংসে করিনি। আপনার ঘোরাঘুরির গল্প পড়ে মনের মধ্যে মনে হয় ইস রাজ ভাইয়ের মত যদি ঘুরতে পারতাম।সবার ভাগ্যে সব কিছু হয়না। আমি বন্ধুদের সাথেই ঘুরতে চেয়েছি তবে আপনি যে দোয়া করেছেন তা আল্লাহ কবুল করুন। আমিন।
এবারও হয়তো না বুঝেই আমি আপনাকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছি। আপনি অন্য লেখা থেকে কিছু কপি পেষ্ট করেছেন এই কথাটি বলে?
তবে একটু খেয়াল করুন বা ভাবুন তাহলে আপনি খুশিই হবে। এই পাঠকটি আপনার লেখা কতটা মনযোগ দিয়ে পড়ে যে সে বুঝে ফেলল আপনি আগের লেখা থেকে কিছু বর্তমান লেখায় শেয়ার করেছেন। হা হা হা।
যায় হোক কোন সময় ভুল করে আপনাকে কষ্ট দিলে নিজ গুনে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
সত্যি বলতে কি আমি কোথায় কখন কি বলতে হয় এটা এখনও কমই বুঝি।তাই কথা কম বলাই ভাল মনে করি।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:২০

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনি ভিআইপি। আপনি যখন ইচ্ছা তখনই হাজির হবেন।

আমিন।

আপনি আমাকে কোন কষ্ট দেননি। আমি তো জানি আপনি আমার লেখা গভীর আগ্রহের সাথে পড়েন। এই ব্যাপারটা একই সাথে আমার জন্য সৌভাগ্যের এবং গৌরবের।

আপনি খামাখা নিজেকে দোষী ভাবছেন।

ভালো কথা, আপনার কাছে খাওয়া পাওনা আছে কিন্তু। কাঁচ কলা আর শিং মাছ দিয়ে ফাকি দিলে হবে না। ;)

ভালো থাকবেন। ফেসবুকে কথা হবে আপনার সাথে।

১১| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৭

অরন্যে রোদন - ২ বলেছেন: ভাই পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানী নিয়ে কিছু বললেন না যে, এটি একটি গুরুত্বপুর্ন ফুড টুরিজমের অংশ!

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫২

সারাফাত রাজ বলেছেন: পুরানো ঢাকার খাবারের তুলনা দুনিয়ার আর অন্য কোন কিছুর সাথেই হতে পারে না। এখানের খাবারের তুলনা হতে পারে শুধুমাত্র পুরানো ঢাকার একই এলাকার অন্য খাবারের দোকানের সাথে।

১২| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০২

অরন্যে রোদন - ২ বলেছেন: ভাই পুরান ঢাকার কাচ্চি বিরিয়ানী নিয়ে কিছু বললেন না যে, এটি একটি গুরুত্বপুর্ন ফুড টুরিজমের অংশ!
স্বাদ এর কথাটা কো আর নতুন করে বলার কিছু নাই। বরাবরই অসাধারন। শুধু মাংসের দাম নিয়ন্ত্রন ও দোকানগুলোর পরিবেশ আরো ভাল করতে পারলে এই উপমহাদেশের বহু মানুষ এখানকার বিরিয়ানি খেতে আসবে বলে আমার ধারনা। সিরিয়াসলি। আমার কথাটা হেসে উরিয়ে দিবেন না।

০৫ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:০৮

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, শুধুমাত্র পুরানো ঢাকার অস্থির অস্থির খাবার দিয়েই নূতন ব্র্যান্ডিং করা যায়। এটি ঢাকার ট্যুরিজমের সবচেয়ে প্রধান অংশ হয়ে উঠতে পারে।

দিল্লী জামে মসজিদের পাশে বিখ্যাত খাবারের দোকানগুলো। এখানকার দোকানদাররা নাকি মোঘল সম্রাটদের বংশধর। তারাই রান্না করে। এইখানের কয়েকটি বিখ্যাত হোটেলে খাবার খাওয়ার জন্য গাদা গাদা সাদা চামড়ার ট্যুরিস্টরা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। কৌতুহলবশত আমিও একটা দোকানে খেয়েছিলাম।
আমি প্রচন্ডপরিমানে হতাশ। এরা যদি ঢাকার কোন সালাদিয়া টাইপের হোটেলে তেহেরিও খায় তাহলে আর এইসব বিখ্যাত দোকানের ছায়াও মাড়াবেনা।

পুরানো ঢাকার ফুড টুরিজম নিয়ে যদি কোন লেখা থাকে, আমি এরকম লেখা পড়তে খুবই আগ্রহী।

আমি প্রচন্ড পরিমানে আশাকরি কাল্পনিক ভালোবাসা যদি এরকম কোন লেখা লিখতেন। খাবার-দাবার নিয়ে তার চাইতে ভালো লেখা আর কারো পক্ষে সম্ভব না। ফেসবুকে বিভিন্ন খাবারের বর্ণনা দিয়ে তিনি যে পরিমাণ মানসিক অত্যাচার করেন!!


কাল্পনিক ভালোবাসা ভাই, আপনি পুরানো ঢাকার ফুড টুরিজম নিয়ে লেখা লিখে আমাদের ধন্য করবেন কি?

অরন্যে রোদন ভাই, আপনাকে স্পেশাল থ্যাংকস। ভালো থাকবেন সবসময়।


১৩| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৭

গোকাহামা বলেছেন: আমি কেবলই একজন পাঠক। চুপি চুপি আপনার লেখাগুলো পড়ে যেতাম যদিও এখনও সব লেখাগুলো পড়ে শেষ করতে পারিনি তবে যতটুকু পড়েছি আমি মুগ্ধ, আমার লেখার হাত ভালো না তেমন, তাই কখনো এখানে আইডি খোলার প্রয়োজন হয়নি কিন্তু আজ কমেন্ট করার লোভ সামলাতে না পেরে একাউন্ট খুলেই ফেললাম।

অদ্ভুত সুন্দর হয় আপনার লেখাগুলো খুবই তথ্য সমৃদ্ধ এবং প্রচন্ড আবেগ থাকে যা আমাকে খুব টানে। ভ্রমনও আমার খুব ভালো লাগে তবে আমি একদমই আলসে আর আরামপ্রিয় ট্রাভেলার তবে ভ্রমন সংক্রান্ত লেখা আমি খুব আগ্রহ নিয়েই পড়ি। আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ এতো সুন্দর সুন্দর লেখার জন্য।

আমরা বাঙালী, আমরা ভালো সময়ে আমাদের ভালোত্বকে উন্নত করতে পারিনা, আমরা খারাপ সময়ে জ্বলে উঠতে পারি। আমাদের সর্বত্তোম সর্বোচ্চ অহংকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এ বিষয়েই আমরা আপোষহীন হতে পারিনি। আর আমার কেন যেন মনে হয় আমরা জাতি হিসেবে এখন যে সময়টা পরিক্রম করছি এইটা সবচেয়ে বাজে সময়। এখন সব সর্বনাশেই এই দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তিরা অংশগ্রহন করছে, অনান্য জাতি যেখানে শিক্ষিত হয়ে উন্নত হয় সেখানে আমরা ধ্বংসবাজে পরিণত হচ্ছি। আর এই বিষয়টা আমাদের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রের মতো দেশীয় পর্যটনেও পরিলক্ষিত হচ্ছে। তবে আমি আশাবাদী মানুষ, এই অবস্থা থেকেও আমরা একদিন নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসতে পারবো হয়তো ততদিনে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে তবুও আপনাদের মতো মানুষরা যতদিন থাকবে এবং এইভাবে ভাববে নিশ্চয়ই এই ভাবনার প্রভাব আরো মানুষকে প্রভাবিত করবে। তাই আপনার কাছে বিনিত অনুরোধ, এই বিষয়গুলো নিয়ে আরো লিখুন। পরিশেষে আবারো ধন্যবাদ। ভালো থাকুন এবং আরো লেখা আমাদের উপহার দিন।

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:০২

সারাফাত রাজ বলেছেন: কে বলেছে আপনার লেখার হাত ভালো না!! কি অসাধারণ মন্তব্য করেছেন আপনি। অনেকখানি কাব্যতা ছড়িয়ে আছে এখানে।

কেউ একজন আমার লেখা চুপিচুপি পড়ছে এই ব্যাপারটাই তো আমাকে শিহরিত করে তুলেছে।
আশাকরি আমার সবগুলো লেখা পড়ার মতো ধৈর্য আপনার থাকবে।
আপনি শুধুমাত্র আমার লেখাটাতে মন্তব্য করার জন্য একাউন্ট খুলেছেন এতা আমার জন্য প্রচন্ড গৌরবের বিষয়।
তবে আশাকরি আপনার লেখা পাঠ করার সৌভাগ্যও আমার হবে।

আমার লেখাগুলোতে তথ্য কতোটুকু থাকে জানি না, তবে আমি আবেগ দিয়ে লেখার চেষ্টা করি। ভ্রমোন আমার কাছে প্রচন্ড আবেগের একটা বিষয়।
যাদের কাছে ভ্রমণ ভালো লাগে তারা বোধহয় সাধারণত একটু আলসেই হয়। (আমি নিজেই অলসের একটি উৎকৃষ্ট উদহারণ)। তবে তারপরও যে আপনি আমার লেখাগুলো পড়ছেন এজন্য আমি কৃতজ্ঞ।

আপনার মন্তব্যের শেষ অনুচ্ছেদে অনেকখানি ক্ষোভ প্রকাশ হয়েছে।
যা বলেছেন তার একবিন্দুও মিথ্যা নয়।
তবে আমরা তো স্বপ্ন দেখতেই পারি।

ভাই, আমি একজন অতিসাধারণ মানুষ। আমার লেখার কোন প্রভাব কোথাও পড়বে না। তবে আগ্রহ সহকারে আমার লেখা কেউ পড়ছে এটুকুই আমার জন্য স্বান্তনা এবং তৃপ্তির।

ভাই ভালো থাকবেন, ভালো থাকবেন, ভালো থাকবেন। শুভকামনা জানবেন নিরন্তর।

১৪| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩১

শোভন শামস বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ এমন একটি পোস্ট দেয়ার জন্য। আশা করি, আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের দেশের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ভুমিকা রাখতে পারব।

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:০৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: লেখাটি পাঠ করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ শোভন শামস।

আশা করি, আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের দেশের পর্যটনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ভুমিকা রাখতে পারব।
আপনার কথার সাথে পুরোপুরি একমত ভাই।

ভালো থাকবেন সবসময়। শুভকামনা জানবেন।
:)

১৫| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৩৩

কানিজ রিনা বলেছেন: ভ্রমনের গল্প সুন্দর করে লেখাটা বেশ ভাল
লাগল।
তবে আপনার মামাত বোন আপনাকে মাড়িয়ে
তলপি নিয়ে নামায় বেশ হাসি পেল। আপনার
বোন হয়ত ভেবেছিল আপনার থেকে ব্যাগগুল
দামী।
ছবিগুল সহ ভ্রমন কাহীনি ভিষন ভাগা রাখলাম। ধন্যবাদ।

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:২৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। :)

আমার মামাতো বোন পরে বলেছে দুর্ঘটনার সময় ওর নাকি শর্টসার্কিট হয়ে গিয়েছিলো। পরে আমরা ওর এই কর্মকান্ড নিয়ে বিস্তর হাসাহাসি করেছি। ভাগ্যিস ওর শর্টসার্কিট হয়েছিলো, নাহলে তো আমাদের মালপত্রও আমরা হারাতাম।

আমার মামাতো বোন বছরে ঈদের দুদিন ছাড়া অন্যসময় আমাকে একেবারেই গুরুত্ত্ব দেয় না। /:)

তবে আরো মজার ঘটনা ঘটেছিলো আরো কয়েকমাস পর। আমরা দুজনেই ময়মনসিংহ যাচ্ছিলাম এনা বাসে চেপে। বাংলাদেশে এনা তো বিশেষ মর্যাদার বাস। তো বাস চলা শুরু করার কিছুক্ষণ পর থেকেই আমার মামাতো বোন ভয়ে চিতকার করা শুরু করেছে। কিছুক্ষণ থামে আর কিছুক্ষণ চিতকার করে। তার এই চিতকার চলেছিলো একেবারে ময়মনসিংহ পর্যন্ত। বাসের সবাই তার চিতকারে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছিলো। কিছুক্ষণ পরপর সে চিতকারের সাথে ড্রাইভারকে ধমকে ওঠে, ওই ড্রাইভার আস্তে চালা।

আমার মামাতো বোন এখনো বাসে উঠতে ভয় পায়।


ভালো থাকবেন আপু। শুভকামনা জানবেন।

১৬| ০৫ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: সারাফাত রাজ ,



অনবদ্য ।
ঠিক হয়নি এটা বলা ! মনে হয় আরও বেশি কিছু বলা উচিৎ ছিলো ।

আপনার লেখা বরাবরই চকচকে , ঝকঝকে, মসৃন । এবারে যে সব কথা বললেন তাকে অস্বীকার করার মতো কলজের জোর নেই । নিঠুর বাস্তবই তুলে এনেছেন বর্ণনায় আর উদাহরণে ।

....খুব অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ এখনও পর্যটক বান্ধব রাষ্ট্র হতে পারে নি। আমাদের দেশের কর্তাব্যক্তিরা কখনই পর্যটন নিয়ে আন্তরিকভাবে চিন্তা করে নি, পর্যটকদের সুবিধার কথা চিন্তা করে নি। বাংলাদেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে নানা রকম অনিয়ম চলছে, এই দেশে হাজারো স্পট আছে, কিন্তু সেইগুলোতে কোন প্রকার উন্নয়ন করা হয় নি।
কথাটা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে, পর্যটক হিসাবে অধিকাংশ বাংলাদেশীরা এখনও নূন্যতম মান অর্জন করতে পারে নি। সৌন্দর্যবোধের স্বাভাবিক মানবিক আচরন আমাদের মধ্যে আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় নেই বললেই চলে। পাশাপাশি, একটা অপরিচিত অঞ্চলের মানুষকে সম্মান, তাদের প্রচলিত রীতিনীতি, ধর্মীয় মূল্যবোধকে সম্মান করার যে স্বাভাবিক বৈশিষ্ট তা থেকেও আমরা যথেষ্ট দুরে আছি। অথচ এই স্বাভাবিক বিষয়গুলো বুঝার জন্য অতিরিক্ত জ্ঞান কিংবা বুদ্ধিজীবি হবার প্রয়োজন নেই, নূন্যতম কমনসেন্স থাকলেই যথেষ্ট।


অস্বস্তির তোলপাড় অনুভব করেছি আমিও আমাদের এই দীনতায় ।

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪০

সারাফাত রাজ বলেছেন: আহমেদ জী এস ভাই, আপনার প্রতিমন্তব্যে শুধু বলতে পারি

কৃতজ্ঞতা, কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা। :)

ভালো থাকবেন ভাই। শুভকামনা জানবেন নিরন্তর।

১৭| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:২৭

জুন বলেছেন: সারাফাত রাজ আমি আপনার মত আমিও একই কথা বলি । প্রথম যেবার সেন্ট মার্টিন গিয়েছিলাম তার সেই রূপ আর দ্বিতীয়বার দেখিনি । কি যে কষ্ট লেগেছে সেই শুন্য নিঝুম বীচে দোকান পাট রেস্তোরা, হই হল্লা সাথে পলিথিন চিপ্সের প্যাকেট আর খালি প্লাস্টিকের বোতল যত্র তত্র ছুড়ে মারা দেখে। ছেরা দ্বীপে এক খাবারের দোকানদার আমাদের ডেকে বসালো সেখানে কি অপুর্ব সুন্দর চিংড়ি মাছ সাজিয়ে রেখেছে ভাজার জন্য । আমার সহ পর্যটক বিশাল এক লেকচার দিল সেই পরিবেশ দুষন নিয়ে যা আদৌ তাদের কর্ন কুহরে প্রবেশ করলো কি না কে জানে? কারন সেই মুহুর্তেই এক বিশাল দেহি পর্যটক এসে ভাজা চিংড়ি আর কাকড়ার অর্ডার দিল আর খালি কোকের বোতলটা ছুড়ে মারলো বালুকা বেলায় । এই আমাদের কমন সেন্স, এই জ্ঞ্যান নিয়ে আমরা বের হই ভ্রমনে।
অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত কথায় অনেক ভালোলাগা রইলো
+

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪২

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু, এভাবে চলতে থাকলে দেখা যাবে যে একসময় পৃথিবীর সবচাইতে বড় ডাস্টবিন হবে সেন্ট মার্টিন।

এখনো পর্যন্ত কারো কাছে শুনিনি যে প্রথমবার সেন্ট মার্টিন গিয়েছিলো তারপর দ্বিতীয় বার গিয়ে আরো ভালো লেগেছে। সবসময় সবাই বলে যে আগেরবার ভালো ছিলো এখন নিকৃষ্ট হয়েছে। ব্যাপারটা সত্যিই হতাশাজ্বনক। একটিই মাত্র প্রবাল দ্বীপ আমাদের, আর সেটাই আমরা উৎসব সহকারে ধ্বংস করে চলেছি।

আপু, আপনি যেভাবে ছেরা দ্বীপের চিংড়ি মাছের বর্ণনা দিয়েছেন তাতে জীভে পানি চলে এসেছে। :#)

স্থানীয় মানুষ হিসাবে আমরা একেবারেই পর্যটন-পরিবেশ সচেতন নই।

বিশালদেহী সেই পর্যটকের জন্য তীব্র ভতসনা।

ভালো থাকবেন আপু। মন্তব্যের জন্য অফুরন্ত ধন্যবাদ। শুভকামনা জানবেন।

১৮| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৩

তাওহিদ হিমু বলেছেন: আমরা বাঙালিরা এখনো যথেষ্ট সভ্য হতে পারি নি। আপনাদের ঐ রোড এক্সিডেন্টে কোনো পুলিশ গেলে, তারা নানান অজুহাতে টাকা খেতে চায়ত। সাহায্য পরের কথা। আর ভারতের রেলস্টেশনের অফিসার আপনার সাথে যে সৌজন্যতা দেখিয়েছে, তা বাংলাদেশে ভাবতেই পারবেন না। বাংলাদেশের সরকারি পিয়নের সাথেও কথা বলতে গেলে পাত্তা পায় না মানুষ। অফিসার ত দূরের কথা। বাংলাদেশের রেলস্টেশনে টিকিট কাটতে গেলেই তারা বিরক্তি নিয়ে কথা বলে, যেন মানুষেরা তাদের টাকায় খেয়ে-পরে তাদেরকেই বিরক্ত করছে। তারা মানুষের বেতনভোগী সেবক, এ-কথা কল্পনাও করা যায় না।

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমরা বাঙালিরা এখনো যথেষ্ট সভ্য হতে পারি নি অন্তত পরিবেশের ব্যাপারে।

বাংলাদেশের সরকারি পিয়নের সাথেও কথা বলতে গেলে পাত্তা পায় না মানুষ
ভার্সিটির বিভিন্ন কাজে মাঝে মাঝে রেজিস্টার ভবনে যেতে হয়। তো আমরা কয়েকজন ছাত্র দল বেধে যাই, নাহলে তাদের কাছ থেকে কোন কাজ সহজে আদায় করা সম্ভব হয় না। নিজের ভার্সিটিতেই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে অন্যান্য সরকারী অফিসে কি হবে তা আল্লাহই জানে।

বাংলাদেশের রেলস্টেশনে টিকিট কাটতে গেলেই তারা বিরক্তি নিয়ে কথা বলে, যেন মানুষেরা তাদের টাকায় খেয়ে-পরে তাদেরকেই বিরক্ত করছে। তারা মানুষের বেতনভোগী সেবক, এ-কথা কল্পনাও করা যায় না।
ভাই, ট্রেনের টিকিট কাটতে গেলে বেশিরভাগ সময়ই ঝাড়ি খেতে হয়, নাহলে দীর্ঘক্ষণ দাড় করিয়ে রাখে। আবার বেশিরভাগ যাত্রীও টিকিট কাটতে গেলে অনেকটা অসভ্য হয়ে যায়। টিকিট কাটার লাইন ভাঙ্গতে সবাই খুবই ততপর।

১৯| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:১৪

সর্ট সার্কিট বলেছেন: আপনার লেখাটা পড়ে এবং কমেন্ট গুলো না পড়ে; অনেক দাঙ্গা-হাঙ্গামা :-< করে সামু ব্লগে নিজ আইডিতে ঢুকলাম কমেন্ট করার জন্য (আসলে অনেকদিন আইডিতে ঢুকা হয় না, মাঝে মাঝে আসলে জাস্ট গেস্ট হিসেবে ঘুরাঘুরি করি)। কিন্তু ঢুকেই দেখলাম অন্যান্যদের কমেন্টগুলোতেই আমার সব বলা হয়ে গেছে...যাই হোক লেখাটা ভাল লাগলো।

আসলে আমাদেরই সচেতন হতে হবে, কেননা বিপদটা আমাদেরই, সরকার বা সরকারী কাজ করা রাজন্যবর্গদের কাছ থেকে কিছু আশা করাই বোকামী। কেন নিজেদের সচেতন হতে হবে দু'য়েকটা উদাহরণ দিই; (কিছুটা অপ্রাসংগিক) গাছ কাটার ফলাফল আমরা নিজেরাই টের পাচ্ছি মাত্রাতিরিক্ত গরমে!!! পাহাড় কাটার ফলাফল এই তো কিছুদিন আগেই রাঙামাটিতে টের পাওয়া গেলো।

আফসোস, আমরা এখন নিজেদের ঘরগুলোকেই ডাস্টবিনে রুপান্তর করছি!!!

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:০০

সারাফাত রাজ বলেছেন: তাহলে আমার সার্থকতা যে আমি আপনাকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে লগ ইন করতে বাধ্য করেছি। :#)

লেখা ভালো লাগার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আসলে আমাদেরই সচেতন হতে হবে, কেননা বিপদটা আমাদেরই, সরকার বা সরকারী কাজ করা রাজন্যবর্গদের কাছ থেকে কিছু আশা করাই বোকামী।
তাদের কাছ থেকে যেকোন বিষয়েই ভালো কিছু আশা করা বোকামী। :|

(কিছুটা অপ্রাসংগিক) গাছ কাটার ফলাফল আমরা নিজেরাই টের পাচ্ছি মাত্রাতিরিক্ত গরমে!!! পাহাড় কাটার ফলাফল এই তো কিছুদিন আগেই রাঙামাটিতে টের পাওয়া গেলো।
ব্যাপারটা মোটেও অপ্রাসাঙ্গিক নয়। বরঞ্চ চরম কষ্টদায়ক সত্য।

আফসোস, আমরা এখন নিজেদের ঘরগুলোকেই ডাস্টবিনে রুপান্তর করছি!!!
অন্তত নিজের ঘরের জানালা দিয়ে বাইরে ময়লা ছুড়ে ফেলতে আমরা সিদ্ধহস্ত।

তারপরও ভাই স্বপ্ন দেখা। :>

ভালো থাকবেন ভাই। কষ্ট করে মন্তব্য করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। শুভকামনা জানবেন নিরন্তর।

২০| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৩:২৬

নতুন নকিব বলেছেন:



বাহ! বরাবরের মত অনবদ্যতায় দ্যুতিময়!!

কেমন আছেন প্রিয় রাজ ভাই?

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:০৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: অনেকদিন পর আপনাকে পেলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আমি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?

আপনি তো ছোট্ট অনবদ্য একটা মন্তব্য করেছেন। :#)


আচ্ছা, ব্লগে লেখা সংক্রান্ত আপনার সমস্যা কি মিটেছে?

২১| ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১৮

আমি ইহতিব বলেছেন: দু:খজনক অভিজ্ঞতার মিশেলে স্মৃতিকথা পড়ে ভালো লাগলো।
এই রকম কষ্ট আমারো হয় যখন দেশের বাইরে বা দেশেই কোথাও ঘুরতে যাই। বিদেশের সাথে দেশের একটা তুলনা অটোমেটিক চলে আসে।
আর খুব বেশী কষ্ট লাগে এই ভেবে যে আমাদের দেশে এত এত সুন্দর জায়গা অথচ আমাদের অব্যবস্থাপণার কারনে আমরা পর্যটন শিল্পে কত পিছিয়ে আছি।
রাতারগুলের মত সুন্দর একটা জায়গায় দ্বীতিয়বার যাওয়ার সাহস করিনা শুধুমাত্র রাস্তার অবস্থার কথা ভেবে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:২৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু, আশাকরি ভালো আছেন। লেখা ভালো লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

অন্য কোথাও গেলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আগে চোখে পড়ে সেখানকার মনুষ্য ব্যাবস্থাপনা। অনেকখানী দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে আসে বুক থেকে।

আর খুব বেশী কষ্ট লাগে এই ভেবে যে আমাদের দেশে এত এত সুন্দর জায়গা অথচ আমাদের অব্যবস্থাপণার কারনে আমরা পর্যটন শিল্পে কত পিছিয়ে আছি।
বাংলাদেশের পর্যটনশিল্পে এর চাইতে বড় সত্য আর হতে পারে না। :(

রাতারগুলের মত সুন্দর একটা জায়গায় দ্বীতিয়বার যাওয়ার সাহস করিনা শুধুমাত্র রাস্তার অবস্থার কথা ভেবে।
হা হা
আপু, রাস্তা খারাপের হয়তো একটা ভালো দিকও আছে। যোগাযোগব্যাবস্থা ভালো থাকলে হয়তো ওই অসাধারণ এলাকাটা আরো আগেই ধংস করে ফেলতাম আমরা।

ভালো থাকবেন আপু, শুভকামনা জানবেন।

২২| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:১৫

রাজীব বলেছেন: সময়টা সম্ভবত ২০০৪ সাল, আমার প্রথম ভারত সফর। তখন আমি বম্বে, গোয়া, মাদ্রাস গিয়েছিলাম। কলকাতা থেকে প্রথমেই বম্বে ও গোয়ার ট্রেনের টিকিট করি। কিন্তু ফেরার পথে টিকিট নিয়ে সমস্যায় পড়ি। ভারতে রেলের টাইম টেবিল নামক একটি গাইড বই আছে, যেখানে সমস্ত ট্রেনের তথ্য রয়েছে। সেই সময় ইন্টারনেট সহজ ছিল না, আর মোবাইল ইন্টারনেটতো ছিল কল্পনা। সেই গাইড বই দেখে তিনটি স্টেশনে ট্রেন বদলিয়ে মানে চার ভাগে মাদ্রাজ যাবার টিকিট করি। সেই যাত্রার প্রথম যাত্রা বিরতি ছিল লন্ডা নামক স্টেশনে। ২য় যাত্রাবিরতির স্টেশনটির নাম মনে নেই। কিন্তু সেই ২য় যাত্রাবিরতির স্টেশনটি ছিল একটি পাহাড়ি স্টেশন। আমরা বিকেল থেকে সন্ধা পর্যন্ত সেই স্টশনে ছিলাম। সেটি ছিল অত্যান্ত মনোরম একটি স্টেশন। আবহাওয়া ছিল চমৎকার। খুব ছোট একটি গ্রাম ছিল মনে হয়। জায়গাটি আমার খুব ভালো লেগেছিল। আপনার লিখা পড়ে সেটি মনে পড়ে গেল।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৩৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: প্রিয় রাজীব ভাই,
অনেক অনেক অনেকদিন পর আপনাকে পেলাম। খুবই ভালো লাগছে।

আপনার স্মৃতিচারণা আমাকে নস্টালজিক করে দিলো।

ভাই, মনেহচ্ছে আপনার দ্বিতীয় যাত্রাবিরতির স্থানে একছুটে চলে যাই।
:)

২৩| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:২৪

রাজীব বলেছেন: ডিজুস জেনারেশন নিয়ে কি বলব? একসময় কলকাতায় নিউমার্কেটের কাছে ১৫০/- রুপীতে ডাবল রুম নিয়ে ২ জন থেকেছি। আর এখন ১২০০/- রুপীর কমে হোটেল পাওয়া কস্ট। সবই ডিজুস জেনারেশনের ফল। আমি কলকাতায় সবসময়ে মেট্রো ব্যবহার করি অথচ আমাদের দেশের বেশীরভাগ টুরিস্ট সেখান টেক্সী ছাড়া চলেই না।
ভারতে রাজধানি বা দুরন্ত এক্সপ্রেস ছাড়া (এগুলোতে নন এসি ক্লাশ নেই) অন্য কোন ট্রেনে উঠলে আমি সবসময় নন এসি স্লীপারে উঠি। কিন্তু আমাদের দেশের বেশীরভাগ টুরিস্ট ৩ টায়ার এসি নয় ২ টায়ার এসিতে চড়ে যার ভাড়া প্রায় বিমানের সমান। অথচ আমি সেই নন এসি স্লীপার ক্লাশেও অনেক বিদেশী টুরিস্ট দেখেছি। টাকা অপচয় করতে আমাদের জাতির জুড়ি মেলা ভার।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৪৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: ডিজুস জেনারেশন নিয়ে কি বলব?
=p~

একসময় কলকাতায় নিউমার্কেটের কাছে ১৫০/- রুপীতে ডাবল রুম নিয়ে ২ জন থেকেছি।
ভাই, এটা তো রুপকথা শোনাচ্ছে। B:-)

আমি কলকাতায় সবসময়ে মেট্রো ব্যবহার করি অথচ আমাদের দেশের বেশীরভাগ টুরিস্ট সেখান টেক্সী ছাড়া চলেই না।
ট্যাক্সিতে চড়া আমাদের কাছে হয়তো আভিজাত্যের বহিঃপ্রকাশ। অথবা ট্যাক্সি ছাড়াও যে আরো অনেক পাবলিক ট্রান্সপোর্ট আছে এবং সেগুলো যে স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ এটা হয়তো আমরা ভাবতে পারি না।

ভারতে রাজধানি বা দুরন্ত এক্সপ্রেস ছাড়া (এগুলোতে নন এসি ক্লাশ নেই) অন্য কোন ট্রেনে উঠলে আমি সবসময় নন এসি স্লীপারে উঠি।
ভাই, কিছু দুরন্তে স্লীপার ক্লাস আছে। ;)

কিন্তু আমাদের দেশের বেশীরভাগ টুরিস্ট ৩ টায়ার এসি নয় ২ টায়ার এসিতে চড়ে যার ভাড়া প্রায় বিমানের সমান। অথচ আমি সেই নন এসি স্লীপার ক্লাশেও অনেক বিদেশী টুরিস্ট দেখেছি। টাকা অপচয় করতে আমাদের জাতির জুড়ি মেলা ভার।
আমি দুজন রাশিয়ানকে ২০০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দেয়ার জন্য রীতিমতো গন্ডোগোল করতে দেখেছি। তাদের নিয়ে আমার বেশ মজার কাহিনী আছে। হয়তো অন্য কোন পর্বে সেই ঘটনা লেখা হবে। :)

২৪| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৩১

রাজীব বলেছেন: দেশের পর্যটন, আমাদের সরকারের কর্তা ব্যাক্তিরা পর্যটনের কথা বললেই বলে মদের দোকান করতে। আপনিই বলুন বিদেশীরা কি সব মদের দোকানে যেয়ে বসে থাকে?? আসলে প্রয়োজন পর্যটন বান্ধব পরিবেশ ও নিরাপত্তা। কোন বিদেশি আমাদের দেশে এলে বিমানবন্দর থেকেই শুরু হয় হয়রানী। ট্রলি নেই, মালামাল সময়মত আসে না, এয়ারপোর্ট থেকে বেড়িয়ে টেক্সী নেই, ইত্যাদি। এগুলো ঠিক করতে কি বেশী টাকা লাগে নাকি সদিচ্ছা লাগে?
বলুনতো কাশ্মীরে আপনি কয়জন বিদেশীকে দেখেছেন মদের দোকানে বসে থাকতে??? আর আমাদের পাহাড়ে প্রতিটি জায়গায় দেশীয় মদ পাওয়া যায়। কিন্তু সেট পর্যটনের জন্য বেশী প্রয়োজনীয় নয়। প্রয়োজন সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তা। একটি পর্যটক বিমানবন্দরে নেমে কিভাবে বান্দরবান যাবে জানেনা। অথচ থাইল্যান্ডে দেখেছি, সব জায়গায় অনেক অনেক ম্যাপ, গাইড বই বিনামুল্যে সরবরাহ করছে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:৫৯

সারাফাত রাজ বলেছেন: দেশের পর্যটন, আমাদের সরকারের কর্তা ব্যাক্তিরা পর্যটনের কথা বললেই বলে মদের দোকান করতে।
হা হা
লালপানি নীলনারী এগুলো নিয়ে তারা বোধহয় খুবই আগ্রহী। ;)

বিদেশীরা কি সব মদের দোকানে যেয়ে বসে থাকে??
আমি উত্তরাখন্ডের বিভিন্ন খাবারের রেস্তোরাতে বিদেশীদের দাবা, তাস অথবা উনো নামের একধরনের কার্ড খেলা অথবা বই পড়া নিয়ে মগ্ন থাকতে দেখেছি। মদের নহরে ভাসতে দেখিনি।

কোন বিদেশি আমাদের দেশে এলে বিমানবন্দর থেকেই শুরু হয় হয়রানী। ট্রলি নেই, মালামাল সময়মত আসে না, এয়ারপোর্ট থেকে বেড়িয়ে টেক্সী নেই, ইত্যাদি। এগুলো ঠিক করতে কি বেশী টাকা লাগে নাকি সদিচ্ছা লাগে?
ব্যাপারটা নিয়ে কিচ্ছু বলার নেই। :|

বলুনতো কাশ্মীরে আপনি কয়জন বিদেশীকে দেখেছেন মদের দোকানে বসে থাকতে???
কাশ্মীরে প্রকাশ্যে কোন মদের দোকান নেই। আমি যতোদূর জানি কাশ্মীরে কোন সিনেমা হলও নেই (ব্যাপারটা জানায় আমার ভুলও থাকতে পারে)। কাশ্মীরে তো বেশিরভাগ সময়েই উত্তেজনা থাকে। কিন্তু ওখানে কখনো কোন পর্যটককে আক্রান্ত হবার কথা শুনিনি। মদের এতো বিলাসী সুবিধা না থাকলেও কাশ্মিরে পর্যটক কি কম যায়!! মোটেও না।

একটি পর্যটক বিমানবন্দরে নেমে কিভাবে বান্দরবান যাবে জানেনা। অথচ থাইল্যান্ডে দেখেছি, সব জায়গায় অনেক অনেক ম্যাপ, গাইড বই বিনামুল্যে সরবরাহ করছে।
ভাই, এগুলো ভাবলেই মন খারাপ হয়ে যায়।

২৫| ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৩৪

রাজীব বলেছেন: আমাদের পাশের দেশগুলো, যেমন, নেপাল, মালদ্বীপ, ভারত এদের জাতীয় আয়ের ভালো একটি ভাগ আসে পর্যটন শিল্প থেকে। আর প্রচুর সম্ভাবনা থাকার পরও আমরা বসে আছি। এখনো আমাদের দেশে টুরিস্ট গাইড ছাড়া বিদেশীদের ভ্রমন সম্ভব নয়। অথচ বিদেশীরা কিন্তু একা ভ্রমন করতে পাছন্দ করে।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:০৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: আমাদের পাশের দেশগুলো, যেমন, নেপাল, মালদ্বীপ, ভারত এদের জাতীয় আয়ের ভালো একটি ভাগ আসে পর্যটন শিল্প থেকে। আর প্রচুর সম্ভাবনা থাকার পরও আমরা বসে আছি।
:-<

এখনো আমাদের দেশে টুরিস্ট গাইড ছাড়া বিদেশীদের ভ্রমন সম্ভব নয়। অথচ বিদেশীরা কিন্তু একা ভ্রমন করতে পাছন্দ করে।
বিদেশীরা ব্যাগপ্যাক ট্রাভেল করতে ভালোবাসে। আমাদের সেই ক্ষেত্র তৈরী করতে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।

ভাই, আপনি অনেকগুলো মন্তব্য করেছে। নিশ্চয় আপনার মনে ক্ষোভ আছে। আমরা তো চাইই যে আমাদের দেশটা অনেক এগিয়ে যাক, এজন্যই তো সমালোচনা করি।

ভালো থাকবেন ভাই। অনেক শুভকামনা জানবেন।

২৬| ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৪:১০

শেরজা তপন বলেছেন: দারুন লিখেছেন। ভ্রমনের পোকা আমি-তাই সেই বিষয়ক লেখা পেলে পড়ে ফেলি এক নিশ্বাসে! আর এমন উপাদেয় লেখা হলে তো কথাই নেই।
আরো লিখুন-ভাল থাকুন।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:১২

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাই, আপনি নিজেই অসাধারণ ভ্রমণকাহিনী লিখেন। আমি আপনার নেপাল কাহিনী খুবই আগ্রহের সাথে পড়ছিলাম, কিন্তু দুঃখের বিষয় আপনি সেটা শেষ করেননি। আশাকরি সেটা কন্টিনিউ করবেন।

ভালো থাকবেন ভাই, শুভকামনা জানবেন। :)

২৭| ০৮ ই জুলাই, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৬

ভাললাগে না বলেছেন: বিদেশে ঘুড়িনি তবে দেশে এরকম অবস্থা দেখেছি। বাংগালি ১টা অসভ্য জাতি।

০৯ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১১:১৭

সারাফাত রাজ বলেছেন: ভাললাগে না এতো হতাশ হলে চলবে? নিজেদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করতে হবে না?

ভালো থাকবেন ভাই। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
:)

২৮| ১০ ই জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২০

করুণাধারা বলেছেন: আপনার লেখনীরর গুনে সব ঘটনার ছবি চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম। যেখানে সেখানে কাগজ ফেলা, রমজান মাসে থুথু ফেলার মহোৎসব করা আমাদের জাতীয় চরিত্র। কিন্তু বাস দুর্ঘটনায় যাত্রীদের আহত হবার সুযোগে তাদের লুটপাট করা - এটা ঠিক নিতে পারলাম না! আমরা না এত পরোপকারী জাতি!!

যদি আমাদের প্রধান পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজার নিয়ে তুলনামূলক আলোচনা করতেন তবে ভাল হত।

পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা জানবেন।

১১ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:২২

সারাফাত রাজ বলেছেন: করুণাধারা, আপনি কেমন আছেন?

যেখানে সেখানে কাগজ ফেলে আমরা বোধহয় বিকৃত আনন্দ পায়! আর থুতু ফেলার জন্য রমজান মাসে মহোৎসব করা ছাড়াও অন্যান্য মাসেও আমরা পিছিয়ে থাকি না। প্রায়ই একটা বিচ্ছিরি ব্যাপার ঘটে। রাস্তা দিয়ে হাটার সময় অন্য কারো ফেলে যাওয়া থুতু স্যান্ডেলে জড়িয়ে গায়ে ছিটকে আসে। শরীর যে কি পরিমাণ ঘিনিঘিন করে তা বলে বোঝানো যায় না।

বাস দুর্ঘটনার লুটপাট সম্পর্কে বলতে পারি যে, আমার উদহারণটাই সরলীকরণ করা ঠিক নয়। নিশ্চয় বাংলাদেশে অসম্ভব ভালো মানুষ আছে, যারা অন্যের যে কোন বিপদে সাহায্য করার জন্য ঝাপিয়ে পড়ে।

পরের পর্ব তাড়াতাড়ি দেবার চেষ্টা করবো। ভালোলাগা জানবেন। ভালো থাকবেন। শুভকামনা জানবেন নিরন্তর।
:)

২৯| ১১ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ৮:৫২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অসাধারণ! মন ভরিয়ে দেবার মতো একটি পোস্ট!

ভালো খারাপ সবখানেই রয়েছে। আপনার অভিজ্ঞতাগুলো ভালো নয় সেটা দুঃখজনক। আশা করি আপনার চমৎকার, সরল, সাবলীল স্মৃতিকথন সচেতনতা তৈরি করবে মানুষের মধ্যে। আর ছবিগুলো ও এত পরিষ্কার, ঝকঝকে যে বলার নয়!

অনেক ধন্যবাদ এমন সুন্দর পোস্ট দিয়েছেন বলে।
শুভেচ্ছা অফুরান।

১১ ই জুলাই, ২০১৭ সকাল ১০:১৫

সারাফাত রাজ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। :)

অবশ্যই ভালো খারাপ সবজায়গাতে রয়েছে। খারাপের চাইতে ভালো অবশ্যই বেশি। তবে খারাপের ছাপ বোধহয় কিছুটা দীর্ঘস্থায়ী।

পাহাড়িদের কাছ থেকে যে সৌজন্যতা পেয়েছিলাম তা কি কখনো ভুলতে পারবো! সেগুলো তো আমার স্মৃতিতে চিরভাস্বর।

আমার এই কিঞ্চিত লেখা সচেতনতা তৈরী করবে এরকম স্বপ্ন দেখা কিছুটা বাতুলতা আমার জন্য। তবে আপনার এই শুভকামনা আমাকে অত্যাধিক প্রেরণা যোগাবে নিরন্তর।

ছবি আপলোডের একটা নূতন পদ্ধতি খুজে পেয়েছি।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালোবাসা জানবেন সবসময়। :>

৩০| ১০ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১:৫৬

লোকমান হোসেন মামুনছআললএ বলেছেন: অসাধারন লেখা

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৩

সারাফাত রাজ বলেছেন: থ্যাংকু ভাই :#)

৩১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৬:৪৮

রোকসানা লেইস বলেছেন: দেশ বিদেশে ঘুরাঘুরি করা মানুষ কিন্ত বিদেশ বলতে ভারত ঘোরা হয়েছে। কিন্তু ভাবনা চিন্তা বিদেশের কাছাকাছি খুব ভালোলাগল উপমাসহ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া ভুলগুলো।
আগে কখনো পড়িনি লেখা তবে প্রথম পড়ায় ভালোলাগল সচেতন চিন্তা ভাবনা।

বানরের কথাই বলি প্রায় তিন দশক আগে আগ্রা, উটি এবং আরো কিছু জায়গায় দেখেছিলাম বানরের অবাধ বিচরণ। এমন কি চলতি পর্যটকের হাত থেকে প্যাকেট নিয়ে দৌড়ে চলে যাচ্ছে বানর। তবু তাদেরকে কেউ একটা ঢিলও ছূঁড়ে না। বন্যপ্রাণী সংরক্ষন অভয়ারণ্যগুলো অনেক যত্নে সংরক্ষণ করে আসছে অনেক আগে থেকে ভারত।
তখন অল্প কিছু শিক্ষার্থি কলকাতা পড়তে যেত।
কলকাতায় একজন খুব বিরক্ত হয়ে বলেছিল, তোমাদের দেশের মানুষ খুব বেশী বাবুয়ানা করতে ভালোবাসে। দু পা হাঁটতে চায় না। ওরা বেশীরভাগ মানুষ অনেক কষ্টে সীমিত বাজেটে জীবনযাপন করে।
আমাদের দেশের এই মানসিকতা নিরসনের উপায় ভাবা দরকার।
একসময় শুনতাম সিলেটের মানুষ লণ্ডনি পয়সায় ( যা অবশ্যই অন্যের মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রোজগার করা) অন্যকে দেখানোর জীবন যাপন করে। এখন সারা দেশজুড়ে সেটা ছড়িয়ে পরেছে যেন।
সুন্দর লেখা শুভকামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.